নেইমারকে ছাড়াই মানিয়ে নেয়ার বার্তা ব্রাজিলের নতুন কোচের
নেইমার জুনিয়র ও ব্রাজিল ফুটবল দলের নতুন কোচ দরিভাল জুনিয়র। ছবি: সংগৃহীত
আনুষ্ঠানিকভাবে ব্রাজিলের জাতীয় দলের কোচের দায়িত্ব বুঝে নিয়েছেন দরিভাল জুনিয়র। রিও ডি জেনেইরোতে ব্রাজিল ফুটবল কনফেডারেশনের (সিবিএফ) সদর দপ্তরে দরিভালকে দলের কোচ হিসেবে পরিচয় করিয়ে দেন প্রেসিডেন্ট এদনালদো রদ্রিগেজ। সেখানে সংবাদ সম্মেলনে দল নিয়ে নিজের পরিকল্পনার কথা জানান কোচ। বার্তা দেন, চোটের কারণে বাইরে থাকা নেইমার জুনিয়রকে ছাড়াই খেলার অভ্যাস গড়ার।
কাতার বিশ্বকাপের ব্যর্থতা মাথায় নিয়ে ব্রাজিলের জাতীয় দলের কোচের দায়িত্ব ছাড়েন তিতে। এরপর থেকে সেলসাওদের নতুন কোচ কে হবেন তা নিয়ে শুরু হয় নানা গুঞ্জন। কখনো জিনেদিন জিদান আবার কখনো জোসে মরিনহো। আর প্রায়ই চূড়ান্ত হয়ে যাওয়া কার্লো আনচেলত্তি নাটকের সমাপ্তি ঘটেছে দরিভাল জুনিয়রের ব্রাজিল কোচের আনুষ্ঠানিক দায়িত্ব গ্রহণের মধ্য দিয়ে। ইউরোপিয়ান কোনো কোচ না এনে নিজেদের কোচের উপর আস্থা রেখেছে পাঁচবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নরা।
ব্রাজিল ফুটবল কনফেডারেশন সদর দপ্তরে আনুষ্ঠানিকভাবে দরিভাল জুনিয়রকে জাতীয় দলের কোচ হিসেবে পরিচয় করিয়ে দিয়েছেন সিবিএফের প্রেসিডেন্ট এদনালদো রদ্রিগেজ। সেখানেই ব্রাজিল দলের কোচ হিসেবে প্রথম সংবাদ সম্মেলনে কথা বলেন সদ্য নিয়োগ পাওয়া কোচ। জানান সেলাসাওদের নিয়ে নিজের পরিকল্পনার কথা।
দরিভাল বলেন, ‘আমি এই গ্রহের সবচেয়ে সফল দলের প্রতিনিধিত্ব করছি। ব্রাজিলিয়ান ফুটবল খুবই শক্তিশালী। আমরা জয়ের পথ দেখা শিখেছি ব্রাজিলিয়ান ফুটবল থেকেই, সেসব মুহূর্ত ফিরিয়ে আনা দরকার। এর আগে ফিলিপ, তিতি ও দিনিজের দল বাছাই নিয়ে কথা হয়েছে। আমার ক্ষেত্রে তেমনটা হবে না। এটা দরিভালের দল না। এটা ব্রাজিলের মানুষের দল।’
নিজের প্রথম সংবাদ সম্মেলনে বর্তমান ব্রাজিল দলের সবচেয়ে বড় তারকাকে নেইমার জুনিয়রকে নিয়েও কথা বলেন দরিভাল। ৩১ বছর বয়সী নেইমারের জাতীয় দলের ভবিষ্যৎ নিয়েও দেন বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য।
তিনি বলেন, ‘যেহেতু নেইমার এখন ইনজুরিতে আছে, তাকে ছাড়াই আমাদের খেলার অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে। তবে সে বিশ্বের অন্যতম সেরা খেলোয়াড়দের একজন। তার কাছ থেকে আমাদের সেরাটা নিতে হবে।’
সংবাদ সম্মেলনে উঠে আসে নেইমারের সঙ্গে দ্বন্দ্বের প্রসঙ্গও। ২০১০ সালে নেইমার সান্তোসে খেলাকালীন কোচ ছিলেন দরিভাল। সে সময় আতলেতিকো গোইয়ানিয়েন্সের বিপক্ষে একটি ম্যাচে পেনাল্টি নেয়া নিয়ে দুজন বিবাদে জড়িয়েছিলেন। পরের ম্যাচে নেইমারকে বাদ দেন দরিভাল। দুজনের দ্বন্দ্ব মেটাতে ক্লাব দ্রুতই সমস্যার সমাধান করতে চেয়েছিল। কিন্তু দরিভাল এই বিষয়ে কঠোর অবস্থান নেন এবং শেষ পর্যন্ত তাকে বরখাস্ত করা হয়। তবে দল নির্বাচনে নেইমারের জায়গা পাওয়া নিয়ে আগের কোনো বিবাদই বাধা হবে না বলেই নিশ্চিত করেন দরিভাল।
নিজেদের মধ্যে কোনো সমস্যা নেই জানিয়ে দরিভাল বলেন, ‘যতদিন নেইমার সুস্থ ও মনোযোগী থাকবে ততদিনে তাকে নিয়ে আমার কোনো সমস্যা নেই। আমার সঙ্গে তার কখনো কোনো সমস্যা ছিল না। বরং আমাদের সম্পর্ক সবসময় ইতিবাচক ছিল।’
উল্লেখ্য, গত ১৭ অক্টোবর উরুগুয়ের বিপক্ষে বিশ্বকাপ বাছাইয়ের ম্যাচে গুরুতর চোট পান নেইমার। তাতে অস্ত্রোপচারে যেতে হয় তাকে। ২ নভেম্বর ব্রাজিলের বেলো হরিজন্তের হাসপাতালে সফল অস্ত্রোপচার করা হয় তার পায়ে। তবে সুস্থ হতে তার বেশ সময় লাগবে। এমনকি জুনে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া কোপা আমেরিকাতেও তাকে পাওয়া যাবে না বলে গত মাসেই জানিয়ে দেন ব্রাজিল দলের চিকিৎসক রদ্রিগো লাসমার।