চট্টগ্রামকে হারিয়ে সিলেটকে টপকে শীর্ষে বরিশাল

চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের বিপক্ষে জেতার জন্য ফরচুন বরিশালকে করতে হবে ২৪ বরে ৪৮ রান। গড় পাক্কা ২০০ করে। ক্রিজে নেই কোনও সেট ব্যাটসম্যান। তাহলে কি পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে থাকা সিলেট স্ট্রাইকার্সের পর দ্বিতীয় স্থানে থাকা বরিশালও হেরে যাবে। সিলেট পর্ব শুরু হবে নাটকীয়তা দিয়ে! কিন্তু না শেষ পর্যন্ত বরিশাল আর সে নাটকীয়তাকে পূর্নতা আনতে দেয়নি। নতুন দুই ব্যাটসম্যান করিম জানাত ও সালমান হোসেনের মারমুখি ব্যাটিংয়ে বরিশাল ম্যাচ নিজেদের করে নেয় ৪ উইকেটে ম্যাচ জিতে। চট্টগ্রামের ৭ উইকেটে করা ১৬৮ রান তারা অতিক্রম করে ৪ বল হাতে রেখে ৭ উইকেট হারিয়ে ১৭১ রান করে। এই জয়ে বরিশাল ৮ ম্যাচে ১২ পয়েন্ট নিয়ে সিলেটকে টপকে প্রথমবারের মতো নেট রান রেটে শীর্ষে উঠে এসেছে। সিলেট দিনের প্রথম ম্যাচে রংপুর রাইডার্সের কাছে ৬ উইকেটে হারলেও শীর্ষেই ছিল। এদিকে এই হারের ফলে চট্টগ্রামের শেষ চারের যাওয়া কঠিন হয়ে গেলে। ৮ ম্যাচে ৪ পয়েন্ট নিয়ে তারা পয়েন্ট টেবিলে সবার নিচে।
সালমান ও করিম জানাত কঠিন অবস্থা থেকে দলকে জয় এনে দিলেও তাদের হাতে জয়ের বাটন তুলে দিয়েছিলেন ম্যাচ সেরা ওপেনার এনামুল হক বিজয়। এক প্রান্তে উইকেট পড়েছে, অপরপ্রান্তে এনামুল আক্রমণাত্বক খেলে দলের নেট রান রেট ধরে রাখেন। নাজিদুজ্জামানের তোপে পড়ে বরিশাল এক পর্যায়ে ৪ উইকেট হারায় ৭৯ রানে। কিন্তু এনামুলের কারণে দলের রান রেট ছিল সাড়ে আটের কাছাকাছি। এ সময় তার রান ছিল ৩৬ বলে ৫ ছক্কা ও ৪ চারে ৫৬। হাফ সেঞ্চুরি করেন ২৭ বলে। তার কারণেই ব্যাটিং পাওয়ার প্লেতে বরিশালের রান এসেছিল ১ উইকেটে ৬৭। কিন্তু নাহিদুজ্জামনের কারণে তাদের রান মুহুর্তে পরিণত হয় ৪ উইকেটে ৭৯। নাহিদুজ্জামান ৭ বলে নেন ৩ উইকেট। তার তিন শিকার ছিলেন সাকিব (২), মাহমুদউল্লাহ (০) ও চাতুরাঙ্গা (৩)। এর মাঝে মাহমুদউল্লাহ কোন বল না খেলেই স্ট্যাম্পিং হয়ে যান ইরফান শুক্কুরের হাতে। যে বলে তিনি আউট হয়েছিলেন, সেই বলটি ছিল ওয়াইড।
দ্রুত তিন উইকেট হারানোর পরও এনামুল নিজের মারমুখি খেলা খেলে যান। ৫০ বলে ৬টি করে চার ও ছক্কায় ৭৮ রানের সময় তাকে থামিয়ে দেন মৃত্যুঞ্জয় চৌধুরী। নাহিদুজ্জামান দ্বিতীয় স্পেলে বল করতে এসে ইফতেখার আহমেদকেও (১৩) ফিরিয়ে দিলে বরিশাল চাপে পড়ে যায়। এ সময় তাদের জয়ের জন্য প্রয়োজন পড়ে ২৬ বলে ৫২ রানের। প্রতি বলে ২ রানেরও বেশি! কঠিন টার্গেটই। ক্রিজে নতুন দুই ব্যাটসম্যান সালমান হোসেন (৩ বলে ১ রান) ও করিম জানাত।
এ সময়ই দৃশ্যে পটে আগমন ঘটে করিম জানাতের। তিনি এসেই বাউন্ডারি মেরে খাতা খুলেন। এই ধারা চলতে থাকে ম্যাচ জেতা পর্যন্ত। ১৭ নম্বার ওভার করতে আসা মেহেদি হাসান রানাকে ২ ছক্কায় ১৭ রান নিয়ে ব্যবধান কমিয়ে আনেন ১৮ বলে ৩১ রানে। কার্টিস ক্যাম্ফায়ারের পরের ওভারে ২ বাউন্ডারিতে এবার আদায় করেন ১৫ রান। ফলে শেষ ২ ওভারে কমে আসে ১৬ রানে।
করিম জানাতের মারমুখি ব্যাটিং দেখে এতোক্ষন নিশ্চুপ হয়ে থাকা সালমানও মারমুখি হয়ে উঠেন। মৃত্যুঞ্জয়ের করা ১৯ নম্বারে ওভারে সালমান ১ ছক্কা ও ২ চারে ১৪ রান আদায় করলে শেষ ওভারে বরিশালের প্রয়োজন পড়ে মাত্র ২ রানের। মেহেদি হাসান রানার প্রথম বলেই করিম জানাত আউট হয়ে যান ১২ বলে ২ ছক্কা ও ৩ চারে ৩১ রান করে। কিন্তু তার আউট দলের জন্য কোনও ক্ষতি বইয়ে আনেনি। নতুন ব্যাটসম্যান মোহাম্মদ ওয়াসিম বাউন্ডারি মেরে দলকে কাঙ্খিত জয় এনে দেন। নাহিদুজ্জামান ১৭ রানে নেন ৪ উইকেট। গতি সম্পন্ন বোলার মেহেদি হাসান রানা ৪২ রান দিয়ে ঝুলিতে ভরেন ২ উইকেট।
এমপি/এএস
