নেপালকে নেপালের মাটিতেই হারিয়ে প্রথমবারের মতো সাফ নারী চ্যাম্পিয়নশিপের শিরোপা জেতায় বাংলাদেশ দলের সকল খেলোয়াড়, কোচ কর্মকর্তাকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী মো. জাহিদ আহসান রাসেল।
এক অভিনন্দন বার্তায় প্রতিমন্ত্রী বলেন, সাফ চ্যাম্পিয়ন হওয়ার মধ্যে দিয়ে বিশ্ব নারী ফুটবলে বাংলাদেশের বিস্ময়কর অগ্রযাত্রা সূচিত হলো।
দক্ষিণ এশিয়ার শ্রেষ্ঠত্ব অর্জনের মধ্যে দিয়ে আমাদের বাঘিনীরা তাদের সক্ষমতা আবারো প্রমাণ করেছে। নিঃসন্দেহে এটি দেশের নারী ফুটবলের ইতিহাসে এক অনন্য মাইলফলক।
আমি বাংলাদেশ নারী ফুটবল দলের সকল খেলোয়াড়, কোচ কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্ট সকলকে আন্তরিক অভিনন্দন জানাচ্ছি।
প্রতিমন্ত্রী মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর প্রতি আন্তরিক কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করে বলেন, প্রধানমন্ত্রীর প্রত্যক্ষ দিকনির্দেশনা ও সার্বিক পৃষ্ঠপোষকতায় বাংলাদেশের নারী ফুটবলাররা আজ কোটি বাঙালির স্বপ্ন ছুঁয়েছে।
সকল বাধা বিপত্তি অতিক্রম করে দক্ষিণ এশিয়ার নারী ফুটবলে নতুন ইতিহাস রচনা করেছে। আমি প্রধানমন্ত্রীর প্রতি অশেষ ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছি।
কক্সবাজারের পেকুয়ায় ওসির বাড়িতে ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। এ সময় ডাকাতদল গুলি করে তিনটি গরু নিয়ে গেছে।
রোববার (২ মার্চ) দিবাগত সোয়া ১টার দিকে পেকুয়ার মেহেরনামা আলিয়াঘোনা এলাকায় ওসি জাহেদুল কবিরের বাড়িতে এই ঘটনা ঘটে।
ওসি জাহেদুল কবিরের বাড়িতে তার বাবা আহমদ কবির এবং ছোট ভাই মনিরুল কবির থাকেন।ওসি জাহেদুল কবির চট্টগ্রাম শহরের চকবাজার থানার ওসি। আর গরুগুলো দেখাশোনা করতেন তার ভাই মনিরুল কবির রাশেদ।
স্থানীয়রা জানায়, চকরিয়া-পেকুয়ায় গরু চুরির ঘটনা অহরহ। গরু চুরির জন্য অনেককে নির্ঘুম রাত কাটাতে হচ্ছে। সম্প্রতি চট্টগ্রামের চকবাজার থানা এলাকা থেকে গরু চোর সিন্ডিকেটের প্রধান নবী হোসাইনকে গ্রেপ্তার করেন থানার ওসি জাহিদুল কবির।
স্থানীয়দের ধারণা, এই ক্ষোভ থেকেই ওসির গ্রামের বাড়ি থেকে গরু লুট করার ঘটনা ঘটতে পারে।
পেকুয়া থানা পুলিশ ইতোমধ্যে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। ভুক্তভোগীরা লিখিতভাবে অভিযোগ দিলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানিয়েছেন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি)।
ওবায়দুল কাদের দেশেই আছেন দাবি সাংবাদিক ইলিয়াসের। ছবি: সংগৃহীত
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের দেশেই আছেন বলে দাবি করেছেন প্রবাসী সাংবাদিক ইলিয়াস হোসাইন। তিনি সোমবার (৩ মার্চ) সকালে নিজের ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে এই দাবি করেন।
পোস্টে ইলিয়াস হোসাইন বলেন, "অত্যন্ত বিশ্বস্ত সূত্রে জেনেছি, ওবায়দুল কাদের দেশেই আছেন। তিনি দেশ ছেড়েছেন কিংবা মারা গিয়েছেন এসব খবর পরিকল্পিতভাবে ছড়ানো হচ্ছে।"
এর আগে, ওবায়দুল কাদের মারা গেছেন- এই দাবিতে ইলেকট্রনিক গণমাধ্যমে ৩টি ফটোকার্ড সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়। তবে তথ্য যাচাইকারী প্রতিষ্ঠান রিউমর স্ক্যানার এ তথ্যটি মিথ্যা বলে জানিয়েছে।
প্রতিষ্ঠানটি এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, উক্ত গণমাধ্যমগুলো কোনো ফটোকার্ড কিংবা সংবাদ প্রকাশ করেনি। বরং সেসব গণমাধ্যমগুলোর ডিজাইন নকল করে আলোচিত ফটোকার্ডগুলো প্রচার করা হয়েছে।
রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে প্রমাণিত হয়েছে, এ ধরনের দাবিগুলোর সত্যতা যাচাইয়ের পর কোনো নির্ভরযোগ্য সূত্রে পাওয়া যায়নি।
২০২৪ সালের ৫ আগস্ট ছিল ছাত্র-জনতার ঐতিহাসিক এক প্রতিবাদের দিন। স্বৈরাচার আওয়ামী লীগ সরকারের পদত্যাগের দাবিতে সারা দেশের মতো রাজধানী ঢাকার বাড্ডায়ও ঘেরাও কর্মসূচি পালিত হয়। সেই আন্দোলনে অংশ নেন সিএনজি চালক সুজন।
সকাল ৯টায় কর্মসূচিতে যোগ দেওয়ার পর সকাল ১০টার দিকে আন্দোলনকারীদের ওপর পুলিশ এলোপাতাড়ি গুলি চালায়। এ সময় পাশে থাকা এক ছাত্র গুলিবিদ্ধ হয়ে রাস্তায় লুটিয়ে পড়লে সুজন নিজের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে তাকে উদ্ধারে এগিয়ে যান। তখন পুলিশের ছররা গুলিতে তার শরীর ক্ষতবিক্ষত হয়।
গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর দীর্ঘ ছয় ঘণ্টা অজ্ঞান অবস্থায় দেয়ালের পাশে পড়ে থাকেন তিনি। বিকেল ৪টার দিকে নিরাপত্তা বাহিনীর তাণ্ডব কিছুটা কমলে তিনটি বাসার দেয়াল ভেঙে তাকে উদ্ধার করে আফতাব নগরের নাগরিক হাসপাতালে নেওয়া হয়। কিন্তু সেখানে চিকিৎসা না পেয়ে পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। অতিরিক্ত আহতদের ভিড়ে সেখানেও ভর্তি না হওয়ায় তাকে গ্রামের বাড়িতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। স্থানীয় প্রশাসনের সহায়তায় সরকারি চিকিৎসা সেবা পেলেও অর্থাভাবে উন্নত চিকিৎসা সম্ভব হয়নি।
টাঙ্গাইলের ভূঞাপুর উপজেলার অলোয়া ইউনিয়নের আকালু গ্রামের বাসিন্দা সুজনের বাবা মৃত আনছের আলী। তিন ভাই-বোনের মধ্যে তিনি বড় এবং পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি ছিলেন। বাবাকে হারানোর পর পরিবারের দায়িত্ব কাঁধে তুলে নিতে প্রাইমারি স্কুলের পড়াশোনা ছেড়ে ঢাকায় রিকশা চালানো শুরু করেন। পরে তিনি সিএনজি চালানো শুরু করেন এবং জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দলের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত হন। তিনি অলোয়া ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। বিএনপির সক্রিয় কর্মী হিসেবে দলের বিভিন্ন কর্মসূচিতে অংশ নিতেন।
বাড্ডার ঘেরাও কর্মসূচিতে অংশ নেওয়ার পর পুলিশের গুলিতে গুরুতর আহত হন সুজন। তার শরীরে এখনো প্রায় ৩০০ স্প্লিন্টার রয়েছে। চলাফেরা করতে পারলেও প্রচণ্ড ব্যথার কারণে স্বাভাবিক জীবনযাপন অসম্ভব হয়ে উঠেছে। তিনি বলেন, “আমি দরিদ্র মানুষ, কিন্তু অন্যায় সহ্য করতে পারি না। তাই স্বৈরাচারী সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলনে গিয়েছিলাম। পুলিশের একতরফা গুলিতে ২৯৬টি স্প্লিন্টার আমার শরীরে লাগে। পরে টাঙ্গাইল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে জ্ঞান ফেরে। এখনো শরীরে গুলির স্প্লিন্টার নিয়ে বেঁচে আছি, কিন্তু উন্নত চিকিৎসার অভাবে কষ্ট পাচ্ছি।”
অর্থাভাবের কারণে সুজন ও তার পরিবার চরম দুর্দশায় দিন কাটাচ্ছে। তার স্ত্রী নূপুর বলেন, “আমার স্বামী আহত হওয়ার পর থেকেই সংসারে কোনো আয় নেই। বাবার বাড়ি বরিশাল থেকে ধার করে মাত্র ৮০০ টাকা সংগ্রহ করে ঢাকায় স্বামীকে উদ্ধার করতে যাই। এখন শ্বশুরবাড়ির মানুষদের কাছ থেকে ধার করে খেতে হচ্ছে। অনেক সময় রান্নার চুলো জ্বলে না। আমাদের তিন সন্তানের লেখাপড়াও বন্ধ হওয়ার উপক্রম। আমার স্বামী পঙ্গু হয়ে পড়েছে, শাশুড়িও প্যারালাইসিসে ভুগছেন। সংসার চালানোর মতো কোনো উপায় নেই।”
তিনি আরও বলেন, “আমাদের সম্পদ বলতে মাত্র তিন শতাংশ জমিতে জরাজীর্ণ একটি ছোট ঘর, যা যেকোনো সময় ভেঙে পড়তে পারে। উপজেলা প্রশাসন থেকে একবার কিছু সহায়তা পেয়েছিলাম, যা তখন কাজে লেগেছিল। কিন্তু এখন কোনো সাহায্য পাচ্ছি না, ফলে সংসার চালানো অসম্ভব হয়ে পড়েছে।”
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোছা. পপি খাতুন বলেন, “বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে এ উপজেলায় একজন নিহত ও ১৬ জন আহত হয়েছেন। সরকারি ও ব্যক্তিগতভাবে আহতদের সহায়তা প্রদান করা হচ্ছে। তবে এখনো কর্মসংস্থানের কোনো সরকারি নির্দেশনা আসেনি। আমরা চেষ্টা করছি যাতে আহতরা কোনো সমস্যার সম্মুখীন না হন।”
ছবি : ঢাকাপ্রকাশ
আহত সুজন তার উন্নত চিকিৎসার জন্য সমাজের বিত্তবানদের সহযোগিতা চেয়েছেন। তাকে বিকাশ (০১৯২১-৬৯৪০৯১) অথবা সোনালী ব্যাংকের ভূঞাপুর শাখায় সঞ্চয়ী হিসাব নম্বর (৬০০৩৮০১০২২৩৫৩) -এর মাধ্যমে সহায়তা পাঠানো যেতে পারে।