রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪ | ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
Dhaka Prokash
Header Ad

সাক্ষাৎকারে আনু মুহাম্মদ (পর্ব ৩)

রাষ্ট্র যদি দায়িত্ব নেয়, অন্যান্য প্রতিষ্ঠানও বাধ্য হবে

বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ। সম্প্রতি ঢাকাপ্রকাশ’র সাথে একান্ত সাক্ষাৎকারে তিনি কথা বলেছেন দেশের শিক্ষানীতি, বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠক্রম এবং করোনাকালের সামগ্রিক শিক্ষাব্যবস্থা নিয়ে। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন শাহেরীন আরাফাত। আজ প্রকাশিত হলো সাক্ষাৎকারটির তৃতীয় পর্ব

ঢাকাপ্রকাশ: করোনাকালে দূরশিক্ষণের বিষয়টা সামনে এসেছে। আমরা দেখেছি যে, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়, বা আপনার ভাষায় সর্বজন বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষা বা পাঠদান কর্মসূচি বা পরীক্ষা নেওয়া সেভাবে সম্ভব হয়নি। প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্ষেত্রে কিছুটা সম্ভব হয়েছে। যেখানে ডিজিটাল বাংলাদেশ একটা আলোচিত বিষয়, ডিজিটাল অবকাঠামোর জায়গাটা এখানে কোনো অন্তরায় হয়ে দাঁড়িয়েছে কি না? দূরশিক্ষণের বিষয়টা আমরা কীভাবে দেখব? করোনা তো এখনই চলে যাচ্ছে না, এখনও থাকছে। এ রকম আরও ভাইরাসও সামনে আসতে পারে, মহামারিও সামনে আসতে পারে; এ ক্ষেত্রে আমরা কতটা প্রিপেয়ার? শিক্ষাক্ষেত্রে আমাদের কেমন প্রিপারেশন নেওয়া দরকার বলে আপনি মনে করেন?

আনু মুহাম্মদ: করোনা তো একটা অভূতপূর্ব সংকট। যে কোনো সংকটে একটা সমাজে বা একটা ব্যবস্থার মধ্যে কী ধরনের ত্রুটি থাকে, কী ধরনের অসঙ্গতি থাকে–সেটা উন্মোচিত হয়। আমাদের শিক্ষাক্ষেত্রের দুর্বলতা, অর্থনীতির দুর্বলতা, রাজনীতির দুর্বলতা–এগুলো আমরা করোনার মধ্যে আরও প্রকটভাবে বুঝতে পেরেছি। করোনায় প্রায় এক বছর তো লেখাপড়া বন্ধ ছিল এবং অনেক স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় আরও বেশি সময় ধরে বন্ধ ছিল। একটা পর্যায়ের পর অনলাইনে পড়াশোনা শুরু হয়–সেটা পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে হয়েছে, প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়েও হয়েছে। প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে আবার বিভিন্ন ভাগ আছে। একটা বড় সংখ্যক প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় আছে, যেখানে অনেক পয়সা দিয়ে পড়তে হয়; কিন্তু যারা পড়ে তারা অত বেশি স্বচ্ছল পরিবারের সন্তান না। তার ফলে এদের অনেকের লেখাপড়া আসলে বন্ধ হয়ে গেছে। প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় তাদের টিউশন ফি কখনও বন্ধ করেনি। ক্লাস চলুক বা না চলুক টিউশন ফি নিচ্ছে। অনলাইন পড়াশোনার চাপটা ওখানে বেশি ছিল। প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় মানেই যে সবার ল্যাপটপ ছিল কিংবা তারা নেটওয়ার্কের মধ্যে ছিল–তা তো নয়। সুতরাং তাদের সমস্যা থাকলেও তারা যে কোনো মূল্যে সেমিস্টার শেষ করবে। কারণ সেমিস্টার শেষ না করা পর্যন্ত তো তাদের আয়টা হচ্ছে না। সুতরাং তারা এসব বিষয়ে খুব বেশি গুরুত্ব দেয়নি, অনেক ছেলে-মেয়ের লেখাপড়া বন্ধ হয়ে গেছে। কিংবা অনেক ছেলেমেয়ের বাবা-মাকে অনেক বেশি ঋণগ্রস্ত হতে হয়েছে। অনেক ছেলেমেয়ের নতুন করে স্মার্টফোন, ল্যাপটপ কিনতে হয়েছে। অনেকেই প্রত্যন্ত এলাকায় থাকে, তাকে ঢাকায় এসে থাকতে হয়েছে।

পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে আমরা ক্লাস নিয়েছি। আমরা ২০২০ সালের জুলাই মাস থেকে অনলাইনে ক্লাস নিয়েছি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়েও এমনই হয়েছে। এর মধ্যে আমরা প্রায় দুই-তিনটা পরীক্ষা নিয়েছি। মাস্টার্সের পরীক্ষা, ফোর্থ ইয়ারের পরীক্ষা, থার্ড ইয়ারের পরীক্ষা। আমি নিজেই এই পরীক্ষার সঙ্গে যুক্ত ছিলাম। পরীক্ষা হয়েছে, ছেলে-মেয়েরা পরীক্ষা দিয়েছে; কিন্তু সমস্যা যেটা আমরা উপলব্ধি করেছি, অনেক ছেলে-মেয়ে তাল মেলাতে পারেনি। ক্লাস করার জন্য তাদের পরিস্থিতি-পরিবেশ সম্পূর্ণ অনুকূল ছিল না। যেমন–ল্যাপটপ না থাকলে, স্মার্টফোন না থাকলে পড়াশোনার সঙ্গে তাল মেলানো যায় না। পড়াশোনা করতে হলে সেটা ডাউনলোড করতে হবে, দেখতে হবে, ভিডিও দেখতে হবে–এসব সমস্যার সমাধান আবার ফোন দিয়ে করা যায় না। স্মার্টফোন যেগুলো আছে, সেগুলো সব কিন্তু স্মার্ট নয়। কারণ কমদামি ফোন দিয়ে অনেক কাজই করা সম্ভব হয় না! কমদামি স্মার্টফোনে দেখা যায়, ভিডিও চালাতে গেলে, ডাউনলোড করতে গেলে অসুবিধা হচ্ছে, পরীক্ষার যে স্কিপ্ট সেটা পাঠাতে অসুবিধা হচ্ছে, পিডিএফ করতে অসুবিধা হচ্ছে, টিচারের ক্লাস কন্টিনিউ করতে অসুবিধা হচ্ছে। এসব অসুবিধায় বহু ছেলে-মেয়ে পড়ছে। তার উপর বাংলাদেশের যে নেটওয়ার্ক, আমরা বহু ছেলে-মেয়েকে দেখেছি, তারা মোবাইল ডাটা খরচ করেও নেটওয়ার্ক পাচ্ছে না। আবার মোবাইল ডাটা ব্যবহার না করতে পেরে অনেকে ওয়াইফাই ব্যবহার করতে গিয়েও ভালো নেটওয়ার্ক পায়নি। আমি নিজে ঢাকা শহরে থেকেও অনেক সময় ওয়াইফাই ইন্টারনেট ঠিকমতো পাই না। ঢাকার বাইরে ছাত্র-ছাত্রীদের তো আরও বেশি সমস্যা।

আরেকটা সমস্যা হলো–বাড়ির পরিবেশ তো সবার এক নয়। অনলাইনে ক্লাস, পড়াশোনা করতে গেলে তো তার একটা আলাদা জায়গা লাগে। অনেকের পরিবার একটা ঘরে থাকে, তার পক্ষে এটা সম্ভব হয় না। অনেক ছেলেমেয়ে নেটওয়ার্কের খোঁজে বাইরে আসে, নদীর পাড়ে যায় নানা জায়গায় ট্রাই করে। এগুলোর কারণে আমরা অনলাইন ক্লাস নিলেও বহু ছেলে-মেয়ে ক্লাস করতে পারেনি। পরীক্ষাটা সংক্ষিপ্ত আকারে হয়েছে, পরীক্ষাটাও আমরা ঠিকমতো নিতে পারিনি। যে পরীক্ষাগুলো নিয়েছি, তারা সবাই পরীক্ষা দিয়েছে; কিন্তু নিজেরাই সন্তুষ্ট নয়।

অনলাইনে এই এক্সারসাইজটা কাজে লাগবে, অনেকেই নতুন এক ডাইমেনশনের সঙ্গে পরিচিত হলো। অনলাইনে এখন ইন্টারন্যাশনালি অনেককিছুতেই সংযুক্ত হওয়া সম্ভব হয়। অনেক ছেলে-মেয়েরাও বুঝতে পারছে যে, অনেককিছুই অনলাইনে রয়েছে যা নিয়ে রিসার্চ করা যায়; কিন্তু সবার পক্ষে তো আর্থিকভাবে সম্ভব নয়। এখানেই রাষ্ট্রের একটা দায়িত্ব। এখানে রাষ্ট্র দুইভাবে দায়িত্বহীন ভূমিকায় ছিল। প্রথম দায়িত্বহীনতা হচ্ছে–আমরা সারাক্ষণ শুনি যে, বাংলাদেশ ডিজিটাল হচ্ছে, সেদিনও শুনলাম মন্ত্রীসাহেব খুব গর্বের সঙ্গে বলছেন যে, বাংলাদেশ করোনাকালে ডিজিটাল টেকনোলজিতে খুব ভালো কাজ করেছে; কিন্তু যে তথ্যটা তারা গোপন করে সেটা হলো–পৃথিবীর মধ্যে সবচেয়ে নিচে ইন্টারনেট স্পিড রয়েছে যেসব দেশে, বাংলাদেশ রয়েছে তার মধ্যে। সাউথ এশিয়ার মধ্যেও সবচেয়ে খারাপ অবস্থা। এটা দেখার তো দায়িত্ব রাষ্ট্রের। এজন্য বিভিন্ন টেকনিক্যাল উদ্যোগ তো রাষ্ট্রের নেওয়া দরকার। আমরা তো হাজার হাজার কোটি টাকার আইটি প্রজেক্টের কথা শুনি; কিন্তু তার ফলাফল দেখতে পাচ্ছি না। এটা হচ্ছে একটা সমস্যা। আরেকটা সমস্যা হচ্ছে–যেসব ছেলে-মেয়ের সামর্থ্য নেই, তাদের করোনার সময় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বা শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে একটা সার্পোট দেওয়া দরকার ছিল। সেটা দেওয়া হয়নি।

আমরা আমাদের বিভাগে যেমন কিছু কিছু উদ্যোগ নিয়েছি। যেমন–যারা মোবাইলটা কিনতে পারছে না, তাদেরকে কিছুটা সাপোর্ট দেওয়া, যাতে মোবাইলটা আপাতত কিনতে পারে। কিংবা যাদের পক্ষে ল্যাপটপ কেনা সম্ভব, তারা যাতে কম পয়সা দিয়ে ল্যাপটপটা কিনতে পারে। এ রকম নানাভাবে আমরা সহায়তা করার চেষ্টা করেছি; কিন্তু এটা তো পদ্ধতি হতে পারে না। পদ্ধতি হতে হবে–রাষ্ট্রীয় একটা পরিকল্পনা থাকতে হবে। যখনই করোনা এলো, অনলাইনে পরীক্ষা হচ্ছে, তখন বিশ্ববিদ্যালয় কিংবা শিক্ষা মন্ত্রণালয় তাদের একটা সমন্বিত পরিকল্পনা দরকার ছিল, সেটা হয়নি। করোনার মধ্যে যারা অস্বচ্ছল, তাদের অনেকের কাজ চলে গেছে। আয় নাই–এ রকম একটা অবস্থায় কিন্তু কোটি কোটি মানুষ ছিল। রাষ্ট্র তাদের ব্যাপারে কোনো দায়িত্বই নেয়নি। যেখানে রাষ্ট্র সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের ব্যাপারে এত উদাসীন। এ রকম নির্লিপ্ত এবং উদাসীন রাষ্ট্র পৃথিবীতে খুব কমই পাওয়া গেছে। যারা করোনার সময় জনগণের ন্যূনতম সমর্থন দেওয়ার জন্য চেষ্টা করেনি। বরং উল্টো কয়েক লাখ মানুষের চাকরি চলে গেল, আর বহু লাখ মানুষের আয় কমে গেছে। এ অবস্থায় রাষ্ট্র কোনো সমর্থন দেওয়ার বদলে বরং সমর্থন দিয়েছে চাকরি থেকে ছাঁটাই করার মতো বিষয়কে। গার্মেন্টসে ছাঁটাই হয়ে গেল কয়েক লাখ। পাটকল বন্ধ হয়ে গেল, চিনিকল বন্ধ হয়ে গেল। তাদের সন্তানদের তো লেখাপড়া বন্ধ। বিশেষ করে অনলাইনে করোনাকালে তো লেখাপড়ার খরচ অনেক বেড়ে গেছে। কাজেই পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে সর্বজন শিক্ষার যে প্রয়োজনের কথা বললাম, রাষ্ট্রের দায়িত্বটা এখানে প্রধান।

রাষ্ট্র যদি দায়িত্ব নেয়, তাহলে অন্যান্য যেসব প্রতিষ্ঠানের দায়িত্ব নেওয়া উচিত, তারাও তখন বাধ্য হবে। রাষ্ট্র যখন নির্লিপ্ত থাকবে, তখন অন্যান্য মন্ত্রণালয়, বিভাগ তাদেরও নির্লিপ্ততা থাকবে। তার ফলে প্রত্যেকের মধ্যে দেখা যায় যে, যার যেমন সামর্থ্য সে অনুযায়ী সে পারল অন্যরা পারল না। করোনাকালে বৈষম্যটা আরও বেড়ে গেল। যাদের এক্সেস আছে, ক্ষমতা আছে, তারা প্রতিযোগিতায় অনেকদূর এগিয়ে গেল। যাদের সামর্থ্য নাই, তারা পিছিয়ে পড়ল। যেমন–আমাদের সামনে যদি ফিজিক্যাল ক্লাস থাকত, তাহলে তাদের মধ্যে বৈষম্য যতটা থাকত, করোনার কারণে তাদের লেখাপড়ার ধরনে বৈষম্যটা আরও অনেক বেড়ে গেল। এটাই হচ্ছে এ সময়ের পরিস্থিতি।

(চলবে)

সাক্ষাৎকারে আনু মুহাম্মদ (পর্ব ১)

সাক্ষাৎকারে আনু মুহাম্মদ (পর্ব ২)

সাক্ষাৎকারে আনু মুহাম্মদ (শেষ পর্ব)

 

Header Ad

গোপনে দুইজনকে বিয়ে, কাউকেই অধিকার বঞ্চিত করেননি জান্নাতুল

ছবি: সংগৃহীত

একইসঙ্গে দুই স্বামীর সঙ্গেই সংসার করছেন জান্নাতুল ফেরদৌস নামের এক নারী। স্ত্রীর অধিকার থেকে বঞ্চিত করেননি দুই স্বামীর কাউকেই। গোপনে মন জয় করে চলছিলেন দুই স্বামীর। প্রায় দুই বছর দুই স্বামীর সংসার করার পর অবশেষে বিষয়টি জানাজানি হলে এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।

চার বছরের প্রেমের সম্পর্কের পর ২০২২ সালের ২৭ অক্টোবর নোটারি পাবলিকের কার্যালয়ে হলফনামার মাধ্যমে গোপনে বিয়ে করেন রাজবাড়ী সদরের আলীপুর ইউনিয়নের ইন্দ্রনারায়ণপুর গ্রামের আবু হানিফ শেখের ছেলে ইউটিউবার সাগর শেখ ও আলীপুর গ্রামের নুরুল ইসলাম ভূঁইয়ার মেয়ে জান্নাতুল ফেরদৌস।

বাবা, মা ও ভাই প্রবাসে থাকায় বাবার বাড়িতে একাই বসবাস করতেন জান্নাতুল। সেখানে যাতায়াত করতেন স্বামী সাগর শেখ। সংসার জীবন ভালোই চলছিল এ দম্পতির। হঠাৎ জান্নাতুলের বাবা প্রবাস থেকে দেশে ফেরায় শ্বশুরবাড়ি যাতায়াত বন্ধ হয়ে যায় সাগরের। এরই মধ্যে প্রথম বিয়ের কথা গোপন রেখে পরিবারের সিদ্ধান্তে অন্য এক যুবককে দ্বিতীয় বিয়ে করেন জান্নাতুল।

এদিকে স্ত্রীকে আনুষ্ঠানিকভাবে নিজের বাড়িতে তুলে না নেয়ায় শ্বশুরবাড়ি গিয়ে স্ত্রীর সঙ্গে নিয়মিত সময় কাটান জান্নাতুলের দ্বিতীয় স্বামী। প্রথম স্বামী সাগরের দাবি, প্রায় দুই বছর ধরে তার সঙ্গেও স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক ঠিক রেখে চলছিলেন জান্নাতুল।

স্ত্রীর পরিবার তাকে মেনে না নেয়ায় তার বোনের বাসাসহ বিভিন্ন স্থানে একান্তে সময় কাটাতেন স্বামী-স্ত্রী। চলতি মাসের ২ নভেম্বর তারা একসঙ্গে নিজেদের দ্বিতীয় বিবাহবার্ষিকী পালন করেছেন বলেও দাবি করেন সাগর।

তবে দুই সপ্তাহ আগে স্ত্রীর সঙ্গে দ্বিতীয় স্বামীর ঘনিষ্ঠতার বিষয়ে জানতে পারেন সাগর। আর এতেই বাঁধে বিপত্তি। তার সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ করে দেন জান্নাতুল। এখন দ্বিতীয় স্বামী নিয়েই সংসার করতে আগ্রহী তিনি। বাধ্য হয়ে স্ত্রীকে ফিরে পেতে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদে অভিযোগ দায়েরের পাশাপাশি আদালতে মামলা করেছেন সাগর।

সাগর শেখ বলেন, জান্নাতুল ও আমার বিয়ের বিষয়টি জান্নাতুলের মা ও বোন জানতো। বিয়ের পর আমাদের সংসার জীবন ভালোই কাটছিল। তবে হঠাৎ করে জান্নাতুলের বাবা প্রবাস থেকে দেশে ফেরায় তাদের বাড়িতে আমার যাতায়াত বন্ধ হয়ে যায়। আমাদের বিয়ের চার মাসের মাথায় আমি ভিডিও কন্টেন্ট তৈরির কাজে কয়েকদিনের জন্য রাজবাড়ীর বাইরে যাই।

কাজ থেকে এসে শুনি আমার স্ত্রী জান্নাতুল অন্য এক ছেলেকে বিয়ে করেছে। আমি আমার স্ত্রীকে প্রশ্ন করলে সে বলে, ‘পরিবারের চাপে বিয়ে করেছি। ওই ছেলের সঙ্গে আমার কোন সম্পর্ক হয়নি। আমি তোমার স্ত্রী আছি, তোমারই থাকবো। আমার আম্মু দেশে আসলে আমি তোমার কাছে চলে আসবো।’

সাগর বলেন, ‘আমি জান্নাতুলদের বাড়ি যাতায়াত করতে না পারার কারণে বিভিন্ন সময় আমরা রাজবাড়ী শহরে আমার বোনের বাসায় ঘনিষ্ঠ সময় কাটাতাম। ওর কলেজে আনা-নেয়াসহ সবকিছু আমিই করতাম। এমনকি গত ২ নভেম্বরও আমরা আমার বোনের বাসায় আমাদের দ্বিতীয় বিবাহ বার্ষিকী পালন করেছি।

তবে বিবাহ বার্ষিকী পালনের দুদিন পরে আমি জানতে পারি জান্নাতুলের সঙ্গে ওই ছেলের (দ্বিতীয় স্বামীর) ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক চলছে। ওই ছেলে নিয়মিত জান্নাতুলের বাবার বাড়িতে এসে তার সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সময় কাটাচ্ছে। এ বিষয়ে আমি জান্নাতুলকে প্রশ্ন করলে সে আমাকে গালাগালি করে যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়। এক পর্যায়ে সে আমার সঙ্গে সংসার করবে না বলেও জানায়।’

তিনি বলেন, ‘সম্প্রতি জান্নাতুলের মা প্রবাস থেকে দেশে ফিরেছে। তিনিও এখন আমাকে মেয়ের জামাই হিসেবে অস্বীকার করছেন। অথচ তার মেয়ের সঙ্গে আমার প্রেম থেকে শুরু করে বিয়ে পর্যন্ত সবকিছুই তিনি জানতেন।

এখন বাধ্য হয়ে আমি আমার স্ত্রীকে ফিরে পেতে আলীপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের কাছে গত ১১ নভেম্বর লিখিত অভিযোগ করেছি। এছাড়া ১৭ নভেম্বর রাজবাড়ীর বিজ্ঞ ১নং আমলি আদালতে মামলা করেছি।’

সাগর আরও বলেন, ‘আমাকে ডিভোর্স না দিয়ে আমার স্ত্রী অন্য আরেকজনকে বিয়ে করে আমার সঙ্গে প্রতারণা করেছে। সে আমাকেও ম্যানেজ করে চলেছে, একইভাবে তার দ্বিতীয় স্বামীকেও ম্যানেজ করে চলেছে।

এটা আইন ও ধর্মীয় দুই দিক থেকেই অপরাধ। এছাড়া আমি এ পর্যন্ত আমার স্ত্রীর পেছনে ২৫ থেকে ৩০ লাখ টাকা ব্যয় করেছি। তারপরও আমি আমার স্ত্রীকে ফেরত চাই। তাকে আমি আমার জীবনের চেয়েও বেশি ভালোবাসি।’

এদিকে, বিষয়টি নিয়ে ক্যামেরার সামনে কথা বলতে রাজী হননি জান্নাতুলের দ্বিতীয় স্বামী। তবে তার দাবি, জান্নাতুলের সঙ্গে সাগরের প্রেমের সম্পর্ক ছিল বলে তিনি জানতেন। সাগরের সঙ্গে বিয়ের বিষয়টি তিনি জানতেন না।

জান্নতুলের দ্বিতীয় স্বামীর বাবা বলেন, ‘কোন এক সূত্রে আমার শ্বশুর জান্নাতুলদের বাড়িতে বেড়াতে গিয়ে তাকে পছন্দ করে। পরে আমি গিয়ে তার বাবার কাছে বিয়ের প্রস্তাব দিলে বিয়ের দিন ধার্য হয়। বিয়ের আগের দিন সাগর নামে এক ছেলে আমার ছেলেকে ফোন করে বলে জান্নাতুলের সঙ্গে তার প্রেমের সম্পর্ক আছে।

সে জান্নাতুলের সঙ্গে নিজের একটি ছবিও আমার ছেলেকে পাঠায়। এরপর আমি ওই এলাকায় আমার আত্মীয়দের কাছে খোঁজ নিয়ে জানতে পারি জান্নাতুলের সঙ্গে সাগরের কোন সম্পর্ক ছিল না। এছাড়া জান্নাতুলকেও আমি সরাসরি প্রশ্ন করলে সেও সম্পর্কের বিষয়টি অস্বীকার করে।

পরে ঘরোয়া আয়োজনে জান্নাতুলের সঙ্গে আমার ছেলের বিয়ে হয়। এখন সাগর নামে ছেলেটি জান্নাতুলকে তার স্ত্রী হিসেবে দাবি করছে। আমি যতদূর জেনেছি সাগরের স্ত্রী ও সন্তান আছে। এখন বিষয়টি আইনগতভাবেই সমাধান হবে।

আর জান্নাতুল ফেরদৌসের সঙ্গে কথা বলতে তার বাবার বাড়িতে গেলে ভেতরে ঢোকার অনুমতি মেলেনি।’

বাইরে দাঁড় করিয়ে রেখে তার মা হাচিনা বেগম বলেন, ‘সাগরের সঙ্গে আমার মেয়ের বিয়ে হয়েছিল৷ তবে বিয়ের দুই মাসের মাথায় তাদের ডিভোর্স হয়ে যায়। আমার মেয়ে তো ছোট বুঝে নাই, যে কারণে সেসময় ওরা ডিভোর্সের কাগজ ছিঁড়ে ফেলেছে। এর ৪/৫ মাস পরে আমার মেয়ের আবার বিয়ে হয়েছে। সাগর আমার মেয়েকে চাপে ফেলে এতোদিন তার সঙ্গে সময় কাটাতে বাধ্য করেছে।’

আলীপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আবু বকর সিদ্দিক জানান, ‘সাগর ও জান্নাতুলের বিবাহ বিচ্ছেদ হলে তার নোটিশের একটি কপি ইউনিয়ন পরিষদে আসার কথা। এরকম কোন কপি কখনো পাননি তারা।’

তিনি বলেন, ‘সাগর আমার ইউনিয়ন পরিষদে অভিযোগ করেছে। আমিও খোঁজ নিয়ে জানতে পেরেছি সাগর জান্নাতুলের প্রথম স্বামী। সে সাগরকে তালাক না দিয়েই বিয়ের চার মাসের মাথায় অন্য এক ছেলেকে বিয়ে করে। প্রায় দুই বছর সে চালাকি করে দুই স্বামীর সঙ্গেই সংসার করেছে। সাগরের কাছ থেকে জান্নাতুল অনেক টাকা-পয়সা খেয়েছে বলেও আমি জানতে পেরেছি।’

আবু বক্কার বলেন, ‘সাগরের অভিযোগের ভিত্তিতে আমি জান্নাতুলের বাবাকে নোটিশের মাধ্যমে ইউনিয়ন পরিষদে ডাকি। তবে নোটিশ পেয়ে তিনি তার ছোটভাই ও তাদের এলাকার ইউপি সদস্য আবুল কালামকে সঙ্গে নিয়ে আমার বাড়িতে এসে বলেন, আমি যেন পরিষদে বসে বিষয়টি সমাধান করে দেই। তবে এর ১/২ দিন পরে তিনি জানান, এ বিষয়ে তারা বসতে চান না।

আইনগতভাবে তারা বিষয়টি সমাধান করতে চান। পরে আবার তারা বসতে সম্মত হলে জান্নাতুল ও তার বাবা এবং তাদের এলাকার ইউপি সদস্য আবুল কালামসহ পরিষদের অন্য সদস্যদের নিয়ে বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) সন্ধ্যায় ইউনিয়ন পরিষদে বসেছিলাম। সাগরও সেখানে ছিল। তবে সেখানে জান্নাতুল বলে দিয়েছে সে কোনভাবেই সাগরের সঙ্গে ঘর সংসার করবে না।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের পুরুষ শাসিত সমাজে নারীরা নির্যাতিত হয়। কিন্তু ছেলেরা যে কতোটুকু নির্যাতিত হয় তা এই সম্পর্কের জের দেখলে বোঝা যায়। আমাদের সমাজে ছেলেরা আরও বেশি নির্যাতিত হচ্ছে। সেটা নীরবে নিভৃতে ছেলেরা সহ্য করে যাচ্ছে। আমি আশা করবো আপনারা সাংবাদিক ভাইয়েরা বিষয়টি তুলে ধরবেন।

আপনাদের সংবাদের মাধ্যমে মানুষ যাতে সচেতন হতে পারে। আজকে আমার ইউনিয়নে এমন ঘটনা ঘটেছে। আর কোন ইউনিয়নে যেন এমন ঘটনা কোনদিন না ঘটে।’

Header Ad

শহীদ আব্দুল্লাহর বাড়িতে জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য মোবারক হোসেন

ছবি: ঢাকাপ্রকাশ

২৪ এর গনঅভূ্থানে ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম যোদ্ধা, সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের তৃতীয় বর্ষের মেধাবী শিক্ষার্থী, শহীদ আব্দুল্লাহর বাড়িতে যান বাংলাদেশ জামায়াত ইসলামের কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য মোবারক হোসেন।

এ সময় মোবাইল ফোনে লাউডস্পিকারে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা.শফিকুর রহমান বলেন, আব্দুল্লাহ দেশের জন্য মানুষের জন্য মানবতার কল্যাণের জন্য জীবনকে উৎস্বর্গ করে আল্লাহর দরবারে চলে গেছেন, আল্লাহ তাকে শহীদ হিসাবে কবুল করুন। শহীদরা মরে না। তারা আল্লাহর জীম্মায় জীবন্ত থাকে। এ সময় শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জ্ঞাপন করেন তিনি।

শনিবার (২৩ নভেম্বর) দুপুর ১২ টার দিকে যশোরের বেনাপোল পোর্ট থানার বড় আঁচড়া গ্রামে বাংলাদেশ জামায়াত ইসলামের কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য মোবারক হোসেন আব্দুল্লাহর বাড়িতে গিয়ে শোকসন্তপ্ত পরিবারের খোঁজ খবর নেন,কবর জিয়ারত করেন এবং তার রুহের মাগফেরাত কামনা করে দোয়া ও মোনাজাত করেন।

এর আগে তিনি নাভারণ দারুল আমান ট্রাষ্টে ওলামা সম্মেলনে যোগদান করেন। পরে ২০১৬ সালে গুম হওয়া ইসলামি ছাত্র শিবিরে নেতা রেজোয়ানের বাড়িতে যান এবং খোঁজ খবর ও সমবেদনা জানান।

এসময় তিনি জানান, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে মৃত্যু বরনকারী সকলে ন্যায় বিচার পাবেন বলে পরিবারের সদস্যদের সান্তনা দেন। এবং গনঅভূ্থানে নিহত সকল পরিবারের সাথে বাংলাদেশ জামায়াত ইসলাম আছে থাকবে।

এসময় উপস্থিত ছিলেন, কেন্দ্রীয় কর্ম পরিষদ সদস্য মাওলানা আজিজুর রহমান, যশোরের জেলা আমীর অধ্যক্ষ মাওলানা গোলাম রসূল, সাবেক জেলা আমীর মাওলানা হাবীবুর রহমান, জেলা জামায়াতের নেতা মাওলানা আবু জাফর, মাওঃ শিহাব উদ্দিন শার্শা থানা আমীর রেজাউল ইসলাম, সেক্রেটারী মাওলানা ইউসুফ আলী ও ঝিকরগাছা থানা আমীর মাওলানা আসাদুল আলম প্রমূখ।

Header Ad

বিরামপুরে আদিবাসী নারীর লাশ উদ্ধার

ছবি: ঢাকাপ্রকাশ

দিনাজপুরের বিরামপুরে বিশনি পাহান (৫৫) নামের এক আদিবাসী নারীর লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ।

শনিবার (২৩ নভেম্বর) বেলা সাড়ে ১১টায় উপজেলার কাটলা ইউনিয়নের ময়না মোড় এলাকার ধানক্ষেত থেকে ওই নারীর হাতবাঁধা লাশ উদ্ধার করা হয়। নিহত বিশনি পাহান উপজেলার কাটলা ইউনিয়নের বেণুপুর গ্রামের সাধন পাহানের মেয়ে।

নিহতের ভাই চরকা পাহান বলেন, আমার ছোট বোনের স্বামী বিশনি পাহানকে ছেড়ে চলে গেছেন। সে প্রতিরাতেই নেশা করতো। বাবা মারা যাওয়ার পর থেকেই আমার বাড়িতে থাকতো আমার বোন। আমার বোন এলাকায় মানুষের জমিতে কৃষি কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করতো। শুক্রবার বিকেলে এলাকার এক ব্যক্তির জমিতে ধান কাটার কাজ শেষ করে আর বাড়িতে ফেরেননি। রাতে অনেক খোঁজাখুঁজির পরও তাকে কোথাও পাওয়া যায়নি। শনিবার সকালে ধানক্ষেতে হাতবাঁধা অবস্থায় তার লাশ পাওয়া যায়।

বিরামপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মমতাজুল হক জানান, এলাকাবাসীর দেওয়া খবরে ঘটনাস্থল থেকে আদিবাসী এক নারীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়। তবে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা যাচ্ছে তাকে কে বা কাহারা হত্যা করেছে। তদন্ত করলেই প্রকৃত ঘটনা বেরিয়ে আসবে।

Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

গোপনে দুইজনকে বিয়ে, কাউকেই অধিকার বঞ্চিত করেননি জান্নাতুল
শহীদ আব্দুল্লাহর বাড়িতে জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য মোবারক হোসেন
বিরামপুরে আদিবাসী নারীর লাশ উদ্ধার
বিএনপির কাঁধে অনেক দ্বায়িত্ব: তারেক রহমান
'জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় নির্বাচন হওয়া উচিত'- তোফায়েল আহমেদ
৩ মাসে জ্বালানি খাতে সাশ্রয় হয়েছে ৩৭০ কোটি টাকা : জ্বালানি উপদেষ্টা
জুটি বাধলেন মিঠুন চক্রবর্তী-আফসানা মিমি
দেশ ও মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠায় দ্রুত নির্বাচনের কোনো বিকল্প নেই : তারেক রহমান
২৪ ঘণ্টার মধ্যে বঙ্গোপসাগরে লঘুচাপের আশঙ্কা
অক্টোবরে সড়কে প্রাণ গেছে ৪৭৫ জনের
গায়ানায় দলের সঙ্গে যোগ দিলেন সাকিব
আইপিএল নিলামের আগেই নিষিদ্ধ হলেন ভারতের ২ ক্রিকেটার
গাজীপুরে পিকনিকের বাসে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে ৩ শিক্ষার্থীর মৃত্যু
কবে বিয়ে করবেন জানালেন তামান্না ভাটিয়া
পঞ্চগড়ে ৫০০ টাকায় সন্তান বিক্রি, অতঃপর যা ঘটল...
অ্যান্টিগায় প্রথম দিন শেষে স্বস্তিতে টাইগাররা
সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারালেন পরীমণির প্রথম স্বামী
বিচারের আগে আ.লীগের মাঠে থাকার সুযোগ নেই: উপদেষ্টা নাহিদ
মাকে হত্যার পর থানায় হাজির ছেলে
৮ ক্রিকেটারসহ ৯ জনকে নিষিদ্ধ করলো বিসিবি