সোমবার, ২১ এপ্রিল ২০২৫ | ৭ বৈশাখ ১৪৩২
Dhaka Prokash

সাক্ষাৎকারে আনু মুহাম্মদ (পর্ব ৩)

রাষ্ট্র যদি দায়িত্ব নেয়, অন্যান্য প্রতিষ্ঠানও বাধ্য হবে

বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ। সম্প্রতি ঢাকাপ্রকাশ’র সাথে একান্ত সাক্ষাৎকারে তিনি কথা বলেছেন দেশের শিক্ষানীতি, বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠক্রম এবং করোনাকালের সামগ্রিক শিক্ষাব্যবস্থা নিয়ে। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন শাহেরীন আরাফাত। আজ প্রকাশিত হলো সাক্ষাৎকারটির তৃতীয় পর্ব

ঢাকাপ্রকাশ: করোনাকালে দূরশিক্ষণের বিষয়টা সামনে এসেছে। আমরা দেখেছি যে, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়, বা আপনার ভাষায় সর্বজন বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষা বা পাঠদান কর্মসূচি বা পরীক্ষা নেওয়া সেভাবে সম্ভব হয়নি। প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্ষেত্রে কিছুটা সম্ভব হয়েছে। যেখানে ডিজিটাল বাংলাদেশ একটা আলোচিত বিষয়, ডিজিটাল অবকাঠামোর জায়গাটা এখানে কোনো অন্তরায় হয়ে দাঁড়িয়েছে কি না? দূরশিক্ষণের বিষয়টা আমরা কীভাবে দেখব? করোনা তো এখনই চলে যাচ্ছে না, এখনও থাকছে। এ রকম আরও ভাইরাসও সামনে আসতে পারে, মহামারিও সামনে আসতে পারে; এ ক্ষেত্রে আমরা কতটা প্রিপেয়ার? শিক্ষাক্ষেত্রে আমাদের কেমন প্রিপারেশন নেওয়া দরকার বলে আপনি মনে করেন?

আনু মুহাম্মদ: করোনা তো একটা অভূতপূর্ব সংকট। যে কোনো সংকটে একটা সমাজে বা একটা ব্যবস্থার মধ্যে কী ধরনের ত্রুটি থাকে, কী ধরনের অসঙ্গতি থাকে–সেটা উন্মোচিত হয়। আমাদের শিক্ষাক্ষেত্রের দুর্বলতা, অর্থনীতির দুর্বলতা, রাজনীতির দুর্বলতা–এগুলো আমরা করোনার মধ্যে আরও প্রকটভাবে বুঝতে পেরেছি। করোনায় প্রায় এক বছর তো লেখাপড়া বন্ধ ছিল এবং অনেক স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় আরও বেশি সময় ধরে বন্ধ ছিল। একটা পর্যায়ের পর অনলাইনে পড়াশোনা শুরু হয়–সেটা পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে হয়েছে, প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়েও হয়েছে। প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে আবার বিভিন্ন ভাগ আছে। একটা বড় সংখ্যক প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় আছে, যেখানে অনেক পয়সা দিয়ে পড়তে হয়; কিন্তু যারা পড়ে তারা অত বেশি স্বচ্ছল পরিবারের সন্তান না। তার ফলে এদের অনেকের লেখাপড়া আসলে বন্ধ হয়ে গেছে। প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় তাদের টিউশন ফি কখনও বন্ধ করেনি। ক্লাস চলুক বা না চলুক টিউশন ফি নিচ্ছে। অনলাইন পড়াশোনার চাপটা ওখানে বেশি ছিল। প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় মানেই যে সবার ল্যাপটপ ছিল কিংবা তারা নেটওয়ার্কের মধ্যে ছিল–তা তো নয়। সুতরাং তাদের সমস্যা থাকলেও তারা যে কোনো মূল্যে সেমিস্টার শেষ করবে। কারণ সেমিস্টার শেষ না করা পর্যন্ত তো তাদের আয়টা হচ্ছে না। সুতরাং তারা এসব বিষয়ে খুব বেশি গুরুত্ব দেয়নি, অনেক ছেলে-মেয়ের লেখাপড়া বন্ধ হয়ে গেছে। কিংবা অনেক ছেলেমেয়ের বাবা-মাকে অনেক বেশি ঋণগ্রস্ত হতে হয়েছে। অনেক ছেলেমেয়ের নতুন করে স্মার্টফোন, ল্যাপটপ কিনতে হয়েছে। অনেকেই প্রত্যন্ত এলাকায় থাকে, তাকে ঢাকায় এসে থাকতে হয়েছে।

পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে আমরা ক্লাস নিয়েছি। আমরা ২০২০ সালের জুলাই মাস থেকে অনলাইনে ক্লাস নিয়েছি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়েও এমনই হয়েছে। এর মধ্যে আমরা প্রায় দুই-তিনটা পরীক্ষা নিয়েছি। মাস্টার্সের পরীক্ষা, ফোর্থ ইয়ারের পরীক্ষা, থার্ড ইয়ারের পরীক্ষা। আমি নিজেই এই পরীক্ষার সঙ্গে যুক্ত ছিলাম। পরীক্ষা হয়েছে, ছেলে-মেয়েরা পরীক্ষা দিয়েছে; কিন্তু সমস্যা যেটা আমরা উপলব্ধি করেছি, অনেক ছেলে-মেয়ে তাল মেলাতে পারেনি। ক্লাস করার জন্য তাদের পরিস্থিতি-পরিবেশ সম্পূর্ণ অনুকূল ছিল না। যেমন–ল্যাপটপ না থাকলে, স্মার্টফোন না থাকলে পড়াশোনার সঙ্গে তাল মেলানো যায় না। পড়াশোনা করতে হলে সেটা ডাউনলোড করতে হবে, দেখতে হবে, ভিডিও দেখতে হবে–এসব সমস্যার সমাধান আবার ফোন দিয়ে করা যায় না। স্মার্টফোন যেগুলো আছে, সেগুলো সব কিন্তু স্মার্ট নয়। কারণ কমদামি ফোন দিয়ে অনেক কাজই করা সম্ভব হয় না! কমদামি স্মার্টফোনে দেখা যায়, ভিডিও চালাতে গেলে, ডাউনলোড করতে গেলে অসুবিধা হচ্ছে, পরীক্ষার যে স্কিপ্ট সেটা পাঠাতে অসুবিধা হচ্ছে, পিডিএফ করতে অসুবিধা হচ্ছে, টিচারের ক্লাস কন্টিনিউ করতে অসুবিধা হচ্ছে। এসব অসুবিধায় বহু ছেলে-মেয়ে পড়ছে। তার উপর বাংলাদেশের যে নেটওয়ার্ক, আমরা বহু ছেলে-মেয়েকে দেখেছি, তারা মোবাইল ডাটা খরচ করেও নেটওয়ার্ক পাচ্ছে না। আবার মোবাইল ডাটা ব্যবহার না করতে পেরে অনেকে ওয়াইফাই ব্যবহার করতে গিয়েও ভালো নেটওয়ার্ক পায়নি। আমি নিজে ঢাকা শহরে থেকেও অনেক সময় ওয়াইফাই ইন্টারনেট ঠিকমতো পাই না। ঢাকার বাইরে ছাত্র-ছাত্রীদের তো আরও বেশি সমস্যা।

আরেকটা সমস্যা হলো–বাড়ির পরিবেশ তো সবার এক নয়। অনলাইনে ক্লাস, পড়াশোনা করতে গেলে তো তার একটা আলাদা জায়গা লাগে। অনেকের পরিবার একটা ঘরে থাকে, তার পক্ষে এটা সম্ভব হয় না। অনেক ছেলেমেয়ে নেটওয়ার্কের খোঁজে বাইরে আসে, নদীর পাড়ে যায় নানা জায়গায় ট্রাই করে। এগুলোর কারণে আমরা অনলাইন ক্লাস নিলেও বহু ছেলে-মেয়ে ক্লাস করতে পারেনি। পরীক্ষাটা সংক্ষিপ্ত আকারে হয়েছে, পরীক্ষাটাও আমরা ঠিকমতো নিতে পারিনি। যে পরীক্ষাগুলো নিয়েছি, তারা সবাই পরীক্ষা দিয়েছে; কিন্তু নিজেরাই সন্তুষ্ট নয়।

অনলাইনে এই এক্সারসাইজটা কাজে লাগবে, অনেকেই নতুন এক ডাইমেনশনের সঙ্গে পরিচিত হলো। অনলাইনে এখন ইন্টারন্যাশনালি অনেককিছুতেই সংযুক্ত হওয়া সম্ভব হয়। অনেক ছেলে-মেয়েরাও বুঝতে পারছে যে, অনেককিছুই অনলাইনে রয়েছে যা নিয়ে রিসার্চ করা যায়; কিন্তু সবার পক্ষে তো আর্থিকভাবে সম্ভব নয়। এখানেই রাষ্ট্রের একটা দায়িত্ব। এখানে রাষ্ট্র দুইভাবে দায়িত্বহীন ভূমিকায় ছিল। প্রথম দায়িত্বহীনতা হচ্ছে–আমরা সারাক্ষণ শুনি যে, বাংলাদেশ ডিজিটাল হচ্ছে, সেদিনও শুনলাম মন্ত্রীসাহেব খুব গর্বের সঙ্গে বলছেন যে, বাংলাদেশ করোনাকালে ডিজিটাল টেকনোলজিতে খুব ভালো কাজ করেছে; কিন্তু যে তথ্যটা তারা গোপন করে সেটা হলো–পৃথিবীর মধ্যে সবচেয়ে নিচে ইন্টারনেট স্পিড রয়েছে যেসব দেশে, বাংলাদেশ রয়েছে তার মধ্যে। সাউথ এশিয়ার মধ্যেও সবচেয়ে খারাপ অবস্থা। এটা দেখার তো দায়িত্ব রাষ্ট্রের। এজন্য বিভিন্ন টেকনিক্যাল উদ্যোগ তো রাষ্ট্রের নেওয়া দরকার। আমরা তো হাজার হাজার কোটি টাকার আইটি প্রজেক্টের কথা শুনি; কিন্তু তার ফলাফল দেখতে পাচ্ছি না। এটা হচ্ছে একটা সমস্যা। আরেকটা সমস্যা হচ্ছে–যেসব ছেলে-মেয়ের সামর্থ্য নেই, তাদের করোনার সময় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বা শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে একটা সার্পোট দেওয়া দরকার ছিল। সেটা দেওয়া হয়নি।

আমরা আমাদের বিভাগে যেমন কিছু কিছু উদ্যোগ নিয়েছি। যেমন–যারা মোবাইলটা কিনতে পারছে না, তাদেরকে কিছুটা সাপোর্ট দেওয়া, যাতে মোবাইলটা আপাতত কিনতে পারে। কিংবা যাদের পক্ষে ল্যাপটপ কেনা সম্ভব, তারা যাতে কম পয়সা দিয়ে ল্যাপটপটা কিনতে পারে। এ রকম নানাভাবে আমরা সহায়তা করার চেষ্টা করেছি; কিন্তু এটা তো পদ্ধতি হতে পারে না। পদ্ধতি হতে হবে–রাষ্ট্রীয় একটা পরিকল্পনা থাকতে হবে। যখনই করোনা এলো, অনলাইনে পরীক্ষা হচ্ছে, তখন বিশ্ববিদ্যালয় কিংবা শিক্ষা মন্ত্রণালয় তাদের একটা সমন্বিত পরিকল্পনা দরকার ছিল, সেটা হয়নি। করোনার মধ্যে যারা অস্বচ্ছল, তাদের অনেকের কাজ চলে গেছে। আয় নাই–এ রকম একটা অবস্থায় কিন্তু কোটি কোটি মানুষ ছিল। রাষ্ট্র তাদের ব্যাপারে কোনো দায়িত্বই নেয়নি। যেখানে রাষ্ট্র সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের ব্যাপারে এত উদাসীন। এ রকম নির্লিপ্ত এবং উদাসীন রাষ্ট্র পৃথিবীতে খুব কমই পাওয়া গেছে। যারা করোনার সময় জনগণের ন্যূনতম সমর্থন দেওয়ার জন্য চেষ্টা করেনি। বরং উল্টো কয়েক লাখ মানুষের চাকরি চলে গেল, আর বহু লাখ মানুষের আয় কমে গেছে। এ অবস্থায় রাষ্ট্র কোনো সমর্থন দেওয়ার বদলে বরং সমর্থন দিয়েছে চাকরি থেকে ছাঁটাই করার মতো বিষয়কে। গার্মেন্টসে ছাঁটাই হয়ে গেল কয়েক লাখ। পাটকল বন্ধ হয়ে গেল, চিনিকল বন্ধ হয়ে গেল। তাদের সন্তানদের তো লেখাপড়া বন্ধ। বিশেষ করে অনলাইনে করোনাকালে তো লেখাপড়ার খরচ অনেক বেড়ে গেছে। কাজেই পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে সর্বজন শিক্ষার যে প্রয়োজনের কথা বললাম, রাষ্ট্রের দায়িত্বটা এখানে প্রধান।

রাষ্ট্র যদি দায়িত্ব নেয়, তাহলে অন্যান্য যেসব প্রতিষ্ঠানের দায়িত্ব নেওয়া উচিত, তারাও তখন বাধ্য হবে। রাষ্ট্র যখন নির্লিপ্ত থাকবে, তখন অন্যান্য মন্ত্রণালয়, বিভাগ তাদেরও নির্লিপ্ততা থাকবে। তার ফলে প্রত্যেকের মধ্যে দেখা যায় যে, যার যেমন সামর্থ্য সে অনুযায়ী সে পারল অন্যরা পারল না। করোনাকালে বৈষম্যটা আরও বেড়ে গেল। যাদের এক্সেস আছে, ক্ষমতা আছে, তারা প্রতিযোগিতায় অনেকদূর এগিয়ে গেল। যাদের সামর্থ্য নাই, তারা পিছিয়ে পড়ল। যেমন–আমাদের সামনে যদি ফিজিক্যাল ক্লাস থাকত, তাহলে তাদের মধ্যে বৈষম্য যতটা থাকত, করোনার কারণে তাদের লেখাপড়ার ধরনে বৈষম্যটা আরও অনেক বেড়ে গেল। এটাই হচ্ছে এ সময়ের পরিস্থিতি।

(চলবে)

সাক্ষাৎকারে আনু মুহাম্মদ (পর্ব ১)

সাক্ষাৎকারে আনু মুহাম্মদ (পর্ব ২)

সাক্ষাৎকারে আনু মুহাম্মদ (শেষ পর্ব)

 

Header Ad
Header Ad

বিয়ে না করেই পঞ্চাশে অন্তঃসত্ত্বা অভিনেত্রী, তোলপাড় নেটদুনিয়া

বলিউড অভিনেত্রী আমিশা প্যাটেল। ছবি: সংগৃহীত

বলিউড অভিনেত্রী আমিশা প্যাটেল আবারও উঠে এসেছেন আলোচনার কেন্দ্রে। তবে এবার কোনো সিনেমা বা গ্ল্যামার নিয়ে নয়, বরং ব্যক্তিগত জীবনের একটি রহস্যজনক ইঙ্গিত নিয়েই সরব নেটিজেনরা। ৪৯ বছর বয়সেও তার স্টাইল ও সৌন্দর্যে মোহিত ভক্তরা, কিন্তু সম্প্রতি দুবাইতে ছুটি কাটাতে গিয়ে পোস্ট করা একটি ছবিতে তাকে ঘিরে শুরু হয়েছে অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার জল্পনা।

সবুজ মনোকিনিতে একটি ম্যাঙ্গো আইসক্রিম হাতে, খোলা চুল, চোখে সানগ্লাস আর মাথায় স্টাইলিশ টুপি পরে ক্যামেরার দিকে পোজ দিয়েছেন আমিশা। সাধারণত এমন ছবিতে ভক্তরা প্রশংসায় ভরিয়ে দেন কমেন্ট বক্স। তবে এবার নজর কাড়ে তার পেট। নেটিজেনদের একাংশ মনে করছেন, ছবিতে ‘বেবি বাম্প’ স্পষ্ট। আর সেখান থেকেই প্রশ্ন উঠছে— “তিনি কি অন্তঃসত্ত্বা?” কেউ লিখেছেন, “বিয়ের আগেই বেবি?” আবার কেউ লিখেছেন, “হে ভগবান, এটা কি সত্যি?”

 

বলিউড অভিনেত্রী আমিশা প্যাটেল। ছবি: সংগৃহীত

এ নিয়ে এখনও মুখ খোলেননি আমিশা। তবে এর আগে ১৯ বছরের ছোট নির্বাণ বিড়লার সঙ্গে তার প্রেমের গুঞ্জন চাউর হয়। একটি ছবি ঘিরে তখনো নেটদুনিয়ায় বেশ আলোচনা হয়েছিল, যেখানে নির্বাণকে ‘ডার্লিং’ বলে সম্বোধন করেন আমিশা, আর নির্বাণও তেমনি প্রতিক্রিয়া দিয়েছিলেন।

বর্তমানে আমিশার অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার খবর নিয়ে কোনো আনুষ্ঠানিক ঘোষণা আসেনি। এটি নিছক গুজব, আলো ছড়ানো একটি ছবি, না কি সত্যিই জীবনের নতুন অধ্যায়—তা সময়ই বলে দেবে। তবে একথা নিশ্চিত, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনায় থাকতে অভিনেত্রী ভালোই জানেন কীভাবে দর্শকদের কৌতূহলী করে তুলতে হয়।

Header Ad
Header Ad

পারভেজের মৃত্যুতে গ্রামের বাড়িতে মাতম, পাগলপ্রায় মা-বাবা ও একমাত্র বোন

ছবি: সংগৃহীত

রাজধানীর বনানীতে ছুরিকাঘাতে নিহত প্রাইমএশিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, ছাত্রদল কর্মী পারভেজের গ্রামের বাড়িতে চলছে শোকের মাতম। ছেলে হারিয়ে পাগলপ্রায় মা-বাবা ও একমাত্র বোন। কাঁদছে স্বজন ও গ্রামের মানুষ।

তুচ্ছ ঘটনায় প্রকাশ্যে এমন নির্মম হত্যাকাণ্ডে হতবাক সবাই। ভিডিও ফুটেজ দেখে আসামিদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমুলক শাস্তির দাবি স্বজন ও এলাকাবাসির। রাত ৯টায় জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হবে পারভেজের লাশ।

সন্তান হারানো শোকে আজোড়ে কাঁদছেন আর বারবার মূর্ছা যাচ্ছেন মা পারভীন আক্তার। বাবা জসিম উদ্দিন যেন শোকে পাথর। এলাকার প্রিয়মুখ পারভেজের এমন মর্মান্তিক মৃত্যুতে কাঁদছে গ্রামের মানুষ।

মৃত্যুর আগের রাতে মায়ের সাথে শেষ কথা হয় পারভেজের। শেষবারের মতো ভিডিও কলে দেখেন ছেলের মুখ।

ছেলের মৃত্যুর খবর পেয়ে কুয়েত প্রবাসী বাবা জসিম উদ্দিন বাড়ি এসেছেন রোববার ভোরে। একমাত্র ছেলের এমন মৃত্যু কোনোভাবেই মেনে নিতে পারছেন না। সন্তান হত্যায় জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবী করেছেন সাবেক ছাত্রদল নেতা বাবা জসিম উদ্দিন।

মা পারভীন আক্তার বলেন, 'যারা আমার ছেলেরে মারছে তাদের আমার সামনে আনো। আমি জিগাইতাম কেরে আমার ছেলের মারছে।'

বাবা জসিম উদ্দিন বলেন, 'আমার আর বাইচ্চা থাইক্যা কি অইবো। আমার ছেলেই তো নাই। হাত-পা ভাইঙ্গা রাখতো, সারাজীবন পালতাম, খালি বাবা ডাকটা শুনতাম। যারা আমার ছেলে মারছে তাদের প্রকাশ্যে ফাঁসি চাই।'

বাবা বিদেশে থাকায় নিজের গ্রামের বাড়িতে নতুন একতলা বাড়ি নির্মাণ করেছিলেন পারভেজ। কিন্তু সে বাড়িতে আর থাকা হলো না তার। ফিরেছে লাশ হয়ে। রোববার বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে অ্যাম্বুলেন্সে করে লাশ আসে গ্রামের বাড়ি ভালুকার বিরুনীয়া ইউনিয়নের গ্রামের বাড়িতে। লাশ আসার পর সৃষ্টি হয় হৃদয় বিধারক পরিবেশ। পাগল প্রায় মা-বাবা-বোনের আহাজারিতে কান্নার রোল পড়ে।

পারভেজের মৃত্যুর খবরে ভালুকার বিরুনীয়া ইউনিয়নের কাইচান গ্রামে ভিড় করেছেন এলাকার মানুষ। এলাকায় স্বজন, ও ভালো ছেলে হিসেবে পরিচিত পারভেজ ছাত্রদলের রাজনীতির সাথে যুক্ত বলে জানান স্বজন ও এলাকার মানুষেরা। তাদের পুরো পরিবার বিএনপির রাজনীতির সাথে যুক্ত। ভিডিও ফুটেজে চিহ্নিত পারভেজের খুনিদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও ফাঁসি দাবি জানান স্থানীয়রা।

পারভেজের পিতার ঘনিষ্ঠ বন্ধু ময়মনসিংহ দক্ষিণ জেলা যুবদলের সহ প্রবাসী কল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম জানান, পারভেজের বাবা বিরুনীয়া ইউনিয়ন ছাত্রদলের সাবেক নেতা। তাদের পুরো পরিবার বিএনপির রাজনীতির সাথে জড়িত। পারভেজ এলাকায় আসলে বিএনপি ও ছাত্রদলের কর্মসূচি ও মিছিলে সবসময় অগ্রভাগে থাকতো।

এদিকে ছাত্রদল কর্মী পারভেজ হত্যার প্রতিবাদ এবং জড়িতদের গ্রেপ্তার ও বিচার দাবিতে রোববার বিকেলে ভালুকায় বিক্ষোভ মিছিল করেছে ছাত্রদল ও স্থানীয়রা। এসময় ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক আধা ঘণ্টা অবরোধ করে রাখে বিক্ষোভকারীরা। এতে সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।

উল্লেখ্য গত শনিবার বিকেলে রাজধানীর বনানীতে প্রাইম এশিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী জাহিদুল ইসলাম পারভেজকে প্রকাশ্যে ছুরিকাঘাতে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। প্রাইমএশিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের টেক্সটাইল বিভাগের ষষ্ঠ সেমিস্টারের শিক্ষার্থী ছিল পারভেজ। এ ঘটনায় আটজনের নামসহ অজ্ঞাত আসামি করে বনানি থানায় মামলা করেছে নিহতের মামাতো ভাই হুমায়ুন।

Header Ad
Header Ad

বাংলাদেশের হয়ে খেলতে রাজি কিউবা মিচেল

বাংলাদেশের হয়ে খেলতে রাজি কিউবা মিচেল। ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত প্রবাসী ফুটবলারদের জাতীয় দলে অন্তর্ভুক্তির ধারা আরও এক ধাপ এগিয়ে গেল। ইংল্যান্ডের ক্লাব সান্ডারল্যান্ডের বয়সভিত্তিক দলে খেলা ১৯ বছর বয়সী মাঝমাঠের খেলোয়াড় কিউবা মিচেল বাংলাদেশের হয়ে খেলতে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন।

বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) সিনিয়র সহসভাপতি ইমরুল হাসান বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, কিউবাকে গতকাল একটি ই-মেইল পাঠানো হয়েছিল। আজ বিকেলে সেই ই-মেইলের জবাবে তিনি জানিয়েছেন, বাংলাদেশের হয়ে খেলতে তিনি আগ্রহী এবং পরবর্তী প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার জন্য প্রস্তুত আছেন।

জন্মসূত্রে ইংল্যান্ডের হলেও কিউবার মা বাংলাদেশের এবং বাবা জ্যামাইকান। ইতোমধ্যে সান্ডারল্যান্ডের হয়ে ৮টি ম্যাচ খেলেছেন তিনি। তার ফুটবল যাত্রা শুরু হয়েছিল বার্মিংহাম সিটির যুব দলে।

এর আগে কানাডিয়ান প্রিমিয়ার লিগের ক্লাব কাভালরির ফুটবলার সামিত সোমও বাংলাদেশের হয়ে খেলার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। ইতোমধ্যে তার জন্মনিবন্ধন সম্পন্ন হয়েছে এবং পাসপোর্টের আবেদন প্রক্রিয়াধীন।

ডেনমার্কপ্রবাসী মিডফিল্ডার জামাল ভূঁইয়ার পথ ধরে প্রবাসী ফুটবলারদের বাংলাদেশ দলে খেলার এই ধারা নতুন সম্ভাবনার দুয়ার খুলে দিচ্ছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। হামজা চৌধুরীর অভিষেকের পর থেকেই বিষয়টি ঘিরে ফুটবলপ্রেমীদের আগ্রহও বেড়েছে।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

বিয়ে না করেই পঞ্চাশে অন্তঃসত্ত্বা অভিনেত্রী, তোলপাড় নেটদুনিয়া
পারভেজের মৃত্যুতে গ্রামের বাড়িতে মাতম, পাগলপ্রায় মা-বাবা ও একমাত্র বোন
বাংলাদেশের হয়ে খেলতে রাজি কিউবা মিচেল
আসিফ মাহমুদ ও মাহফুজ আলমের পদত্যাগ দাবি করলেন নুর
২০২৫ শেষ হওয়ার আগেই ৫০ সেঞ্চুরিতে দেশের প্রথম এনামুল হক
ভিসা বাতিল করায় ট্রাম্পের বিরুদ্ধে ভারতীয় ও চীনা শিক্ষার্থীদের মামলা
একনেকে ২৪ হাজার কোটি টাকার ১৬ প্রকল্প অনুমোদন
বিগত ৩ নির্বাচনের সঙ্গে জড়িতদের বিচার চায় এনসিপি
এপ্রিলে ১৯ দিনেই প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্স ২১ হাজার কোটি টাকা ছাড়াল
দুইবারের বেশি প্রধানমন্ত্রী না হওয়া নিয়ে বিএনপির অভিমত
ফাইয়াজের মামলায় আইন মন্ত্রণালয়ের এখতিয়ার নেই: আসিফ নজরুল
ভারতের উত্তরপ্রদেশে এক ছাত্রীকে ৭ দিন ধরে আটকে ২৩ জন মিলে ধর্ষণ!
বিরামপুরে পিকআপের ধাক্কায় এসএসসি পরীক্ষার্থীর মর্মান্তিক মৃত্যু
টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরে যুবলীগ কর্মী মিঠু গ্রেফতার
ওয়াকফ সংশোধনী আইন নিয়ে উত্তাল মুসলিম সমাজ, হায়দ্রাবাদে গণবিক্ষোভ
ফকিরাপুলে গ্যাস লিকেজ থেকে বিস্ফোরণে একই পরিবারের ৩ জন দগ্ধ
আল-আকসা ভেঙে মন্দির স্থাপনের পরিকল্পনা ফাঁস, ফিলিস্তিনের সতর্কবার্তা
শেখ হাসিনা-কাদেরসহ ৪৫ জনের বিরুদ্ধে গণহত্যার প্রমাণ মিলেছে: চিফ প্রসিকিউটর
স্বাস্থ্যখাতের উন্নয়নে ১৩৮ মিলিয়ন ডলার দেবে চীন : স্বাস্থ্য উপদেষ্টা
আইপিএলে অভিষেক ম্যাচেই তিন রেকর্ড গড়লেন ১৪ বছরের বৈভব সূর্যবংশী