বুধবার, ৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ | ২২ মাঘ ১৪৩১
Dhaka Prokash

সাক্ষাৎকারে আনু মুহাম্মদ (পর্ব ৩)

রাষ্ট্র যদি দায়িত্ব নেয়, অন্যান্য প্রতিষ্ঠানও বাধ্য হবে

বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ। সম্প্রতি ঢাকাপ্রকাশ’র সাথে একান্ত সাক্ষাৎকারে তিনি কথা বলেছেন দেশের শিক্ষানীতি, বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠক্রম এবং করোনাকালের সামগ্রিক শিক্ষাব্যবস্থা নিয়ে। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন শাহেরীন আরাফাত। আজ প্রকাশিত হলো সাক্ষাৎকারটির তৃতীয় পর্ব

ঢাকাপ্রকাশ: করোনাকালে দূরশিক্ষণের বিষয়টা সামনে এসেছে। আমরা দেখেছি যে, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়, বা আপনার ভাষায় সর্বজন বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষা বা পাঠদান কর্মসূচি বা পরীক্ষা নেওয়া সেভাবে সম্ভব হয়নি। প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্ষেত্রে কিছুটা সম্ভব হয়েছে। যেখানে ডিজিটাল বাংলাদেশ একটা আলোচিত বিষয়, ডিজিটাল অবকাঠামোর জায়গাটা এখানে কোনো অন্তরায় হয়ে দাঁড়িয়েছে কি না? দূরশিক্ষণের বিষয়টা আমরা কীভাবে দেখব? করোনা তো এখনই চলে যাচ্ছে না, এখনও থাকছে। এ রকম আরও ভাইরাসও সামনে আসতে পারে, মহামারিও সামনে আসতে পারে; এ ক্ষেত্রে আমরা কতটা প্রিপেয়ার? শিক্ষাক্ষেত্রে আমাদের কেমন প্রিপারেশন নেওয়া দরকার বলে আপনি মনে করেন?

আনু মুহাম্মদ: করোনা তো একটা অভূতপূর্ব সংকট। যে কোনো সংকটে একটা সমাজে বা একটা ব্যবস্থার মধ্যে কী ধরনের ত্রুটি থাকে, কী ধরনের অসঙ্গতি থাকে–সেটা উন্মোচিত হয়। আমাদের শিক্ষাক্ষেত্রের দুর্বলতা, অর্থনীতির দুর্বলতা, রাজনীতির দুর্বলতা–এগুলো আমরা করোনার মধ্যে আরও প্রকটভাবে বুঝতে পেরেছি। করোনায় প্রায় এক বছর তো লেখাপড়া বন্ধ ছিল এবং অনেক স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় আরও বেশি সময় ধরে বন্ধ ছিল। একটা পর্যায়ের পর অনলাইনে পড়াশোনা শুরু হয়–সেটা পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে হয়েছে, প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়েও হয়েছে। প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে আবার বিভিন্ন ভাগ আছে। একটা বড় সংখ্যক প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় আছে, যেখানে অনেক পয়সা দিয়ে পড়তে হয়; কিন্তু যারা পড়ে তারা অত বেশি স্বচ্ছল পরিবারের সন্তান না। তার ফলে এদের অনেকের লেখাপড়া আসলে বন্ধ হয়ে গেছে। প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় তাদের টিউশন ফি কখনও বন্ধ করেনি। ক্লাস চলুক বা না চলুক টিউশন ফি নিচ্ছে। অনলাইন পড়াশোনার চাপটা ওখানে বেশি ছিল। প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় মানেই যে সবার ল্যাপটপ ছিল কিংবা তারা নেটওয়ার্কের মধ্যে ছিল–তা তো নয়। সুতরাং তাদের সমস্যা থাকলেও তারা যে কোনো মূল্যে সেমিস্টার শেষ করবে। কারণ সেমিস্টার শেষ না করা পর্যন্ত তো তাদের আয়টা হচ্ছে না। সুতরাং তারা এসব বিষয়ে খুব বেশি গুরুত্ব দেয়নি, অনেক ছেলে-মেয়ের লেখাপড়া বন্ধ হয়ে গেছে। কিংবা অনেক ছেলেমেয়ের বাবা-মাকে অনেক বেশি ঋণগ্রস্ত হতে হয়েছে। অনেক ছেলেমেয়ের নতুন করে স্মার্টফোন, ল্যাপটপ কিনতে হয়েছে। অনেকেই প্রত্যন্ত এলাকায় থাকে, তাকে ঢাকায় এসে থাকতে হয়েছে।

পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে আমরা ক্লাস নিয়েছি। আমরা ২০২০ সালের জুলাই মাস থেকে অনলাইনে ক্লাস নিয়েছি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়েও এমনই হয়েছে। এর মধ্যে আমরা প্রায় দুই-তিনটা পরীক্ষা নিয়েছি। মাস্টার্সের পরীক্ষা, ফোর্থ ইয়ারের পরীক্ষা, থার্ড ইয়ারের পরীক্ষা। আমি নিজেই এই পরীক্ষার সঙ্গে যুক্ত ছিলাম। পরীক্ষা হয়েছে, ছেলে-মেয়েরা পরীক্ষা দিয়েছে; কিন্তু সমস্যা যেটা আমরা উপলব্ধি করেছি, অনেক ছেলে-মেয়ে তাল মেলাতে পারেনি। ক্লাস করার জন্য তাদের পরিস্থিতি-পরিবেশ সম্পূর্ণ অনুকূল ছিল না। যেমন–ল্যাপটপ না থাকলে, স্মার্টফোন না থাকলে পড়াশোনার সঙ্গে তাল মেলানো যায় না। পড়াশোনা করতে হলে সেটা ডাউনলোড করতে হবে, দেখতে হবে, ভিডিও দেখতে হবে–এসব সমস্যার সমাধান আবার ফোন দিয়ে করা যায় না। স্মার্টফোন যেগুলো আছে, সেগুলো সব কিন্তু স্মার্ট নয়। কারণ কমদামি ফোন দিয়ে অনেক কাজই করা সম্ভব হয় না! কমদামি স্মার্টফোনে দেখা যায়, ভিডিও চালাতে গেলে, ডাউনলোড করতে গেলে অসুবিধা হচ্ছে, পরীক্ষার যে স্কিপ্ট সেটা পাঠাতে অসুবিধা হচ্ছে, পিডিএফ করতে অসুবিধা হচ্ছে, টিচারের ক্লাস কন্টিনিউ করতে অসুবিধা হচ্ছে। এসব অসুবিধায় বহু ছেলে-মেয়ে পড়ছে। তার উপর বাংলাদেশের যে নেটওয়ার্ক, আমরা বহু ছেলে-মেয়েকে দেখেছি, তারা মোবাইল ডাটা খরচ করেও নেটওয়ার্ক পাচ্ছে না। আবার মোবাইল ডাটা ব্যবহার না করতে পেরে অনেকে ওয়াইফাই ব্যবহার করতে গিয়েও ভালো নেটওয়ার্ক পায়নি। আমি নিজে ঢাকা শহরে থেকেও অনেক সময় ওয়াইফাই ইন্টারনেট ঠিকমতো পাই না। ঢাকার বাইরে ছাত্র-ছাত্রীদের তো আরও বেশি সমস্যা।

আরেকটা সমস্যা হলো–বাড়ির পরিবেশ তো সবার এক নয়। অনলাইনে ক্লাস, পড়াশোনা করতে গেলে তো তার একটা আলাদা জায়গা লাগে। অনেকের পরিবার একটা ঘরে থাকে, তার পক্ষে এটা সম্ভব হয় না। অনেক ছেলেমেয়ে নেটওয়ার্কের খোঁজে বাইরে আসে, নদীর পাড়ে যায় নানা জায়গায় ট্রাই করে। এগুলোর কারণে আমরা অনলাইন ক্লাস নিলেও বহু ছেলে-মেয়ে ক্লাস করতে পারেনি। পরীক্ষাটা সংক্ষিপ্ত আকারে হয়েছে, পরীক্ষাটাও আমরা ঠিকমতো নিতে পারিনি। যে পরীক্ষাগুলো নিয়েছি, তারা সবাই পরীক্ষা দিয়েছে; কিন্তু নিজেরাই সন্তুষ্ট নয়।

অনলাইনে এই এক্সারসাইজটা কাজে লাগবে, অনেকেই নতুন এক ডাইমেনশনের সঙ্গে পরিচিত হলো। অনলাইনে এখন ইন্টারন্যাশনালি অনেককিছুতেই সংযুক্ত হওয়া সম্ভব হয়। অনেক ছেলে-মেয়েরাও বুঝতে পারছে যে, অনেককিছুই অনলাইনে রয়েছে যা নিয়ে রিসার্চ করা যায়; কিন্তু সবার পক্ষে তো আর্থিকভাবে সম্ভব নয়। এখানেই রাষ্ট্রের একটা দায়িত্ব। এখানে রাষ্ট্র দুইভাবে দায়িত্বহীন ভূমিকায় ছিল। প্রথম দায়িত্বহীনতা হচ্ছে–আমরা সারাক্ষণ শুনি যে, বাংলাদেশ ডিজিটাল হচ্ছে, সেদিনও শুনলাম মন্ত্রীসাহেব খুব গর্বের সঙ্গে বলছেন যে, বাংলাদেশ করোনাকালে ডিজিটাল টেকনোলজিতে খুব ভালো কাজ করেছে; কিন্তু যে তথ্যটা তারা গোপন করে সেটা হলো–পৃথিবীর মধ্যে সবচেয়ে নিচে ইন্টারনেট স্পিড রয়েছে যেসব দেশে, বাংলাদেশ রয়েছে তার মধ্যে। সাউথ এশিয়ার মধ্যেও সবচেয়ে খারাপ অবস্থা। এটা দেখার তো দায়িত্ব রাষ্ট্রের। এজন্য বিভিন্ন টেকনিক্যাল উদ্যোগ তো রাষ্ট্রের নেওয়া দরকার। আমরা তো হাজার হাজার কোটি টাকার আইটি প্রজেক্টের কথা শুনি; কিন্তু তার ফলাফল দেখতে পাচ্ছি না। এটা হচ্ছে একটা সমস্যা। আরেকটা সমস্যা হচ্ছে–যেসব ছেলে-মেয়ের সামর্থ্য নেই, তাদের করোনার সময় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বা শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে একটা সার্পোট দেওয়া দরকার ছিল। সেটা দেওয়া হয়নি।

আমরা আমাদের বিভাগে যেমন কিছু কিছু উদ্যোগ নিয়েছি। যেমন–যারা মোবাইলটা কিনতে পারছে না, তাদেরকে কিছুটা সাপোর্ট দেওয়া, যাতে মোবাইলটা আপাতত কিনতে পারে। কিংবা যাদের পক্ষে ল্যাপটপ কেনা সম্ভব, তারা যাতে কম পয়সা দিয়ে ল্যাপটপটা কিনতে পারে। এ রকম নানাভাবে আমরা সহায়তা করার চেষ্টা করেছি; কিন্তু এটা তো পদ্ধতি হতে পারে না। পদ্ধতি হতে হবে–রাষ্ট্রীয় একটা পরিকল্পনা থাকতে হবে। যখনই করোনা এলো, অনলাইনে পরীক্ষা হচ্ছে, তখন বিশ্ববিদ্যালয় কিংবা শিক্ষা মন্ত্রণালয় তাদের একটা সমন্বিত পরিকল্পনা দরকার ছিল, সেটা হয়নি। করোনার মধ্যে যারা অস্বচ্ছল, তাদের অনেকের কাজ চলে গেছে। আয় নাই–এ রকম একটা অবস্থায় কিন্তু কোটি কোটি মানুষ ছিল। রাষ্ট্র তাদের ব্যাপারে কোনো দায়িত্বই নেয়নি। যেখানে রাষ্ট্র সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের ব্যাপারে এত উদাসীন। এ রকম নির্লিপ্ত এবং উদাসীন রাষ্ট্র পৃথিবীতে খুব কমই পাওয়া গেছে। যারা করোনার সময় জনগণের ন্যূনতম সমর্থন দেওয়ার জন্য চেষ্টা করেনি। বরং উল্টো কয়েক লাখ মানুষের চাকরি চলে গেল, আর বহু লাখ মানুষের আয় কমে গেছে। এ অবস্থায় রাষ্ট্র কোনো সমর্থন দেওয়ার বদলে বরং সমর্থন দিয়েছে চাকরি থেকে ছাঁটাই করার মতো বিষয়কে। গার্মেন্টসে ছাঁটাই হয়ে গেল কয়েক লাখ। পাটকল বন্ধ হয়ে গেল, চিনিকল বন্ধ হয়ে গেল। তাদের সন্তানদের তো লেখাপড়া বন্ধ। বিশেষ করে অনলাইনে করোনাকালে তো লেখাপড়ার খরচ অনেক বেড়ে গেছে। কাজেই পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে সর্বজন শিক্ষার যে প্রয়োজনের কথা বললাম, রাষ্ট্রের দায়িত্বটা এখানে প্রধান।

রাষ্ট্র যদি দায়িত্ব নেয়, তাহলে অন্যান্য যেসব প্রতিষ্ঠানের দায়িত্ব নেওয়া উচিত, তারাও তখন বাধ্য হবে। রাষ্ট্র যখন নির্লিপ্ত থাকবে, তখন অন্যান্য মন্ত্রণালয়, বিভাগ তাদেরও নির্লিপ্ততা থাকবে। তার ফলে প্রত্যেকের মধ্যে দেখা যায় যে, যার যেমন সামর্থ্য সে অনুযায়ী সে পারল অন্যরা পারল না। করোনাকালে বৈষম্যটা আরও বেড়ে গেল। যাদের এক্সেস আছে, ক্ষমতা আছে, তারা প্রতিযোগিতায় অনেকদূর এগিয়ে গেল। যাদের সামর্থ্য নাই, তারা পিছিয়ে পড়ল। যেমন–আমাদের সামনে যদি ফিজিক্যাল ক্লাস থাকত, তাহলে তাদের মধ্যে বৈষম্য যতটা থাকত, করোনার কারণে তাদের লেখাপড়ার ধরনে বৈষম্যটা আরও অনেক বেড়ে গেল। এটাই হচ্ছে এ সময়ের পরিস্থিতি।

(চলবে)

সাক্ষাৎকারে আনু মুহাম্মদ (পর্ব ১)

সাক্ষাৎকারে আনু মুহাম্মদ (পর্ব ২)

সাক্ষাৎকারে আনু মুহাম্মদ (শেষ পর্ব)

 

Header Ad
Header Ad

এই ফটো তোলোস কেন? আদালত চত্বরে শাহজাহান ওমর  

ঝালকাঠি-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য শাহজাহান ওমর। ছবিঃ সংগৃহীত

বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে রাজধানীর আদাবর থানায় দায়েরকৃত রুবেল হত্যা মামলায় ঝালকাঠি-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য শাহজাহান ওমর, সাবেক আইজিপি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন, সাবেক ডিএমপি কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়াকে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে।

বুধবার (৫ ফেব্রুয়ারি) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট এম. এ আজহারুল ইসলামের আদালত গ্রেফতার দেখানোর এ আদেশ দেন।

এদিন সকালে আসামিদের আদালতে হাজির করে উক্ত মামলায় গ্রেফতার দেখানোর আবেদন করেন তদন্তকারী কর্মকর্তা। পরে সে আবেদন মঞ্জুর করেন বিচারক।। সোয়া ৯ টার পর তাদের এজলাসে তোলা হয়। তিন জনের মধ্যে সামনে ছিলেন শাহজাহান ওমর।

এই সময় সাংবাদিকরা তাদের ছবি তুলতে গেলে। তখন শাহজাহান ওমর বলেন, ‘এই ফটো তোলোস কেন?’ পরে তাদের এজলাসে নিয়ে যাওয়া হয়।

সেখানে অনেকটাই স্বাভাবিক ছিলেন শাহজাহান ওমর। আইনজীবী-পুলিশ কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে সময় পার করেন। কখনও হেসেছেন। আইনজীবীদের কাছে মামলার বিষয়ে খোঁজখবর নেন। জানতে চান তিনি এজাহারনামীয় আসামি কি না।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, ছাত্র আন্দোলনের সময় গত ৫ আগস্ট রুবেলসহ কয়েকশ ছাত্র-জনতা সকাল ১১টার দিকে আদাবর থানাধীন রিংরোড এলাকায় প্রতিবাদী মিছিল বের করে। এসময় পুলিশ, আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, শ্রমিক লীগ, তাঁতীলীগ, কৃষকলীগ, মৎস্যজীবী লীগের নেতাকর্মীরা গুলি চালায়। এতে রুবেল গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান।

এ ঘটনায় ২২ আগস্ট আদাবর থানায় হত্যা মামলা করেন রুবেলের বাবা রফিকুল ইসলাম।

Header Ad
Header Ad

মনে হচ্ছে বিবিসি বাংলা গণহত্যাকারী শেখ হাসিনার ভক্ত : প্রেস সচিব  

প্রধান উপদেষ্টা ড. মোহাম্মদ ইউনূসের প্রেস সচিব শফিকুল আলম। ছবিঃ সংগৃহীত

মনে হচ্ছে বিবিসি বাংলা ক্ষমতাচ্যুত স্বৈরশাসক এবং গণহত্যাকারী শেখ হাসিনার ভক্ত হয়ে গেছে বলে মন্তব্য করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মোহাম্মদ ইউনূসের প্রেস সচিব শফিকুল আলম।

বুধবার (০৫ ফেব্রুয়ারি) সকালে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক প্রোফাইলে এক পোস্টে এ মন্তব্য করেন তিনি।

পোস্টে তিনি লিখেছেন, সংবাদ মাধ্যমটি (বিবিসি বাংলা) যখন শেখ হাসিনার বিষয়ে লেখে, তখন তার ভারতে পালিয়ে যাওয়ার পটভূটি বাদ দেয়। আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর উনি ভারতে চলে গেছেন এমন শব্দ ব্যবহার করতে তারা অধিকতর পছন্দ করে। বাস্তবতা হচ্ছে শেখ হাসিনা অসংখ্য শিশু হত্যা, নজিরবিহীন সহিংসতা, লুণ্ঠন, দুর্নীতি, বিচারবহির্ভূত হত্যা এবং তিন হাজারের বেশি মানুষকে গুম করে ভারতে পালিয়ে গেছেন।

তিনি লেখেন, গত সপ্তাহে শেখ হাসিনাকে নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ। নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের উদ্ধৃতি দিয়ে সংস্থাটি বলছে, শেখ হাসিনা তার দীর্ঘ ১৫ বছরের শাসনামলে হত্যা এবং গুমের নির্দেশ দিয়েছিলেন। কিন্তু বিবিসি বাংলার প্রতিবেদনে এই গুরুত্বপূর্ণ অংশের কিছুই উল্লেখ ছিল না। তারা বিপ্লবের পরে গণগ্রেপ্তার নিয়ে কথা বলতে বেশি পছন্দ করে।

শফিকুল আলম লেখেন, কোনো গণগ্রেপ্তার হয়েছে? কতজনকে গত ছয় মাসে গ্রেপ্তার করা হয়েছে? আমরা জানতাম যে ২০২৩ সালের ২৮ অক্টোবর পুলিশ বিএনপির সমাবেশকে জোরপূর্বক ছত্রভঙ্গ করেছিল। তারপর কমপক্ষে ২৫ হাজার জনকে গ্রেপ্তার করেছিল।

প্রেস সচিব আরও লিখেছেন, মনে হচ্ছে বিবিসি বাংলা গণহত্যাকারী শেখ হাসিনাকে একটি নিখুঁত প্ল্যাটফর্ম দিয়েছে। গতকাল তারা একটি সংবাদ প্রকাশ করেছে। সেখানে তারা বলেছে যে, হাসিনা নয়াদিল্লি থেকে ছাত্রদের সঙ্গে কথা বলবেন। প্রকৃতপক্ষে, এটি ‘বাংলার কসাইয়ের’ জন্য একটি নিখুঁত প্ল্যাটফর্ম! এটি কি কখনো নির্বাসিত বিএনপি নেতা তারেক রহমানকে একই রকম প্ল্যাটফর্ম দিয়েছে? হাসিনার স্বৈরশাসনের আমলে তারেক রহমান লন্ডনে কীভাবে সময় কাটাচ্ছিলেন সে সম্পর্কে লিখেছিল? এটি কি তার সাক্ষাৎকার নিয়েছিল?

Header Ad
Header Ad

কুয়াকাটা পৌর যুবদলের সাধারণ সম্পাদক জহিরুল ইসলাম মিরন ও

পটুয়াখালীতে বাংলাভিশনের সাংবাদিককে কুপিয়ে জখম  

বাংলাভিশন টেলিভিশনের সাংবাদিক জহিরুল ইসলাম মিরন। ছবিঃ সংগৃহীত

বাংলাভিশন টেলিভিশনের পটুয়াখালী জেলার কলাপাড়া উপজেলা প্রতিনিধি ও কুয়াকাটা পৌর যুবদলের সাধারণ সম্পাদক জহিরুল ইসলাম মিরনকে বেধড়ক কুপিয়ে গুরুতর জখম করা হয়েছে।

মিরনের শরীরে অসংখ্য কোপের চিহ্ন রয়েছে। তার এক হাতের রগ কেটে দেওয়া হয়েছে, অন্য হাতের কব্জি ঝুলে গেছে। মাথা, কপাল ও পেটে গুরুতর আঘাতের ক্ষতচিহ্ন দেখা গেছে।

মঙ্গলবার (৪ ফেব্রুয়ারি) দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে কুয়াকাটা পৌরসভায় নিজ বাসার সামনে সশস্ত্র দুর্বৃত্তরা এ হামলা চালায়।

মুমূর্ষু অবস্থায় স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে কলাপাড়া হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখান থেকে চিকিৎসক উন্নত চিকিৎসার জন্য মিরনকে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেন। মিরনের পরিবার জানায়, তিনি ঢাকা থেকে রাতে কুয়াকাটা ফিরেছিলেন। কুয়াকাটা বাসস্ট্যান্ড থেকে বাসায় ফেরার পথে বাসার সামনে পৌঁছামাত্র দুর্বৃত্তরা এলোপাতাড়ি কুপিয়ে তাকে জখম করে। চিৎকার দিয়ে মিরন মাটিতে লুটিয়ে পড়লে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করেন।

মিরনের শরীরে অসংখ্য কোপের চিহ্ন রয়েছে। এক হাতে রগ কেটে দেয়া হয়েছে, অন্য হাতের কব্জি ঝুলে গেছে। মাথা, কপাল ও পেটে গুরুতর আঘাতের ক্ষতচিহ্ন দেখা গেছে।

মহিপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তরিকুল ইসলাম জানান, ঘটনার খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। আসামিদের শনাক্ত ও গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

এই ফটো তোলোস কেন? আদালত চত্বরে শাহজাহান ওমর  
মনে হচ্ছে বিবিসি বাংলা গণহত্যাকারী শেখ হাসিনার ভক্ত : প্রেস সচিব  
পটুয়াখালীতে বাংলাভিশনের সাংবাদিককে কুপিয়ে জখম  
উত্তরবঙ্গে অনির্দিষ্টকালের জন্য তেল বিক্রি বন্ধ
বিশ্ব ইজতেমার দ্বিতীয় ধাপের আখেরি মোনাজাত আজ  
শেখ হাসিনার বক্তব্য প্রচার নিয়ে কড়া বার্তা হাসনাত আবদুল্লাহর  
শেখ হাসিনাকে হত্যাচেষ্টা মামলার রায় আজ    
সুইডেনে স্কুলে বন্দুক হামলা নিহত ১০ জন  
বিএসইসির সাবেক চেয়ারম্যান শিবলী রুবাইয়াত গ্রেফতার  
জাবিতে পোষ্য কোটা সম্পূর্ণরূপে বাতিলের ঘোষণা  
মুসলিম লীগ যেমন বিলুপ্ত হয়েছে, আওয়ামী লীগও বিলুপ্ত হবে : সলিমুল্লাহ খান
ছাত্রলীগ নেতা ইমতিয়াজ রাব্বীসহ ৮ বুয়েট শিক্ষার্থী আজীবন বহিষ্কার  
জীবননগর সীমান্তে অবৈধ অনুপ্রবেশের দায়ে বাংলাদেশি যুবক আটক
নগদের সাবেক চেয়ারম্যান-এমডিসহ ২৪ জনের বিরুদ্ধে ৬৪৫ কোটি টাকা জালিয়াতির মামলা
৮ ফেব্রুয়ারি থেকে চালু হচ্ছে নতুন মার্কিন ভিসা আবেদন প্রক্রিয়া
ক্যাম্পাসের মসজিদে কোরআন পুড়িয়েছে রাবি ছাত্র, জানা গেল পরিচয়
মার্কিন ভিসার জন্য প্রার্থনা করতে মন্দিরে ভিড় ভারতীয়দের
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে কুরআন পোড়ানোর ঘটনায় মূল সন্দেহভাজন আটক
পুলিশ ভেরিফিকেশন ছাড়াই পাসপোর্ট ইস্যু ও নবায়ন
বৃহস্পতিবার থেকে রাজধানীতে ২১ কোম্পানির বাস চলবে টিকিট-কাউন্টার ভিত্তিতে