বুধবার, ২ এপ্রিল ২০২৫ | ১৯ চৈত্র ১৪৩১
Dhaka Prokash

রাজউক: গ্রাহকের নথির সুরক্ষা কতদূর?

কোনোভাবেই রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) নথির সুরক্ষা নিশ্চিত করা যাচ্ছে না। নিয়মিত গ্রাহকদের ব্যক্তিগত তথ্য গায়েব হওয়া, ফাইল গায়েব হয়ে যাওয়ার ঘটনা ঘটেই যাচ্ছে। সম্প্রতি রেকর্ডরুমে থাকার কথা এমন ১৫০টি ফাইল কর্মচারীদের কক্ষ থেকে উদ্ধার করেছে রাজউকেরই ভ্রাম্যমান আদালত।

রাজউকে গ্রাহকদের নথি চুরি বা গায়েব হওয়া বন্ধ করতে সিস্টেম ডিজিটালাইজ করা হয়েছিল। কিন্তু তারপরও সম্প্রতি ৩০ হাজার গ্রাহকের নথি চুরি হয়েছে। এ অবস্থায় হাইকোর্টও ব্যাখ্যাও চেয়েছে রাজউকের কাছে।

এরও আগে বহুবার রাজউক থেকে নথি হারিয়েছে। অভিযোগ ছিল, রাজউকের ভেতরের একটি চক্রই এইসব নথি চুরি করে। সম্প্রতি কর্মচারীদের কক্ষ থেকে ১৫০টি ফাইল উদ্ধারের পর সেই অভিযোগ সত্যি প্রমাণিত হলো বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

সংশ্লিষ্টদের অভিযোগ, নথি গায়েব করে তারপর ভবন নির্মাণে অনিয়ম করা হয়। অনিয়ম করলেও রাজউকের কিছু বলার থাকে না। কারণ রাজউকের কাছে কোন প্রমাণ নাই। আর ভবন মালিক দাবি করেন যে প্ল্যান অনুযায়ীই তিনি নির্মাণকাজ করছেন।

অন্যদিকে, পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পের যে ১৫০টি ফাইল উদ্ধার করা হয়েছে সেসব ফাইলের ক্ষেত্রে গ্রাহকদের হয়রানি করে ঘুষ চাওয়া হয়। ঘুষ না পাওয়া পর্যন্ত এসব ফাইল আর খুঁজে পাওয়া যায় না। কাঙ্ক্ষিত টাকা দিলে ফাইল পাওয়া যায়।

এমন অভিযোগ শতশত। নাম প্রকাশ না করার শর্তে পূর্বাচলের এক প্লট বরাদ্দপ্রাপ্ত ঢাকাপ্রকাশ-কে বলেন, লিজ দলিল করতে চেয়েছিলাম। কিন্তু রাজউক থেকে বলা হয় ফাইল খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। কিন্তু যখন ঘুষ দিলাম তখন ঠিকই ফাইল পাওয়া গেল।

সংশ্লিষ্টরা জানান, নথি গায়েব হওয়ার ঘটনা নিয়মিত ঘটার কারণেই ২০১৯ সালে অনলাইনে সেবা দেওয়া শুরু করে রাজউক। কিন্তু অনলাইনে যাওয়ার পরই সবচেয়ে বেশি সংখ্যক গ্রাহকের নথি গায়েব হওয়ার ঘটনা ঘটে।

অনলাইনের নথি প্রিণ্ট করে সংরক্ষণ করবে রাজউক

রাজউকের সার্ভার থেকে গায়েব হওয়া গ্রাহকের ৩০ হাজার নথি উদ্ধার করার পর রাজউক চেয়ারম্যান মো. আনিছুর রহমান মিঞা বলেন, এখন থেকে অনলাইনের তথ্য প্রিণ্ট করেও সংরক্ষণ করা হবে। পাশাপাশি ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও আশ্বস্ত করেন তিনি।

নথি গায়েব হওয়ার পর রাজউক জিডি করে নিশ্চুপ থাকার পর যখন বিষয়টি গণমাধ্যমে প্রকাশিত হলো তারপর ঘটনা তদন্তে রাজউকের সঙ্গে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট), সাইবার পুলিশ ও কম্পিউটার কাউন্সিলও ‍যুক্ত হয়। এখনও এসব প্রতিষ্ঠান এ ব্যাপারে কাজ করছে জানান রাজউক চেয়ারম্যান।

এ প্রসঙ্গে রাজউক চেয়ারম্যান আরও জানান, তদন্তকারী সংস্থাগুলো প্রাথমিকভাবে জানিয়েছে সার্ভার হ্যাক করা হয়েছে। কিন্তু কারা করেছে তা এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

রাজউকের ভেতরেই গড়ে উঠেছে শক্তিশালী চক্র

নথি গায়েবের ঘটনা একরকম নিয়মিত হলেও রাজউকের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ কেন জানি সবসময় নীরব থেকেছে বলেই অভিযোগ ভুক্তোভোগীদের। কোনো কারণে ঘটনা ফাঁস হয়ে গেলে তখন একটু নড়েচড়ে বসে। সংশ্লিষ্টদের অভিযোগ, এসব নথি গায়েবে রাজউকের ভেতরেই একটি চক্র গড়ে উঠেছে।

এক সঙ্গে ৩০ হাজার গ্রাহকের নথি গায়েব হওয়ার পরও রাজউক নীরবই ছিল। ঘটনার এক সপ্তাহ পার হয়ে গেলেও রাজউক ঘটনা তদন্তে কোনও তদন্ত কমিটিও করেনি। শুধু একটি জিডি করে চুপচাপ ছিল সংস্থাটি। অবশেষে হাইকোর্ট হস্তক্ষেপ করে।

অনলাইনেও নথি গায়েবের ঘটনায় নগরপরিকল্পনাবিদরা রাজউকের বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ করে বলছেন, যেকোন অনলাইন স্টোরেজের ক্ষেত্রে ব্যাকআপ থাকে। কিন্তু এক্ষেত্রে ব্যাকআপ নাই কেন?

সাধারণত নাথি গায়েবের বিষয়ে রাজউকের কেউই গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলতে রাজি হননা। সম্প্রতি ১৫০টি ফাইল কর্মচারীদের কক্ষ থেকে উদ্ধারে নেতৃত্ব দেন রাজউকের সদস্য (এস্টেট) মোহাম্মদ নূরুল ইসলাম। উদ্ধারের পর নূরুল ইসলাম বলেন, ফাইলগুলো রাজউকের অ্যানেক্স ভবন থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। এসব ফাইল রেকর্ডরুমে রাখতে বলা হয়েছে।

জানা যায়, অ্যানেক্স ভবন থেকে এর আগেও ৭০টি ফাইল উদ্ধার করা হয়। রাজউকের তৎকালীন চেয়ারম্যান সুলতান আহমেদের নেতৃত্বে তখন অভিযান পরিচালিত হয়। এঘটনায় মোট নয়জনের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) মামলা হয়েছিল।

ওই মামলার এজহারে রাজউক উল্লেখ করে, নথির গতিবিধি খাতায় নিবন্ধন করা হয়নি এবং কাজ শেষে সেগুলো রেকর্ডরুমে না পাঠিয়ে সরিয়ে রাখেন আসামীরা। এছাড়া বিভিন্ন কর্মকর্তার সিল অবৈধভাবে তৈরি করে জালিয়াতির মাধ্যমে বেআইনিভবে ভুয়া নথি তৈরি ও লিজ দলিল সম্পাদন করে সরকারি সম্পত্তি আত্মসাতের চেষ্টা করা হয়েছিল।

জানতে চাইলে পরিবেশ ও নগর পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করা সংগঠন পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলনের (পবা) চেয়ারম্যান আবু নাসের খান ঢাকাপ্রকাশ-কে বলেন, রাজউক থেকে নথি গায়েবের অনেক ঘটনা আগেও ঘটেছে। কিন্তু কোন ঘটনারই সুরাহা রাজউক করতে পারেনি বা করেনি।

আরইউ/এএস

Header Ad
Header Ad

ময়মনসিংহে সিনেমা হলে যান্ত্রিক ত্রুটির জেরে দর্শকদের ভাঙচুর

ছবি: সংগৃহীত

ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জে একটি সিনেমা হলে যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে প্রচার বন্ধ হয়ে গেলে ক্ষুব্ধ দর্শকেরা ব্যাপক ভাঙচুর চালান। গতকাল মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে ঈশ্বরগঞ্জ পৌর বাজারের মাছ মহালে অবস্থিত সোনালি টকিজ সিনেমা হলে এই ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাত দিয়ে জানা যায়, ঈদ উপলক্ষে চলমান ‘বরবাদ’ সিনেমার সন্ধ্যার শো দেখতে বিভিন্ন এলাকা থেকে প্রচুর দর্শক সমাগম ঘটে। ডিসি, বেলকনি এবং প্রথম শ্রেণির টিকিট বিক্রি হয়ে যায়। কিন্তু সিনেমার মাঝপথে সাউন্ড সিস্টেমে যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা দেয়, ফলে সিনেমা প্রদর্শন বন্ধ হয়ে যায়। কর্তৃপক্ষ অনেক চেষ্টা করেও সমস্যার সমাধান করতে পারেনি। দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষার পর কোনো আশার আলো দেখতে না পেয়ে ক্ষুব্ধ দর্শকেরা হলে ভাঙচুর শুরু করেন।

প্রত্যক্ষদর্শীরা আরও জানান, রাত সাড়ে ৮টা থেকে প্রায় আধা ঘণ্টা ধরে চলা এই তাণ্ডবে সিনেমা হলের বসার বেঞ্চ, চেয়ার ও টিকিট কাউন্টার ভাঙচুর করা হয়। পাশাপাশি হলের দেয়ালে লাগানো পোস্টার ছিঁড়ে ফেলে নিচতলায় আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। স্থানীয় একদল যুবক বিক্ষুব্ধ দর্শকদের ধাওয়া করলে তারা এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যান।

কিছু দর্শক অভিযোগ করেন, যান্ত্রিক ত্রুটির সময় হল কর্তৃপক্ষ কোনো আশ্বস্ত না করে কলাপসিবল গেটে তালা মেরে চলে যান। এতে দর্শকেরা আরও বেশি ক্ষুব্ধ হয়ে পড়েন এবং হলের বিভিন্ন অংশ ভাঙচুর করেন।

ঘটনার সময় হলে উপস্থিত থাকা একজন কর্মী নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, উত্তেজিত দর্শকেরা তাকে মারধর করতে উদ্যত হন। তবে তিনি দ্রুত নিয়ন্ত্রণ কক্ষের লাইট বন্ধ করে দরজায় তালা লাগিয়ে ভেতরে বসে থাকায় অল্পের জন্য রক্ষা পান।

ঈশ্বরগঞ্জ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) প্রজিত কুমার দাস জানান, সিনেমা চলার সময় সাউন্ড সিস্টেমে যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা দেয়। সেটি ঠিক করতে না পেরে কর্তৃপক্ষ বাইরে থেকে সাউন্ড সিস্টেম ভাড়া আনতে যান। কিন্তু দর্শকেরা কলাপসিবল গেটে তালা লাগানো দেখে ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন এবং পরবর্তীতে ভাঙচুর চালান।

এদিকে, ঘটনার পর সিনেমা হলের দায়িত্বে থাকা হারুনুর রশিদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে জানা যায়, তিনি অসুস্থ হয়ে বিশ্রামে আছেন। হলের অন্যান্য কর্মীরাও ভয়ে কথা বলতে অনীহা প্রকাশ করেন। পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এই ঘটনায় তদন্ত চলছে এবং দোষীদের চিহ্নিত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Header Ad
Header Ad

সেভেন সিস্টার্স নিয়ে ড. ইউনূসের মন্তব্যে ভারতীয় রাজনীতিবিদদের তীব্র প্রতিক্রিয়া

সেভেন সিস্টার্স নিয়ে ড. ইউনূসের মন্তব্যে ভারতীয় রাজনীতিবিদদের তীব্র প্রতিক্রিয়া। ছবি: সংগৃহীত

সম্প্রতি চীন সফরে গিয়ে এক বক্তৃতায় ড. মুহাম্মদ ইউনূস ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় সাতটি রাজ্যকে (সেভেন সিস্টার্স) স্থলবেষ্টিত বলে উল্লেখ করেন এবং বাংলাদেশকে এ অঞ্চলের জন্য সমুদ্রের অভিভাবক হিসেবে বর্ণনা করেন।

ড. ইউনূস তার বক্তব্যে বলেন, ভারতের পূর্বাঞ্চলে অবস্থিত সেভেন সিস্টার্স নামে পরিচিত সাতটি রাজ্য সম্পূর্ণরূপে স্থলবেষ্টিত। সমুদ্রের সঙ্গে তাদের কোনো সরাসরি সংযোগ নেই। ফলে বাংলাদেশ এই অঞ্চলের জন্য সমুদ্রের একমাত্র প্রবেশদ্বার এবং অভিভাবক হিসেবে ভূমিকা রাখতে পারে।

তার এই মন্তব্য ভারতের রাজনৈতিক নেতা ও কূটনীতিকদের মধ্যে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি এক প্রতিবেদনে জানায়, বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার বক্তব্যকে অনেক ভারতীয় রাজনীতিবিদ হতাশাজনক এবং নিরাপত্তার জন্য চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখছেন।

ভারতের আসামের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা মন্তব্য করেছেন, ড. ইউনূসের বক্তব্য ভারতের ‘চিকেনস নেক’ করিডোরের দুর্বলতা নিয়ে পাকিস্তান ও চীনের দীর্ঘদিনের প্রচারণাকে উসকে দিতে পারে। তিনি আরও বলেন, উত্তর-পূর্ব ভারতের সঙ্গে মূল ভূখণ্ডের সংযোগ আরও জোরদার করতে শক্তিশালী রেল ও সড়ক অবকাঠামো নির্মাণ অত্যন্ত জরুরি।

ত্রিপুরার আদিবাসী দল টিপ্রা মোথার নেতা প্রদ্যোত মানিক্য বলেন, ‘১৯৪৭ সালে চট্টগ্রাম ভারতের অংশ হলে আজ এ সমস্যা হতো না। আমাদের বাংলাদেশের পরিবর্তে নিজস্ব সমুদ্রবন্দর প্রয়োজন।’

বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতের সাবেক হাইকমিশনার বীণা সিক্রি বলেন, ‘উত্তর-পূর্ব ভারতের সমুদ্র প্রবেশাধিকার নিয়ে বাংলাদেশের সঙ্গে ইতোমধ্যেই চুক্তি রয়েছে। প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের মন্তব্য অত্যন্ত হতাশাজনক এবং তিনি এ ধরনের মন্তব্য করার অধিকার রাখেন না।’

ড. ইউনূসের বক্তব্য নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন একাধিক কংগ্রেস নেতা। কংগ্রেসের শীর্ষ নেতা পবন খেরা মন্তব্য করেছেন, ‘বাংলাদেশের এ ধরনের অবস্থান উত্তর-পূর্ব ভারতের নিরাপত্তার জন্য হুমকি সৃষ্টি করতে পারে।’

Header Ad
Header Ad

মিয়ানমারের ভূমিকম্পে এক ইমামের ১৭০ স্বজনের মৃত্যু

সাবেক ইমাম সোয়ে নেই ওও। ছবি: সংগৃহীত

পবিত্র ঈদুল ফিতর আসন্ন। বিদায় নিচ্ছে রহমত, বরকত ও মাগফিরাতের মাস রমজান। শেষ জুমার নামাজ আদায় করতে মুসলমানদের মধ্যে আগ্রহ ছিল চরমে। কিন্তু কে জানত, এই জুমাই শত শত মুসল্লির জীবনের শেষ জুমা হয়ে উঠবে!

গত ২৮ মার্চ, শুক্রবার স্থানীয় সময় দুপুর ১২টা ৫১ মিনিটে মিয়ানমারের মধ্যাঞ্চলে ভয়াবহ ভূমিকম্প আঘাত হানে। সাগাইং অঞ্চলের পাঁচটি মসজিদে তখন নামাজ আদায় করছিলেন অসংখ্য মুসল্লি। শক্তিশালী ভূমিকম্পে তিনটি মসজিদ ধসে পড়ে, যার মধ্যে অন্যতম ছিল মায়োমা মসজিদ। এই মসজিদে নামাজরত প্রায় সবাই প্রাণ হারান।

মায়োমা মসজিদের সাবেক ইমাম সোয়ে নাই ওও তখন মিয়ানমার-থাইল্যান্ড সীমান্তবর্তী শহর মায়ে সোতে অবস্থান করছিলেন। সেখানেও তিনি ভূমিকম্প অনুভব করেন, তবে বুঝতে পারেননি কী পরিমাণ বিপর্যয় তার অপেক্ষায় রয়েছে।

সোয়ে নাই ওও একসময় মিয়ানমারের ইমাম ছিলেন, তবে ২০২১ সালের সামরিক অভ্যুত্থানের পর দেশ ছেড়ে থাইল্যান্ডে পালিয়ে যান এবং বর্তমানে একটি মানবাধিকার সংস্থায় কাজ করছেন। ভূমিকম্পের পরের দিনগুলোতে একের পর এক শোকসংবাদ পেতে থাকেন তিনি। এখন পর্যন্ত তিনি জানতে পেরেছেন, তার প্রায় ১৭০ জন আত্মীয়, বন্ধু ও প্রাক্তন মুসল্লি মারা গেছেন। তাদের বেশিরভাগই মসজিদে অবস্থান করছিলেন, অনেকেই মুসলিম সম্প্রদায়ের নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিত্ব ছিলেন।

কান্নাজড়িত কণ্ঠে সোয়ে নাই ওও বিবিসিকে বলেন, ‘আমি প্রাণ হারানো সব মানুষের কথা ভাবছি। তাদের শিশুদের কথা ভাবছি... এই শোক সহ্য করা অসম্ভব।’

সাগাইং অঞ্চল মূলত বৌদ্ধ মন্দিরের জন্য পরিচিত হলেও এখানে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক মুসলমান দীর্ঘদিন ধরে বসবাস করে আসছেন। নানা নিপীড়ন ও নির্যাতন সত্ত্বেও তারা এ অঞ্চলে নিজেদের অস্তিত্ব টিকিয়ে রেখেছেন।

মিয়ানমারের জান্তা সরকারের দেওয়া পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ভূমিকম্পের সময় মসজিদে নামাজরত অবস্থায় প্রায় ৫০০ মুসলমান মারা গেছেন। প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে, সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে মসজিদ সংলগ্ন মায়োমা স্ট্রিট ও শহরতলি। ভূমিকম্পে বহু ভবন ধসে পড়েছে, রাস্তাঘাট বিধ্বস্ত হয়েছে।

এই ভূমিকম্পে মিয়ানমারের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর সাগাইং ও মান্দালয়ে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। উদ্ধারকর্মীরা এখনো ধ্বংসস্তূপ থেকে মৃতদেহ উদ্ধার করছেন। নিহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

দেশটির জান্তা সরকার জানিয়েছে, এখন পর্যন্ত ২ হাজার ৭১৯ জনের মৃত্যু নিশ্চিত করা হয়েছে। নিখোঁজ রয়েছেন ৪৪১ জন এবং আহত হয়েছেন ৪ হাজার ৫২১ জন। জান্তা প্রধান মিন অং হ্লাইং এক টেলিভিশন ভাষণে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন, নিহতের সংখ্যা ৩ হাজার ছাড়িয়ে যেতে পারে।

মিয়ানমারের ভূমিকম্পটি ছিল ৭ দশমিক ৭ মাত্রার। এর কেন্দ্রস্থল ছিল মান্দালয় শহর থেকে ১৭.২ কিলোমিটার দূরে এবং ভূ-পৃষ্ঠ থেকে মাত্র ১০ কিলোমিটার গভীরে। প্রথম কম্পনের ১২ মিনিট পর ৬ দশমিক ৪ মাত্রার আফটারশক হয়, যা পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তোলে।

এই বিধ্বংসী ভূমিকম্পে দেশজুড়ে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। উদ্ধারকর্মীরা নিরলস প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন, তবে ধ্বংসস্তূপের নিচে এখনও অনেকের আটকে থাকার আশঙ্কা রয়েছে।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

ময়মনসিংহে সিনেমা হলে যান্ত্রিক ত্রুটির জেরে দর্শকদের ভাঙচুর
সেভেন সিস্টার্স নিয়ে ড. ইউনূসের মন্তব্যে ভারতীয় রাজনীতিবিদদের তীব্র প্রতিক্রিয়া
মিয়ানমারের ভূমিকম্পে এক ইমামের ১৭০ স্বজনের মৃত্যু
ঈদের আনন্দে যমুনার দুর্গম চরে গ্রাম-বাংলার ঘুড়ি উৎসব, আনন্দে মেতে উঠে বিনোদনপ্রেমীরা!
ইমামকে ঘোড়ার গাড়িতে রাজকীয় বিদায়, দেওয়া হলো ৯ লাখ টাকার সংবর্ধনা
লন্ডনে একসঙ্গে দেখা গেলো সাবেক চার আওয়ামী মন্ত্রীকে
ঢাকায় ফিরছে ঈদযাত্রীরা, অনেকে ছুটছেন শহরের বাইরে
চট্টগ্রামের লোহাগাড়ায় আবারও সড়ক দুর্ঘটনা, নিহত ৭
বিটিভিতে আজ প্রচারিত হবে ঈদের বিশেষ ‘ইত্যাদি’
ঈদের ছুটিতে ফাঁকা ঢাকা, নেই যানজটের চিরচেনা দৃশ্য
মাদারীপুরে তিন মোটরসাইকেলের সংঘর্ষে নিহত ৪, আহত ২
থানায় জিডি করলেন ভোক্তা অধিকারের জব্বার মন্ডল
রাশিয়া আমাদের চিরকালের বন্ধু, কখনো শত্রু নয়: চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রী
গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান খালেদা জিয়ার
দ্বিতীয় দফায় মিয়ানমারে ত্রাণ সহায়তা পাঠালো বাংলাদেশ
ভারতে প্রশিক্ষণ প্লেন বিধ্বস্ত, পাইলট আহত
এপ্রিলে ঢাকায় আসছে আইএমএফ প্রতিনিধি দল
জাপানে মেগা ভূমিকম্পের শঙ্কা, প্রাণহানি হতে পারে ৩ লাখ
জুলাই কন্যাদের সম্মানজনক পুরস্কার নিয়ে যা জানাল যুক্তরাষ্ট্র
দুপুরের মধ্যে ৬০ কিমি বেগে ঝড়ের সম্ভাবনা