বৃহস্পতিবার, ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ | ৬ ফাল্গুন ১৪৩১
Dhaka Prokash

‘ম্যানেজ’ করে রাজধানী দাপিয়ে বেড়াচ্ছে অবৈধ লেগুনা

বিভিন্ন মহলকে ম্যানেজ করে নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে রাজধানীর সড়কগুলোতে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে অবৈধ লেগুনা। ভাড়াসহ সুনির্দিষ্ট নীতিমালা না থাকায় ঢাকায় লেগুনা-সংক্রান্ত বিষয়ে কোনো অভিযোগ জানানোর সুযোগও নেই। বেশ আগে সরকারিভাবে ঢাকার সড়ক থেকে লেগুনা তুলে দেওয়ার ঘোষণা এসেছিল। কিন্তু সেই ঘোষণা বেশি দিন কার্যকর থাকেনি। ভাড়াসহ সুনির্দিষ্ট নীতিমালা না থাকায় লেগুনা-সংক্রান্ত বিষয়ে অভিযোগ জানানোর সুযোগ নেই যাত্রীদের। যার কারণে যাত্রীরা নিরুপায় হয়ে এই যানবাহন ব্যবহার করছে।

এদিকে রাজধানীর বিভিন্ন স্থানের মূলসড়কে চলাচলরত লেগুনা চালক ও হেলপাররা অধিকাংশই অপ্রাপ্তবয়স্ক। লাইসেন্সবিহীন বেপরোয়া চালকদের হাতে স্টিয়ারিং জেনেও জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছেন সাধারণ মানুষ। যাত্রীদের অভিযোগ, যথাসময়ে বাস না পাওয়ায় এবং সংশ্লিষ্ট রুটে বাসের সার্ভিস না থাকায় তারা বাধ্য হয়ে এ সব লেগুনায় চলাচল করছে। যার কারণে লেগুনা চালকদের হাতে অনেকটা জিম্মি তারা।

রাজধানীর, বাড্ডা, বাসাবো, ফকিরাপুল, মতিঝিল, মালিবাগ, গুলিস্তান, আদাবর, আসাদগেট, ফার্মগেট, শেরেবাংলা নগর, মিরপুর, তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল ও উত্তরা, আজমপুর, আজিমপুর, লালবাগ, সেকশন, মিরপুর বেড়িবাঁধ, মোহাম্মাদপুরসহ বেশ কিছু এলাকায় ঘুরে দেখা যায় এ সব অবৈধ লেগুনা দেদারছে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে।

খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, লেগুনা চলে ইচ্ছা মতো, ট্রাফিক পুলিশ এসব গাড়ি কম ধরে আর ধরলেও ছেড়ে দেয়। এলাকা ভিত্তিক কিছু রাজনৈতিক নেতা এ সব লেগুনা পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে মিলে মিশে রাস্তায় চলাচল করিয়ে থাকেন। যদিও পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে এ সব ঘটনার সঙ্গে তারা যুক্ত নয়।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকার পলাশী মোড়ে কথা হয় ট্রাফিক পুলিশের এক সার্জেন্টের সঙ্গে। ওই সার্জেন্ট জানান, বেড়িবাঁধ থেকে লালবাগ হয়ে যেসব লেগুনা চলাচল করে এসব লেগুনা ধরার মতো আমাদের ক্ষমতা নেই। কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমাদের উপরের স্যারেরা বলেন, এ সব লেগুনার মালিক বিভিন্ন এলাকার প্রভাবশালী রাজনৈতিক ও জনপ্রতিনিধিরা। এর সঙ্গে সরকারের দলীয় লোকজনও জড়িত রয়েছে বলে জানা যায়। আমরা ছোট চাকরি করি এজন্য এ সবের পেছনে লাগতে চাই না।

ছোট ছোট কিশোরদের দিয়ে এ সব লেগুনা চালনা করে আপনারা আইনগত ব্যবস্থা নেন না কেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, মাঝে মাঝে ওদের ধরে মালিককে জানাই, পরে আবার ছেড়ে দিতে হয় এজন্য এখন আর লেগুনা ধরি না। চাকরি জীবনের শুরু দিকে কয়েকদিন ধরেছি এখন আর ধরি না।

ফার্মেগেটের যাত্রী রবিন, আজিমপুরের যাত্রী নজরুল ও মিরপুর থেকে ইন্দিরা রোডের যাত্রী ইকবাল হোসেন বলেন, রাজধানীর বিভিন্নস্থানে চলাচল লেগুনা চালকদের অধিকাংশই অপ্রাপ্তবয়স্ক। অনেকেরই নেই লাইসেন্স। এ লেগুনা চালকদের হাতে জিম্মি আমাদের মতো হাজার হাজার যাত্রী। লেগুনা কর্তৃপক্ষ যাত্রীদের গলাকাটছে, নিচ্ছে অতিরিক্ত ভাড়া— যা দেখার কেউ নেই। গাড়ির চালকরা রাস্তায় যেমন খুশি তেমনই চলাচল করে। ট্রাফিক পুলিশ ও প্রভাবশালী ব্যক্তিরা এ সব লেগুনার কাছ থেকে চাঁদা আদায় করেন। আর এ ব্যয় মেটাতে লেগুনা মালিকরা যাত্রীদের কাছ থেকে অযৌক্তিকভাবে ভাড়া আদায় করেন। কোনো কারণ ছাড়াই রাজধানীতে লেগুনার ভাড়া বেড়েই চলেছে।

বিআরটিএ এর তথ্য মতে, কয়েক বছর আগে লেগুনাকে মিনিবাস গণ্য করে ভাড়া নির্ধারণে একটি কমিটি গঠন করা হয়। কিন্তু পরে বিআরটিএ’র একটি মিটিং এ লেগুনাকে রুট পারমিট দেওয়া হয় না। এরপর থেকেই মেইন রোডে চলাচলের জন্য এই যানবাহনটিকে অবৈধ হিসেবে গণ্য করা হয়।

বিআরটিএ জানায়, ভবিষ্যতে লেগুনা থাকবে না। এটি উঠে যাবে এই পরিকল্পনা রয়েছে আমাদের। সরকারিভাবে লেগুনাকে বলা হয়, ‘হিউম্যান হলার’ কিন্তু সাধারণ মানুষের ভাষ্য অনুযায়ী এটাকে বলে ‘লেগুনা’।

তাদের হিসেবে, শুধুমাত্র ঢাকায় লেগুনা আছে প্রায় ৫ হজারেরও বেশি। তবে বাস্তবে এ সংখ্যা আরও কয়েক গুণ।

লালবাগ-আজিমপুরে কথা হয় লেগুনার যাত্রী আবুল হোসেনের সঙ্গে। তিনি অভিযোগ করে বলেন, আমার বাসা সেকশন। প্রায় দিন এই রাস্তা দিয়ে চলাচল করি। মাঝে এই রোডে লেগুনা বন্ধ ছিল। ২০২২ সালের শুরুতে নতুন করে বিভিন্ন মহলকে ম্যানেজ করে ও সরকারি নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে এই রাস্তায় চলাচল করছে অবৈধ লেগুনা।

শুধু আজিমপুর নয়— মিরপুর, ফার্মগেট, ধানমন্ডি, যাত্রাবাড়িসহ রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, প্রশাসনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে অবাধে এ সব অবৈধ যানগুলো চলাচল করছে। তাদের ক্ষেত্রে পুলিশের আইনি প্রক্রিয়া একটু কম দেখা গেছে।

নিরাপদ সড়ক আন্দোলনের পর সড়কে শৃঙ্খলা ফেরাতে প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর থেকে ১৭টি নির্দেশনা আসে। সেই নির্দেশনা এখনো বাস্তবায়ন হয়নি। ওই নির্দেশনার পর ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) পক্ষ থেকে বলা হয়, রাজধানীর মূল সড়ক ও রাজপথগুলোতে লেগুনা চলাচল বন্ধের নির্দেশনা দেওয়া হলো। সেই ঘোষণার পর বেশ কিছুদিন বন্ধ থাকলেও আবারো অবাধে চলাচল শুরু করেছে এ সব অবৈধ যানগুলো।

এ সব যানবাহন পরিচালনার কাজে যুক্তরা বেশির ভাগ শিশু-কিশোর ও যুবক বলা যায়, অধিকাংশ চালক ও হেলপার অপ্রাপ্তবয়স্ক। লেগুনা চালক ও হেলপারদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে। তারা বিভিন্ন রোডে মালিকের কথা মতো চলাচল করেন। এবং তাদের লাইনের কোনো ট্রাফিক পুলিশের সদস্যরা এ সব গাড়ি আটকিয়ে রাখেন না। যদি অন্য লাইনে বা রোডে তারা প্রবেশ করে তাহলে সেই জোনের ট্রাফিক পুলিশের সদস্যরা তাদের আটক করলে রাজনৈতিকভাবে ও প্রশাসনিক (পুলিশের) মাধ্যমে এ সব গাড়ি ও চালকদের ছাড়িয়ে নেওয়া হয়।

ফার্মগেটের আনন্দ সিনেমা হলের সামনে কথা হয় ঢাকা মেট্রো-হ ১৪-১৪৫১ নম্বর এর লেগুনা চালক হিরোনের সঙ্গে। হিরোন বলেন, পুলিশে রাস্তায় আটক করলে আমরা মালিককে ফোনে ধরিয়ে দেই। এরপর মালিক তাদের সঙ্গে কি কথা বলে সেটা তো আমাদের জানা নেই।

মিরপুর টু মহাখালী এলাকার লেগুনা চালক নাছির বলেন, আমাদের রোড হলো মিরপুর থেকে মহাখালী পর্যন্ত। এর বাইরে চললে পুলিশে ধরে এজন্য এর বাইরে যাই না।

ফার্মগেট টু নিউমার্কেট রোডের লেগুনার মালিক আহমেদ চুন্নু হক বলেন, পুলিশের কাছ থেকে বিশেষভাবে এসব লেগুনার রুট পারমিট নেওয়া আছে। রুট পারমিট কীভাবে পেলেন এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আপনাকে তো এ সব কথা বলতে পারবো না। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, পুলিশেরও অনেক লোক আমাদের ভাই ব্রাদার। আমাদের ভেতরের খবর আপনাকে বলবো কেন?

এ বিষয়ে ফার্মগেটের আনন্দ পরিবহনের মালিক সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক মো. আশরাফ খান বলেন, আমরা রাস্তায় নিয়ম মেনেই চলাচল করি। আপনাদের কোনো অভিযোগ থাকলে ট্রাফিক বিভাগ বা সিটি করপোরেশনকে বলেন। তা ছাড়া এই ব্যাপারে আপনার সঙ্গে আমরা কথা বলতে চাই না।

জানতে চাইলে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন, রাজধানী ঢাকার গণপরিবহনসহ লেগুনায় প্রতিদিন অতিরিক্ত ভাড়া-নৈরাজ্যের অভিযোগ দেয় যাত্রীরা। দীর্ঘদিন ঢাকায় লেগুনা চললেও এটা কোনো নিয়মের মধ্যে আসেনি। অধিকাংশ চালকদের নেই লাইসেন্স। এই যানবাহন চলাচলের জন্য অনেক প্রভাবশালীরা যুক্ত রয়েছে যার কারণে সাধারণ যাত্রীরা এদের কাছে জিম্মি। যাত্রীদের ইচ্ছা থাকলেও এর বিরুদ্ধে কিছু করতে পারে না।

রাজধানীতে লেগুনার অবাধ চলাচল সম্পর্কে জানতে চাইলে অতিরিক্ত কমিশনার (ট্রাফিক প্রধান) মনিবুর রহমান ঢাকাপ্রকাশ’কে বলেন, আপনি যে সব লেগুনার কথা বলছেন সেগুলো কি নিয়মের মধ্যে আছে কি না। সেই সব বিষয়টি আগে দেখা দরকার। আর যেগুলো নিয়মের বাইরে চলছে সেগুলো আমরা দেখব। তিনি বলেন, তবে এ সব লেগুনার সঙ্গে আমাদের ট্রাফিক পুলিশের কোনো সর্ম্পক নেই।

মনিবুর রহমান বলেন, লেগুনার কিছু অনুমতি আছে। তবে তাদের মূল সড়কে চলাচলে নিষেধ করা আছে। রাজধানীর বিভিন্ন স্থানের অলিতে গলিতে তারা চলাচল করে। যাদের লাইসেন্স নেই তাদের বিরুদ্ধে আমরা আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করি। তা ছাড়া এদের সঙ্গে আমাদের পুলিশের কোনো সম্পর্ক নেই। আর স্থানীয় রাজনৈতিক নেতারা জড়িত কি না সেটা আমাদের জানা নেই।

কেএম/আরএ/

Header Ad
Header Ad

অবশেষে সরিয়ে দেওয়া হলো মাউশির বিতর্কিত ডিজিকে

অধ্যাপক ড. এহতেসাম উল হক ও মাউশির লোগো। ছবি: সংগৃহীত

শিক্ষক নেতাদের আন্দোলন ও গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশের পর মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) মহাপরিচালক (ডিজি) পদ থেকে অধ্যাপক ড. এহতেসাম উল হককে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। তিনি শিক্ষা ক্যাডারের ১৪তম বিসিএসের কর্মকর্তা এবং পটুয়াখালী সরকারি কলেজের অধ্যাপক ছিলেন।

বুধবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) শিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। সম্প্রতি তার বিতর্কিত কার্যক্রম নিয়ে সংবাদ প্রকাশের পর তাকে ওএসডি (বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা) করে মাউশিতে সংযুক্ত করা হয়েছে। এদিকে, নতুন মহাপরিচালক হিসেবে অধ্যাপক মুহাম্মদ আজাদ খানকে চলতি দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের উপসচিব মো. মাহবুব আলম স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়েছে, অধ্যাপক মুহাম্মদ আজাদ খানের এই দায়িত্ব কেবল সাময়িক, যা পদোন্নতি হিসেবে গণ্য হবে না। পরবর্তীতে নিয়মিত নিয়োগের মাধ্যমে মহাপরিচালক নিয়োগ হলে এই চলতি দায়িত্ব বাতিল হয়ে যাবে।

অধ্যাপক এহতেসাম উল হকের বিরুদ্ধে বেশ কয়েকটি গুরুতর অভিযোগ রয়েছে। এর আগে তিনি বরিশাল মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ থাকাকালীন শিক্ষার্থীদের ওপর নিপীড়ন চালানোর অভিযোগে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েন। অভিযোগ রয়েছে, আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের তথ্য তিনি পুলিশের কাছে সরবরাহ করেছিলেন।

২০২৩ সালের ৫ আগস্ট তার অপসারণের দাবিতে কলেজের শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ করে। দুর্নীতি, ক্ষমতার অপব্যবহার ও অসদাচরণের অভিযোগ তুলে তার অপসারণের দাবি জানায় শিক্ষার্থীরা।

শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, ২০২১ সালের জুন মাসে বরিশাল মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজে যোগদানের পর থেকে তিনি নানা অনিয়ম ও স্বেচ্ছাচারিতা চালিয়ে যান। তিনি বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের তৎকালীন মেয়র এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আত্মীয় সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহর ঘনিষ্ঠ ছিলেন।

অভিযোগ রয়েছে, অধ্যক্ষ থাকাকালীন তিনি শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও অভিভাবকদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করতেন এবং আন্দোলনে অসহযোগিতা করতেন। এমনকি কলেজের গাড়ি ব্যক্তিগত কাজে ব্যবহার করতেন, যা তার শ্বশুরবাড়ির লোকজনও ব্যবহার করতেন। তিনি কলেজের বিদ্যুৎ ব্যবহার করে নিজের বাসায় গ্রিল নির্মাণসহ অন্যান্য কাজ করিয়েছেন। কেউ প্রতিবাদ করলে চাকরি খেয়ে ফেলার হুমকি দিতেন এবং বার্ষিক গোপনীয় প্রতিবেদন (এসিআর) খারাপ করে দেওয়ার ভয় দেখাতেন। এছাড়া, চুক্তিভিত্তিক শিক্ষক ও কর্মচারীদের বেতন না দিয়ে বিদায় করে দেওয়ারও অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।

ডিজি পদ থেকে এহতেসাম উল হককে অপসারণের খবরে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। তাদের মতে, একজন বিতর্কিত ব্যক্তি শিক্ষাখাতের এত বড় দায়িত্বে থাকতে পারেন না। তার অপসারণের মাধ্যমে প্রশাসনের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার প্রতি সরকারের সদিচ্ছার প্রতিফলন ঘটেছে।

Header Ad
Header Ad

২০১৮ সালের নির্বাচনে দায়িত্ব পালন করা ৩৩ ডিসি ওএসডি

ছবি: সংগৃহীত

২০১৮ সালের বিতর্কিত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রিটার্নিং কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করা ৩৩ জন জেলা প্রশাসককে (ডিসি) বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওএসডি) করা হয়েছে। বুধবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে এ সংক্রান্ত ছয়টি প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়।

জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, বিতর্কিত নির্বাচনে জেলা প্রশাসক ও রিটার্নিং কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালনের কারণে এই কর্মকর্তাদের ওএসডি করা হয়েছে। এর আগে একই কারণে আরও ১২ জন কর্মকর্তাকে ওএসডি করা হয়েছিল।

ওএসডি হওয়া কর্মকর্তাদের মধ্যে রয়েছেন বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশনের পরিচালক (যুগ্মসচিব) কবীর মাহমুদ, বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের পরিচালক (যুগ্মসচিব) মো. মাহমুদুল আলম, কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তরের আঞ্চলিক পরিচালক (যুগ্মসচিব) মো. আবুল ফজল মীর, বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশনের সদস্য-পরিচালক (যুগ্মসচিব) মঈনউল ইসলাম, বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের সদস্য (যুগ্মসচিব) মো. ওয়াহিদুজ্জামান, খাদ্য মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব (সংযুক্ত) এ কে এম মামুনুর রশিদ এবং বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের (বাপবিবো) সদস্য (যুগ্মসচিব) ড. কে এম কামরুজ্জামান সেলিম।

এছাড়া তালিকায় রয়েছেন নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব কাজী আবু তাহের, রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) সদস্য (যুগ্মসচিব) মোহাম্মদ আব্দুল আহাদ, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের যুগ্মসচিব (সংযুক্ত) আনার কলি মাহবুব, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশনের সদস্য (যুগ্মসচিব) সৈয়দা ফারহানা কাউনাইন, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের পরিচালক মো. মতিউল ইসলাম চৌধুরী, কৃষি মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম-সচিব সাবিনা ইয়াসমিন, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের পরিচালক মো. আতাউল গনি এবং সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম-সচিব (সংযুক্ত) আবু আলী মো. সাজ্জাদ হোসেন।

এছাড়া, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম-সচিব এ জেড এম নুরুল হক, বাংলাদেশ রাবার বোর্ডের পরিচালক (যুগ্ম-সচিব) এস এম আজিয়র রহমান, ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের সচিব (যুগ্ম-সচিব) মো. মাসুদ আলম সিদ্দিক এবং সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের যুগ্ম-সচিব গোপাল চন্দ্র দাশসহ আরও বেশ কয়েকজন কর্মকর্তা রয়েছেন।

প্রসঙ্গত, বিতর্কিত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর থেকেই ওই সময়ের রিটার্নিং কর্মকর্তাদের ভূমিকা নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা হয়। এবার সেই নির্বাচনে দায়িত্ব পালন করা কর্মকর্তাদের পর্যায়ক্রমে ওএসডি করা হচ্ছে বলে মনে করছেন প্রশাসনিক বিশ্লেষকরা।

Header Ad
Header Ad

ট্রাম্পের বিস্ফোরক দাবি: চলমান যুদ্ধের সূচনা ইউক্রেনই করেছিল

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ছবি: সংগৃহীত

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের জন্য ইউক্রেনকেই দায়ী করে নতুন বিতর্ক উসকে দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। মার্কিন রাজনীতিতে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের ঘনিষ্ঠ সমর্থক হিসেবে পরিচিত ট্রাম্প এবার ইউক্রেনের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ তুলেছেন। তিনি দাবি করেছেন, চলমান যুদ্ধের সূচনা ইউক্রেনই করেছিল।

মঙ্গলবার (স্থানীয় সময়) ফ্লোরিডার মার-আ-লাগোতে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপচারিতায় ট্রাম্প ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির প্রতি কঠোর মনোভাব প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, ইউক্রেনে একটি নতুন নির্বাচন হওয়া উচিত। বিশ্লেষকদের মতে, এটি জেলেনস্কিকে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে দেওয়ার পরিকল্পনারই ইঙ্গিত।

ট্রাম্প আরও বলেন, ইউক্রেনে দীর্ঘদিন ধরে কোনো নির্বাচন হয়নি এবং সেখানে সামরিক আইন চলছে। তার দাবি, জেলেনস্কির জনপ্রিয়তা মাত্র চার শতাংশে নেমে গেছে, আর দেশটি ধ্বংসের পথে। যদিও যুদ্ধকালীন সময়ে নির্ভরযোগ্য জনমত জরিপ পাওয়া কঠিন, তবে বিভিন্ন প্রতিবেদনে দেখা গেছে, জেলেনস্কির জনপ্রিয়তা ট্রাম্পের দাবির মতো এতটা কমেনি।

এছাড়া, ইউক্রেনের নির্বাচন প্রসঙ্গে ট্রাম্প বলেন, "তারা কি জনগণের মতামত নিয়েছে? তারা আলোচনার টেবিলে বসতে চায়, কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে সেখানে কোনো নির্বাচন হয়নি।"

প্রসঙ্গত, ইউক্রেনে ২০২৪ সালের এপ্রিলে নির্বাচন হওয়ার কথা থাকলেও দেশটির সংবিধান অনুযায়ী, যুদ্ধকালীন সময়ে জাতীয় নির্বাচন আয়োজন সম্ভব নয়। বিশ্লেষকরা বলছেন, ট্রাম্পের এই মন্তব্য কৌতুকপূর্ণ, কারণ তিনি নিজেই ২০২০ সালের মার্কিন নির্বাচনের ফলাফল মেনে নিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছিলেন।

ট্রাম্প আরও দাবি করেন, ইউক্রেন চাইলে যুদ্ধ বন্ধ করতে পারতো এবং তাদের উচিত ছিল রাশিয়ার সঙ্গে সমঝোতায় যাওয়া। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, এর অর্থ হলো—ইউক্রেনকে হয় রাশিয়ার মিত্র সরকার গঠনের প্রস্তাবে রাজি হতে হতো, নয়তো প্রতিরোধ ছেড়ে দিয়ে আত্মসমর্পণ করতে হতো।

বিশ্লেষকদের মতে, ট্রাম্পের সাম্প্রতিক অবস্থান ইঙ্গিত দেয় যে, তিনি পুনরায় প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হলে ইউক্রেনকে সমর্থন না দিয়ে বরং রাশিয়ার সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে একটি বিতর্কিত শান্তিচুক্তির দিকে এগোতে পারেন, যা পুতিনের জন্য বড় ধরনের কূটনৈতিক জয় হিসেবে বিবেচিত হবে।

সূত্র: সিএনএন

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

অবশেষে সরিয়ে দেওয়া হলো মাউশির বিতর্কিত ডিজিকে
২০১৮ সালের নির্বাচনে দায়িত্ব পালন করা ৩৩ ডিসি ওএসডি
ট্রাম্পের বিস্ফোরক দাবি: চলমান যুদ্ধের সূচনা ইউক্রেনই করেছিল
ডিবির সাবেক প্রধান হারুনের ১০০ বিঘা জমি, ৫ ভবন ও ২ ফ্ল্যাট ক্রোকের নির্দেশ
দিল্লির নতুন মুখ্যমন্ত্রী হচ্ছেন রেখা গুপ্তা, বিজেপির সিদ্ধান্তে চমক
একুশের প্রথম প্রহরে রাষ্ট্রপতির শহীদ মিনারে না যাওয়ার আহ্বান
নামাজি জীবনসঙ্গী খুঁজছেন আইশা খান
গাইবান্ধায় গাঁজাসহ আটক এএসআইকে কারাগারে প্রেরণ
উপদেষ্টাদের মিটিংয়ে কোন প্রটোকলে গিয়েছিলেন হাসনাত-পাটোয়ারী: ছাত্রদল সেক্রেটারি
সরকারে থেকে ‘নতুন দল’ গঠন করলে মেনে নেওয়া হবে না: মির্জা ফখরুল
হোস্টিং সামিট ২০২৫ অনুষ্ঠিত
চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির উদ্বোধনী ম্যাচে পাকিস্তানকে ৩২১ রানের বড় লক্ষ্য দিলো নিউজিল্যান্ড
বৈষম্যবিরোধী নামধারী শীর্ষ নেতার নির্দেশে কুয়েটে ছাত্রদলের ওপর হামলা: রাকিব
যান্ত্রিক ত্রুটিতে আবারও বন্ধ বড়পুকুরিয়া তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র
কুবিতে ছাত্র সংসদের দাবিতে মানববন্ধন ও সন্ত্রাসবিরোধী বিক্ষোভ মিছিল
২২০ জনকে নিয়োগ দেবে সমরাস্ত্র কারখানা, এসএসসি পাসেও আবেদন
টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরে ২ দিনব্যাপি খামারি প্রশিক্ষণ
সবার সাত দিন কারাগারে থাকা উচিত: আদালতে পলক
বিপ্লবী সরকারের ডাক থেকে সরে এলেন কাফি  
নাঈম ভাই হেনা কোথায়?: ‘তুই অনেক দেরি করে ফেলেছিস বাপ্পা’