বুধবার, ২ এপ্রিল ২০২৫ | ১৯ চৈত্র ১৪৩১
Dhaka Prokash

সম্ভাবনাময় মধু শিল্প, বিপুল বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের হাতছানি

অপার সম্ভাবনার এক শিল্পের নাম ‘মধু’। কিন্তু সম্ভাবনাময় এই খাতটি দীর্ঘদিন ধরে অবহেলিত। তবে আশার কথা হচ্ছে দেরিতে হলেও মধু নিয়ে ভাবতে শুরু করেছে সরকারের কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর (ডিএই)।

গত কয়েক বছরে দেশে সরিষা মধুর চাহিদা বাড়লেও এতদিন সরকারিভাবে মধু চাষীদের খুব একটা সুবিধা দেওয়া হয়নি। তবে চলতি ২০২২-২০২৩ রবি মৌসুমে মধু চাষের উপর আলাদা গুরুত্ব দিয়েছে সরকারের কৃষি বিভাগ। যার ফলে চলতি মৌসুমে প্রথমবারের মতো দেশে মধু চাষে রীতিমতো বিপ্লব ঘটতে যাচ্ছে।

বিগত সময়ে দেশে সরিষা থেকে যে পরিমাণ মধু চাষ হতো তার কয়েকগুণ বেশি মধু চাষ হবে চলতি মৌসুমে, এমনটা আশা করছে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর।

অপরদিকে মধু চাষিরা বলছেন, সরিষা থেকে উৎপাদিত মধু খুবই উন্নতমানের। কিন্তু নানান প্রতিকূলতার কারণে চাষীরা যথাযথভাবে মধু চাষ করতে পারছেন না। এতদিন সরকারের কৃষি বিভাগ সরিষা থেকে মধু চাষের বিষয়টিতে খুব একটা গুরুত্ত্ব না দিলেও চলতি মৌসুমে এসে তারা নানাভাবে সহযোগিতা করেছেন। কিন্তু সংকট এখনো থেকে গেছে। এটি একটি বড় ও সম্ভাবনাময় শিল্প হতে পারে দাবি করেন মধু চাষিরা।

তারা বলেন, মধু উৎপাদন থেকে শুরু করে বয়ামজাত করা এবং বাজারজাত পর্যন্ত সরকারের টেকনিক্যাল এবং আর্থিক সহযোগিতা পেলে মধু রপ্তানি করে মোটা অঙ্কের বৈদিশিক মুদ্রা অর্জন করা সম্ভব। শুধু দরকার সরকারের যথাযথ পৃষ্ঠপোষকতা। একইসঙ্গে মধু চাষিরা বলছেন, মধু চাষকে শিল্প হিসেবে ঘোষণা করে সব ধরনের সহযোগিতা দিলে বেকারত্বও দূর হবে।

কৃষি বিভাগ সূত্রে এবং মধু চাষিদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গত প্রায় দুই দশকের বেশি সময় ধরে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের কৃষকরা নিজ উদ্যোগে সরিষা ক্ষেতে স্থানীয় পদ্ধতিতে মৌ চাষ করেছেন। মধু চাষে কৃষি বিভাগের কোনো লক্ষ্যমাত্রাও ছিল না। আবার মধু চাষ করলেও চাষিরা যথাযথ নিয়মে মধু প্রক্রিয়াজাত করে সংরক্ষণ ও বাজারজাত করতে পারেননি। এখনো পারছেন না। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে মধু চাষিরা আহরিত মধু খোলা বিক্রি করছেন। তাতে চাষিরা আর্থিকভাবে খুব একটা লাভ হচ্ছেন না। কিন্তু মধু চাষিরা তাতে হাল ছাড়েননি। তারা প্রতি বছর সরিষা থেকে মধু চাষ করে আসছেন। নিজ উদ্যোগে চাষিদের এই মধু চাষ থেকে প্রতিবছরই তিন-চার লাখ কেজি মধু আহরণ হতো। চলতি বছরও চাষিরা একইভাবে মধু চাষের উদ্যোগ নেন। তবে তাদের এই উদ্যোগের সঙ্গে এবারই প্রথম সরকারের কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ মধু চাষে মনোযোগ দিয়েছে।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, চলতি ২০২২-২০২৩ রবি মৌসুমে তিন লাখ ২৩৬ হেক্টর জমিকে মধু চাষের আওতায় এনেছে। ডিএইর তথ্য অনুযায়ী, চলতি মৌসুমে ৮ লাখ ১২৩ হেক্টর জমিতে সরিষা আবাদ করেছে। এ ছাড়া, শূন্য দশমিক শূন্য ৭৬ লাখ হেক্টর জমিতে সূর্যমুখী, শূন্য দশমিক ১০৬ লাখ শতাংশে কালোজিরা, এক লাখ ৮৬৬ হেক্টর জমিতে পেঁয়াজ, শূন্য দশমিক ৪০৩ লাখ হেক্টর জমিতে ধনিয়া, এক লাখ ২৯৪ হেক্টর জমিতে আম এবং শূন্য দশমিক ১২৫ লাখ হেক্টর জমিতে লিচু চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে। মোট ১১ লাখ ৯৯৪ হেক্টর জমিতে এসব ফসল চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এসব ফসলী জমির মধ্যে তিন লাখ ২৩৬ হেক্টর জমি মৌ চাষের আওতায় আনা হয়েছে।

এবার প্রথমবারের মতো মৌ চাষের জন্য কৃষি বিভগ থেকে সারা দেশে মৌ চাষিদেরকে এক লাখ ৭১ হাজার ৪৩৩টি বাক্স স্থাপনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে শুধু সরিষা ক্ষেতে বাক্স স্থাপনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয় এক লাখ ৪৬ হাজার ৮৪০টি। ইতিমধ্যে এক লাখ এক হাজার ৪৬২টি বাক্সে মৌ চাষের লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়েছে। যার মধ্যে শুধু সরিষা থেকে অর্জত মৌ বাক্সের সংখ্যা হচ্ছে এক লাখ এক হাজার ৩৭টি।

প্রতি বছর চাষিরা নিজ উদ্যোগে মৌ চাষ করে তিন থেকে চার লাখ কেজি মধু আহরণ করলেও চলতি রবি মৌসুমে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর মধু সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে দিয়েছে আট লাখ ৩৬ হাজার ৪৬ কেজি। ডিএইর তথ্য অনুযায়ী, ইতিমধ্যে আট লাখ ৪৮ হাজার ৩১০ কেজি মধু আহরণ বা সংগ্রহ হয়েছে। যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি। এখনো মধু সংগ্রহের কার্যক্রম চলছে। ধারণা করা হচ্ছে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে আরও অনেক বেশি মধু সংগ্রহ হবে। যা অতীতের সকল রেকর্ড ছাড়িয়ে যাবে।

ডিএইর মহাপরিচালক বাদল চন্দ্র বিশ্বাস ঢাকাপ্রকাশ-কে বলেন, বর্তমানে সারা দেশে মধু চাষের ব্যাপ্তি বেড়েছে। এখন আমরা মধু চাষের উপর গুরুত্ত্ব দিচ্ছি। কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে মৌ চাষিদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। মৌ চাষের জন্য চাষিদেরকে উন্নতমানের বাক্স সরবরাহ করা হয়েছে। তিনি বলেন, ‘আমরা মধু চাষে বেসরকারি ও ব্যক্তিগত উদ্যোগকে উৎসাহ দিচ্ছি।’

ডিএই মহাপরিচালক বলেন, মধু খুবই সম্ভাবনাময় একটি খাত। এই খাত থেকে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করা সম্ভব। আমরা যদি যথাযথ নিয়মে মধু সংগ্রহ, প্রক্রিয়াজাতকরণ ও সংরক্ষণ করতে পারি তাহলে অনেক সম্ভাবনা আছে এই খাতে।

তিনি জানান, মধু বোতলজাত বা বয়ামজাত তথা প্যাকেজিং করতে শিল্প মন্ত্রণালয়কে বলা হয়েছে। ডিএই মহাপরিচালক মনে করেন, ভারতের ডাবর মধুর চেয়ে আমাদের মধু অনেক ভালো মানের। ডাবর মধু যদি বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বিক্রি হতে পারে, তাহলে আমাদের মধু নয় কেন?

মধু চাষিরা বলছেন সম্ভাবনাময় খাত

মধু চাষিরা বলছেন, অপার সম্ভাবনার এই খাতকে প্রণোদনা দিলে মধু চাষিরা যেমন সাহস ও উৎসাহ পাবে তেমনি বহু বেকার তরুণ-যুবকের কর্মসংস্থান হবে। শুধু মধু রপ্তানি করেই শত শত কোটি টাকার বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করা সম্ভব।

সাতক্ষীরার মৌ চাষি মোশাররফ হোসেন ঢাকাপ্রকাশ-কে বলেন, ২০০০ সালে প্রথম ব্যক্তিগত উদ্যোগে মধু চাষ শুরু করি। অনেক কষ্ট করে সরিষা ক্ষেতে মৌ চাষের বাক্স বসাই। সম্পূর্ণ নিজ উদ্যোগে সব কিছু করি।

তিনি বলেন, আমি যখন মধু চাষ শুরু করি তখন কৃষি বিভাগের কোনো সহযোগিতা ছিল না। আসলে তারা জানতেনই না মধু চাষের বিষয়টি। আমার মতো অনেকেই ব্যক্তি উদ্যোগে মৌ চাষ শুরু করেন। এভাবেই ধীরে ধীরে দেশের বিভিন্ন এলাকায় ব্যক্তি উদ্যোগে মৌ চাষের প্রসার ঘটে। চাষি থেকে চাষি পর্যায়ে মধু চাষ বিস্তার লাভ করে।

তিনি বলেন, ‘ইদানিং কৃষি বিভাগ মধু চাষে মৌ চাষিদের সহযোগিতা করছে। নানা পরামর্শ দিচ্ছে।’

মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘আমাদের দেশে মধু একটা অপার সম্ভাবনাময় শিল্প। সাতক্ষীরা বিসিক আমাকে ২০০৮ সালে আশ্বাস দিয়েছিল মধু প্রক্রিয়াজাতকরণে তারা সাতক্ষীরা বিসিক শিল্প নগরীতে প্রযোজনীয় যন্ত্রপাতি দিয়ে একটি প্ল্যান্ট স্থাপন করবে। কিন্তু সেটা আর হয়ে উঠেনি।’

মোশাররফ বলেন, মৌ চাষ শিল্পকে টেকনিক্যাল ও আর্থিক সহযোগিতা দিলে এটি একটি বৃহৎ শিল্পে রূপান্তরিত হবে। বেকারদের কাজে লাগানো যাবে। কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হবে। ৩০-৫০ হাজার টাকা বিনিয়োগ করলেই এই শিল্পে লাভবান হওয়া যাবে।’

মোশাররফ আরও জানান, তিনি আগে ব্যক্তিগত উদ্যোগে মৌ চাষ করলেও ২০১৯ সাল থেকে তিনি আর এককভাবে মৌ চাষ করছেন না। এখন তিনি গ্রুপ ভিত্তিক মৌ চাষ করেন। এই মৌসুমে ১০টা ফার্ম মিলে এখন পর্যন্ত ২০ টনের বেশি মধু আহরণ করেছেন।

তিনি আরও জানান, আমাদের দেশি মধুর মান খুবই ভালো। ভালোভাবে রিফাইন করে বয়াম বা বোতলজাত করতে পারলে বৈদেশিক মুদ্র অর্জন করা সম্ভব। তিনি বলেন, সরকারের নীতি নির্ধারকরা যদি বিদেশি মধু আমদানি বন্ধ করে দেশীয় মধু চাষিদের উৎসাহিত করতে পারে।

রাজশাহীর পবা উপজেলার ভাটানবাড়ি গ্রামের মৌ চাষি রেজাউল করিম স্বাধীন ঢাকাপ্রকাশ-কে বলেন, ২০০০ সাল থেকে তিনি মৌ চাষ করে আসছেন। এখন তার মৌ চাষের পরিধি বেড়েছে। তবে সমস্যাও আছে অনেক। বিশেষ করে সরকারি সহযোগিতাটা এখনো তিনি পাননি। যদিও কৃষি বিভাগ মাঝে মধ্যে ডেকে নিয়ে মৌ চাষিদেরকে নানান পরামর্শ দেয়।

তিনি বলেন, চলতি মৌসুমেও তিনি মৌ চাষের জন্য কৃষি বিভাগ থেকে কোনো বাক্স পাননি। তবে নিজ উদ্যোগে ৩৩টা গ্রুপে ৩৩টা বাক্স স্থাপন করে মৌ চাষ করেছেন। এখন পর্যন্ত ৬০০ কেজি মধু আহরণ করেছেন জানিয়ে রেজাউল বলেন, তার সব মধুই বাড়ি থেকে বিক্রি করেন। কোনোরকম প্যাকেটজাত করেন না। প্যাকেজিং করতে গেলে বিএসটিআইয়ের অনুমোদন লাগে। কিন্তু সেটা করতে গেলে অনেক হয়রানি হতে হয়। এ কারণে খোলা মধু বিক্রি করেন।

রেজাউলও মনে করেন, সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা পেলে মধু রপ্তানি করে বৈদশিক মুদ্রা আয় করা সম্ভব।

যা বললেন কৃষি সচিব

কৃষি মন্ত্রণালয়ের সচিব ওয়াহিদা আক্তার ঢাকাপ্রকাশ-কে বলেন, আমাদের দেশে যে মধু উৎপাদন হয় তার গুণগত মান অনেক ভালো। এটা যদি ঠিকমত চাষিরা বাজারজাত করতে পারতেন তাহলে দেশের বাজারের চাহিদা মেটানো সম্ভব। তাহলে আর মধু আমদানি করতে হবে না।

তিনি বলেন, ‘আমরা মৌ চাষিদের বিভিন্নভাবে সহযোগিতা দেওয়ার চেষ্টা করছি। এখন উৎপাদিত মধু যদি বয়ামজাত করে বিক্রি করা যায় তাহলে কৃষক যেমন লাভবান হবে, তেমনি দেশীয় মধুর বাজারও চাঙ্গা হবে।’

তিনি আরও বলেন, শিল্প মন্ত্রণালয়ের এসএমই নীতিমালায় মধুর কথা বলা আছে। বিসিক এই কাজ করতে পারে। তারা যদি মৌ চাষিদের সহযোগিতা করে তাহলে দেশে উৎপাদিত মধুতেই দেশের চাহিদা মেটানো যেমন সম্ভব, সেইসঙ্গে বৈদেশিক মুদ্রারও সাশ্রয় হবে।

এনএচইবি/এমএমএ/

Header Ad
Header Ad

সাতক্ষীরায় মদপানে দুই যুবকের মৃত্যু, হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ৯

ছবি: সংগৃহীত

সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলায় মদপানের ফলে দুই যুবকের মৃত্যু হয়েছে। একই ঘটনায় আরও ৯ জন গুরুতর অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এদের মধ্যে দুজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানা গেছে।

মঙ্গলবার (২ এপ্রিল) দিবাগত রাত ১২টার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ওই দুই যুবকের মৃত্যু হয়। এর আগে, ঈদের সন্ধ্যায় তারা মদপান করেন এবং রাতের মধ্যে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন।

মৃতদের মধ্যে রয়েছেন আশাশুনি উপজেলার তেতুলিয়া গ্রামের জাফর আলী খাঁর ছেলে জাকির হোসেন টিটু (৪০) ও সোহরাব গাজীর ছেলে নাজমুল গাজী (২৬)।

এ ঘটনায় অসুস্থদের মধ্যে রয়েছেন ব্রাহ্মণ তেতুলিয়া গ্রামের সাইদ সরদারের ছেলে ফারুক হোসেন, মোকামখালী গ্রামের কুদ্দুস সরদারের ছেলে ইমরান, মিত্র তেতুলিয়ার মর্জিনা খাতুনের ছেলে ইকবাল, কামরুলের ছেলে লিফটন, আজিবার সরদারের ছেলে রবিউল, শহীদ গাজীর ছেলে তুহিন, আনিসের ছেলে নাজমুলসহ আরও কয়েকজন।

গুরুতর অসুস্থদের মধ্যে ফারুক হোসেনকে সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এবং ইমরানকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে।

স্থানীয়রা জানিয়েছেন, ঈদের দিন সন্ধ্যায় আশাশুনির তেতুলিয়া শ্মশানঘাট মাঠে বসে জাকির হোসেন টিটু, নাজমুল গাজীসহ মোট ১১ জন একসঙ্গে মদপান করেন। মদপানের পর তারা বাড়ি ফিরে যান এবং ঘুমিয়ে পড়েন।

এরপর রাত ১২টার দিকে একে একে সবাই মারাত্মক অসুস্থ হয়ে পড়লে তাদের আশাশুনি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় জাকির হোসেন টিটু ও নাজমুল গাজী মারা যান। বাকি ৯ জনের চিকিৎসা চলছে।

আশাশুনি থানার ডিউটি অফিসার এসআই ফিরোজ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, "অতিরিক্ত মদ্যপানের কারণে দুইজনের মৃত্যু হয়েছে। তবে মৃত্যু অন্য কোনো কারণে হয়েছে কিনা, তা ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পাওয়ার পর নিশ্চিত হওয়া যাবে।"

নিহতদের মধ্যে একজনের মরদেহ উদ্ধার করে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় বিস্তারিত তদন্ত চলছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

Header Ad
Header Ad

ইরানের ড্রোন-ক্ষেপণাস্ত্র নেটওয়ার্কের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা

ছবি: সংগৃহীত

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ইরান, চীন এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতের (ইউএই) একাধিক ব্যক্তি ও সংস্থার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। ইরানের অস্ত্র সংগ্রহ নেটওয়ার্কের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে স্থানীয় সময় মঙ্গলবার (২ এপ্রিল) মার্কিন ট্রেজারি বিভাগ এই নিষেধাজ্ঞার ঘোষণা দেয়।

এই পদক্ষেপকে ইরানের ওপর আরও চাপ সৃষ্টির একটি অংশ হিসেবে দেখা হচ্ছে। এর আগে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইরানকে সতর্ক করে বলেছিলেন, নতুন পারমাণবিক চুক্তিতে রাজি না হলে দেশটির ওপর বোমা হামলা চালানো বা নতুন শুল্ক আরোপ করা হতে পারে।

মার্কিন ট্রেজারি বিভাগ ও বিচার বিভাগ যৌথভাবে জানিয়েছে, ইরানের ড্রোন কর্মসূচির অন্যতম প্রধান নির্মাতার জন্য মানববিহীন এয়ার ভেহিকল (ইউএভি)–এর উপকরণ সংগ্রহের সঙ্গে যুক্ত ছয়টি সংস্থা ও দুই ব্যক্তির ওপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে।

মার্কিন ট্রেজারি সেক্রেটারি স্কট বেসেন্ট এক বিবৃতিতে বলেন, "ইরান তাদের ড্রোন এবং ক্ষেপণাস্ত্র রাশিয়াসহ তাদের প্রক্সিদের সরবরাহ করছে। রুশ বাহিনী এগুলো ইউক্রেনের বিরুদ্ধে ব্যবহার করছে, যা বেসামরিক নাগরিক, মার্কিন বাহিনী ও মিত্রদের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে।"

তিনি আরও বলেন, "আমরা ইরানের সামরিক-শিল্প কমপ্লেক্স এবং তাদের ড্রোন, ক্ষেপণাস্ত্র ও প্রচলিত অস্ত্রের বিস্তার ব্যাহত করতে কাজ চালিয়ে যাব।"

মার্কিন ট্রেজারি বিভাগ জানিয়েছে, নতুন নিষেধাজ্ঞার আওতায় এসেছে একটি ইরান-ভিত্তিক সংস্থা, দুইজন ইরানি নাগরিক, একটি চীন-ভিত্তিক সংস্থা এবং চারটি সংযুক্ত আরব আমিরাত-ভিত্তিক সংস্থা।

এ বিষয়ে জাতিসংঘে ইরানের মিশনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও তারা তাৎক্ষণিকভাবে কোনো প্রতিক্রিয়া জানায়নি।

Header Ad
Header Ad

বিশ্বব্যাপী অপপ্রচার ছড়াচ্ছে আওয়ামী লীগের দোসররা: রিজভী

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী। ছবি: সংগৃহীত

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী অভিযোগ করেছেন, আওয়ামী লীগের দোসররা বিশ্বব্যাপী অপপ্রচার চালিয়ে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার চেষ্টা করছে। তিনি বলেন, "পরাজিত শক্তি নিউইয়র্ক টাইমসে মিথ্যা তথ্য দিয়ে রিপোর্ট করিয়েছে। ফ্যাসিবাদের দোসররা হাজার হাজার কোটি টাকার মালিক হয়ে গেছে। তারা এই অবৈধ টাকা ব্যবহার করে বাংলাদেশকে কলঙ্কিত করতে চায়।"

বুধবার (২ এপ্রিল) সকালে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব মন্তব্য করেন।

রিজভী আহমেদ অভিযোগ করেন, "শেখ হাসিনা জঙ্গি দমনের নামে একটি নাটক সাজিয়ে বিশ্ববাসীকে বিভ্রান্ত করেছেন। এটি মূলত ক্ষমতায় টিকে থাকার একটি রাজনৈতিক কৌশল ছিল। এমনকি একজন সাবেক আইজিপির বইয়েও এটি উঠে এসেছে।"

তিনি আরও বলেন, "বাংলাদেশে উগ্রবাদের কোনো উত্থান ঘটেনি। বরং বর্তমানে দেশে ফ্যাসিবাদের কোনো ছোবল নেই, মানুষ নির্বিঘ্নে ধর্মপালন করতে পারছে, কথা বলতে পারছে। এবার মানুষ নির্ভয়ে ঈদ উদযাপন করেছে, যা অতীতে সম্ভব হয়নি।"

আওয়ামী লীগ সরকারের কঠোর সমালোচনা করে বিএনপির এই নেতা বলেন, "আওয়ামী লীগ বসে নেই, তারা কালো টাকা ব্যবহার করে দেশের ভাবমূর্তি নষ্ট করছে। তারা অন্তর্ঘাতমূলক কর্মকাণ্ড চালাচ্ছে। বিদেশে পালিয়ে থাকা আওয়ামী লীগের নেতারাই দেশকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছে।"

তিনি আরও বলেন, "শেখ হাসিনার নির্দেশে মুগ্ধ ফাইয়াজদের গুলি করে হত্যা করা হয়েছে, কিন্তু এ নিয়ে তার কোনো অনুশোচনা নেই। প্রশাসনের চারপাশে আওয়ামী লীগের দোসররা বসে আছে, যার ফলে দেশে গণতন্ত্র ও সুশাসন ভূলুণ্ঠিত হয়েছে।"

রিজভী আহমেদ দ্রুত প্রয়োজনীয় সংস্কার করে একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন দেওয়ার দাবি জানান। তিনি বলেন, "নির্বাচনী সরকারই হচ্ছে বৈধ সরকার। নির্বাচন নিয়ে গড়িমসি সাধারণ জনগণের কাছে গ্রহণযোগ্য হবে না। নির্বাচন নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হলে ধোঁয়াশার সৃষ্টি হবে।"

তিনি নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে দ্রুত নির্বাচনের জন্য কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানান।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

সাতক্ষীরায় মদপানে দুই যুবকের মৃত্যু, হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ৯
ইরানের ড্রোন-ক্ষেপণাস্ত্র নেটওয়ার্কের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা
বিশ্বব্যাপী অপপ্রচার ছড়াচ্ছে আওয়ামী লীগের দোসররা: রিজভী
দায়িত্ব নেওয়ার পর দেশে জঙ্গিবাদের উত্থানের ঘটনা ঘটেনি: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
আখাউড়ায় ট্রেনের ছাদে টিকটক বানাতে গিয়ে দুর্ঘটনা, নিহত ২
বাংলাদেশকে ভেঙে ফেলার আহ্বান ভারতের ত্রিপুরার রাজপরিবার প্রধানের
বিএনপি কখনোই নির্বাচনের পরে সংস্কারের কথা বলেনি: মির্জা ফখরুল
বিরামপুরে জমি নিয়ে বিরোধ, চাঁদা দাবি ও হামলার ঘটনায় আটক ৫
হলিউডের জনপ্রিয় অভিনেতা ভ্যাল কিলমার আর নেই
ময়মনসিংহে সিনেমা হলে যান্ত্রিক ত্রুটির জেরে দর্শকদের ভাঙচুর
সেভেন সিস্টার্স নিয়ে ড. ইউনূসের মন্তব্যে ভারতীয় রাজনীতিবিদদের তীব্র প্রতিক্রিয়া
মিয়ানমারের ভূমিকম্পে এক ইমামের ১৭০ স্বজনের মৃত্যু
ঈদের আনন্দে যমুনার দুর্গম চরে গ্রাম-বাংলার ঘুড়ি উৎসব, আনন্দে মেতে উঠে বিনোদনপ্রেমীরা!
ইমামকে ঘোড়ার গাড়িতে রাজকীয় বিদায়, দেওয়া হলো ৯ লাখ টাকার সংবর্ধনা
লন্ডনে একসঙ্গে দেখা গেলো সাবেক চার আওয়ামী মন্ত্রীকে
ঢাকায় ফিরছে ঈদযাত্রীরা, অনেকে ছুটছেন শহরের বাইরে
চট্টগ্রামের লোহাগাড়ায় আবারও সড়ক দুর্ঘটনা, নিহত ৭
বিটিভিতে আজ প্রচারিত হবে ঈদের বিশেষ ‘ইত্যাদি’
ঈদের ছুটিতে ফাঁকা ঢাকা, নেই যানজটের চিরচেনা দৃশ্য
মাদারীপুরে তিন মোটরসাইকেলের সংঘর্ষে নিহত ৪, আহত ২