রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪ | ৭ পৌষ ১৪৩১
Dhaka Prokash
Header Ad

সম্ভাবনাময় মধু শিল্প, বিপুল বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের হাতছানি

অপার সম্ভাবনার এক শিল্পের নাম ‘মধু’। কিন্তু সম্ভাবনাময় এই খাতটি দীর্ঘদিন ধরে অবহেলিত। তবে আশার কথা হচ্ছে দেরিতে হলেও মধু নিয়ে ভাবতে শুরু করেছে সরকারের কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর (ডিএই)।

গত কয়েক বছরে দেশে সরিষা মধুর চাহিদা বাড়লেও এতদিন সরকারিভাবে মধু চাষীদের খুব একটা সুবিধা দেওয়া হয়নি। তবে চলতি ২০২২-২০২৩ রবি মৌসুমে মধু চাষের উপর আলাদা গুরুত্ব দিয়েছে সরকারের কৃষি বিভাগ। যার ফলে চলতি মৌসুমে প্রথমবারের মতো দেশে মধু চাষে রীতিমতো বিপ্লব ঘটতে যাচ্ছে।

বিগত সময়ে দেশে সরিষা থেকে যে পরিমাণ মধু চাষ হতো তার কয়েকগুণ বেশি মধু চাষ হবে চলতি মৌসুমে, এমনটা আশা করছে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর।

অপরদিকে মধু চাষিরা বলছেন, সরিষা থেকে উৎপাদিত মধু খুবই উন্নতমানের। কিন্তু নানান প্রতিকূলতার কারণে চাষীরা যথাযথভাবে মধু চাষ করতে পারছেন না। এতদিন সরকারের কৃষি বিভাগ সরিষা থেকে মধু চাষের বিষয়টিতে খুব একটা গুরুত্ত্ব না দিলেও চলতি মৌসুমে এসে তারা নানাভাবে সহযোগিতা করেছেন। কিন্তু সংকট এখনো থেকে গেছে। এটি একটি বড় ও সম্ভাবনাময় শিল্প হতে পারে দাবি করেন মধু চাষিরা।

তারা বলেন, মধু উৎপাদন থেকে শুরু করে বয়ামজাত করা এবং বাজারজাত পর্যন্ত সরকারের টেকনিক্যাল এবং আর্থিক সহযোগিতা পেলে মধু রপ্তানি করে মোটা অঙ্কের বৈদিশিক মুদ্রা অর্জন করা সম্ভব। শুধু দরকার সরকারের যথাযথ পৃষ্ঠপোষকতা। একইসঙ্গে মধু চাষিরা বলছেন, মধু চাষকে শিল্প হিসেবে ঘোষণা করে সব ধরনের সহযোগিতা দিলে বেকারত্বও দূর হবে।

কৃষি বিভাগ সূত্রে এবং মধু চাষিদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গত প্রায় দুই দশকের বেশি সময় ধরে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের কৃষকরা নিজ উদ্যোগে সরিষা ক্ষেতে স্থানীয় পদ্ধতিতে মৌ চাষ করেছেন। মধু চাষে কৃষি বিভাগের কোনো লক্ষ্যমাত্রাও ছিল না। আবার মধু চাষ করলেও চাষিরা যথাযথ নিয়মে মধু প্রক্রিয়াজাত করে সংরক্ষণ ও বাজারজাত করতে পারেননি। এখনো পারছেন না। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে মধু চাষিরা আহরিত মধু খোলা বিক্রি করছেন। তাতে চাষিরা আর্থিকভাবে খুব একটা লাভ হচ্ছেন না। কিন্তু মধু চাষিরা তাতে হাল ছাড়েননি। তারা প্রতি বছর সরিষা থেকে মধু চাষ করে আসছেন। নিজ উদ্যোগে চাষিদের এই মধু চাষ থেকে প্রতিবছরই তিন-চার লাখ কেজি মধু আহরণ হতো। চলতি বছরও চাষিরা একইভাবে মধু চাষের উদ্যোগ নেন। তবে তাদের এই উদ্যোগের সঙ্গে এবারই প্রথম সরকারের কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ মধু চাষে মনোযোগ দিয়েছে।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, চলতি ২০২২-২০২৩ রবি মৌসুমে তিন লাখ ২৩৬ হেক্টর জমিকে মধু চাষের আওতায় এনেছে। ডিএইর তথ্য অনুযায়ী, চলতি মৌসুমে ৮ লাখ ১২৩ হেক্টর জমিতে সরিষা আবাদ করেছে। এ ছাড়া, শূন্য দশমিক শূন্য ৭৬ লাখ হেক্টর জমিতে সূর্যমুখী, শূন্য দশমিক ১০৬ লাখ শতাংশে কালোজিরা, এক লাখ ৮৬৬ হেক্টর জমিতে পেঁয়াজ, শূন্য দশমিক ৪০৩ লাখ হেক্টর জমিতে ধনিয়া, এক লাখ ২৯৪ হেক্টর জমিতে আম এবং শূন্য দশমিক ১২৫ লাখ হেক্টর জমিতে লিচু চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে। মোট ১১ লাখ ৯৯৪ হেক্টর জমিতে এসব ফসল চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এসব ফসলী জমির মধ্যে তিন লাখ ২৩৬ হেক্টর জমি মৌ চাষের আওতায় আনা হয়েছে।

এবার প্রথমবারের মতো মৌ চাষের জন্য কৃষি বিভগ থেকে সারা দেশে মৌ চাষিদেরকে এক লাখ ৭১ হাজার ৪৩৩টি বাক্স স্থাপনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে শুধু সরিষা ক্ষেতে বাক্স স্থাপনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয় এক লাখ ৪৬ হাজার ৮৪০টি। ইতিমধ্যে এক লাখ এক হাজার ৪৬২টি বাক্সে মৌ চাষের লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়েছে। যার মধ্যে শুধু সরিষা থেকে অর্জত মৌ বাক্সের সংখ্যা হচ্ছে এক লাখ এক হাজার ৩৭টি।

প্রতি বছর চাষিরা নিজ উদ্যোগে মৌ চাষ করে তিন থেকে চার লাখ কেজি মধু আহরণ করলেও চলতি রবি মৌসুমে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর মধু সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে দিয়েছে আট লাখ ৩৬ হাজার ৪৬ কেজি। ডিএইর তথ্য অনুযায়ী, ইতিমধ্যে আট লাখ ৪৮ হাজার ৩১০ কেজি মধু আহরণ বা সংগ্রহ হয়েছে। যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি। এখনো মধু সংগ্রহের কার্যক্রম চলছে। ধারণা করা হচ্ছে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে আরও অনেক বেশি মধু সংগ্রহ হবে। যা অতীতের সকল রেকর্ড ছাড়িয়ে যাবে।

ডিএইর মহাপরিচালক বাদল চন্দ্র বিশ্বাস ঢাকাপ্রকাশ-কে বলেন, বর্তমানে সারা দেশে মধু চাষের ব্যাপ্তি বেড়েছে। এখন আমরা মধু চাষের উপর গুরুত্ত্ব দিচ্ছি। কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে মৌ চাষিদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। মৌ চাষের জন্য চাষিদেরকে উন্নতমানের বাক্স সরবরাহ করা হয়েছে। তিনি বলেন, ‘আমরা মধু চাষে বেসরকারি ও ব্যক্তিগত উদ্যোগকে উৎসাহ দিচ্ছি।’

ডিএই মহাপরিচালক বলেন, মধু খুবই সম্ভাবনাময় একটি খাত। এই খাত থেকে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করা সম্ভব। আমরা যদি যথাযথ নিয়মে মধু সংগ্রহ, প্রক্রিয়াজাতকরণ ও সংরক্ষণ করতে পারি তাহলে অনেক সম্ভাবনা আছে এই খাতে।

তিনি জানান, মধু বোতলজাত বা বয়ামজাত তথা প্যাকেজিং করতে শিল্প মন্ত্রণালয়কে বলা হয়েছে। ডিএই মহাপরিচালক মনে করেন, ভারতের ডাবর মধুর চেয়ে আমাদের মধু অনেক ভালো মানের। ডাবর মধু যদি বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বিক্রি হতে পারে, তাহলে আমাদের মধু নয় কেন?

মধু চাষিরা বলছেন সম্ভাবনাময় খাত

মধু চাষিরা বলছেন, অপার সম্ভাবনার এই খাতকে প্রণোদনা দিলে মধু চাষিরা যেমন সাহস ও উৎসাহ পাবে তেমনি বহু বেকার তরুণ-যুবকের কর্মসংস্থান হবে। শুধু মধু রপ্তানি করেই শত শত কোটি টাকার বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করা সম্ভব।

সাতক্ষীরার মৌ চাষি মোশাররফ হোসেন ঢাকাপ্রকাশ-কে বলেন, ২০০০ সালে প্রথম ব্যক্তিগত উদ্যোগে মধু চাষ শুরু করি। অনেক কষ্ট করে সরিষা ক্ষেতে মৌ চাষের বাক্স বসাই। সম্পূর্ণ নিজ উদ্যোগে সব কিছু করি।

তিনি বলেন, আমি যখন মধু চাষ শুরু করি তখন কৃষি বিভাগের কোনো সহযোগিতা ছিল না। আসলে তারা জানতেনই না মধু চাষের বিষয়টি। আমার মতো অনেকেই ব্যক্তি উদ্যোগে মৌ চাষ শুরু করেন। এভাবেই ধীরে ধীরে দেশের বিভিন্ন এলাকায় ব্যক্তি উদ্যোগে মৌ চাষের প্রসার ঘটে। চাষি থেকে চাষি পর্যায়ে মধু চাষ বিস্তার লাভ করে।

তিনি বলেন, ‘ইদানিং কৃষি বিভাগ মধু চাষে মৌ চাষিদের সহযোগিতা করছে। নানা পরামর্শ দিচ্ছে।’

মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘আমাদের দেশে মধু একটা অপার সম্ভাবনাময় শিল্প। সাতক্ষীরা বিসিক আমাকে ২০০৮ সালে আশ্বাস দিয়েছিল মধু প্রক্রিয়াজাতকরণে তারা সাতক্ষীরা বিসিক শিল্প নগরীতে প্রযোজনীয় যন্ত্রপাতি দিয়ে একটি প্ল্যান্ট স্থাপন করবে। কিন্তু সেটা আর হয়ে উঠেনি।’

মোশাররফ বলেন, মৌ চাষ শিল্পকে টেকনিক্যাল ও আর্থিক সহযোগিতা দিলে এটি একটি বৃহৎ শিল্পে রূপান্তরিত হবে। বেকারদের কাজে লাগানো যাবে। কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হবে। ৩০-৫০ হাজার টাকা বিনিয়োগ করলেই এই শিল্পে লাভবান হওয়া যাবে।’

মোশাররফ আরও জানান, তিনি আগে ব্যক্তিগত উদ্যোগে মৌ চাষ করলেও ২০১৯ সাল থেকে তিনি আর এককভাবে মৌ চাষ করছেন না। এখন তিনি গ্রুপ ভিত্তিক মৌ চাষ করেন। এই মৌসুমে ১০টা ফার্ম মিলে এখন পর্যন্ত ২০ টনের বেশি মধু আহরণ করেছেন।

তিনি আরও জানান, আমাদের দেশি মধুর মান খুবই ভালো। ভালোভাবে রিফাইন করে বয়াম বা বোতলজাত করতে পারলে বৈদেশিক মুদ্র অর্জন করা সম্ভব। তিনি বলেন, সরকারের নীতি নির্ধারকরা যদি বিদেশি মধু আমদানি বন্ধ করে দেশীয় মধু চাষিদের উৎসাহিত করতে পারে।

রাজশাহীর পবা উপজেলার ভাটানবাড়ি গ্রামের মৌ চাষি রেজাউল করিম স্বাধীন ঢাকাপ্রকাশ-কে বলেন, ২০০০ সাল থেকে তিনি মৌ চাষ করে আসছেন। এখন তার মৌ চাষের পরিধি বেড়েছে। তবে সমস্যাও আছে অনেক। বিশেষ করে সরকারি সহযোগিতাটা এখনো তিনি পাননি। যদিও কৃষি বিভাগ মাঝে মধ্যে ডেকে নিয়ে মৌ চাষিদেরকে নানান পরামর্শ দেয়।

তিনি বলেন, চলতি মৌসুমেও তিনি মৌ চাষের জন্য কৃষি বিভাগ থেকে কোনো বাক্স পাননি। তবে নিজ উদ্যোগে ৩৩টা গ্রুপে ৩৩টা বাক্স স্থাপন করে মৌ চাষ করেছেন। এখন পর্যন্ত ৬০০ কেজি মধু আহরণ করেছেন জানিয়ে রেজাউল বলেন, তার সব মধুই বাড়ি থেকে বিক্রি করেন। কোনোরকম প্যাকেটজাত করেন না। প্যাকেজিং করতে গেলে বিএসটিআইয়ের অনুমোদন লাগে। কিন্তু সেটা করতে গেলে অনেক হয়রানি হতে হয়। এ কারণে খোলা মধু বিক্রি করেন।

রেজাউলও মনে করেন, সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা পেলে মধু রপ্তানি করে বৈদশিক মুদ্রা আয় করা সম্ভব।

যা বললেন কৃষি সচিব

কৃষি মন্ত্রণালয়ের সচিব ওয়াহিদা আক্তার ঢাকাপ্রকাশ-কে বলেন, আমাদের দেশে যে মধু উৎপাদন হয় তার গুণগত মান অনেক ভালো। এটা যদি ঠিকমত চাষিরা বাজারজাত করতে পারতেন তাহলে দেশের বাজারের চাহিদা মেটানো সম্ভব। তাহলে আর মধু আমদানি করতে হবে না।

তিনি বলেন, ‘আমরা মৌ চাষিদের বিভিন্নভাবে সহযোগিতা দেওয়ার চেষ্টা করছি। এখন উৎপাদিত মধু যদি বয়ামজাত করে বিক্রি করা যায় তাহলে কৃষক যেমন লাভবান হবে, তেমনি দেশীয় মধুর বাজারও চাঙ্গা হবে।’

তিনি আরও বলেন, শিল্প মন্ত্রণালয়ের এসএমই নীতিমালায় মধুর কথা বলা আছে। বিসিক এই কাজ করতে পারে। তারা যদি মৌ চাষিদের সহযোগিতা করে তাহলে দেশে উৎপাদিত মধুতেই দেশের চাহিদা মেটানো যেমন সম্ভব, সেইসঙ্গে বৈদেশিক মুদ্রারও সাশ্রয় হবে।

এনএচইবি/এমএমএ/

Header Ad
Header Ad

৩০০ মিলিয়ন ডলার পাচার: হাসিনা ও জয়ের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরু দুদকের

হাসিনা ও জয়। ছবি: সংগৃহীত

নিউইয়র্ক ও লন্ডনে ৩০০ মিলিয়ন ডলার পাচারের অভিযোগে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং তার ছেলে সজিব ওয়াজেদ জয়ের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরু করেছে দুদক।

রোববার (২২ ডিসেম্বর) সকালে দুদক সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

তাদের বিরুদ্ধে গত ১৫ বছরে বিভিন্ন মেগা প্রকল্পে দুর্নীতির অভিযোগ আনা হয়েছে। অনুসন্ধানে পাঁচ সদস্যের টিম গঠন করেছে দুদক। শেখ হাসিনা, শেখ রেহানা ও জয়সহ তাদের পরিবারের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান চলাকালে ব্যাংক হিসাব-সম্পদ জব্দ বা ক্রোক করতে পারবে এই কমিটি।

রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুকেন্দ্র থেকে ৫৯ হাজার কোটি টাকা’সহ বিভিন্ন প্রকল্পে ওঠা ৮০ হাজার কোটি টাকা পাচারের অভিযোগ উঠেছে তাদের বিরুদ্ধে। এছাড়া, আশ্রয়ণসহ ৮টি প্রকল্পে দুর্নীতির তথ্য আমলে নিয়েছে দুদক।

গত ৩ সেপ্টেম্বর, শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের এসব দুর্নীতির অভিযোগ অনুসন্ধানের নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে রিট দায়ের করেন এনডিএম চেয়ারম্যান ববি হাজ্জাজ। শুনানি নিয়ে এসব অভিযোগ অনুসন্ধানে দুদকের নিষ্ক্রিয়তা কেনো অবৈধ ঘোষণা করা হবে না?– তা জানতে চেয়ে গত ১৫ ডিসেম্বর রুল জারি করেন হাইকোর্ট।

Header Ad
Header Ad

ইয়েমেনে হুথিদের লক্ষ্যবস্তুতে মার্কিন বিমান হামলা

ছবি: সংগৃহীত

যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনী জানিয়েছে যে তারা ইয়েমেনের রাজধানী সানায় একটি ক্ষেপণাস্ত্র সংরক্ষণাগার এবং ইরান-সমর্থিত হুথি বিদ্রোহীদের সামরিক স্থাপনাগুলোতে একাধিক বিমান হামলা চালিয়েছে।

শনিবার (২১ ডিসেম্বর) যুক্তরাষ্ট্রের সেন্ট্রাল কমান্ড (সেন্টকম) সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের পোস্টে জানায়, তারা একাধিক হুথি ড্রোন এবং লোহিত সাগরের ওপর একটি অ্যান্টি-শিপ ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্রকেও লক্ষ্যবস্তু করেছে।

সেন্টকম আরও জানায়, তাদের একটি যুদ্ধবিমান লোহিত সাগরের ওপর ভূপাতিত হয়েছে। এতে থাকা দুই ক্রু সদস্য নিরাপদে বের হতে সক্ষম হলেও একজন সামান্য আঘাত পেয়েছেন।

এক বিবৃতিতে সেন্টকম জানায়, এই হামলার লক্ষ্য ছিল হুথিদের অপারেশনগুলোকে দুর্বল করা।

যুক্তরাষ্ট্রের দাবি, তারা এফ/এ-১৮ এবং অন্যান্য নৌ ও বিমান বাহিনীর সম্পদ ব্যবহার করে হুথিদের একাধিক ড্রোন এবং একটি অ্যান্টি-শিপ ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্রকে ধ্বংস করেছে।

এর কয়েক ঘণ্টা পরে সেন্ট্রাল কমান্ড দ্বিতীয় বিবৃতি প্রকাশ করে জানায়, লোহিত সাগরের ওপর ভুলবশত ইউএসএস হ্যারি এস ট্রুম্যান থেকে উড্ডয়নরত একটি এফ/এ-১৮ বিমান লক্ষ্যবস্তু করলে সেটি ভূপাতিত হয়। তবে ভূপাতিত হওয়া বিমানটি ইয়েমেন অপারেশনে জড়িত ছিল কি না, তা স্পষ্ট নয়।

এই আক্রমণটি এমন সময় ঘটলো যখন হুথিরা ইসরায়েলের দিকে একটি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে। ওই ক্ষেপণাস্ত্র তেল আবিবের একটি পার্কে আঘাত হেনেছে। এতে অন্তত ১৬ জন আহত হয়েছে।

হুথিদের এক মুখপাত্র জানায়, দলটি একটি হাইপারসনিক ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করে ইসরায়েলি সামরিক লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হেনেছে।

এই সপ্তাহের শুরুতে হুথিদের সামরিক লক্ষ্যবস্তুতে ইসরায়েল সিরিজ হামলা চালায়। হামলাগুলো ইয়েমেনের রাজধানী সানায় অবস্থিত বন্দর এবং জ্বালানি অবকাঠামোগুলোতে আঘাত হানে।

হুথি-পরিচালিত আল-মাসিরাহ টিভি জানিয়েছে, এই হামলায় সালিফ বন্দর ও রাস ইসা টার্মিনালে নয়জন নিহত হয়েছে। গাজা যুদ্ধ শেষ না হওয়া পর্যন্ত আক্রমণ চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে হুথিরা।

গত বছরের নভেম্বর থেকে হুথিদের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় লোহিত সাগরে দুটি জাহাজ ডুবে গেছে এবং আরও কয়েকটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

হুথিদের দাবি, তারা কেবল ইসরায়েল, যুক্তরাষ্ট্র বা যুক্তরাজ্যের সঙ্গে সম্পর্কিত জাহাজগুলোকে লক্ষ্যবস্তু করছে।

যুক্তরাষ্ট্র জানিয়েছে, তাদের সর্বশেষ হামলা নিজেদের এবং তাদের মিত্রদের রক্ষা করার প্রতিশ্রুতির অংশ।

 

Header Ad
Header Ad

লোকসানের মিথ্যা গল্প শোনাচ্ছে ব্রিডার ফার্মগুলো

ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশ পোল্ট্রি অ্যাসোসিয়েশন (বিপিএ) অভিযোগ করেছে, বাজারে সিন্ডিকেট করে হঠাৎ করেই মুরগির বাচ্চার দাম বাড়িয়ে অতিরিক্ত মুনাফা করার পরও মিথ্যা লোকসানের দাবি করছে ব্রিডার ফার্মগুলো।

সম্প্রতি তারা ৭৫০ কোটি টাকা লোকসানের কথা বললেও কোনো হিসাব বা এসংক্রান্ত তথ্য দেখাতে পারেননি। বরং সরকারিভাবে দেশে কোনো ফিড মিল বা হ্যাচারি না থাকার সুযোগ নিচ্ছেন তারা৷ উৎপাদন ব্যয় না বাড়লেও হঠাৎ করেই বাড়ানো হচ্ছে মুরগির বাচ্চার দাম। এতে করে ক্ষতির মুখে পড়ছেন প্রান্তিক খামারিরা।

রোববার (২২ ডিসেম্বর) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ দাবি করেছেন বিপিএ সভাপতি মো. সুমন হাওলাদার।

তিনি বলেন, দেশের বৃহৎ ব্রিডার ফার্মগুলো ৭৫০ কোটি টাকা লোকসানের কথা বললেও তারা কোনো হিসাব তুলে ধরেনি। অন্যদিকে আমরা সব সময় অভিযোগ করে আসছি, তারা সিন্ডিকেট করে অতিরিক্ত টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন। একটি ব্রয়লার মুরগির বাচ্চার উৎপাদন খরচ ২৮-৩০ টাকা হলেও অযৌক্তিকভাবে ৫২ টাকা দিয়ে কিনতে হচ্ছে। একটি লেয়ার মুরগির বাচ্চা সর্বোচ্চ ৫৭ টাকা সরকার নির্ধারণ করে দিলেও কোম্পানিগুলো সব সময় মুরগির বাচ্চার সংকট তৈরি করে বেশি দামে বিক্রয় করছে। এমনকি এখনও একটি লেয়ার মুরগির বাচ্চা ৭০-৮০ টাকা দিয়েও পাওয়া যাচ্ছে না।

সুমন হাওলাদার বলেন, তবুও তারা লোকসানের গল্প শোনাচ্ছে। এগুলো সরকারের খতিয়ে দেখা উচিত। কোম্পানিগুলো মিথ্যা লোকসানের গল্প বলার সুযোগ পাওয়ার কারণে তাদের বিরুদ্ধে বার বার সিন্ডিকেটের চিত্র উঠে এলেও সরকার তদন্ত করে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। আবার সরকারিভাবে ফিড মিল ও হ্যাচারি না থাকার কারণে ৮-১০টি কোম্পানির কাছে দেশের পোল্ট্রি খাত জিম্মি হয়ে গেছে। যার কারণে মাঝেমধ্যেই ডিম-মুরগির বাজারে অস্থিরতা দেখা দেয়।

আমরা মনে করি, কর্পোরেট কোম্পানিগুলোর কাছে সরকার, প্রান্তিক খামারি এবং ভোক্তা সবাই জিম্মি হয়ে পড়েছি।

তিনি বলেন, সরকার সাভারে একটি ফিড মিল চালু করার কথা থাকলেও আজ পর্যন্ত অজানা কারণে সেই ফিড মিল চালু হয়নি। অন্যদিকে সরকারি হ্যাচারিগুলো সম্পূর্ণ বন্ধ। তার মানে যতদিন সরকার নিজস্ব ফিড মিল এবং হ্যাচারির চালুর ব্যবস্থা না করবে ততদিন এই সিন্ডিকেট বন্ধ হবে না। একদিকে তারা অতিরিক্ত মুনাফা করছে অন্যদিকে সরকারকে লোকসানের গল্প বলছে।

তিনি অভিযোগ করে বলেন, কর্পোরেট কোম্পানির মুরগির বাচ্চা উৎপাদনকারী ব্রিডার ফার্মগুলো, নিজেদের বিপুল মুনাফা লুকিয়ে মিথ্যা লোকসানের দাবি তুলেছে। এসব করে সামনে ফিড ও মুরগির বাচ্চার দাম আরও বাড়ানোর পাঁয়তারা করছে।

বিবৃতিতে বেশ কয়েকটি দাবিও জানানো হয়। সেগুলো হচ্ছে;

১. ব্রিডার ফার্মগুলোর প্রকৃত লাভের হিসাব তদন্ত করে বের করতে হবে।
২. মুরগির বাচ্চা উৎপাদন ও বিক্রির ক্ষেত্রে সঠিক তথ্য প্রচার করতে হবে।
৩. মাঠ পর্যায়ের ডিলার ও প্রান্তিক খামারিদের তথ্য বিশ্লেষণ করতে হবে।
৪. কোম্পানিগুলোর ভ্যাট ফাঁকির বিষয়ে সুষ্ঠু তদন্ত করতে হবে।
৫. সিন্ডিকেটের কার্যক্রম বন্ধে সরকারকে কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে।

একইসঙ্গে ভোক্তা ও প্রান্তিক খামারিদের স্বার্থ রক্ষায় এবং দেশের পোল্ট্রি খাতের স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে সরকারের সঙ্গে বিপিএ কাজ করতে আগ্রহী বলেও মন্তব্য করেছেন সুমন হাওলাদার।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

৩০০ মিলিয়ন ডলার পাচার: হাসিনা ও জয়ের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরু দুদকের
ইয়েমেনে হুথিদের লক্ষ্যবস্তুতে মার্কিন বিমান হামলা
লোকসানের মিথ্যা গল্প শোনাচ্ছে ব্রিডার ফার্মগুলো
একজন ঢাকা অন্যজন কলকাতায় সংসার ভাঙছে মিথিলার
আইনজীবী আলিফ হত্যা: তদন্ত কমিটির সব সদস্যের পদত্যাগ
যে কোন সময় বাংলাদেশের পাশে নতুন দেশ
গাজীপুরে গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণ হয়ে আওয়ামী লীগ নেতার স্ত্রীর মৃত্যু
বাংলাদেশে ইসলামি চরমপন্থা আসবে না: ড. ইউনূস
  সংকট কাটছে, মেট্রোর যাত্রীদের সুখবর দিল ডিএমটিসিএল
ভারতের বিপক্ষে ১১৮ রান করলেই এশিয়া কাপ ঘরে উঠবে বাংলাদেশ
বিরামপুরে শীতার্তদের মাঝে কম্বল বিতরণ
টাঙ্গাইলে আ.লীগ নেতা ও ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল আলীম আটক
শেখ হাসিনা নিজ হাতে তার বাবাকে দ্বিতীয়বার হত্যা করেছে: গয়েশ্বর
চুয়াডাঙ্গায় অবৈধ যানবাহন বন্ধ না হলে গণপরিবহন বন্ধের ঘোষণা
জুমার দিনে ফিলিস্তিনের মসজিদে আগুন দিল ইসরায়েলিরা
গাইবান্ধায় বিএনপি-জামায়াত সংঘর্ষ, আহত অন্তত ১০
আশ্বস্ত করছি বাংলাদেশে জঙ্গিবাদ মাথাচাড়া দেবে না: প্রধান উপদেষ্টা
সত্যি কি থাপ্পড় মেরেছিলেন শাহরুখ, ৯ বছর পর মুখ খুললেন হানি সিং
মেয়ে থেকে ছেলেতে রূপান্তর, বগুড়ার শ্রাবণী এখন শ্রাবণ
বাড়ি ফেরার পথে সড়কে ঝরে গেল বাবা-ছেলের প্রাণ