ছাত্রলীগের ৩০তম জাতীয় সম্মেলন মঙ্গলবার, শীর্ষ পদে এগিয়ে যারা
শোভন-রাব্বানী’র পর বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় দুই শীর্ষ পদে জয়-লেখক পদায়িত হওয়ার দীর্ঘদিন পর অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে দক্ষিণ এশিয়ার সবচেয়ে বৃহৎ ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় ৩০তম জাতীয় সম্মেলন। সম্মেলনকে ঘিরে নেতা-কর্মীদের মাঝে এক ধরনের উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে।
মঙ্গলবার (৬ ডিসেম্বর) ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সকাল সাড়ে ১০ টায় ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে এই সম্মেলন শুরু হবে। সম্মেলনের উদ্বোধন করবেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ ছাড়া, আওয়ামীলীগ ও ভাতৃপ্রতিম সংগঠনের শীর্ষ নেতারা উপস্থিত থাকবেন।
শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় ৩০তম জাতীয় সম্মেলনকে ঘিরে সভাপতি পদে ৯৬ জন ও সাধারণ সম্পাদক পদে ১৫৮ জন পদপ্রার্থী মনোনয়ন সংগ্রহ করেছেন। শেষ মুহূর্তে পদ প্রত্যাশীরা সাংগঠনিক দক্ষতা প্রমাণে উঠেপড়ে লেগেছেন।
ছাত্রলীগের একটি সূত্র বলছে, শেষ মুহূর্তে এ সংখ্যা দুটো পরিবর্তন ঘটার সম্ভবনা অনেক বেশি। কারণ, অনেক অনেক পদপ্রত্যাশীই আছেন যারা নিজেদের পরিচয় ঘটানোর জন্য মনোনয়ন নিয়েছেন। তা ছাড়া, শীর্ষ দুই পদে তারা কিছুটা লড়াই চালিয়ে যাবেন বলে জানা গেছে।
প্রাধান্য দেওয়া হবে যাদের
শ’খানেক পদ-প্রত্যাশীদের মাঝে শীর্ষ দুই ক্লিন-ইমেজ, শেখ হাসিনা ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান প্রসঙ্গে আপোষহীন এবং নেতৃত্বের গুণাবলি, পারিবারিকভাবে আওয়ামী লীগের সঙ্গে জড়িত কি না এসব দেখা হচ্ছে। নেতৃত্ব নির্বাচনে বিতর্কমুক্তদের বেছে নেওয়া হবে, বলে জানা গেছে।
বয়সসীমা নিয়ে বিতর্ক: সর্বশেষ ২০১৮ সালের মে মাসে সংগঠনটির ২৯তম জাতীয় সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছিল। সে হিসেবে ৪ বছরের বেশি সময়ের পর অনুষ্ঠিত হবে ৩০তম জাতীয় সম্মেলন। ছাত্রলীগের গঠনতন্ত্রের ধারা ৫(ক) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, সর্বোচ্চ বয়সসীমা ২৯ থাকলেও আসন্ন সম্মেলনে তা বাড়িয়ে ৩০ করা হতে পারে বলে জানা গেছে। সে হিসেবে পদপ্রত্যাশীদের বয়সের ছাড় দেওয়া হলেও অধিকাংশেরই থাকবে না ছাত্রত্ব।
ছাত্রলীগের গঠনতন্ত্রে বয়সসীমা রয়েছে অনূর্ধ্ব ২৭ বছর। কিন্তু নিয়মিত সম্মেলন না হওয়ায় গত তিন সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিশেষ বিবেচনায় ছাত্রলীগের বয়সসীমা দুই বছর বাড়িয়ে অনূর্ধ্ব ২৯ বছর করা হয়। ১ ডিসেম্বর আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক কার্যালয়ে বয়সের ব্যাপারটি অনানুষ্ঠানিকভাবে স্পষ্ট করেন দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। তিনি অন্য নেতাদের জানিয়ে দেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে বয়সের ব্যাপারে তার আলোচনা হয়েছে। এবারও এই বয়সসীমা হবে ২৯ বছর। এটা বাড়ানো হবে না।
বয়সসীমার কারণে ছাত্রলীগের শীর্ষ নেতৃত্বের দৌঁড়ে ছিটকে পড়ার আশঙ্কা
শীর্ষ এ দুই পদে বয়স জটিলতার পড়ে অনেকেই ছিটকে পড়ে যেতে পারেন। সেক্ষেত্রে জুনিয়র নেতারা প্রাধান্য পেতে পারেন। তবে বয়সের বিবেচনা আমলে আনলেও আনা হতে পারে, যেটি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপর নির্ভর করছে। এমনটা দলীয় সূত্রে জানা গেছে। ছাত্রলীগের একটি সূত্র জানায়, তিনজন প্রার্থীর বয়স সার্টিফিকেট অনুযায়ী ৩০ বছর হওয়ায় তারা বয়স জালিয়াতি অভিযোগ উঠছে। এই তিনজনের ব্যাপারে গোয়েন্দা সংস্থাকে জানানো হয়েছে। তারা বিভিন্নভাবে খোঁজখবর নিচ্ছেন। বয়স জালিয়াতির বিষয়টি স্পষ্টভাবে উল্লেখ করা আছে। যারা এটি করবে, তাদের ব্যাপারে সাংগঠনিক সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
পেছনের কমিটি বনাম আঞ্চলিকতা প্রীতি
ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটি ১৯৮১ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত গত ৪১ বছরে ছাত্রলীগের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেছেন ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন-খ ম জাহাঙ্গীর (১৯৮১-১৯৮৩), আব্দুল মান্নান-জাহাঙ্গীর কবির নানক (১৯৮৩-১৯৮৫), সুলতান মুহাম্মদ মনসুর-আব্দুর রহমান (১৯৮৬-১৯৮৮), হাবিবুর রহমান-অসীম কুমার উকিল (১৯৮৮-১৯৯২), মাঈনুদ্দিন হাসান চৌধুরী-ইকবালুর রহিম (১৯৯২-১৯৯৪), এ কে এম এনামুল হক শামীম-ইসহাক আলী খান পান্না (১৯৯৪-১৯৯৮), বাহাদুর বেপারি-অজয় কর খোকন (১৯৯৮-২০০২), লিয়াকত শিকদার-নজরুল ইসলাম বাবু (২০০২-২০০৬), মাহমুদ হাসান রিপন-মাহফুজুল হায়দার চৌধুরী রোটন (২০০৬-২০১১), এইচ এম বদিউজ্জামান সোহাগ-সিদ্দিকী নাজমুল আলম (২০১১-২০১৫), সাইফুর রহমান সোহাগ-এস এম জাকির হোসেন (২০১৫-২০১৮), রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন-গোলাম রাব্বানী (২০১৮-২০১৯), আল-নাহিয়ান খান জয়-লেখক ভট্টাচার্য (২০১৯- ২০২২)।
এই সময়ে যে ২৭ জন সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক হয়েছেন তার মধ্যে সবচেয়ে বেশি ছয়জন ফরিদপুর অঞ্চলের। এরপরই রয়েছে বরিশাল অঞ্চলের চারজন, ময়মনসিংহ অঞ্চলের তিনজন, রংপুর ও রাজশাহী অঞ্চলের দুই বিভাগের পাঁচজন। আর চট্টগ্রাম, সিলেট, খুলনা ও ঢাকা অঞ্চলের মাত্র দুজন করে আটজন। এবারও ধারণা করা হচ্ছে এবারের কমিটিতে শীর্ষ দুই পদে আঞ্চলিক প্রীতির বিষয়টি আবারো দৃশ্যমান হবে।
শীর্ষ পদে আলোচনায় যারা
ফরিদপুর অঞ্চল থেকে আলোচনায় আছেন সহ-সভাপতি রাকিব হোসেন, আইন বিষয়ক সম্পাদক ফুয়াদ হোসেন শাহাদাত, কর্মসংস্থান সম্পাদক রনি মুহাম্মদ, উপ-প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক মেশকাত হোসেন।
বরিশাল অঞ্চল থেকে আলোচনায় আছেন বর্তমান কমিটির কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি ইয়াজ আল রিয়াদ, সৈয়দ আরিফ হোসেন, তিলোত্তমা শিকদার, সাংগঠনিক সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ (ইনান), উপ-বিজ্ঞান সম্পাদক সবুর খান কলিন্স, কর্মসংস্থান বিষয়ক উপ-সম্পাদক খাদিমুল বাশার জয়, গণশিক্ষা বিষয়ক উপ সম্পাদক সোলাইমান ইসলাম মুন্না এবং ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিষয়ক সম্পাদক ইমরান জমাদ্দার।
উত্তরবঙ্গ থেকে আলোচনায় রয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন, প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক হায়দার মোহাম্মদ জিতু।
ঢাকা অঞ্চলের প্রার্থীদের মধ্যে গণযোগাযোগ ও উন্নয়ন বিষয়ক সম্পাদক শামীম শেখ তুর্জ, উপ তথ্য ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক এহসান উল্লাহ পিয়াল এবং সিলেট অঞ্চল থেকে আল আমিন রহমান আলোচনায় রয়েছেন।
ময়মনসিংহ থেকে আলোচনায় আছেন সংগঠনটির কেন্দ্রীয় কমিটির মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক মেহেদী হাসান তাপস, উপ-প্রচার সম্পাদক সুরাপ মিয়া সোহাগ, তথ্য প্রযুক্তি বিষয়ক উপসম্পাদক রাশিদ শাহরিয়ার উদয় এবং স্কুল ছাত্র বিষয়ক উপ-সম্পাদক শাকের আহমেদ আল আমিন।
খুলনা বিভাগ থেকে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক বরিকুল ইসলাম বাঁধন, মানবসম্পদ বিষয়ক সম্পাদক নাহিদ হাসান শাহিন এবং উপবিজ্ঞান বিষয়ক সম্পাদক খন্দকার আহসান হাবিব আলোচনায় আছেন।
নারী নেতৃত্ব আসার সম্ভবনা
এবারের কমিটিতে নারীর নেতৃত্ব সামনে আসার বেশ সম্ভবনা দেখা হচ্ছে। নারী নেতৃত্বের মাঝে রয়েছেন সংগঠনটির কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি তিলত্তমা শিকদার, মুক্তিযোদ্ধা ও গবেষণা বিষয়ক উপ-সম্পাদক রনক জাহান রাইন। পারিবারিকভাবেও তারা আওয়ামী লীগ রাজনীতির সঙ্গে জড়িত।
নতুন নেতৃত্বের কাছে গঠনতন্ত্র অনুসরণের প্রত্যাশা
গত ৪১ বছরে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী ইউনিটগুলোতে দুই বছর পরপর কমিটি হলে ২১টি কমিটি হওয়ার কথা, সেখানে হয়েছে মাত্র ১৩টি। কর্মীদের প্রত্যাশা সামনে যারা নেতৃত্বে আসবে, আশা করি সামনের নেতৃত্বগুলোতে এমন জটিলতা ঘুচে যাবে। এ ছাড়া, প্রেস রিলিজ কমিটির প্রথা বাতিল করে নিয়মিত সম্মেলনের মাধ্যমে কমিটি দিবেন সামনের নেতৃত্ব; তেমনটিই প্রত্যাশা নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক নেতা-কর্মীর।
ঐতিহ্য ফিরে আসবে বলে প্রত্যাশা
ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি সৈয়দ আরিফ হোসেন বলেন, আসন্ন সম্মেলনকে কেন্দ্র করে শুধু ছাত্রলীগের না পুরো ছাত্র সমাজের প্রত্যাশা অনেক বেশি। যেহেতু সামনে একটি জাতীয় নির্বাচন রয়েছে, সে নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশের স্বাধীনতা বিরোধীচক্র অপশক্তিগুলো ঐক্যবদ্ধ হবে। তারা অনেক অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার চেষ্টা করবে। সম্মেলনকে কেন্দ্র করে এমন নেতৃত্ব আসুক যারা একাধারে দক্ষ, সততা ও নিষ্ঠার সঙ্গে দীর্ঘ দিন সংগঠন করেছেন। একই সঙ্গে যে সংকট আসতে পারে বলে অনুমান করা যাচ্ছে, সেই সংকট মোকাবিলায় তারা যোগ্যতার প্রমাণ দেবে; এমন নেতৃত্বের প্রত্যাশা রাখি।
আরেক সহ সভাপতি ইয়াজ আল রিয়াদ বলেন, দক্ষ ও যোগ্য নেতৃত্বে সামনে আসবে যারা ছাত্রলীগের আরও বেশি গতিশীল করবে। এ ছাড়া, সামনের নেতৃত্বের মধ্যমে দিয়ে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সেই পুরোনো ঐতিহ্য ফিরে আসবে বলে তাদের কাছে প্রত্যাশা থাকবে।
এদিকে মাস্টার দ্য’ সূর্য সেন হল ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সিয়াম রহমান বলেন, শেখ হাসিনার মিশন ও ভিশন বাস্তবায়নের পাশাপাশি দেশকে সামনের দিকে এগিয়ে নিতে এমন যোগ্য নেতৃত্ব আসবে বলে প্রত্যাশা রাখি।
সার্বিক বিষয় গণমাধ্যমে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় বলেন, আমরা সম্মেলনের সর্বপ্রস্তুতি সম্পন্ন করেছি। ইতোমধ্যে প্রার্থীদের আবেদনপত্র নিয়েছি। সেগুলো দায়িত্বশীলরা যাচাই-বাছাই করছেন। বয়স নিয়ে নেত্রীর চিন্তাভাবনা আছে। তিনিই সম্মেলনের দিন বিষয়টি জানিয়ে দেবেন। তার সিদ্ধান্ত অনুযায়ীই নতুন কমিটি হবে।
উল্লেখ্য, ২০১৮ সালের ১১ ও ১২ মে ছাত্রলীগের সর্বশেষ ২৯তম জাতীয় সম্মেলনের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় দুই শীর্ষ পদে শোভন-রাব্বানী আসে। এর দুই মাস পর ২০১৮ সালের ৩১ জুলাই কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদ গঠিত হয়েছিল। দুই বছর মেয়াদী ওই কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদের মেয়াদ শেষ হবার কথা ছিল ২০২১ সালের ৩১ জুলাই। এক বছরের মাথায় চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন অভিযোগে ২০১৯ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর তৎকালীন সভাপতি রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন ও সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানীকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।
সংগঠনের শৃঙ্খলা ফেরাতে এবং বিতর্কমুক্ত করতে গঠনতন্ত্র অনুযায়ী, এক নম্বর সহসভাপতি আল নাহিয়ান খান জয়কে সভাপতি ও এক নম্বর যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্যকে সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব দেওয়া হয়। ২০২০ সালের ৪ জানুয়ারি ছাত্রলীগের ৭২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী অনুষ্ঠানে দুই শীর্ষ নেতাকে ‘ভারমুক্ত’ করে পূর্ণ সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব দেওয়া হয়।
১৯৪৮ সালের ৪ জানুয়ারি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফজলুল হক হলের অ্যাসেম্বলি হলে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠা করেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। প্রতিষ্ঠার সময় ছিলো পূর্ব পাকিস্তান ছাত্রলীগ। পরবর্তী সময়ে ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধের পর পূর্ব পাকিস্তান মুসলিম ছাত্রলীগের পরিবর্তে হয় বাংলাদেশ ছাত্রলীগ।
এমএমএ/