বিআরটিএ’র জলিল কোটি কোটি টাকার মালিক!
বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটি’র (বিআরটিএ) মো. আব্দুল জলিল মিয়া বর্তমানে সহকারী পরিচালক হিসেবে পটুয়াখালীতে কর্মরত আছেন।
মিরপুর বিআরটিএ’র মোটরযান পরিদর্শক থাকাকালীন ২০১০-১১ সালে ব্যাংক পে অর্ডার ছাড়াই ফিটনেস দিয়ে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন বলে ভুক্তভোগীদের অভিযোগে জানা যায়।
এই টাকা দিয়ে মিরপুর ১৩ নম্বর, ভাষানটেক, মিরপুর ১১ নম্বর এভিনিউ-৫ ও মিরপুর ইস্টান হাউজিং এ নামে বেনামে বিভিন্ন স্থাপনা তৈরি করেছেন। এইসব অপকর্মের কারণে আব্দুল জলিল ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে ৫-৬ বছর আগে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদুক), সেগুন বাগিচা, ঢাকা কার্যালয়ের কর্মকর্তারা একটি মামলা করেন।
এই মামলার পরে দুদুকসহ কাফরুল থানা পুলিশের একটি টিম জলিল মিয়ার ১৩ নাম্বারের বাসায় তল্লাশি চালিয়ে বিপুল পরিমাণ ফিটনেস ও লাইসেন্স উদ্ধার করে। যেন তার বাসায়ই আর একটি বিআরটিএ। এত কিছুর পরেও সেই মামলায় তিনি গ্রেপ্তার হননি। তাদেরকে বিভিন্নভাবে ম্যানেজ করে উক্ত মামলা ধামাচাপা দিয়ে রাখেন।
পরবর্তীকালে তিনি প্রমোশন নিয়ে সহকারী পরিচালক হয়ে পটুয়াখালী জেলার বিআরটিএতে যোগ দেন। সেখানে গিয়েও তার দুর্নীতি থেমে নেই। বিআরটিএ’র ফিটনেস অনলাইন হওয়ার পর পটুয়াখালী বসেও বড় বড় বাসসহ বিভিন্ন যানবাহন পরিদর্শন না করে টাকার বিনিময়ে গাড়ির ফিটনেস দেন তিনি।
অনুসন্ধানে জানা যায় বরগুনার এলজিইডির বেশ কিছু গাড়ির ২০১৯-২০ সালে নিলাম হয়। নিলামে দেখা যায় ঢাকা মেট্রো-ঘ-১১ ৩৮৪৯ ব্যক্তি মালিকাধীন গাড়িটি এলজিইডির নামে নিলাম হয়। ভুক্তভোগী গাড়ির মালিক গাড়িটির মালিকানা সম্পর্কে জানতে চাইলে আব্দুল জলিল মিয়াকে ভুক্তভোগীকে বলেন, ‘আমার পরিদর্শনে ভুল ছিল, সম্ভব হলে আমি ঠিক করে দেব।
কিন্তু এখন পর্যন্ত গাড়িটির কার্যক্রম সম্পন্ন করা হয়নি। এ ছাড়া, বিভিন্ন জেলার এলজিইডি নামের গাড়ি বরগুনা এলজিইডি নিলামে দেখা যায়। সে নিলাম বোর্ডে ছিলেন সহকারী পরিচালক (ইঞ্জিনিয়ার) পটুয়াখালী সার্কেল আব্দুল জলিল, মেকানিকাল ফোরম্যান এলজিইডি বিনয় কুমার ঘোষ, সিনিয়র সহকারী প্রকৌশলী এলজিইডি মো. হোসেন আলী মীর, নির্বাহী প্রকৌশলী এলজিইডি বরিশাল বিভাগ মো. নজরুল ইসলাম।
ইতিমধ্যে বিআরটিএ ঘুষ-দুর্নীতির দায়ে পাবনা জেলায় গত ২৮ সেপ্টেম্বর আব্দুল জলিল ও তার স্ত্রী মাহমুদা নাসরিনের বিরুদ্ধে একটি মামলা হয়েছে। দুদুকের পাবনা জেলার উপ-পরিচালক খাইরুল হক এক প্রতিবেদনে বলেন, অনুসন্ধানের পর আব্দুল জলিল ও তার স্ত্রীর নামে মামলা করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, তদন্ত শেষে অভিযোগপত্র দেওয়া হবে। উক্ত অভিযোগ পত্রে তার স্ত্রীর নামে প্রায় ৪ কোটি টাকার সম্পদ পাওয়া গেছে।
এএইচ/এমএমএ/