ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়ের পাশেই রাজউকের ‘স্মার্ট সিটি’
রাজধানীর পাশেই আরেকটা নতুন ও স্মার্ট সিটি করবে রাজধানী উন্নয়ন কর্তপক্ষ(রাজউক)। ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়ের পাশে পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পের আদলে এই স্মার্ট সিটি করার পরিকল্পনা করছে রাজউক। এটি করা হবে ৪ হাজার ৭০০ একর জমিতে।
রাজউক প্রণীত ঢাকা শহরের নতুন বিশদ অঞ্চল পরিকল্পনায় (ড্যাপ) স্মার্ট সিটির কথা উল্লেখ করা হয়েছে। গত ২৪ আগস্ট ড্যাপের নতুন গেজেট প্রকাশিত হয়।
তবে পরিবেশবিদরা বলছেন, সিটি করার কাজ রাজউকের নয। এটি আবাসন কোম্পানির কাজ।
রাজউক সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়ের সঙ্গে আধুনিক আবাসন সুবিধার পাশাপাশি শিক্ষা আইটি ও শিল্প প্রতিষ্ঠানকে গুরুত্ব দিয়ে ৪ হাজার ৭০০ একর জমির উপর গড়ে তোলা হবে স্মার্ট সিটি। ড্যাপের গেজেটে এই শহরের নাম দেওয়া হয়েছে ‘কেরানীগঞ্জ স্মার্ট সিটি’।
নতুন ড্যাপে কেরানীগঞ্জ স্মার্ট সিটি থাকার বিষয়টি ঢাকাপ্রকাশ-কে নিশ্চিত করেছেন ড্যাপের প্রকল্প পরিচালক আশরাফুল ইসলাম। তিনি বলেছেন, রাজউকের পরিকল্পনায় এমন একটি সিটির কথা উল্লেখ আছে।
রাজউক এর আগে বেশ কয়েকটি প্রকল্প হাতে নিয়েছিল। এগুলো হলো উত্তরা তৃতীয় পর্ব প্রকল্প, ঝিলমিল আবাসিক প্রকল্প এবং পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্প। তবে এসব প্রকল্পের কাজ গত দুই যুগেও শুরু করতে পারেনি রাজউক।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, স্থানীয় জমি মালিক ও পরিবেশবাদীদের আপত্তির মুখে রাজউক ঘোষণা দিয়েছিল তারা আর নতুন কোনো আবাসিক প্রকল্প গ্রহণ করবে না। তা ছাড়া, রাজউকের এমন ‘আবাসন কোম্পানির’ ভূমিকা নিয়ে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়াও ব্যক্ত করেন নগর পকিল্পনাবিদ ও পরিবেশবাদীরা।
এমন ঘোষণার পরও প্রতিষ্ঠানটি কেরানীগঞ্জে আরও একটি প্রকল্প গ্রহণে উদ্যোগী হয়েছিল। কিন্তু স্থানীয় জমি মালিকরা অধিগ্রহণবিরোধী বিক্ষোভ সমাবেশ শুরু করলে রাজউক সেই সময় পিছু হটে।
সংশ্লিষ্টরা পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পের উদাহরণ দিয়ে বলেন, জমি অধিগ্রহণ জটিলতায় প্রায় ১৫ বছর কাজই শুরু করা যায়নি পূর্বাচলে। নিয়মিত অধিগ্রহণবিরোধী মিছিল করতেন স্থানীয়রা। এ নিয়ে জমি মালিক এবং পুলিশের মধ্যে প্রায়ই সংঘর্ষ হত। সেই সময় রাজউকের বিরুদ্ধে প্রায় দেড় হাজার মামলা হয় আদালতে।
এ ছাড়া, রাজউকের বিরুদ্ধেই অভিযোগ ওঠে এসব প্রকল্প করতে গিয়ে রাজউক গাছপালা ধংস এবং নিম্নাঞ্চল ও বন্যাপ্রবাহ অঞ্চল ভরাট করেছে। এসব অভিযোগ উঠার পর বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা), পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলন (পবা), বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতির (বেলা) মতো নানা সংগঠন তখন রাজউকের বিরুদ্ধে আন্দোলনও করেছে।
জানতে চাইলে পবার চেয়ারম্যান আবু নাসের খান ঢাকাপ্রকাশ-কে বলেন, রাজউকের কাজ তো আবাসন প্রকল্প করা নয়। এগুলো করবে আবাসন কোম্পানিগুলো। রাজউক আইনগত বিষয়গুলো তদারকি করবে।
এক প্রশ্নের জবাবে পবার চেয়ারম্যান বলেন, রাজউকের জলাধার সংরক্ষণ বা বন্যাপ্রবাহ অঞ্চল সংরক্ষণ করার কথা। কিন্তু এসব আবাসন প্রকল্প করতে প্রতিষ্ঠানটি নিজেই পরিবেশের ক্ষতি করে এবং নিম্নাঞ্চল বা বন্যাপ্রবাহ অঞ্চল ভরাট করে। যেটা পূর্বাচলেও হয়েছে।
পূর্বাচলকেও স্মার্ট সিটি হিসেবে গড়ে তুলছে রাজউক। এ লক্ষ্যে চীনের সঙ্গে একটি চুক্তিও করেছে সরকার।
এনএইচবি/এমএমএ/