শুক্রবার, ৩১ জানুয়ারি ২০২৫ | ১৭ মাঘ ১৪৩১
Dhaka Prokash
Header Ad

প্রশ্নবিদ্ধ সাংবাদিকতা: উত্তরণের পথ (৪)

স্বার্থের দ্বন্দ্বে পরাজিত সাংগঠনিক শক্তি

সাংবাদিকতা। পেশাটি এখনও মহান। সম্মানের। এর বিপরীতে প্রতি কদমেই রয়েছে প্রলোভনের টোপ। পদবির উচ্চতা অনুযায়ী প্লট, টেলিভিশন বা ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের লাইসেন্স, বিদেশ ভ্রমণের আগে ডলারের খাম। আর একটু নিচে তাকালে চোখে পড়বে জন্মদিনে স্মার্ট টিভি উপহার; এমনকি থানা থেকে একশ টাকার ফ্লেক্সিলোডও। হয়তো সংখ্যায় তারা কমই; কিন্তু এর নেতিবাচক প্রভাব বড় বেশি শক্তিশালী। ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় ঠেলে দিচ্ছেন পাশের সহকর্মীকে। পেশাটি ক্রমেই হয়ে উঠছে আরও চ্যালেঞ্জিং। আর রাজনীতি চলছে ‘ইউ আর আইদার উইথ মি অর এগেইনস্ট মি’ নীতিতে। দলীয় রাজনীতির বিভাজক দেওয়ালের পুরুত্ব বাড়ছে দিনকে দিন। স্বার্থের দ্বন্দ্বে পরাজিত সাংগঠনিক শক্তি। পরিণত হয়েছে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র তাবুতে। তবু সাংবাদিকতা আছে, থাকবে; কিন্তু উত্তরণের পথই বা কী? এসব সমস্যার সমাধান নিয়ে ঢাকাপ্রকাশের পক্ষ থেকে মুখোমুখি হওয়া গণমাধ্যম গবেষক, বিশেষজ্ঞ ও সাংবাদিকদের। তাদের মতামতের ভিত্তিতে ‘প্রশ্নবিদ্ধ সাংবাদিকতা: উত্তরণের পথ’ শীর্ষক ঢাকাপ্রকাশের ধারাবহিক এ আয়োজনে আজ থাকছে চতুর্থ পর্ব

গণমাধ্যমের স্বাধীনতা থেকে শুরু করে নানা দাবি আদায়ের জন্য সাংবাদিকদের প্রয়োজন একটি শক্তিশালী সংগঠন; কিন্তু রাজনৈতিক বিভক্তির কারণে সাংগঠনিক শক্তি দুর্বল হয়ে পড়েছে।
এ প্রসঙ্গে কথাসাহিত্যিক ও অধ্যাপক সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম বলেন, ‘শক্তির জায়গা তখনই আসবে, যখন সাংবাদিকরা নিজেদের বিএনপিপন্থী, আওয়ামী লীগপন্থী, বামপন্থী–থেকে বেরিয়ে এসে, সৎ সাংবাদিকতাপন্থী বলে মনে করবে। একটি প্ল্যাটফর্মে দাঁড়িয়ে সততার চর্চা করে দেখাতে এবং প্রমাণসহ যখন প্রতিষ্ঠিত করতে পারবেন, তখন পাঠকরাও তাদের সমর্থনে এগিয়ে আসবে। বৃহত্তর পাঠক সংযুক্তি না থাকলে একটা লড়াই করা কঠিন হয়ে যায়। আর পাঠক তখনই সমর্থন দেবে, যখন তারা দেখবে তার স্বার্থে সাংবাদিক লড়াই করবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘রাজনীতিতেও অনেক সৎ মানুষ আছেন, যারা দেশের উন্নতি চান, সৎ সাংবাদিকতা চান, তাদেরও সক্রিয় করতে হবে। এ ক্ষেত্রে সাংবাদিকদেরও সততার প্রমাণ দিতে হবে। তাহলে সেসব লোক সাংবাদিকদের পক্ষে কথা বলবেন। সাংবাদিকদের দোনোমনা থেকে বের হতে হবে।’

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক বলেন, ‘রাজনৈতিক ভিন্নতা থাকতে পারে তবে সংবাদ পরিবেশনের ক্ষেত্রে বস্তুনিষ্ঠতার বাইরে কিছু চিন্তা করা যাবে না। সাংবাদিক নেতারা যদি এ বিষয়ে একটি জায়গায় অবস্থান নিতে পারে তাহলে দেশের জন্য মঙ্গল হবে। তবে একটি দেশের স্বাধীনতা, স্বকীয়তা, সাতন্ত্র্যর ক্ষেত্রে কোনো বিভেদ মেনে নেওয়া যায় না। তবে সেটি ঘটেছে অনেক পেশায়।’

আরো পড়ুন

ক্ষমতাবান ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠান সাংবাদিকতার প্রতিবন্ধক

সাংবাদিকদের রাজনৈতিক সম্পৃক্ততার বিষয়ে ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদ আলম খান তপু বলেন, ‘একজন মানুষের দর্শন বা রাজনৈতিক বিশ্বাস না থাকলে তিনি সাংবাদিকতা করতেও পারবেন না; কিন্তু সংবাদ পরিবেশেনের ক্ষেত্রে রাজনৈতিক মতাদর্শের প্রয়োগ হচ্ছে কি না, সেটি গুরুত্বপূর্ণ।’

এ প্রসঙ্গে একই রকম মত দিয়েছেন ডিবিসি নিউজের সম্পাদক ও গণমাধ্যম গবেষক জায়েদুল আহসান পিন্টু। তিনি বলেন, ‘সাংবাদিকদের রাজনৈতিক মোটিভেশন থাকাও উচিত। পাকিস্তান আমলে আমরা বাংলাদেশ স্বাধীনের জন্য পাকিস্তানের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছিলাম। পক্ষ-বিপক্ষ থাকবে; কিন্তু রিপোর্টিংয়ের ক্ষেত্রে সে সুযোগ নেই। সে ক্ষেত্রে মতামত লিখতে পারেন।’

সাংবাদিক সংগঠন ও ইউনিয়নগুলোর নির্বাচনে দলীয় প্রভাবের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘যদিও ঘোষণা দেয় না আমরা আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জামাত, জাতীয় পার্টি করি, কিন্তু এটা স্পষ্ট দুটা ভিন্ন আদর্শের সাংবাদিকতার সংগঠন। ৯৩ সালে আওয়ামীপন্থী সাংবাদিক ইউনিয়ন, বিএনপিপন্থী সাংবাদিক ইউনিয়ন হয়ে গেল। যেটা সাংবাদিকদের জন্য সবচেয়ে বড় ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।‘

সাংবাদিকদের রাজনৈতিক বিভাজনের কারণেই সরকারের লোকজন যা চায়, তা অনায়াসে করে নিতে পারে বলে মনে করেন জ্যেষ্ঠ এ সাংবাদিক। তিনি বলেন, ‘সাংবাদিকদের ভেতরে যখন রাজনৈতিক বিভাজনের কারণে মালিক শ্রেণি এক ধরনের শোষণ করে, আবার সরকারের পক্ষ থেকেও এক ধরনের শোষণ বা চাপ সৃষ্টি করা হয়। আমরা যদি এক হয়ে প্রতিবাদটা করতে পারতাম সরকার সেখান থেকে সরে আসত।’

রাজনৈতিক বিভাজন থেকে বেরিয়ে এসে একটি প্ল্যাটফর্মে দাঁড়ানো সম্ভব কি না–এমন প্রশ্নের জবাবে এ গণমাধ্যম গবেষক বলেন, ‘বের হয়ে আসা কঠিন, তবে সম্ভব। রাজনৈতিক বিভাজন এত বেশি যে, সেখান থেকে বের হয়ে আসা সময়সাপেক্ষ ব্যাপার। রাজনৈতিকভাবে সুবিধাপ্রাপ্ত বলেই এত বিভাজন। তবে এটা মনে করা যাবে না যে, সব সাংবাদিক রাজনৈতিকভাবে সুবিধাপ্রাপ্ত। এখান থেকে বের হতে হলে সিনিয়র সাংবাদিকদের একটি কমন প্ল্যাটফর্মে আসতে হবে আর জুনিয়রদের কাছ থেকে একটা চাপও আসতে হবে।’

আরো পড়ুন

স্বাধীন সাংবাদিকতার পরিপন্থী ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন

যে কোনো পেশাজীবীদের ন্যায্য দাবি আদায়ের জন্য পেশাসংশ্লিষ্ট সংগঠন বা ইউনিয়ন থাকে। সাংবাদিকদেরও রয়েছে তেমন ইউনিয়ন বা ক্লাব। প্রেসক্লাব, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন, ফেডালের সাংবাদিক ইউনিয়ন, সাব এডিটরস কাউন্সিল। এ ছাড়া রয়েছে নানা বিটভিত্তিক ও অঞ্চলভিত্তিক সাংবাদিক সংগঠন। সংগঠনের অভাব নেই, তবে অভাব আছে শক্তির। স্বার্থের দ্বন্দ্বে পরাজিত হয়েছে সাংগঠনিক শক্তি।

এত সাংবাদিক সংগঠনের প্রয়োজনীয়তা প্রসঙ্গে সাংবাদিক নেতা সাজ্জাদ আলম খান তপু বলেন, ‘বিশেষায়িত বিট যেমন–বিজনেস, স্পোর্টসের ক্ষেত্রে আলাদা সংগঠন প্রয়োজন হতে পারে। সংগঠন করা দরকার স্বাধীন সাংবাদিকতা প্রবাহে নিজেদের সম্পৃক্ত করতে। সাংবাদিকতাকে বাধাগ্রস্ত করতে নয়। তবে কল্যাণমূলক কনসার্ট, অধিকার প্রতিষ্ঠার লড়াই, মর্যাদার লড়াইয়ের জন্য সংগঠন দরকার।’

তবে এ ব্যাপারে ভিন্ন মত দিলেন ডিবিসি নিউজের সম্পাদক জায়েদুল আহসান পিন্টু। তিনি বলেন, ‘সাংবাদিকদের এত সংগঠনের দরকার হতো না যদি মাদার অরগানাইজেশন (মূল প্রতিষ্ঠান) ঠিক থাকত। একটি প্রেসক্লাব ও একটি সাংবাদিক ইউনিয়ন যথেষ্ট। প্রেসক্লাবে সাংবাদিকরা আড্ডা দেবে। এর মধ্যে নানা জ্ঞানের আলোচনা হবে, খেলাধুলা হবে, বিনোদনও হবে। আর পেশাগত উন্নয়ন, রুটি-রুজি, অনিয়ম প্রতিরোধে, ন্যায্যতা আদায়ের জন্য সাংবাদিক ইউনিয়ন থাকবে। এ দুটি প্রতিষ্ঠান যদি ঠিকমতো কাজ করে, তাহলে তৃতীয় প্রতিষ্ঠানের দরকার হতো না।’

তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘এক সময় পেশাদার সাংবাদিকরা প্রেসক্লাবে ঢুকতে পারতেন না। এখানেও আওয়ামী লীগ-বিএনপির লোক দেখে বাছাই করা হতো, কে সদস্য হবে, কে হবে না। এসব কারণে সেখান থেকে বের হয়ে রিপোর্টাস ইউনিটি করতে হয়েছে।’

রাজনৈতিক বিভক্তি, সাংগঠনিক দুর্বলতার বাইরেও সাংবাদিকতা আক্রান্ত আরেকটি রোগে। ঘুষ বা দুর্নীতির আশ্রয় নেওয়া। দুর্নীতির খবর ফাঁস করার হুমকি দেওয়া, টাকার বিনিময়ে মিথ্যা খবর দেওয়া বা খবর বন্ধ করা। এসব ক্ষেত্রে ঘুষের পরিমাণও নির্ধারিত হয় পদের ওজন বুঝে।

আরো পড়ুন

গোপন সমঝোতার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে সাংবাদিকতা

চাকরির নিশ্চয়তা, আর্থিক সচ্ছলতা না থাকার কারণে সাংবাদিকদের দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়ার কোনো সম্পর্ক আছে কি না–এমন প্রশ্নের জবাবে সাজ্জাদ আলম খান বলেন, ‘অল্প বেতন পেলেই দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়লে, সাংবাদিকতায় না আসা ভালো। তবে আমরা ন্যায্য বেতন চাই। ওয়েজ বোর্ড অনুযায়ী বেতন চাচ্ছি। একটি ভালো প্রতিষ্ঠানই পারে সাংবাদিকতার ভালো ক্ষেত্র তৈরি করতে। এখানে ব্ল্যাকমেইলিং বা কাউকে করায়ত্ব করার সুযোগ থাকেব না। এজন্য ভালো বেতন, প্রতিষ্ঠান ও মর্যাদা থাকা দরকার। এ ছাড়া আইনিভাবেও সুরক্ষা দিতে হবে।’

সাংবাদিকদের বেতন অনেক কম দেওয়া হয় স্বীকার করে ডিবিসি নিউজের সম্পাদক জায়েদুল আহসান পিন্টু বলেন, ‘সাংবাদিকদের যে বেতন দেওয়া হয়, তা দিয়ে সংসার চলে না। তাই বলে অনিয়ম করবে তা হবে না। তাহলে কেউ রিকশা চালাত না, সবাই ডাকাতিই করত।’

তবে প্রতিষ্ঠানের আধিক্য উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘বাজার ছোট টেলিভিশন বা গণমাধ্যমের সংখ্যা বেশি। অত প্রতিষ্ঠানের দরকার কী?’

কর্মসংস্থানের ব্যবস্থার প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘যখন ৪০টি টেলিভিশন ছিল না, তখন সব মানুষ কী বেকার ছিল? বিকল্প বের হয়ে যায়।’

শুধু ব্যক্তিগত পর্যায় থেকে নয়, ইদানিং সাংগঠনিকভাবেও উপহার গ্রহণ, পিকনিক বা অনুষ্ঠানের চাঁদা নেওয়া হচ্ছে। এ প্রসঙ্গে সাংবাদিক নেতা সাজ্জাদ আলম খান তপু বলেন, ‘কল্যাণমূলক বা অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য কোনো সভা, সেমিনার বা বিনোদমূলক কর্মসূচির প্রয়োজনে অনুদান সংগ্রহ সেটি একরকম। আর যদি ব্ল্যাকমেইলিং বা জোরদবদস্তিমূলক হয়, সেটি অবশ্যই নিন্দনীয় ও অপরাধযোগ্য বিষয়।’

তবে এসবের দৃঢ় প্রতিবাদ করেন জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক জায়েদুল আহসান পিন্টু। তিনি বলেন, ‘এগুলো নেওয়া মানে স্বার্থের দ্বন্দ্ব (কনফ্লিক্ট অব ইন্টারেস্ট) বেড়ে যায়। যখনই আপনি কারো কাছ থেকে সুবিধা নেবেন, তখন আপনি মানসিকভাবে তার কাছে দায়বদ্ধ থেকে যাচ্ছেন। সেই জায়গায় আমি মনে করি এগুলো স্ট্রিক্টলি নিষিদ্ধ করা উচিত। আমরা চাঁদা দিয়ে যাব, চাঁদা দেওয়ার ক্ষমতা না থাকলে অফিসকে বলা যেতে পারে। আপনি যখন বাইরের অফিস থেকে নেবেন, সেটি আপনার আচরণবিধির লঙ্ঘন। সংগঠনগুলো কাজটি করে সাংবাদিকদের নৈতিকতাবিরোধী কাজ করছে। এ ধরনের সুবিধা নেব না বলে আচরণবিধি তৈরি করা দরকার। রাষ্ট্রের কাছ থেকে নেওয়া যায়, রাষ্ট্রের টাকা মানে জনগণের টাকা। সরকারের দায়িত্ব পেট্রোনাইজ করা।’

এসএন/এসএ/

Header Ad
Header Ad

সাবেক সমাজকল্যাণ মন্ত্রী নুরুজ্জামান ৫ দিনের রিমান্ডে

সাবেক সমাজকল্যাণ মন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদ। ছবি: সংগৃহীত

রংপুরে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে নিহত মাহমুদুল হাসান মুন্না হত্যা মামলায় সাবেক সমাজকল্যাণ মন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদকে ৫ দিনের রিমান্ড দিয়েছেন আদালত।

শুক্রবার (৩১ জানুয়ারি) সকালে তাকে আদালতে হাজির করা হয়। পরে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই মোস্তাফিজার রহমান তার ১৫ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন। শুনানি শেষে রংপুর মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-৩ এর বিচারক দেবী রানী রায় আসামির পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

এ বিষয়ে রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-পুলিশ কমিশনার (অপরাধ) মোহাম্মদ শিবলী কায়সার গণমাধ্যমকে বলেন, গোপন সংবাদ ও তথ্যপ্রযুক্তির মাধ্যমে সাবেক সমাজকল্যাণমন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তার নামে একাধিক হত্যা মামলা রয়েছে। আজ শুক্রবার রিমান্ড আবেদনের জন্য তাকে আদালতে তোলা হয়।

এর আগে, বৃহস্পতিবার (৩০ জানুয়ারি) রাত ৯টার দিকে রংপুর নগরীর সেন্ট্রাল রোডের পোস্ট অফিস-সংলগ্ন একটি বাসা থেকে সাবেক মন্ত্রী নুরুজ্জামানকে গ্রেপ্তার করা হয়।

উল্লেখ্য, সাবেক সমাজকল্যাণমন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদ লালমনিরহাট-২ (কালিগঞ্জ-আদিতমারী) আসনের সংসদ সদস্য ছিলেন। তিনি ২০১৫ সালে সমাজকল্যাণ প্রতিমন্ত্রী ও ২০১৯ সালে সমাজকল্যাণমন্ত্রীর দায়িত্ব পান। সবশেষ দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও তিনি সংসদ সদস্য হন।

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মুখে গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর থেকে নুরুজ্জামান আত্মগোপনে ছিলেন।

Header Ad
Header Ad

বিশ্ববিদ্যালয়ের দাবিতে আজও অনশনে তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থীরা

বিশ্ববিদ্যালয়ের দাবিতে আজও অনশনে তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থীরা। ছবি: সংগৃহীত

রাজধানীর সরকারি তিতুমীর কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয় করে প্রজ্ঞাপণ জারির দাবিতে শুক্রবার (৩১ জানুয়ারি) টানা তৃতীয় দিনের মতো আমরণ অনশনে বসেছেন কলেজটির একদল শিক্ষার্থী। অবশ্য এরই মধ্যে তারা কলেজের সামনের সড়কের অবরোধ তুলে নিয়েছেন। এতে করে মহাখালী থেকে গুলশান লিংক রোডের যান চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে।

তবে কলেজের মূল ফটকের সামনে অবস্থান করছেন তারা। আজকের জুমার নামাজ সেখানেই আদায় করার ঘোষণা দিয়েছেন তারা। শুক্রবার (৩১ জানুয়ারি) কলেজটির শিক্ষার্থীদের সংগঠন তিতুমীর ঐক্যের পক্ষ থেকে এমন তথ্য জানানো হয়েছে।

সংশ্লিষ্টরা বলেন, আমাদের অনশন কর্মসূচি শুরুর ২৪ ঘণ্টা পর শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে একজন প্রতিনিধি এসেছিলেন। তিনি আশ্বাস দিয়েছেন। কিন্তু কারো মুখের কথা আমরা বিশ্বাস করতে চাইনা। যতক্ষণ পর্যন্ত তিতুমীর কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বীকৃতি দেওয়া না হবে, ততক্ষণ পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাব। রাতে সড়ক অবরোধ ছাড়লেও ফের অবরোধ করা হবে। রাতে রাজধানীতে কাঁচামালবাহী বিভিন্ন সবজির গাড়ি প্রবেশ করে। তাই তারা সড়ক ছেড়ে দিয়েছিলাম। যেন জনদুর্ভোগ সৃষ্টি না হয়।

তারা বলেন, অনশনরত অবস্থায় অসুস্থ হয়ে তিতুমীর কলেজের ৭ জন শিক্ষার্থী সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন। এছাড়া বাংলা বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী রানা আহমেদ ও গণিত বিভাগের শিক্ষার্থী আমিনুল ইসলাম চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

তিতুমীর ঐক্যের দপ্তর সম্পাদক আমিনুল ইসলাম বলেন, গত বুধবার (২৯ জানুয়ারি) বিকেলে থেকে অনশন শুরু হয়েছে। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত এই অনশন চলবে। আমরা ৭ দফা দাবি জানিয়েছি। সেগুলো হচ্ছে —

১. তিতুমীর বিশ্ববিদ্যালয় রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় অ্যাকাডেমিক ক্যালেন্ডার প্রকাশ করতে হবে।

২. তিতুমীর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন গঠন করে ২০২৪-২০২৫ সেশনের ভর্তি কার্যক্রম পরিচালনা করতে হবে।

৩. শতভাগ শিক্ষার্থীর আবাসন ব্যবস্থা নিশ্চিতকরণ নতুবা অনতিবিলম্বে শতভাগ শিক্ষার্থীর আবাসিক খরচ বহন করতে হবে।

৪. ২০২৪-২০২৫ শিক্ষাবর্ষ থেকে আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন ন্যূনতম দুইটি বিষয় ‘আইন’ এবং ‘জার্নালিজম’ বিষয় সংযোজন করতে হবে।

৫. অ্যাকাডেমিক কার্যক্রম পরিচালনার জন্য যোগ্যতাসম্পন্ন পিএইচডিধারী শিক্ষক নিয়োগ দিতে হবে।

৬. শিক্ষার গুণগতমান শতভাগ বৃদ্ধির লক্ষ্যে আসন সংখ্যা সীমিত করতে হবে।

৭. আন্তর্জাতিক মানের গবেষণাগার বিনির্মাণের লক্ষ্যে জমি ও আর্থিক বরাদ্দ নিশ্চিতকরণ করতে হবে।

এর আগে, গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব নুরুজ্জামান অনশনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে দেখা করতে আসেন। তিনি তাদের অনশন কর্মসূচি প্রত্যাহারের অনুরোধ জানান। তবে শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয় ঘোষণা না দেওয়া পর্যন্ত অনশন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন।

Header Ad
Header Ad

টাঙ্গাইলে নিজ বাড়ির পাশে পড়ে ছিল যুবকের গলাকাটা মরদেহ

ছবি: সংগৃহীত

টাঙ্গাইলের সদরে ফুলচান (২০) নামে এক রডমিস্ত্রীকে গলাকেটে করে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। বৃহস্পতিবার (৩০ জানুয়ারি) রাত ৮ টার দিকে সদর উপজেলার দাইন্যা ইউনিয়নের বসাকপাড়া রোড ছোট বিন্নাফৈর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

নিহত ফুলচান ওই এলাকার স্বন্দেশ মিয়ার ছেলে। দাইন্যা ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান লাভলু মিয়া লাবু এ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

সাবেক চেয়ারম্যান লাভলু মিয়া লাবু জানান, রাত ৮টার দিকে স্থানীয় তার বাড়ির পাশে লোকজন রাস্তার উপর ফুলচানের গলাকাটা মরদেহ পড়ে থাকতে দেখে পুলিশকে খবর দেন। পরে খবর পেয়ে পুলিশ মরদেহটি উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়।

তিনি আরও জানান, তার ধারণা রাত সাড়ে ৭টা থেকে ৮ টার মধ্যে দুর্বৃত্তরা তাকে জবাই করে মরদেহটি ফেলে রেখে ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়। জড়িতদের দ্রুত গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন তিনি।

এ ব্যাপারে টাঙ্গাইল সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) তানবীর আহমেদ জানান, স্থানীয়দের মাধ্যমে সংবাদ পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে মরদেহ উদ্ধার ময়নাতদন্তের জন্য টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। যারাই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত থাকুক না কেন তাদের চিহিৃত করে দ্রুত আইনের আওতায় আনা হবে।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

সাবেক সমাজকল্যাণ মন্ত্রী নুরুজ্জামান ৫ দিনের রিমান্ডে
বিশ্ববিদ্যালয়ের দাবিতে আজও অনশনে তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থীরা
টাঙ্গাইলে নিজ বাড়ির পাশে পড়ে ছিল যুবকের গলাকাটা মরদেহ
গাজায় ধ্বংসস্তূপ থেকে আরও ৪২ ফিলিস্তিনির লাশ উদ্ধার
ছাত্রদল নেতার সমন্বয়ক পরিচয়ে প্রকল্প গ্রহণ, বাস্তবায়নে অনিয়মের চাঞ্চল্যকর অভিযোগ
ছাত্রদের চাপে সাবেক মন্ত্রী নুরুজ্জামানের হাতে হাতকড়া, ডিম নিক্ষেপ
ওভাল ক্রিকেট টিমের ৪৯ শতাংশ শেয়ার কিনল আম্বানি পরিবার
সামরিক প্রধান মোহাম্মদ দেইফের মৃত্যু নিশ্চিত করল হামাস
প্রথম আরব নেতা হিসেবে সিরিয়া সফরে কাতারের আমির
শহীদ ইয়ামিনকে হত্যা করল কে? পুলিশের তদন্তে নতুন বিতর্ক
রংপুর থেকে গ্রেফতার সাবেক সমাজকল্যাণ মন্ত্রী নুরুজ্জামান
কোটা পদ্ধতি পুনরায় পর্যালোচনার নতুন ৩ সিদ্ধান্ত অন্তর্বর্তী সরকারের
আমরা কারও কাছে চাঁদা চাইনি, চাইবোও না: জামায়াত আমির
নওগাঁ বারের নির্বাচনে সব পদে বিএনপি প্যানেলের জয়
আরব আমিরাতে চাঁদ দেখা গেছে, পবিত্র শবে বরাত ১৪ ফেব্রুয়ারি
ডিপসিকের চেয়েও কার্যকর নতুন এআই আনার দাবি আলিবাবার
প্রাথমিক শিক্ষার মান উন্নয়ন ও গুণগত পরিবর্তনই আমাদের মূল লক্ষ্য: গণশিক্ষা উপদেষ্টা
বাণিজ্য মেলায় সংঘর্ষ, আহত ১৬
শেখ হাসিনাসহ জড়িতদের বিচার দাবিতে আমরণ অনশনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্ররা
পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নিলে নিজেই জানিয়ে দিবো: তথ্য উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম