অভিজাত এলাকায় নাগরিক সেবা পেতে গুণতে হবে অতিরিক্ত অর্থ

রাজধানীর অভিজাত এলাকায় নাগরিক সেবা পেতে গুণতে হবে অতিরিক্ত অর্থ। নতুন অর্থবছর অর্থাৎ জুলাই থেকেই বর্ধিত হারে অর্থ দিতে হবে এ সব এলাকার বাসিন্দাদের। এলাকাগুলো হলো— গুলশান, বনানী, বারিধারা ও নিকেতন।
এতদিন নাগরিক সেবামূল্য অভিজাত এবং গরীব-সব এলাকাতে একই ছিল। দীর্ঘদিন থেকেই এ ব্যপারে একটি বিতর্ক চলছিল যে সরকারি সেবামূল্য ধনী-গরিব সবারই একই হতে পারে কী-না।
এমন একটা পটভূমিকায় প্রথম পদক্ষেপ নেয় ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি)। সংস্থাটি প্রথম উদ্যোগ নেয় গুলশান, বনানী, বারিধারা ও নিকেতনের মতো অভিজাত এলাকার হোল্ডিং ট্যাক্স বাড়ানোর।
নতুন অর্থবছর অর্থাৎ আগামী জুলাই থেকেই নতুন রেট অনুযায়ী হোল্ডিং ট্যাক্স গ্রহণ করবে ডিএনসিসি। বর্তমানে হোল্ডিং ট্যাক্স নির্ধারণের কাজ চলছে।
নিয়ম হলো প্রতি বর্গফুটের উপর একটা ভাড়া ধরে তার ভিত্তিতে হোল্ডিং ট্যাক্স নির্ধারণ করে সিটি করপোরেশন। এতদিন তাই হয়ে এসেছে। কিন্তু এখন সেটা আর হবে না। জুলাই থেকে এসব এলাকায় বর্তমান ভাড়ার সঙ্গে ৩৩ শতাংশ বাড়িয়ে তার উপর হোল্ডিং ট্যাক্স দিতে হবে।
এ ব্যপারে ডিএনসিসি মেয়র আতিকুল ইসলাম বলছেন, ২০০৮ সালের বাড়ি ভাড়ার হার অনুযায়ী প্রতি বর্গফুট ১৮ টাকা ধরে হোল্ডিং ট্যাক্স নির্ধারণ করা হতো। কিন্তু অভিজাত এলাকায় বাড়ি ভাড়া এত কম নয়। তাই সমন্বয় করা হচ্ছে।
ডিএনসিসি মেয়র বলেন, প্রতি বর্গফুট ১৮ টাকা ধরে তার সঙ্গে ৩৩ শতাংশ যোগ করলে হবে ২৪ টাকা। এই ২৪ টাকার উপর ১২ শতাংশ হারে এ সব এলাকায় হোল্ডিং ট্যাক্স দিতে হবে।
বাড়ছে অন্যান্য সেবামূল্যও
অভিাজত এলাকায় শুধু হোল্ডিং ট্যাক্স নয় বাড়ছে গ্যাস, পানি ও বিদ্যুতের মতো সেবাগুলোর মূল্যও। মূলত ২০২১ সাল থেকেই বিষয়টি নিয়ে কথা বলছেন স্থানীয় সরকারমন্ত্রী তাজুল ইসলাম। তার অভিমত, গুলশান, বনানী ও বারিধারা ও নিকেতনের মতো অভিজাত এলাকার সেবামূল্য কখনোই যাত্রাবাড়ী এলাকার সেবামূল্যের সমান হতে পারে না।
তাহলে তো সবাই অভিজাত এলাকাতেই থাকতে চাইবে এমন অভিমত ব্যক্ত করে তাজুল ইসলাম বলছেন, তাই জোনভিত্তিক সেবামূল্য নির্ধারণ করা এখন সময়ের দাবি। রাজধানীতে হোল্ডিং ট্যাক্স, পানি, গ্যাস ও বিদ্যুৎসহ অন্যান্য সেবার জন্য অঞ্চলভিত্তিক মূল্য নির্ধারণ করতে হবে।
জুলাইতে অভিজাত এলাকায় হোল্ডিং ট্যাক্সের পর বাড়ছে পানির দামও। ঢাকা ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক তাকসিম এ খান বলেন, জমির মৌজা অনুযায়ী রেট অনুযায়ী পানির বিল নির্ধারণ করবে ঢাকা ওয়াসা। আগামী জুলাই মাসেই পাইলট প্রকল্প শুরু হবে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, হোল্ডিং ট্যাক্স ও পানির মতো খুব শিগগিরই বিদ্যুৎ ও গ্যাসের দামও নির্ধারণে উদ্যোগ নেওয়া হতে পারে। বিশ্বের অনেক উন্নত বিশ্বেও এমন ব্যবস্থাই চালু আছে।
উদহারণস্বরূপ যুক্তরাজ্যের কথা যেতে পারে। দেশটিতে অভিজাত নটিংহামের বাসিন্দারা ‘কাউন্সিল ট্যাক্স’ অনেক বেশি দেন ওয়েস্টমিনিস্টারের বাসিন্দাদের তুলনায়।
আরইউ/আরএ/
