মঙ্গলবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৫ | ১৬ বৈশাখ ১৪৩২
Dhaka Prokash

মতিঝিলে ধারাবাহিক খুন! পরবর্তী টার্গেট কে?

রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে একের পর এক খুন হচ্ছে অনেকেই। সম্প্রতি এ খুনের সংখ্যা বেড়ে গেছে বলে মনে করছেন অপরাধ বিশেষজ্ঞরা। অপরাধ বিশ্লেষকদের প্রশ্ন, মতিঝিল নিয়ন্ত্রণকারী গ্যাং মিল্কি, রিজভি হাসান বাবু ও টিপু হত্যার পর পরবর্তী টার্গেট কে?

অপরাধ বিশেষজ্ঞদের মতে, মতিঝিল নিয়ন্ত্রন মানে পুরো ঢাকা নিয়ন্ত্রণ। মতিঝিল কেন্দ্রিক চাঁদাও উঠে মাসে কোটি টাকার উপরে। শুধু কি চাঁদা? বিভিন্ন টেন্ডারের নিয়ন্ত্রণও এখান থেকে। আর নিয়ন্ত্রণ নিতেই একের পর এক নেতার উত্থান। আর এসব নেতারাও টিকতে পারছেন না। এক সময়ের ঢাকা কাঁপানো শীর্ষ সন্ত্রাসীরা তাদের কথা না শুনলেই দেশের বাইরে থেকেই নিখুঁত পরিকল্পনায় হত্যা করে যাচ্ছে। গত ৭/৮ বছরে মতিঝিল কেন্দ্রিক আন্ডারওয়ার্ল্ডের ঝামেলায় খুন হয়েছে তিন নেতা।

এছাড়াও বাড্ডার স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা মাহাবুবুর রহমান গামাসহ ৪ হত্যার পেছনেও একই আন্ডারওয়ার্ল্ড কাজ করেছে। যার কারণে স্থানীয় নেতাদের মধ্যে এখন আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। নেতারা বলছেন, ধারাবাহিক হত্যার ঘটনা ঘটে চলেছে। এখন পরবর্তী টার্গেট কে সেটাই দেখার অপেক্ষা।

টিপু হত্যাকান্ডে আতঙ্কিত ঠিকাদারী ব্যবসায়ীরা
একটি তথ্য বলছে, টিপু হত্যাকান্ডের পর সারাদেশে অনেকের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে‌। রাজধানীর মতিঝিল, পল্টন, শাহাজানপুর, রামপুরা আওয়ামী লীগ থেকে শুরু করে ছাত্রলীগ, যুবলীগ স্বেচ্ছাসেবক লীগের অনেক নেতারাই আতঙ্কিত। বিশেষ করে যে সকল নেতারা ঠিকাদারী ব্যবসার সঙ্গে জড়িত তারা আরও বেশি আতঙ্কিত।

মতিঝিল কেন্দ্রিক রাজনৈতিক নেতাদের মধ্যে ঝড়
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বেশ কয়েকজন নেতা জানান, জাহিদ হাসান মিল্কি হত্যাকান্ডের পর থেকে মতিঝিল কেন্দ্রিক রাজনৈতিক নেতাদের মধ্যে একটি ঝড় বয়ে গেছে। মিল্কি হত্যার পরে জাহিদ সিদ্দিকি তারেক র‌্যাবের ক্রসফায়ারে নিহত হয়। এরপর মতিঝিলের নিয়ন্ত্রণ কে নেবে তা নিয়ে শুরু হয় প্রতিযোগিতা। মিল্কি হত্যার পর টিপুসহ অনেক নেতাই যখন আসামি, আবার অনেকে গ্রেপ্তার হয়ে জেলখানায় ঠিক সেই সময় সম্রাট সেই জায়গা দখলে নেয়।

এরপর মতিঝিল নয়, পুরো দক্ষিণ মহানগরে সম্রাটের একচ্ছত্র আধিপত্য তৈরি হয়। এক পর্যায়ে আধিপত্যের মাত্রা এমন হয়ে যায় শুধু দক্ষিণের নয়, উত্তর দক্ষিণের একক আধিপত্য চলে আসে তার নিয়ন্ত্রণে। রাজধানী জুড়ে ক্যাসিনো বিরোধী অভিযান শুরু হলে সম্রাট, খালেদ গ্রেপ্তার হলে আবারও শুরু হয় আধিপত্যের লড়াই।

এই এলাকায় রাজনীতি করেন এমন ব্যক্তিরা বলছেন, মিল্কি মার্ডারের পর থেকে মূলত শুরু হয়েছে আধিপত্যের লড়াই। মিল্কি হত্যার সঙ্গে জড়িতরা প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা করলে বোচা বাবু হত্যাকান্ড ঘটে। সর্বশেষ টিপু হত্যাকান্ড সংঘঠিত হয়।

বিভিন্ন রাজনৈতিক সূত্র বলছে, টিপু হত্যাকান্ডের পর সম্রাট ও খালেদের কাছেও খবর পৌঁছে যায়। বর্তমানে এ এলাকার আধিপত্য নিতে কারাগারে থাকা সম্রাট, খালেদ এমনকি গোল্ডেন মনিরের কাছে অনেকেই ধর্না দিচ্ছে।

যা বলছে যুবলীগ নেতারা
নাম প্রকাশ না করার শর্তে যুবলীগের এক নেতা বলেন, দক্ষিণ যুবলীগের মধ্যে মতিঝিল, পল্টন, শাহজাহানপুর এলাকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। অনেক নেতা ঠিকাদারী কাজ করেন। বড় কোন কাজ হলেই এই তিন থানা এলাকার ছোট নেতা হলেও তাদের সমিহ করে টাকা দিতে হয়। তা না হলে করুন পরিনতি ভোগ করতে হবে।

বর্তমান যুবলীগের কেন্দ্রীয় আরেক নেতা বলেন, সম্রাট-খালিদও একই পথ অবলম্বন করত। বিভিন্ন এলাকা থেকে তাদের নামে চাঁদা উঠতো। পাশাপাশি ক্যাসিনো থেকেও উঠতো টাকা। এই টাকাও তাদের দুবাইসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে থাকা বাংলাদেশি পলাতক শীর্ষ সন্ত্রাসীদের নিকট বিভিন্ন মাধ্যমে পৌঁছে দিতে হত।

এদিকে মিল্কি, বোঁচা বাবু হত্যার পর সম্রাট-খালিদ ম্যানেজিং এর কাজটি ভালোভাবেই করত। এ কারণে তাদের সমস্যাও হয়নি। কিন্তু ক্যাসিনো কান্ডে তারা গ্রেপ্তার হয় এবং কারাগারে রয়েছে।

যুবলীগের বেশ কিছু নেতা বলছেন, সম্রাট একবার অসুস্থ হয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি। ওই সময় আন্ডারওয়ার্ল্ডে তার ঝামেলা বাধে। ওই সময় হাসপাতালে থাকা অবস্থায় তাকে হত্যা করতে কিলার ভাড়া করে পাঠানো হয়। অল্পের জন্য বেঁচেও যায় সে। তবে গ্রেপ্তার হয়ে সম্রাট খালেদ জেলহাজতে থাকায় টিপু অপ্রতিরোধ্য হয়ে উঠতে চেয়েছিল।

টিপুর হত্যাকারীদের গ্রেপ্তার এরপর যা বলছে গোয়েন্দারা

এদিকে র‌্যাব জানায়, ২০১৩ সালে রাজধানীর গুলশান শপার্স ওয়ার্ল্ডের সামনে মিল্কী হত্যাকাণ্ড সংঘঠিত হয়। টিপু হত্যায় গ্রেপ্তারকৃত ওমর ফারুক (৫২), আবু সালেহ শিকদার (৩৮), নাছির উদ্দিন (৩৮) ও মোরশেদুল আলম (৫১)। গ্রেপ্তারকৃতরা মিল্কীর সহযোগী ছিল। মিল্কী হত্যার সঙ্গে টিপু জড়িত ছিল বলে গ্রেপ্তারকৃতরা সন্দেহ করত।

মিল্কী হত্যার মামলার এজহারে টিপুর নামও দেয় তারা। কিন্তু বিচারিক কার্যক্রমে টিপুর নাম বাদ পড়ায় গ্রেপ্তারদের মনে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়।

দীর্ঘদিন ধরে ভিকটিম ও হত্যার পরিকল্পনাকারীদের মধ্যে বিরোধ ছিল উল্লেখ করে র‌্যাব জানায়, মতিঝিল এলাকার চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি, স্কুল-কলেজের ভর্তি বাণিজ্য, বাজার নিয়ন্ত্রণ, আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দ্বন্দ্ব-সংঘাত ছিল। এছাড়া এলাকার আধিপত্য বিস্তারসহ মামলা সংক্রান্ত বিষয়েও টিপুর সঙ্গে গ্রেপ্তারকৃতদের দ্বন্দ্ব ছিল। আর এসব দ্বন্দ্বকে কেন্দ্র করেই টিপুকে হত্যা করা হয়।

র‌্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া পরিচালক খন্দকার আল মঈন বলেছেন, টিপুকে হত্যা করার জন্য ১৫ লাখ টাকা বাজেট করে পরিকল্পনাকারীরা। আন্ডার ওয়ার্ল্ড ডন মুসাকে দায়িত্ব দেওয়া হয় এ হত্যাকাণ্ডে। ঘটনার ১২ দিন আগে মুসা দুবাই চলে যায়। সেখানে বসে তিনি কিলার নিয়োগ করা থেকে শুরু করে হত্যার ফাইনাল মিশন শেষ করে।

এর আগে টিপু-প্রীতি হত্যাকাণ্ডের ৪৮ ঘণ্টা পর মো. মাসুম ওরফে আকাশ নামে একজনকে গ্রেপ্তার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের মতিঝিল বিভাগ। পুলিশ বলছে, মাসুমই ব্যস্ত সড়কে প্রকাশ্যে টিপুকে গুলি করে হত্যা করে।

যে ভাবে দুবাই বসেই ফাইনাল ছক করে মুসা

গোয়েন্দাদের দেওয়া তথ্যানুসারে, টিপুকে দুবাই বসে হত্যার পরিকল্পনা ও নির্দেশনা দেন সুমন শিকদার ওরফে মুসা। টিপু হত্যাকাণ্ডের ঠিক ১২ দিন আগে দুবাই চলে যায় মুসা। দুবাই বসে হত্যার পুরো ছক কষে। টিপুকে হত্যায় চুক্তি হয় ১৫ লাখ টাকা। এই ১৫ লাখ টাকা কে কত দেবে তাও ভাগ করে দেয় মুসা। নয় লাখ টাকা দেয় ওমর ফারুক। অবশিষ্ট ছয় লাখ টাকা দেয় গ্রেপ্তার নাছির উদ্দিন ওরফে কিলার নাছির, আবু সালেহ শিকদার ওরফে শুটার সালেহ ও মুসা।

খন্দকার আল মঈন জানান, দুবাই যাওয়ার আগে পাঁচ লাখ টাকা নিয়ে যায় মুসা, হুন্ডির মাধ্যমে আরও চার লাখ টাকা মুসাকে দেওয়া হয়। বাকি ছয় লাখ টাকা দেশে হস্তান্তর করার চুক্তি হয়। ছয় লাখের মধ্যে গ্রেপ্তারের সময় ৩ লাখ ৩০ হাজার টাকা জব্দ করে র‌্যাব। দুবাই থাকা মুসা ২০১৬ সালে রিজভী হাসান ওরফে বোচা বাবু হত্যাকাণ্ডের চার্জশিটভুক্ত ৩ নম্বর আসামি।

দেশে হত্যাকাণ্ড হলেও নিয়ন্ত্রণ হয় বাইরে থেকে

গ্রেপ্তারদের বারাত দিয়ে র‍্যাব কমান্ডার খন্দকার আল মঈন জানিয়েছেন, এ হত্যাকাণ্ডটি দেশে ঘটলেও নিয়ন্ত্রণ করা হয় দুবাই থেকে। দেশে থাকা নাছির উদ্দিন ওরফে কিলার নাছির, মোরশেদুল আলম ওরফে কাইল্লা পলাশসহ আরও কয়েকজন জাহিদুল ইসলাম টিপুর অবস্থান সম্পর্কে বেশ কয়েকদিন ধরে মুসার কাছে তথ্য প্রেরণ করত। ঘটনার দিন সন্ধ্যার পর গ্রেপ্তার নাছির উদ্দিন ওরফে কিলার নাছির আনুমানিক চারবার জাহিদুল ইসলাম টিপুর অবস্থান সম্পর্কে মুসাকে অবহিত করে। পরে জাহিদুল ইসলাম টিপু গ্রান্ড সুলতান রেস্টুরেন্ট থেকে বের হওয়ার সময় গ্রেপ্তার মোরশেদুল আলম ওরফে কাইল্লা পলাশ তাকে নজরদারিতে রাখে এবং তার অবস্থান সম্পর্কে ফ্রিডম মানিককে অবহিত করে। টিপুর অবস্থান সম্পর্কে জানানোর পরিপ্রেক্ষিতে আনুমানিক রাত সাড়ে ১০টার দিকে আন্ডার ওয়ার্ল্ডের তত্ত্বাবধানে কিলার কর্তৃক হত্যাকাণ্ডটি সংঘটিত হয়।

টিপু হত্যার পর চরম আতঙ্কে মতিঝিল সিন্ডিকেট
এদিকে টিপু হত্যাকান্ডের পর স্থানীয় নেতারা চরমভাবে আতঙ্ককিত। তারা বলছে, হত্যাকান্ডের মূল বিষয় হলো আধিপত্য আর চাঁদাবাজি। সন্ত্রাসীরা এতটাই বেপরোয়া চাঁদা না দিলেই গুলি করে দেবে। নেতারা বলছেন, পরিস্থিতি এখন উত্তপ্ত। কিছুদিন পর হয়তো ঠিক হবে। কিন্তু এখন চলাফেরা করাই দায় হয়ে পড়েছে।

টিপু হত্যায় মতিঝিল রাজনৈতিক সিন্ডিকেটের একটি বিশ্বস্ত তথ্য বলছে, জীবনের থেকে টাকা বড় নয়। পরিস্থিতি হয়তো এক সময় স্বাভাবিক হয়ে উঠবে। কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতি সামাল দিতে সবাই নিজেকে গুটিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছে। মতিঝিল সিন্ডিকেটের দাবি, সবাই যদি মিলেমিশে না চলে তাহলে এমন নির্মম ভাবে আরও অনেককেই হত্যাকাণ্ডের শিকার হতে হবে।

হঠাৎ সারা দেশের রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ড হচ্ছে কেন এর সমাধান কি এমন প্রশ্নের জবাবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাধ বিশেষজ্ঞ তৌহিদুল হক বলেন, মানুষ যতদিন লোভ লালসা থেকে বের হয়ে না আসতে পারবে ততদিন এমন মর্মান্তিক হত্যাকাণ্ড ঘটতে থাকবে। বর্তমানে মানুষের প্রতি মানুষের মায়া-মমতা নাই এজন্য আরো বেশী অপরাধ সংগঠিত হচ্ছে।

রাজনৈতিক ব্যক্তিদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, যারা সততার সাথে বিগত দিনের রাজনীতি করেছেন তারা কিন্তু কেউ এ ধরনের নির্মম খুনের শিকার হননি। যারাই সন্ত্রাসের রাজত্ব করেছে সাংগঠনিকভাবে সন্ত্রাসীদের নেতৃত্ব দিয়েছে তারাই এমন হত্যাকাণ্ডের সম্মুখীন হয়েছে।

মানুষ সততার সাথে রাজনীতি এবং ব্যবসা বাণিজ্য করলে হয়তো এ ধরনের অপরাধ সংঘটিত হওয়ার আশঙ্কা কমে আসবে বলে মনে করেন এই অপরাধ বিশেষজ্ঞ।

কেএম/এএস

Header Ad
Header Ad

সব রুফটপ রেস্তোরাঁর ট্রেড লাইসেন্স বাতিল

ছবি: সংগৃহীত

নকশাবহির্ভূত রেস্তোরাঁর ট্রেড লাইসেন্স বাতিল করেছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি)। সোমবার গণমাধ্যমে এক বিজ্ঞপ্তি দিয়ে ট্রেড লাইসেন্স বাতিল করার বিষয়টি জানায় ডিএসসিসি।

এতে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন রেস্তোরাঁ মালিক সমিতির ব্যবসায়ীরা। তাঁরা বলছেন, এতে নতুন করে হয়রানিতে পড়বেন ব্যবসায়ীরা।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের আওতাধীন এলাকায় কিছু আবাসিক ও বাণিজ্যিক ভবনের অভ্যন্তরে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) অনুমোদিত নকশায় না থাকলেও বিধিবহির্ভূতভাবে রেস্তোরাঁ (রেস্টুরেন্ট) পরিচালনা করা হচ্ছে এবং ভবনের ছাদে অবৈধভাবে রুফটপ রেস্তোরাঁ পরিচালিত হচ্ছে, যা জনজীবনের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ। বিধিবহির্ভূতভাবে রেস্তোরাঁ পরিচালনা করায় এরই মধ্যে বিভিন্ন স্থানে দুর্ঘটনায় প্রাণহানি ও সম্পদহানির ঘটনা ঘটছে। এসব ক্ষেত্রে অনেক অবৈধ ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান অনৈতিক উপায়ে করপোরেশনের ট্রেড লাইসেন্স নিয়েছে।

ডিএসসিসির বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, সম্পদ ও জানমালের ঝুঁকি এড়াতে নকশাবহির্ভূত সব রেস্তোরাঁ এবং ভবনের ছাদে স্থাপিত রুফটপ রেস্তোরাঁর ট্রেড লাইসেন্স বাতিল ঘোষণা করা হলো। বাতিল করা লাইসেন্স দিয়ে কোনো ব্যবসা পরিচালনা করা হলে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এ বিষয়ে ডিএসসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মো. জিল্লুর রহমান বলেন, ‘যেসব রেস্তোরাঁ সঠিক তথ্য না দিয়ে ট্রেড লাইসেন্স নিয়েছে, সেগুলো বাতিল করা হয়েছে। তবে ভবনের অনুমোদন কিন্তু বাতিল করা হয়নি। ভবনের নকশায় রেস্তোরাঁ থাকলে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারা সশরীর উপস্থিত হয়ে আমাদের কাছে তথ্য-উপাত্ত দিলে সেগুলো সচল করা হবে।’

বিজ্ঞপ্তি দিয়ে ট্রেড লাইসেন্স বাতিল করার বিষয়টি জানায় ডিএসসিসি। ছবি: সংগৃহীত

অপর এক প্রশ্নের জবাবে জিল্লুর রহমান বলেন, ‘আমরা প্রতিটি রেস্তোরাঁকে আলাদা করে চিঠি পাঠাব।’

ডিএসসিসির এমন সিদ্ধান্তে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশ রেস্তোরাঁ মালিক সমিতির মহাসচিব ইমরান হাসান। তিনি বলেন, কোনো প্রকার আলোচনা না করেই ডিএসসিসি এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে। রেস্তোরাঁ ব্যবসায়ীদের ওপর জুলুম চলছে। ব্যবসাগুলো এক দিনে গড়ে ওঠেনি। রাজউকের পাস করা ভবনের নকশায় রেস্তোরাঁ নেই বললেই চলে। বিগত সরকারের সময় এই জটিলতা নিরসনে একটা টাস্কফোর্স করা হয়েছিল। সেই টাস্কফোর্সের দুটি বৈঠক হয়েছিল। তারপর তো সরকার বদল হয়ে গেল।

ইমরান হাসান বলেন, ‘ট্রেড লাইসেন্স বাতিল করে এখন যদি ডিএসসিসি অভিযানে নামে, তাহলে নতুন করে হয়রানিতে পড়বেন ব্যবসায়ীরা। এমন পরিস্থিতি হলে আমাদের রেস্তোরাঁ বন্ধ করা ছাড়া আর কোনো উপায় থাকবে না।’

গত বছরের ২৯ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর বেইলি রোডে গ্রিন কোজি কটেজ নামের ভবনে ভয়াবহ আগুনে ৪৬ জনের মৃত্যু হয়। এ ঘটনার পর রেস্তোরাঁর অনুমোদন ও অগ্নিনিরাপত্তাব্যবস্থার ঘাটতি সামনে আসে। ওই ভবনে আটটি রেস্তোরাঁ ছিল, তবে ভবনটিতে রেস্তোরাঁ প্রতিষ্ঠার কোনো অনুমোদন ছিল না।

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) চার বছর আগে দেশের রেস্তোরাঁ খাত নিয়ে একটি জরিপ করে। সেই জরিপের তথ্যানুযায়ী, ২০২১ সালে দেশে মোট হোটেল ও রেস্তোরাঁ ছিল ৪ লাখ ৩৬ হাজার ২৭৪টি, যা ২০০৯-১০ অর্থবছরের চেয়ে ৫৮ শতাংশ বেশি। সরকারি সংস্থার মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান রয়েছে ৮৫২টি। বাকি সব ব্যক্তি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের মালিকানাধীন।

রেস্তোরাঁ ব্যবসা করতে চাইলে একজন বিনিয়োগকারীকে সরকারের সাতটি সংস্থার অনুমোদন ও ছাড়পত্র নিতে হয়। রেস্তোরাঁর জন্য প্রথমে নিবন্ধন ও পরে লাইসেন্স নিতে হয় সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসকের কাছ থেকে। ঢাকা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের ২০২৪ সালের মার্চ মাসের তথ্য অনুযায়ী, সরকারের সব সংস্থার প্রয়োজনীয় অনুমোদন ও ছাড়পত্র নিয়ে ঢাকায় রেস্তোরাঁ ব্যবসা করছে মাত্র ১৩৪টি প্রতিষ্ঠান। এর মধ্যে রাজধানীর দুই সিটি করপোরেশন এলাকায় রয়েছে ১২৮টি রেস্তোরাঁ।

Header Ad
Header Ad

মানুষের আস্থা ফিরিয়ে আনতে পুলিশের প্রতি প্রধান উপদেষ্টার আহ্বান

মানুষের আস্থা ফিরিয়ে আনতে পুলিশের প্রতি প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের আহ্বান। ছবি: সংগৃহীত

পুলিশ ও জনগণের মধ্যে তৈরি হওয়া দূরত্ব কমিয়ে এনে মানুষের আস্থা পুনঃপ্রতিষ্ঠার জন্য পুলিশ বাহিনীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস।

আজ রাজারবাগ পুলিশ লাইন্সে পুলিশ সপ্তাহ-২০২৫ উদ্বোধনকালে তিনি এ কথা বলেন।

তিনি বলেন, “স্বৈরাচারী শাসনের অবৈধ আদেশ পালন করতে গিয়ে পুলিশের অনেক সদস্য জনরোষের মুখে পড়েছেন।” পুলিশকে জনগণের বন্ধু হিসেবে নিজেদের ভাবমূর্তি পুনর্গঠনের পরামর্শ দেন তিনি।

নির্বাচন প্রসঙ্গে প্রধান উপদেষ্টা জানান, আগামী ডিসেম্বর থেকে জুনের মধ্যে জাতীয় নির্বাচন আয়োজনের পরিকল্পনা রয়েছে। নির্বাচন সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ করতে পুলিশ সদস্যদের আন্তরিক ও দায়িত্বশীল ভূমিকা রাখার নির্দেশনা দেন তিনি।

Header Ad
Header Ad

নিলামে তুলেও এস আলম গ্রুপের সম্পত্তি বিক্রি করতে পারছে না ব্যাংকগুলো

নিলামে তুলেও এস আলম গ্রুপের সম্পত্তি বিক্রি করতে পারছে না ব্যাংকগুলো। ছবি: সংগৃহীত

বারবার নিলাম ডেকেও এস আলম গ্রুপের বন্ধকী সম্পত্তির কোনো ক্রেতা খুঁজে পাচ্ছে না দেশের ব্যাংকগুলো। ফলে ঋণ আদায়ে এখন বাধ্য হয়ে অর্থ ঋণ আদালতের শরণাপন্ন হচ্ছে তারা। এতে পুরো প্রক্রিয়া দীর্ঘায়িত ও জটিল হয়ে পড়েছে।

চট্টগ্রামভিত্তিক এই শিল্পগোষ্ঠী ইসলামী ব্যাংকসহ বিভিন্ন ব্যাংক থেকে হাজার কোটি টাকা ঋণ নিয়ে খেলাপি হয়েছে। উদাহরণস্বরূপ, জনতা ব্যাংক ১০,৭০০ কোটি টাকার বিপরীতে ছয়বার নিলাম ডেকেও কোনো সাড়া পায়নি। একইভাবে ইসলামী ব্যাংকও সাত দফা নিলাম আয়োজন করেও ব্যর্থ হয়েছে, যার মধ্যে আইডিয়াল ফ্লাওয়ার মিলসের ১,১০০ কোটি টাকার ঋণ সংক্রান্ত নিলামও অন্তর্ভুক্ত।

সাম্প্রতিক সময়ে এস আলম গ্রুপের একাধিক স্টিল মিল, বিদ্যুৎকেন্দ্র ও জমি নিলামে তোলা হলেও দরপত্র জমা পড়েনি। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন, আইনি প্রক্রিয়া পূরণের জন্যই তারা এসব নিলাম ডাকছেন, যদিও আগ্রহী ক্রেতার দেখা মিলছে না। অনেকেই এই বিষয়টিকে ভয় পাচ্ছেন বলে উল্লেখ করেন তারা।

অভিযোগ রয়েছে, এস আলম গ্রুপ সরাসরি ও পরোক্ষভাবে ইসলামী ব্যাংক থেকে প্রায় ১ লাখ ৫ হাজার কোটি টাকা ঋণ নিয়েছে, যার বড় একটি অংশ বিদেশে পাচার হয়েছে। সরকার পরিবর্তনের পর বাংলাদেশ ব্যাংক ইসলামী ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ ভেঙে দিয়ে গ্রুপটির নিয়ন্ত্রণ জব্দ করে।

বর্তমানে এস আলম গ্রুপের ওপর কেন্দ্রীয়ভাবে তদন্ত ও আইনি পদক্ষেপ নিচ্ছে ১৪ সদস্যের বিশেষ লিগ্যাল টিম। একই সঙ্গে তাদের জব্দকৃত শেয়ার বিক্রির জন্য আন্তর্জাতিক বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে আলোচনা চলছে।

 

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

সব রুফটপ রেস্তোরাঁর ট্রেড লাইসেন্স বাতিল
মানুষের আস্থা ফিরিয়ে আনতে পুলিশের প্রতি প্রধান উপদেষ্টার আহ্বান
নিলামে তুলেও এস আলম গ্রুপের সম্পত্তি বিক্রি করতে পারছে না ব্যাংকগুলো
সেই জিম্বাবুয়ের বিপক্ষেই চার বছর পর সাদমানের সেঞ্চুরি
স্টারলিংকের লাইসেন্স অনুমোদন প্রধান উপদেষ্টার, মাসিক খরচের বিষয়ে যা জানা গেল!
রাখাইনের সঙ্গে মানবিক করিডরের বিষয়টি স্পষ্ট করুন: জামায়াত আমির
প্রাথমিকের প্রধান শিক্ষকরা পাচ্ছেন দশম গ্রেড, সহকারী শিক্ষক ১২তম
এনসিপির সঙ্গে আমার কোনো ধরনের সম্পর্ক নেই: উমামা ফাতেমা
আওয়ামী লীগ সরকার পুলিশকে দলীয় বাহিনীতে পরিণত করেছিল: প্রধান উপদেষ্টা
আত্মসমর্পণ করলেন তারেক রহমানের খালাতো ভাই
চার শতাধিক যাত্রী নিয়ে ঢাকা ছাড়ল বছরের প্রথম হজ ফ্লাইট
রাখাইনে মানবিক করিডর দেওয়া নিয়ে আলোচনা করা উচিত ছিল: ফখরুল
দেশের সব পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে শাটডাউন কর্মসূচি
ভারতের সামরিক আক্রমণ আসন্ন,পারমাণবিক অস্ত্রের হুমকি পাকিস্তানের
কানাডার প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত মার্ক কার্নি
নওগাঁয় ডাকাত দলের ৩ সদস্যসহ ৮ জন গ্রেপ্তার, উদ্ধার লুণ্ঠিত মালামাল
নিজের মূত্র পান করেছিলেন বলিউড অভিনেতা পরেশ রাওয়াল
নাহিদ ইসলামকে বাংলাদেশের আগামীর প্রধানমন্ত্রী বললেন হাসনাত আব্দুল্লাহ
কিছু লোডশেডিং না হলে ভর্তুকি বেড়ে যাবে: বিদ্যুৎ উপদেষ্টা
গণপিটুনির পর কারাগারে ইমামের মৃত্যু, গাজীপুরের পূবাইলে চাঞ্চল্য