সোমবার, ৭ এপ্রিল ২০২৫ | ২৪ চৈত্র ১৪৩১
Dhaka Prokash

মতিঝিলে ধারাবাহিক খুন! পরবর্তী টার্গেট কে?

রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে একের পর এক খুন হচ্ছে অনেকেই। সম্প্রতি এ খুনের সংখ্যা বেড়ে গেছে বলে মনে করছেন অপরাধ বিশেষজ্ঞরা। অপরাধ বিশ্লেষকদের প্রশ্ন, মতিঝিল নিয়ন্ত্রণকারী গ্যাং মিল্কি, রিজভি হাসান বাবু ও টিপু হত্যার পর পরবর্তী টার্গেট কে?

অপরাধ বিশেষজ্ঞদের মতে, মতিঝিল নিয়ন্ত্রন মানে পুরো ঢাকা নিয়ন্ত্রণ। মতিঝিল কেন্দ্রিক চাঁদাও উঠে মাসে কোটি টাকার উপরে। শুধু কি চাঁদা? বিভিন্ন টেন্ডারের নিয়ন্ত্রণও এখান থেকে। আর নিয়ন্ত্রণ নিতেই একের পর এক নেতার উত্থান। আর এসব নেতারাও টিকতে পারছেন না। এক সময়ের ঢাকা কাঁপানো শীর্ষ সন্ত্রাসীরা তাদের কথা না শুনলেই দেশের বাইরে থেকেই নিখুঁত পরিকল্পনায় হত্যা করে যাচ্ছে। গত ৭/৮ বছরে মতিঝিল কেন্দ্রিক আন্ডারওয়ার্ল্ডের ঝামেলায় খুন হয়েছে তিন নেতা।

এছাড়াও বাড্ডার স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা মাহাবুবুর রহমান গামাসহ ৪ হত্যার পেছনেও একই আন্ডারওয়ার্ল্ড কাজ করেছে। যার কারণে স্থানীয় নেতাদের মধ্যে এখন আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। নেতারা বলছেন, ধারাবাহিক হত্যার ঘটনা ঘটে চলেছে। এখন পরবর্তী টার্গেট কে সেটাই দেখার অপেক্ষা।

টিপু হত্যাকান্ডে আতঙ্কিত ঠিকাদারী ব্যবসায়ীরা
একটি তথ্য বলছে, টিপু হত্যাকান্ডের পর সারাদেশে অনেকের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে‌। রাজধানীর মতিঝিল, পল্টন, শাহাজানপুর, রামপুরা আওয়ামী লীগ থেকে শুরু করে ছাত্রলীগ, যুবলীগ স্বেচ্ছাসেবক লীগের অনেক নেতারাই আতঙ্কিত। বিশেষ করে যে সকল নেতারা ঠিকাদারী ব্যবসার সঙ্গে জড়িত তারা আরও বেশি আতঙ্কিত।

মতিঝিল কেন্দ্রিক রাজনৈতিক নেতাদের মধ্যে ঝড়
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বেশ কয়েকজন নেতা জানান, জাহিদ হাসান মিল্কি হত্যাকান্ডের পর থেকে মতিঝিল কেন্দ্রিক রাজনৈতিক নেতাদের মধ্যে একটি ঝড় বয়ে গেছে। মিল্কি হত্যার পরে জাহিদ সিদ্দিকি তারেক র‌্যাবের ক্রসফায়ারে নিহত হয়। এরপর মতিঝিলের নিয়ন্ত্রণ কে নেবে তা নিয়ে শুরু হয় প্রতিযোগিতা। মিল্কি হত্যার পর টিপুসহ অনেক নেতাই যখন আসামি, আবার অনেকে গ্রেপ্তার হয়ে জেলখানায় ঠিক সেই সময় সম্রাট সেই জায়গা দখলে নেয়।

এরপর মতিঝিল নয়, পুরো দক্ষিণ মহানগরে সম্রাটের একচ্ছত্র আধিপত্য তৈরি হয়। এক পর্যায়ে আধিপত্যের মাত্রা এমন হয়ে যায় শুধু দক্ষিণের নয়, উত্তর দক্ষিণের একক আধিপত্য চলে আসে তার নিয়ন্ত্রণে। রাজধানী জুড়ে ক্যাসিনো বিরোধী অভিযান শুরু হলে সম্রাট, খালেদ গ্রেপ্তার হলে আবারও শুরু হয় আধিপত্যের লড়াই।

এই এলাকায় রাজনীতি করেন এমন ব্যক্তিরা বলছেন, মিল্কি মার্ডারের পর থেকে মূলত শুরু হয়েছে আধিপত্যের লড়াই। মিল্কি হত্যার সঙ্গে জড়িতরা প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা করলে বোচা বাবু হত্যাকান্ড ঘটে। সর্বশেষ টিপু হত্যাকান্ড সংঘঠিত হয়।

বিভিন্ন রাজনৈতিক সূত্র বলছে, টিপু হত্যাকান্ডের পর সম্রাট ও খালেদের কাছেও খবর পৌঁছে যায়। বর্তমানে এ এলাকার আধিপত্য নিতে কারাগারে থাকা সম্রাট, খালেদ এমনকি গোল্ডেন মনিরের কাছে অনেকেই ধর্না দিচ্ছে।

যা বলছে যুবলীগ নেতারা
নাম প্রকাশ না করার শর্তে যুবলীগের এক নেতা বলেন, দক্ষিণ যুবলীগের মধ্যে মতিঝিল, পল্টন, শাহজাহানপুর এলাকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। অনেক নেতা ঠিকাদারী কাজ করেন। বড় কোন কাজ হলেই এই তিন থানা এলাকার ছোট নেতা হলেও তাদের সমিহ করে টাকা দিতে হয়। তা না হলে করুন পরিনতি ভোগ করতে হবে।

বর্তমান যুবলীগের কেন্দ্রীয় আরেক নেতা বলেন, সম্রাট-খালিদও একই পথ অবলম্বন করত। বিভিন্ন এলাকা থেকে তাদের নামে চাঁদা উঠতো। পাশাপাশি ক্যাসিনো থেকেও উঠতো টাকা। এই টাকাও তাদের দুবাইসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে থাকা বাংলাদেশি পলাতক শীর্ষ সন্ত্রাসীদের নিকট বিভিন্ন মাধ্যমে পৌঁছে দিতে হত।

এদিকে মিল্কি, বোঁচা বাবু হত্যার পর সম্রাট-খালিদ ম্যানেজিং এর কাজটি ভালোভাবেই করত। এ কারণে তাদের সমস্যাও হয়নি। কিন্তু ক্যাসিনো কান্ডে তারা গ্রেপ্তার হয় এবং কারাগারে রয়েছে।

যুবলীগের বেশ কিছু নেতা বলছেন, সম্রাট একবার অসুস্থ হয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি। ওই সময় আন্ডারওয়ার্ল্ডে তার ঝামেলা বাধে। ওই সময় হাসপাতালে থাকা অবস্থায় তাকে হত্যা করতে কিলার ভাড়া করে পাঠানো হয়। অল্পের জন্য বেঁচেও যায় সে। তবে গ্রেপ্তার হয়ে সম্রাট খালেদ জেলহাজতে থাকায় টিপু অপ্রতিরোধ্য হয়ে উঠতে চেয়েছিল।

টিপুর হত্যাকারীদের গ্রেপ্তার এরপর যা বলছে গোয়েন্দারা

এদিকে র‌্যাব জানায়, ২০১৩ সালে রাজধানীর গুলশান শপার্স ওয়ার্ল্ডের সামনে মিল্কী হত্যাকাণ্ড সংঘঠিত হয়। টিপু হত্যায় গ্রেপ্তারকৃত ওমর ফারুক (৫২), আবু সালেহ শিকদার (৩৮), নাছির উদ্দিন (৩৮) ও মোরশেদুল আলম (৫১)। গ্রেপ্তারকৃতরা মিল্কীর সহযোগী ছিল। মিল্কী হত্যার সঙ্গে টিপু জড়িত ছিল বলে গ্রেপ্তারকৃতরা সন্দেহ করত।

মিল্কী হত্যার মামলার এজহারে টিপুর নামও দেয় তারা। কিন্তু বিচারিক কার্যক্রমে টিপুর নাম বাদ পড়ায় গ্রেপ্তারদের মনে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়।

দীর্ঘদিন ধরে ভিকটিম ও হত্যার পরিকল্পনাকারীদের মধ্যে বিরোধ ছিল উল্লেখ করে র‌্যাব জানায়, মতিঝিল এলাকার চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি, স্কুল-কলেজের ভর্তি বাণিজ্য, বাজার নিয়ন্ত্রণ, আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দ্বন্দ্ব-সংঘাত ছিল। এছাড়া এলাকার আধিপত্য বিস্তারসহ মামলা সংক্রান্ত বিষয়েও টিপুর সঙ্গে গ্রেপ্তারকৃতদের দ্বন্দ্ব ছিল। আর এসব দ্বন্দ্বকে কেন্দ্র করেই টিপুকে হত্যা করা হয়।

র‌্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া পরিচালক খন্দকার আল মঈন বলেছেন, টিপুকে হত্যা করার জন্য ১৫ লাখ টাকা বাজেট করে পরিকল্পনাকারীরা। আন্ডার ওয়ার্ল্ড ডন মুসাকে দায়িত্ব দেওয়া হয় এ হত্যাকাণ্ডে। ঘটনার ১২ দিন আগে মুসা দুবাই চলে যায়। সেখানে বসে তিনি কিলার নিয়োগ করা থেকে শুরু করে হত্যার ফাইনাল মিশন শেষ করে।

এর আগে টিপু-প্রীতি হত্যাকাণ্ডের ৪৮ ঘণ্টা পর মো. মাসুম ওরফে আকাশ নামে একজনকে গ্রেপ্তার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের মতিঝিল বিভাগ। পুলিশ বলছে, মাসুমই ব্যস্ত সড়কে প্রকাশ্যে টিপুকে গুলি করে হত্যা করে।

যে ভাবে দুবাই বসেই ফাইনাল ছক করে মুসা

গোয়েন্দাদের দেওয়া তথ্যানুসারে, টিপুকে দুবাই বসে হত্যার পরিকল্পনা ও নির্দেশনা দেন সুমন শিকদার ওরফে মুসা। টিপু হত্যাকাণ্ডের ঠিক ১২ দিন আগে দুবাই চলে যায় মুসা। দুবাই বসে হত্যার পুরো ছক কষে। টিপুকে হত্যায় চুক্তি হয় ১৫ লাখ টাকা। এই ১৫ লাখ টাকা কে কত দেবে তাও ভাগ করে দেয় মুসা। নয় লাখ টাকা দেয় ওমর ফারুক। অবশিষ্ট ছয় লাখ টাকা দেয় গ্রেপ্তার নাছির উদ্দিন ওরফে কিলার নাছির, আবু সালেহ শিকদার ওরফে শুটার সালেহ ও মুসা।

খন্দকার আল মঈন জানান, দুবাই যাওয়ার আগে পাঁচ লাখ টাকা নিয়ে যায় মুসা, হুন্ডির মাধ্যমে আরও চার লাখ টাকা মুসাকে দেওয়া হয়। বাকি ছয় লাখ টাকা দেশে হস্তান্তর করার চুক্তি হয়। ছয় লাখের মধ্যে গ্রেপ্তারের সময় ৩ লাখ ৩০ হাজার টাকা জব্দ করে র‌্যাব। দুবাই থাকা মুসা ২০১৬ সালে রিজভী হাসান ওরফে বোচা বাবু হত্যাকাণ্ডের চার্জশিটভুক্ত ৩ নম্বর আসামি।

দেশে হত্যাকাণ্ড হলেও নিয়ন্ত্রণ হয় বাইরে থেকে

গ্রেপ্তারদের বারাত দিয়ে র‍্যাব কমান্ডার খন্দকার আল মঈন জানিয়েছেন, এ হত্যাকাণ্ডটি দেশে ঘটলেও নিয়ন্ত্রণ করা হয় দুবাই থেকে। দেশে থাকা নাছির উদ্দিন ওরফে কিলার নাছির, মোরশেদুল আলম ওরফে কাইল্লা পলাশসহ আরও কয়েকজন জাহিদুল ইসলাম টিপুর অবস্থান সম্পর্কে বেশ কয়েকদিন ধরে মুসার কাছে তথ্য প্রেরণ করত। ঘটনার দিন সন্ধ্যার পর গ্রেপ্তার নাছির উদ্দিন ওরফে কিলার নাছির আনুমানিক চারবার জাহিদুল ইসলাম টিপুর অবস্থান সম্পর্কে মুসাকে অবহিত করে। পরে জাহিদুল ইসলাম টিপু গ্রান্ড সুলতান রেস্টুরেন্ট থেকে বের হওয়ার সময় গ্রেপ্তার মোরশেদুল আলম ওরফে কাইল্লা পলাশ তাকে নজরদারিতে রাখে এবং তার অবস্থান সম্পর্কে ফ্রিডম মানিককে অবহিত করে। টিপুর অবস্থান সম্পর্কে জানানোর পরিপ্রেক্ষিতে আনুমানিক রাত সাড়ে ১০টার দিকে আন্ডার ওয়ার্ল্ডের তত্ত্বাবধানে কিলার কর্তৃক হত্যাকাণ্ডটি সংঘটিত হয়।

টিপু হত্যার পর চরম আতঙ্কে মতিঝিল সিন্ডিকেট
এদিকে টিপু হত্যাকান্ডের পর স্থানীয় নেতারা চরমভাবে আতঙ্ককিত। তারা বলছে, হত্যাকান্ডের মূল বিষয় হলো আধিপত্য আর চাঁদাবাজি। সন্ত্রাসীরা এতটাই বেপরোয়া চাঁদা না দিলেই গুলি করে দেবে। নেতারা বলছেন, পরিস্থিতি এখন উত্তপ্ত। কিছুদিন পর হয়তো ঠিক হবে। কিন্তু এখন চলাফেরা করাই দায় হয়ে পড়েছে।

টিপু হত্যায় মতিঝিল রাজনৈতিক সিন্ডিকেটের একটি বিশ্বস্ত তথ্য বলছে, জীবনের থেকে টাকা বড় নয়। পরিস্থিতি হয়তো এক সময় স্বাভাবিক হয়ে উঠবে। কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতি সামাল দিতে সবাই নিজেকে গুটিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছে। মতিঝিল সিন্ডিকেটের দাবি, সবাই যদি মিলেমিশে না চলে তাহলে এমন নির্মম ভাবে আরও অনেককেই হত্যাকাণ্ডের শিকার হতে হবে।

হঠাৎ সারা দেশের রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ড হচ্ছে কেন এর সমাধান কি এমন প্রশ্নের জবাবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাধ বিশেষজ্ঞ তৌহিদুল হক বলেন, মানুষ যতদিন লোভ লালসা থেকে বের হয়ে না আসতে পারবে ততদিন এমন মর্মান্তিক হত্যাকাণ্ড ঘটতে থাকবে। বর্তমানে মানুষের প্রতি মানুষের মায়া-মমতা নাই এজন্য আরো বেশী অপরাধ সংগঠিত হচ্ছে।

রাজনৈতিক ব্যক্তিদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, যারা সততার সাথে বিগত দিনের রাজনীতি করেছেন তারা কিন্তু কেউ এ ধরনের নির্মম খুনের শিকার হননি। যারাই সন্ত্রাসের রাজত্ব করেছে সাংগঠনিকভাবে সন্ত্রাসীদের নেতৃত্ব দিয়েছে তারাই এমন হত্যাকাণ্ডের সম্মুখীন হয়েছে।

মানুষ সততার সাথে রাজনীতি এবং ব্যবসা বাণিজ্য করলে হয়তো এ ধরনের অপরাধ সংঘটিত হওয়ার আশঙ্কা কমে আসবে বলে মনে করেন এই অপরাধ বিশেষজ্ঞ।

কেএম/এএস

Header Ad
Header Ad

সীমান্ত এলাকার পরিস্থিতি নিয়ে চুয়াডাঙ্গায় বিজিবির মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত

সীমান্ত এলাকার পরিস্থিতি নিয়ে চুয়াডাঙ্গায় বিজিবির মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত। ছবি: সংগৃহীত

চুয়াডাঙ্গায় সীমান্ত এলাকার বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে বিজিবির আয়োজনে স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গকে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সোমবার (৭ এপ্রিল) বেলা ১১ টায় দর্শনা আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।

সভার শুরুতে বিজিবি চুয়াডাঙ্গা ৬ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল নাজমুল হাসান উপস্থিত সকলের সাথে ঈদ শুভেচ্ছা বিনিময় করেন।
সীমান্ত এলাকায় বসবাস কারী জনসাধারণের জীবনযাত্রা মান উন্নয়ন, অবৈধ কর্মকাণ্ড ও সীমান্ত অতিক্রম রোধ, আন্ত সীমান্ত অপরাধ দমন এবং আঞ্চলিক উন্নয়নে অবদান রাখার বিষয়ে মতবিনিময় সভা আরম্ভ করেন।

পরবর্তীতে সীমান্তে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ বিজিবি এর ভূমিকা, চোরাচালান প্রতিরোধ কর্মকাণ্ডে সম্মিলিত প্রয়াস, সীমান্ত এলাকার মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, জনসচেতনতা বৃদ্ধি করা, সীমান্ত উন্নয়ন ও নিরাপত্তায় সম্মিলিত প্রয়াস, অর্থ সামাজিক উন্নয়নের সম্মিলিত প্রয়াস, সমস্যা চিহ্নিতকরণ, সম্ভাব্য সমাধান ও সম্মিলিত প্রচেষ্টা, কারিগরি ও কর্মমুক্তি প্রশিক্ষণ, কৃষি ও পশু পালন খাতে সহায়তা, নারী উন্নয়ন কর্মসূচি, বেসরকারি সংস্থা ও কর্পোরেটর সংযোগ ইত্যাদি বিষয়ের উপর আলোকপাত করেন। শেষে উপস্থিত- দামুড়হুদা ইউএনও, এসিল্যান্ড, ওসি সহ গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ ও সাংবাদিকদের মাঝে পয়েন্ট আহ্বান করেন।

সীমান্ত এলাকায় বাল্যবিবাহ সম্মিলিত প্রচেষ্টায় দমন করা, মহিলা বিষয়ক বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডের প্রশিক্ষণ গ্রহণ করা, ইভটিজিংয়ের পরিমাণ বর্তমানে একটু কম যাতে না বাড়তে পারে সেদিকে সর্বপ্রকার সম্মিলিত প্রচেষ্টা, মাদক নিয়ন্ত্রণের জন্য সর্বপ্রকার তথ্য দিয়ে সকল প্রশাসনকে সহযোগিতা করা, এছাড়াও যেকোনো প্রকার অসঙ্গতিপূর্ণ কাজের তথ্য দিয়ে প্রশাসনকে সহায়তা করা। সীমান্তবর্তী এলাকায় সকল প্রকার অটো বাইক, অটো ভ্যান পৌরসভার মাধ্যমে লাইসেন্স কার্ড করা যাতে তার নাম ঠিকানা সকল তথ্য থাকে এবং যে কোন আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তল্লাশির জন্য ডাকলে সহজে তারা এগিয়ে আসে এবং নাম পরিচয় সহজে যাতে পাওয়া যায়।

মাদক ব্যবসায়ীদের ধর্মীয় ভয়-ভীতি দেখানো, মাদক ব্যবসায়ীরা অভিনব কায়দায় ছোট ছেলেমেয়েদের বাহক হিসেবে ব্যবহার করছেন, শিক্ষকদের মাধ্যমে জনশ্বাসনতা বৃদ্ধি করা, জনসংযোগ বৃদ্ধি করা, মাদক ব্যবসায়ীদের মূল গডফাদারকে ধরার ব্যবস্থা গ্রহণ করা, সচেতন ব্যক্তিবর্গ এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর মাধ্যমে সম্মিলিত প্রচেষ্টায় মাদক প্রতিরোধ করা, প্রতিপক্ষ ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর বিএসএফ কর্তৃক বাংলাদেশি পাসপোর্টধারী নাগরিকদের সাথে কি ধরনের আচরণ করেন সেই সম্পর্কে ধারণা গ্রহণ করা, কুরআন ও হাদিসের আলোকে সীমান্ত পাহারায় সুফল সম্পর্কে, মাদক ব্যবসায়ী ও সেবনকারী পরকালে তাদের অবস্থান সম্পর্কে জানানো, ১৬ বছরের নিচে প্রকাশ্যে বিড়ি-সিগারেট সেবনকারীর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা, মাদকসহ বিভিন্ন চোরাকারবারিদের অন্য কোন কর্মসংস্থানের মাধ্যমে ফিরিয়ে আনা, চুয়াডাঙ্গা ব্যাটালিয়ন (৬ বিজিবি) দর্শনা চেকপোস্ট এবং মহেশপুর ব্যাটালিয়ন (৫৮ বিজিবি) এর নিমতলা বিওপির মধ্যবর্তী স্থানে বিজিবি চেক পোস্ট বসানো, দর্শনা কেউ কোম্পানি হতে মদ চোরাকারবারিরা যাহাতে নিতে না পারে তার ব্যবস্থা গ্রহণ করা, ধর্মীয় শিক্ষার মাধ্যমে মাদক এর কুফল সম্পর্কে জনসাধারণ এর মাঝে জানানো, মাদক ব্যবসায়ীদের চিহ্নিত করে তাদের বাড়িতে গিয়ে ভয়-ভীতি দেখানো, ১৫ হতে ১৬ বছরের ছেলে মেয়ে মাদক ব্যবসায়ী এবং ইভটিজিং এর সাথে জড়িত হচ্ছে তাদের প্রতি নজরদারি বৃদ্ধি করা, বাল্য বিবাহের সাথে জড়িত ব্যক্তিদের আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা।

এছাড়াও দৃশ্যমান শাস্তি প্রদান করা, স্বর্ণ এবং রূপ্য চোরাকারবারিদের গডফাদার দের চিহ্নিত করা, দারিদ্র বিমোচনের জন্য প্রশিক্ষণের মাধ্যমে সাধারণ জনগণকে দক্ষ করে গড়ে তোলা, সীমান্তবর্তী এলাকায় বিভিন্ন গণ্যমান্য ব্যক্তিদের নিয়ে মাদকসহ বিভিন্ন চোরাকারবারি নির্মূলে কমিটি গঠন করা, মাঝে মাঝে এ ধরনের সেমিনার মত বিনিময় সবার আয়োজন করা, সীমান্ত এলাকায় এনজিওদের মাধ্যমে উন্নয়নমূলক প্রোগ্রাম ও সেমিনারের ব্যবস্থা গ্রহণ করা, বিভিন্ন চোরাকারবারিদের ব্যবসা পরিচালনাকারীদের চিহ্নিত করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা, সীমান্ত এলাকায় দেড়শো গজের মধ্যে তিন ফুট উচ্চতা বিশিষ্ট ফসল আবাদ না করা এবং ভারতের ১৫০ গজ সীমান্ত এলাকায় কলাগাছের বাগান তৈরিতে বাধা দেওয়া যাতে চোরাকারবারিরা ব্যবহার করতে না পারে- এই বিষয়গুলো মতবিনিময় সভায় উপস্থিত সুধীজনের আলোচনায় উঠে আসে।

মতবিনিময় সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন দামুড়হুদা ইউএনও তিথী মিত্র, চুয়াডাঙ্গা সরকারি মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর আজিজুর রহমান, এসি ল্যান্ড তাসফিকুর রহমান, বিজিবি ৬ ব্যাটালিয়নের সহকারী পরিচালক হায়দার আলী, দর্শনা থানার ওসি শহীদ তিতুমীর, বিজিবির দর্শনা আইসিপি কমান্ডার জাকির হোসেন প্রমুখ।

এ ছাড়াও মসজিদের ইমাম, জনপ্রতিনিধি, গণমাধ্যমকর্মী, শিক্ষক, এনজিও কর্মী এ সভায় উপস্থিত ছিলেন।

Header Ad
Header Ad

গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর গণহত্যার তীব্র নিন্দা জানালো বাংলাদেশ

ছবি: সংগৃহীত

গাজা উপত্যকায় দখলদার ইসরায়েলি বাহিনীর অব্যাহত গণহত্যা ও মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘনের তীব্র নিন্দা জানিয়েছে বাংলাদেশ। সোমবার (৭ এপ্রিল) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘‘বাংলাদেশ সরকার ইসরায়েলকে অবিলম্বে সব সামরিক অভিযান বন্ধ ও সর্বোচ্চ সংযম প্রদর্শন করতে এবং আন্তর্জাতিক মানবিক আইন মেনে চলার দাবি জানিয়েছে।’’

বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে,নিরস্ত্র ফিলিস্তিনি জনগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে ‘‘জাতিগত নির্মূল’’ অভিযান চালানোর জন্য গাজার ঘনবসতিপূর্ণ বেসামরিক এলাকায় ইসরায়েলি দখলদার বাহিনীর বিমান থেকে নির্বিচার বোমাবর্ষণের তীব্র নিন্দা জানাচ্ছে বাংলাদেশ।

গত মাসে একতরফা যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘনের পর থেকে ইসরায়েলের চলমান হামলায় বহু ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, যাদের বেশির ভাগই নারী ও শিশু। এছাড়া গাজায় মানবিক সহায়তা ঢুকতে বাধা দেওয়া হয়েছে, যা ওই অঞ্চলটিকে মানবিক বিপর্যয়ের দিকে ঠেলে দিচ্ছে।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, আন্তর্জাতিকভাবে ইসরায়েলের প্রতি বারবার আহ্বান জানানো হলেও তারা এতে কোনো গুরুত্বই দেয়নি; বরং তারা ক্রমবর্ধমান হত্যাযজ্ঞে লিপ্ত হয়েছে।

আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়, বিশেষ করে জাতিসংঘের কাছে নিঃশর্ত যুদ্ধবিরতি বাস্তবায়নের জন্য তাৎক্ষণিক ও কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের মাধ্যমে তাদের নৈতিক ও আইনি দায়িত্ব পালনের আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ।

বেসামরিক নাগরিকদের জীবন রক্ষা ও অবরুদ্ধ গাজায় মানবিক ত্রাণ পৌঁছে দেওয়ার জন্য সেখানে সব ধরনের যুদ্ধবিরতি বন্ধের আহ্বান জানানো হয়েছে বিবৃতিতে।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ফিলিস্তিনি জনগণের সব ন্যায্য অধিকার, আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকার এবং পূর্ব জেরুজালেমকে রাজধানী করে ১৯৬৭ সালের আগের সীমান্তের ভিত্তিতে একটি স্বাধীন ও সার্বভৌম ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার প্রতি বাংলাদেশ সরকারের দৃঢ় সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেছে।

বাংলাদেশ সরকার মধ্যপ্রাচ্যে স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠায় আলোচনার প্রয়োজনীয়তার বিষয় পুনর্ব্যক্ত করে বিবৃতিতে বলেছে, এটা আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক স্থিতিশীলতার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

ফিলিস্তিনিদের ওপর সহিংসতা ও তাদের দুর্ভোগের অবসান ঘটাতে কূটনীতি ও সংলাপের পথে নিজেদের প্রতিশ্রুতিবদ্ধ করার জন্য সংশ্লিষ্ট সবার প্রতি আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ।

বিবৃতিতে বলা হয়েছে, আন্তর্জাতিক আইন, জাতিসংঘের প্রস্তাব এবং শান্তি, মর্যাদা ও ন্যায়বিচারের জন্য ফিলিস্তিনিদের আকাঙ্ক্ষার ভিত্তিতে ফিলিস্তিনের সমস্যার দ্বিরাষ্ট্রীয় সমাধানের লক্ষ্যে কাজ করার জন্য বিশ্ব সম্প্রদায়ের প্রতি বাংলাদেশ তার আহ্বানে অবিচল ও দ্ব্যর্থহীন।

Header Ad
Header Ad

সতর্কতার মাত্রা বাড়াল ইরান, যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলকে প্রকাশ্য হুমকি

ছবি: সংগৃহীত

ইরান তার নিরাপত্তা সতর্কতার স্তর সর্বোচ্চ পর্যায়ে উন্নীত করেছে এবং যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরাইলকে প্রকাশ্যে হুমকি দিয়েছে। ইসরায়েলি সংবাদপত্র ইয়েদিওথ আহরোনোথ এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।

ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি নিশ্চিত করেছেন, দেশটির সেনাবাহিনীকে উচ্চ সতর্কতায় রাখা হয়েছে।

এক বিবৃতিতে, পরিস্থিতির গুরুত্বের ওপর জোর দিয়ে ‘বহিরাগত হুমকির’ সম্ভাব্য পরিণতি সম্পর্কেও সতর্ক করেছেন খামেনি।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ইসরায়েলের প্রতি হুমকির পাশাপাশি ইরাক, কুয়েত, সংযুক্ত আরব আমিরাত, কাতার, তুরস্ক এবং বাহরাইনের মতো নিজের প্রতিবেশী দেশগুলোর প্রতিও সরাসরি সতর্কবার্তা জারি করেছে ইরান।

তেহরানের পক্ষ থেকে স্পষ্ট করে বলা হয়েছে, আকাশসীমা বা আঞ্চলিক ক্ষেত্র ব্যবহারসহ ইরানের মাটিতে আক্রমণ শুরু করতে যুক্তরাষ্ট্রকে যেকোনো সহায়তা দেয়া হলে তা একটি ‘শত্রুতাপূর্ণ কাজ’ হিসেবে বিবেচিত হবে এবং সেই দেশগুলোকে ‘আক্রমণের তালিকায়’ রাখবে ইরান।

অঞ্চলটিতে ক্রমবর্ধমান উত্তেজনার মধ্যেই এমন বার্তা দিলো তেহরান, যেখানে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ইরানের মধ্যে সম্ভাব্য যেকোনো সংঘাতে প্রতিবেশী রাষ্ট্রগুলির ভূ-রাজনৈতিক প্রভাব পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

সীমান্ত এলাকার পরিস্থিতি নিয়ে চুয়াডাঙ্গায় বিজিবির মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত
গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর গণহত্যার তীব্র নিন্দা জানালো বাংলাদেশ
সতর্কতার মাত্রা বাড়াল ইরান, যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলকে প্রকাশ্য হুমকি
সাবেক নৌপ্রতিমন্ত্রী খালিদের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা
ভারত থেকে ৪০টি রেফ্রিজারেটেড মিল্ক ভ্যান আমদানি করছে সেনাবাহিনী
ফিলিস্তিনের পক্ষে মিছিল: ৫ বাংলাদেশিসহ ৪ শতাধিক শিক্ষার্থীর ভিসা বাতিল করলো যুক্তরাষ্ট্র
গাজায় গণহত্যার প্রতিবাদ: পাঁচ জেলায় বাটা-কেএফসিতে হামলা-ভাঙচুর
ঈদের ছুটি শেষে দর্শনা বন্দর দিয়ে আমদানি-রপ্তানি শুরু
নওগাঁয় ইসরায়েলি আগ্রাসনের বিরুদ্ধে সর্বস্তরের মানুষের বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ সমাবেশ
লাঠিপেটা না করে আন্দোলনকারীদের ছত্রভঙ্গ, রাষ্ট্রপতি পদক পাচ্ছেন সেই পুলিশ কনস্টেবল
ইন্ডিয়ান আইডলের শিরোপা জিতলেন কলকাতার মানসী ঘোষ
প্রতিমন্ত্রীর পদমর্যাদা পেলেন বিডা’র নির্বাহী চেয়ারম্যান আশিক চৌধুরী
নতুন শুল্ক প্রস্তাব স্থগিত করতে ট্রাম্পকে প্রধান উপদেষ্টার চিঠি
ঢাকায় মার্কিন নাগরিকদের জন্য চলাচলে সতর্কতা জারি
ইসরায়েলি বর্বরতা ও গণহত্যার নিন্দা জানালো কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়
প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে অন্নপূর্ণা–১ জয় করলেন বাবর আলী
বৈশাখে যারা ইলিশ কিনে খাবেন তারা আইনের লঙ্ঘন করবেন: উপদেষ্টা ফরিদা
ঢাকা-রংপুর ৪ লেন প্রকল্পে পলাশবাড়ীতে এক জমি দুইবার বিক্রি, গাইবান্ধা ডিসি অফিসের কর্মকর্তাদের যোগসাজশে ১৫ কোটি টাকার অধিক লুটপাটের চেষ্টা
ফিলিস্তিনের পতাকা ওড়ানোয় ভারতে বিদ্যুৎ বিভাগের 'মুসলিম কর্মী' বরখাস্ত
ফিলিস্তিনে গণহত্যার প্রতিবাদে বেনাপোল ও শার্শায় বিক্ষোভ মিছিল