কুড়িগ্রাম-৪ আসনের দরিদ্র জনপদের উন্নতির হাল ধরেছেন তরুণ এমপি বিপ্লব হাসান
ছবি : ঢাকাপ্রকাশ
কুড়িগ্রাম-৪ আসনের কাণ্ডারী হয়ে এই প্রথম সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন এমপি বিপ্লব হাসান। শপথ গ্রহণের মাত্র এক মাসেই নিজ এলাকায় বিভিন্ন জনকল্যাণমূলক কার্যক্রমের মধ্যে দিয়ে কুড়িয়েছেন সাধারণ মানুষের প্রশংসা।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সংখ্যাগরিষ্ঠ আসনে বিজয়ী হয়ে পেয়ে টানা চতুর্থ মেয়াদে সরকার গঠন করেছে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ। চলতি বছরের ১০ জানুয়ারি বুধবার জাতীয় সংসদ ভবনে নবনির্বাচিত সংসদ সদস্যদের শপথ পড়ান বর্তমান স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী। মাত্র কয়েকদিন আগেই শপথ গ্রহণের একমাস পূর্ণ হয়েছে।
নতুন করে সরকার গঠনের এক মাস সমাপ্ত হয়েছে। শপথ গ্রহণের পর থেকেই নিজেদের প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী নিজ নিজ এলাকায় বিভিন্ন উন্নয়নমূলক বিভিন্ন কর্মকাণ্ড শুরু করে দিয়েছেন নতুন সংসদ সদস্যরা। এরই মধ্যে নিজ এলাকায় উন্নয়নের ঝলক দেখিয়ে এলাকাবাসীর কাছে বেশ সাড়া ফেলেছেন কুড়িগ্রাম-৪ আসনের তরুণ এমপি বিপ্লব হাসান। এবারই প্রথম তিনি সংসদ সদস্য হিসেবে মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন।
দেশের তরুণ এমপিরা তাদের কার্যক্রমের মাধ্যমে এলাকা জুড়ে সারা ফেলেছে। সেই সাথে তাদের বিভিন্ন কার্যক্রমে, প্রশংসা কুড়িয়েছেন।
দেশের সবচেয়ে দরিদ্রতম জেলা কুড়িগ্রাম। কুড়িগ্রাম-৪ এর অঞ্চলগুলো এর মধ্যে অন্যতম। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবার আস্থা রেখেছিলেন তরুণ রাজনীতিবিদ ও আইনজীবী বিপ্লব হাসান পলাশের ওপর। শপথ গ্রহণের এক মাসের মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর আস্থার প্রতিদান দিয়ে যাচ্ছেন বিপ্লব হাসান।
তার নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি গুলো ইতিমধ্যে বাস্তবায়ন করা শুরু করেছেন। এছাড়াও তরুণদেরকে বিভিন্ন কাজে অনুপ্রাণিত করতে বিভিন্ন ধরনের পদক্ষেপ হাতে নিয়েছেন।
দীর্ঘদিন থেকে চলে আসা সিএনজি অটো-রিক্সার চাঁদাবাজি বন্ধের দাবি জানিয়ে আসছিলেন এই অঞ্চলের সিএনজি ও অটোরিকশা চালকরা। তিনি দায়িত্ব পাওয়ার পর সিএনজি অটোরিক্সার চাঁদাবাজি বন্ধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। বর্তমানে সরজমিনে দেখা যায়, সিএনজি অটোরিক্সায় চাঁদাবাজি বন্ধ আছে। এতে খুশি চালকরা।
তিনি জাতীয় সংসদে প্রধানমন্ত্রীর নিকট কুড়িগ্রামের জন্য পাঁচ বছর মেয়াদি কর্মপরিকল্পনার অনুরোধ জ্ঞাপন করেন। এলাকার প্রতি এ ধরনের পদক্ষেপের ফলে অনেকেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বাহবা দিচ্ছেন।
গত শুক্রবার (৯ ফেব্রুয়ারী) নদী ভাঙ্গন রোধ ও স্থায়ীভাবে সমাধানের লক্ষ্যে রাজিবপুর, রৌমারী ও চিলমারীর বিভিন্ন স্থানে নদী পরিদর্শন করেন এমপি বিপ্লব হাসান পলাশ ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের রংপুর বিভাগের চেয়ারম্যান সহ আরো অনেকে। তার নির্বাচনে ইশতেহারের অন্যতম একটি নদী ভাঙ্গন রোধ ও স্থায়ীভাবে সমাধানের ব্যবস্থা করা। যেটি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে তিনি শুরু থেকেই কাজ করে যাচ্ছেন।
উপজেলা গুলোর হাট-বাজার গুলোতে টোল নির্ধারণ করে দেওয়া হয়। যা গত ১৫ বছরের মধ্যেও ব্যতিক্রমী একটি উদ্যোগ। কুড়িগ্রাম জেলা আওতাধীন হাট-বাজারের টোল আদায়ের চার্ট দেখা যায়।
এছাড়াও তিনি নিজস্ব অর্থায়নে ব্রিজ স্থাপনের নজির গড়েছেন। যা কয়েকটি গ্রামের মানুষের মধ্যে যোগাযোগ সহজ করেছে। এতে প্রশংসাও পেয়েছেন সাধারণ মানুষের কাছে।
উপজেলা পরিষদ থেকে শুরু করে সব ধরনের মাসিক সভায় তার উপস্থিতি লক্ষণীয়। এতে করে তিনি সহজেই সমাধান করতে পারছেন এ অঞ্চলের সমস্যা গুলো। সেই সাথে প্রতিটি সমস্যার বিষয়ে সরাসরি অবগত হচ্ছেন।
গত শুক্রবার (৯ ফেব্রুয়ারি) এমপি বিপ্লব হাসান হঠাৎ কুড়িগ্রামের চিলমারী সরকারি হাসপাতাল পরিদর্শনে যান। সকালের দিকে তিনি পুরো হাসপাতালের সার্বিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করেন এবং রোগী ও তাদের স্বজনদের সঙ্গে কথা বলেন। ভর্তিরোগীদের উন্নত চিকিৎসার জন্য আর্থিক সহযোগিতার আশ্বাস দেন তিনি।
পরিদর্শনের সময় হাসপাতালের পুরুষ ও নারী ওয়ার্ডের চিকিৎসাধীন রোগী ও তাদের স্বজনদের সঙ্গে কথা বলেন। চিকিৎসাধীন এক রোগী আবেগপ্রবণ হয়ে বলেন, আমি অত্যন্ত কৃতজ্ঞ। দোয়া করি আল্লাহ তোমার মঙ্গল করুন।
এসময় অপর এক রোগী জানান, চিকিৎসা সেবা ভালো হলেও খাবারের মান উন্নত নয়। সংসদ সদস্য উত্তরে বলেন, হাসপাতালের খাবার নিয়ে কেনো ধরনের ব্যবসা চলবে না। দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এছাড়াও তিনি বাকি দুটি উপজেলার হাসপাতালগুলো পরিদর্শন করেছেন। সেই সাথে রোগীদের সমস্যা গুলোর বিষয়ে কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণ করার পদক্ষেপ নিয়েছেন।
শীত ও শৈত্য প্রবাহের ফলে যখন সারাদেশে বিপর্যস্ত। কুড়িগ্রাম জেলা এর থেকে রেহাই পায়নি। কুড়িগ্রামে ৭ থেকে ১৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মাঝেও অধিকাংশ দিন শীতের প্রবাহ বিরাজ করেছে। এসময় কুড়িগ্রাম-৪ এর তিন উপজেলায় কয়েক হাজার কম্বল শীতার্তদের মাঝে বিতরণ করেন।
এ বছরের টংগীতে অনুষ্ঠিত বিশ্ব ইজতেমায় রৌমারী, রাজিবপুর, চিলমারী থেকে আগত ধর্মপ্রাণ মুসল্লীদের খোঁজ খবর তিনি প্রতিনিয়ত ইজতেমা ময়দানে অবস্থান করেন।
তিনি সব সময় এলাকার খোঁজ-খবর রেখে যাচ্ছেন। নিয়মিত বিভিন্ন এলাকায় সফর করছেন। সাধারণ জনগণ থেকে শুরু করে সর্বস্তরের জনসাধারণ সরাসরি যোগাযোগ স্থাপন করার সুযোগ পাচ্ছেন। মসজিদ, মাদ্রাসা, সড়কের কাজ ও নির্মানের উদ্বোধনীতে তার উপস্থিতি এবং বিভিন্ন অনুষ্ঠানে তার উপস্থিতি লক্ষ্যনীয়।
হেনা ফাউন্ডেশনের রাজিবপুর উপজেলা শাখার সভাপতি মোহাম্মদ আল-আমিন বলেন, বর্তমান এমপি এক মাসের মধ্যে কুড়িগ্রাম-৪ আসনে যেভাবে পরিবর্তন এনেছেন, এটি পাঁচ বছর ধরে রাখতে পারবেন কিনা এটি তার জন্য বড় চ্যালেঞ্জের বিষয়। তিনি নির্বাচনের আগে নিজের রাজনৈতিক দল ছাড়াও অন্যান্য দলের অনেকের কাছে এবং সাধারণ মানুষের প্রধান পছন্দ ছিলেন। তার উপরে দলমত নির্বিশেষে অনেকেই আস্থা রেখেছিলেন বলেই বিপুল ব্যবধানে জয়লাভ করেছিলেন। আশা করি আগামী পাঁচ বছরে তিনি জনগণের আস্থার প্রতিদান দিবেন। যেভাবে তিনি বর্তমানে কাজ করে যাচ্ছেন।