কারাগারের ছাদ ফুটো করে আসামি পলায়ন
ডেপুটি জেলার ও প্রধান কারারক্ষীসহ বরখাস্ত ৫

ছবি: সংগৃহীত
বগুড়া কারাগারের ছাদ ফুটে করে ৪ আসামি পালিয়ে যাওয়ার ঘটনায় ডেপুটি জেলার ও প্রধান কারারক্ষীসহ পাঁচজনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
শুক্রবার (২৮ জুন) বিকেলে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কারা অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক কর্নেল শেখ সুজাউর রহমান।
তিনি বলেন, ‘দায়িত্বে অবহেলার বিষয় উঠে আসায় বগুড়া কারাগারের ডেপুটি জেলার হোসেনুজ্জামান, প্রধান কারারক্ষী আবদুল মতিনসহ পাঁচজনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। এ ছাড়া আরও তিনজনের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা করা হয়েছে।’
সম্প্রতি বগুড়া জেলা কারাগারের কনডেম সেলের ছাদ ফুটো করে বিছানার চাদরকে রশি হিসেবে ব্যবহার করে পালিয়ে যান মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ৪ আসামি।
আসামিরা হলেন কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারী উপজেলার দিয়াডাঙ্গা এলাকার নজরুল ইসলাম ওরফে মজনু, নরসিংদীর মাধবদী উপজেলার ফজরকান্দি এলাকার আমির হোসেন, বগুড়ার কাহালু পৌরসভার মেয়র আবদুল মান্নানের ছেলে মো. জাকারিয়া এবং বগুড়ার কুটুরবাড়ি পশ্চিমপাড়া এলাকার ফরিদ শেখ।
সেদিনের ঘটনার বর্ণনা দিয়ে পুলিশ সুপার (এসপি) সুদীপ কুমার চক্রবর্তী বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে পরিকল্পনা করে ২৫ জুন রাতে তারা কনডেম সেলের ছাদ কেটে কাপড়ের রশি বানিয়ে ছাদ থেকে নেমে পালিয়ে যান। পরে বুধবার (২৬ জুন) ভোর সাড়ে ৪টার দিকে জেলখানার অদূরে একটি বাজার থেকে পুলিশ তাদের ফের গ্রেপ্তার করে। জেল কর্তৃপক্ষ আমাদের বিষয়টি জানায় ৩টা ৫৬ মিনিটে। এরপর পুলিশের সব ফাঁড়ি এবং টহল দলকে অ্যালার্ট করে দেওয়া হয়। একপর্যায়ে ভোর সাড়ে ৪টায় সদর ফাঁড়ির সব-ইন্সপেক্টরের নেতৃত্বে পলাতক চার আসামিকে ধরে ডিবি কার্যালয়ে আনা হয়।’
ওই ঘটনার পর সেদিন সকালেই জেলা প্রশাসক, জেলা পুলিশ সুপার, ডিআইজি প্রিজনসহ একাধিক কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। এরপর একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে দেন বগুড়া জেলা প্রশাসক।
এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক (ডিসি) সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘কারাগার থেকে আসামি পালিয়ে যাওয়ার ঘটনায় বগুড়া কারাগারের ডেপুটি জেলার ও প্রধান কারারক্ষীসহ ৫ জনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। আসলে বগুড়া কারাগার অনেক পুরাতন। এটি ব্রিটিশ আমলে তৈরি। ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে দেখা গেছে ভবনের অনেক স্থান নাজুক। ওই চার আসামিকে এ বছরের ১ জুন এখানে নিয়ে আসা হয়। তাদের রাখা হয়েছিল একই সেলে। তারা আসার পর আমি পরিদর্শনেও গিয়েছিলাম। আজকে পরিদর্শন করে দেখা গেছে, ওরা ছাদের যে অংশে ফুটো করেছে সেখানে কোনো রড ছিল না। তারা ছাদে গামছা বেঁধে ছাদ ফুটো করে। আমরা এসব স্থান সংস্কারের কথা বলেছি। এ ছাড়া যেদিক দিয়ে তারা পালিয়েছিল সেখানে নিরাপত্তা চৌকি স্থাপনের কথা বলা হয়েছে।’
