জলদস্যুদের কবলে টাঙ্গাইলের সাব্বির, মা-বাবার খাওয়া-দাওয়া বন্ধ
এমভি আব্দুল্লাহ নামে জাহাজের নাবিক মো. সাব্বির হোসেনের পরিবার। ছবি : ঢাকাপ্রকাশ
ভারত মহাসাগড়ে জলদস্যুদের কবলে পড়েছেন এমভি আব্দুল্লাহ নামে পণ্য বহনকারী একটি জাহাজের বাংলাদেশি ২৩ জন নাবিক। তারমধ্যে মো. সাব্বির হোসেন নামে টাঙ্গাইলের এক নাবিক রয়েছে। তিনি নাগরপুর উপজেলার সহবতপুর ইউনিয়নের ডাঙা ধলাপাড়া গ্রামের হারুন রশিদের ছেলে।
একমাত্র ছেলের জিম্মির খবর শুনে বাবা-মা ও পরিবারের লোকজন কান্নাকাটি করে ভেঙে পড়েছে। মা সালেহা বেগম অঝড়ে কান্না করছেন। একমাত্র বোন মিতু আক্তার ভাইয়ের জন্য সবার কাছে দোয়া প্রার্থনা করছেন। তার ভাই যেন জিম্মি দশা থেকে মুক্ত হয়ে তাদের কাছে আবার ফেরত আসে।
এদিকে, তাদের কান্না থামাতে গ্রামের আশপাশ ও প্রতিবেশিরা বাড়িতে এসে ভিড় করছে। গ্রামের লোকজন ও আত্মীয়-স্বজনরা বাড়িতে এসে তাদের শান্তনা দিচ্ছেন। জিম্মির খবর পেয়ে স্বজনরা উদ্বিগ্ন রয়েছেন। তাদের একটাই দাবি সরকার যেন দ্রুত সাব্বিরকে মুক্ত করে আনে।
সাব্বিরের বোন মিতু আক্তার বলেন, গত ১১ মার্চ সোমবার বিকালে ফেসবুকে আপলোড দিয়েছে- যে বিষুব রেখা অতিক্রম করলাম। স্ট্যাটাসে ছবি যুক্ত ছিল। এক মাস আগে সে বাড়ি আসছিল। একদিন থেকেই সে চলে গেছে। গত ১২ মার্চ মঙ্গলবার সকাল থেকে তার মোবাইল বন্ধ পাওয়া যাচ্ছে।
তিনি আরও জানান, পরে মঙ্গলবার দুপুরে এমভি আব্দুল্লাহ জাহাজটি জলদস্যুদের কবলে পড়ার খবর পেয়ে আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছি। বাবা মা খাওয়া দাওয়া বন্ধ করে দিয়েছে। তারা শুধু কেঁদেই চলছে আর বলছে আমার ছেলেকে এনে দাও। আমার একমাত্র ভাইয়ের কিছু হলে বাবা মাকে বাচাঁনো যাবে না।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) রেজা মো. গোলাম মাসুদ প্রধান ঢাকাপ্রকাশকে বলেন- খবর পেয়ে উর্ধ্বতন সংশ্লিষ্ট দপ্তরে সর্বোচ্চ যোগাযোগ অব্যাহত রয়েছে। আশা করছি, দ্রুত সময়ের মধ্যে নাবিক সাব্বির হোসেনকে ফেরত আনতে সক্ষম হব। এনিয়ে কাজ করে যাচ্ছি।
সাব্বির হোসেন ২০১৪ সালে এসএসসি পাস করে টাঙ্গাইলের কাগমারী এম.এম আলী কলেজ থেকে ২০১৬ সালে এইচএসএসসি পাস করে। পরে চট্রগ্রাম মেরিন একাডেমিতে উত্তীর্ণ হলে ২০২২ সালের জুন মাসে এমভি আব্দুল্লাহ নামক পণ্য বহনকারী জাহাজে মার্চেন্ট কর্মকর্তা হিসেবে চাকরি নেন।
সাব্বিরের চাচাতো ভাই আহম্মেদ হোসেন রানা বলেন, সাব্বিররা এক ভাই এক বোন। সে অনেক কষ্ট করে লেখাপড়া করেছে। তার বাবা কৃষিকাজ করে সংসার চালাতেন। বোনের বিয়ে হয়েছে। সাব্বিরের বাবা মস্তিস্কে রক্তক্ষরণজনিত কারণে প্যারাইলাইজড হয়ে শয্যাশায়ী। একমাত্র উপার্জনক্ষম সাব্বির।