নৌ যানে অগ্নি নির্বাপনে আধুনিক ব্যবস্থা প্রবর্তনের দাবি
নদী পথে নৌ যানে অগ্নিকাণ্ড নিয়ন্ত্রণে কোনো ব্যবস্থা নেই। পুরোনো আমলের প্রযুক্তি দিয়ে চলছে যাত্রী ও পণ্যবাহী নৌ যানগুলো। ফলে নৌ পথে লাখো যাত্রীকে নিরাপত্তাহীনতার মধ্য দিয়েই ভ্রমণ করতে হচ্ছে।
অগ্নি নির্বাপনে নৌ শ্রমিকদেরও কোনো প্রশিক্ষণ নেই। এ কারণে নৌ যানে দুর্ঘটনায় প্রাণ যায় বহু মানুষের। এদিকে ঝালকাঠিতে লঞ্চে অগ্নিকাণ্ডে ৪১ জনের মৃত্যুর ঘটনা ভাবিয়ে তুলছে দেশের সকল মহলের মানুষদের। নৌ যানে আধুনিক অগ্নিনির্বাপন ব্যবস্থা প্রবর্তন সময়ের দাবি বলে জানিয়েছেন শ্রমিকরা।
লঞ্চ মালিক সমিতির নেতারা জানিয়েছেন, তারা আধুনিক ব্যবস্থা প্রবর্তনের পাশাপাশি নৌ শ্রমিকদের অগ্নি নির্বাপনে প্রশিক্ষিত করার উদ্যোগ নিয়েছেন। তারা বলছেন সব নৌ যানে অগ্নি নির্বাপন ব্যবস্থা আছে। যাদের গাফেলতির কারণে এমন দুর্ঘটনা ঘটেছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানান তারা।
নৌ যান পরিচালনাকারীরা জানান, কয়েক কোটি টাকা খরচ করে নির্মাণ করা হয় একেকটি যাত্রীবাহী নৌ যান। লঞ্চে যাত্রীদের বিলাসিতায় নানা আধুনিকায়ন করা হলেও তাদের জীবনের নিরাপত্তার জন্য কোনো ব্যবস্থা নেই। বিশেষ করে যাত্রী ও পণ্যবাহী নৌ যানে অগ্নিকাণ্ড ঘটলে তাৎক্ষণিক অগ্নি নির্বাপনের কোনো ব্যবস্থা নেই তাদের হাতে। পুরাতন মডেলের ফায়ার স্টিঙ্গুইসার, বালুর বালতি এবং হোসপাইপ অগ্নি নির্বাপনের একমাত্র ভরসা নৌ যান শ্রমিকদের। এসব সরঞ্জামাদি দিয়ে ছোটখাটো আগুন নেভানো সম্ভব হলেও বড় ধরনের আগুন নিয়ন্ত্রণে নিজস্ব কোনো ব্যবস্থা নেই নৌ যানগুলোতে। যাত্রী এবং নৌযান শ্রমিকদের জীবন রক্ষায় এখনই আধুনিক প্রযুক্তি প্রবর্তনের দাবি জানিয়েছেন তারা।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীন নৌ চলাচল সংস্থার পরিচালক মো. নিজাম উদ্দিন বলেন, ‘ঝালকাঠিতে লঞ্চে অগ্নিকাণ্ডে মানুষের মৃত্যু এবং শতাধিক মানুষের দগ্ধ হওয়ার ঘটনা ভাবিয়ে তুলেছে আমাদের। এ ধরনের ঘটনা রোধে ফায়ার সার্ভিস এবং নৌ পরিবহন অধিদপ্তরের সমন্বয়ে যুগোপযোগী কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়ার পাশাপাশি নৌ যান শ্রমিকদের অগ্নি নির্বাপনে প্রশিক্ষিত করার উদ্যোগ নেওয়া দরকার।’
এদিকে সব নৌ যানেই আধুনিক অগ্নি নির্বাপন ব্যবস্থা আছে বলে দাবি করেছেন বাংলাদেশ অভ্যন্তরীন নৌ পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) চেয়ারম্যান কমডোর গোলাম সাদেক। সব জাহাজে অগ্নি নির্বাপন সরঞ্জামাদি এবং শ্রমিকদের এ বিষয়ে প্রশিক্ষণ থাকা বাধ্যতামূলক। এ ক্ষেত্রে কোনো ব্যত্যয় হলে সংশ্লিষ্ট দায়িত্বপ্রাপ্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলেন তিনি।
উল্লেখ্য, গত বৃহস্পতিবার রাতে ঝলকাঠিতে লঞ্চে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে এ পর্যন্ত ৪১ জনের মৃত্যু এবং শতাধিক যাত্রী দগ্ধ হওয়ার কথা জানা গেছে। এর আগে গত ১২ নভেম্বর ঝালকাঠিতে তেলের জাহাজে বিস্ফোরণে ৬ জনের মৃত্যু হয়। এছাড়া ২০১৯ সালে বরিশালের কীর্তনখোলা নদীতে তেলের জাহাজে বিস্ফোরণে একজন নিহত এবং ৫ জন শ্রমিক দগ্ধ হয়।
এসও/এএন