পুলিশের নির্যাতনে কয়েদির মৃত্যুর দাবি পরিবারের
নাটোর জেলা কারাগারের এক কয়েদির মৃত্যু নিয়ে রহস্যের সৃষ্টি হয়েছে। কেননা, পুলিশি নির্যাতনে মৃত্যু হয়েছে বলে পরিবারের দাবি। এদিকে পুলিশ বলছে, অসুস্থতার কারণে তার মৃত্যু হয়েছে।
নিহত ওসমান শেখ (৩৩) মাদক মামলার কয়েদি ছিলেন। তার বাড়ি সদর উপজেলার দিঘাপতিয়া ইউনিয়নের পশ্চিম হাগুড়িয়া গ্রামে। তার বাবার নাম নুরু শেখ।
গত ১৪ মার্চ মাদক গ্রহণের অভিযোগে ভ্রাম্যমাণ আদালতে তার সাজা হয়। ওই দিন থেকেই ওসমান নাটোর জেলা কারাগারে বন্দি ছিলেন। গত রাত সোয়া ৭টার দিকে অসুস্থ হয়ে পড়লে চিকিৎসার জন্য তাকে নাটোর আধুনিক সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। রাত ৭টা ৫০ মিনিটে তার মৃত্যু হয়।
নাটোর জেলা কারাগারের জেল সুপার আব্দুর রহিম এই বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তবে নিহতের বোন-জামাই মুকুল শুক্রবার সকাল ১১টায় জানান, ওসমান কাঠমিস্ত্রীর কাজ করত। তার দুই ছেলে-মেয়ে। মেয়ে আলমিনার বয়স ৫-৬ আর ছেলে আলিমের বয়স ৩-৪ বছর। গত ৫-৭ বছর থেকে তার মাথায় মাঝে মাঝে সমস্যা হলে সকলের সঙ্গেই খারাপ আচরণ করত। এমনি এক ঘটনা ঘটলে ওসমানের স্ত্রী মুক্তির কথায় তিনি ও তার স্ত্রীসহ পরিবারের সদস্যরা সিদ্ধান্ত নেন, ওসমানকে কিছুদিন জেলে রেখে ভালো করতে৷ এরই ধারাবাহিকতায় ১৪ মার্চ নাটোর মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অফিসে যোগাযোগ করে মাদক মামলায় ভ্রাম্যমান দেখিয়ে তাকে জেলে দেওয়া হয়। গত রাতে তারা ওসমানের মৃত্যুর খবর পান।
এক প্রশ্নের জবাবে মুকুল দাবি করেন, বিভিন্ন মাধ্যমে তারা জেনেছেন, কারাগারের এক কয়েদি ওসমানকে এক পুরা গাঁজা দেয়। ওই গাঁজা পাওয়ার পর পুলিশ তার ওপর অমানবিক নির্যাতন চালালে সে অসুস্থ হয়ে পরে। এরপর সদর হাসপাতালে সে মারা যায়।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে জেল সুপার আব্দুর রহিম অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ডাক্তারের রিপোর্ট অনুযায়ী ওসমান গত ৮ বছর থেকে হেরোইন আসক্ত। এ কারণে জেলখানায়ও প্রায়ই অসুস্থ হয়ে জেল হাসপাতালে চিকিৎসা নিত। যেদিন জেলে আসে সে সময়ে তার কাছে গাজা পাওয়ায় তা জব্দ করা হলেও কোনো নির্যাতন করা হয়নি। আর অসুস্থ হওয়ার আগেও তার কাছে গাজা পাওয়া বা তাকে নির্যাতনের কোনো ঘটনা ঘটেনি। বরং অসুস্থতার কারণেই তার মৃত্যু হয়েছে।
এদিকে বৃহস্পতিবার (১৭ মার্চ) রাত ৪টার দিকে নাটোর জেলা কারাগারে আরও এক কয়েদির মৃত্যু হয়েছে বলে জানা গেছে।
ওই কয়েদির নাম আনছরে আলী। তিনি পাবনা জেলার চক ভানুরা গ্রামের ভানুর ছেলে। গত ১৭ জানুয়ারি জেলার লালপুর উপজেলার একটি হত্যা মামলার আসামি হিসেবে তিনি কারাগারে আসেন।
বৃহস্পতিবার রাত ৩টার পর তিনি বুকে ব্যথা অনুভব করলে সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়৷ সেখানে ৩টা ৫৮ মিনিটে তার মৃত্যু হয়। জেল সুপার আবদুর রহিম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
টিটি/