মিরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স
চিকিৎসক না থাকায় ৪ বছর ধরে বন্ধ অপারেশন
কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের অপারেশন থিয়েটারটি দীর্ঘ দিন ধরে রোগীদের কোনো কাজেই আসছে না৷ গাইনি চিকিৎসক নিয়োগ থাকলেও ডেপুটেশনে তিনি কাজ করেন কুষ্টিয়া সদর হাসপাতালে৷ যার কারণে গত ৪ বছর সিজারিয়ান অপারেশন করা যাচ্ছে না৷ এতে করে দরিদ্র মানুষের ভোগান্তি চরমে৷ বাধ্য হয়ে তাদের দৌড়াতে হচ্ছে বেসরকারি ক্লিনিকে৷ এদিকে দীর্ঘ দিন অযত্নে অবহেলায় নষ্ট হচ্ছে অপারেশন থিয়েটারের যন্ত্রপাতি ও সরঞ্জাম৷
২০১৭ সালে ডা. তানজিমা সিদ্দিকাকে মিরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়োগ দেয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়৷ তারপর তিনি ডেপুটেশনে কুষ্টিয়ার ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে চলে যান৷ তারপর থেকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের অপারেশন থিয়েটারটি ৪ বছর ধরে বন্ধ রয়েছে৷
কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার ১৩টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভার ৪ লক্ষাধিক জনগণের স্বাস্থ্যসেবা দিতে ২০০৬ সালে ৫০ শয্যায় উন্নীত হয় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স৷ কুষ্টিয়া সদর থেকে ১৫ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত এ হাসপাতালে অপারেশন কার্যক্রম না চলায় অসহায় দরিদ্র মানুষের দুর্ভোগ চরমে উঠেছে৷
মিরপুর উপজেলা জাসদের সাধারণ সম্পাদক আহাম্মদ আলী বলেন, 'অপারেশন কার্যক্রম বন্ধ থাকায় প্রসূতি রোগীদের ফিরে যেতে হয় সদরে৷ ১৫ কিলোমিটার পথ যেতে গিয়ে রোগী আরও বেশি অসুস্থ হয়ে পড়ে। বাধ্য হয়ে যেতে হয় যে কোনো অদক্ষ চিকিৎসকের কাছে৷ বাড়তি খরচ গুণতে হয় রোগীর স্বজনদের৷ প্রায়ই হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীরা ক্ষোভ প্রকাশ করেন৷ হাসপাতালের চিকিৎসা ব্যবস্থা নিয়েও রোগী ও তাদের স্বজনদের একাধিক অভিযোগ রয়েছে৷'
রূপজান খাতুন নামে রোগীর এক স্বজন বলেন, 'আমার গর্ভবতী মেয়ে়কে হাসপাতালে নিয়ে এলে সেখানে অপারেশনের ব্যবস্থা না থাকায় বাধ্য হয়ে বেসরকারি ক্লিনিকে অপারেশন করাই৷ এতে সদরে যাওয়ার পথেই রোগীর অবস্থা খারাপ হয়ে যায়৷ আমি গরিব মানুষ এতে আমার অনেক টাকা বেশি খরচ হয়৷'
মিরপুর নাগরিক কমিটির সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা নজরুল করিম বলেন, 'সরকারি হাসপাতালে খরচ ছাড়াই চিকিৎসা করা যায় কিন্তু মিরপুরে অপারেশন বন্ধ থাকায় মানুষকে বাড়তি টাকা দিয়ে বিভিন্ন ক্লিনিকে চিকিৎসা করা করতে হচ্ছে৷ অতি দ্রুত ডেপুটেশনে থাকা চিকিৎসককে ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থা করা হোক অথবা নতুন নিয়োগ দেওয়া হোক৷'
এ ব্যাপারে মিরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. পিযুষ কুমার সাহা বলেন, 'এখানে অপারেশনের সবকিছু আছে৷ ২০১৭ সালে এখানে একজন গাইনি কনসালটেন্ট ছিলেন কিন্তু একই অর্ডারে তার ডেপুটেশন করা ছিল কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে৷ যার কারণে আমরা এখানে অপারেশন চালু করতে পারছি না৷ যদি উনি এখানে আসেন তাহলে আমরা আবার অপারেশন করতে পারব৷'
এসএন