ময়মনসিংহে মাজার ভাঙচুর ও কাওয়ালিতে হামলার ঘটনায় মামলা
ছবিঃ সংগৃহীত
ময়মনসিংহ নগরে প্রায় ২০০ বছরের পুরোনো একটি মাজারে ভাঙচুর ও কাওয়ালি অনুষ্ঠানে হামলার ঘটনায় মামলা হয়েছে। বৃহস্পতিবার রাতে মাজারটির অর্থসম্পাদক মো. খলিলুর রহমান বাদী হয়ে কোতোয়ালি মডেল থানায় মামলাটি করেছেন।
পুলিশ জানিয়েছে, মামলায় ১ হাজার ৫০০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে। সিসিটিভি ক্যামেরা ফুটেজ দেখে অভিযুক্তদের শনাক্তের চেষ্টা চলছে।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, নগরের কোতোয়ালি মডেল থানার বিপরীত দিকে অবস্থিত হজরত শাহ সুফি সৈয়দ কালু শাহ (রহ.)-এর মাজার। মাজারে ১৭৯তম বার্ষিক ওরস উপলক্ষে ব্রহ্মপুত্র নদের পারে কাওয়ালি গানের আয়োজন করেন ভক্তরা। বুধবার রাত ১১টার দিকে গানের অনুষ্ঠান শুরুর পর সাড়ে ১১টার দিকে সেখানে হামলা হয়। দ্রুত শিল্পীদের সরিয়ে দেওয়া হয়। মঞ্চ ও চেয়ার গুঁড়িয়ে চলে যায় দুর্বৃত্তরা। পরে রাত তিনটার দিকে মাজারে হামলা হয়। মাজারের পাকা স্থাপনার কিছু অংশ ও ভেতরে থাকা জিনিসপত্র ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়।
এ নিয়ে মাজারটির ভক্তদের পাশাপাশি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক সমালোচনা শুরু হয়। কোতোয়ালি মডেল থানা সংলগ্ন জামিয়া ফয়জুর রহমান বড় মসজিদের শিক্ষার্থীরা হামলা চালিয়ে মাজারটি ভাঙচুর চালায় বলে অভিযোগ ভক্তদের।
কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শফিকুল ইসলাম খান বলেন, বৃহস্পতিবার রাতেই থানায় মামলা নথিভুক্ত হয়েছে। এখানে দুটি পক্ষই খুবই স্পর্শকাতর। সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে হামলায় জড়িত ব্যক্তিদের আমরা শনাক্তের চেষ্টা করছি।
মাজারটির অর্থসম্পাদক মো. খলিলুর রহমান জানান, বুধবার মাজারটিতে আচমকা হামলা চালায় উগ্রবাদে প্রভাবিত মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা। তারা দাবি করে এখানে এসব মাজার ভিত্তিক কর্মকান্ড ও গানের আয়োজন করা যাবে না। আমরা নিরুপায় ছিলাম। আমাদের লোকজনের উপর আঘাত করা হয়। এক পর্যায়ে তারা মাজারেও হামলা চালায়। ভেঙ্গে দেয় মাজারের কিছু অংশ। এভাবে চলতে থাকলে এ দেশ মানুষের বসবাস মুশকিল হয়ে যাবে। আমরা আইনের আশ্রয় নিয়েছি। আশা করি আইন তার যথাযথ পদক্ষেপ নিবে।
অভিযোগের বিষয়ে জামিয়া ফয়জুর রহমান বড় মসজিদের প্রধান মুয়াজ্জিন শহীদুল ইসলাম বলেন, রাতে মাইক বাজিয়ে গানবাজনা করছিলেন মাজারের লোকজন। উচ্চ স্বরে গান বাজানোর কারণে ছাত্রদের পড়ায় সমস্যা হয়। এমন অবস্থায় ছাত্ররা গিয়ে গানের সাউন্ড কমাতে বলে। কিন্তু তা না করে গানের আসর থেকে উস্কানিমূলক কথা বলায় ছাত্ররা ক্ষিপ্ত হয়ে সেখানে গিয়ে ভাঙচুর করে।