কাজে আসছে না ২৭ লাখ টাকার সেতু
সাত বছর আগে নির্মাণ করা হয়েছে সেতুটি। কিন্তু এখনো সংযোগ সড়ক হয়নি। তাই সেতুটি ব্যবহার করতে পারছেন না ছয় গ্রামের মানুষ। জামালপুরের বকশীগঞ্জ উপজেলার সাধুরপাড়া-মালিরচর সড়কের মসজিদপাড়া খালের উপর এই সেতুটির অবস্থান। সেতুটি নির্মাণ করা হয় ২০১৫ সালে। কিন্তু তা এলাকাবাসীর কোনো কাজে আসছে না।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, সেতুটি দিয়ে মোল্লাপাড়া, মসজিদপাড়া, দক্ষিণ ধাতুয়াকান্দা, ঝালুরচর, মালিরচর ও খানপাড়া গ্রামের প্রায় ১০ হাজার মানুষ যাতায়াত করেন। উপজেলার এই সড়ক দিয়ে সাধুরপাড়া ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়সহ বেশ কয়েকটি সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে যাতায়াত করেন লোকজন। সেতু পেরিয়ে যেতে হয় বেশ কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে। এই সড়ক দিয়েই যেতে হয় উপজেলা সদরে। অন্য সড়ক ব্যবহার করে এসব গন্তব্যে চলাচলের সুযোগ থাকলেও এই ছোট্ট খালের উপর আগে যখন সেতু ছিল না তখন মানুষের দুর্ভোগের শেষ ছিল না।
গ্রামবাসীর দীর্ঘদিনের দাবির প্রেক্ষিতে ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের অর্থায়নে ২০১৫ সালে ২৭ লাখ টাকা ব্যয়ে এই সেতুটি নির্মাণ করা হয়। তখন সেতুর দুই পাশে কাঁচা রাস্তা ছিল। কিছু সময় লোকজন সেতুটি ব্যবহারের সুযোগ পেয়েছিল। ২০১৬ সালে বর্ষার পানিতে সেতুটির দুই পাশের সংযোগ সড়ক ধসে যায়। এর পর থেকে সংযোগ সড়কটি আর না হওয়ায় সেতুটি ব্যবহারের সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে গ্রামবাসী।
গ্রামবাসীর অভিযোগ, এই সেতু এখন শুধু মানুষের দুর্ভোগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। তারা ঐক্যবদ্ধ হয়ে কর্তৃপক্ষের কাছে বহুবার ঘোরাঘুরি করেও সেতুটির সংযোগ সড়ক নির্মাণ করিয়ে নিতে পারেননি। ফলে তারা এখন এই সেতু ব্যবহারের আশা ছেড়ে দিয়েছেন। বর্ষা মৌসুমে প্রায় চার কিলোমিটার ঘুরে সাধুরপাড়া ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে বা জরুরি প্রয়োজনে উপজেলা সদরে যাতায়াত করেন।
সাধুরপাড়া নজরুল ইসলাম উচ্চ বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থী জোনাকি আক্তার বলে, বর্ষা মৌসুমে অনেক কষ্ট করে চার কিলোমিটার ঘুরে তাকে বিদ্যালয়ে যাতায়াত করতে হয়। একই এলাকার শিক্ষার্থী মো. তারিকুল ইসলাম জানান, আমাদের মাদ্রাসায় যেতে হলে বর্ষাকালে গামছা পড়ে এই খাল পার হতে হয়। বছরের বেশির ভাগ সময় আমাদের বহু শিক্ষার্থীকে কষ্ট করতে হয়।
দক্ষিণ ধাতুয়া কান্দা গ্রামের বাসিন্দা শিক্ষক ছাইদুর রহমান জানান, নানা কারণে আমাদের ইউনিয়ন পরিষদ, সাধুরপাড়া নজরুল ইসলাম উচ্চ বিদ্যালয় ও সাধুরপাড়া দাখিল মাদ্রাসাসহ বিভিন্ন সরকারি -বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে সেবা নিতে হলে এই খালের উপর দিয়ে যেতে হয়। ব্রিজের মাটি ভরাট না করায় আমরা সময়মতো সব কাজ করতে পারি না। তাই জনগণের দুর্ভোগের কথা চিন্তা করে অবিলম্বে এই ব্রিজের মাটি ভরাট করে ব্রিজটি সচল করা হোক।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে বকশীগঞ্জ উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) মো. মজনুর রহমান বলেন, ‘সম্প্রতি আমি এই উপজেলায় যোগদান করেছি। এই বিষয়ে আমার কিছুই জানা ছিল না। তবে স্থানীয় বাসিন্দাদের মাধ্যমে ওই সেতুর সংযোগ সড়ক না থাকার বিষয়টি শুনেছি। সেখানে সরেজমিনে পরিদর্শনও করেছি। দ্রুত সময়ের মধ্যে যেকোনো প্রকল্পের মাধ্যমে সেতুর দুই পাশে মাটি কেটে ভরাটের উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে।’
এসআইএইচ