ফের নিলামে উঠছে বিলাসবহুল সেই ১১২ গাড়ি
ফের নিলামে উঠতে যাচ্ছে চট্টগ্রাম বন্দরের ইয়ার্ডে পড়ে থাকা আমদানিকৃত বিলাসবহুুল সেই ১১২ গাড়ি। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে অনাপত্তিপত্র (সিপি) সংগ্রহ না করায় এবং প্রত্যাশিত দর না পাওয়ায় টানা তিনবার এসব গাড়ির নিলাম বাতিল করা হয়।
এমন পরিস্থিতির মুখে বিলাসবহুল এসব গাড়ির অনুকূলে সিপি প্রদানের অনুরোধ জানিয়ে এনবিআরের মাধ্যমে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে চিঠি দেয় চট্টগ্রাম কাস্টমস কর্তৃপক্ষ। চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, নিলামের অপেক্ষায় গাড়ির অনুকূলে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সিপি ইস্যু না করলে গাড়িগুলো বিক্রি করা সম্ভব হবে না। গাড়ি বিক্রি না হলে সরকার রাজস্ব হারাবে।
এর প্রেক্ষিতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে বিলাসবহুল ১১২ গাড়ি বিক্রির অনাপত্তিপত্র (সিপি) পেয়েছে চট্টগ্রাম কাস্টমস কর্তৃপক্ষ। ফলে নিলামে বিক্রির পর বন্দর থেকে খালাস করতে আর বাধার সম্মুখীন হতে হবে না সংশ্লিষ্ট ক্রেতাকে। এমনটাই জানিয়েছেন চট্টগ্রাম কাস্টমস কমিশনার ফখরুল ইসলাম।
তিনি বলেন, ক্রেতার পক্ষে সিপি সংগ্রহ করা দুরূহ ব্যাপার। আমরা জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) মাধ্যমে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে সবগুলো গাড়ির সিপি পেয়েছি। ফলে নিলামের মাধ্যমে এসব গাড়ি যারা কিনতে সক্ষম হবেন, গাড়ি খালাসে তারা বাধার সম্মুখীন হবেন না।
কাস্টমস কমিশনার আরও বলেন, শিগগির এসব গাড়ি বিক্রির জন্য ই-অকশন এবং ম্যানুয়াল নিলামের আয়োজন করা হবে। সারাদেশ থেকে অংশগ্রহণকারীদের যুক্ত করা হবে। ই-অকশনে অংশগ্রহণকারীর সংখ্যা যেমন বাড়বে, তেমনি প্রতিযোগিতামূলক দরও পাওয়া যাবে।
কাস্টমস সূত্র জানায়, কারনেট ডি পাসেজ সুবিধায় বিভিন্ন দেশ থেকে চট্টগ্রাম বন্দরে আনা বিলাসবহুল ১১২টি গাড়ির মধ্যে ২৬টি মিতসুবিশি, ২৫টি মার্সিডিজ বেঞ্চ, ২৫টি বিএমডব্লিউ, ৭টি ল্যান্ডরোভার, ৭টি ল্যান্ডক্রুজার, ১টি সিআরভি, ৬টি লেক্সাস, ৫টি ফোর্ড, ৩টি জাগুয়ার, ১টি দাইয়ু ও ১টি হোন্ডাসহ বিভিন্ন ব্র্যান্ডের বিলাসবহুল গাড়ি রয়েছে।
যার অধিকাংশ ৭-৮ বছরের পুরোনো। ২০১৬ সাল থেকে এসব গাড়ি ৫ বার নিলামে তোলা হয়। সর্বশেষ গত ৩ ও ৪ নভেম্বর নিলামে দরপত্র জমা পড়ে ৫৫১টি। দাম ওঠে ১৭ কোটি টাকা। অথচ কাস্টমস নিলামে এসব গাড়ির রিজার্ভ ভ্যালু নির্ধারণ করে ১৮০ কোটি টাকা।
কাস্টম আইন অনুযায়ী, বন্দরে পণ্য আসার ৩০ দিনের মধ্যে পণ্য খালাস নিতে হয়। না নিলে নোটিশ পরবর্তী সময়ে পণ্য নিলামে তোলে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ। নিয়ম অনুযায়ী প্রতিমাসে একবার নিলাম আয়োজন করে কাস্টমস। কিন্তু বিলাসবহুল ১১২ গাড়ি বন্দরে আসার ৮ বছর পেরিয়ে গেলেও নিলামে উঠেছে মাত্র ৫ বার।
চট্টগ্রাম বন্দরের সচিব ওমর ফারুক বলেন, বিভিন্ন পত্রিকায় বার বার বিজ্ঞাপন দিয়েও কন্টেইনার ভর্তি ১১২ গাড়ি নিলামে বিক্রি হচ্ছে না। সময়মতো গাড়িগুলো নিলাম না দেওয়ায় কাস্টমসের আর্থিক ক্ষতির পাশাপাশি ইয়ার্ডে জায়গা দখল করে রাখায় চট্টগ্রাম বন্দরের স্বাভাবিক কার্যক্রমও ব্যাহত হচ্ছে।
আইকে/এএন