কাউনিয়ায় সেতুর ‘অ্যাপ্রোজ সড়ক’ না থাকায় ভোগান্তি
এলাকার সব মানুষের সহযোগিতায় কাউনিয়ার গোপীডাঙ্গা-শিমুলতলী নামক স্থানে তিস্তা মরাসতি নদীতে স্বেচ্ছাশ্রমে নির্মাণ করা হয় ৩২০ ফুট দীর্ঘ দৃষ্টিনন্দন কাঠের সাঁকো। এ পথ দিয়ে লালমনিরহাট সদর উপজেলার রাজপুর ইউনিয়নের ঠিকানাবাজার, আলমবাজার, খলাইঘাট, পাগলার হাট, চাংড়া গ্রাম।
অপরদিকে, কাউনিয়া উপজেলার বালাপাড়া ও শহীদবাগ ইউনিয়নের আরাজি হরিশ্বর, গোপিডাঙ্গা, প্রাণনাথচর, চর সাব্দি গ্রামের প্রায় ৫০ হাজার মানুষ, ২টি হাইস্কুল, ৩টি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ২টি মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরাও ওই পথ দিয়ে যাতায়াত করে। গত বছর বন্যার পানির তোরে ভেঙে যায় সেতুর সংযোগ সড়ক। এতে দুর্ভোগে পড়ে এলাকার মানুষ।
গোপী ডাঙ্গা এলাকার স্বেচ্ছাসেবক ও উদ্যোক্তা ওমর ফারুক, মিনারুল, হানিফ, বেলাল, সাহেব আলী-সহ অনেকে এলাকার মানুষের দ্বারে দ্বারে গিয়ে সাহায্য তুলে ৩ লাখ ৭৬ হাজার টাকা ব্যয়ে ৩২০ ফুট দৈর্ঘ কাঠের সেতুটি নির্মাণ করে।
সাঁকো উদ্বোধন করেন রাজপুর ইউপি চেয়ারম্যান মোফাজ্জল হোসেন, শহীদবাগ ইউপি চেয়ারম্যান আলহাজ্ব আব্দুল হান্নান, বালাপাড়া ইউপি চেয়ারম্যান আনছার আলী, বালাপাড়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক দিলদার আলী, ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ সভাপতি ফুল মিয়াসহ এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিরা।
তারা সহযোগিতার আশ্বাস দিয়ে ছিলেন, কিন্তু এখন পর্যন্ত কোনো সহযোগিতা পাওয়া যায়নি। কাঠের সাঁকো নির্মাণকারীদের এখনও প্রায় ১ লাখ ১০ হাজার টাকা ঋণ রয়েছে। ঋণ পরিশোধে তারা বিত্তবান ও চেয়ারম্যানদের কাছে সাহার্য্য কামনা করেন।
কৃষক-জেলে-ব্যবসায়ী-ছাত্র-শিক্ষক থেকে শুরু করে ওই এলাকার সর্বস্তরের মানুষ জানান, নৌকায় করে পারাপারে দুর্ভোগ কিছুটা কমেছে। কিন্তু পাকা সেতু না থাকায় কৃষিপণ্য পরিবহনে দুর্ভোগের শেষ নেই। কৃষি শষ্য ভাণ্ডার হিসেবে পরিচিত এই এলাকার ধান, পাট, তামাক, আখ, আলু, ভুট্টাসহ বিভিন্ন সব্জি পরিবহন করতে হলে ১০ কিলো রাস্তা ঘুরে হারাগাছের একতা পাকা সেতু দিয়ে পণ্য বিক্রি করতে যেতে হয়। তখন সময় ও আর্থিক ক্ষতিতে পড়তে হয় এলাকার কৃষকদের। বাণিজ্যমন্ত্রীর কাছে এ স্থানে একটি পাকা সেতু নির্মাণের দাবিও জানান এই এলাকার ১০ গ্রামের মানুষ।
কাউনিয়ার বালাপাড়া ইউপি চেয়ারম্যান আনছার আলী ও শহীদবাগ ইউনিয়ন চেয়ারম্যান আব্দুল হান্নান বলেন, এখানে একটি পাকা সেতু নির্মাণের প্রস্তাব উপজেলা পরিষদে পেশ করা হয়েছে এবং বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশির দৃষ্টি গোচরে আনা হয়েছে। বরাদ্দ পেলে দ্রুত সেতুটির নির্মাণ কাজ করা হবে।
কাউনিয়া উপজেলা প্রকৌশলী (এলজিইাড) মো. আসাদুরজ্জামান (জেমি) বলেছেন, আমরা ১২০ মিটার সেতু নির্মাণের জন্য প্রকল্প তৈরি করে অনুমোদন ও বরাদ্দের জন্য ঢাকায় এলজিইডির প্রধান প্রকৌশলীর কাছে পাঠিয়েছি। অনুমোদন পেলেই কাজের দরপত্রের আহ্বান করা হবে।
এমএসপি