বৃষ্টিতে হাটুজল, রোদে ধুলা
সামান্য বৃষ্টিতেই রাস্তায় জমে হাটুজল, আবার রোদ হলেও ধুলায় ঢেকে যায় পা। সিরাজগঞ্জ উল্লাপাড়া উপজেলার পাটবন্দর ব্রিজ-সলপ রেলওয়ে স্টেশন সড়কটির এমনই দশা।
৫ কিলোমিটার দীর্ঘ রাস্তাটি সংস্কার ও পাকা করতে এলাকাবাসী দীর্ঘদিন ধরে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের কাছে আবেদন জানিয়ে আসছে। কিন্ত আমলে নিচ্ছে না কেউই। ফলে চরম দুর্ভোগের মধ্যে দিয়েই এ পথে আসা-যাওয়া করতে হচ্ছে এলাকাবাসীকে।
সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া উপজেলার বেতবাড়ি গ্রামের ছোবাহান আলী সরদার বলেন, ‘হেই রাস্তায় আর হাঁইটপার পারি না। রাস্তায় একহাটু ধুলা। ধুলার কারণে চলা যায় না। জামা-কাপড়ও নষ্ট হয়ে যায়। ইট্টুখানি বৃষ্টি হইলেই এক হাঁটু কাদা জইমা যায়। চটি জুতা বোগল তলায় নিয়া চইলতে হয়। আমাগো দুর্ভোগ দেখনের লোক নাই। কবে ভালো অইব এ রাস্তা জানি না।’
ছোবাহানের মতো এমন ক্ষোভ প্রকাশ করলেন স্থানীয় বাসিন্দা ছোরহাব আলী, রমজান আলী, আবুল হোসেনসহ আরও অনেকেই।
তারা জানান, এ রাস্তা দিয়ে প্রতিদিন এলাকার অন্তত ১০ গ্রামের মানুষ উল্লাপাড়া উপজেলা সদর, পৌরসভা বাজার, রেলওয়ে স্টেশন, উল্লাপাড়া মডেল থানাসহ কয়েকটি স্কুল ও কলেজের শিক্ষার্থীরা যাতায়াত করেন। বর্ষার দিনে জুতা-স্যাল্ডেল হাতে করে এ রাস্তায় চলতে হয়। খরা মৌসুমে পুরো রাস্তায় জমে থাকে ৫-৬ ইঞ্চি ধুলাবালি। অনেক সময় পড়ে গিয়ে শিশু ও বয়স্ক লোকজন আহত হন এখানে। এলাকাবাসী রাস্তাটির সংস্কার ও পাকাকরণের জন্য পঞ্চক্রোশী ইউনিয়ন পরিষদে অনেক বার আবেদন জানালেও রাস্তাটির কোনো উন্নতি হয়নি। প্রায় ৩০ বছর ধরে স্থানীয় লোকজনকে পোহাতে হচ্ছে অসহনীয় দুর্দশা।
উল্লাপাড়া এইচ টি ইমাম গার্লস স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষার্থী আয়শা খাতুন, জেরিন, প্রার্থনা রানী বিশ্বাস ও সরকারি আকবর আলী কলেজের ছাত্র আতিকুল ইসলাম ও আব্দুল আলীম জানান, নিজেদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ছাড়াও প্রতিদিন উল্লাপাড়া পাটবন্দর ব্রিজ-সলপ রেলওয়ে স্টেশন রাস্তা দিয়ে উল্লাপাড়া সানফ্লাওয়ার স্কুল, উল্লাপাড়া মার্চেন্টস পাইলট সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়, মোমেনা আলী বিজ্ঞান স্কুল, উল্লাপাড়া বিজ্ঞান কলেজ ও কামিল মাদ্রাসায় অন্তত ৫ শতাধিক শিক্ষার্থী চলাচল করে। বর্ষার দিনে শিক্ষার্থীদের চলাচল এ পথে প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়ে। শিক্ষার্থীরা সুষ্ঠু ও নিরাপদ যাতায়াত নিশ্চিত করতে রাস্তাটি অবিলম্বে পাকা করার দাবি জানায় তারা।
এ ব্যাপারে পঞ্চক্রোশী ইউপি চেয়ারম্যান তৌহিদুল ইসলাম ফিরোজের সঙ্গে কথা বললে তিনি জানান, রাস্তাটির অবস্থা খুবই নাজুক। রাস্তাটি সংস্কারের ব্যাপারে তিনি এ অর্থবছরেই উদ্যোগ নেবেন।
এ বিষয়ে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের উল্লাপাড়া অফিস প্রধান উপজেলা প্রকৌশলী আবু সায়েদ জানান, তিনি সম্প্রতি এখানে বদলি হয়ে এসেছেন। উপজেলার এলাকা সম্পর্কে এখনো তার ধারণা হয়নি। তদন্ত করে দ্রুত রাস্তাটি পাকাকরণে প্রকল্প প্রণয়ন করে অনুমোদন পেতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠাবেন তিনি।
এসএন