দু’এক সপ্তাহের মধ্যে ক্ষতিপূরণ পাবে হাদিসুরের পরিবার
নিহত নাবিক হাদিসুর রহমানের পরিবারকে সম্ভব সব ধরনের সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছে বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশন। একই সাথে হাদিসুরের পরিবারকে সর্বোচ্চ সহায়তা দেওয়ারও আশ্বাস দিয়েছে বাংলাদেশ মেরিন অ্যাকাডেমি এবং স্থানীয় সাংসদ।
মঙ্গলবার (১৫ মার্চ) 'বাংলার সমৃদ্ধি' জাহাজে গোলার আঘাতে নিহত নাবিক হাদিসুর রহমানের বাড়িতে উপস্থিত হয়ে দাফন শেষে তারা এ আশ্বাস দেন।
গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে রাশিয়ার সামরিক অভিযান শুরু হওয়ার পর অলভিয়া বন্দরে আটকে পড়ে বাংলাদেশি জাহাজ বাংলার সমৃদ্ধি। সেখানে নোঙর করা অবস্থায় গত ২ মার্চ জাহাজটি রকেট হামলার শিকার হয়। ওই হামলায় প্রাণ হারিয়েছেন জাহাজের থার্ড ইঞ্জিনিয়ার হাদিসুর রহমান।
মৃত্যুর ১২ দিন পর সোমবার (১৪ মার্চ) দুপুর সোয়া ১২টায় তুর্কি এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে হাদিসুরের মরদেহ হযরত শাহজালাল বিমানবন্দরে আসে। রাত পৌনে ১০টায় মরদেহ তার গ্রামের বাড়িতে পৌঁছায়। মরদেহ আসার পর স্বজন, এলাকাবাসীসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের মধ্যে নেমে আসে শোকের ছায়া। স্বজনদের কান্না আর আহাজারিতে ভারি হয়ে ওঠে এলাকার পরিবেশ।
মঙ্গলবার (১৫ মার্চ) সকাল ১০টায় জানাজা নামাজের পর সকাল সাড়ে ১০টায় বাড়ির সামনে মসজিদ সংলগ্ন পারিবারিক কবরস্থানে দাদা-দাদির কবরের পাশে হাদিসুরকে দাফন করা হয়।
সেখানে উপস্থিত বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশনের মহাব্যবস্থাপক আবু সুফিয়ান বলেন, যেকোনো মেরিনার জাহাজে যেতে হলে একটি এগ্রিমেন্ট ফিলাপ করা হয়। এই এগ্রিমেন্টের আওতায় জাহাজে কর্মরত কোনো নাবিক যদি মারা যায় বা ডিজেবল হয় বা ক্ষতিগ্রস্ত হয় তবে তাকে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়। যেহেতু হাদিসুর রহমান মারা গিয়েছেন, সে সর্বোচ্চ ক্ষতিপূরণ পাবে। আমি আপনাদের কথা দিচ্ছি, ইনশাআল্লাহ এক থেকে দুই সপ্তাহের মধ্যে সে ক্ষতিপূরণ পাবে।
তিনি বলেন, আমাদের জাহাজের প্রচুর ক্ষতি হয়েছে। আমরা জাহাজের কথা চিন্তা না করে সেটি পরিত্যক্ত ঘোষণা করে নাবিকদের নিরাপদে ফিরিয়ে এনেছি। আমরা হাদিসুরের পরিাবারের পাশে থাকব। তাদের জন্য সব সহায়তা আমরা অব্যহত রাখব।
হাদিসুর রহমানের শোকসন্তপ্ত পরিবারকে সান্তনা দিতে এসেছিলেন বাংলাদেশ মেরিন অ্যাকাডেমি বরিশালের কমান্ডেন্ট ক্যাপ্টেন আতিকুর রহমান।
তিনি বলেন, যারা বাংলাদেশের জন্য, বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য প্রচেষ্টা করেছিল, তাদের পরিবারের জন্য সরকার সহায়তা করবে, এটা খুবই স্বাভাবিক।
তিনি আরো বলেন, সরকারের আন্তরিকতা ছিল, সে কারণেই মরদেহ নিয়ে আসা সম্ভব হয়েছে। আমি সরকারের আন্তরিকতার কোনো ঘাটতি দেখিনি।
এদিকে বরগুনা-১ আসনের সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট ধীরেন্দ্র দেবনাথ শমভু মঙ্গলবার (১৫ মার্চ) সকালে নিহত হাদিসুরের বাড়িতে গিয়ে স্বজনদেও সান্ত্বনা দেন।
হাদিসুরের দাফন শেষে এমপি শমভু বলেন, আমাদের প্রধানমন্ত্রী ব্যথিত হয়েছেন। আমরা আশা করি, যে মন্ত্রণালয়ের অধীনে হাদিসুর রহমান চাকরি করতেন, অবশ্যই সেই মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে হাদিসুরের পরিবারকে সহযোগিতা করা হবে।
তিনি বলেন, আমরা দলগত ও ব্যক্তিগতভাবে তাদের পরিবারের পাশে থাকব।
এমএসপি