বরিশালে শিক্ষার্থীদের অতিরিক্ত পানি খাইয়ে শাস্তি দেওয়ার অভিযোগ

বরিশাল কালেক্টরেট স্কুল এন্ড কলেজের তৃতীয় শ্রেণীর ৫ শিক্ষার্থী হোমওয়ার্ক না করায় ৫০০ এমএল এর দুই বোতল অতিরিক্ত পানি খাইয়ে শাস্তি দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এতে শ্রেণি কক্ষে বমি করে অসুস্থ হয়ে পড়ার পরেও শিক্ষার্থীদের পেটানো হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন অভিভাবকরা।
অসুস্থ শিক্ষার্থীরা হলেন- আফফান, আয়ান, শারিয়া নবী, রিদম এবং অন্য একজন শিক্ষার্থীর নাম এখনো পাওয়া যায়নি। অভিযুক্ত শিক্ষক বরিশাল কালেক্টরেট স্কুল এন্ড কলেজের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষক মোঃ মামুন।
তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী (শিমুল শাখার) কাজী সারিয়ান নবীর পিতা মাহমুদুন্নবী সুমন ঢাকাপ্রকাশ-কে অভিযোগ করে বলেন, ‘মঙ্গলবার (১১ অক্টোবর) আমার ছোট বাচ্চা শাহরিয়ার স্কুলে যায়। কিন্তু স্কুল থেকে ফেরার সময় অসুস্থ হয়ে বাসায় আসে। পরে জিজ্ঞেস করলে বলে- হোম ওয়ার্ক না করায় অতিরিক্ত পানি খাইয়ে ইংরেজি শিক্ষক মামুন স্যার শাস্তি দিয়েছে। এতে আরো চারজনের শাস্তি হয়েছে। তার মধ্যে একজন শ্রেণি কক্ষে বমি করে অসুস্থ হয়ে পড়েছে। বাকি তিনজন আজ তারা স্কুলে অসুস্থতার কারণে যেতে পারেনি। ছোট বাচ্চাদের সঙ্গে এমন আচরণ অনুচিত বলে মনে করেন এবং যথাযথ শাস্তির দাবি করেন এই অভিভাবক।
শিক্ষার্থীর অভিভাবক পরিচয় গোপন রেখে ঢাকাপ্রকাশ-কে জানান, তার সন্তানকে পানি খাইয়ে শাস্তি দেওয়ার পরে শ্রেণি কক্ষেই বমি করে। এরপর তাকে আরো পেটানো হয়। পেটানোর পরে তাকে ক্লাসের শেষ বেঞ্চে বসার আদেশ দেন ওই শিক্ষক। শিক্ষার্থীর সঙ্গে এমন আচরণে ক্ষুব্ধ এই অভিভাবক। তিনি বরিশাল জেলা প্রশাসক বরাবর অভিযোগ দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলে জানান।
এ প্রসঙ্গে বরিশাল কালেক্টরেট স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ খন্দকার অলিউল ইসলাম ঢাকাপ্রকাশ-কে বলেন, ‘গতকাল এ ঘটনা ঘটার সাথে সাথে আমার কানে যখন আসে তখন শ্রেণি কক্ষে গেয়েছি এবং আমি দেখছি। হ্যাঁ বাচ্চাদের পানি খাইয়েছে। এতে দুটি বাচ্চা বমিও করেছে। এ ঘটনা ঘটার সাথে সাথেই শিক্ষকের বিরুদ্ধে আমরা ব্যবস্থা নিয়েছি। আমি আমার কর্তৃপক্ষ জেলা প্রশাসক তাকে জানিয়েছি। তিনি ওই শিক্ষককে শোকজ করতে বলেছে। আমি শিক্ষককে শোকজ করে দিয়েছি। এ ছাড়া অসুস্থ শিক্ষার্থীদের বাসায় গিয়ে খোঁজ-খবর নেওয়া হচ্ছে।’
এ ব্যাপারে বরিশাল অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) ও সাবেক অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) মো. সোহেল মারুফ ঢাকাপ্রকাশ-কে বলেন, 'শিক্ষার্থীদের সঙ্গে এমন আচরণ করা যাবে না, যাতে শিক্ষার্থীরা শারীরিক এবং মানসিকভাবে লাঞ্ছিত হয়। শিক্ষার্থীদের সঙ্গে এমন কোনো খারাপ আচরণের অভিযোগ পেলে ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে আমরা আইনি ব্যবস্থা নেব। তবে এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক মহোদয়ের সঙ্গে আলাপ করে ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এসআইএইচ
