গুম হচ্ছে একদলীয় দুঃশাসনের নমুনা: মির্জা ফখরুল
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘বাংলাদেশে গুমের আতঙ্ক এখন সর্বত্র পরিব্যাপ্ত। দুঃশাসন থেকে উৎপন্ন হয় গুম ও বিচার বহির্ভূত হত্যার মতো মানবতা বিরোধী হিংস্রতা।’
তিনি বলেন, ‘স্বৈরাচারি সরকারের গড়ে তোলা আইন প্রয়োগকারী সংস্থার পরিচয়ে বিরোধী দলের প্রতিবাদী নেতা-কর্মীদেরকে তুলে নিয়ে যাওয়া এখন নিত্যকার ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এরা বিরোধী দল ও মতের মানুষদের অল্পদিন-দীর্ঘদিন অথবা চিরদিনের জন্যে নিখোঁজ করে দেয়। গুম হচ্ছে একদলীয় দুঃশাসনের নমুনা। রাষ্ট্রের এই অমানবিক আচরণ সংবিধান বিরোধী।’
সোমবার (২৯ আগস্ট) গণমাধ্যমে পাঠানো এব বাণীতে বিএনপি মহাসচিব এসব কথা বলেন।
আন্তর্জাতিক দিবস’ উপলক্ষে মির্জা ফখরুল বলেছেন, ৩০ আগস্ট ‘গুমের শিকার ব্যক্তিবর্গের স্মরণে আন্তর্জাতিক গুম দিবস’ উপলক্ষে আমি হারিয়ে যাওয়া মানুষদের জন্য উদ্বেগ প্রকাশ করছি। তাদের পরিবারের প্রতি আন্তরিক সমবেদনা জ্ঞাপন করছি।’
তিনি বলেন, ‘যেকোনো দেশের নাগরিকের জীবন, নিরাপত্তা নিশ্চিত করা রাষ্ট্রের প্রধানতম দায়িত্ব। বর্তমান শাসকগোষ্ঠী ক্ষমতাসীন হওয়ার পর থেকে গুমকে করে তুলেছে সরকারের প্রধান রাজনৈতিক কর্মসূচি।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘সরকারবিরোধী দল ও ভিন্ন মতের মানুষকে ভয় পাইয়ে দেওয়ার জন্যই তারা এই কর্মসূচি জোরেসোরে বাস্তবায়ন করছে। বিরোধীদল শূন্য একদলীয় শাসন ব্যবস্থা টিকিয়ে রাখার জন্যই গুমকে প্রধান অবলম্বন করা হচ্ছে।’
বাণীতে বলা হয়-নির্দয় গুমের শিকার হয়েছেন সংসদ সদস্য ইলিয়াস আলী, সাইফুল ইসলাম হিরু ও চৌধুরী আলম, সুমন, জাকিরসহ ছয় শতাধিক বিএনপি নেতা-কর্মী।
আরেকটি লোমহর্ষক গুমের শিকার হয়েছেন সাবেক মন্ত্রী ও দলের জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ। তাকে দুই মাস গুম করে রাখার পর পাচার করা হয়েছে পাশের দেশে। এই নতুন ধরনের ঘটনা দেশবাসীকে মহা আতঙ্কে উদ্বিগ্ন করে তুলেছে।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘গুম হওয়া মানুষদের বেদনার্ত পরিবাররা এখনো পথ চেয়ে বসে আছে প্রিয়জনদের ফিরে আসার সম্ভাবনায়। গুম হওয়ার পর গুমের শিকার পরিবারগুলোর উপরও চলতে থাকে সরকারী নির্যাতন। গুমের অব্যাহত পরিস্থিতিতে দেশে সৃষ্টি হয়েছে এক ভয়ঙ্কর নৈরাজ্য।’
এই ধারা বয়ে চললে বাংলাদেশ আদিম অরণ্যের অন্ধকারে ডুবে যাবে। মানুষের স্বাভাবিক জীবন-যাপন সম্পূর্ণভাবে বিপর্যস্ত হয়ে যাবে।’
তিনি বলেন, ‘আসুন, আমরা গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে ঐক্যবদ্ধ হই। কেবলমাত্র একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে প্রকৃত গণতান্ত্রিক সরকার গঠন হলেই গুম, অপহরণ, খুন ও বিচার বহির্ভূত হত্যার মতো মানবতাবিরোধী অপরাধ দূর হবে, জন-জীবনে স্বস্তি ফিরে আসবে। আমি জাতিসংঘের অধীনে সকল গুমের তদন্তের দাবি করছি।’
এমএইচ/এমএমএ/