ভোটে হেরে জামানত হারালেন তৃণমূল বিএনপির সকল প্রার্থী
ছবি: সংগৃহীত
ভোটের আগে নতুন নিবন্ধিত তৃণমূল বিএনপির চেয়ারপারসন ও মহাসচিব একাধিকবার বলেছিলেন, বিএনপিবিহীন নির্বাচনে প্রধান বিরোধী দল হবে তৃণমূল বিএনপি। নির্বাচনে তৃতীয় সর্বোচ্চ প্রার্থীও দিয়েছিল ‘কিংস পার্টি’ হিসেবে পরিচিতি পাওয়া তৃণমূল বিএনপি। কিন্তু দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে একটি আসনেও জয়লাভ করতে পারেননি তৃণমূল বিএনপির কোন নেতা। উল্টো জামানত হারিয়েছেন দলটির শীর্ষ তিন নেতা চেয়ারম্যান শমশের মুবিন চৌধুরী, মহাসচিব তৈমুর আলম খন্দকার ও নির্বাহী সভাপতি অন্তরা সেলিমা হুদাসহ সকল প্রার্থী।
নির্বাচন কমিশনের বিধিমালা অনুযায়ী, কোনো প্রার্থীকে জামানত রক্ষা করতে হলে মোট বৈধ ভোটের (কাস্টিং ভোট) আট ভাগের এক ভাগের কম বা শতকরা হিসেবে সাড়ে বারো শতাংশ ভোটের কম ভোট কোনো প্রার্থী পেলে তার জামানত বাজেয়াপ্ত হয়ে যায়।
সিলেট-৬ আসন থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে জামানত হারিয়েছেন তৃণমূল বিএনপির চেয়ারম্যান শমশের মুবিন চৌধুরী। এই আসনে জয়ী হয়েছেন আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী নুরুল ইসলাম নাহিদ। তিনি পেয়েছেন ৫৭ হাজার ৭৭৮ ভোট। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্র প্রার্থী সরওয়ার হোসেন ঈগল প্রতীকে পেয়েছেন ৩৯ হাজার ৪৮৮টি ভোট। এই আসনে তৃতীয় হয়েছেন তৃণমূল বিএনপির চেয়ারম্যান শমশের মুবিন চৌধুরী, তাঁর ভোট সংখ্যা ১০ হাজার ৯৩৬।
নারায়ণগঞ্জ-১ আসনে জামানত হারিয়েছেন তৃণমূল বিএনপির মহাসচিব তৈমুর আলম খন্দকার। ১২৮টি কেন্দ্র মিলিয়ে তৈমুর আলম খন্দকার তাঁর সোনালী আঁশ প্রতীকে পেয়েছেন ৩ হাজার ১৯০ ভোট। তৈমুর তৃতীয় স্থান লাভ করেছেন। অন্যদিকে বিজয়ী প্রার্থী গোলাম দস্তগীর গাজী পেয়েছেন ১ লাখ ৫৬ হাজার ৪৮৩ ভোট। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্র প্রার্থী শাহজাহান ভুঁইয়া কেটলী প্রতীকে পেয়েছেন ৪৫ হাজার ৭৫ ভোট।
মুন্সিগঞ্জ-১ (সিরাজদিখান-শ্রীনগর) আসনে জামানত হারিয়েছেন তৃণমূল বিএনপির নির্বাহী সভাপতি অন্তরা সেলিমা হুদা। এই আসনে নৌকা প্রতীকে জয়লাভ করেছেন মহিউদ্দিন আহমেদ, তাঁর প্রাপ্ত ভোট ৯৫ হাজার ৮৬০। নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্র প্রার্থী ট্রাক প্রতীকের গোলাম সারোয়ার কবির পেয়েছেন ৬১ হাজার ৫৪০ ভোট। ১৭ হাজার ৯৩৩ ভোট পেয়ে তৃতীয় হয়েছেন আসনটির বর্তমান সংসদ সদস্য ও বিকল্প ধারা বাংলাদেশের যুগ্ম-মহাসচিব কুলা প্রতীকের প্রার্থী মাহি বি. চৌধুরী। আর ৬ হাজার ৩৩৭ ভোট পেয়ে চতুর্থ হয়েছেন অন্তরা সেলিমা হুদা।
তৃণমূল বিএনপি সারা দেশের ১৩৫টি আসনে প্রার্থী দিয়েছিল। দলটির প্রায় সব প্রার্থীর জামানত বাজেয়াপ্ত হওয়ার শঙ্কা রয়েছে। দলটির বেশ কয়েকজন প্রার্থী ১০০ ভোটেরও কম পেয়েছেন। যেমন নাটোর-৪ আসনে দলটির প্রার্থী আব্দুল খালেক সরকার পেয়েছেন ৭২ ভোট।
উল্লেখ্য, মনোনয়নপত্র বিক্রি ও নির্বাচনী প্রচারে তৃণমূল বিএনপির মহাসচিব তৈমুর আলম খন্দকার একাধিকবার বলেন, তৃণমূল বিএনপি প্রধান বিরোধী দল হবে। বিএনপির চেয়ারপারসনের সাবেক উপদেষ্টা (২০২২ সালে নারায়ণগঞ্জ সিটি নির্বাচনের সময় বহিষ্কৃত) তৈমুর আলম খন্দকার নিজে নারায়ণগঞ্জ-১ (রূপগঞ্জ) আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন।