প্রধানমন্ত্রীর কথা জনগণ বুঝতে পারেন না: ফখরুল
প্রধানমন্ত্রীর অনেক কথার জবাব দিতে চাই না, দেইও না। তিনি কখন কী বলেন; জনগণ ঠিকটাক তা বুঝতে পারেন না বলে মন্তব্য করেছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর অনেক কথার জবাব দিতে চাই না, দেই না। তিনি কখন কী বলেন; জনগণ ঠিকটাক তা বুঝতে পারেন না। আমরা মনে করি এটার জবাব দেওয়ার প্রয়োজন নাই। কাজেই সেটা প্রমাণ হবে।’
বৃহস্পতিবার (১২ জানুয়ারি) খালেদা জিয়ার গুলশানের রাজনৈতিক কার্যালয়ে আয়েঅজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন মির্জা ফখরুল।
গতকাল বুধবার ১১ জানুয়ারি দলটির সাংগঠনিক বিভাগীয় গণ-অবস্থান কর্মসূচিতে আওয়ামী লীগ ও পুলিশ প্রশাসনের বাধায় হামলা ও গ্রেপ্তারের চিত্র তুলে ধরতেই এই সংবাদ সম্মেলন করেছে বিএনপি।
মির্জা ফখরুল বলেন, ১০ দফা দাবি আদায় এবং বিদ্যুতের মূল্য কমানোর দাবিতে ১৬ জানুয়ারি দেশব্যাপী সকল মহানগর ও উপজেলায় সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। যদিও আগে বলেছিলাম সকল মহানগর, জেলায় পর্যায়ে সমাবেশ ও মিছিল কর্মসূচি পালন করা হবে।
তিনি বলেন, ‘যেকোনো ফ্যাসিবাদী সরকার যখন জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় তখন ক্ষমতা আকড়ে ধরে রাখতে চায়। আর যখন দেশের জনগণ তাদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ শুরু করে তখন আরো বেশি আক্রমণাত্মক হয়, নির্যাতন নিপীড়ন চালায়। কিন্তু ইতিহাস প্রমাণ করে অন্যায়ভাবে আক্রমণ নির্যাতন চালিয়ে ক্ষমতায় থাকা যায় না। বরং তারা পরাজিত হয় আর জনগণের বিজয় অর্জিত হয়।’
বিএনপি আন্দোলন করতে পারে না এবং পারবেও না আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের দেওয়া এমন বক্তব্যের সমালোচনা করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, আমরা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের কথার কোনো গুরুত্ব দেই না, বিশ্বাস করি না। দেশের জনগণও উনার কথা বিশ্বাস করে না। কাজেই বিএনপি কী পারে আর কী পারে না সেটা দেশের জনগণ অবগত আছে। তারা ( আওয়ামী লীগ নেতারা ) তো আগে বলেছে বিএনপি আন্দোলন করতে পারে নাই পারবেও না। তাহলে এখন আমরা যখন ১০ দফা দাবি আদায়ে নির্বাচনকালীন নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে একটি নির্বাচনের জন্য আন্দোলন করছি, যখন অনির্বাচিত সরকারের পতন দাবিতে আন্দোলন করছি। সেই আন্দোলনে সর্বসাধারণের সমর্থন পাওয়া যাচ্ছে তখন কেন তাহলে হামলা করা হচ্ছে, বাধা, মিথ্যা মামলা দেওয়া হচ্ছে, গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। কারান্তরীণ করে রাখা হচ্ছে। অর্থ একটাই সরকারের পায়ের তলে মাটি নেই। তারা বিএনপিকে নিয়ে এতটাই ভীত যে বিএনপির কোনো কর্মসূচি দেখালেই সেখানে চড়াও হচ্ছে।
আপনার (মির্জা ফখরুল) অবর্তমানে বিএনপির নেতৃত্বদানে কি কিছুটা হতাশায় ছিল এমন প্রশ্নে মির্জা ফখরুল বলেন, বিএনপি আরও বেশি মক্তিশালী এবং উজ্জীবিত হয়েছে। কেননা বিএনপি ঐক্যবদ্ধ আছে।
আওয়ামী লীগের দলীয় কর্মসূচির দিনে বিএনপি কর্মসূচি থেকে সরে আসে অথচ বিএনপির কর্মসূচির দিনে আওয়ামী লীগ পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি ঘোষণা দিয়ে রাজপথে নামে; এটা কি বিএনপির দুর্বলতা? এমন প্রশ্নে বিএনপি মহাসচিব বলেন, রাজনীতির যত শিষ্ঠাচার আছে বিএনপি সেগুলো বিশ্বাস করে এবং পালন করে থাকে।
আমরা (বিএনপি) অন্য রাজনৈতিক দলকে সম্মান জানাই। কিন্তু তারা একইদিনে প্রোগ্রাম দেয় পরবর্তীকালে বিনা কারণে আক্রমণ করে; এটাই দুই দলের মধ্যে পার্থক্য।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল আউয়াল মিন্টু, আহমেদ আজম খান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্ঠা পরিষদের সদস্য আমান উল্লাহ আমান, কেন্দ্রীয় নেতা সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, শ্যামা ওবায়েদ।
এমএইচ/এমএমএ/