বিরোধী জোটের যুগপৎ ‘গণমিছিল’ শুক্রবার
নির্দলীয় সরকারের অধীনে জাতীয় নির্বাচনের দাবি আদায়ে বিএনপিসহ সরকারবিরোধী সমমনা রাজনৈতিক দলগুলো এবার যুগপৎ গণমিছিল কর্মসূচিতে মাঠে নামছে।
শুক্রবার (৩০ ডিসেম্বর) ঢাকায় দিনব্যাপী ভিন্ন সময়ে ভিন্ন স্পটে এ গণমিছিল কর্মসূচি পালনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি। যদিও ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারের পদত্যাগ, দল নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীন জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানসহ ১০ দফা দাবিতে ২৪ ডিসেম্বর শনিবার সারাদেশে গণমিছিল নিয়ে মাঠে নামে বিএনপি।
কর্মসূচিতে একাত্মতা ঘোষণা করেছিল গণতন্ত্র মঞ্চ, ১২ দলীয় জোট, এলডিপি, জামায়াতে ইসলামীসহ অন্যান্য বিরোধী দল। আর ঢাকায় আগামীকাল এই কর্মসূচির মধ্য দিয়ে সরকার হটানোর লক্ষ্যে বিরোধী দলগুলোর যুগপৎ আন্দোলনের সূচনা হচ্ছে।
গত ১০ ডিসেম্বর ঢাকার গোলাপবাগ মাঠে বিভাগীয় গণসমাবেশ থেকে ১০ দফা ঘোষণা করেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন। পূর্বঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী, ২৪ ডিসেম্বর একযোগে সারা দেশে বিভাগ ও জেলা পর্যায়ে গণমিছিল কর্মসূচি পালনের কথা ছিল। কিন্তু সেদিন ঢাকায় আওয়ামী লীগের জাতীয় সম্মেলন থাকায় ঢাকায় এবং সিটি করপোরেশন নির্বাচনের কারণে রংপুর মহানগরের কর্মসূচি পিছিয়ে ৩০ ডিসেম্বর নির্ধারণ করা হয়।
ঢাকায় গণমিছিলে বড় শোডাউনের পরিকল্পনা রয়েছে বিএনপি ও সমমনা রাজনৈতিক দলগুলোর। পাশাপাশি দলগুলোর নেতারা যুগপৎ আন্দোলনের লক্ষ্যে গড়ে উঠতে যাওয়া ঐক্যকেও জানান দিতে চাচ্ছে ৩০ ডিসেম্বর গণমিছিলে অংশ নিয়ে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গণমিছিল মিছিল অংশ নিতে যাওয়া প্রতিটি রাজনৈতিক দল বিএনপির সঙ্গে আলোচনা সাপেক্ষে যুগপৎ কর্মসূচিতে ঐক্যমতের ভিত্তিতে মাঠে নামতে যাচ্ছে। তবে বিএনপির পক্ষ থেকে ঘোষণা দেওয়া হবে পরবর্তী কর্মসূচি। ঢাকাসহ ১০ বিভাগীয় গণসমাবেশে নেতা-কর্মীদের মধ্যে আন্দোলনের ব্যাপারে যে উৎসাহ এবং উত্তাপ সৃষ্টি হয়েছে, সেটি ধরে রাখাই এখন তাদের জন্য চ্যালেঞ্জ। এ কারণে গণমিছিলের পর ধারাবাহিক কর্মসূচি অব্যাহত রাখা হবে।
উল্লেখ্য, ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর একাদশ সংসদ নির্বাচন হয়। দিনটিকে বিএনপি ‘গণতন্ত্র হত্যা দিবস’ হিসেবে পালন করে। আর বাম গণতান্ত্রিক জোটসহ বিভিন্ন দল ‘ভোট ডাকাতির’ প্রতিবাদে দিনটি ‘কালো দিবস’ হিসেবে পালন করে। তবে এবারই প্রথম যুগপৎভাবে দিনটিতে গণমিছিলের কর্মসূচি নিয়ে মাঠে নামছে বিএনপিসহ সরকারবিরোধী বিভিন্ন দল।
কর্মসূচি দেবে বিএনপি
কর্মসূচির মধ্যে জেলা ভিত্তিক লং মার্চ কিংবা রোড মার্চ, এমনকি রাজধানী জুড়ে মানববন্ধন (মানব প্রাচীর) থাকতে পারে। উদ্দেশে দলের সর্বস্তরের নেতাকর্মীদেরকে বৃহত্তর আন্দোলনে যেতে চাঙা রাখা। পরবর্তীকালে দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ সিনিয়র নেতারা কারামুক্ত হলে কঠোর আন্দোলন কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে। বিএনপির দায়িত্বশীল একাধিকবার নেতারা ঢাকাপ্রকাশ-কে এ কথা জানান।
সংশ্লিষ্ট নেতারা বলেন, রাজধানী ঢাকায় যুগপৎ আন্দোলনের প্রথম কর্মসূচি ‘গণমিছিলের’ মধ্য দিয়ে ঐক্যের যাত্রাকে দৃঢ় করতে চায় বিএনপিসহ সরকারবিরোধী বিভিন্ন দল ও জোট। এরপর তারা নতুন কর্মসূচি দেবে। এই মুহুর্তে বৃহত্তর কোনো কর্মসূচি দেওয়া হবে না। যে সকল কর্মসূচি দেওয়া হবে সেটা হবে দলের সর্বস্তরের নেতা-কর্মীদের সরকারবিরোধী চূড়ান্ত আন্দোলনের পথে ঐক্যবদ্ধ রাখতে দেশব্যাপী জনগণকে সঙ্গে নিয়ে জনমত সৃষ্টি করা। কর্মসূচি চূড়ান্ত করতে গতকাল ১২ দলীয় জোটের সঙ্গে বৈঠক করা হয়েছে। বৈঠক করা হয়েছে গণতন্ত্র মঞ্বের নেতাদের সঙ্গেও। তবে ১২ দলীয় জোটের নেতারা জানিয়েছেন, তারা মানববন্ধন, লংমার্চ, বিভাগীয় সমাবেশ করার প্রস্তাব করেছেন।
বিএনপি ও গণতন্ত্র মঞ্চের লিয়াজো কমিটি সূত্রে মতে, একে অপরের সঙ্গে আলোচনায় আগামীদিনে কর্মসূচি হিসেবে টেকনাফ থেকে তেঁতুলিয়া এবং রাজধানীর যাত্রাবাড়ী থেকে গাবতলী পর্যন্ত মানববন্ধন, লংমার্চ, বিভাগীয় সমাবেশ করার মতামত উঠে এসেছে। এ ছাড়া, সকলবন্দী মুক্তি কর্মসূচি, ঘেরাও বা অবস্থান কর্মসূচির মতামতও এসেছে সমমনা অন্যান্য দল থেকে।
ঢাকা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সালাম আজাদ ঢাকাপ্রকাশ-কে বলেন, ৩০ ডিসেম্বর গণমিছিল কর্মসূচি ছিল পূর্বঘোষিত। আওয়ামী লীগের সম্মেলনের জন্য বিএনপি কর্মসূচি পিছিয়ে দিয়ে ছিল। অথচ এই কর্মসূচিকে সামনে রেখে পুলিশ গত কয়েক দিন ধরে বিএনপির নেতা-কর্মীদের গ্রেপ্তার, নির্যাতন অব্যাহত রেখেছে।
গণমিছিলের সিদ্ধান্ত যাদের
গণমিছিলে অংশ নিতে যাওয়া সংশ্লিষ্ট রাজনৈতিক দলগুলোর দায়িত্বশীল নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আগামীকাল শুক্রবার ৩০ ডিসেম্বর গণমিছিল কর্মসূচিতে বিএনপিসহ অংশ নিতে যাচ্ছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী, সাতটি রাজনৈতিক দলের সমন্বয়ে গড়ে উঠা গণতন্ত্র মঞ্চ, ১২ টি রাজনৈতিক দলের সমন্বয়ে গড়ে উঠা ১২ দলীয় জোট , লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি (এলডিপি), ১১ টি রাজনৈতিক দলের সমন্বয়ে গড়ে উঠা ১১ দলীয় জোট এবং গণতান্ত্রিক বাম ঐক্যে। ইতিমধ্যে প্রতিটি রাজনৈতিক দলের নেতারা একে অপরের সঙ্গে আলোচনা করে সরকারবিরোধী যুগপৎভাবে প্রশত কর্মসূচিতে ঢাকার রাজপথে নামতে যাচ্ছে।
এদিকে পূর্ব ঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে ৩০ ডিসেম্বর ঢাকা মহানগরীতে শান্তিপূর্ণ গণমিছিল হবে জানিয়ে তা সফল করার আহ্বান জানিয়েছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর ভারপ্রাপ্ত আমির ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মুজিবুর রহমান।
বৃহস্পতিবার (২৯ ডিসেম্বর) এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, গত ১০ ডিসেম্বর জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান ১০ দফা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে দেশবাসীর উদ্দেশে বক্তব্য প্রদান ও ২৪ ডিসেম্বর দেশব্যাপী গণমিছিলের কর্মসূচি ঘোষণা করেন। ২৪ ডিসেম্বর সরকারি দলের নিজস্ব সম্মেলন থাকায় আমরা সার্বিক বিবেচনায় রাজনীতিতে সহনশীলতা, সহাবস্থানের সংস্কৃতি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে ঢাকা মহানগরীর গণমিছিলের কর্মসূচি ৩০ ডিসেম্বর নির্ধারণ করি।
কোন দলের কোথায় গণমিছিল
শুক্রবার (৩০ ডিসেম্বর) জুমা’র নয়াপল্টন বিএনপি কেন্দ্রীয় অফিসের সামনে জমায়েত হয়ে সিনিয়র নেতাদের বক্তব্য শেষে গণমিছিল শুরু করে মগবাজার মোড়ে শেষ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
বায়তুল মোকাররম চত্বর থেকে জামায়াতের গণমিছিল জামায়াতে ইসলামীও অভিন্ন দাবিতে ৩০ ডিসেম্বর বিকেল সাড়ে ৩টায় রাজধানীর বায়তুল মোকাররম উত্তর গেট থেকে গণমিছিল করবে। বুধবার (২৮ ডিসেম্বর) এক বিবৃতিতে এই কর্মসূচির বিষয়ে ডিএমপির সহযোগিতা কামনা করেছেন দলটির ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা এটিএম মাছুম।
এ ছাড়া, সকাল ১০টার দিকে প্রেস ক্লাবের সামনে গণমিছিল করার ঘোষণা দিয়েছে গণতান্ত্রিক বাম ঐক্যে। গণতন্ত্র মঞ্চ জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে থেকে সকাল ১১টা জমায়েত হয়ে বক্তব্য শেষে গণমিছিল শুরু করে দৈনিক বাংলা মোড় হয়ে ঘুরে প্রেসক্লাবে সামনে শেষ করা হবে। ১২ দলীয় জোট বেলা ৩টা বিজয় নগর পানির ট্যাংক সামনে থেকে শুরু করে কাকরাইল মোড় পর্যন্ত। ১১ দলীয় জোট বেলা ৩টা জাতীয় প্রেস ক্লাব সামনে থেকে শুরু করে মতিঝিল শাপলা চত্বর মোড় হয়ে প্রেস ক্লাবের সামনে এসে শেষ হবে।
লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি (এলডিপি) তাদের অফিস কাওরানবাজার এফডিসি সংলগ্ন সামনে থেকে বেলা ৩টা শুরু করে মালিবাগ মোড় হয়ে তাদের কার্যালয়ের সামনে এসে শেষ হবে। ৩০ ডিসেম্বর ভোটাধিকার হরণ দিবসে ‘কফিন বিক্ষোভ’ করবে গণঅধিকার পরিষদ। শুক্রবার বেলা ৩টায় জামান টাওয়ারের সামনে, কালভার্ট রোডে কফিন মিছিলের আয়োজন করেছে গণঅধিকার পরিষদ।
গণমিছিলকে ঘিরে গ্রেপ্তার ও নতুন মামলার আশঙ্কা করছেন বিএনপির নেতা-কর্মীরা
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ সিনিয়র নেতাদের গ্রেপ্তারের পর নেতা-কর্মীদের মধ্যে আতঙ্ক বেড়েছে। গ্রেপ্তার এড়াতে কেন্দ্রীয় এবং অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের বেশিরভাগ শীর্ষ নেতা রয়েছেন আত্মগোপনে। অনেকেই নিজ বাসায় রাতযাপন করছেন না।
বিএনপির দপ্তর সূত্র জানায়, গত দুই মাসে সাড়ে তিনশোর অধিক মামলায় প্রায় ১৫ হাজার নেতা-কর্মীকে আসামি করা হয়েছে। গত ৭ ডিসেম্বরের পর থেকে এখন পর্যন্ত ১৫ শতাধিক নেতা-কর্মী গ্রেপ্তার হয়েছেন। নিহত হয়েছেন ১৫ জন। ২৭ ডিসেম্বর ২০২২ থেকে সবশেষ তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটি এবং অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের কেন্দ্রীয় কমিটির ৯১ গুরুত্বপূর্ণ নেতার নামে ১ হাজার ৭৫২ মামলা রয়েছে। এর মধ্যে চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার নামে ৩৬, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ৫০, মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের ৯৩, স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেনের ৭, জমিরউদ্দিন সরকার ৪, মাহবুবুর রহমানের ৩, রফিকুল ইসলাম মিয়ার ১৯, মির্জা আব্বাসের ৪৮, গয়েশ্বর চন্দ্র রায় ২৮, আব্দুল মঈন খান ১, নজরুল ইসলাম খান ৬, আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী ৬, সালাউদ্দিন আহমেদ ১২, বেগম সেলিমা রহমান ৪, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু ৫, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমানুল্লাহ আমান ১৩৪, মিজানুর রহমান মিনু ১৮, জয়নুল আবদিন ফারুক ১২, হাবিবুর রহমান হাবিব ১৫, ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল নোমান ৫, মৃত শাহ মোয়াজ্জেম হোসেন ৪, মৃত সাদেক হোসেন খোকা ২৭, শাজাহান ওমর ৭, হাফিজ উদ্দিন আহমেদ ৫, আলতাফ হোসেন চৌধুরী ১১, বরকতউল্লা বুলু ৩৮, মো. শাহজাহান ১৭, মোসাদ্দেক আলী ফালু ৯, আব্দুল আউয়াল মিন্টু ৪, এ জেড এম জাহিদ হোসেন ১৭, শামসুজ্জামান দুদু ১১, আহমেদ আজম খান ৬, জয়নুল আবেদীন ১৮, নিতাই রায়চৌধুরী ৯, শওকত মাহমুদ ৫, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী ৪২, যুগ্ম মহাসচিব মাহবুব উদ্দিন খোকন ১৫, মজিবর রহমান সরোয়ার ১৪, সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল ১২৭, খায়রুল কবির খোকন ২১ , হাবিবুর নবী খান সোহেল ১৮৯, হারুনুর রশিদ ১৪, সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন ১৭, সাংগঠনিক সম্পাদক রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুল ৪৭, সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক নজরুল ইসলাম মঞ্জু ১৯, সাংগঠনিক সম্পাদক আহসান হাবিব দুলু ১৪, সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স ২, বিলকিস জাহান শিরিন ১৭, শ্যামা ওবায়েদ ৫, বিশেষ সম্পাদক আসাদুজ্জামান রিপন ২, প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী ৪৭, আন্তর্জাতিকবিষয়ক সম্পাদক মাসুদ আহমেদ তালুকদার ১১, আইন বিষয়ক সম্পাদক কায়সার কামাল ৪, তথ্যবিষয়ক সম্পাদক আজিজুল বারী হেলাল ১৭, সহ দপ্তর সম্পাদক তাইফুল ইসলাম টিপু ৩৬, ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির সদস্য সচিব আমিনুল হক ৫, কেন্দ্রীয় প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক এবিএম মোশাররফ হোসেন ৯, নির্বাহী কমিটির সদস্য বজলুল করিম চৌধুরী আবেদ ২২, ফজলুর রহমান খোকন ২১, ইকবাল হাসান শ্যামল ১৯, আব্দুস সাত্তার পাটোয়ারী ৭, আকরামুল হাসান মিন্টু ১৪, তরিকুল আলম তেনজিং ৫ , সাইফুল ইসলাম নীরব ১২৬, যুবদল সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিন টুকু ১২৭, সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মোনায়েম মুন্না ১৪, সাংগঠনিক সম্পাদক ইসহাক সরকার ৩২৪, স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি এসএম জিলানী ২৭৭, সাধারণ সম্পাদক রাজিব আহসান ১৪৬ , সাবেক সাধারণ সম্পাদক আব্দুল কাদির ভূঁইয়া জুয়েল ৯৮, সাংগঠনিক সম্পাদক নাজমুল হাসান ৩, শ্রমিক দলের সভাপতি আনোয়ার হোসাইন ৪, কৃষক দলের সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম বাবুল ৪৮, মহিলা দলের সভাপতি আফরোজা আব্বাস ২৪, সাধারণ সম্পাদক সুলতানা রহমান ১৭, ছাত্রদল সভাপতি কাজী রওনকুল ইসলাম শ্রাবণ ১৭, সাধারণ সম্পাদক সাইফ মাহমুদ জুয়েল ১০ মামলার আসামি। এছাড়াও অনেক নেতা রয়েছেন যাদের বিরুদ্ধে এক বা একাধিক মামলা রয়েছে।
বিএনপির দপ্তরের দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স ঢাকাপ্রকাশ-কে বলেন, কয়েক মাসে বিএনপির কর্মসূচিতে ইতিমধ্যে ১৫ জন নেতা-কর্মীকে খুন করা হয়েছে। গত ২৪ ডিসেম্বর শান্তিপূর্ণ গণমিছিল কর্মসূচিতে এলোপাতাড়ি মারধর ও গুলি করে হত্যা করা হয়েছে পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলার ময়দানদিঘি ইউনিয়ন বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক আব্দুর রশিদ আরেফিনকে। এ ছাড়া, বিভিন্ন জেলায় গণমিছিল চলাকালে অন্তত ৬০ জন নেতা-কর্মীকে আটক করা হয়েছে।
এদিকে আগামীকাল শুক্রবার (৩০ ডিসেম্বর) বিএনপির পূর্বঘোষিত গণমিছিলে দলটির সিনিয়র নেতাদের পাশাপাশি বিভিন্ন সংগঠনের জন্য স্থান নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে। দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান নির্দেশনায় এ তালিকা করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন গণমিছিল বাস্তবায়নের প্রধান সমন্বয়কারী ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন। দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতাদের দুপুর আড়াইটার মধ্যে স্ব স্ব স্থানে থেকে সার্বিক সহযোগিতা করার অনুরোধ জানান তিনি।
বিএনপির গণমিছিলের মূল ট্রাকে যারা থাকবেন
গণমিছিলের মূল ট্রাকে থাকবেন স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ড. আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, বেগম সেলিমা রহমান, আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান, ব্যারিস্টার শাহজাহান ওমর, মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ, মুক্তিযোদ্ধা দলের সভাপতি ইশতিয়াক আজিজ উলফাত।
সার্বিক সহযোগিতা ও সমন্বয়ের দায়িত্বে থাকবেন ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন, আমান উল্লাহ আমান, আব্দুস সালাম আজাদ, সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, বেনজীর আহমেদ টিটো, তাইফুল ইসলাম টিপু, আমিরুল ইসলাম খান আলিম, নবী উল্লাহ নবী, রফিকুল আলম মজনু, আমিনুল হক, হাবিবুর রশীদ হাবিব, বেলাল আহমেদ, আমিরুজ্জামান খান শিমুল, হায়দার আলী লেলিন, খান রবিউল ইসলাম রবি, অ্যাডভোকেট শামসুজ্জামান সুরুজ, অ্যাডভোকেট নিপুন রায় চৌধুরী, আবদুস সাত্তার পাটোয়ারী এবং অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের সভাপতি-আহ্বায়ক, সাধারণ সম্পাদক-সদস্য সচিব।
নাইটিঙ্গেল মোড়ে থাকবে মহিলা দল
মহিলা দলের সঙ্গে নাইটিঙ্গেল মোড়ে থাকবেন বিলকিস জাহান শিরিন, শিরিন সুলতানা, শামা ওবায়েদ, সৈয়দা আসিফা আশরাফি পাপিয়া, রেহেনা আক্তার রানু, রাশেদা বেগম হীরা, ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা, নেওয়াজ হালিমা আরলী, শাম্মি আক্তার, নিলুফার চৌধুরী মনি, মিসেস রাবেয়া সিরাজ, মিসেস জাহানারা বেগম, অর্পনা রায় দাসসহ সাবেক মহিলা সংসদ সদস্যরা। তাদের সমন্বয় করবেন আহমেদ আজম খান এবং হাবিবুর রশিদ হাবিব।
এ ছাড়া নাইটিঙ্গেল মোড়ে আরও থাকবেন ঢাকা মহানগর (উত্তর) বিএনপির আহ্বায়ক আমান উল্লাহ আমান, এয়ার ভাইস মার্শাল (অব.) আলতাফ হোসেন চৌধুরী, মিজানুর রহমান মিনু, জয়নাল আবেদীন ফারুক, গোলাম মোহাম্মদ সিরাজ, আমিনুল হক, নাজিম উদ্দিন আলম, আনিসুর রহমান তালুকদার খোকন, তাবিথ আউয়াল, রফিক সিকদার, কাজী রফিক, বজলুল বাসিত আঞ্জু। সমন্বয় করবেন- আমিনুল হক, হায়দার আলী লেলিন।
ঢাকা ব্যাংকের সামনে থাকবে ছাত্রদল
এখানে থাকবেন সাবেক ছাত্রনেতারাসহ ড. আসাদুজ্জামান রিপন, আবুল খায়ের ভূঁইয়া, আজিজুল বারী হেলাল, আমিরুল ইসলাম খান আলিম, আমিরুজ্জামান খান শিমুল, আকরামুল হাসান, আবু সাঈদ, বালুল করিম চৌধুরী আবেদ, ফজলুর রহমান খোকন। সমন্বয় করবেন ইকবাল হোসেন শ্যামল।
আনন্দ ভবনের সামনে থাকবে কৃষকদল
আনন্দ ভবনের সামনে কৃষকদলের নেতৃত্বে থাকবেন শামসুজ্জামান দুদু, হাবিবুর রহমান হাবিব, জয়ন্ত কুমার কুন্ডু, ওয়ারেস আলী মামুন, একরামুল হক বিপ্লব, হায়দার আলী লেলিন, আব্দুল মতিন, ওবায়দুল হক নাসির, শেখ শামীম, দুলাল হোসেন, মোশাররফ হোসেন। আর সমন্বয় করবেন দুলাল হোসেন।
হকস বে’র সামনে স্বেচ্ছাসেবক দল
হকস বে’র সামনে থাকবে স্বেচ্ছাসেবক দল। তাদের নেতৃত্ব দেবেন হাবিব উন-নবী খান সোহেল, মীর শরফত আলী সপু, মোস্তাফিজুর রহমান, আব্দুল কাদির ভূঁইয়া জুয়েল। সমন্বয় করবেন ওমর ফারুক শাফিন।
ভিক্টোরি হোটেলের সামনে পেশাজীবী ও মুক্তিযোদ্ধা দল
পেশাজীবী ও মুক্তিযোদ্ধা দল নেতৃত্বে ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন, অ্যাডভোকেট জয়নাল আবেদীন, এ জে মোহাম্মদ আলী, ফজলুর রহমান, ডা. ফরহাদ হালিম ডোনার, ডা. আবদুল কুদ্দুস, অধ্যাপক সুকমল বড়ুয়া, কায়সার কামাল, মাসুদ আহমেদ তালুকদার, ডা. রফিকুল ইসলাম, অধ্যক্ষ সেলিম ভূঁইয়া, জয়নাল আবেদীন মেজবা, কাদের গনি চৌধুরী, অধ্যাপক ড. মোর্শেদ হাসান খান থাকবেন। সমন্বয় করবেন রবিউল ইসলাম রবি।
নয়াপল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে থাকবেন আফরোজা খান রীতা, মনিরুল হক চৌধুরী। সমন্বয় করবেন-আব্দুস সালাম আজাদ, বেনজীর আহমেদ।
কড়াই গোস্তের সামনে থাকবে যুবদল
যুবদলের নেতৃত্বে থাকবেন বরকত উল্লাহ বুলু, সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, সাইফুল আলম নিরব, মীর নেওয়াজ আলী। সমন্বয় করবেন বেলাল আহমেদ।
চায়না মার্কেটের সামনে থাকবে ঢাকা জেলা আব্দুল আউয়াল মিন্টু, বেনজির আহমেদ টিটো, খন্দকার মাশুকুর রহমান, ডা. দেওয়ান সালাউদ্দিন। সমন্বয় করবেন মশিউর রহমান বিপ্লব।
জোনাকী হলের সামনে শ্রমিক দল
শ্রমিক দলের নেতৃত্বে থাকবেন মোহাম্মদ শাহজাহান, অনিন্দ্য ইসলাম অমিত, শরিফুল আলম, মাহাবুবুল হক নান্নু, হুমায়ুন কবির খান, ফিরোজ আহমেদ মামুন মোল্লা। সমন্বয় করবেন সালাউদ্দিন ভূঁইয়া শিশির।
পল্টন থানার উল্টো দিকে মৎস্যজীবী দল, তাঁতী দল এবং জাসাস
পল্টন থানার উল্টো দিকে থাকবে মৎস্যজীবী দল, তাঁতী দল এবং জাসাস। তাদের নেতৃত্বে আবুল কালাম আজাদ সিদ্দিকী, আব্দুল বারী ড্যানী, আশরাফ উদ্দিন আহমেদ উজ্জল, আব্দুল মালেক, সালাউদ্দিন ভূঁইয়া শিশির, মশিউর রহমান বিপ্লব, দেবাশীষ রায় মধু। সমন্বয় করবেন আমিরুজ্জামান খান শিমুল।
ফকিরাপুল দৈনিক বাংলা সড়কে ঢাকা মহানগর (দক্ষিণ)
নেতৃত্বে থাকবেন নিতাই রায় চৌধুরী, মজিবর রহমান সরোয়ার, হারুন অর রশীদ, সালাউদ্দিন আহমেদ, নাসির উদ্দিন অসীম, নবী উল্লাহ নবী, রফিকুল আলম মজনু, কাজী আবুল বাশার, কাজী রওনাকুল ইসলাম টিপু, ইঞ্জিনিয়ার ইসরাক হোসেন, আ ক ম মোজাম্মেল হক। সমন্বয় করবেন কাজী রওনাকুল ইসলাম টিপু।
এমএইচ/এমএমএ/