সোমবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৫ | ১৫ বৈশাখ ১৪৩২
Dhaka Prokash

ঘনিয়ে আসা অন্ধকার এবং আলোর আশা

স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তীর বছরে অনেকগুলো সুচকে বাংলাদেশের উত্তরণ নিয়ে সরকার এবং নাগরিক সমাজ আনন্দিত। জাতিসংঘের কারিগরি পরিষদে স্বীকৃতি পাওয়ার পর রাজনৈতিক পরিষদেও সিদ্ধান্ত হয়েছে যে বাংলাদেশকে স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে উত্তরণ ঘটানো হবে। দেশের জিডিপি বেড়ে এখন ৩৩৮ বিলিয়ন ডলারের বেশি, মাথাপিছু আয় ২৫৫৪ ডলার, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ৪৬ বিলিয়ন ডলার ছুঁয়েছিল এ সবই অর্থনৈতিক সক্ষমতার পরিচয় বহন করে। মুদ্রার এই পিঠ দেখে আনন্দিত হওয়াই স্বাভাবিক। কিন্তু মুদ্রার শুধু একটা পিঠই তো থাকে না। অপর পিঠ দেখলে আবার মনটা বিষণ্ণ হয়ে উঠে। কারণ শ্রমিকের মজুরী বিশ্বের যে কোন দেশের তুলনায় কম, খাদ্যের দাম পার্শ্ববর্তী সমস্ত দেশের তুলনায় বেশি, ধনীর সংখ্যা বৃদ্ধিতে বিশ্বে সবচেয়ে গতিশীল বাংলাদেশ। আর গণতান্ত্রিক অধিকার ! সে প্রশ্নে দেশ পিছিয়ে যাচ্ছে প্রতিদিন। 

রাজপথ এখন নানা ধরণের প্রতিবাদ মিছিল, অবস্থান কর্মসূচি এবং বিক্ষোভ প্রকাশের ক্ষেত্র। শ্রমিকরা নেমেছেন তাদের চাকুরী আর মজুরির দাবীতে, ছাত্ররা নেমেছে বাসে হাফ ভাড়া নিতে হবে এই দাবীতে আর বামপন্থী রাজনৈতিক দল সমুহ জনজীবনের নানা সমস্যা নিয়ে প্রায় প্রতিদিন তাদের কর্মসূচী পালন করছেন। 

রাজনৈতিক দল রাজপথে তাদের দাবী দাওয়া জানাবেন এটাই স্বতঃসিদ্ধ ব্যাপার। এবং বাংলাদেশে বিশেষভাবে এটা বিরোধী দলের জন্য যেন অবধারিত। কারণ তাদের কথা বলার, দাবীর কথা জনগণকে জানানোর, ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দলকে চাপ দেয়ার আর তো কোন পথ, পদ্ধতি এবং স্থান তো এখন আর নেই। স্বাধীনতার আগে ঢাকায় পল্টন ময়দান ছিল, রেসকোর্স ময়দান ছিল রাজনৈতিক দল সেখানে সমাবেশ, জনসভা করে তাদের কথা বলতেন। কিন্তু তখনো বিক্ষোভ প্রকাশ করতেন রাস্তায় বা রাজপথে। বহুল প্রচলিত শ্লোগান ছিল গোল টেবিল না রাজপথ- রাজপথ রাজপথ, দালালী না রাজপথ – রাজপথ, রাজপথ। অর্থাৎ আন্দোলন হতো প্রকাশ্যে আর দালালী হতো গোপনে বা টেবিলে। শ্লোগানের মধ্য দিয়ে ফুটে উঠতো রাজনৈতিক আকাংখা আর জনসভায়, মিছিলে প্রকাশিত হতো প্রতিজ্ঞা। আন্দোলনকারীরা রাজপথের মিছিলে দেখাতেন তাদের শক্তি আর ক্ষমতাসীনরা দমন নিপীড়ন চালিয়ে তাদের ক্ষমতার দম্ভ এবং শক্তির প্রকাশ ঘটাতেন। স্বাধীনতার পর থেকে ক্রমাগত জনসমাবেশ করার জায়গাগুলো বন্ধ করে দেয়া এবং সংকুচিত করে ফেলা হয়েছে। তবুও আন্দোলন করতে গেলে রাজপথই এখনও প্রধান ভরসার জায়গা।

দ্রব্যমুল্য ক্রমাগত বাড়ছে। সাধারণ মানুষ ব্যবহার করে এমন কোন জিনিস নাই যা চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে না। মূল্যবৃদ্ধির তালিকায় চাল, চিনি, তেল সহ খাদ্যপন্য তো আছেই, রান্নার গ্যাস, বিদ্যুৎ, পানি সব কিছুর দাম বাড়াতে তেমন কোন অজুহাত এখন প্রয়োজন হয় না। ব্যবসায়ীদের আবদার এবং সরকারের অনুমোদন একটা যুগলবন্দীর মত পরিবেশ তৈরি করেছে। পরস্পর পরস্পরকে সহায়তা করে সরকার ও ব্যবসায়ীদের এই যৌথ সংগীতের মূর্ছনায় সাধারণ মানুষের মূর্ছা যাওয়ার উপক্রম। এর সাথে আছে ক্ষমতাসীন দলের উচ্চ পর্যায়ের নেতা মন্ত্রিদের উপদেশ ও অপমানসূচক কথা। বিদেশীরা চাল গম কম খায়, আমরা ভাত বেশি খাই তাই খাদ্য ঘাটতি। অতএব ভাত কম খাওয়ার পরামর্শ দেয়ার সহজ পথ বেছে নিয়েছেন তারা। এর পর আবার বলা হয়েছে জ্বালানী তেলের দাম কম থাকলে সব তেল ভারতে পাচার হয়ে যাবে কিন্তু সীমান্ত রক্ষায় দায়িত্ব যাদের তাদের সতর্ক না করে শাস্তি দিলেন সাধারণ মানুষকে। কৃষকরা কম দামে তেল পেলে তা কৃষি উৎপাদনে সহায়ক হতো কি না সে বিষয় কি আলোচনার অপেক্ষা রাখে? কৃষি মন্ত্রণালয় বলেছে ডিজেলের দাম বৃদ্ধির ফলে বোরো মৌসুমে কৃষিতে ৭৫০ কোটি টাকার বেশি বাড়তি খরচ করতে হবে ধান চাষীদেরকে। দেশের ১৬ লাখ সেচ পাম্পের ৭০ শতাংশের বেশি চলে ডিজেল দিয়ে। এতে প্রতি বিঘায় সেচ খরচ বাড়বে ৩০০ টাকার বেশি। আমন ধান কাটা শেষ। বোরো মৌসুম শুরু হবে। এই বোরো মৌসুমে দেশের ধানের ৬০ শতাংশের বেশি উৎপাদন হয়। ফলে সরকার তেলের দাম বাড়ানোর প্রভাব কৃষকের খেতে আর জনগণের পাতে সরাসরি পড়বে।  

ডিজেলের মূল্যবৃদ্ধির ফলে বাড়িয়ে দেয়া হলো পরিবহনের ভাড়া। সরকার তেলের দাম বাড়ালেন ২৩ শতাংশ। পরিবহনের ব্যয়ের ক্ষেত্রে জ্বালানী তেল একমাত্র উপাদান নয়। বাস বা ট্রাকের দাম, পরিচালনা খরচ, ড্রাইভার হেল্পারের বেতন, ব্যাংক ঋণ পরিশোধ, অবচয়, অদৃশ্য খরচ( বি আর টি এর ঘুষ, পুলিশ খরচ, চাঁদা ইত্যাদি), কত সিট খালি থাকে ইত্যাদি সহ ১৬ ধরনের বিষয় যুক্ত করে ভাড়া নির্ধারণ করা হয়ে থাকে বলে বলা হয়। সাধারণত মোট খরচের ২৫ থেকে ৩০ শতাংশ হয়ে থাকে জ্বালানী তেল বাবদ। এক হিসেবে দেখানো হয়েছে জ্বালানী তেলের মুল্য বৃদ্ধির কারণে বাসের ভাড়া ৬ থেকে ৭ শতাংশ বাড়তে পারে। কিন্তু ভাড়া বাড়ানো হয়েছে ২৭ শতাংশ। ঢাকা, চট্টগ্রাম শহরে প্রতি কিলোমিটারে ৪৫ পয়সা বাড়িয়ে কিলোমিটার প্রতি ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে ২ টাকা ৫ পয়সা। কিন্তু ভাড়া তো আগেও বেশি নেয়া হতো এখন তা আরও বাড়িয়ে দেয়া হয়েছে। যেমন প্রেস ক্লাব থেকে সাইন্স ল্যাবরেটরি পর্যন্ত দূরত্ব ৪ কিলোমিটারের বেশি নয়। বর্ধিত ভাড়া অনুযায়ী এই ভাড়া হওয়ার কথা ৮ টাকা ২০ পয়সা। কিন্তু আগে নেয়া হতো ১০ টাকা এখন তা নেয়া হচ্ছে ১৫ টাকা। সাধারণ মানুষ বাসে প্রতিদিন ঝগড়া করছেন বাড়তি ভাড়া নিয়ে। বাসের কন্ডাকটর বলছেন মালিক প্রতি ট্রিপে তার জমা বাড়িয়েছেন ১৫০০ টাকা। বেশি ভাড়া আদায় না করলে তারা এটা দেবেন কোথা থেকে? ঝগড়া কখনো রূপ নিচ্ছে মারামারিতে। যাত্রী আর পরিবহণ শ্রমিক মারামারি করছেন, মুনাফা যাচ্ছে পরিবহণ মালিকের পকেটে।  

রাজপথে নেমেছেন গার্মেন্টস শ্রমিকেরা তাদের বকেয়া বেতন ও চাকুরীর দাবীতে। প্রায় প্রতিদিন বিক্ষোভ করছেন তারা। পুলিশ এবং স্থানীয় সরকার দলীয় সন্ত্রাসীদের আক্রমণে আহত হচ্ছেন তারা। যে মজুরী তারা পান তাতে সংসার চলে না এরপর যদি বেতন বকেয়া থাকে, চাকুরী থেকে ছাঁটাই হয়ে যান তাহলে বিক্ষোভে ফেটে পড়া ছাড়া আর কি উপায় আছে তাদের?      

সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার চিকিৎসার জন্য বিদেশে যাওয়ার অনুমতি পেতে আন্দোলন করে যাচ্ছেন বিএনপির নেতা কর্মীরা। চিকিৎসা ব্যবস্থার বেহাল দশা তো আমরা সবাই জানি, এর দায় যারা ক্ষমতায় ছিলেন তারা এড়াতে পারেন না। সাধারণ মানুষের কোন উপায় নেই, যাদের উপায় আছে তারা ছুটে যান বিদেশে চিকিৎসা করাতে। এক্ষেত্রে অসুস্থতা যেমন গুরুত্বপূর্ণ তার চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক সামর্থ্য এবং সরকারের সাথে সম্পর্ক। চিকিৎসার অধিকার এখন অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক অধিকারে পরিণত হয়েছে।  

নির্বাচনকে লাভ লোভ এবং ভয়ের বিষয়ে পরিণত করা হয়েছে। সংসদ থেকে ইউনিয়ন পরিষদ যে কোন পর্যায়ে নির্বাচন এখন গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ এবং গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান ধ্বংসের চর্চা বলে বিবেচিত হচ্ছে। মনোনয়ন পাওয়া, নির্বাচন করা এবং বিজয়ী হয়ে ক্ষমতা দেখানোর সাথে অর্থ, দুর্নীতি, দমনপীড়ন যুক্ত হয়ে আছে। নির্বাচিত বলে ঘোষিত হওয়ার পর সম্পদ বৃদ্ধির হার এবং পরিমাণ দেখলে বিস্মিত হওয়া ছাড়া উপায় থাকে না। 

ক্ষমতায় যারা থাকেন তারা ক্রমাগত বলতে থাকেন তারা যা করছেন সেটাই দেশের জন্য ভালো।  রাষ্ট্রীয় সমস্ত মাধ্যম তা প্রচার যন্ত্র কিংবা প্রশাসন সেগুলোর সর্বোত্তম ব্যবহার করে সেটা তারা প্রচার করতে থাকেন। এর দুর্বলতা দেখিয়ে দিলে, কিংবা ভুল ধরিয়ে দিলে তারা ভীষণ খেপে উঠেন। আন্দোলনের কথা শুনলে বলতে থাকেন বহুল প্রচলিত সেই তত্ত্ব যে, সরকারের ভাবমূর্তি নষ্ট করতে বিরোধীরা ষড়যন্ত্র করছেন। রাজপথে না কি নৈরাজ্য সৃষ্টি করা হচ্ছে। আসলে নৈরাজ্য সৃষ্টি হয়েছে অর্থনৈতিক ব্যবস্থায়। ক্ষমতার ছায়ায় থেকে যে যেভাবে পারে লুটপাট করছে। রাজপথে হচ্ছে প্রতিবাদ। কারণ প্রতিবাদের আর তো কোন জায়গা নেই, প্রতিবাদের আর তো কোন ভাষা নেই। আর প্রতিবাদের মধ্যেই তো বেঁচে থাকে গণতান্ত্রিক সংস্কৃতি। উন্নয়নের আঘাতে গণতন্ত্রের আলো যেন নিভে না যায়, অন্ধকারের রাজত্ব যেন দীর্ঘস্থায়ী না হয় সে কারনেই প্রতিবাদটা জরুরী। ঘনায়মান অন্ধকারে এটাই তো আলোর আশা।

লেখক: সদস্য, কেন্দ্রীয় কমিটি, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ)

Header Ad
Header Ad

মে মাসে শেখ হাসিনার বিচার শুরু হচ্ছে: প্রধান উপদেষ্টা

ছবি: সংগৃহীত

জুলাই-আগস্ট গণঅভুত্থানে গণহত্যার মামলায় আগামী মাসের শুরুতেই সাবেক প্রধানমন্ত্রীর শেখ হাসিনার বিচার শুরু হচ্ছে-আল জাজিরাকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে এসব কথা জানিয়েছেন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

কাতারভিত্তিক সম্প্রচারমাধ্যম আলজাজিরার বৈশ্বিক নেতাদের সাক্ষাৎকারমূলক অনুষ্ঠান ‘টক টু আল–জাজিরা’য় এ কথা বলেন তিনি।
আগামী ডিসেম্বর থেকে আগামী বছর জুনের মধ্যেই নির্বাচন হবে বলে ফের জানিয়েছেন তিনি

এ সময় তিনি আরও বলেন, শুধু মানবিক সহায়তা নয়, নিরাপদ প্রত্যাবাসনই রোহিঙ্গা সংকটের স্থায়ী সমাধান।

বাংলাদেশে একটি সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ এবং উদাহরণ সৃষ্টিকারী নির্বাচন উপহার দেয়ার দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, নির্বাচনের আগে সংস্কারের তালিকা ছোট হলে ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন এবং তালিকা বড় হলে আগামী বছরের জুনের মধ্যে নির্বাচন হবে।

অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে জনপ্রত্যাশা এখনও তুঙ্গে রয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, জনগণ মনে করে অন্তর্বর্তী সরকার এখনও তাদের জন্য ভালো সমাধান।

আলজাজিরার ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা দীর্ঘ সাক্ষাৎকারে জুলাই বিপ্লব, সাবেক স্বৈরাচার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারতে পালিয়ে যাওয়া, সাবেক সরকারের দুর্নীতিসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কথা বলেন তিনি।

আলজাজিরার উপস্থাপক ড. ইউনূসকে প্রশ্ন করেন, এটা কি বলা ঠিক যে, শেখ হাসিনার পতনের পর অন্তর্বর্তী সরকারের ‘মধুচন্দ্রিমা’ এখন সম্ভবত শেষ হয়েছে? কিছু বেশ বড় চ্যালেঞ্জ রয়েছে, যেগুলোর সুনির্দিষ্ট জবাব আপনাকে দিতে হবে। কারণ, পুরোনো ক্ষমতাধরদের প্রভাব রয়েছে, অনেকে রাজনৈতিক শূন্যতাকে কাজে লাগাতে চাইতে পারে।

জবাবে ড. ইউনূস বলেন, মধুচন্দ্রিমা শেষ হোক বা না হোক, বাংলাদেশের মানুষ মনে করে অন্তর্বর্তী সরকার এখনও তাদের জন্য ভালো সমাধান। তারা অন্তর্বর্তী সরকারকে সরাসরি চলে যেতে এখনও বলছে না। বরং একটা ভালো নির্বাচন উপহার দিতে সরকারই নির্বাচন আয়োজনের দিকে যাচ্ছে। জনগণ তাড়াতাড়ি ক্ষমতা হস্তান্তরের কথা এখনও বলছে না।

লাখ লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থীর সমাধান কি বাংলাদেশ একা করতে পারবে?

জবাবে ড. ইউনূস বলেন, আমরা আন্তর্জাতিক সংস্থা ও জাতিসংঘের সঙ্গে রোহিঙ্গা সমস্যা নিয়ে কাজ করছি। তারা যাতে নিরাপদে বাড়ি ফিরে যেতে পারে, তা নিশ্চিত করার চেষ্টা করছি। বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মধ্যে কিছু বোঝাপড়া যাতে তৈরি হয়।

নির্বাচনে আওয়ামী লীগকে অংশগ্রহণের অনুমতি দেয়া হবে কিনা– এমন প্রশ্নের জবাবে ড. ইউনূস বলেন,
এ প্রশ্নের জবাবের একটি অংশ আওয়ামী লীগকেই নির্ধারণ করতে হবে। দলটি আগে নিজেই সিদ্ধান্ত নেবে–তারা নির্বাচনে যোগ দেবে কিনা। তারা এখনও কিছু ঘোষণা করেনি। তা ছাড়া নির্বাচনের সময় নির্বাচন কমিশন কী প্রতিক্রিয়া দেয়, সেটাসহ নানা বিষয় সামনে আসতে পারে।

তাহলে আওয়ামী লীগের নির্বাচনে অংশ নেয়ার বিষয়টি নির্বাচন কমিশনের ওপর ছেড়ে দিচ্ছেন কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিষয়টি তা নয়। অন্যান্য রাজনৈতিক দল আছে, যারা বলতে পারে যে, এ আইনের অধীনে আওয়ামী লীগ নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে না।

সাক্ষাৎকারে থাইল্যান্ডের ব্যাংককে ড. ইউনূসের সঙ্গে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বৈঠকের প্রসঙ্গ ওঠে। ড. ইউনূস জানান,
তিনি বিমসটেক সম্মেলনের ফাঁকে মোদির সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন। সেখানে শেখ হাসিনাকে ‘চুপ’ রাখতে বলেছিলেন তিনি। জবাবে মোদি বলেছিলেন, এটা তার জন্য সম্ভব নয়। শেখ হাসিনা সামাজিক মাধ্যম ব্যবহার করে কিছু বললে, সেটি তিনি নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেন না।

যুক্তরাষ্ট্র, ভারত, পাকিস্তান ও চীনের সঙ্গে সম্পর্ক নিয়ে ড. ইউনূস বলেন, একসঙ্গে কাজ করার নীতি নিয়ে এগিয়ে যেতে চাই। আমরা একসঙ্গেই পারস্পরিক সহযোগিতামূলক পদক্ষেপ নিতে চাই।

Header Ad
Header Ad

ঢাকাসহ সারাদেশে বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে

ছবি: সংগৃহীত

রাজধানী ঢাকা ও এর পার্শ্ববর্তী এলাকায় অস্থায়ীভাবে বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। এর পাশাপাশি কমতে পারে দিনের তাপমাত্রা। এছাড়া আকাশ আংশিক মেঘলা থেকে মেঘলা থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। এ সময় দক্ষিণ অথবা দক্ষিণ-পূর্ব দিক থেকে ঘণ্টায় ১০-১৫ কিলোমিটার বেগে বাতাস বইতে পারে।

সোমবার (২৮ এপ্রিল) রাজধানীসহ পার্শ্ববর্তী এলাকার সকাল ৭টা থেকে পরবর্তী ৬ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে এ তথ্য জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।

সোমবার সকাল ৬টায় ঢাকার তাপমাত্রা ছিল ২৮ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ৮২ শতাংশ।

সারাদেশের সকাল ৬ টা থেকে পরবর্তী ১২০ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, রংপুর, রাজশাহী, ঢাকা, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ বিদ্যুৎ চমকানো অথবা বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। একই সঙ্গে সারাদেশে দিনের তাপামাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে এবং রাতের তাপমাত্রা সামান্য কমতে পারে।

আরও বলা হয়েছে, লঘুচাপের বর্ধিতাংশ বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল হয়ে পশ্চিমবঙ্গ থেকে উত্তর বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে।

রোববার (২৭ এপ্রিল) সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৭ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এছাড়া গত ২৪ ঘণ্টায় রংপুরের ডিমলাতে সর্বোচ্চ ৮৬ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়।

Header Ad
Header Ad

সবাই মিলে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করাই লক্ষ্য: আলী রীয়াজ

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ সভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ। ছবি: সংগৃহীত

ঐকমত্য কমিশনের লক্ষ্য হচ্ছে জাতীয় সনদ তৈরি করা। সবাই মিলে একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করার অংশ হিসেবে আলোচনা চলছে বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ সভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ।

সোমবার (২৮ এপ্রিল) জাতীয় সংসদের এলডি হলে গণঅধিকার পরিষদের সঙ্গে সংলাপের সূচনা বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।

আলী রীয়াজ বলেন, চর্চা, ঐক্যে এবং সম্মিলিতভাবে জাতীয় সনদ তৈরি করতে সবার প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখতে হবে। ঐকমত্য কমিশনের লক্ষ্য হচ্ছে জাতীয় সনদ তৈরি করা। যাতে করে ক্ষমতার বিন্যাসে পরিবর্তন ঘটে। বাংলাদেশ যাতে সমস্ত সম্ভাবনা নিয়ে জাগ্রত হতে পারে। গত ৫৩ বছর মানুষ যে গণতান্ত্রিক আকাঙ্ক্ষাকে ধারণ করছে, সেই আকাঙ্ক্ষাকে বাস্তবায়ন করা যায়, পথ উন্মুক্ত করা যায়, যেন সবাই মিলে একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করতে পারি। তারাই অংশ হিসেবে এ আলোচনা।

তিনি আরও বলেন, শুধুমাত্র সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন, মতামত ও সুপারিশই যথেষ্ট নয়। সব রাজনৈতিক ও গণতান্ত্রিক শক্তিগুলোর জনমানুষের ঐক্যের মধ্য দিয়ে আমরা বাংলাদেশকে নতুন বাংলাদেশের দিকে অগ্রসর করতে পারব। কাজে কি লিখছি তা নয়, চর্চার মধ্য দিয়ে, অঙ্গীকারের মধ্য দিয়ে, প্রতিশ্রুতির মধ্য দিয়ে আমাদের এ কাজে অগ্রসর হতে হবে। আমরা সেই প্রচেষ্টায় আছি।

ঐকমত্য কমিশনের সহ সভাপতি বলেন, বাংলাদেশের মানুষ তরুণদের নেতৃত্বে প্রাণ দিয়ে যে সম্ভাবনা তৈরি করেছে, সবাই মিলে সে সম্ভাবনাকে বাস্তবায়নের পথে অগ্রসর হতে হবে। সেই পথ ও প্রচেষ্টায় সবাই একত্রিত আছি, থাকব। একত্রিত থাকার তাগিদ জারি রাখব।

রাষ্ট্র সংস্কারের বিষয়ে স্প্রেডশিট আকারে ৩৯টি দলের কাছে মতামত চেয়েছিল জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। এর মধ্যে ৩৫টি দল মতামত জমা দিয়েছে বলে জানান আলী রীয়াজ। রোববার পর্যন্ত কমিশন ১৯টি দলের সঙ্গে সংলাপ করেছে। ২০তম দল হিসেবে গণঅধিকার পরিষদের সঙ্গে কমিশন সংলাপ করছে বলে জানান আলী রীয়াজ।

২০১৮ সালে বর্তমান গণঅধিকার পরিষদের নেতাদের নেতৃত্বে অনুষ্ঠিত কোটা সংস্কার আন্দোলনের কথা তুলে ধরে আলী রীয়াজ বলেন, তাদের অকুতোভয় সংগ্রামের মধ্য দিয়ে ফ্যাসিবাদ বিরোধী আন্দোলনের নতুন পর্যায় সূচনা হয়েছিল। যার ধারাবাহিকতায় ২০২৪ সালে কোটা সংস্কার আন্দোলন ও পরবর্তী পর্যায়ে একটি অভূতপূর্ব ও অভাবনীয় গণঅভ্যুত্থান হয়েছে।

প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দারের সঞ্চালনায় কমিশনের সদস্য সফর রাজ হোসেন, বিচারপতি এমদাদুল হক, ড. বদিউল আলম মজুমদার, ড. ইফতেখারুজ্জামান এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

মে মাসে শেখ হাসিনার বিচার শুরু হচ্ছে: প্রধান উপদেষ্টা
ঢাকাসহ সারাদেশে বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে
সবাই মিলে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করাই লক্ষ্য: আলী রীয়াজ
ইশরাককে মেয়র ঘোষণা করে গেজেট প্রকাশ
কাশ্মীর সীমান্তে ভারত-পাকিস্তানের ফের গোলাগুলি
টস হেরে ফিল্ডিংয়ে বাংলাদেশ, একাদশে ৩ পরিবর্তন
দেশে ফিরেছেন প্রধান উপদেষ্টা
টটেনহামকে উড়িয়ে প্রিমিয়ার লিগের চ্যাম্পিয়ন লিভারপুল
শেখ হাসিনাকে ‘চুপ’ রাখতে পারবেন না মোদি
রেফারির কাছে ক্ষমা চাইলেন মাদ্রিদের ডিফেন্ডার আন্তনিও রুদিগার
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নবীন শিক্ষার্থীদের শুভেচ্ছা উপহার দিলেন ছাত্রদল নেতা
দুর্নীতির অভিযোগ তুলে দুই উপদেষ্টার পদত্যাগ দাবি
নওগাঁয় গ্রাহকের আমানতের টাকা ফেরত না দেওয়ায় জাতীয় পার্টি’র নেতাকে গণধোলাই
পাকিস্তানের পাশাপাশি বাংলাদেশকেও পানি না দেওয়ার আহ্বান বিজেপি এমপির
এসআই নিয়োগের ফলাফল প্রকাশ, ৫৯৯ জনকে প্রাথমিক সুপারিশ
হাকিমপুরে গরীবের চাল ছাত্রলীগ নেতার গুদামে
চুরির অভিযোগে কুবির দুই শিক্ষার্থী বহিষ্কার
ভারত-পাকিস্তান ইস্যুতে আগবাড়িয়ে কিছু করার পক্ষে নয় ঢাকা
সাব-ইন্সপেক্টর পদে প্রাথমিক সুপারিশ পেল ৫৯৯ জন
দুই উপদেষ্টার এপিএস-পিও’র দুর্নীতির খোঁজে গোয়েন্দা কার্যক্রম শুরু