মঙ্গলবার, ১০ জুন ২০২৫ | ২৭ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২
Dhaka Prokash

অত্যাবশ্যকীয় পরিষেবা বিল - কেন প্রয়োজন?

আমাদের জীবনে অনেক কিছুর প্রয়োজন আছে কিন্তু কিছু কিছু জিনিস না হলে জীবন চলে না। সেসব দ্রব্য উৎপাদন, সরবরাহ, ভোগ যেন কোনোভাবেই বাধাগ্রস্ত না হয় তা দেখা সরকারের কাজ। এই সব পরিষেবাকে বলা হয় অত্যাবশ্যক পরিষেবা। ফলে অত্যাবশ্যক পরিষেবাসংক্রান্ত আইন হলে কারো কোনো আপত্তি থাকার কথা নয়। কিন্তু যে কথা বলা হয়, আইন যে উদ্দেশ্যে প্রণয়ন করা হয় এবং যেভাবে তার প্রয়োগ করা হয় তার মধ্যে ফারাক দেখতে দেখতে জনগণ এখন সরকারের ঘোষণা শুনলে সন্দেহ করে।

৬ এপ্রিল ২০২৩ সালে সংসদে তেমনি একটি বিল উত্থাপন করেছেন শ্রম প্রতিমন্ত্রী। শ্রম প্রতিমন্ত্রী কোনো বিল উত্থাপন করলে শ্রমিকদের আনন্দিত হওয়ার কথা। কিন্তু তিনি যে বিল উত্থাপন করেছেন তাতে শ্রমিকরা আতঙ্কিত এবং বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছেন।

শ্রমিক সংগঠনগুলো বলছে, সংসদে উত্থাপিত অত্যাবশ্যকীয় সেবা খাতে ধর্মঘট নিষিদ্ধ করার এই বিল তাদের দীর্ঘদিনের লড়াইয়ের ফলে অর্জিত গণতান্ত্রিক অধিকার কেড়ে নেওয়ার পদক্ষেপ। তারা বলেছেন, ধর্মঘটের অধিকার একটি গণতান্ত্রিক অধিকার। সাধারণত শ্রমিকরা বা তাদের সংগঠনসমূহ পাওনা আদায়ের জন্য আন্দোলন করতে বাধ্য হয়। আলাপ আলোচনার সমস্ত দরজা বন্ধ হলেই কেবলমাত্র তারা ধর্মঘট আহ্বান করে থাকে। প্রতিবাদের এই সর্বশেষ অধিকার কেড়ে নেওয়ার অর্থ হলো শ্রমিকদের উপর বিনা বাধায় নিপীড়নের অধিকার সম্প্রসারিত হওয়া। আর অত্যাবশ্যকীয় সেবা খাতের কথা যদি বলতে হয় তাহলে শ্রমিকরা কাজ করে এমন কোনো খাত আছে যা অত্যাবশ্যকীয় নয়? ফলে তাদের আশঙ্কা যে, ভবিষ্যতে এই আইনের দোহাই দিয়ে শ্রমিকদের ন্যায়সঙ্গত দাবি আদায়ের আন্দোলন এবং সংবিধান ও শ্রম আইন স্বীকৃত অধিকার কেড়ে নেওয়া হবে।

একথা মানতে হবে যে জরুরি সেবা যেমন গুরুত্বপূর্ণ শ্রমিকের অধিকারও তেমনি গুরুত্বপূর্ণ। ন্যায্য মজুরি, কর্মক্ষেত্রে নিরাপত্তা, ট্রেড ইউনিয়ন প্রতিষ্ঠা ও রক্ষা করার জন্য এখনো শ্রমিকদের আন্দোলন করতে হয়। আশংকা করার যথেষ্ট কারণ আছে যে, এই বিল আইনে পরিণত হলে তা শুধু
ট্রেড ইউনিয়ন অধিকার সংকুচিত হবে তাই নয়, শ্রমিকদের আইনসংগত আন্দোলনের পথ রুদ্ধ হয়ে যাবে। যা ভবিষ্যতে নৈরাজ্যের জন্ম দেবে এবং দমন পীড়নের পথ আরও প্রশস্ত করবে।

বিলের উদ্দেশ্য ও কারণ সম্পর্কে বলা হয়েছে ১৯৫২ সালের এসেনশিয়াল সার্ভিসেস (মেইনটেন্স) অ্যাক্ট এবং ১৯৫৮ সালের এসেনশিয়াল সার্ভিসেস (সেকেন্ড) অর্ডিন্যান্স রহিত করে নতুন এই আইন করা হচ্ছে। মূলত এই দুটি আইন এখন ইংরেজিতে থাকার উল্লেখ করে বলা হয়েছে, ‘যেহেতু, বর্তমান সরকারের নির্বাচনী ইশতেহার বাস্তবায়ন এবং মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের নির্দেশনার আলোকে ব্রিটিশ ও পাকিস্তান আমলে ইংরেজি ভাষায় প্রণীত আইনগুলো বাংলা ভাষায় প্রণয়ন করা আবশ্যক। সেহেতু, অত্যাবশ্যক পরিষেবা বিল, ২০২৩ মহান জাতীয় সংসদের সদয় বিবেচনার জন্য উত্থাপন করা হলো।’

এখানে উল্লেখ করার মত বিষয় এই যে ১৯৪১ সালে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদী সরকার এ ধরনের আইন প্রণয়ন করেছিল, তারপর ১৯৫২ সালে পাকিস্তান মুসলিম লীগ এবং ১৯৫৮ সালে পাকিস্তানের ইস্কান্দার মীর্জার সময়কালে প্রণীত এই আইন বাংলা ভাষায় অনুবাদ করে স্বাধীনতার ৫২ বছর পর আবার শ্রমিকদের উপর প্রয়োগ করা হবে।

সংসদ যেভাবে চলে বা যেভাবে আইন প্রণয়ন হয় সে কথা বিবেচনা করলে একথা নির্দ্বিধায় বলা যায় যে সংসদে তেমন বিতর্ক হবে না, দুয়েক জন সাংসদ মৃদু কণ্ঠে আপত্তি করতে পারেন কিন্তু তা দ্বারা সিদ্ধান্ত পরিবর্তন হবে না। ফলে সরকারের অভিপ্রায় অনুযায়ী বিলটি আইনে পরিণত হবে। এটি মালিকদের সুরক্ষা কিংবা প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করার কাজে প্রয়োগ করা করা হবে। বিলে যেসব বিধিবিধানের কথা উল্লেখ করা হয়েছে তাতে সরকার জনস্বার্থে দরকার মনে করলে কোনো জরুরি বা অত্যাবশ্যক পরিষেবার ক্ষেত্রে ধর্মঘট নিষিদ্ধ করতে পারবে।

বিলে উল্লেখিত শাস্তির ব্যাপারটা খুবই তাৎপর্যপূর্ণ । যেমন, সরকার ধর্মঘট নিষিদ্ধ করার পরও যদি কোনো ব্যক্তি ধর্মঘট শুরু করেন বা অব্যাহত রাখেন তাহলে তিনি এক বৎসর কারাদণ্ড, বা ২৫ হাজার টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবেন। কেউ যদি কোন ধর্মঘটে অংশগ্রহণ করে বা ধর্মঘট চলমান রাখার জন্য উৎসাহিত করে তাহলে ৬ মাস কারাদণ্ড বা ২৫ হাজার টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবেন। আবার কেউ যদি ধর্মঘট চলমান রাখার জন্য বা সমর্থন করার জন্য চাঁদা প্রদান করে তাহলে ১ বৎসর কারাদণ্ড বা ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবেন।

বিলে বলা হয়েছে, “জননিরাপত্তা বা জনগণের জীবনযাপনের জন্য প্রয়োজনীয় সরবরাহ ও রক্ষণাবেক্ষণ সেবা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয় বা হওয়ার আশঙ্কা থাকে, এ ধরনের কোনো পরিষেবাও আইনের আওতাভুক্ত থাকবে। জনগণের জন্য অসহনীয় কষ্টের কারণ হচ্ছে বা হওয়ার শঙ্কা আছে এমন পরিষেবা এবং দেশের প্রতিরক্ষা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে সারা দেশ বা দেশের কোনো অংশে নিরাপত্তা নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে আবশ্যকীয় কোনো বিষয়ও অত্যাবশ্যক পরিষেবার আওতাভুক্ত হবে। তাহলে অত্যাবশ্যকীয় পরিষেবার বাইরে আর কোন খাত অবশিষ্ট রইল? যা বাকি আছে তা সরকার চাইলে বা সরকারের কাছে অত্যাবশ্যকীয় বলে মনে হলে সেকল খাত এই আইনের আওতায় চলে আসবে।

দেখা যায় শ্রমিকের যত অসন্তোষ তার অধিকাংশই ঘটে জীবিকা এবং জীবনের নিরাপত্তা নিয়ে। অন্যায়ভাবে ছাঁটাই, আকস্মিক কারখানা বন্ধ, প্রাপ্য না দেওয়া, চুক্তি করে তা বাস্তবায়ন না করার মতো পরিস্থিতি যখন তৈরি হয় তখন শ্রমিকদের শেষ হাতিয়ার ধর্মঘট। সে কারণেই ধর্মঘটের অধিকার শ্রমিকদের অধিকার আদায়ের রক্ষাকবচ। ১৯৫২ সালে আইএলও’র দ্বিতীয় সভায় সংগঠিত হওয়ার স্বাধীনতা বিষয়ক কমিটি (কমিটি অন ফ্রিডম অব অ্যাসোসিয়েশন) ঘোষণা করে যে ধর্মঘট করা একটি অধিকার হিসেবে বিবেচিত হবে।

বাংলাদেশ শ্রম আইনে পরিষ্কারভাবে উল্লেখিত আছে, এই আইনের অন্যত্র ভিন্নরূপ কিছু নির্ধারিত না থাকিলে, এই আইন সমগ্র বাংলাদেশের জন্য প্রযোজ্য হইবে। ‘ শ্রম আইনের চতুর্দশ অধ্যায়ে বিরোধ নিষ্পত্তিসংক্রান্ত ধারাসমূহ আছে। ২০৯ ধারায় শিল্প বিরোধ উত্থাপন, ২১০ ধারায় শিল্প বিরোধ নিষ্পত্তির বিধান যেমন আছে তেমনি ২২৫ ধারায় শ্রম আদালত কর্তৃক ধর্মঘটের নোটিশ জারির উপর বিধি নিষেধ, ২২৬ ধারায় শ্রম আদালত কর্তৃক ধর্মঘট নিষিদ্ধ করার ক্ষমতা, ২২৭ ধারায় কখন ধর্মঘট বেআইনি হবে সেসব বিষয় উল্লেখিত আছে। আবার ২৯৪ ধারায় বেআইনি ধর্মঘটের দণ্ড, ২৯৫ ধারায় বেআইনি ধর্মঘটে প্ররোচিত করার দণ্ড, ২৯৬ ধারায় ঢিমে তালে কাজে অংশগ্রহণ বা প্ররোচনার দণ্ড সন্নিবেশিত আছে। শ্রম আইনে ধর্মঘট আহ্বান করা এবং ধর্মঘট নিষিদ্ধ করা এই দুই বিষয়ই উল্লেখিত আছে, তাহলে নতুন করে অত্যাবশ্যক পরিষেবা বিলের উদ্দেশ্য কী?

বাংলাদেশ বিবেচিত হচ্ছে বিশ্বের অন্যতম সস্তা শ্রমিকের দেশ হিসেবে। অন্যদিকে বাংলাদেশ দ্রুতগতিতে ধনী হওয়ারও দেশ। শ্রমিকের কম মজুরি মালিকের বেশি মুনাফার অন্যতম প্রধান শর্ত। শ্রমিকের মজুরি কম দেওয়ার জন্যই আইনের নানা বাধা তুলে তাদের সংগঠিত হতে দেওয়া হয় না আর সস্তা শ্রমিকের কথা বলে বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণের চেষ্টা করা হয়। অত্যাবশ্যকীয় পরিষেবা আইন কি তাহলে দেশি-বিদেশি শোষণকে সহায়তা করবে?

প্রস্তাবিত বিলে ধর্মঘট সম্পর্কে যা বলা হয়েছে তা কি ব্যক্তির সাংবিধানিক অধিকার, শ্রম আইনের অধিকার আর আইএলও কনভেনশনের বিরুদ্ধে যাচ্ছে না? গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের উচিত ন্যায্য মজুরি, জীবনের নিরাপত্তাসহ অন্যান্য অধিকারকে অত্যাবশ্যক ঘোষণা করা। কোটি কোটি শ্রমজীবীর স্বার্থে তাই আইন হওয়া উচিত যে শ্রমিকের অত্যাবশ্যক অধিকার কোনোভাবেই লঙ্ঘন করা যাবে না।

রাজেকুজ্জামান রতন: সদস্য, কেন্দ্রীয় কমিটি, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ)।

এসএন

Header Ad
Header Ad

অবশেষে কারামুক্ত হচ্ছেন ইমরান খান! ১১ জুন হাই কোর্টে শুনানি

পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও পিটিআই চেয়ারম্যান ইমরান খান। ছবি: সংগৃহীত

পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) দলের চেয়ারম্যান ইমরান খান অবশেষে কারাগার থেকে মুক্তি পেতে যাচ্ছেন—এমন আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন দলটির শীর্ষ নেতারা।

পিটিআই’র আইনজীবী ও প্রবীণ নেতা গোহার আলি খান জানান, আগামী ১১ জুন ইসলামাবাদ হাই কোর্টে তোষাখানা দুর্নীতি মামলার শুনানি রয়েছে। ওই দিনই তাঁর জামিন মঞ্জুর হয়ে যেতে পারে বলে আশা করা হচ্ছে। এমনকি একই দিনেই জেলমুক্তি ঘটতে পারে বিশ্বকাপজয়ী সাবেক এই অধিনায়কের।

২০২৩ সালের আগস্টে তোষাখানা মামলায় দোষী সাব্যস্ত হয়ে গ্রেপ্তার হন ইমরান খান। অভিযোগ, প্রধানমন্ত্রী থাকাকালে বিদেশি রাষ্ট্রপ্রধানদের দেওয়া উপহার অবৈধভাবে নিজের কাছে রেখে তা বিক্রি করে আর্থিকভাবে লাভবান হয়েছেন তিনি। এ ছাড়া, ‘আল-কাদির ট্রাস্ট’ কেলেঙ্কারিতে ১৯০ মিলিয়ন পাউন্ড দুর্নীতির অভিযোগেও তাঁর বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে। প্রথমে তাঁকে পাঞ্জাবের অটক জেলে রাখা হলেও পরে স্থানান্তর করা হয় রাওয়ালপিন্ডির আদিয়ালা কারাগারে। পরিবারের দাবি, সেখানে একাধিকবার তাঁর প্রাণনাশের শঙ্কা তৈরি হয়।

সম্প্রতি ভারতের ‘অপারেশন সিঁদুরে’ ঘটনায় পাকিস্তানের সেনাপ্রধান জেনারেল আসিম মুনির চাপে রয়েছেন বলে রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের অভিমত। সেই পরিস্থিতিতে দেশব্যাপী পিটিআই কর্মীদের বিক্ষোভ জোরদার হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, রাজনৈতিক চাপ মোকাবেলার কৌশল হিসেবে ইমরান খানের জামিনে মুক্তির পথ তৈরি হচ্ছে।

কারাবন্দি অবস্থায়ও দলীয় নেতৃত্ব ছাড়েননি ইমরান। নিজেকে পিটিআইয়ের ‘পেট্রন ইন চিফ’ ঘোষণা করে জেল থেকেই দলের আন্দোলনের নেতৃত্ব দিয়ে যাচ্ছেন। এখন দেখার বিষয়, ১১ জুনের শুনানি তাঁর জন্য কতটা আশার আলো নিয়ে আসে।

Header Ad
Header Ad

ভারতের গুজরাট হাইকোর্টে বোমা হামলার হুমকি

ছবি: সংগৃহীত

ভারতের গুজরাট হাইকোর্টে বোমা হামলার হুমকির ঘটনায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। সোমবার (৯ জুন) দুপুরে আদালতের সরকারি ইমেইলে একটি বার্তা পৌঁছায়, যেখানে বলা হয়, “আদালতে বোমা বিস্ফোরণ ঘটানো হবে, বহু মানুষের প্রাণহানি ঘটতে পারে।”

এ হুমকির পরই দ্রুত নিরাপত্তামূলক পদক্ষেপ নেওয়া হয়। বন্ধ করে দেওয়া হয় আদালতের কার্যক্রম, ফাঁকা করে দেওয়া হয় পুরো কোর্ট ভবন। নিরাপদে সরিয়ে নেওয়া হয় বিচারপতি, আইনজীবী ও সাধারণ মানুষকে।

গুজরাট পুলিশ ও বোম্ব স্কোয়াড দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে তল্লাশি শুরু করে। পুরো হাইকোর্ট চত্বর ও আশপাশের এলাকাজুড়ে কঠোর নজরদারি চালানো হয়। তবে দীর্ঘ অনুসন্ধানের পরও কোনো বিস্ফোরক দ্রব্যের সন্ধান মেলেনি। পুলিশ জানিয়েছে, ইমেইল বার্তাটিতে ব্যবহৃত পরিচয় ভুয়া বলে ধারণা করা হচ্ছে। ইমেইলটি কতটা বিশ্বাসযোগ্য, তা যাচাইয়ে তদন্ত চালাচ্ছে সাইবার ক্রাইম ইউনিট।

ঘটনার গুরুত্ব অনুধাবন করে আপাতত আদালতের কার্যক্রম স্থগিত রাখা হয়েছে। হাইকোর্ট ভবনের নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে এবং তদন্ত চলমান রয়েছে। উল্লেখযোগ্য যে, ভারতের বিভিন্ন রাজ্যের হাইকোর্টে এর আগেও এমন ভুয়া হুমকি দেওয়া হয়েছিল। সম্প্রতি পাঞ্জাব ও হরিয়ানা হাইকোর্টেও অনুরূপ ইমেইল পাঠানো হয়েছিল, যা তদন্ত শেষে ভুয়া প্রমাণিত হয়।

তবে গুজরাট প্রশাসন কোনো ঝুঁকি নিতে নারাজ। এই হুমকির উৎস শনাক্তে গোয়েন্দা সংস্থা ও সাইবার ইউনিট যৌথভাবে কাজ করছে। তদন্ত সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত হাইকোর্টের স্বাভাবিক কার্যক্রম বন্ধ থাকবে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।

Header Ad
Header Ad

সাঁতার শেখাতে গিয়ে পানিতে ডুবে বাবা-মেয়ের মর্মান্তিক মৃত্যু

ছবি: সংগৃহীত

মৌলভীবাজারের জুড়ীতে মেয়েকে সাঁতার শেখাতে গিয়ে পুকুরে ডুবে একই সঙ্গে প্রাণ হারিয়েছেন এক বাবা ও তাঁর মেয়ে। সোমবার বিকেল ৪টার দিকে জুড়ী উপজেলার জায়ফরনগর ইউনিয়নের হামিদপুর গ্রামে এ হৃদয়বিদারক দুর্ঘটনা ঘটে। নিহতরা হলেন ওই গ্রামের বাসিন্দা ও ইটভাটা ব্যবসায়ী বাবুল আহমদ (৬০) এবং তাঁর মেয়ে হালিমা মোহাম্মদ (১৮), যিনি ঢাকার ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষার্থী ছিলেন।

জানা যায়, ঈদুল আজহার ছুটিতে গ্রামের বাড়িতে বেড়াতে এসেছিলেন হালিমা। বাবা-মেয়ের মধ্যে ছিল গভীর স্নেহের সম্পর্ক। পুকুরে নেমে মেয়েকে সাঁতার শেখাচ্ছিলেন বাবা। ব্যবহার করছিলেন একটি প্লাস্টিকের টিউব। একপর্যায়ে হালিমার হাত ফসকে গেলে তিনি পানিতে ডুবে যেতে থাকেন। মেয়েকে বাঁচাতে পুকুরে ঝাঁপ দেন বাবুল আহমদ। কিন্তু শেষরক্ষা হয়নি—বাঁচানো তো দূরের কথা, প্রাণ গেল দুজনেরই।

স্থানীয়রা জানায়, টের পেয়ে আশপাশের লোকজন ছুটে এসে প্রায় আধা ঘণ্টা চেষ্টা চালিয়ে দুজনকে উদ্ধার করে। পরে কুলাউড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়ার পথে দুজনই মারা যান। ঘটনার পর হামিদপুর গ্রামে শোকের ছায়া নেমে আসে।

পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বাবুল আহমদের বাসা ঢাকায়। স্ত্রী ও চার সন্তানকে নিয়ে তিনি সেখানে বসবাস করতেন। চার সন্তানই বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পড়াশোনা করে। গ্রামের বাড়ির কাছে মানিকসিংহ এলাকায় তাঁর বাব ব্রিকস নামে একটি ইটভাটা রয়েছে। ঈদ উপলক্ষে পরিবারের সবাই কয়েক দিন আগে গ্রামে বেড়াতে আসেন। দ্বিতীয় মেয়ে হালিমার আগামী ২৬ জুন থেকে শুরু হওয়া এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার কথা ছিল।

সোমবার বিকেলে বাবার সঙ্গে পুকুরে নামেন হালিমা। টিউব ভরসা করে সাঁতার শেখার একপর্যায়ে দুর্ঘটনা ঘটে। মেয়েকে উদ্ধার করতে গিয়ে নিজেও প্রাণ হারান বাবুল। সন্ধ্যার পর বাবুল আহমদের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, একসঙ্গে বাবা-মেয়ের মৃত্যুতে পুরো এলাকায় নেমে এসেছে শোকের ছায়া। আলাদা দুটি কক্ষে রাখা হয়েছে তাঁদের নিথর দেহ। স্বজনদের আহাজারিতে ভারি হয়ে উঠেছে বাড়ির আঙিনা। প্রতিবেশীরা তাঁদের সান্ত্বনা দেওয়ার চেষ্টা করলেও কারও চোখেই নেই শান্তি।

এই মর্মান্তিক ঘটনায় পুরো এলাকাজুড়ে নেমে এসেছে শোক ও বিষাদের ছায়া। বাবার কোলে মেয়ের শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ যেন বলে দেয়—ভালোবাসার শেষ পরিণতি কতটা করুণ হতে পারে।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

অবশেষে কারামুক্ত হচ্ছেন ইমরান খান! ১১ জুন হাই কোর্টে শুনানি
ভারতের গুজরাট হাইকোর্টে বোমা হামলার হুমকি
সাঁতার শেখাতে গিয়ে পানিতে ডুবে বাবা-মেয়ের মর্মান্তিক মৃত্যু
এশিয়ায় কোভিড বাড়ছে, নতুন ধরনে উদ্বেগ, সতর্ক থাকার আহ্বান বিশেষজ্ঞদের
লন্ডনে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন তারেক রহমান
আন্তর্জাতিক শ্রম সম্মেলনে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টার যোগদান
নড়াইলে দেড় ডজন মামলার আসামি ‘মনির ডাকাত’সহ গ্রেফতার ৫
রাজনীতিতে পেশিশক্তির কোনো স্থান নেই: আখতার হোসেন
ভারতীয়দের বিষয়ে বিমানবন্দরে বাড়তি সতর্কতা
জিয়া পরিবার ছাড়া জনসম্পৃক্ত হয়ে কেউ কাজ করেনি: এ্যানী
যুক্তরাজ্যের উদ্দেশে ঢাকা ছেড়েছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস
মেট্রোরেল ভ্রমণকারীদের জন্য নতুন স্বাস্থ্যবিধি নির্দেশনা জারি
চামড়া শিল্পে নৈরাজ্য সিন্ডিকেট ভাঙতে কাজ করছে সরকার: বাণিজ্য উপদেষ্টা
ভারতসহ বিভিন্ন দেশে করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধিতে বেনাপোল চেকপোস্টে সতর্কতা জারি
রাজনৈতিক ও গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠাই বিএনপির লক্ষ্য: সালাহউদ্দিন আহমেদ
সিঙ্গাপুরের বিপক্ষে অন্তত ১০ মিনিট খেলতে চান জামাল ভূঁইয়া
ঈদের ছুটিতে ফাঁকা রাজধানীর রাজপথে অটোরিকশা ও মোটরসাইকেলের দাপট
কক্সবাজার সৈকতে পিতাপুত্রের মর্মান্তিক মৃত্যু, রাজশাহী থেকে এসেছিলেন ভ্রমণে
দুই প্রতিবন্ধী মেয়েকে বিষ খাইয়ে বাকপ্রতিবন্ধী বাবার বিষপান
বিমানে উঠতে গিয়ে হোঁচট খেলেন ট্রাম্প, সামাজিক মাধ্যমে হাস্যরসের ঝড়