মঙ্গলবার, ২১ জানুয়ারি ২০২৫ | ৭ মাঘ ১৪৩১
Dhaka Prokash
Header Ad

ট্যুরিজমের পোকা

ইদানিং অনেকেরই মাথায় ট্যুরিজমের পোকাটা ঢুকেছে। সব বয়সের, সব পেশার মানুষ বেশ আক্রান্ত হচ্ছে এর দ্বারা। আলোচনায় মেতে উঠেছেন সবাই। বেশ সমঝদারের মতো একে নিয়ে ভালো ভালো কথা বলছেন, এর ভবিষ্যত নিয়ে বক্তৃতাও করছেন সরকারের নানা কর্তাব্যক্তি, গুণীজন, শিক্ষক, সাধারণ মানুষ এমনকি সাধারণ যাদের আমরা মনে করি তেমন কিছু বুঝেন না, তারাও। কারণ অনেকেই আজকাল ট্যুরিজম বোঝার জন্য চেষ্টা করছেন।

পত্র পত্রিকা, রেডিও টেলিভিশন বা সামাজিক গণমাধ্যমে আজকাল ট্যুরে যাওয়ার বেশ বিজ্ঞাপন লক্ষ্য করা যায়। দেশে-বিদেশে নানা ধরনের সুযোগ-সুবিধা সম্বলিত দলীয় গাইডেড ট্যুরের বিজ্ঞাপন। দেশে কত ট্যুর অপারেটর তা কারো জানা নেই। এদের সঙ্গে অনেক মানুষ ট্যুরে যাচ্ছেন। ফলে অনেক মানুষের ট্যুরিজম সম্বন্ধে বেশ একটা ধারণা হচ্ছে। বিদেশে দামি ট্যুর করাটাকে কেউ কেউ স্ট্যাটাস সিমবল বলেও মনে করেন। আরও মজার বিষয় হলো এখন অনেকের ছেলেমেয়ে, আত্মীয়স্বজন এই বিষয়ে পড়ালেখা করছেন।

এমন অনেকে আছেন, যারা পর্যটন বিষয়ে পড়ালেখা না করে কিংবা কিছুটা ট্রেনিং নিয়ে হোটেল, রেস্টুরেন্ট, ট্যুরিস্ট কোচ, ট্যুর অপারেটর, ট্রাভেল এজেন্ট, হজ এজেন্ট ইত্যাদিতে চাকরি করছেন। অনেকে সফলতার সঙ্গে এই বিষয়ক ব্যবসা করেন। অন্যদিকে অনেকে এইসব তাকিয়ে তাকিয়ে দেখছেন এবং ভাবছেন: কী হচ্ছে এসব! সব মিলিয়ে সমাজ এখন কেমন যেন ট্যুরিজমের সঙ্গে জড়িয়ে পড়ছে।

বাংলাদেশের জিডিপিতে ২০১৯ সালে ৭৭ হাজার ৩০০ কোটি টাকার অবদান রাখছে ট্যুরিজম, কর্মসংস্থান দিয়েছে সাড়ে ১৮ লক্ষ মানুষের এবং পর্যটন রপ্তানি করেছে ২ হাজার ৮০০ কোটি টাকার বেশি। বাংলাদেশের অর্থনীতিতে হঠাৎ করে ট্যুরিজম এই অবদান রাখবে এটা আমরা অনেকেই ভাবিনি। বাংলাদেশের মানুষ ভ্রমণে টাকা খরচ করবে, এই শিল্পে কাজ করবে এবং বিদেশি পর্যটকরা এদেশে বেড়াতে আসবে - এসব আমাদের চিন্তায় নতুন খোরাক যোগাচ্ছে বৈকি! অর্থনীতির এই নতুন বাঁক আমাদের নতুন মহাসড়কের দিকে নিয়ে যাচ্ছে। ট্যুরিজমের সঙ্গে সম্পৃক্ত সরকারের বেশ কিছু প্রতিষ্ঠান, তাদের কর্মকর্তা-কর্মচারী, মন্ত্রী-আমলা এবং অন্যান্য অনেক মানুষ এর সঙ্গে পথ চলছে। এত মানুষ যার সঙ্গে চলে, তার পোকা মাথায় না ঢুকে কি পারে?

ট্যুরিজমের পোকা দুই ধরনের। এক ধরনের পোকা রাইজোবিয়াম ব্যাকটেরিয়ার (যারা বাতাস থেকে ধরে নাইট্রোজেনকে মাটিতে জমা করার) মতো যারা মানুষের মাথায় ইতিবাচক বুদ্ধি যোগায়। আরেক ধরনের পোকা ঘুনপোকার মতো সব বুদ্ধিগুলোতে কেটেকুটে নষ্ট করে দেয়। আমাদের মাথায় এর দুটোই ঢুকেছে। তাই ট্যুরিজম নিয়ে ভিন্ন ও বিপরীত মতের অভাব নেই। যিনি যেভাবে পারছেন, ট্যুরিজমের উপর সওয়ার হচ্ছেন এবং বলছেন, উপদেশ দিচ্ছেন, আদেশও দিচ্ছেন। ফলে বিভ্রান্ত হচ্ছেন অনেক মানুষ, বিশেষত তরুণরা। তারা বুঝতে পারছেন না, কী করা উচিত, কী উচিত নয়। ট্যুরিজমের কোন পথ কার জন্য প্রযোজ্য। রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে অহরহ ভুল হচ্ছে। খোদ বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে যেখানে ট্যুরিজম পড়ানো হচ্ছে, সেখানেও তারা তরুণদের মাথায় ছেড়ে দিচ্ছেন ট্যুরিজমের ঘুনপোকা। অপ্রায়োগিক ও অসম্পূর্ণ কারিকুলাম বানাচ্ছেন, অযত্নে পড়াচ্ছেন এবং ফলে শিক্ষার্থীরা পথের সন্ধান পাচ্ছেন না। উদাহরণ দিলেই পরিষ্কার হবে: আমাদের দেশের অনেকগুলো বিশ্ববিদ্যালয় ৭০ শতাশ কোর্স ট্যুরিজম বহির্ভূত বিষয় এবং মাত্র ৩০ শতাংশ কোর্স ট্যুরিজমের সঙ্গে সম্পৃক্ত পড়িয়ে ব্যাচেলর ডিগ্রি দিচ্ছে। আর প্রায় সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেই ট্যুরিজম বলতে হোটেলকেই বুঝানো হচ্ছে। ভাবটা এরকম যে, হোটেলই ট্যুরিজমের মূল গন্তব্য। এই সকল ভাবনা আমাদের কোথায় নিয়ে যাবে কে জানে!

বিদ্যালয়গুলো স্বাধীন, তবে কী বিষয় নিয়ে পাঠদান করবে সে বিষয়ে স্বাধীনতা না দেখানোই ভালো। মত বিনিময়ের মাধ্যমে আমাদের নিজেদের এবং আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলের চাহিদা নিরূপণ করে ট্যুরিজম শিক্ষার বিষয়বস্তু নির্ধারণ করা জরুরি। শিক্ষার মান নির্ধারণের জন্য ইতোমধ্যে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) এক্রিডিটেশনের পদক্ষেপ নিয়েছে। তার সঙ্গে ট্যুরিজম কাউন্সিল গঠনের মাধ্যমে ট্যুরিজম বিষয়ে শিক্ষিত এবং প্রশিক্ষিতদের লাইসেন্স প্রদান করে একটি মানসম্মত পেশাজীবী শ্রেণি প্রতিষ্ঠা করা অত্যন্ত দরকারি। কারণ, এটা জাতির জীবন-মরণের সঙ্গে জড়িত।

আমাদের তরুণরা কী ভাবছেন? জাতিসংঘ বিশ্ব পর্যটন সংস্থা ১৬ থেকে ২৯ বছরের তরুণদের যুবা বলছে, যারা পৃথিবীর মোট পর্যটকদের প্রায় ২৩ শতাংশ। বিশ্ব পর্যটনে তাদের একটি শক্তিশালী ভূমিকা রয়েছে। এদের চোখে অফুরান স্বপ্ন, উদ্ভাবন, জয় ছিনিয়ে নেবার আকাঙ্ক্ষা এবং মুখে দীপ্তির হাসি ও বুকে বল নিয়ে এরা দুর্বার গতিতে এগিয়ে চলে। তাদের জীবনধারায় পর্যটনের মতো জীবনধর্মী কর্মকাণ্ডকে স্বাগত জানানোর কথা। একে বুকে ধারণ করে নতুন পরিবর্তনশীল পৃথিবীতে মর্যাদাশীল মানুষরূপে প্রতিষ্ঠা পাওয়ার কথা। তা-ই কি হচ্ছে? তারা কি সে পথে এগোচ্ছেন? নাকি ট্যুরিজমকে না জানার জন্য ঘুনপোকার দংশনে নির্বাসনে যাচ্ছেন?

যারা ট্যুরিজম নিয়ে বিভিন্ন পর্যায়ে যেমন ডিপ্লোমা, ডিগ্রি ও মাস্টার্স ডিগ্রি ইত্যাদি লেখাপড়া করছেন, তাদের অনেকের সঙ্গে আমার কথা হয়। আমার কেন যেন মনে হয়, এদের অনেকের মাথায়ই ট্যুরিজমের ঘুনপোকার বাস। নিজেদের হতাশার জালে জড়িয়ে নিরাশ করছে। এরা ভাবছে অন্যরা আমাদের চেয়ে ভালো। ট্যুরিজমকে এদের ধারণ করার কথা। কিন্তু ঘটছে তার বিপরীত ঘটনা। ধারণ করছে না এবং অন্যদের ট্যুরিজমের বিশাল জগৎ থেকে দূরে সরে যাওয়ার জন্য উদ্বুদ্ধ করছে। লক্ষ্য করেছি, তিনটি কারণ আছে এর পেছনে: প্রথমত যারা পড়াচ্ছেন, তারা একে ধারণ করেন না; দ্বিতীয়ত যে পরিবেশে পড়ানো হচ্ছে, সেখানে এর উপর ধারণা পরিষ্কার না থাকার জন্য এদের ভুল ধারণা দেওয়া হচ্ছে এবং তৃতীয়ত এদের বাড়ির পরিবেশ-প্রতিবেশ থেকে এই বিষয়ে পড়ার জন্য সমাদৃত হচ্ছে না। রাষ্ট্রের উচিত সমাজের এসব জায়গায় অবিলম্বে হস্তক্ষেপ করা এবং টেকসই সামাজিক সমাধান খোঁজা।

সাধারণের পাশাপাশি রাষ্ট্রের মাথায়ও ট্যুরিজমের পোকা বেশ বাসা বেঁধেছে। তবে কোন ধরনের পোকার পরিমাণ কত, তা নির্ণয় করা কঠিন। আবার এই পোকারা ঠিক কাদের মাথায় বাসা বেঁধেছে, তা-ও নির্ধারণ করা সহজ নয়। তবে আনন্দের বিষয় মন্ত্রী, এমপি, আমলা সবাই বলছেন এর সঙ্গে রাষ্ট্রের সম্পৃক্ততার কথা। কেন যেন মনে হয় বুঝে, দায়িত্ব নিয়ে, ভালোবেসে বলছেন এমন মানুষের সংখ্যা কম। আবার কেউ কেউ নিজের দুর্বল অবস্থানকে সবল করার জন্য বেশি বেশি বলছেন। তাতে যে তিনি ভুল বলছেন এও বুঝছেন না। এ নিয়ে কেউ কেউ হাসাহাসি করছেন, অন্যরা ভুল তথ্য পাচ্ছেন। সব মিলিয়ে খুব ফলপ্রসু কিছু হচ্ছে না। কারণ, গত ২ দশকে ট্যুরিজমের জন্য রাষ্ট্রের কয়েক হাজার কোটি টাকা ব্যয় হয়েছে। আমি যদি বলি একজন সাধারণ নাগরিক হিসেবে এর শ্বেতপত্র প্রকাশ করা হোক। কী উত্তর পাবো, জানি না। এরূপ মজার খেলা চলছে ট্যুরিজমের পোকার বদৌলতে।

কিছু কথা নিশ্চিত করে বলা যায়, ট্যুরিজমের পোকা মাথায় না ঢুকলে ২০১১ ও ২০১৬ সরকার পর্যটনবর্ষ (Tourism Year) ঘোষণা করত না; ২০১৩ সালে ট্যুরিস্ট পুলিশের সৃষ্টি করতো না। পর্যটনের মহাপরিকল্পনা গ্রহণ, টেকনাফে সাবরাঙ প্রকল্প গ্রহণ, সোনাদিয়া বিশেষ অর্থনৈতিক ট্যুরিজম জোন তৈরি, সরকারি বেশ কিছু বিশ্ববিদ্যালয়ে ট্যুরিজমে উচ্চশিক্ষা চালুসহ উচ্চ মাধ্যমিক ও ডিপ্লোমা স্তরে ট্যুরিজম শিক্ষা বাস্তবায়ন করা ইত্যাদি মোটেও হতো না। কিন্তু সরকারের প্রতিনিধি হিসেবে যে সকল আমলা-কর্মচারীরা এসবের দায়িত্বে, তারা উদাসীন, নির্বিকার। দীর্ঘসূত্রিতার জন্য ট্যুরিজমের কলেজে বাস্তবায়িত হচ্ছে না, ডিপ্লোমা স্তরে শিক্ষক নিয়োগ না করে এবং পাঠ্যবই ছাড়া গত চার বছরে ছেলেমেয়েদের হেনস্তা করা হলো! এখন দরকার অবিলম্বে এর মানোন্নয়ন ও উৎকর্ষ সাধনের। তা না হলে প্রতিযোগিতামূলক বাজারে আমাদের ট্যুরিজম মুখ থুবড়ে পড়বে। তা নিয়ে উন্নয়নের সকল যুদ্ধযাত্রা ব্যর্থ হবে।

ট্যুরিজমের রাইজোবিয়াম পোকা বেশি করে উৎপাদন করা দরকার। তা না হলে ঘুনপোকাদের মোকাবিলা করা যাবে না। এ জন্য তরুণদের মুক্তমন নিয়ে, গা ঝাড়া দিয়ে, সৃজনশীলতার ব্রত নিয়ে এগিয়ে আসতে হবে এবং পর্যটনের সঙ্গে নিজেদের যুক্ত করতে হবে। শিক্ষা গ্রহণ, দক্ষতা বৃদ্ধি, মানসিক দৃঢ়তা এবং ইতিবাচক সামাজিক পরিবর্তনের দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে পথে নামতে হবে। ভুলে গেলে চলবে না যে, এ বিপ্লব সৃষ্টির, আনন্দের ও উন্নয়নের। এটি কোনো পক্ষপাতদুষ্ট বা রাজনৈতিক মতাদর্শের নয় বরং সর্বজনীন।

রাষ্ট্রের প্রতিটি প্রতিষ্ঠানকে প্রত্যক্ষভাবে এগিয়ে আসতে হবে। বিদেশে প্রত্যেকটি দূতাবাসে একজন করে ট্যুরিজম অ্যাটাচি দিয়ে বাংলাদেশকে বিশেষভাবে প্রমোশনের পদক্ষেপ নেওয়া দরকার। বিদেশি পর্যটকদের আকৃষ্ট করার জন্য এটি অত্যন্ত জরুরি। প্রয়োজনে দেশের বিশেষজ্ঞ, গবেষক, ট্যুর অপারেটর, হোটেল মালিক, ট্রাভেল এজেন্টসহ প্রয়োজনীয় যেকোনো বেসরকারি প্রতিষ্ঠানকে সঙ্গে নিতে হবে। যুব ও ক্রীড়া উন্নয়ন মন্ত্রণালয়কে এগিয়ে এসে ক্রীড়া পর্যটন, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কে স্বাস্থ্য পর্যটন, রেল মন্ত্রণালয়কে রেল পর্যটন, কৃষি মন্ত্রণালয়কে কৃষি পর্যটন, শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে শিক্ষা পর্যটন, স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়কে কমিউনিটিভিত্তিক গ্রাম পর্যটন, নৌপরিবহণ মন্ত্রণালয়কে জলাভূমি পর্যটন, শিশু ও মহিলা বিষয়ক মন্ত্রণালয়কে শিশু পর্যটন, সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়কে ভাষা পর্যটন, প্রত্নপর্যটন, উৎসব পর্যটন, জীবনধারা পর্যটন, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়কে মুক্তিযুদ্ধ পর্যটন ইত্যাদিতে প্রণোদনা দিতে হবে। পর্যটন মন্ত্রণালয়কে সমন্বয়কের ভূমিকা পালন করতে হবে, অর্থ মন্ত্রণালয়কে অর্থের যোগান ও আইন মন্ত্রণালয়কে আইনি সহায়তা দিতে হবে। বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ডকে আইনের মাধ্যমে প্রদত্ত ম্যান্ডেটগুলোকে অক্ষরে অক্ষরে পালন করতে হবে। মনে রাখতে হবে, পর্যটন কোন একটি মন্ত্রণালয়ের কাজ নয়। সকলের কাজের মধ্যে যতটুকু পর্যটন পড়ে, ততটুকুই বাস্তবায়ন করতে হবে।

আমরা চাই দেশে একটি পর্যটন অর্থনীতি গড়ে তুলতে। ট্যুরিজমের কাছে আশ্রয় নেওয়া ছাড়া আগামী দিনে অর্থনীতি, উন্নয়ন কিছুই টেকসই হবে না, টিকবে না। তাই সকলের মাথায় ট্যুরিজমের রাইজোবিয়াম জাতীয় পোকার ব্যাপক প্রবেশ এবং ঘুনপোকাদের ধ্বংস কামনা করছি। রাইজোবিয়াম জাতীয় ট্যুরিজম পোকাকে প্রয়োজনে সকলের মাথায় ইনোকুলেশন অর্থাৎ জোর করে প্রবেশ করানো দরকার। রাষ্ট্র, বুদ্ধিজীবী, গবেষক, মন্ত্রী, আমলা, আর্মি, পুলিশ ও সাধারণ মানুষ সকলের মাথা থেকে ট্যুরিজমের ঘুনপোকাদের মেরে ফেলতে হবে। বুদ্ধির গোড়ায় নাইট্রোজেন সমৃদ্ধ সার সরবরাহ করে সবুজ পর্যটন সৃষ্টির কোনো বিকল্প দেখি না।

মোখলেছুর রহমান: রেক্টর, বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ট্যুরিজম স্টাডিজ, ঢাকা

এসএন

Header Ad
Header Ad

সমন্বয়ক রাফির ওপর হামলা, থানায় অভিযোগ

সহ-সমন্বয়ক খান তালাত মাহমুদ রাফি। ছবি: সংগৃহীত

চট্টগ্রামের রাউজানে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সভায় বাগবিতণ্ডা ও হাতাহাতির ঘটনা ঘটেছে। গতকাল সোমবার (২০ জানুয়ারি) বিকেলে সমন্বয়ক খান তালাত মাহামুদ রাফির ওপর হামলার ঘটনা ঘটে।

জানা যায়, রাউজান বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আয়োজনে বিকেলে রাউজান উপজেলা অডিটোরিয়ামে গণ-অভ্যুত্থান-উত্তর বাংলাদেশ শীর্ষক আলোচনাসভা ও মতবিনিময়সভার আয়োজন করা হয়। এ অনুষ্ঠানে অতিথি ছিলেন চট্টগ্রাম জেলা সমন্বয়ক খান তালাত মাহামুদ রাফি ও রাসেল আহমেদ। এ ছাড়া রাউজানের সমন্বয়ক, জেলার নেতৃবৃন্দ, বিভিন্ন স্তরের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।

অনুষ্ঠানের একপর্যায়ে সমন্বয়ক দাবি করা ১২-১৫ জন হলে ঢুকে রাফির সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করেন। এ সময় আরেক পক্ষ আপত্তি তুললে দুই পক্ষের মধ্যে বাগবিতণ্ডা ও হাতাহাতি হয়। পরে পরিস্থিতি শান্ত হয়।

এ ঘটনায় রাতেই রাউজান থানায় লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে। সমন্বয়ক রাফির ওপর হামলা হয়েছে, এমনটা দাবি করা হয়েছে অভিযোগে। রাউজান থানার ওসি এ কে এম সফিকুল আলম চৌধুরী অভিযোগের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

রাউজানের ছাত্র প্রতিনিধি (সমন্বয়ক হিসেবে পরিচিত) এম আবেদীন সাজিদ বলেন, আবদুল্লাহ আল হামিদ নামে একজন পরিকল্পিতভাবে হামলা চালিয়েছে। তারা ছাত্রলীগ ও সেন্ট্রাল বয়েজ অব রাউজানের সদস্য।

Header Ad
Header Ad

ন্যূনতম সংস্কার শেষে নির্বাচন চাই: মির্জা ফখরুল

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ছবি: সংগৃহীত

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ন্যূনতম সংস্কার কাজ সম্পন্ন করে জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজন করতে হবে। মঙ্গলবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে এক আলোচনা সভায় তিনি এই দাবি জানান।

তিনি বলেন, সংস্কারের প্রস্তাবগুলো নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে। প্রধান উপদেষ্টা সবার সঙ্গে পরামর্শ করে সিদ্ধান্ত নেবেন বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন। ফখরুল বলেন, জনগণের ভাষা বুঝতে হবে সরকারকে। আমরা এখনই নির্বাচন চাই না, তবে ন্যূনতম সংস্কার শেষে নির্বাচন চাই। নির্বাচিত সরকার অনির্বাচিত সরকারের চেয়ে বেশি গ্রহণযোগ্য বলেও তিনি মন্তব্য করেন।

সবাইকে ধৈর্য ধরার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, প্রতিদিন মানুষ তাদের দাবি নিয়ে রাস্তায় নামছে। হঠকারী কোনো সিদ্ধান্ত বা কাজ করে অস্থিরতা তৈরি করা যাবে না। অতিবিপ্লবী চিন্তা করে অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টি করা অনুচিত।

মির্জা ফখরুল আরও বলেন, দেশে বর্তমান পরিস্থিতির দ্রুত পরিবর্তন সম্ভব নয়। তিনি বলেন, "সরকারের ভুলত্রুটি থাকবেই এবং দেশের অনেক সমস্যা রয়ে গেছে। তবে সংস্কারের প্রস্তাবগুলো কার্যকর হলে ভালো কিছু হবে। গণতান্ত্রিক কাঠামোয় এগিয়ে যেতে পারলে দেশ সামনের দিকে অগ্রসর হবে।"

তিনি সবাইকে সাবধানতার সঙ্গে পরিস্থিতি মোকাবিলা করার পরামর্শ দিয়ে বলেন, ধৈর্যের অভাব থেকে কোনো নৈরাজ্য সৃষ্টি করা যাবে না। পরিবর্তন ধীরে ধীরে আসবে বলেও তিনি মন্তব্য করেন।

Header Ad
Header Ad

মার্কিন নাগরিকত্ব হারাচ্ছেন ১৬ লাখ ভারতীয়!

১৬ লাখ ভারতীয় হারাতে যাচ্ছেন মার্কিন নাগরিকত্ব। ছবি: সংগৃহীত

দ্বিতীয় মেয়াদে মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নিয়ে বেশ কিছু নির্বাহী আদেশে সই করেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। এরই অংশ হিসেবে যুক্তরাষ্ট্র থেকে অভিবাসী বিতারণ করতে ফেরত পাঠাতে বেশ কিছু সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন তিনি। ট্রাম্পের ওই কঠোর পদক্ষেপে মার্কিন নাগরিকত্ব হারাতে যাচ্ছেন ১৬ লাখ ভারতীয়। 

ইতিমধ্যে জন্মসূত্রে মার্কিন নাগরিকত্ব নীতি বাতিলের কার্যক্রম শুরু সংক্রান্ত আদেশে সই করেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। সোমবার (২০ জানুয়ারি) শপথ নেওয়ার পরে এ–সংক্রান্ত নির্বাহী আদেশে সই করেন তিনি। আদেশটি বাস্তবায়ন হলে আর কেউ যুক্তরাষ্ট্রে জন্মগ্রহণ করলে জন্মসূত্রে দেশটির নাগরিকত্ব পাবেন না।

মার্কিন প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব গ্রহণের আগেই ট্রাম্প এ নীতি পরিবর্তনের ঘোষণা দিয়েছিলেন। গত বছর তিনি এ নীতিকে ‘হাস্যকর’ বলেন। অথচ দেড় শ বছরের পুরোনো এই নীতি দেশটিতে সাংবিধানিক অধিকার হিসেবে স্বীকৃত। মার্কিন সংবিধানের ১৪তম সংশোধনী অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্রে জন্মগ্রহণকারী এবং নাগরিকত্বের শর্ত পূরণকারী সব ব্যক্তি দেশটির এবং যে অঙ্গরাজ্যে জন্মগ্রহণ করেছেন ওই রাজ্যের নাগরিক হবেন। ফলে শুধু নির্বাহী আদেশেই রাতারাতি এই নীতি পরিবর্তন হচ্ছে না বরং নীতি বাতিলে কার্যক্রম শুরু হলো।

পরিস্থিতি বলছে, ডোনাল্ড ট্রাম্প একঘুঁয়ে সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন থেকে ফিরে আসবেন না। অন্যান্য প্রক্রিয়া শেষে তিনি জন্মসূত্রে মার্কিন নাগরিকত্ব নীতি বাতিল করবেন। এতে ১৬ লাখ ভারতীয় মার্কিন নাগরিকত্ব হারাতে যাচ্ছেন।

২০২২ সালে মার্কিন আদমশুমারি বিশ্লেষণ করে দেশটির অন্যতম জরিপ প্রতিষ্ঠান পিউ রিসার্চ জানায়, যুক্তরাষ্ট্রে প্রায় ৪৮ লাখ ভারতীয়-আমেরিকান বসবাস করছেন। এর মধ্যে ৩৪ শতাংশ অর্থাৎ ১৬ লাখের জন্ম যুক্তরাষ্ট্রে। ফলে তারা আইনত যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক। এই আইনটি চূড়ান্তভাবে বাতিল হলে এই ১৬ লাখ ভারতীয়-আমেরিকান নাগরিকত্ব হারাবেন।

গত বছরের ডিসেম্বরে মার্কিন সংবাদমাধ্যম এনবিসিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প বলেন, এই নিয়ম বদলাতে হবে। যদি জন্মসূত্রে নাগরিকত্বের নিয়ম রাখা হয় তাহলে অভিবাসনপ্রত্যাশী অনেক পরিবারের সন্তানদের রেখে তাদের বাবা-মাকে ফেরত পাঠাতে হবে। আমি পরিবারগুলোকে আলাদা করতে চাই না। কাজেই পরিবার না ভাঙার একমাত্র উপায় হলো তাদের সবাইকে একসঙ্গে ফেরত পাঠানো।

 

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

সমন্বয়ক রাফির ওপর হামলা, থানায় অভিযোগ
ন্যূনতম সংস্কার শেষে নির্বাচন চাই: মির্জা ফখরুল
মার্কিন নাগরিকত্ব হারাচ্ছেন ১৬ লাখ ভারতীয়!
কোন ভিটামিনের অভাবে মহিলারা খিটখিটে হয়ে যান? পুরুষরা জেনে রাখুন
গুম-খুনে জড়িতরা নির্বাচনে প্রার্থী হতে পারবে না: বদিউল আলম
রিসোর্টে ঢুকে ৮ যুগলের বিয়ে দিলো গ্রামবাসী; সমালোচনার ঝড়
অশ্লীল ভিডিও বানিয়ে ব্লাকমেইল করে টাকা দাবি, স্কুলছাত্রী গ্রেফতার
ভারত থেকে ৫ হাজার ৭৫ টন চাল কিনল সরকার, কেজি ৫৬ টাকা
শপথ নেয়ার পর যেসব গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিলেন ট্রাম্প
হতাশ হলে গলায় দড়ি দিয়ে মরে যেতাম: তাসকিন
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা থেকে বেরিয়ে যাওয়ার নির্বাহী আদেশে ট্রাম্পের সই
যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন স্থানে ট্রাম্প বিরোধী বিক্ষোভ
চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতি থেকে আজীবনের জন্য বহিষ্কার হলেন নিপুণ
ইসরায়েলপন্থি মার্কো রুবিওকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ দিলেন ট্রাম্প
ক্যাপিটল হিলে দাঙ্গায় জড়িত ১৫০০ জনকে ক্ষমা করলেন ট্রাম্প
আন্দোলনে ছাত্রদের ওপর প্রকাশ্যে গুলি, সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান গ্রেপ্তার
দায়িত্ব নিয়েই বাইডেন আমলের ৭৮টি আদেশ বাতিল করলেন ট্রাম্প
ডোনাল্ড ট্রাম্পের দ্বিতীয়বারের শপথ: নতুন আমেরিকার সূচনা
সুইজারল্যান্ডের উদ্দেশে ঢাকা ছেড়েছেন প্রধান উপদেষ্টা
মতপ্রকাশের স্বাধীনতায় কাউকে হয়রানি করা যাবে না : জামায়াত আমির