শনিবার, ১১ মে ২০২৪ | ২৮ বৈশাখ ১৪৩১
Dhaka Prokash

ট্যুরিজমের পোকা

ইদানিং অনেকেরই মাথায় ট্যুরিজমের পোকাটা ঢুকেছে। সব বয়সের, সব পেশার মানুষ বেশ আক্রান্ত হচ্ছে এর দ্বারা। আলোচনায় মেতে উঠেছেন সবাই। বেশ সমঝদারের মতো একে নিয়ে ভালো ভালো কথা বলছেন, এর ভবিষ্যত নিয়ে বক্তৃতাও করছেন সরকারের নানা কর্তাব্যক্তি, গুণীজন, শিক্ষক, সাধারণ মানুষ এমনকি সাধারণ যাদের আমরা মনে করি তেমন কিছু বুঝেন না, তারাও। কারণ অনেকেই আজকাল ট্যুরিজম বোঝার জন্য চেষ্টা করছেন।

পত্র পত্রিকা, রেডিও টেলিভিশন বা সামাজিক গণমাধ্যমে আজকাল ট্যুরে যাওয়ার বেশ বিজ্ঞাপন লক্ষ্য করা যায়। দেশে-বিদেশে নানা ধরনের সুযোগ-সুবিধা সম্বলিত দলীয় গাইডেড ট্যুরের বিজ্ঞাপন। দেশে কত ট্যুর অপারেটর তা কারো জানা নেই। এদের সঙ্গে অনেক মানুষ ট্যুরে যাচ্ছেন। ফলে অনেক মানুষের ট্যুরিজম সম্বন্ধে বেশ একটা ধারণা হচ্ছে। বিদেশে দামি ট্যুর করাটাকে কেউ কেউ স্ট্যাটাস সিমবল বলেও মনে করেন। আরও মজার বিষয় হলো এখন অনেকের ছেলেমেয়ে, আত্মীয়স্বজন এই বিষয়ে পড়ালেখা করছেন।

এমন অনেকে আছেন, যারা পর্যটন বিষয়ে পড়ালেখা না করে কিংবা কিছুটা ট্রেনিং নিয়ে হোটেল, রেস্টুরেন্ট, ট্যুরিস্ট কোচ, ট্যুর অপারেটর, ট্রাভেল এজেন্ট, হজ এজেন্ট ইত্যাদিতে চাকরি করছেন। অনেকে সফলতার সঙ্গে এই বিষয়ক ব্যবসা করেন। অন্যদিকে অনেকে এইসব তাকিয়ে তাকিয়ে দেখছেন এবং ভাবছেন: কী হচ্ছে এসব! সব মিলিয়ে সমাজ এখন কেমন যেন ট্যুরিজমের সঙ্গে জড়িয়ে পড়ছে।

বাংলাদেশের জিডিপিতে ২০১৯ সালে ৭৭ হাজার ৩০০ কোটি টাকার অবদান রাখছে ট্যুরিজম, কর্মসংস্থান দিয়েছে সাড়ে ১৮ লক্ষ মানুষের এবং পর্যটন রপ্তানি করেছে ২ হাজার ৮০০ কোটি টাকার বেশি। বাংলাদেশের অর্থনীতিতে হঠাৎ করে ট্যুরিজম এই অবদান রাখবে এটা আমরা অনেকেই ভাবিনি। বাংলাদেশের মানুষ ভ্রমণে টাকা খরচ করবে, এই শিল্পে কাজ করবে এবং বিদেশি পর্যটকরা এদেশে বেড়াতে আসবে - এসব আমাদের চিন্তায় নতুন খোরাক যোগাচ্ছে বৈকি! অর্থনীতির এই নতুন বাঁক আমাদের নতুন মহাসড়কের দিকে নিয়ে যাচ্ছে। ট্যুরিজমের সঙ্গে সম্পৃক্ত সরকারের বেশ কিছু প্রতিষ্ঠান, তাদের কর্মকর্তা-কর্মচারী, মন্ত্রী-আমলা এবং অন্যান্য অনেক মানুষ এর সঙ্গে পথ চলছে। এত মানুষ যার সঙ্গে চলে, তার পোকা মাথায় না ঢুকে কি পারে?

ট্যুরিজমের পোকা দুই ধরনের। এক ধরনের পোকা রাইজোবিয়াম ব্যাকটেরিয়ার (যারা বাতাস থেকে ধরে নাইট্রোজেনকে মাটিতে জমা করার) মতো যারা মানুষের মাথায় ইতিবাচক বুদ্ধি যোগায়। আরেক ধরনের পোকা ঘুনপোকার মতো সব বুদ্ধিগুলোতে কেটেকুটে নষ্ট করে দেয়। আমাদের মাথায় এর দুটোই ঢুকেছে। তাই ট্যুরিজম নিয়ে ভিন্ন ও বিপরীত মতের অভাব নেই। যিনি যেভাবে পারছেন, ট্যুরিজমের উপর সওয়ার হচ্ছেন এবং বলছেন, উপদেশ দিচ্ছেন, আদেশও দিচ্ছেন। ফলে বিভ্রান্ত হচ্ছেন অনেক মানুষ, বিশেষত তরুণরা। তারা বুঝতে পারছেন না, কী করা উচিত, কী উচিত নয়। ট্যুরিজমের কোন পথ কার জন্য প্রযোজ্য। রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে অহরহ ভুল হচ্ছে। খোদ বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে যেখানে ট্যুরিজম পড়ানো হচ্ছে, সেখানেও তারা তরুণদের মাথায় ছেড়ে দিচ্ছেন ট্যুরিজমের ঘুনপোকা। অপ্রায়োগিক ও অসম্পূর্ণ কারিকুলাম বানাচ্ছেন, অযত্নে পড়াচ্ছেন এবং ফলে শিক্ষার্থীরা পথের সন্ধান পাচ্ছেন না। উদাহরণ দিলেই পরিষ্কার হবে: আমাদের দেশের অনেকগুলো বিশ্ববিদ্যালয় ৭০ শতাশ কোর্স ট্যুরিজম বহির্ভূত বিষয় এবং মাত্র ৩০ শতাংশ কোর্স ট্যুরিজমের সঙ্গে সম্পৃক্ত পড়িয়ে ব্যাচেলর ডিগ্রি দিচ্ছে। আর প্রায় সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেই ট্যুরিজম বলতে হোটেলকেই বুঝানো হচ্ছে। ভাবটা এরকম যে, হোটেলই ট্যুরিজমের মূল গন্তব্য। এই সকল ভাবনা আমাদের কোথায় নিয়ে যাবে কে জানে!

বিদ্যালয়গুলো স্বাধীন, তবে কী বিষয় নিয়ে পাঠদান করবে সে বিষয়ে স্বাধীনতা না দেখানোই ভালো। মত বিনিময়ের মাধ্যমে আমাদের নিজেদের এবং আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলের চাহিদা নিরূপণ করে ট্যুরিজম শিক্ষার বিষয়বস্তু নির্ধারণ করা জরুরি। শিক্ষার মান নির্ধারণের জন্য ইতোমধ্যে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) এক্রিডিটেশনের পদক্ষেপ নিয়েছে। তার সঙ্গে ট্যুরিজম কাউন্সিল গঠনের মাধ্যমে ট্যুরিজম বিষয়ে শিক্ষিত এবং প্রশিক্ষিতদের লাইসেন্স প্রদান করে একটি মানসম্মত পেশাজীবী শ্রেণি প্রতিষ্ঠা করা অত্যন্ত দরকারি। কারণ, এটা জাতির জীবন-মরণের সঙ্গে জড়িত।

আমাদের তরুণরা কী ভাবছেন? জাতিসংঘ বিশ্ব পর্যটন সংস্থা ১৬ থেকে ২৯ বছরের তরুণদের যুবা বলছে, যারা পৃথিবীর মোট পর্যটকদের প্রায় ২৩ শতাংশ। বিশ্ব পর্যটনে তাদের একটি শক্তিশালী ভূমিকা রয়েছে। এদের চোখে অফুরান স্বপ্ন, উদ্ভাবন, জয় ছিনিয়ে নেবার আকাঙ্ক্ষা এবং মুখে দীপ্তির হাসি ও বুকে বল নিয়ে এরা দুর্বার গতিতে এগিয়ে চলে। তাদের জীবনধারায় পর্যটনের মতো জীবনধর্মী কর্মকাণ্ডকে স্বাগত জানানোর কথা। একে বুকে ধারণ করে নতুন পরিবর্তনশীল পৃথিবীতে মর্যাদাশীল মানুষরূপে প্রতিষ্ঠা পাওয়ার কথা। তা-ই কি হচ্ছে? তারা কি সে পথে এগোচ্ছেন? নাকি ট্যুরিজমকে না জানার জন্য ঘুনপোকার দংশনে নির্বাসনে যাচ্ছেন?

যারা ট্যুরিজম নিয়ে বিভিন্ন পর্যায়ে যেমন ডিপ্লোমা, ডিগ্রি ও মাস্টার্স ডিগ্রি ইত্যাদি লেখাপড়া করছেন, তাদের অনেকের সঙ্গে আমার কথা হয়। আমার কেন যেন মনে হয়, এদের অনেকের মাথায়ই ট্যুরিজমের ঘুনপোকার বাস। নিজেদের হতাশার জালে জড়িয়ে নিরাশ করছে। এরা ভাবছে অন্যরা আমাদের চেয়ে ভালো। ট্যুরিজমকে এদের ধারণ করার কথা। কিন্তু ঘটছে তার বিপরীত ঘটনা। ধারণ করছে না এবং অন্যদের ট্যুরিজমের বিশাল জগৎ থেকে দূরে সরে যাওয়ার জন্য উদ্বুদ্ধ করছে। লক্ষ্য করেছি, তিনটি কারণ আছে এর পেছনে: প্রথমত যারা পড়াচ্ছেন, তারা একে ধারণ করেন না; দ্বিতীয়ত যে পরিবেশে পড়ানো হচ্ছে, সেখানে এর উপর ধারণা পরিষ্কার না থাকার জন্য এদের ভুল ধারণা দেওয়া হচ্ছে এবং তৃতীয়ত এদের বাড়ির পরিবেশ-প্রতিবেশ থেকে এই বিষয়ে পড়ার জন্য সমাদৃত হচ্ছে না। রাষ্ট্রের উচিত সমাজের এসব জায়গায় অবিলম্বে হস্তক্ষেপ করা এবং টেকসই সামাজিক সমাধান খোঁজা।

সাধারণের পাশাপাশি রাষ্ট্রের মাথায়ও ট্যুরিজমের পোকা বেশ বাসা বেঁধেছে। তবে কোন ধরনের পোকার পরিমাণ কত, তা নির্ণয় করা কঠিন। আবার এই পোকারা ঠিক কাদের মাথায় বাসা বেঁধেছে, তা-ও নির্ধারণ করা সহজ নয়। তবে আনন্দের বিষয় মন্ত্রী, এমপি, আমলা সবাই বলছেন এর সঙ্গে রাষ্ট্রের সম্পৃক্ততার কথা। কেন যেন মনে হয় বুঝে, দায়িত্ব নিয়ে, ভালোবেসে বলছেন এমন মানুষের সংখ্যা কম। আবার কেউ কেউ নিজের দুর্বল অবস্থানকে সবল করার জন্য বেশি বেশি বলছেন। তাতে যে তিনি ভুল বলছেন এও বুঝছেন না। এ নিয়ে কেউ কেউ হাসাহাসি করছেন, অন্যরা ভুল তথ্য পাচ্ছেন। সব মিলিয়ে খুব ফলপ্রসু কিছু হচ্ছে না। কারণ, গত ২ দশকে ট্যুরিজমের জন্য রাষ্ট্রের কয়েক হাজার কোটি টাকা ব্যয় হয়েছে। আমি যদি বলি একজন সাধারণ নাগরিক হিসেবে এর শ্বেতপত্র প্রকাশ করা হোক। কী উত্তর পাবো, জানি না। এরূপ মজার খেলা চলছে ট্যুরিজমের পোকার বদৌলতে।

কিছু কথা নিশ্চিত করে বলা যায়, ট্যুরিজমের পোকা মাথায় না ঢুকলে ২০১১ ও ২০১৬ সরকার পর্যটনবর্ষ (Tourism Year) ঘোষণা করত না; ২০১৩ সালে ট্যুরিস্ট পুলিশের সৃষ্টি করতো না। পর্যটনের মহাপরিকল্পনা গ্রহণ, টেকনাফে সাবরাঙ প্রকল্প গ্রহণ, সোনাদিয়া বিশেষ অর্থনৈতিক ট্যুরিজম জোন তৈরি, সরকারি বেশ কিছু বিশ্ববিদ্যালয়ে ট্যুরিজমে উচ্চশিক্ষা চালুসহ উচ্চ মাধ্যমিক ও ডিপ্লোমা স্তরে ট্যুরিজম শিক্ষা বাস্তবায়ন করা ইত্যাদি মোটেও হতো না। কিন্তু সরকারের প্রতিনিধি হিসেবে যে সকল আমলা-কর্মচারীরা এসবের দায়িত্বে, তারা উদাসীন, নির্বিকার। দীর্ঘসূত্রিতার জন্য ট্যুরিজমের কলেজে বাস্তবায়িত হচ্ছে না, ডিপ্লোমা স্তরে শিক্ষক নিয়োগ না করে এবং পাঠ্যবই ছাড়া গত চার বছরে ছেলেমেয়েদের হেনস্তা করা হলো! এখন দরকার অবিলম্বে এর মানোন্নয়ন ও উৎকর্ষ সাধনের। তা না হলে প্রতিযোগিতামূলক বাজারে আমাদের ট্যুরিজম মুখ থুবড়ে পড়বে। তা নিয়ে উন্নয়নের সকল যুদ্ধযাত্রা ব্যর্থ হবে।

ট্যুরিজমের রাইজোবিয়াম পোকা বেশি করে উৎপাদন করা দরকার। তা না হলে ঘুনপোকাদের মোকাবিলা করা যাবে না। এ জন্য তরুণদের মুক্তমন নিয়ে, গা ঝাড়া দিয়ে, সৃজনশীলতার ব্রত নিয়ে এগিয়ে আসতে হবে এবং পর্যটনের সঙ্গে নিজেদের যুক্ত করতে হবে। শিক্ষা গ্রহণ, দক্ষতা বৃদ্ধি, মানসিক দৃঢ়তা এবং ইতিবাচক সামাজিক পরিবর্তনের দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে পথে নামতে হবে। ভুলে গেলে চলবে না যে, এ বিপ্লব সৃষ্টির, আনন্দের ও উন্নয়নের। এটি কোনো পক্ষপাতদুষ্ট বা রাজনৈতিক মতাদর্শের নয় বরং সর্বজনীন।

রাষ্ট্রের প্রতিটি প্রতিষ্ঠানকে প্রত্যক্ষভাবে এগিয়ে আসতে হবে। বিদেশে প্রত্যেকটি দূতাবাসে একজন করে ট্যুরিজম অ্যাটাচি দিয়ে বাংলাদেশকে বিশেষভাবে প্রমোশনের পদক্ষেপ নেওয়া দরকার। বিদেশি পর্যটকদের আকৃষ্ট করার জন্য এটি অত্যন্ত জরুরি। প্রয়োজনে দেশের বিশেষজ্ঞ, গবেষক, ট্যুর অপারেটর, হোটেল মালিক, ট্রাভেল এজেন্টসহ প্রয়োজনীয় যেকোনো বেসরকারি প্রতিষ্ঠানকে সঙ্গে নিতে হবে। যুব ও ক্রীড়া উন্নয়ন মন্ত্রণালয়কে এগিয়ে এসে ক্রীড়া পর্যটন, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কে স্বাস্থ্য পর্যটন, রেল মন্ত্রণালয়কে রেল পর্যটন, কৃষি মন্ত্রণালয়কে কৃষি পর্যটন, শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে শিক্ষা পর্যটন, স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়কে কমিউনিটিভিত্তিক গ্রাম পর্যটন, নৌপরিবহণ মন্ত্রণালয়কে জলাভূমি পর্যটন, শিশু ও মহিলা বিষয়ক মন্ত্রণালয়কে শিশু পর্যটন, সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়কে ভাষা পর্যটন, প্রত্নপর্যটন, উৎসব পর্যটন, জীবনধারা পর্যটন, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়কে মুক্তিযুদ্ধ পর্যটন ইত্যাদিতে প্রণোদনা দিতে হবে। পর্যটন মন্ত্রণালয়কে সমন্বয়কের ভূমিকা পালন করতে হবে, অর্থ মন্ত্রণালয়কে অর্থের যোগান ও আইন মন্ত্রণালয়কে আইনি সহায়তা দিতে হবে। বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ডকে আইনের মাধ্যমে প্রদত্ত ম্যান্ডেটগুলোকে অক্ষরে অক্ষরে পালন করতে হবে। মনে রাখতে হবে, পর্যটন কোন একটি মন্ত্রণালয়ের কাজ নয়। সকলের কাজের মধ্যে যতটুকু পর্যটন পড়ে, ততটুকুই বাস্তবায়ন করতে হবে।

আমরা চাই দেশে একটি পর্যটন অর্থনীতি গড়ে তুলতে। ট্যুরিজমের কাছে আশ্রয় নেওয়া ছাড়া আগামী দিনে অর্থনীতি, উন্নয়ন কিছুই টেকসই হবে না, টিকবে না। তাই সকলের মাথায় ট্যুরিজমের রাইজোবিয়াম জাতীয় পোকার ব্যাপক প্রবেশ এবং ঘুনপোকাদের ধ্বংস কামনা করছি। রাইজোবিয়াম জাতীয় ট্যুরিজম পোকাকে প্রয়োজনে সকলের মাথায় ইনোকুলেশন অর্থাৎ জোর করে প্রবেশ করানো দরকার। রাষ্ট্র, বুদ্ধিজীবী, গবেষক, মন্ত্রী, আমলা, আর্মি, পুলিশ ও সাধারণ মানুষ সকলের মাথা থেকে ট্যুরিজমের ঘুনপোকাদের মেরে ফেলতে হবে। বুদ্ধির গোড়ায় নাইট্রোজেন সমৃদ্ধ সার সরবরাহ করে সবুজ পর্যটন সৃষ্টির কোনো বিকল্প দেখি না।

মোখলেছুর রহমান: রেক্টর, বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ট্যুরিজম স্টাডিজ, ঢাকা

এসএন

Header Ad

যাত্রী উধাও, ভাড়া না পেয়ে জ্ঞান হারালেন রিকশাচালক

ছবি: সংগৃহীত

ধোলাইখাল থেকে কারওয়ান বাজার পর্যন্ত ভাড়া ঠিক হয় ২৫০ টাকা। শরীরের সব শক্তি দিয়ে প্যাডেল চেপে চেপে দুই ঘণ্টা পর যাত্রীসহ কারওয়ান বাজার পৌঁছান শারীরিকভাবে প্রতিবন্ধী রিকশাচালক ইবাদুল ইসলাম (৩৫)।

কারওয়ান বাজারে ওয়াসা ভবনের সামনে রিকশা থামাতেই, মুহূর্তেই নেমে দ্রুত রাস্তার অপর পাশে চলে যান আনুমানিক ২৫ বছর বয়সী ওই যাত্রী। আর তখনই রিকশা থেকে নামার কিছুক্ষণের মধ্যে জ্ঞান হারিয়ে রাস্তায় পড়ে যান ইবাদুল।

গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে কারওয়ান বাজার এলাকায় ওয়াসা ভবনের সামনে দিয়ে যাচ্ছিলেন একজন গনমাধ্যমকর্মী। ওই রিকশাচালককে তিনি রাস্তায় পড়ে যেতে দেখেন।

কাছে গিয়ে দেখেন, রাস্তায় পড়ে থাকা লোকটিকে ঘিরে আছেন বেশ কয়েকজন পথচারী। কেউ বাতাস করছেন, কেউ পানি ছিটিয়ে দিচ্ছেন।

প্রায় ১০ মিনিট পর জ্ঞান ফেরে অচেতন মানুষটির। লোকজন ধরাধরি করে তাকে রিকশার ওপর বসায়।

তিনি তখন জানান, তার নাম ইবাদুল, থাকেন যাত্রাবাড়ী এলাকার একটি রিকশা গ্যারেজে, গ্রামের বাড়ি মাদারীপুর।

কী হয়েছিল জানতে চাইলে হাউমাউ করে কেঁদে ওঠেন ইবাদুল। বলেন, 'ধোলাইখাল এলাকা থেকে একটি ছেলে কারওয়ান বাজার আসবে, ২৫০ টাকা রিকশা ভাড়া করে। কারওয়ান বাজার এসে রিকশা থামাই। হঠাৎ সে ভাড়া না দিয়ে দৌড়ে মেইন রোড পার হয়ে ওপাশে চলে যায়।'

ইবাদুল বলেন, 'আমি তার পিছু নিতে দৌড় দেই। কিন্তু আমার বাম পায়ে ছোটবেলা থেকে সমস্যা, জোর কম। দুই পা যেতেই পড়ে যাই। তারপর মনে নাই।'

এই রিকশাচালক জানান, পাঁচ সদস্যের পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি তিনি। আগে ইঞ্জিনচালিত রিকশা চালালেও, এখন পুলিশের বাধায় তা পারেন না। পায়ে চালানো রিকশা নিয়ে বের হন প্রতিদিন। জানালেন, গ্যারেজে রিকশার জমা ও অন্যান্য খরচ বাবদ তাকে প্রতিদিন দিতে হয় ১০০ টাকা।

আজ দুই ঘণ্টা রিকশা চালিয়ে এতদূর আসার পর ২৫০ টাকা ভাড়া না পেয়ে এবং নিজেদের শারীরিক দুর্বলতার জন্য চম্পট দেওয়া যাত্রীকে ধরতে না পারায়, কষ্টের তীব্রতায় অচেতন হয়ে পড়েন তিনি।

শেয়ারবাজারের স্থিতিশীলতায় বড় তহবিল পাচ্ছে আইসিবি

ছবি: সংগৃহীত

শেয়ারবাজারের স্থিতিশীলতা ধরে রাখতে ৫ হাজার কোটি টাকার তহবিল পেতে যাচ্ছে দেশের একমাত্র রাষ্ট্রায়ত্ত বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠান ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশ (আইসিবি)। স্টেকহোল্ডাররা মনে করছে, এতে শেয়ারবাজারের গতিশীলতা বৃদ্ধি পাবে।

জানা গেছে, ২০১০ সালের ভয়াবহ ধসের পর এখনো স্বাভাবিক হয়নি দেশের শেয়ারবাজার। মাঝেমধ্যে কিছু শেয়ারের দর সাময়িকভাবে বাড়লেও বেশিরভাগ সময়ে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন সাধারণ বিনিয়োগকারী। দর পতন শুরু হলে নানা ধরনের উদ্যোগ নেয় বিএসইসি। কিন্তু তাতে খুব একটা কাজ হচ্ছে না। সর্বশেষ হস্তক্ষেপেও কাজ হয়নি; দর পতন চলছেই। বাজারে গতি ফেরাতে সব পক্ষের সঙ্গে বৈঠক করে বিএসইসি। সেখান থেকে সংশ্লিষ্ট স্টেকহোল্ডাররা বাজারে তারল্য সরবরাহের পরামর্শ দেয়। এ সময় আইসিবির কাছেও বাজারে গতি আনতে সহায়তা চেয়েছে বিএসইসি। কারণ আগে দেশের শেয়ারবাজারে বড় ধরনের সহায়তা করে আসছিল আইসিবি।

আইসিবির পক্ষ থেকে জানানো হয়, এই মুহূর্তে বড় ধরনের বিনিয়োগ সহায়তা দেওয়ার মতো আর্থিক সামর্থ্য সংস্থাটির নেই। তবে অর্থসংস্থানের নানা চেষ্টা চলছে। বিভিন্ন সময়ে বাজারে সহায়তা করতে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর কাছ থেকে উচ্চ সুদে মেয়াদি আমানত নিয়েছে। পুঁজিবাজারের বর্তমান সংকট থেকে গতি ফেরাতে বিনিয়োগ বৃদ্ধি এবং এবং মেয়াদি ঋণ পরিশোধ করতে ৫ হাজার কোটি টাকার তহবিল চায় আইসিবি। কমিশনের পরামর্শে ইতোমধ্যে এ তহবিলের জন্য কাজ শুরু করেছে আইসিবি। শিগগিরই এ সংক্রান্ত প্রস্তাব মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে। মন্ত্রণালয়ের অনুমোদনের পর কেন্দ্রীয় ব্যাংক অর্থ ছাড় করবে।

এ বিষয়ে ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশের (আইসিবি) চেয়ারম্যান ড. সুবর্ণ বড়ুয়া বলেন, দেশের শেয়ারবাজারে যে কোনো সংকটে আইসিবি সহায়তা করে আসছে। বিভিন্ন ব্যাংকের কাছ থেকে মেয়াদি ঋণ নিয়েই সহায়তা করা হয়েছে। পুঁজিবাজারের জন্য সরকারের কাছ থেকে তহবিল সহায়তা পাওয়ার ব্যাপারে আমরা খুবই আশাবাদী।

তিনি বলেন, তহবিলের একটি অংশ পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ করা হবে। কিছু টাকা রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন ব্যাংকগুলোর উচ্চমূল্যের মেয়াদি ঋণ পরিশোধ করা হবে। আশা করি, দ্রুততম সময়ে আমরা এ ঋণ পাব। এটি পেলে বাজারে বড় ধরনের সাপোর্ট দেওয়া যাবে। মন্ত্রণালয়ের অনুমোদনের পর তহবিলের টাকা ছাড় করবে বাংলাদেশ ব্যাংক। শেয়ারবাজারের জন্য খুবই ইতিবাচক হবে।

অর্থনীতিবিদ ও পুঁজিবাজার বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক আবু আহমেদ বলেন, এ ধরনের তহবিল পুঁজিবাজারে গতি আনতে বিশেষ ভূমিকা রাখবে। তবে এটি দক্ষতার সঙ্গে ব্যবহারের পরামর্শ দেন তিনি।

নওগাঁয় ভুট্টাক্ষেতে পড়েছিল কৃষকের মরদেহ

ছবি : ঢাকাপ্রকাশ

নওগাঁর মান্দা উপজেলার কাঞ্চন সুইচগেট এলাকার একটি ভুট্টাক্ষেত থেকে আলেপ (৫০) নামে এক কৃষকের মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।

শনিবার (১১ মে) সকাল ১০ টার দিকে মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। নিহত আলেপ উপজেলার শ্রীরামপুর গ্রামের শমসের আলীর ছেলে।

মান্দা সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার জাকিরুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, সকালে ভুট্টাক্ষেতের পাশে মরদেহ দেখতে পায় স্থানীয়রা। এরপর থানায় খবর দিলে ঘটনাস্থল থেকে মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। উদ্ধারের সময় প্রাথমিকভাবে নিহতের শরীরে তেমন কোন আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি। মরদেহ উদ্ধার করে নওগাঁ সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে। ময়নাতদন্ত রিপোর্ট হাতে পেলে মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত হয়ে যাবে।

তিনি আরও জানান, এবিষয়ে এখন পর্যন্ত থানায় লিখিত অভিযোগ হয়নি। অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সর্বশেষ সংবাদ

যাত্রী উধাও, ভাড়া না পেয়ে জ্ঞান হারালেন রিকশাচালক
শেয়ারবাজারের স্থিতিশীলতায় বড় তহবিল পাচ্ছে আইসিবি
নওগাঁয় ভুট্টাক্ষেতে পড়েছিল কৃষকের মরদেহ
৩৭ শতাংশ হজযাত্রীর এখনো ভিসা হয়নি
ইসরায়েল বাহিনীর হামলায় গাজায় ৫০০ মসজিদ ধ্বংস, নিহত শতাধিক ইমাম
আওয়ামী লীগের শান্তি ও উন্নয়ন সমাবেশ আজ
নেইমার-ক্যাসেমিরোকে বাদ দিয়েই ব্রাজিলের কোপা আমেরিকার দল
আফগানিস্তানে ভারী বৃষ্টি ও বন্যায় ৬০ জনের প্রাণহানি
বৃষ্টি ভেজা স্নিগ্ধ বৈশাখের সকালের দেখা পেল রাজধানীবাসী
রোমাঞ্চকর লড়াইয়ে পাকিস্তানকে হারাল আয়ারল্যান্ড
বিএসএফের গুলিতে ২ বাংলাদেশি নিহত, দুদিন পর মরদেহ ফেরত
সব সরকারি হাসপাতালে অবৈধ ক্যান্টিন ও ফার্মেসি বন্ধের নির্দেশ
ফিলিস্তিনকে জাতিসংঘের পূর্ণ সদস্যপদ দেওয়ার প্রস্তাব পাস
আইপিএলের ইতিহাসে সেঞ্চুরির সেঞ্চুরি করলেন গিল
হোয়াইটওয়াশের পথে জিম্বাবুয়ে, চতুর্থ ম্যাচেও জিতল বাংলাদেশ
সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেনের সাবেক স্ত্রী নাসিম পারভীনের লাশ উদ্ধার
পানি শুন্য ছোটযমুনা নদীর বুকে ধান চাষ!
উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে বর্জনে অর্জন দেখছে বিএনপি
ফিলিস্তিনি ভাই-বোনদের রক্ষা করুন, বললেন পলক
বিএনপির সমাবেশ মানেই অগ্নি সন্ত্রাস ও রক্তপাত: ওবায়দুল কাদের