শনিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৪ | ৬ পৌষ ১৪৩১
Dhaka Prokash
Header Ad

ট্যুরিজমের পোকা

ইদানিং অনেকেরই মাথায় ট্যুরিজমের পোকাটা ঢুকেছে। সব বয়সের, সব পেশার মানুষ বেশ আক্রান্ত হচ্ছে এর দ্বারা। আলোচনায় মেতে উঠেছেন সবাই। বেশ সমঝদারের মতো একে নিয়ে ভালো ভালো কথা বলছেন, এর ভবিষ্যত নিয়ে বক্তৃতাও করছেন সরকারের নানা কর্তাব্যক্তি, গুণীজন, শিক্ষক, সাধারণ মানুষ এমনকি সাধারণ যাদের আমরা মনে করি তেমন কিছু বুঝেন না, তারাও। কারণ অনেকেই আজকাল ট্যুরিজম বোঝার জন্য চেষ্টা করছেন।

পত্র পত্রিকা, রেডিও টেলিভিশন বা সামাজিক গণমাধ্যমে আজকাল ট্যুরে যাওয়ার বেশ বিজ্ঞাপন লক্ষ্য করা যায়। দেশে-বিদেশে নানা ধরনের সুযোগ-সুবিধা সম্বলিত দলীয় গাইডেড ট্যুরের বিজ্ঞাপন। দেশে কত ট্যুর অপারেটর তা কারো জানা নেই। এদের সঙ্গে অনেক মানুষ ট্যুরে যাচ্ছেন। ফলে অনেক মানুষের ট্যুরিজম সম্বন্ধে বেশ একটা ধারণা হচ্ছে। বিদেশে দামি ট্যুর করাটাকে কেউ কেউ স্ট্যাটাস সিমবল বলেও মনে করেন। আরও মজার বিষয় হলো এখন অনেকের ছেলেমেয়ে, আত্মীয়স্বজন এই বিষয়ে পড়ালেখা করছেন।

এমন অনেকে আছেন, যারা পর্যটন বিষয়ে পড়ালেখা না করে কিংবা কিছুটা ট্রেনিং নিয়ে হোটেল, রেস্টুরেন্ট, ট্যুরিস্ট কোচ, ট্যুর অপারেটর, ট্রাভেল এজেন্ট, হজ এজেন্ট ইত্যাদিতে চাকরি করছেন। অনেকে সফলতার সঙ্গে এই বিষয়ক ব্যবসা করেন। অন্যদিকে অনেকে এইসব তাকিয়ে তাকিয়ে দেখছেন এবং ভাবছেন: কী হচ্ছে এসব! সব মিলিয়ে সমাজ এখন কেমন যেন ট্যুরিজমের সঙ্গে জড়িয়ে পড়ছে।

বাংলাদেশের জিডিপিতে ২০১৯ সালে ৭৭ হাজার ৩০০ কোটি টাকার অবদান রাখছে ট্যুরিজম, কর্মসংস্থান দিয়েছে সাড়ে ১৮ লক্ষ মানুষের এবং পর্যটন রপ্তানি করেছে ২ হাজার ৮০০ কোটি টাকার বেশি। বাংলাদেশের অর্থনীতিতে হঠাৎ করে ট্যুরিজম এই অবদান রাখবে এটা আমরা অনেকেই ভাবিনি। বাংলাদেশের মানুষ ভ্রমণে টাকা খরচ করবে, এই শিল্পে কাজ করবে এবং বিদেশি পর্যটকরা এদেশে বেড়াতে আসবে - এসব আমাদের চিন্তায় নতুন খোরাক যোগাচ্ছে বৈকি! অর্থনীতির এই নতুন বাঁক আমাদের নতুন মহাসড়কের দিকে নিয়ে যাচ্ছে। ট্যুরিজমের সঙ্গে সম্পৃক্ত সরকারের বেশ কিছু প্রতিষ্ঠান, তাদের কর্মকর্তা-কর্মচারী, মন্ত্রী-আমলা এবং অন্যান্য অনেক মানুষ এর সঙ্গে পথ চলছে। এত মানুষ যার সঙ্গে চলে, তার পোকা মাথায় না ঢুকে কি পারে?

ট্যুরিজমের পোকা দুই ধরনের। এক ধরনের পোকা রাইজোবিয়াম ব্যাকটেরিয়ার (যারা বাতাস থেকে ধরে নাইট্রোজেনকে মাটিতে জমা করার) মতো যারা মানুষের মাথায় ইতিবাচক বুদ্ধি যোগায়। আরেক ধরনের পোকা ঘুনপোকার মতো সব বুদ্ধিগুলোতে কেটেকুটে নষ্ট করে দেয়। আমাদের মাথায় এর দুটোই ঢুকেছে। তাই ট্যুরিজম নিয়ে ভিন্ন ও বিপরীত মতের অভাব নেই। যিনি যেভাবে পারছেন, ট্যুরিজমের উপর সওয়ার হচ্ছেন এবং বলছেন, উপদেশ দিচ্ছেন, আদেশও দিচ্ছেন। ফলে বিভ্রান্ত হচ্ছেন অনেক মানুষ, বিশেষত তরুণরা। তারা বুঝতে পারছেন না, কী করা উচিত, কী উচিত নয়। ট্যুরিজমের কোন পথ কার জন্য প্রযোজ্য। রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে অহরহ ভুল হচ্ছে। খোদ বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে যেখানে ট্যুরিজম পড়ানো হচ্ছে, সেখানেও তারা তরুণদের মাথায় ছেড়ে দিচ্ছেন ট্যুরিজমের ঘুনপোকা। অপ্রায়োগিক ও অসম্পূর্ণ কারিকুলাম বানাচ্ছেন, অযত্নে পড়াচ্ছেন এবং ফলে শিক্ষার্থীরা পথের সন্ধান পাচ্ছেন না। উদাহরণ দিলেই পরিষ্কার হবে: আমাদের দেশের অনেকগুলো বিশ্ববিদ্যালয় ৭০ শতাশ কোর্স ট্যুরিজম বহির্ভূত বিষয় এবং মাত্র ৩০ শতাংশ কোর্স ট্যুরিজমের সঙ্গে সম্পৃক্ত পড়িয়ে ব্যাচেলর ডিগ্রি দিচ্ছে। আর প্রায় সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেই ট্যুরিজম বলতে হোটেলকেই বুঝানো হচ্ছে। ভাবটা এরকম যে, হোটেলই ট্যুরিজমের মূল গন্তব্য। এই সকল ভাবনা আমাদের কোথায় নিয়ে যাবে কে জানে!

বিদ্যালয়গুলো স্বাধীন, তবে কী বিষয় নিয়ে পাঠদান করবে সে বিষয়ে স্বাধীনতা না দেখানোই ভালো। মত বিনিময়ের মাধ্যমে আমাদের নিজেদের এবং আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলের চাহিদা নিরূপণ করে ট্যুরিজম শিক্ষার বিষয়বস্তু নির্ধারণ করা জরুরি। শিক্ষার মান নির্ধারণের জন্য ইতোমধ্যে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) এক্রিডিটেশনের পদক্ষেপ নিয়েছে। তার সঙ্গে ট্যুরিজম কাউন্সিল গঠনের মাধ্যমে ট্যুরিজম বিষয়ে শিক্ষিত এবং প্রশিক্ষিতদের লাইসেন্স প্রদান করে একটি মানসম্মত পেশাজীবী শ্রেণি প্রতিষ্ঠা করা অত্যন্ত দরকারি। কারণ, এটা জাতির জীবন-মরণের সঙ্গে জড়িত।

আমাদের তরুণরা কী ভাবছেন? জাতিসংঘ বিশ্ব পর্যটন সংস্থা ১৬ থেকে ২৯ বছরের তরুণদের যুবা বলছে, যারা পৃথিবীর মোট পর্যটকদের প্রায় ২৩ শতাংশ। বিশ্ব পর্যটনে তাদের একটি শক্তিশালী ভূমিকা রয়েছে। এদের চোখে অফুরান স্বপ্ন, উদ্ভাবন, জয় ছিনিয়ে নেবার আকাঙ্ক্ষা এবং মুখে দীপ্তির হাসি ও বুকে বল নিয়ে এরা দুর্বার গতিতে এগিয়ে চলে। তাদের জীবনধারায় পর্যটনের মতো জীবনধর্মী কর্মকাণ্ডকে স্বাগত জানানোর কথা। একে বুকে ধারণ করে নতুন পরিবর্তনশীল পৃথিবীতে মর্যাদাশীল মানুষরূপে প্রতিষ্ঠা পাওয়ার কথা। তা-ই কি হচ্ছে? তারা কি সে পথে এগোচ্ছেন? নাকি ট্যুরিজমকে না জানার জন্য ঘুনপোকার দংশনে নির্বাসনে যাচ্ছেন?

যারা ট্যুরিজম নিয়ে বিভিন্ন পর্যায়ে যেমন ডিপ্লোমা, ডিগ্রি ও মাস্টার্স ডিগ্রি ইত্যাদি লেখাপড়া করছেন, তাদের অনেকের সঙ্গে আমার কথা হয়। আমার কেন যেন মনে হয়, এদের অনেকের মাথায়ই ট্যুরিজমের ঘুনপোকার বাস। নিজেদের হতাশার জালে জড়িয়ে নিরাশ করছে। এরা ভাবছে অন্যরা আমাদের চেয়ে ভালো। ট্যুরিজমকে এদের ধারণ করার কথা। কিন্তু ঘটছে তার বিপরীত ঘটনা। ধারণ করছে না এবং অন্যদের ট্যুরিজমের বিশাল জগৎ থেকে দূরে সরে যাওয়ার জন্য উদ্বুদ্ধ করছে। লক্ষ্য করেছি, তিনটি কারণ আছে এর পেছনে: প্রথমত যারা পড়াচ্ছেন, তারা একে ধারণ করেন না; দ্বিতীয়ত যে পরিবেশে পড়ানো হচ্ছে, সেখানে এর উপর ধারণা পরিষ্কার না থাকার জন্য এদের ভুল ধারণা দেওয়া হচ্ছে এবং তৃতীয়ত এদের বাড়ির পরিবেশ-প্রতিবেশ থেকে এই বিষয়ে পড়ার জন্য সমাদৃত হচ্ছে না। রাষ্ট্রের উচিত সমাজের এসব জায়গায় অবিলম্বে হস্তক্ষেপ করা এবং টেকসই সামাজিক সমাধান খোঁজা।

সাধারণের পাশাপাশি রাষ্ট্রের মাথায়ও ট্যুরিজমের পোকা বেশ বাসা বেঁধেছে। তবে কোন ধরনের পোকার পরিমাণ কত, তা নির্ণয় করা কঠিন। আবার এই পোকারা ঠিক কাদের মাথায় বাসা বেঁধেছে, তা-ও নির্ধারণ করা সহজ নয়। তবে আনন্দের বিষয় মন্ত্রী, এমপি, আমলা সবাই বলছেন এর সঙ্গে রাষ্ট্রের সম্পৃক্ততার কথা। কেন যেন মনে হয় বুঝে, দায়িত্ব নিয়ে, ভালোবেসে বলছেন এমন মানুষের সংখ্যা কম। আবার কেউ কেউ নিজের দুর্বল অবস্থানকে সবল করার জন্য বেশি বেশি বলছেন। তাতে যে তিনি ভুল বলছেন এও বুঝছেন না। এ নিয়ে কেউ কেউ হাসাহাসি করছেন, অন্যরা ভুল তথ্য পাচ্ছেন। সব মিলিয়ে খুব ফলপ্রসু কিছু হচ্ছে না। কারণ, গত ২ দশকে ট্যুরিজমের জন্য রাষ্ট্রের কয়েক হাজার কোটি টাকা ব্যয় হয়েছে। আমি যদি বলি একজন সাধারণ নাগরিক হিসেবে এর শ্বেতপত্র প্রকাশ করা হোক। কী উত্তর পাবো, জানি না। এরূপ মজার খেলা চলছে ট্যুরিজমের পোকার বদৌলতে।

কিছু কথা নিশ্চিত করে বলা যায়, ট্যুরিজমের পোকা মাথায় না ঢুকলে ২০১১ ও ২০১৬ সরকার পর্যটনবর্ষ (Tourism Year) ঘোষণা করত না; ২০১৩ সালে ট্যুরিস্ট পুলিশের সৃষ্টি করতো না। পর্যটনের মহাপরিকল্পনা গ্রহণ, টেকনাফে সাবরাঙ প্রকল্প গ্রহণ, সোনাদিয়া বিশেষ অর্থনৈতিক ট্যুরিজম জোন তৈরি, সরকারি বেশ কিছু বিশ্ববিদ্যালয়ে ট্যুরিজমে উচ্চশিক্ষা চালুসহ উচ্চ মাধ্যমিক ও ডিপ্লোমা স্তরে ট্যুরিজম শিক্ষা বাস্তবায়ন করা ইত্যাদি মোটেও হতো না। কিন্তু সরকারের প্রতিনিধি হিসেবে যে সকল আমলা-কর্মচারীরা এসবের দায়িত্বে, তারা উদাসীন, নির্বিকার। দীর্ঘসূত্রিতার জন্য ট্যুরিজমের কলেজে বাস্তবায়িত হচ্ছে না, ডিপ্লোমা স্তরে শিক্ষক নিয়োগ না করে এবং পাঠ্যবই ছাড়া গত চার বছরে ছেলেমেয়েদের হেনস্তা করা হলো! এখন দরকার অবিলম্বে এর মানোন্নয়ন ও উৎকর্ষ সাধনের। তা না হলে প্রতিযোগিতামূলক বাজারে আমাদের ট্যুরিজম মুখ থুবড়ে পড়বে। তা নিয়ে উন্নয়নের সকল যুদ্ধযাত্রা ব্যর্থ হবে।

ট্যুরিজমের রাইজোবিয়াম পোকা বেশি করে উৎপাদন করা দরকার। তা না হলে ঘুনপোকাদের মোকাবিলা করা যাবে না। এ জন্য তরুণদের মুক্তমন নিয়ে, গা ঝাড়া দিয়ে, সৃজনশীলতার ব্রত নিয়ে এগিয়ে আসতে হবে এবং পর্যটনের সঙ্গে নিজেদের যুক্ত করতে হবে। শিক্ষা গ্রহণ, দক্ষতা বৃদ্ধি, মানসিক দৃঢ়তা এবং ইতিবাচক সামাজিক পরিবর্তনের দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে পথে নামতে হবে। ভুলে গেলে চলবে না যে, এ বিপ্লব সৃষ্টির, আনন্দের ও উন্নয়নের। এটি কোনো পক্ষপাতদুষ্ট বা রাজনৈতিক মতাদর্শের নয় বরং সর্বজনীন।

রাষ্ট্রের প্রতিটি প্রতিষ্ঠানকে প্রত্যক্ষভাবে এগিয়ে আসতে হবে। বিদেশে প্রত্যেকটি দূতাবাসে একজন করে ট্যুরিজম অ্যাটাচি দিয়ে বাংলাদেশকে বিশেষভাবে প্রমোশনের পদক্ষেপ নেওয়া দরকার। বিদেশি পর্যটকদের আকৃষ্ট করার জন্য এটি অত্যন্ত জরুরি। প্রয়োজনে দেশের বিশেষজ্ঞ, গবেষক, ট্যুর অপারেটর, হোটেল মালিক, ট্রাভেল এজেন্টসহ প্রয়োজনীয় যেকোনো বেসরকারি প্রতিষ্ঠানকে সঙ্গে নিতে হবে। যুব ও ক্রীড়া উন্নয়ন মন্ত্রণালয়কে এগিয়ে এসে ক্রীড়া পর্যটন, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কে স্বাস্থ্য পর্যটন, রেল মন্ত্রণালয়কে রেল পর্যটন, কৃষি মন্ত্রণালয়কে কৃষি পর্যটন, শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে শিক্ষা পর্যটন, স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়কে কমিউনিটিভিত্তিক গ্রাম পর্যটন, নৌপরিবহণ মন্ত্রণালয়কে জলাভূমি পর্যটন, শিশু ও মহিলা বিষয়ক মন্ত্রণালয়কে শিশু পর্যটন, সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়কে ভাষা পর্যটন, প্রত্নপর্যটন, উৎসব পর্যটন, জীবনধারা পর্যটন, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়কে মুক্তিযুদ্ধ পর্যটন ইত্যাদিতে প্রণোদনা দিতে হবে। পর্যটন মন্ত্রণালয়কে সমন্বয়কের ভূমিকা পালন করতে হবে, অর্থ মন্ত্রণালয়কে অর্থের যোগান ও আইন মন্ত্রণালয়কে আইনি সহায়তা দিতে হবে। বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ডকে আইনের মাধ্যমে প্রদত্ত ম্যান্ডেটগুলোকে অক্ষরে অক্ষরে পালন করতে হবে। মনে রাখতে হবে, পর্যটন কোন একটি মন্ত্রণালয়ের কাজ নয়। সকলের কাজের মধ্যে যতটুকু পর্যটন পড়ে, ততটুকুই বাস্তবায়ন করতে হবে।

আমরা চাই দেশে একটি পর্যটন অর্থনীতি গড়ে তুলতে। ট্যুরিজমের কাছে আশ্রয় নেওয়া ছাড়া আগামী দিনে অর্থনীতি, উন্নয়ন কিছুই টেকসই হবে না, টিকবে না। তাই সকলের মাথায় ট্যুরিজমের রাইজোবিয়াম জাতীয় পোকার ব্যাপক প্রবেশ এবং ঘুনপোকাদের ধ্বংস কামনা করছি। রাইজোবিয়াম জাতীয় ট্যুরিজম পোকাকে প্রয়োজনে সকলের মাথায় ইনোকুলেশন অর্থাৎ জোর করে প্রবেশ করানো দরকার। রাষ্ট্র, বুদ্ধিজীবী, গবেষক, মন্ত্রী, আমলা, আর্মি, পুলিশ ও সাধারণ মানুষ সকলের মাথা থেকে ট্যুরিজমের ঘুনপোকাদের মেরে ফেলতে হবে। বুদ্ধির গোড়ায় নাইট্রোজেন সমৃদ্ধ সার সরবরাহ করে সবুজ পর্যটন সৃষ্টির কোনো বিকল্প দেখি না।

মোখলেছুর রহমান: রেক্টর, বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ট্যুরিজম স্টাডিজ, ঢাকা

এসএন

Header Ad
Header Ad

শেখ হাসিনা নিজ হাতে তার বাবাকে দ্বিতীয়বার হত্যা করেছে: গয়েশ্বর

ছবি: সংগৃহীত

সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজ হাতে তার বাবা শেখ মুজিবুর রহমানকে ‘দ্বিতীয়বার হত্যা করেছেন’ বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সাবেক মন্ত্রী গয়েশ্বর চন্দ্র রায়।

শনিবার (২১ ডিসেম্বর) দুপুরে ময়মনসিংহের হালুয়াঘাটে উত্তর জেলা বিএনপির সদস্য সালমান ওমর রুবেলের আয়োজনে ফ্রি চক্ষু ক্যাম্প অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।

১৫ আগস্টের কথা উল্লেখ করে গয়েশ্বর চন্দ্র বলেন, এক ১৫ আগস্টে (১৯৭৫ সাল) শেখ মুজিবুরের জানাজায় লোক পেলাম না, আর এত বছর পরে ১৫ আগস্টে (২০২৪ সাল) কোনো জায়গায় মাহফিলের আওয়াজ পেলাম না। এতে বলা যায়, শেখ হাসিনা নিজ হাতে তার বাবাকে দ্বিতীয়বার হত্যা করেছেন।

তিনি আরও বলেন, শেখ হাসিনা তার বাবাকে এমন মারা মেরেছে যে মসজিদে তার জন্য দোয়া করবে এমন লোকও খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। কারণ আওয়ামী লীগ তাদের নেতার প্রতি অকৃতজ্ঞ। ওদের কিন্তু বরকত ভালো না। যার কারণে তাদের ঝাঁকে ঝাঁকে দেশ থেকে পালাতে হয়েছে। আমি ভারত সরকারকে বলবো, আপনারা তো এতদিন দেশ চালাইলেন, এইবার ফেরত দেন। হালুয়াঘাট বর্ডার দিয়ে ফেরত দেন আমরা রিসিভ করব। আমরা কথা দিলাম আমরা আপনাদের ওপর ন্যায়বিচার করব।

বিএনপির এই নেতা বলেন, বন্ধুত্ব কি আওয়ামী লীগ ও শেখ হাসিনার সঙ্গে করবেন নাকি বাংলাদেশের ১৮ কোটি মানুষের সঙ্গে করবেন? ১৮ কোটি মানুষের সঙ্গে যদি বন্ধুত্ব হয় সেটা হবে প্রকৃত বন্ধুত্ব। সেটা দীর্ঘস্থায়ী হবে। শুধু একজনের সঙ্গে বন্ধুত্ব করলে কোনো লাভ হবে না। ভারতের সীমান্তবর্তী এলাকায় দাঁড়িয়ে বলছি স্বার্থ হাসিলের জন্য বন্ধুত্ব নয়, সার্বভৌমত্ব রক্ষার্থে বন্ধুত্ব রাখতে চাই। আমাদের স্বার্থে বিসর্জন দিয়ে নয়, কর্তৃত্বের মাধ্যমেও নয়, বন্ধুত্বের মাধ্যমে।

তিনি আরও বলেন, ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর আমরা স্বাধীনতা অর্জন করেছি, আর ৫ আগস্ট আমরা স্বৈরাচারমুক্ত বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করেছি। এই অর্জন আমাদের ধরে রাখতে হবে।

এ সময় গয়েশ্বর চন্দ্র রায় ঐতিহাসিক ৭ নভেম্বরের গুরুত্ব ও তাৎপর্য ব্যাখ্যা করে বলেন, শেখ মুজিবুর রহমান দেশে একদলীয় বাকশাল কায়েম করেছিলেন। এরপর তিনি মারা যাওয়ার পর দেশের মানুষ ৭ নভেম্বর একটি বিপ্লবের মাধ্যমে দেশে বহুদলীয় গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা করেছিলেন। যার নেতৃত্ব দিয়েছিলেন শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান।

বিএনপি নেতা সালমান ওমর রুবেল আয়োজিত এই ফ্রি চক্ষু ক্যাম্প অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সংগঠনিক সম্পাদক আবু ওয়াহাব আকন্দ ওয়াহিদ। এ সময় প্রায় ৩ হাজার চক্ষু রোগীকে প্রাথমিক চিকিৎসা ও ছানি পড়া রোগীদের বিনামূল্যে ছানি অপারেশনের জন্য সিলেকশন করা হয়।

Header Ad
Header Ad

চুয়াডাঙ্গায় অবৈধ যানবাহন বন্ধ না হলে গণপরিবহন বন্ধের ঘোষণা

চুয়াডাঙ্গায় অবৈধ যানবাহন বন্ধ না হলে গণপরিবহন বন্ধের ঘোষণা। ছবি: সংগৃহীত

চুয়াডাঙ্গায় সকল সড়ক ও আঞ্চলিক মহাসড়কে ব্যাটারিচালিত ভ্যান (পাখিভ্যান) ও  ইজিবাইক চলাচল বন্ধের দাবি জানিয়েছেন সড়ক পরিবহন মালিক শ্রমিক ঐক্য পরিষদ। আগামীকাল রোববারের মধ্যে প্রশাসন তাদের দাবি বাস্তবায়নে কার্যকর উদ্যোগ না নিলে সোমবার সকাল থেকে জেলার সকল পথে পরিবহন চলাচল বন্ধের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন।

শনিবার (২১ ডিসেম্বর) দুপুরে চুয়াডাঙ্গা জেলা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির কার্যালয়ে আয়োজিত  এক সংবাদ সম্মেলনে এই হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়।  সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক একেএম মঈন উদ্দিন লিখিত বক্তব্য উপস্থাপন এবং শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি এম জেনারেল ইসলাম কর্মসূচি ঘোষণা করেন।

এসময় তিনি আরও বলেন, ৫ আগস্টের আগে জেলায় ব্যাটারি চালিত ইজিবাইক,পাখিভ্যান, থ্রি হুইলার সহ অন্য অবৈধ যানগুলো যেভাবে চলাচল করতো, সেভাবেই তারা চলাচল করুক এই দাবিতে আজকের এই সংবাদ সম্মেলন। প্রশাসন বারবার প্রতিশ্রুতি দিয়ে তারা সেটা রক্ষা করেনি।

কর্মসূচি ঘোষণাকালে বলা হয়, ২৩ ডিসেম্বর সোমবার থেকে টানা দুইদিন পরিবহন চলাচল বন্ধের মধ্যে প্রশাসন যদি বসে সমাধানের উদ্যোগ না নেয়, তাহলে আগামী ২৬ ডিসেম্বর বৃহস্পতিবার থেকে অভ্যন্তরীণ পথের পাশাপাশি দূরপাল্লার সকল রুটে পরিবহন বন্ধ করে দেওয়া হবে। এসময় চুয়াডাঙ্গা জেলা মালিক শ্রমিক ঐক্য পরিষদের সভাপতি হাসান ইমাম বকুল, সাধারণ সম্পাদক আবুল কালাম সহ সকল নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

Header Ad
Header Ad

জুমার দিনে ফিলিস্তিনের মসজিদে আগুন দিল ইসরায়েলিরা

ছবি: সংগৃহীত

ফিলিস্তিনের পশ্চিম তীরে ইসরায়েলি বসতকারীরা একটি মসজিদে আগুন লাগিয়ে ভবনের দেওয়ালে বিদ্বেষমূলক স্লোগান লিখে গেছে। শুক্রবার (২১ ডিসেম্বর) জুমার দিন সকালে সালফিতের মারদা গ্রামে বার আল-ওয়ালিদাইন মসজিদে এ ঘটনা ঘটে।

এই ঘটনার ভিডিওতে দেখা যায়, মসজিদের সামনের দেয়ালে হিব্রু ভাষায় ‘প্রতিশোধ’, ‘আরবদের মৃত্যু হোক’সহ বিভিন্ন স্লোগান লিখে রেখেছেন ইসরায়েলি বসতি স্থাপনকারীরা। এ ছাড়া উত্তর পশ্চিম তীরের মারদা গ্রামের মসজিদের প্রবেশপথে কালো পোড়া দাগ দেখা গেছে। তবে আগুন বড় আকারে ছড়িয়ে পড়ার আগেই তা নেভানো হয়।

ইসরায়েলি পুলিশ জানিয়েছে, তারা ঘটনাস্থল থেকে সাক্ষ্য ও প্রমাণ সংগ্রহ করছে।

মারদা গ্রাম পরিষদের প্রধান নাসফাত আল-খুফাশ বলেন, শুক্রবার মারদা গ্রাম একটি পরিকল্পিত সন্ত্রাসী হামলায় জেগে উঠল। বসতিস্থাপনকারী গোষ্ঠী বীর আল-ওয়ালিদিন মসজিদে আগুন দেয়। বসতি স্থাপনকারী গোষ্ঠীগুলোর এই ধরনের আক্রমণ ধারাবাহিক ও পরিকল্পিত।

ইসরায়েলি পুলিশ ও নিরাপত্তা সংস্থা শিন বেত এক যৌথ বিবৃতিতে জানিয়েছে, তারা এই ঘটনাকে অত্যন্ত গুরুতর বলে মনে করে। দোষীদের কঠোর বিচার নিশ্চিত করতে তারা দৃঢ় পদক্ষেপ নেবে।

এদিকে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এই আক্রমণকে ইসরায়েলি বসতি স্থাপনকারীদের সংঘটিত অপরাধের ধারাবাহিক সর্বশেষ ঘটনা বলে নিন্দা জানিয়েছে। একই সঙ্গে ফিলিস্তিনিদের সুরক্ষায় সহায়তার জন্য জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের কাছে আবেদন জানিয়েছে।

জাতিসংঘের তথ্য মতে, অধিকৃত পশ্চিম তীর ও পূর্ব জেরুজালেমে ৩০ লাখ ফিলিস্তিনির মধ্যে ৭ লক্ষাধিক ইসরায়েলি বসবাস করে। ১৯৬৭ সালে এই দুটি অঞ্চল দখল করে নেয় ইসরায়েল। তবে বিশ্বের বেশিরভাগ দেশ এই দখলকৃত ভূমিতে গড়ে ওঠা ইসরায়েলি বসতিগুলোকে অবৈধ বলে মনে করে।

গত বছরের ৭ অক্টোবর হামাস যোদ্ধারা দক্ষিণ ইসরায়েলে আক্রমণ চালানোর পর থেকে পশ্চিম তীরে সহিংসতা বৃদ্ধি পেয়েছে।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

শেখ হাসিনা নিজ হাতে তার বাবাকে দ্বিতীয়বার হত্যা করেছে: গয়েশ্বর
চুয়াডাঙ্গায় অবৈধ যানবাহন বন্ধ না হলে গণপরিবহন বন্ধের ঘোষণা
জুমার দিনে ফিলিস্তিনের মসজিদে আগুন দিল ইসরায়েলিরা
গাইবান্ধায় বিএনপি-জামায়াত সংঘর্ষ, আহত অন্তত ১০
আশ্বস্ত করছি বাংলাদেশে জঙ্গিবাদ মাথাচাড়া দেবে না: প্রধান উপদেষ্টা
সত্যি কি থাপ্পড় মেরেছিলেন শাহরুখ, ৯ বছর পর মুখ খুললেন হানি সিং
মেয়ে থেকে ছেলেতে রূপান্তর, বগুড়ার শ্রাবণী এখন শ্রাবণ
বাড়ি ফেরার পথে সড়কে ঝরে গেল বাবা-ছেলের প্রাণ
ছাত্রলীগ নেতা মুক্তাদির শিক্ষার্থীদের হাতে আটক, থানায় সোপর্দ
এ দেশে মেজরিটি–মাইনরিটি বলে কিছু নেই: জামায়াতের আমির
আজ বছরের দীর্ঘতম রাত, সবচেয়ে ছোট দিন আগামীকাল
রাজনীতিবিদকে বিয়ে করতে চান ফারজানা সিঁথি
গুমের ঘটনায় ভারতের সম্পৃক্ততা পেয়েছে কমিশন
জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহীদ ও আহতদের প্রাথমিক তালিকা প্রকাশ
পাকিস্তানে জঙ্গি হামলায় ১৬ সেনা নিহত
বাধ্যতামূলক অবসরপ্রাপ্ত সচিব ইসমাইল বিমানবন্দরে গ্রেপ্তার
হামজাকে নিয়ে যা বললেন বাফুফে সভাপতি তাবিথ আউয়াল
বহু ভাষা, বহু সংস্কৃতি, বহু ধর্মের বিকাশে কাজ করতে চায় কমিশন: ফারুকী
অবৈধ অনুপ্রেবেশের অভিযোগে ত্রিপুরায় শিশুসহ ৬ বাংলাদেশি গ্রেফতার
টাঙ্গাইলে বাস-সিএনজির সংঘর্ষ: নিহত ২