বুধবার, ২৯ জানুয়ারি ২০২৫ | ১৫ মাঘ ১৪৩১
Dhaka Prokash
Header Ad

রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে সমন্বিত সহযোগিতা প্রয়োজন

বর্তমানে বাংলাদেশের আশ্রয়শিবিরগুলোতে সাড়ে ১২ লাখ নিবন্ধিত রোহিঙ্গা বসবাস করছে। দীর্ঘ ছয় বছর ধরে বাংলাদেশ এই বোঝা টেনে চলছে যা শেষ হওয়া জরুরি। এর আগে দু’বার প্রত্যাবাসনের উদ্যোগ নেওয়া হলেও রোহিঙ্গাদের অনীহা ও রাখাইন রাজ্যের নিরাপত্তা পরিস্থিতির কারণে তা বাস্তবায়িত হয়নি।

বৈশ্বিক সংকটের কারণে দাতাসংস্থা ও দেশগুলোর ত্রাণ তহবিলে চাপ পড়ায় রোহিঙ্গাদের জন্য সাহায্যের পরিমাণ কমে এসেছে এবং তা আগামীতে আরও কমে যাওয়ার আশঙ্কা তৈরি করছে। আন্তর্জাতিক সহায়তা কমে যাওয়ায় রোহিঙ্গাদের মধ্যে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। ত্রাণ সহায়তা কমে গেলে বাংলাদেশের একার পক্ষে এই বিপুল সংখ্যক রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে অনির্দিষ্টকালের জন্য খাদ্য ও আশ্রয় দেওয়া সম্ভব হবে না। রোহিঙ্গা ক্যাম্পের নিরাপত্তা পরিস্থিতিও দিনদিন খারাপ হচ্ছে এবং স্থানীয় জনগণের সাথে রোহিঙ্গাদের সম্পর্কের অবনতি ঘটছে। রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোতে সংঘটিত নানা ধরনের অপরাধ বাংলাদেশ ও আঞ্চলিক নিরাপত্তায় হুমকির সৃষ্টি করছে এবং ক্যাম্পের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ব্যয় বাড়ছে যা বাংলাদেশের অর্থনীতিতে চাপ ফেলছে। বাংলাদেশ সরকার বন্ধু রাষ্ট্র এবং দাতাসংস্থাগুলোর কাছে এই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আর্থিক সহায়তা চেয়েছে যা এখনো পাওয়া যায়নি।

সম্প্রতি রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে উদ্যোগী হয়ে মিয়ানমার গত ৮-৯ মার্চ সেদেশে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূতসহ ৮ দেশের ১১ জন কূটনীতিককে মিয়ানমারের মংডু ও সিতওয়ে শহরে রোহিঙ্গাদের জন্য নির্মিত অর্ন্তবর্তীকালীন ক্যাম্পসহ আশপাশের এলাকা সরেজমিনে দেখাতে নিয়ে যায়। এরপর, ১৫ মার্চ মিয়ানমারের ২২ সদস্যের প্রতিনিধি দল বাংলাদেশের কক্সবাজারে এসে ১৭৭টি পরিবারের ৪৮০ জন রোহিঙ্গার তথ্য যাচাই করে। ১৮ এপ্রিল কুনমিংয়ে চীনের মধ্যস্থতায় বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মধ্যে ত্রিপক্ষীয় বৈঠক অনুষ্ঠিত হয় এবং এর অংশ হিসেবে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের তৃতীয় এই উদ্যোগ নেওয়া হয়। এই বৈঠকের পর মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের পরিবেশ প্রত্যাবাসন উপযোগী কি না তা দেখার জন্য ২০ জন রোহিঙ্গাসহ ২৭ সদস্যের একটি প্রতিনিধি গত ৫ মে সেখানে যায়। রোহিঙ্গা প্রতিনিধিদলের সদস্যদের মংডু শহরের আশপাশের ১৫টি গ্রাম, পুনর্বাসনকেন্দ্র, ট্রানজিট কেন্দ্রসহ নানা অবকাঠামো দেখানো হয়েছে। তাদের সাথে যাওয়া শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মোহাম্মদ মিজানুর রহমান জানায় যে, তারা মংডু শহর ও গ্রামে গিয়ে সেখানকার রোহিঙ্গাদের সাথে কথা বলেছে, সেখানকার পরিবেশ অনেক ভালো। মংডু শহরে রোহিঙ্গারা অবাধে ঘুরছে ও কাজকর্মে ব্যস্ত রয়েছে। তিনি রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন নিয়ে আশাবাদী। রোহিঙ্গাদের আত্মবিশ্বাস বাড়াতে তাদের সরেজমিনে পরিস্থিতি দেখাতে এই সফরের ব্যবস্থা করা হয়। এর ধারাবাহিকতায় রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের পাইলট প্রকল্প নিয়ে আলোচনা করতে মিয়ানমারের একটি প্রতিনিধিদল মে মাসে বাংলাদেশ সফরে আসবে। সেসময় প্রতিনিধিদলটি প্রত্যাবাসন নিয়ে আস্থা বাড়াতে কক্সবাজারে রোহিঙ্গাদের সঙ্গে আলোচনা করবে। সবকিছু ঠিকমত চললে মে মাসে ১ হাজার ১৭৬ জন রোহিঙ্গার প্রথম দলটি নিয়ে প্রত্যাবাসন শুরু করতে চায় চীন ও মিয়ানমার। এ বছর আরও ৫ ধাপে প্রতিবারে ১ হাজার ২০০ জন করে ৬ হাজার রোহিঙ্গাকে ডিসেম্বর মাসের মধ্যে রাখাইনে ফিরিয়ে নেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে। এই পাইলট প্রকল্প নির্বিঘ্নে বাস্তবায়নের জন্য প্রত্যাবাসন ও অভ্যর্থনা কেন্দ্রগুলোতে আসিয়ান, ইউএনডিপি ও ইউএনএইচসিআরের প্রতিনিধিরা উপস্থিত থাকবে বলে জানা যায়। বর্তমান প্রত্যাবাসন উদ্যোগ ও সম্ভাব্য ছয় হাজার রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন করা সম্ভব হলে পরবর্তী করণীয় ঠিক করতে আগামী ডিসেম্বরে আরেকটা বৈঠক হবে।

মিয়ানমারের সামরিক জান্তার ওপর আন্তর্জাতিক চাপ বৃদ্ধির প্রেক্ষাপটে চীন কয়েক মাস ধরে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন নিয়ে তৎপর হয়ে উঠেছে। ২০২২ সালের ডিসেম্বরে চীনের বিশেষ দূত দেং সি জুন মিয়ানমার সফর করে। গত ৬ এপ্রিল তিনি ঢাকায় বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রসচিবের সাথে দেখা করেন। বাংলাদেশে নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন জানায় যে, চীন রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে প্রত্যাবাসন ত্বরান্বিত করতে বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মধ্যে ‘অবিচলভাবে মধ্যস্থতা’র কাজ করছে এবং প্রত্যাবাসনই রোহিঙ্গা সমস্যার একমাত্র সমাধান। চীনের রাষ্ট্রদূত আশা করে যে, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সমর্থন এবং বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের যৌথ প্রচেষ্টায় একটি টেকসই প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া শুরু হবে এবং তা হওয়া উচিত। পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন বলছেন যে, গত পাঁচ-ছয় মাসে মিয়ানমার পক্ষের ইতিবাচক মনোভাব দেখা যাচ্ছে, এ অবস্থা অপরিবর্তিত থাকলে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন দ্রুত হবে বলে আশা করা যায়। ৪ মে চীনা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয় যে, চীন বাংলাদেশের সঙ্গে মিয়ানমারের আরও বন্ধুত্বপূর্ণ ও সহযোগিতামূলক দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক চায়।

রাখাইনের পরিস্থিতি বুঝতে হলে রোহিঙ্গাদেরকে এই প্রত্যাবাসনের উদ্যোগকে স্বাগত জানানো প্রয়োজন নচেৎ এই সংকট আরও দীর্ঘায়িত হবে যা কারো কাম্য নয়। অনির্দিষ্টকাল বাংলাদেশে থেকে রোহিঙ্গাদের পক্ষে মিয়ানমারের সুযোগ সুবিধা ও নাগরিকত্ব নিশ্চিত করা বাস্তবসম্মত হবে না— কারণ গত ছয় বছরে তা সম্ভব হয়নি। রোহিঙ্গাদেরকে মিয়ানমারে ফিরে গিয়ে সেখানকার পরিস্থিতির সাথে মানিয়ে এবং স্থানীয় জনগণের সাথে সুসম্পর্ক স্থাপনের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক সংস্থা ও জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে তাদের অধিকার আদায়ের প্রচেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে। রাখাইনদের সাথে মিলেমিশে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে যুগ যুগ ধরে বসবাস করতে হবে তাই তাদেরকে সেভাবে প্রস্তুতি নিতে হবে। মংডুতে রোহিঙ্গাদের স্বাধীন ব্যবসা–বাণিজ্য এবং মডেল ভিলেজ প্রতিষ্ঠার বিষয়ে কক্সবাজারের আশ্রয়শিবিরে থাকা রোহিঙ্গাদের সচেতন করা গেলে প্রত্যাবাসনে তাদের আগ্রহ বাড়বে বলে আশা করা যায়।

রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে ফেরার পর তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে জাতিসংঘ, আসিয়ান বা বাংলাদেশের বন্ধু কোনো রাষ্ট্রের উপস্থিতির প্রয়োজন হবে কি না কিংবা তাদের ভূমিকা কী হবে সে বিষয়ে সুষ্পষ্ট কিছু জানা যায়নি। আসিয়ান মিয়ানমারে মানবিক সহায়তা প্রদান অব্যাহত রাখার জন্য একটি মূল্যায়ন প্রক্রিয়া চূড়ান্ত করার কাজ করছে। এর মাধ্যমে কতজন মানুষের সাহায্যের প্রয়োজন, কোথায় এবং কি সাহায্যের প্রয়োজন তা অন্তর্ভুক্ত থাকবে। রোহিঙ্গারা মিয়ানমারে ফিরে গেলে তাদেরকেও এই উদ্যোগের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।

দূরদৃষ্টি সম্পন্ন রোহিঙ্গা নেতাদের সাথে নিয়ে রোহিঙ্গাদের এই প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণে উদ্বুদ্ধ করতে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেওয়া দরকার। এই প্রেক্ষিতে দাতাগোষ্ঠী ও রোহিঙ্গা স্বার্থরক্ষায় কর্মরত সংস্থাগুলো ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে এগিয়ে আসতে হবে। নিজেদের মধ্যে প্রয়োজনীয় সমন্বয়ের মাধ্যমে তারা এই কার্যক্রমে সহায়তা করতে সক্ষম।

বাংলাদেশ চলমান এই দীর্ঘমেয়াদী মানবিক সংকট উত্তরণে দায়িত্ববোধের পরিচয় দিয়েছে। সবদিক বিবেচনা করে পরিবারভিত্তিক এই প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া রোহিঙ্গাদেরকে তাদের নিজ দেশে ফিরে যেতে আত্মবিশ্বাস যোগাবে এবং একটা আস্থার পরিবেশ সৃষ্টি হবে। এই চলমান উদ্যোগে জাতিসংঘ এবং পশ্চিমা দেশগুলোকে সাথে নেওয়া না হলেও জাপানের সাথে মিয়ানমারের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক থাকায় জাপান প্রত্যাবাসন সংক্রান্ত এই মানবিক উদ্যোগে পশ্চিমা বিশ্বের মুখপাত্র হিসেবে সমন্বয়কের কাজ করতে পারে। রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন শুরু হওয়ার পর প্রথম দলের মিয়ানমারে অবস্থানকালীন কী সমস্যা হচ্ছে সেটা জেনে এই প্রক্রিয়া এগিয়ে নিতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপের বিষয়ে ধারণা পাওয়া যাবে।

আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে রাখাইনের জনগনের সাথে রোহিঙ্গাদের সুসম্পর্ক স্থাপন ও সহবস্থান নিশ্চিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার ব্যাপারে কাজ করতে হবে। ২০১৭ সালে মিয়ানমার সরকার, রাখাইনের জনগণ ও রাজনৈতিক দলগুলোর রোহিঙ্গাদের প্রতি যে কট্টর মনোভাব ও বিরূপ ধারণা ছিল গত ছয় বছরে তা কিছুটা হলেও ইতিবাচক হয়েছে যা আরাকান আর্মি ও এন ইউ জি’র বক্তব্য থেকে জানা যায়। রাতারাতি এই মনোভাব পরিবর্তন সম্ভব না তবে ইতিবাচক দিকে তা চলমান থাকলে একদিন তা বদলে যাবেই।

ইউএনএইচসিআর রোহিঙ্গাদেরকে আত্মনির্ভর হওয়ার জন্য প্রশিক্ষণ চলমান রাখবে বলে জানিয়েছে যা তাদের পেশাগত দক্ষতা বৃদ্ধি করে রখাইনের অর্থনীতিতে ভূমিকা রাখতে সহায়তা করবে। রাখাইনের আর্থিক ও সামাজিক পরিস্থিতির উন্নতি হলে সেখানে কর্ম পরিবেশ সৃষ্টি হবে, অর্থনৈতিক স্বাচ্ছন্দ্য ফিরে এলে এই দুই সম্প্রদায়ের মধ্যে বিরাজমান বৈরি মনোভাব কমে যাবে। এই পরিবেশ দ্রুত সৃষ্টি করতে হলে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সহায়তা জরুরি। রোহিঙ্গারা মিয়ানমারে ফিরে গেলে দাতাগোষ্ঠী ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে প্রথম দিকে আরাকানে তাদের এই কর্মকাণ্ড চালিয়ে যেতে হবে। আশা করা যায় যে, মিয়ানমার সরকার ও আরাকানের রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে সেখানে মানবিক কার্যক্রম পরিচালনার বিষয়ে তারা তাদের চুক্তি নবায়ন করে কিংবা নতুন করে চুক্তি করে মানবিক সাহায্য প্রদান অব্যাহত রাখবে। বর্তমান পরিস্থিতিতে সবাইকে যার যার অবস্থানে থেকে এই প্রক্রিয়ায় কীভাবে সহায়তা করা যায় সে বিষয়ে সর্বতোভাবে চেষ্টা করতে হবে।

পাইলট প্রকল্পটি যেভাবে শুরু হয়েছে সেই পথ অনুসরণ করে এই প্রক্রিয়া যেন সফলতার মুখ দেখে এবং বাংলাদেশে অবস্থানরত ১.২ মিলিয়ন রোহিঙ্গা স্বেচ্ছায় তাদের নিজ বাসভূমে ফিরে যেতে পারে তার জন্য সকল পক্ষকে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নিতে হবে। বৈশ্বিক এই সংকট বৈশ্বিকভাবে মোকাবিলা করা হোক এবং বাংলাদেশকে এই সংকট থেকে পরিত্রাণের জন্য সবার আন্তরিক সমর্থন প্রয়োজন।

ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অবসরপ্রাপ্ত) হাসান মো. শামসুদ্দীন: মিয়ানমার ও রোহিঙ্গাবিষয়ক গবেষক

আরএ/

Header Ad
Header Ad

আওয়ামী লীগের সম্পৃক্ততা রেলের আন্দোলনে: নেতৃত্বে ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক রাব্বানির শ্বশুর

ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশ রেলওয়ের রানিং স্টাফদের বিশেষ সুবিধা পুনর্বহালের দাবিতে সোমবার (২৭ জানুয়ারি) মধ্যরাত থেকে শুরু হওয়া কর্মবিরতির ফলে সারাদেশে রেল চলাচল কার্যত অচল হয়ে পড়েছে। রানিং স্টাফদের মধ্যে ট্রেনচালক, গার্ড, সহকারী চালক এবং টিটিই অন্তর্ভুক্ত, যারা ট্রেন পরিচালনার সঙ্গে সরাসরি জড়িত। এই কর্মীদের সংখ্যা প্রায় দুই হাজার। তাদের দাবি, ব্রিটিশ আমল থেকে চলে আসা মাইলেজসহ অন্যান্য অর্থনৈতিক সুবিধাগুলো পুনরায় কার্যকর করতে হবে।

এই আন্দোলনের নেতৃত্বে থাকা এবিএম শফিকুল আলম ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানির শ্বশুর। তিনি বাংলাদেশ রেলওয়ে রানিং স্টাফ ও শ্রমিক-কর্মচারী ইউনিয়নের সাংগঠনিক সম্পাদক। তার রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে, কারণ তিনি আওয়ামী লীগ ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত। ২০২১ সালে তিনি তার ফেসবুকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া পৌরসভার মেয়র নির্বাচনে আওয়ামী লীগ প্রার্থীর পক্ষে ভোট চেয়েছিলেন। এছাড়া তার সাম্প্রতিক পোস্টগুলোতেও আওয়ামী লীগ সমর্থনের ইঙ্গিত পাওয়া যায়।

আন্দোলনের পেছনে রানিং স্টাফদের দাবি, অর্থ মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্তে তাদের অনেক সুবিধা বাতিল করা হলেও কিছু সুবিধা পুনর্বহাল করা হয়েছিল। তবে এখন তারা দাবি করছেন, এসব সুবিধা পুরোপুরি ফিরিয়ে দেওয়া হোক। ২০২২ সালে এমনই এক কর্মবিরতির মাধ্যমে তাদের কিছু দাবি মেনে নেওয়া হয়েছিল। তবে বর্তমানে তারা পূর্বের সুবিধাগুলো সম্পূর্ণভাবে কার্যকরের বিষয়ে অনড় অবস্থানে রয়েছেন।

রেলপথ মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, অর্থ মন্ত্রণালয় অন্য কোনো সরকারি কর্মচারীদের জন্য এই বিশেষ সুবিধা অনুমোদন করেনি। তাই রানিং স্টাফদের জন্য এটি চালু রাখার বিষয়ে আপত্তি রয়েছে। একই সঙ্গে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সময়ে এমন আন্দোলনের যৌক্তিকতা নিয়েও প্রশ্ন তোলা হচ্ছে।

এদিকে, এই আন্দোলনের ফলে যাত্রীদের চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। ট্রেন চলাচল বন্ধ থাকায় দেশের পরিবহন খাতেও অচলাবস্থা তৈরি হয়েছে। রেল কর্তৃপক্ষ আলোচনার মাধ্যমে সমাধানের চেষ্টা চালাচ্ছে, তবে মঙ্গলবার (২৮ জানুয়ারি) দুপুর পর্যন্ত কোনো সুরাহা হয়নি। রানিং স্টাফ ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক মো. মজিবুর রহমান জানিয়েছেন, তারা গত ১৭ বছর ধরে এই দাবিতে আন্দোলন করছেন এবং বর্তমান আন্দোলন তাদের দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত চলবে।

Header Ad
Header Ad

বেরোবিতে দক্ষিণ এশিয়ার রাজনৈতিক ব্যবস্থার ধাঁধা নিয়ে সেমিনার অনুষ্ঠিত

ছবি: সংগৃহীত

রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগ দক্ষিণ এশিয়ার রাজনৈতিক ব্যবস্থার ধাঁধা নিয়ে একটি সেমিনারের আয়োজন করেছে।

সোমবার (২৭ জানুয়ারি) বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের গ্যালারিরুমে “দক্ষিণ এশিয়ার রাজনৈতিক ব্যবস্থার ধাঁধা: কী চাই এবং কেনো-কর্তৃত্ববাদ, ফ্যাসিবাদ না গণতন্ত্র” শীর্ষক এ সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়।

সেমিনারে মূল বক্তা ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ও সমাজ-রাজনীতি বিশ্লেষক কাজী মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান। সেমিনারের সঞ্চালনা করেন রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী গোলাম মোস্তফা কামাল।

কাজী মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান দক্ষিণ এশিয়ার গণতান্ত্রিক অগ্রগতি তুলে ধরে বলেন, “মালদ্বীপ, পাকিস্তান এবং ভারতে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা পাচ্ছে। বাংলাদেশের ফ্যাসিবাদ প্রতিষ্ঠার চেষ্টা বিফল হয়েছে। মালদ্বীপ রাজতন্ত্র থেকে গণতন্ত্রের পথে এগিয়েছে। তবে ভারতবর্ষের মানুষ শাসনকে ভয় পায়, যা ফ্যাসিবাদের জন্ম দেয়।”

তিনি আরও বলেন, “গত ১৫ বছর ধরে শিক্ষক, ছাত্র, গণমাধ্যমসহ অনেকে সরকারের তোষামোদ করেছেন। এতে শাসকের কার্যক্রমের সমালোচনা কম হয়েছে, যা ফ্যাসিবাদের বিকাশে ভূমিকা রেখেছে। বাংলাদেশে গত তিনটি নির্বাচন জনগণের মূল্যায়ন ছিল না।”

সেমিনারে উপস্থিত ছিলেন রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক কাজী রেজুয়ান হোসেন, সহকারী অধ্যাপক মোছা. রাজিয়া সুলতানা ও মো. সাইফুল ইসলাম, প্রভাষক মুনমুন আক্তার এবং জামিলুর রহমান।

এ সেমিনারটি দক্ষিণ এশিয়ার বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি ও গণতন্ত্রের ভবিষ্যৎ নিয়ে নতুন ভাবনার দ্বার উন্মোচন করেছে।

Header Ad
Header Ad

ভারতে গোমূত্রের পর এবার চীনে বিক্রি হচ্ছে বাঘমূত্র!

ছবি: সংগৃহীত

ভারতে গোমূত্র নিয়ে ব্যাপক চর্চার পর এবার চীনে শুরু হয়েছে বাঘমূত্র বিক্রি। বাঘমূত্রকে বাতজনিত রোগের কার্যকরী ওষুধ হিসেবে দাবি করছে চীনের সিচুয়ানের একটি চিড়িয়াখানা।

সোমবার (২৭ জানুয়ারি) সাউথ চায়না মর্নিং পোস্টের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।

চীনের সিচুয়ান প্রদেশের ইয়ান বিফেংশিয়া ওয়াইল্ডলাইফ জু নামে একটি চিড়িয়াখানা বোতলজাত বাঘমূত্র বিক্রি করছে। ২৫০ মিলিলিটারের প্রতিটি বোতলের দাম ধরা হয়েছে ৫০ ইউয়ান (প্রায় ৮৪৭ টাকা)।

ওই চিড়িয়াখানা দাবি করেছে, বাঘমূত্র বাতজনিত রোগ বা রিউম্যাটিজম সারাতে সহায়ক। ব্যবহারের জন্য মূত্রের সঙ্গে সামান্য হোয়াইট ওয়াইন এবং আদাকুচি মিশিয়ে ব্যথার জায়গায় প্রয়োগ করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া, কেউ চাইলে মূত্র পান করেও ব্যথা কমাতে পারেন বলে দাবি করা হচ্ছে। তবে বাঘমূত্র সেবনের পর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দিলে সতর্ক থাকার নির্দেশ দিয়েছে কর্তৃপক্ষ।

চিড়িয়াখানার এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, বাঘেরা যে বেসিনে প্রস্রাব করে, সেখান থেকে মূত্র সংগ্রহ করা হয়। তবে এটি খুব সীমিত পরিমাণে বিক্রি হয়। প্রতিদিন মাত্র দুই বোতল বাঘমূত্র বিক্রির অনুমতি দেওয়া হয়।

প্রসঙ্গত, ভারতের মতো চীনের এই ঘটনা নিয়েও ইতিমধ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনা শুরু হয়েছে। বিশেষত, বাঘমূত্রের ওষুধ হিসেবে কার্যকারিতা নিয়ে জনমনে বিভ্রান্তি এবং কৌতূহল দুটোই লক্ষ্য করা যাচ্ছে।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

আওয়ামী লীগের সম্পৃক্ততা রেলের আন্দোলনে: নেতৃত্বে ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক রাব্বানির শ্বশুর
বেরোবিতে দক্ষিণ এশিয়ার রাজনৈতিক ব্যবস্থার ধাঁধা নিয়ে সেমিনার অনুষ্ঠিত
ভারতে গোমূত্রের পর এবার চীনে বিক্রি হচ্ছে বাঘমূত্র!
ব্রাজিল বাংলাদেশে নির্বাচন দেখতে চায়: আমীর খসরু
ছাত্র আন্দোলনের মুখে সার্বিয়ার প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ
আইনি লড়াইয়ে নয়নতারার বিপক্ষে ধানুশের বড় জয়
দেশের শিক্ষা ও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জামায়াতের নিয়ন্ত্রণে চলছে: রিজভী
জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন হলে ৫ আগস্টের মতো পরিণতি হবে: তারেক রহমান
ধূমপানে ক্ষতিগ্রস্ত ফুসফুসকে রক্ষা করতে চান? জেনে নিন উপায়
৩৩৭ জনকে নিয়োগ দেবে বন অধিদপ্তর, আবেদন অনলাইনে
নবাবগঞ্জে বিদেশি পিস্তল, গুলি ও দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার, আটক ১
সব ইবতেদায়ী মাদরাসা জাতীয়করণের সিদ্ধান্ত
টাঙ্গাইলে দুই গ্রামের বিরোধের জেরে হামলা, বাবা-ছেলেসহ আহত ৩
ট্রেন ধর্মঘটে বেনাপোল স্টেশন ফাঁকা
দেশে ফিরেই গ্রেপ্তার সাদ্দাম হোসেন
বিএনপির সাবেক এমপি আব্দুল মোমেন তালুকদার মারা গেছেন
ভারতে লাড্ডু বিতরণের সময় ভেঙে পড়ল ৬৫ ফুট উঁচু মঞ্চ, নিহত ৭
বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে দিনে লাখ টাকার সিগারেট বিক্রি!
‘জবাই করা লাশ উদ্ধারসহ দাফন কাফন কাজে সক্রিয়ভাবে সহযোগিতা করেছে আসামিরা’
প্রবাসীর স্ত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগ উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তার বিরুদ্ধে