সোমবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৫ | ১৫ বৈশাখ ১৪৩২
Dhaka Prokash

রমজানের শিক্ষা, অপব্যয়, আত্মশুদ্ধি ও ঈদুল ফিতর পালন

প্রতি বছর বিশ্বের মুসলিম সম্প্রদায় একমাস সিয়াম পালন করে। অন্যান্য ধর্মেও উপবাস থাকা বা রোযার মতো কিছু আচার রয়েছে। তার অর্থ হচ্ছে এটি পবিত্রতা অর্জন করা, আত্মশুদ্ধি এবং আমাদের দৈনন্দিন কাজে সততা ও নিষ্ঠা আনার এক প্রশিক্ষণ। এই মাসে সংযম সাধনের সঙ্গে সঙ্গে অপব্যয়ও রোধ করা উচিত। কিন্তু আমরা দেখতে পাই, রমজান মাস এলে যেন আলাদা এক অপব্যয়ে মেতে ওঠে কিছু লোক। যেমন ইফতার পার্টির নামে চলে অপচয়, লোক দেখানো বড় বড় আয়োজন সেখানে খাদ্য অপচয়ের মহড়া চলে। এটি ব্যক্তি পর্যায় থেকে শুরু করে প্রাতিষ্ঠানিক ও রাষ্ট্রীয় পর্যায় পর্যন্ত বিস্তৃত। তবে, এবার সরকার প্রধান তার পার্টির লোকাদের ইফতার পার্টি থেকে বিরত থাকার নির্দেশ দিয়েছেন যেটি একটি সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত বলা যায়।

রমজানে না খেয়ে থাকা শরীরের সংযম আর অন্যান্য খারাপ কাজ, মানুষের ক্ষতি হয় এমন কাজ করা থেকে বিরত থাকার প্রশিক্ষণ হচ্ছে আত্মার সংযম। কাজেই রমজান হচ্ছে শারীরিক ও আত্মিক পবিত্রতা অর্জনের প্রশিক্ষণ। কিন্তু আমাদের দেশের ব্যবসায়ীরা যে যেভাবে পারেন অতিরিক্ত লাভের প্রতিযোগিতায় নেমে যান। এটি লাভের মাস, এটি উপার্জনের মাস, একটি বরকতের মাস। তাই বলে, আমাদের অধিকাংশ ব্যবসায়ীরা যা করেন তা কিন্তু লাভ নয়, এটি হচ্ছে নিজের লোকসান নিজে ডেকে আনা, সমাজে অশান্তি সৃষ্টি করা। এটি কোনোভাবেই রমজানের শিক্ষা নয়। প্রতিটি মানুষকে রমজান এই সংযমের শিক্ষা দেয়। ভেজাল খাদ্যদ্রব্য বিক্রি, পচা খাবার-দাবার বিক্রি, অতিরিক্ত দামে বিক্রি—সবই চলছে। বরং এই মাসে যেন আরও বেশি ও বড় আকারে এসব বিষয়গুলো দেখা যায়। তাহলে রমজানের সেই শিক্ষা কোথায়? মূলত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে, পরিবার থেকে এই শিক্ষাগুলো মানুষের অজর্ন করার কথা, সেটি না হলে সমাজে এর প্রতিফলন ঘটে না। আমরা রমজানে এত প্রশিক্ষণ নিচ্ছি প্রতিবছর অথচ অফিসের ঘুষ কমেনি, মানুষের অহমিকাবোধ কমেনি, পরশ্রীকাতরতা কমেনি । সর্বত্রই অনিয়ম আর বিশৃঙ্খলা। শুধু আচার পালন করা হচ্ছে। এ সময় ব্যাপকহারে বেড়ে যায় চুরি, ছিনতাই, ডাকাতি। কেউ বসে নেই। নতুন নতুন কৌশলে এসব হয়ে থাকে। গোটা সমাজকে যদি পরিশুদ্ধ করা না যায় তাহলে পুলিশের সদস্য সংখ্যা বাড়িয়ে এসব বন্ধ করা খুব কঠিন। সাময়িক কিছু স্বস্তি মিলে কিন্তু‘ ক্ষত শুকায় না। উন্নত বিশ্বে সাধারণত ট্রাফিক ছাড়া সাধারণ পুলিশের দেখা পাওয়া যায় না, যদিও পাওয়া যায় কোনো ধরনে অস্ত্র ছাড়া। অবার মধ্যপ্রাচ্যের ধনী দেশগুলোতেও পদে পদে পুলিশ। পুলিশ দিয়ে সমাজকে সভ্য করা যায় না। সভ্য করতে হলে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকে আদর্শ সামাজিক প্রতিষ্ঠানে রূপান্তরিত করতে হবে। আর সেটি শুধুমাত্র সরকারই না, শিক্ষা সংশ্লিষ্ট সবাইকেই ভূমিকা পালন করতে হবে।

আমরা যদি ব্যক্তি থেকে প্রতিষ্ঠান, প্রতিষ্ঠান থেকে জাতীয় পর্যায় পর্যন্ত লক্ষ্য করি দেখব যে, রমজানের সংযম শিক্ষার বিষয়টি সেই অর্থে প্রতিফলিত হচ্ছে না কোথাও। দু’জন মানুষ রাস্তায় সামান্য বিষয় নিয়ে কিংবা অযথাই ঝগড়া বাঁধিয়ে দিচ্ছে এবং চরম উত্তেজিত অবস্থা একে অপরকে গালাগাল করছে, এমনকি হাতও ব্যবহার করছে। ট্রাফিক নিয়ম কানুন মানছে না, গাড়ির সামনে দিয়ে যাচ্ছে তাই এ অবস্তায় হাঁটাহাটি করছে অথচ গাড়ির সাথে একটু লেগে গেলে ড্রাইভারকে ধরে অযথা গালিগালাজ করা ও শারীরিকভাবে হেনস্তা করা অহরহই চলছে, রমজান বলে কোনো ছাড় নেই। অথচ যারা এগুলো করছেন তারা সবাই কিন্তু না খেয়ে আছেন অর্থাৎ রোযা রেখেছেন। মিটিং, মিছিল সব হচ্ছে, মিটিং মিছিলে শক্তি প্রয়োগ ও বল প্রয়োগ সবই চলছে। তা’ হলে রমজানের শিক্ষাটা কোথায়?

আমরা জাপানের কথা জানি যে, সেখানে এত ঘন ঘন মসজিদ নেই, ওয়াজ নসিহত নেই, রমজানের মতো প্রশিক্ষণ নেই অথচ সব শৃঙ্খরার মধ্যে চলছে। মানুষ অফিসে, কাজে যাওয়ার জন্য ব্যস্ত, কোনো ফাঁকি দেওয়ার চিন্তা নেই। ঘুষ নেই, মানুষকে ধোকা দেওয়ার জন্য, হয়রানি করার জন্য সরকারি আধা সরকারি কর্মকর্তারা বসে নেই। তারা মানুষকে সর্বোত্তম সেবার দেওয়ার জন্য ব্যস্ত, সর্বোচ্চ চেষ্টাটি করে থাকেন। তাহলে আমাদের হলো টা কী? আমরা এত ধর্ম চর্চ করছি, এত সংযম পালন করছি, মসজিদে দৌড়াচ্ছি তারপরেও এসব বিষয় এতটুকু কমেনি। কয়েকটি কারনের মধ্যে মূল কারণ হচ্ছে আমাদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে বিশেষ করে ছোটবেলার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে এসব শেখানো হয় জাপানে, আমাদের শেখানো হয় না। কীভাবে বড়দের সম্মান করতে হয়, কীভাবে তাদের সাথে কথা বলতে হয়, কীভাবে খেতে হয় , দেশসেবার নমুনা, দেশকে কেন ভালবাসতে হয় ইত্যাদি শিক্ষা জাপানি ছেলেমেয়েরা ছোট বয়স থেকেই পেয়ে থাকে। প্রকৃত শিক্ষাবিদদের সমন্বয়ে আমাদের শিশুদের জন্য এসবের আদলে শিক্ষাদান করার প্রকৃত প্রচেষ্টাটি গ্রহণ করা উচিত। আমরা চেষ্টা করছি, কারিকুলাম আছে, শিক্ষাদনা চলছে কিন্তু যেজন্য এগুলো করা হচ্ছে তার প্রতিফলন ব্যক্তির মাঝে নেই, সমাজে নেই, রাষ্ট্রে নেই। বিষয়গুলো গভীরভাবে পর্যবেক্ষনের দাবি রাখে।

আমরা যে যে কাজ করছি সেটি দায়িত্বশীলভাবে করলেই আমি সততা প্রদর্শন করছি। আমার দ্বারা যাদের সেবা পাওয়ার কথা তারা সেবাটি পাচ্ছেন কি না সেটি আমাকে অবশ্যই দেখতে হবে। এ বিষয়গুলো ব্যক্তি থেকে শুরু করলে সমাজ পরিবর্তন হতে বাধ্য। আমরা সবসময় সবকিছু রাষ্ট্রের কাছে আশা করি। কিন্তু সে আশা তো গুড়ে বালি। জনৈক অধ্যাপক ( বিদেশি বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত) অল্প কয়েকদিন ছুটি কাটিয়ে রমজানের শেষের দিকে দেশ থেকে কার্যস্থলে চলে যাচ্ছেন। এয়ারপোর্ট থেকে ফোন দিলেন । এয়ারপোর্টের অবস্থা যেন আগের চেয়েও বহুগুন খারাপ হয়েছে। তিনি বলছেন এয়ারপোর্টে প্রবেশের লাইন বাইর পর্যন্ত চলে এসেছে। প্রচন্ড গরমে মানুষ হাঁসফাঁস করছে অথচ কর্তৃপক্ষের দু’পয়সার তৎপরতা নেই যে, দ্রুত ইমিগ্রেশনের কাজ সেরে যাত্রীদের ভেতরে ঢুকিয়ে দেবেন। অধ্যাপক বলছেন, পরিবর্তন কিভাবে আসবে? কে করবে? রাষ্ট্র না কর্মকর্তা কর্মচারী নিজেরা? কারুরই তো সেভাবে কোনো উদ্যোগ নেই। যাই হোক কর্মস্থলে গিয়ে জানিয়েছেন যে তিনি পৌঁছেছেন প্রচণ্ড শরীর ও মাথাব্যথা নিয়ে। এতো গেল এয়ার পোর্টের কথা, অন্যান্য ট্রান্সপোর্টের জায়গাগুলো হয়রানির চরম পর্যায়ে। অথচ অধিকাংশই কিন্তু রোযা রেখেছেন, যার যার দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করার কথা।

প্রতি ধর্মেই মানুষকে না ঠকানোর জন্য বিশেষভাবে তাগিদ দেওয়া হয়েছে। ইসলাম ধর্মে বলা হয়েছে, যদি কোন মানুষ অন্য কোন মানুষের হক নষ্ট করে অর্থাৎ তার পাওনা তাকে না দেয় কিংবা তার কোন অর্থনৈতিক ক্ষতি করে তাহলে তাকে আল্লাহও ক্ষমা করবেনা যতক্ষণ না ওই আক্রান্ত ব্যক্তি তাকে ক্ষমা করে দেন। বিশাল বিষয়। অথচ আমরা খেয়ালই করি না। অহরহ অন্য মানুষের সাথে তর্কে জড়িয়ে পড়ছি, মনে কষ্ট দিচ্ছি, তার পাওয়া দিচ্ছিনা, তাকে বিভিন্নভাবে হয়রানির চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। যার যতটুকু ক্ষমতা আছে তার চেয়ে ঢের বেশি প্রদর্শনের চেষ্টা সর্বদাই ব্যস্ত থাকছি আবার উপবাসও করছি। রমজান মাসের প্রশিক্ষণে এগুলোই সবই অন্তর্ভূক্ত কিন্ত আমরা তা গ্রাহ্য করছি না। আমরা যেমন প্রচুর শিক্ষক প্রশিক্ষণ দিচ্ছি টেঠ ক্লাসরুম পরিবর্তন হচ্ছে না, আমাদের শিক্ষাদানে পরিবর্তন আসছে না। এ যেন প্রশিক্ষনের জন্য প্রশিক্ষণ, বাস্তবায়নের জন্য নয়, পরিবর্তনের জন্য নয়। একই ঘটনা যেন আমাদের রোযা রাখার মধ্যেও ঘটছে।

পবিত্র রমজানের পর আসে খুশীর ঈদ। মানুষের বিভিন্ন অনৈতিক, আবেগতাড়িত ও অবিবেচনাপ্রসূত কার্যাবলীর কারনে অনেকের জীবনে গভীর অশান্তি নেমে আসে ঈদ যাত্রায়। মানুষ বড়িতে যাওয়ার জন্য ঢাকাসহ বড় বড় সিটি থেকে গ্রামের বাড়িতে নাড়ীর টানে ছুটতে শুরু করে। আর এই ছোটা নিয়ে শুরু হয় বিভিন্ন ধরনের অদ্ভূত সব কর্মকাণ্ড। অজ্ঞান পার্টি, মলম পার্টিসহ বিভিন্ন অসামাজিক কার্যকলাপ বেড়ে যায় বহুগুণে। এগুলো দেখলে মনে হয়, রমজানে ক’জন সহীহ শুদ্ধভাবে রোযা পালন করছে। এমনিতেই বহুল জনসংখ্যার দেশে এই যাত্রা একটি বিপজ্জনক পর্যায়ে পৌঁছায় কারণ সাধারণ অবস্থাতেই আমাদের রাস্তাঘাটে জ্যাম লেগে থাকে। আর ঈদ এলে এই জ্যাম পুরোটাই নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। এ সব কাজে যারা নিয়োজিত থাকে তারা অনেক সময় ইচ্ছে করেই জ্যাম লাগিয়ে থাকে। মানুষকে কষ্ট দিতে পেরে এক ধরনের পৈশাচিক আনন্দ তারা উপভোগ করে। যারা রাস্তাঘাট নির্বিঘ্ন করার দায়িত্বে নিয়োজিত তারাও নিজ থেকে কোনো উদ্যোগ গ্রহণ করে না, কোন দায়বদ্ধতা নেই, কোন চাপ নেই, নৈতিক কোনো তাড়না নেই যে, তাদের এই পবিত্র দায়িত্ব সততার সাথে পালন করতে হবে। তাই প্রতিবছর আমরা দেখতে পাই যানবাহনের দীর্ঘ লাইন, এই লাইন ত্রিশ, চল্লিশ , পঞ্চাশ মাইল কিংবা তারও বেশি। প্রচণ্ড দাবদাহ, প্রকৃতির ডাকে সারা দিতে না পারাসহ বহু পেরেসানির মধ্যে ছটফট করতে থাকে ছোট শিশু ও নারী যারা ঘণ্টার পর ঘণ্টা, পুরো দিন ও রাত এমনকি ঈদের দিন বিকেলেও অনেকে বাসায় পৌঁছাতে পারে না। এত কষ্ট সহ্য করে যখন বাসায় পৌঁছে, সাথে সাথে চিন্তা কীভাবে আবার কর্মস্থলে আসবেন। এগুলোর জন্য আমরা নিজেদের ভাগ্যকেই দায়ী করি কারণ এগুলো দেখার কেউ কখনো ছিল না, এখনো নেই। তারপরেও দিন চলে যাচ্ছে, সমাজ চলছে, মানুষের তার নিজের প্রচেষ্টায় এগিয়ে যাচ্ছে, এই তো পৃথিবী, এই তো ধরনীর নিয়ম। একটি সুষ্ঠু, সুন্দর ও ন্যায়নীতি পরায়ণ সমাজে বাস করার আগ্রহ ও ইচ্ছে অধিকাংশ মানুষের মধ্যে থাকলেও সে রকম প্রচেষ্টা অনেকেরই নেই। যে যার দায়িত্বটুকু সঠিকভাবে পালন করলেই আমরা সমাজকে পাল্টে দিতে পারি।

মাছুম বিল্লাহ: শিক্ষা বিশেষজ্ঞ ও গবেষক

আরএ/

Header Ad
Header Ad

মে মাসে শেখ হাসিনার বিচার শুরু হচ্ছে: প্রধান উপদেষ্টা

ছবি: সংগৃহীত

জুলাই-আগস্ট গণঅভুত্থানে গণহত্যার মামলায় আগামী মাসের শুরুতেই সাবেক প্রধানমন্ত্রীর শেখ হাসিনার বিচার শুরু হচ্ছে-আল জাজিরাকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে এসব কথা জানিয়েছেন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

কাতারভিত্তিক সম্প্রচারমাধ্যম আলজাজিরার বৈশ্বিক নেতাদের সাক্ষাৎকারমূলক অনুষ্ঠান ‘টক টু আল–জাজিরা’য় এ কথা বলেন তিনি।
আগামী ডিসেম্বর থেকে আগামী বছর জুনের মধ্যেই নির্বাচন হবে বলে ফের জানিয়েছেন তিনি

এ সময় তিনি আরও বলেন, শুধু মানবিক সহায়তা নয়, নিরাপদ প্রত্যাবাসনই রোহিঙ্গা সংকটের স্থায়ী সমাধান।

বাংলাদেশে একটি সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ এবং উদাহরণ সৃষ্টিকারী নির্বাচন উপহার দেয়ার দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, নির্বাচনের আগে সংস্কারের তালিকা ছোট হলে ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন এবং তালিকা বড় হলে আগামী বছরের জুনের মধ্যে নির্বাচন হবে।

অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে জনপ্রত্যাশা এখনও তুঙ্গে রয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, জনগণ মনে করে অন্তর্বর্তী সরকার এখনও তাদের জন্য ভালো সমাধান।

আলজাজিরার ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা দীর্ঘ সাক্ষাৎকারে জুলাই বিপ্লব, সাবেক স্বৈরাচার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারতে পালিয়ে যাওয়া, সাবেক সরকারের দুর্নীতিসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কথা বলেন তিনি।

আলজাজিরার উপস্থাপক ড. ইউনূসকে প্রশ্ন করেন, এটা কি বলা ঠিক যে, শেখ হাসিনার পতনের পর অন্তর্বর্তী সরকারের ‘মধুচন্দ্রিমা’ এখন সম্ভবত শেষ হয়েছে? কিছু বেশ বড় চ্যালেঞ্জ রয়েছে, যেগুলোর সুনির্দিষ্ট জবাব আপনাকে দিতে হবে। কারণ, পুরোনো ক্ষমতাধরদের প্রভাব রয়েছে, অনেকে রাজনৈতিক শূন্যতাকে কাজে লাগাতে চাইতে পারে।

জবাবে ড. ইউনূস বলেন, মধুচন্দ্রিমা শেষ হোক বা না হোক, বাংলাদেশের মানুষ মনে করে অন্তর্বর্তী সরকার এখনও তাদের জন্য ভালো সমাধান। তারা অন্তর্বর্তী সরকারকে সরাসরি চলে যেতে এখনও বলছে না। বরং একটা ভালো নির্বাচন উপহার দিতে সরকারই নির্বাচন আয়োজনের দিকে যাচ্ছে। জনগণ তাড়াতাড়ি ক্ষমতা হস্তান্তরের কথা এখনও বলছে না।

লাখ লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থীর সমাধান কি বাংলাদেশ একা করতে পারবে?

জবাবে ড. ইউনূস বলেন, আমরা আন্তর্জাতিক সংস্থা ও জাতিসংঘের সঙ্গে রোহিঙ্গা সমস্যা নিয়ে কাজ করছি। তারা যাতে নিরাপদে বাড়ি ফিরে যেতে পারে, তা নিশ্চিত করার চেষ্টা করছি। বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মধ্যে কিছু বোঝাপড়া যাতে তৈরি হয়।

নির্বাচনে আওয়ামী লীগকে অংশগ্রহণের অনুমতি দেয়া হবে কিনা– এমন প্রশ্নের জবাবে ড. ইউনূস বলেন,
এ প্রশ্নের জবাবের একটি অংশ আওয়ামী লীগকেই নির্ধারণ করতে হবে। দলটি আগে নিজেই সিদ্ধান্ত নেবে–তারা নির্বাচনে যোগ দেবে কিনা। তারা এখনও কিছু ঘোষণা করেনি। তা ছাড়া নির্বাচনের সময় নির্বাচন কমিশন কী প্রতিক্রিয়া দেয়, সেটাসহ নানা বিষয় সামনে আসতে পারে।

তাহলে আওয়ামী লীগের নির্বাচনে অংশ নেয়ার বিষয়টি নির্বাচন কমিশনের ওপর ছেড়ে দিচ্ছেন কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিষয়টি তা নয়। অন্যান্য রাজনৈতিক দল আছে, যারা বলতে পারে যে, এ আইনের অধীনে আওয়ামী লীগ নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে না।

সাক্ষাৎকারে থাইল্যান্ডের ব্যাংককে ড. ইউনূসের সঙ্গে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বৈঠকের প্রসঙ্গ ওঠে। ড. ইউনূস জানান,
তিনি বিমসটেক সম্মেলনের ফাঁকে মোদির সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন। সেখানে শেখ হাসিনাকে ‘চুপ’ রাখতে বলেছিলেন তিনি। জবাবে মোদি বলেছিলেন, এটা তার জন্য সম্ভব নয়। শেখ হাসিনা সামাজিক মাধ্যম ব্যবহার করে কিছু বললে, সেটি তিনি নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেন না।

যুক্তরাষ্ট্র, ভারত, পাকিস্তান ও চীনের সঙ্গে সম্পর্ক নিয়ে ড. ইউনূস বলেন, একসঙ্গে কাজ করার নীতি নিয়ে এগিয়ে যেতে চাই। আমরা একসঙ্গেই পারস্পরিক সহযোগিতামূলক পদক্ষেপ নিতে চাই।

Header Ad
Header Ad

ঢাকাসহ সারাদেশে বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে

ছবি: সংগৃহীত

রাজধানী ঢাকা ও এর পার্শ্ববর্তী এলাকায় অস্থায়ীভাবে বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। এর পাশাপাশি কমতে পারে দিনের তাপমাত্রা। এছাড়া আকাশ আংশিক মেঘলা থেকে মেঘলা থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। এ সময় দক্ষিণ অথবা দক্ষিণ-পূর্ব দিক থেকে ঘণ্টায় ১০-১৫ কিলোমিটার বেগে বাতাস বইতে পারে।

সোমবার (২৮ এপ্রিল) রাজধানীসহ পার্শ্ববর্তী এলাকার সকাল ৭টা থেকে পরবর্তী ৬ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে এ তথ্য জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।

সোমবার সকাল ৬টায় ঢাকার তাপমাত্রা ছিল ২৮ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ৮২ শতাংশ।

সারাদেশের সকাল ৬ টা থেকে পরবর্তী ১২০ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, রংপুর, রাজশাহী, ঢাকা, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ বিদ্যুৎ চমকানো অথবা বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। একই সঙ্গে সারাদেশে দিনের তাপামাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে এবং রাতের তাপমাত্রা সামান্য কমতে পারে।

আরও বলা হয়েছে, লঘুচাপের বর্ধিতাংশ বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল হয়ে পশ্চিমবঙ্গ থেকে উত্তর বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে।

রোববার (২৭ এপ্রিল) সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৭ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এছাড়া গত ২৪ ঘণ্টায় রংপুরের ডিমলাতে সর্বোচ্চ ৮৬ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়।

Header Ad
Header Ad

সবাই মিলে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করাই লক্ষ্য: আলী রীয়াজ

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ সভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ। ছবি: সংগৃহীত

ঐকমত্য কমিশনের লক্ষ্য হচ্ছে জাতীয় সনদ তৈরি করা। সবাই মিলে একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করার অংশ হিসেবে আলোচনা চলছে বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ সভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ।

সোমবার (২৮ এপ্রিল) জাতীয় সংসদের এলডি হলে গণঅধিকার পরিষদের সঙ্গে সংলাপের সূচনা বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।

আলী রীয়াজ বলেন, চর্চা, ঐক্যে এবং সম্মিলিতভাবে জাতীয় সনদ তৈরি করতে সবার প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখতে হবে। ঐকমত্য কমিশনের লক্ষ্য হচ্ছে জাতীয় সনদ তৈরি করা। যাতে করে ক্ষমতার বিন্যাসে পরিবর্তন ঘটে। বাংলাদেশ যাতে সমস্ত সম্ভাবনা নিয়ে জাগ্রত হতে পারে। গত ৫৩ বছর মানুষ যে গণতান্ত্রিক আকাঙ্ক্ষাকে ধারণ করছে, সেই আকাঙ্ক্ষাকে বাস্তবায়ন করা যায়, পথ উন্মুক্ত করা যায়, যেন সবাই মিলে একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করতে পারি। তারাই অংশ হিসেবে এ আলোচনা।

তিনি আরও বলেন, শুধুমাত্র সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন, মতামত ও সুপারিশই যথেষ্ট নয়। সব রাজনৈতিক ও গণতান্ত্রিক শক্তিগুলোর জনমানুষের ঐক্যের মধ্য দিয়ে আমরা বাংলাদেশকে নতুন বাংলাদেশের দিকে অগ্রসর করতে পারব। কাজে কি লিখছি তা নয়, চর্চার মধ্য দিয়ে, অঙ্গীকারের মধ্য দিয়ে, প্রতিশ্রুতির মধ্য দিয়ে আমাদের এ কাজে অগ্রসর হতে হবে। আমরা সেই প্রচেষ্টায় আছি।

ঐকমত্য কমিশনের সহ সভাপতি বলেন, বাংলাদেশের মানুষ তরুণদের নেতৃত্বে প্রাণ দিয়ে যে সম্ভাবনা তৈরি করেছে, সবাই মিলে সে সম্ভাবনাকে বাস্তবায়নের পথে অগ্রসর হতে হবে। সেই পথ ও প্রচেষ্টায় সবাই একত্রিত আছি, থাকব। একত্রিত থাকার তাগিদ জারি রাখব।

রাষ্ট্র সংস্কারের বিষয়ে স্প্রেডশিট আকারে ৩৯টি দলের কাছে মতামত চেয়েছিল জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। এর মধ্যে ৩৫টি দল মতামত জমা দিয়েছে বলে জানান আলী রীয়াজ। রোববার পর্যন্ত কমিশন ১৯টি দলের সঙ্গে সংলাপ করেছে। ২০তম দল হিসেবে গণঅধিকার পরিষদের সঙ্গে কমিশন সংলাপ করছে বলে জানান আলী রীয়াজ।

২০১৮ সালে বর্তমান গণঅধিকার পরিষদের নেতাদের নেতৃত্বে অনুষ্ঠিত কোটা সংস্কার আন্দোলনের কথা তুলে ধরে আলী রীয়াজ বলেন, তাদের অকুতোভয় সংগ্রামের মধ্য দিয়ে ফ্যাসিবাদ বিরোধী আন্দোলনের নতুন পর্যায় সূচনা হয়েছিল। যার ধারাবাহিকতায় ২০২৪ সালে কোটা সংস্কার আন্দোলন ও পরবর্তী পর্যায়ে একটি অভূতপূর্ব ও অভাবনীয় গণঅভ্যুত্থান হয়েছে।

প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দারের সঞ্চালনায় কমিশনের সদস্য সফর রাজ হোসেন, বিচারপতি এমদাদুল হক, ড. বদিউল আলম মজুমদার, ড. ইফতেখারুজ্জামান এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

মে মাসে শেখ হাসিনার বিচার শুরু হচ্ছে: প্রধান উপদেষ্টা
ঢাকাসহ সারাদেশে বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে
সবাই মিলে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করাই লক্ষ্য: আলী রীয়াজ
ইশরাককে মেয়র ঘোষণা করে গেজেট প্রকাশ
কাশ্মীর সীমান্তে ভারত-পাকিস্তানের ফের গোলাগুলি
টস হেরে ফিল্ডিংয়ে বাংলাদেশ, একাদশে ৩ পরিবর্তন
দেশে ফিরেছেন প্রধান উপদেষ্টা
টটেনহামকে উড়িয়ে প্রিমিয়ার লিগের চ্যাম্পিয়ন লিভারপুল
শেখ হাসিনাকে ‘চুপ’ রাখতে পারবেন না মোদি
রেফারির কাছে ক্ষমা চাইলেন মাদ্রিদের ডিফেন্ডার আন্তনিও রুদিগার
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নবীন শিক্ষার্থীদের শুভেচ্ছা উপহার দিলেন ছাত্রদল নেতা
দুর্নীতির অভিযোগ তুলে দুই উপদেষ্টার পদত্যাগ দাবি
নওগাঁয় গ্রাহকের আমানতের টাকা ফেরত না দেওয়ায় জাতীয় পার্টি’র নেতাকে গণধোলাই
পাকিস্তানের পাশাপাশি বাংলাদেশকেও পানি না দেওয়ার আহ্বান বিজেপি এমপির
এসআই নিয়োগের ফলাফল প্রকাশ, ৫৯৯ জনকে প্রাথমিক সুপারিশ
হাকিমপুরে গরীবের চাল ছাত্রলীগ নেতার গুদামে
চুরির অভিযোগে কুবির দুই শিক্ষার্থী বহিষ্কার
ভারত-পাকিস্তান ইস্যুতে আগবাড়িয়ে কিছু করার পক্ষে নয় ঢাকা
সাব-ইন্সপেক্টর পদে প্রাথমিক সুপারিশ পেল ৫৯৯ জন
দুই উপদেষ্টার এপিএস-পিও’র দুর্নীতির খোঁজে গোয়েন্দা কার্যক্রম শুরু