বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪ | ৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
Dhaka Prokash
Header Ad

রমজানের শিক্ষা, অপব্যয়, আত্মশুদ্ধি ও ঈদুল ফিতর পালন

প্রতি বছর বিশ্বের মুসলিম সম্প্রদায় একমাস সিয়াম পালন করে। অন্যান্য ধর্মেও উপবাস থাকা বা রোযার মতো কিছু আচার রয়েছে। তার অর্থ হচ্ছে এটি পবিত্রতা অর্জন করা, আত্মশুদ্ধি এবং আমাদের দৈনন্দিন কাজে সততা ও নিষ্ঠা আনার এক প্রশিক্ষণ। এই মাসে সংযম সাধনের সঙ্গে সঙ্গে অপব্যয়ও রোধ করা উচিত। কিন্তু আমরা দেখতে পাই, রমজান মাস এলে যেন আলাদা এক অপব্যয়ে মেতে ওঠে কিছু লোক। যেমন ইফতার পার্টির নামে চলে অপচয়, লোক দেখানো বড় বড় আয়োজন সেখানে খাদ্য অপচয়ের মহড়া চলে। এটি ব্যক্তি পর্যায় থেকে শুরু করে প্রাতিষ্ঠানিক ও রাষ্ট্রীয় পর্যায় পর্যন্ত বিস্তৃত। তবে, এবার সরকার প্রধান তার পার্টির লোকাদের ইফতার পার্টি থেকে বিরত থাকার নির্দেশ দিয়েছেন যেটি একটি সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত বলা যায়।

রমজানে না খেয়ে থাকা শরীরের সংযম আর অন্যান্য খারাপ কাজ, মানুষের ক্ষতি হয় এমন কাজ করা থেকে বিরত থাকার প্রশিক্ষণ হচ্ছে আত্মার সংযম। কাজেই রমজান হচ্ছে শারীরিক ও আত্মিক পবিত্রতা অর্জনের প্রশিক্ষণ। কিন্তু আমাদের দেশের ব্যবসায়ীরা যে যেভাবে পারেন অতিরিক্ত লাভের প্রতিযোগিতায় নেমে যান। এটি লাভের মাস, এটি উপার্জনের মাস, একটি বরকতের মাস। তাই বলে, আমাদের অধিকাংশ ব্যবসায়ীরা যা করেন তা কিন্তু লাভ নয়, এটি হচ্ছে নিজের লোকসান নিজে ডেকে আনা, সমাজে অশান্তি সৃষ্টি করা। এটি কোনোভাবেই রমজানের শিক্ষা নয়। প্রতিটি মানুষকে রমজান এই সংযমের শিক্ষা দেয়। ভেজাল খাদ্যদ্রব্য বিক্রি, পচা খাবার-দাবার বিক্রি, অতিরিক্ত দামে বিক্রি—সবই চলছে। বরং এই মাসে যেন আরও বেশি ও বড় আকারে এসব বিষয়গুলো দেখা যায়। তাহলে রমজানের সেই শিক্ষা কোথায়? মূলত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে, পরিবার থেকে এই শিক্ষাগুলো মানুষের অজর্ন করার কথা, সেটি না হলে সমাজে এর প্রতিফলন ঘটে না। আমরা রমজানে এত প্রশিক্ষণ নিচ্ছি প্রতিবছর অথচ অফিসের ঘুষ কমেনি, মানুষের অহমিকাবোধ কমেনি, পরশ্রীকাতরতা কমেনি । সর্বত্রই অনিয়ম আর বিশৃঙ্খলা। শুধু আচার পালন করা হচ্ছে। এ সময় ব্যাপকহারে বেড়ে যায় চুরি, ছিনতাই, ডাকাতি। কেউ বসে নেই। নতুন নতুন কৌশলে এসব হয়ে থাকে। গোটা সমাজকে যদি পরিশুদ্ধ করা না যায় তাহলে পুলিশের সদস্য সংখ্যা বাড়িয়ে এসব বন্ধ করা খুব কঠিন। সাময়িক কিছু স্বস্তি মিলে কিন্তু‘ ক্ষত শুকায় না। উন্নত বিশ্বে সাধারণত ট্রাফিক ছাড়া সাধারণ পুলিশের দেখা পাওয়া যায় না, যদিও পাওয়া যায় কোনো ধরনে অস্ত্র ছাড়া। অবার মধ্যপ্রাচ্যের ধনী দেশগুলোতেও পদে পদে পুলিশ। পুলিশ দিয়ে সমাজকে সভ্য করা যায় না। সভ্য করতে হলে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকে আদর্শ সামাজিক প্রতিষ্ঠানে রূপান্তরিত করতে হবে। আর সেটি শুধুমাত্র সরকারই না, শিক্ষা সংশ্লিষ্ট সবাইকেই ভূমিকা পালন করতে হবে।

আমরা যদি ব্যক্তি থেকে প্রতিষ্ঠান, প্রতিষ্ঠান থেকে জাতীয় পর্যায় পর্যন্ত লক্ষ্য করি দেখব যে, রমজানের সংযম শিক্ষার বিষয়টি সেই অর্থে প্রতিফলিত হচ্ছে না কোথাও। দু’জন মানুষ রাস্তায় সামান্য বিষয় নিয়ে কিংবা অযথাই ঝগড়া বাঁধিয়ে দিচ্ছে এবং চরম উত্তেজিত অবস্থা একে অপরকে গালাগাল করছে, এমনকি হাতও ব্যবহার করছে। ট্রাফিক নিয়ম কানুন মানছে না, গাড়ির সামনে দিয়ে যাচ্ছে তাই এ অবস্তায় হাঁটাহাটি করছে অথচ গাড়ির সাথে একটু লেগে গেলে ড্রাইভারকে ধরে অযথা গালিগালাজ করা ও শারীরিকভাবে হেনস্তা করা অহরহই চলছে, রমজান বলে কোনো ছাড় নেই। অথচ যারা এগুলো করছেন তারা সবাই কিন্তু না খেয়ে আছেন অর্থাৎ রোযা রেখেছেন। মিটিং, মিছিল সব হচ্ছে, মিটিং মিছিলে শক্তি প্রয়োগ ও বল প্রয়োগ সবই চলছে। তা’ হলে রমজানের শিক্ষাটা কোথায়?

আমরা জাপানের কথা জানি যে, সেখানে এত ঘন ঘন মসজিদ নেই, ওয়াজ নসিহত নেই, রমজানের মতো প্রশিক্ষণ নেই অথচ সব শৃঙ্খরার মধ্যে চলছে। মানুষ অফিসে, কাজে যাওয়ার জন্য ব্যস্ত, কোনো ফাঁকি দেওয়ার চিন্তা নেই। ঘুষ নেই, মানুষকে ধোকা দেওয়ার জন্য, হয়রানি করার জন্য সরকারি আধা সরকারি কর্মকর্তারা বসে নেই। তারা মানুষকে সর্বোত্তম সেবার দেওয়ার জন্য ব্যস্ত, সর্বোচ্চ চেষ্টাটি করে থাকেন। তাহলে আমাদের হলো টা কী? আমরা এত ধর্ম চর্চ করছি, এত সংযম পালন করছি, মসজিদে দৌড়াচ্ছি তারপরেও এসব বিষয় এতটুকু কমেনি। কয়েকটি কারনের মধ্যে মূল কারণ হচ্ছে আমাদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে বিশেষ করে ছোটবেলার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে এসব শেখানো হয় জাপানে, আমাদের শেখানো হয় না। কীভাবে বড়দের সম্মান করতে হয়, কীভাবে তাদের সাথে কথা বলতে হয়, কীভাবে খেতে হয় , দেশসেবার নমুনা, দেশকে কেন ভালবাসতে হয় ইত্যাদি শিক্ষা জাপানি ছেলেমেয়েরা ছোট বয়স থেকেই পেয়ে থাকে। প্রকৃত শিক্ষাবিদদের সমন্বয়ে আমাদের শিশুদের জন্য এসবের আদলে শিক্ষাদান করার প্রকৃত প্রচেষ্টাটি গ্রহণ করা উচিত। আমরা চেষ্টা করছি, কারিকুলাম আছে, শিক্ষাদনা চলছে কিন্তু যেজন্য এগুলো করা হচ্ছে তার প্রতিফলন ব্যক্তির মাঝে নেই, সমাজে নেই, রাষ্ট্রে নেই। বিষয়গুলো গভীরভাবে পর্যবেক্ষনের দাবি রাখে।

আমরা যে যে কাজ করছি সেটি দায়িত্বশীলভাবে করলেই আমি সততা প্রদর্শন করছি। আমার দ্বারা যাদের সেবা পাওয়ার কথা তারা সেবাটি পাচ্ছেন কি না সেটি আমাকে অবশ্যই দেখতে হবে। এ বিষয়গুলো ব্যক্তি থেকে শুরু করলে সমাজ পরিবর্তন হতে বাধ্য। আমরা সবসময় সবকিছু রাষ্ট্রের কাছে আশা করি। কিন্তু সে আশা তো গুড়ে বালি। জনৈক অধ্যাপক ( বিদেশি বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত) অল্প কয়েকদিন ছুটি কাটিয়ে রমজানের শেষের দিকে দেশ থেকে কার্যস্থলে চলে যাচ্ছেন। এয়ারপোর্ট থেকে ফোন দিলেন । এয়ারপোর্টের অবস্থা যেন আগের চেয়েও বহুগুন খারাপ হয়েছে। তিনি বলছেন এয়ারপোর্টে প্রবেশের লাইন বাইর পর্যন্ত চলে এসেছে। প্রচন্ড গরমে মানুষ হাঁসফাঁস করছে অথচ কর্তৃপক্ষের দু’পয়সার তৎপরতা নেই যে, দ্রুত ইমিগ্রেশনের কাজ সেরে যাত্রীদের ভেতরে ঢুকিয়ে দেবেন। অধ্যাপক বলছেন, পরিবর্তন কিভাবে আসবে? কে করবে? রাষ্ট্র না কর্মকর্তা কর্মচারী নিজেরা? কারুরই তো সেভাবে কোনো উদ্যোগ নেই। যাই হোক কর্মস্থলে গিয়ে জানিয়েছেন যে তিনি পৌঁছেছেন প্রচণ্ড শরীর ও মাথাব্যথা নিয়ে। এতো গেল এয়ার পোর্টের কথা, অন্যান্য ট্রান্সপোর্টের জায়গাগুলো হয়রানির চরম পর্যায়ে। অথচ অধিকাংশই কিন্তু রোযা রেখেছেন, যার যার দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করার কথা।

প্রতি ধর্মেই মানুষকে না ঠকানোর জন্য বিশেষভাবে তাগিদ দেওয়া হয়েছে। ইসলাম ধর্মে বলা হয়েছে, যদি কোন মানুষ অন্য কোন মানুষের হক নষ্ট করে অর্থাৎ তার পাওনা তাকে না দেয় কিংবা তার কোন অর্থনৈতিক ক্ষতি করে তাহলে তাকে আল্লাহও ক্ষমা করবেনা যতক্ষণ না ওই আক্রান্ত ব্যক্তি তাকে ক্ষমা করে দেন। বিশাল বিষয়। অথচ আমরা খেয়ালই করি না। অহরহ অন্য মানুষের সাথে তর্কে জড়িয়ে পড়ছি, মনে কষ্ট দিচ্ছি, তার পাওয়া দিচ্ছিনা, তাকে বিভিন্নভাবে হয়রানির চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। যার যতটুকু ক্ষমতা আছে তার চেয়ে ঢের বেশি প্রদর্শনের চেষ্টা সর্বদাই ব্যস্ত থাকছি আবার উপবাসও করছি। রমজান মাসের প্রশিক্ষণে এগুলোই সবই অন্তর্ভূক্ত কিন্ত আমরা তা গ্রাহ্য করছি না। আমরা যেমন প্রচুর শিক্ষক প্রশিক্ষণ দিচ্ছি টেঠ ক্লাসরুম পরিবর্তন হচ্ছে না, আমাদের শিক্ষাদানে পরিবর্তন আসছে না। এ যেন প্রশিক্ষনের জন্য প্রশিক্ষণ, বাস্তবায়নের জন্য নয়, পরিবর্তনের জন্য নয়। একই ঘটনা যেন আমাদের রোযা রাখার মধ্যেও ঘটছে।

পবিত্র রমজানের পর আসে খুশীর ঈদ। মানুষের বিভিন্ন অনৈতিক, আবেগতাড়িত ও অবিবেচনাপ্রসূত কার্যাবলীর কারনে অনেকের জীবনে গভীর অশান্তি নেমে আসে ঈদ যাত্রায়। মানুষ বড়িতে যাওয়ার জন্য ঢাকাসহ বড় বড় সিটি থেকে গ্রামের বাড়িতে নাড়ীর টানে ছুটতে শুরু করে। আর এই ছোটা নিয়ে শুরু হয় বিভিন্ন ধরনের অদ্ভূত সব কর্মকাণ্ড। অজ্ঞান পার্টি, মলম পার্টিসহ বিভিন্ন অসামাজিক কার্যকলাপ বেড়ে যায় বহুগুণে। এগুলো দেখলে মনে হয়, রমজানে ক’জন সহীহ শুদ্ধভাবে রোযা পালন করছে। এমনিতেই বহুল জনসংখ্যার দেশে এই যাত্রা একটি বিপজ্জনক পর্যায়ে পৌঁছায় কারণ সাধারণ অবস্থাতেই আমাদের রাস্তাঘাটে জ্যাম লেগে থাকে। আর ঈদ এলে এই জ্যাম পুরোটাই নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। এ সব কাজে যারা নিয়োজিত থাকে তারা অনেক সময় ইচ্ছে করেই জ্যাম লাগিয়ে থাকে। মানুষকে কষ্ট দিতে পেরে এক ধরনের পৈশাচিক আনন্দ তারা উপভোগ করে। যারা রাস্তাঘাট নির্বিঘ্ন করার দায়িত্বে নিয়োজিত তারাও নিজ থেকে কোনো উদ্যোগ গ্রহণ করে না, কোন দায়বদ্ধতা নেই, কোন চাপ নেই, নৈতিক কোনো তাড়না নেই যে, তাদের এই পবিত্র দায়িত্ব সততার সাথে পালন করতে হবে। তাই প্রতিবছর আমরা দেখতে পাই যানবাহনের দীর্ঘ লাইন, এই লাইন ত্রিশ, চল্লিশ , পঞ্চাশ মাইল কিংবা তারও বেশি। প্রচণ্ড দাবদাহ, প্রকৃতির ডাকে সারা দিতে না পারাসহ বহু পেরেসানির মধ্যে ছটফট করতে থাকে ছোট শিশু ও নারী যারা ঘণ্টার পর ঘণ্টা, পুরো দিন ও রাত এমনকি ঈদের দিন বিকেলেও অনেকে বাসায় পৌঁছাতে পারে না। এত কষ্ট সহ্য করে যখন বাসায় পৌঁছে, সাথে সাথে চিন্তা কীভাবে আবার কর্মস্থলে আসবেন। এগুলোর জন্য আমরা নিজেদের ভাগ্যকেই দায়ী করি কারণ এগুলো দেখার কেউ কখনো ছিল না, এখনো নেই। তারপরেও দিন চলে যাচ্ছে, সমাজ চলছে, মানুষের তার নিজের প্রচেষ্টায় এগিয়ে যাচ্ছে, এই তো পৃথিবী, এই তো ধরনীর নিয়ম। একটি সুষ্ঠু, সুন্দর ও ন্যায়নীতি পরায়ণ সমাজে বাস করার আগ্রহ ও ইচ্ছে অধিকাংশ মানুষের মধ্যে থাকলেও সে রকম প্রচেষ্টা অনেকেরই নেই। যে যার দায়িত্বটুকু সঠিকভাবে পালন করলেই আমরা সমাজকে পাল্টে দিতে পারি।

মাছুম বিল্লাহ: শিক্ষা বিশেষজ্ঞ ও গবেষক

আরএ/

Header Ad

‘দেশের মানুষ এখনো কোনো রাজনৈতিক দলকেই বিশ্বাস করতে পারে না’

ছবি: সংগৃহীত

দেশের জনপ্রিয় নির্মাতা আশফাক নিপুন। কাজের পাশাপাশি সামাজিক মাধ্যমেও বেশ সরব তিনি। কথা বলেন নানা ইস্যু নিয়ে। সেই ধারাবাহিকতায় সরকার পতনের পর অন্তবর্তীকালীন সরকার গঠনেও বিভিন্ন সময় নিজের আকাঙ্ক্ষা, প্রত্যাশার কথা জানিয়েছেন। পাশাপাশি রাজনৈতিক দলগুলোর উদ্দেশ্যেও বিভিন্ন বার্তা দিয়েছেন। এবার এমনি একটি বার্তায় দেশের রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি জনগনের আস্থার বিষয়ে আক্ষেপ জানালেন এই নির্মাতা।

বুধবার (২০ নভেম্বর) আশফাক নিপুন তার ফেসবুকে দেওয়া এক পোস্টে লেখেন, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে সর্বস্তরের ছাত্র এবং সাধারণ মানুষ রাস্তায় নেমে এসেছিল, বাসায় বসে বসে দোয়া করেছিল, যার যা সামর্থ্য দিয়ে সহায়তা করেছিল। কারণ, তারা দেখেছিল লড়াইটা আওয়ামী ফ্যাসিস্ট শাসক বনাম সাধারণ ছাত্র-জনতার। এটাও অস্বীকার করার কোনো উপায় নাই যে এই আন্দোলন বেগবান করতে বিরোধী সকল দলের কর্মীদের ভূমিকা অনস্বীকার্য। তাদের সংগ্রামও গত দেড় দশকের। কিন্তু এটা যদি শুধুমাত্র রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যকার লড়াই হতো তাহলে সাধারণ মানুষ এই লড়াই থেকে দূরে থাকত। সেই প্রমাণ বিগত ১৫ বছরে আছে।

‘দেশের মানুষ এখনো কোনো রাজনৈতিক দলকেই বিশ্বাস করতে পারে না’

কারণ হিসেবে তিনি বলেন, দেশের সাধারণ মানুষ এখনো দেশের কোনো রাজনৈতিক দলকেই পুরোপুরি বিশ্বাস করতে পারে না। এটাই বাস্তবতা। এই বাস্তবতা মেনে সকল রাজনৈতিক দলগুলোর উচিত কীভাবে সাধারণ জনগণের ভেতর নিজের দলের প্রতি আস্থা তৈরি করা যায় সেই বিষয়ে নিরলস কাজ করা। এই আস্থা ক্ষমতায় গিয়ে অর্জন করা সম্ভব না। কারণ, সাধারণ মানুষ আজীবন এস্টাবলিশমেন্টের বিপক্ষে। এই আস্থা অর্জন করতে হয় ক্ষমতা বলয়ের বাইরে থেকেই।

নিপুন আরও লিখেন, অরাজনৈতিক সরকার দিয়ে দীর্ঘদিন দেশ চালানো যেমন কাজের কথা না ঠিক তেমনি রাজনৈতিক সরকার হতে চাওয়া সকল রাজনৈতিক দলগুলোর বোঝা উচিত মুক্তিযুদ্ধের পরে বাংলাদেশের ইতিহাসের সবচেয়ে বড় গণঅভ্যুত্থান সংগঠিত হয়েছে সকল প্রকার পূর্বানুমান (যেমন- বর্ষাকালে আন্দোলন হয় না, নির্বাচনের আগেই কেবল জোরেশোরে আন্দোলন হয়, ঘোষণা দিয়ে বিরোধী সকল পক্ষ আন্দোলনে শামিল না হলে সফল হয় না) অগ্রাহ্য করেই। সেটা সম্ভব হয়েছে সাধারণ মানুষের ন্যায্যতার আকাঙ্ক্ষা থেকেই।

সবশেষ এই নির্মাতা লিখেছেন, ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা সাধারণ মানুষের এই আকাঙ্ক্ষার দুই পয়সার দাম দেন নাই। সাধারণ মানুষের এই আকাঙ্ক্ষা, ইচ্ছা আর দেশপ্রেমকে পুঁজি করে অরাজনৈতিক এবং রাজনৈতিক যারাই রাজনীতি রাজনীতি খেলতে চাইবে, তাদের দশাও কোন একসময় যেন পলাতক শেখ হাসিনার মতো না হয়, সেই বিষয় নিশ্চিত করতে হবে তাদেরকেই।

Header Ad

‘বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে সশস্ত্র বাহিনীর অবদান চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে’: প্রধান উপদেষ্টা

ফাইল ছবি

জুলাই-আগস্টের বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে সশস্ত্র বাহিনীর অবদান চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) বিকেলে ঢাকা সেনানিবাসের সেনাকুঞ্জে সশস্ত্র বাহিনী দিবস ২০২৪ উপলক্ষে আয়োজিত সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে দেওয়া বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, জুলাই-আগস্ট ছাত্র জনতার বিপ্লবের মধ্যে দিয়ে আমরা নতুন বাংলাদেশের সূচনা করেছি। এ নতুন দেশে আমাদের দায়িত্ব সকল মানুষকে এক বৃহত্তর পরিবারের বন্ধনে আবদ্ধ করা। কেউ কারো উপরে না, আবার কেউ কারো নিচেও না, এই ধারণা আমরা আমাদের জাতীয় জীবনে প্রতিষ্ঠিত করতে চাই।

তিনি বলেন, নতুন বাংলাদেশ গড়ার যে সুযোগ ছাত্র-জনতার সাহস ও আত্মত্যাগের বিনিময়ে সম্প্রতি আমরা অর্জন করেছি, সেটাকে কাজে লাগিয়ে আমাদের সুন্দর ও সমৃদ্ধশালী ভবিষ্যৎ গড়তে হবে। বীর মুক্তিযোদ্ধা, শহিদ, আহত এবং জীবিত ছাত্র-জনতার কাছে আমরা প্রতিজ্ঞাবদ্ধ থাকতে চাই। যে সুযোগ তারা আমাদের দিয়েছে, তার মাধ্যমে আমাদের দেশকে পৃথিবীর সামনে একটি দৃষ্টান্ত স্থাপনকারী দেশে পরিণত করতে আমরা শপথ নিয়েছি।

তিনি আরও বলেন, ছাত্র আন্দোলনে জীবন উৎসর্গ করে যারা দেশ গঠনের সুযোগ করে দিয়েছে জাতি তাদের সারা জীবন শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করবে।

বক্তব্য শেষে সেনা কর্মকর্তাদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন প্রধান উপদেষ্টা। পরে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।

Header Ad

নওগাঁ শহরে শৃঙ্খলা ফেরাতে বিশেষ অভিযান শুরু

ছবি: সংগৃহীত

নওগাঁ শহরে যানযট নিরসন ও শৃঙ্খলা ফেরাতে জেলা প্রশাসন, পুলিশ, পৌর কর্তৃপক্ষ ও রিকশা মালিক-শ্রমিকদের যৌথ উদ্যোগে বিশেষ অভিযান শুরু হয়েছে। এতে শহরে শৃঙ্খলা ফিরবে বলে আশাবাদ ব্যাক্ত করেছেন স্থানীয় কর্মকর্তারা।

বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) অভিযানের উদ্বোধন করেন নওগাঁ পৌরসভার প্রশাসক ও স্থানীয় সরকারের উপ পরিচালক টি.এম.এ মমিন। এ সময় নওগাঁ জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট জিয়া উদ্দিন, নওগাঁ পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী সাজ্জাদ হোসেন, নওগাঁ জেলা ট্রাফিক পুলিশের পরিদর্শক আফজাল হোসেন ও অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন।

অভিযান শুরুর পর থেকেই শহরের বরুনকান্দি, মশরপুর, তাজের মোড় ও কালীতলাসহ মোট ৮ টি প্রবেশদ্বারে চেকপোস্ট বসানো হয়েছে। চেক পোষ্টগুলোতে ২ জন পুলিশ সদস্য, ২ জন ছাত্র সমন্বয়ক, ৪ জন রোভার স্কাউট সদস্য ও ২ জন রিকশা মালিক শ্রমিক প্রতিনিধিসহ মোট ১২ জন করে কাজ করছেন।

পৌর প্রশাসক জানান, নওগাঁ শহরে বৈধ যানবাহনের সংখ্যা ৪ হাজার। কিন্তু প্রতিদিন পার্শবতী বিভিন্ন এলাকা থেকে অন্তত ১০ হাজার রিকশা, ব্যাটারী চালিত অটো রিকশা ও ইজিবাইক শহরে প্রবেশ করে। এতে তীব্র যানযট ও জন মানুষের ভোগান্তি তৈরী হয়। এই দূর্ভোগ লাঘোবে জেলা প্রশাসক মুহাম্মদ আব্দুল আউয়াল ও পুলিশ সুপার কুতুব উদ্দিনের দিক নির্দেশনায় যানবাহন নিয়ন্ত্রনসহ বিশেষ অভিযানের সিদ্ধান্ত গ্রহন করা হয়। বৈধ চালকদের চিহ্নিত করতে তাদের মাঝে পরিধেয় বিশেষ ধরনের জ্যাকেট প্রদান করা হচ্ছে বলেও জানান তিনি।

নওগাঁর পুলিশ সুপার কুতুব উদ্দিন বলেন, নওগাঁ শহরের যানযট দীর্ঘদিনের সমস্যা। পরিকল্পিত ভাবে এই সমস্যা দূর করতে জেলা প্রশাসন ও পুলিশ বিভাগের উদ্যোগে পৌর কর্তৃপক্ষ ও রিকশা মালিক শ্রমিক নেতৃবৃন্দদের সমন্বয়ে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে স্থানীয় বাসিন্দা ও বিভিন্ন ষ্টেক হোল্ডারদের পরামর্শ নিয়ে একটি কর্ম পরিকল্পনা গ্রহক করা হয়েছে।

এ বিষয়ে নওগাঁর জেলা প্রশাসক মুহাম্মদ আব্দুল আউয়াল বলেন, অভিযান সফল ভাবে বাস্তবায়ন হলে শহরে শৃঙ্খলা ফিরে আসবে। জনগন এর সুফল পাবেন। সকলকে এই কার্যক্রমে সহযোগিতা প্রদানের আহবান জানান তিনি।

Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

‘দেশের মানুষ এখনো কোনো রাজনৈতিক দলকেই বিশ্বাস করতে পারে না’
‘বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে সশস্ত্র বাহিনীর অবদান চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে’: প্রধান উপদেষ্টা
নওগাঁ শহরে শৃঙ্খলা ফেরাতে বিশেষ অভিযান শুরু
২০২৬ সালের মাঝামাঝিতে নির্বাচন হতে পারে: উপদেষ্টা সাখাওয়াত
সেনাকুঞ্জে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে খালেদা জিয়ার শুভেচ্ছা বিনিময়
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে আহত ৫ জনকে রোবটিক হাত উপহার
সেনাকুঞ্জের পথে খালেদা জিয়া
সুযোগ পেলে শেখ হাসিনার পক্ষে মামলায় লড়ব: জেড আই খান পান্না
নির্বাচন কমিশন গঠন, সিইসি হলেন অবসরপ্রাপ্ত সচিব নাসির উদ্দীন
ডিএনএ টেস্টের ফলাফল: ভিনিসিয়ুসের পূর্বপুরুষ ছিলেন ক্যামেরুনের
জামিন পেলেন সাংবাদিক শফিক রেহমান
বিএনপি ছেড়ে আওয়ামী লীগে আসা সেই শাহজাহান ওমর গ্রেপ্তার
মিরপুর ও মহাখালীতে অটোরিকশা চালকদের সেনাবাহিনীর ধাওয়া
‘শেখ হাসিনা এখনও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী’, এমন কথা বলেননি ট্রাম্প
লেবাননে ৮ শতাধিক ইসরায়েলি সেনা নিহত
ভারতে সাজাভোগ শেষে দেশে ফিরল ২৪ বাংলাদেশি কিশোর-কিশোরী
ঢাকার বিভিন্ন পয়েন্টে অবরোধ করে ব্যাটারিচালিত রিকশাচালকদের বিক্ষোভ
গাজায় ইসরায়েলের হামলায় আরও ৮৮ ফিলিস্তিনি নিহত
সাবেক এমপি শাহজাহান ওমরের বাড়িতে হামলা-ভাঙচুর
১২ বছর পর সেনাকুঞ্জে যাচ্ছেন খালেদা জিয়া