মঙ্গলবার, ৫ নভেম্বর ২০২৪ | ২০ কার্তিক ১৪৩১
Dhaka Prokash
Header Ad

মূল্যায়ন নিয়ে বিভ্রান্তিতে শিক্ষক, অভিভাবক ও শিক্ষার্থী

মূল্যায়ন শিখন শেখানো কার্যক্রমের একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান ও বিষয়। আমরা এত বছর যে প্রক্রিয়ায় শিক্ষার্থীদের মূল্যায়ন করে এসেছি সেটি নিয়ে অনেক প্রশ্ন ছিল। তাই নতুন কারিকুলামে এখানে অনেক পরিবর্তন নিয়ে আসা হয়েছে। কিন্তু এটি নিয়ে বিপাকে প্রায় সবাই। প্রাক-প্রাথমিক থেকে উচচমাধ্যমিক স্তর পর্যন্ত বিদ্যমান পরীক্ষার চেয়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ধারাবাহিক মূল্যায়ন বেশি হবে। এর মধ্যে তৃতীয় শ্রেণি পর্যন্ত কোনো পরীক্ষা হবে না, পুরোটাই মূল্যায়ন হবে সারা বছর ধরে চলা বিভিন্ন রকমের শিখন কার্যক্রমের ভিত্তিতে। পরবর্তী শ্রেণিগুলোর মূল্যায়নের পদ্ধতি হিসেবে পরীক্ষা ও ধারাবাহিক শিখন কার্যক্রম-দুটোই থাকছে। চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণিতে বাংলা, ইংরেজি, গণিত, বিজ্ঞান ও সামাজিক বিজ্ঞান বিষয়ের ৬০ শতাংশ মূল্যায়ন হবে ‘শিখনকালীন’ এবং বাকি ৪০ শতাংশ হবে পরীক্ষার ভিত্তিতে।

নবম-দশম শ্রেণিতে এটি ৫০ শতাংশ-৫০ শতাংশ আর উচ্চ মাধ্যমিকে শিখনকালীন মূল্যায়ন ৩০ শতাংশ এবং সামস্টিক মূল্যায়ন ৭০ শতাংশ। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কার্যক্রমের ভিত্তিতে শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য ও সুরক্ষা, ধর্মশিক্ষা এবং শিল্পকলা বিষয়ের পুরোটাই শিখনকালীন মূল্যায়ন হবে। এখানেই বেঁধেছে বিপত্তি। একটি জাতীয় দৈনিক লিখেছে, ঠিকমতো বই পৌঁছায়নি সব শিশুদের কাছে, ইতোমধ্যে দুটো বই তুলে নেওয়া হয়েছে, যেসব বই শিশুদের কাছে এসেছে সেগুলোর মধ্যে বিভিন্ন ধরনের ভুল-ভ্রান্তি ধরা পড়ছে। সবকিছু নিয়ে শিক্ষার্থীরা বিপাকে পড়েছে।

আমি দেখছি শিক্ষার্থীদের চেয়ে শিক্ষকরা বেশি বিপাকে পড়েছেন। কারণ তাদের বলা হয়েছে ৬০ শতাংশ মূল্যায়ন হবে শিখনকালীন এবং বাকি ৪০ শতাংশ পরীক্ষার ভিত্তিতে অর্থাৎ সামস্টিক মূল্যায়ন। এখন এই ৬০ শতাংশ মূল্যায়ন কীভাবে হবে সেটি কারোর কাছেই স্পষ্ট নয়। অনেক শিক্ষক কথা বলছেন, ফোন দিচ্ছেন, মেইল দিচ্ছেন বিষয়টি আরও খোলাসা করার জন্য। আমি তাদের জিজ্ঞেস করেছি আপনারা প্রশিক্ষণে এর উত্তর পাননি। উত্তরে সবাই যেটি বলেছেন তার সারমর্ম হচ্ছে, ‘বারবার জিজ্ঞেস করা সত্ত্বেও প্রশিক্ষকরা বিষয়টি এড়িয়ে গেছেন। বোঝা যাচ্ছে বিষয়টি সম্পর্কে তাদেরও স্বচ্ছ ধারণা নেই।’

আসলেও তাই। কোনো বিষয়ের বইয়ে কোনো ধরনের মডেল প্রশ্ন সরবরাহ করা হয়নি। সম্ভবত শিক্ষার্থীদের অধিক মাত্রায় সৃজনশীল করার জন্যই এই প্রচেষ্টা। কিন্তু আমাদের ভুলে গেলে চলবে না যে, আইইএলটিএস-এর মতো আন্তর্জাতিক পরীক্ষায়ও খুব সন্দরভাবে সিলেবাস, মডেল প্রশ্ন দেওয়া থাকে। পরীক্ষার চারটি অংশের কোনো অংশে কত সময়, কয়টি প্রশ্ন থাকবে, ওই ধরনের প্রশ্নের উদ্দেশ্য কী অর্থাৎ শিক্ষার্থীদের কী টেস্ট করা হচ্ছে সবকিছুই সুন্দরভাবে উল্লেখ করা থাকে। আর আমাদের কী হলো, আমরা হঠাৎ করে এত সৃজনশীল বানানোর চেষ্টা কেন করছি? এতে তো দেখছি ‘আম’ ও ‘আমের ছালা’ সবই যাচ্ছে। শিক্ষকরা বিভ্রান্তিতে, অভিভাবকরা বিভ্রান্তিতে, শিক্ষার্থীরা ক্লাসে আসছে না বহু জায়গায়, আসলেও কিছু করতে চাচ্ছে না। এই অবস্থা নিয়ে আমাদের চিন্তা করতে হবে।

শিখনকালীন কোন লেসন বা চ্যাপ্টার কীভাবে নিতে হবে, প্রতি সপ্তাহে না মাসে নিতে হবে, যেহেতু নম্বর দেওয়ার পদ্ধতি নেই তাহলে সেগুলোর গড় কীভাবে হবে ইত্যাদি বিষয়গুলো এখনো ঘোলাটে। তারপর সে ফলগুলো মূল ফলকে, মূল মূল্যায়নে কীভাবে সংযুক্ত হবে এবং সার্বিক মূল্যায়নে সেটি কীভাবে মূল্যায়িত হবে সেসব বিষয় পুরোপুরি অনুপস্থিত। কাজেই শুধু শিক্ষার্থীরা নয়, শিক্ষকরাও বিপাকে। প্রশিক্ষণে এ ধরনের কোনো আলোচনা হয়নি। কেউ কেউ করতে চেয়েছেন, প্রশিক্ষকরা এড়িয়ে গেছেন। বিষয়টি প্রশিক্ষকদের কাছেও স্পষ্ট নয়। যে অ্যাপসের মাধ্যমে এটি করার কথা, সেই অ্যাপসের খবর নেই। কবে হবে তারও কোনো দিক নির্দেশনা নেই। শিক্ষকদের মধ্য থেকেই বিষয়টি নিয়ে বেশি বেশি আলোচনা ও প্রশ্ন আসার কথা ছিল সেভাবে কিন্তু আসেনি বা আসছে না। শুধুমাত্র আগ্রহী ও সিরিয়াস কিছু টিচার বিষয়টি নিয়ে ভেবেছেন। আমাদের পূর্ববর্তী মূল্যায়ন ব্যবস্থায় শিক্ষকদের দায়িত্বই শতভাগ যা প্রাইভেট কোচিং, শিক্ষার্থীদের মুখস্থ-নির্ভরতা, শিক্ষকদের নোট প্রদান ইত্যাদি বিষয়গুলোকে প্রভাবিত করত। দীর্ঘদিন ধরে এটা ছিল আমাদের শতভাগ মূল্যায়নের ধরন। এখন যে প্রক্রিয়াটি আসছে, সেখানে শিক্ষার্থীর স্বমূল্যায়ন ব্যবস্থা রয়েছে। সে হাতে কলমে একটা কাজ করে এসে তারপর তাকে একটা রুবরিক্স পূরণ করতে হবে। ছকটা পূরণ করে ওই জায়গাগুলোতে তার যে পর্যবেক্ষণগুলো সে দেখেছে বা শুনেছে বা হাতে কলমে করেছে তার এভিডেন্সগুলোর রেফারেন্স লিখতে হবে।

দ্বিতীয়ত, সহপাঠী মূল্যায়ন গ্রুপ, একটা গ্রুপ আরেকটা গ্রুপকে মূল্যায়ন করবে। আবার অভিজ্ঞতা অর্জন করতে গিয়ে অভিভাবক বা অন্যান্য অংশীজনের সঙ্গে তার যে ইন্টারঅ্যাকশন হচ্ছে তারাও এখানে বিভিন্ন উপায়ে অংশগ্রহণ করবে। এগুলোর এভিডেন্সগুলো থাকছে, এসবের ভিত্তিতে শিক্ষককে একটি কালেক্টিভ রেজাল্ট তৈরি করতে হবে। আগে যে মূল্যায়ন পদ্ধতি ছিল সেখানে ক্রসচেকের কোনো উপায় ছিল না, বর্তমানে তা থাকার কথা। স্কুল বেজড অ্যাসেসমেন্ট ছিল লিখিত পরীক্ষা নির্ভর ৮০ ভাগ, আর ২০ ভাগ ছিল ধারাবাহিক শিখনকালীন মূল্যায়ন। প্রায়োগিক দিকের যে প্লানিং ছিল সেখানে বড় গ্যাপ ছিল। শিখনকালীন মূল্যায়নের ক্ষেত্রে শিক্ষকই একমাত্র দায়িত্বপ্রাপ্ত ছিল। যার ফলে শিক্ষক সেটিকে সঠিকভাবে করতে পারেননি অনেক ক্ষেত্রেই। বর্তমানের মূল্যায়নটা আলাদা। কারণ অভিজ্ঞতা চক্রের মধ্যে দিয়ে শিক্ষার্থীরা শিখবে যেখানে শিক্ষার্থীর স্বমূল্যায়নের জায়গা আছে, তাকে নানারকম কাজ করতে হবে। বর্তমান মূল্যায়ন ব্যবস্থায় এসব বিষয়ের উল্লেখ আছে কিন্তু শিক্ষকরা এগুলোর সঙ্গে এখনো পরিচিত নন, আত্মবিশ্বাসী হওয়া তো দূরের কথা।

সৃজনশীল প্রশ্ন মানুষের শিখনকে লিখিত উপায়ে প্রকাশের একটা বিকল্প মাধ্যম যেটা মানুষের ক্রিটিক্যাল থিংকিংকে উন্নত করার জন্য করা হয়েছিল। কিন্তু মানুষতো তার শিখনকে শুধু লিখে প্রকাশ করে না। এখানে একটি গ্যাপ রয়েছে। লিখে প্রকাশ করা বিষয়টিকে ঠিক রেখে নানারকম বিকল্প খোঁজার চেষ্টা করা হয়েছে। যেকোনো মূল্যায়নে লেখাটাকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ উপায় হিসেবে দেখা হয়। কারণ লেখার অর্থ হচ্ছে প্রার্থীর অন্তর্নিহিত ধারণা, চিন্তাধারা, মতামত, যোগ্যতা, অভিজ্ঞতা, কল্পনা, পরিকল্পনা, স্বপ্ন, উদ্দেশ্য বিস্তারিতভাবে তার লেখায় ফুটে উঠে যদিও লেখার দ্বারা তার উপস্থাপন দক্ষতা কিংবা সহমর্মিতা বা গণতান্ত্রিক ধারণার বাস্তব প্রতিফলন নাও ঘটতে পারে। লেখার মাধ্যমে নান্দদিক দিকগুলোও ফুটে উঠে। তাই যুগ যুগ ধরে লেখাটাই একজন প্রার্থীর গুরুত্বপূর্ণ মূল্যায়ন মাধ্যম হিসেবে বিবেচিত হয়ে আসছে। কিন্তু নতুন কারিকুলামে লেখা বিষয়টির উপর উল্লেখযোগ্য হারে কমিয়ে দেওয়া হয়েছে।

শ্রেণিকক্ষেই সবকিছু পড়ানো হবে কথাটি আদর্শিক। বাস্তবের সঙ্গে পুরোটা কিন্তু মিলে না অন্তত আমাদের দেশের কনটেস্টে। প্রথমত, শ্রেণিকক্ষের সংক্ষিপ্ত সময়ের মধ্যে একটি বিষয়ে শিক্ষার্থীদের যে পরিমাণ অনুশীলন দরকার সেটি হয় না কিছু বাস্তব কারণে। একজন শিক্ষার্থীর যে আলাদা সময় প্রয়োজন সেটি দেওয়ারও সুযোগ থাকে না। কাজেই শিক্ষার্থীরা বিশেষ করে যারা ভালো ফলাফল করতে চাইতো তারা প্রাইভেট পড়ে, কোচিং করে সেগুলো সেরে নেওয়ার চেষ্টা করত। যারা দুর্বল তারা দুর্বলতা কাটিয়ে উঠার জন্য প্রাইভেট পড়া ও কোচিং করা চালিয়ে যেত। তবে বিষয় দুটো কিছু ক্ষেত্রে অতিমাত্রায় বাণিজ্যিক আকার ধারণ করায় সচেতন অভিভাবক, শিক্ষাবিদ ও পলিসি মেকাররা প্রাইভেট পড়ানো বন্ধ করার পক্ষে যুক্তি দিয়ে আসছেন এবং বন্ধের জন্য কিছুটা এই ব্যবস্থা করেছেন। শিক্ষাকে আনন্দময় করার প্রতিশ্রুতির মধ্য দিয়ে হোমওয়ার্কের একেবারেই গুরুত্ব না দেওয়ার বিষয়টিও চলে এসেছে। কিন্তু হোমওয়ার্ক একেবারে বাদ দেওয়া ঠিক হবে না কারণ এই বয়সের শিক্ষার্থীদের ব্যস্ত রাখতে হবে কিন্তু সেটি যেন তাদের জন্য বোঝা না হয়ে দাঁড়ায়। বাসায় একেবারে কিছু করার না থাকলে তারা বাজে কাজে সময় নষ্ট করবে। অলস মস্তিষ্ক শয়তানের বাসা বলে যে কথাটি প্রচলিত আছে সেটিই হয়তো এখানে হবে। শ্রেণিকক্ষের অল্প সময়ের মধ্যে সব বিষয়ের সঠিক অনুশীলন সম্ভব হয় না। তা ছাড়া কিছু শিক্ষার্থী সবার সামনে থেকে বিষয় আয়ত্ত করতে পারে না, তাদের আলাদা এবং নিজস্ব সময় প্রয়োজন।

শিক্ষার্থীরা পাস করছে, ভালো গ্রেডিং পেয়ে আসছিল কিন্তু তাদের ক্রিটিক্যাল থিংকিং উন্নত হচ্ছিল না, নতুন কারিকুলামের মূল্যায়ন প্রক্রিয়ায় এ বিষয়টিকেও গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে যেটি ভালো পদক্ষেপ। আগে কোনোরকম আন্ডারস্ট্যান্ডিং ছাড়া, কনটেক্সটের সঙ্গে কোনো সম্পর্ক না বুঝেই একজন শিক্ষার্থী কেবল মুখস্থ করে ভালো নম্বর পেয়ে যেত। এখন কিন্তু তাকে বুঝে কনটেক্সটের সঙ্গে রিলেশনশিপ তৈরি করে শুধু মাত্র জানলেই চলবে না, তাকে সেটা প্রয়োগ করার দক্ষতাও অর্জন করতে হবে। এটিও আদর্শিক কথা বলে মনে হয়। ক’জন শিক্ষকের এ বিষয়টি মূল্যায়ন করার দক্ষতা রয়েছে সেটি একটি বিষয়, তা ছাড়া একজন শিক্ষককে প্রতিদিন কয়টা করে ক্লাস নিতে হয়, কতজন শিক্ষার্থীর সঙ্গে কথা বলতে হয়, কতটা ধৈর্য তার থাকে যে এসব বিষয় লক্ষ্য করে করে শিক্ষার্থীদের মূল্যায়ন করবেন। আমাদের শিক্ষার্থীদের অপার সম্ভাবনা রয়েছে, মেধা আছে কিন্তু প্রকাশ করার পরিবেশ, পরিস্থিতি না থাকায় এগুলো সুপ্তই থেকে যায়, প্রকাশিত হয় না, হলেও অনেক বিলম্বে। ভালো গ্রেডিং নিয়ে পাস করেও লেখায় দুর্বল ছিল। বর্তমান মূল্যায়নে লেখার উপর গুরুত্ব আরও কমিয়ে দেওয়া হয়েছে কারণ তার কার্যাবলির উপরই বেশি মূল্যায়ন হবে। যেকোনো মূল্যায়নে লেখাটাকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ উপায় হিসেবে দেখা হয়। যুগ যুগ ধরে লেখাটাই একজন প্রার্থীর গুরুত্বপূর্ণ মূল্যায়ন মাধ্যম হিসেবে বিবেচিত হয়ে আসছে। কিন্তু নতুন কারিকুলাম বিষয়টির উপর গুরুত্ব উল্লেখযোগ্য হারে কমিয়ে দেওয়া হয়েছে, সেটি বিবেচনার দাবি রাখে। তবে একজন শিক্ষক যদি দক্ষ হন তাহলে শিক্ষার্থীদের লেখার মাধ্যমে প্রকাশ করায় তাদের দক্ষ করে গড়ে তুলতে পারবেন। যেকোনো কারিকুলামেই শিক্ষকের দয়িত্ববোধ, সৃজনশীলতা এবং জানার আগ্রহ শিক্ষার্থীদের প্রকৃত জ্ঞান অর্জনে ও তা বাস্তবে প্রয়োগ করার ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখে।

লেখক: শিক্ষা বিশেষজ্ঞ ও গবেষক

এসজি

Header Ad

বাংলাদেশ দলের সহকারী কোচ হলেন সালাহউদ্দিন

বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের সহকারী কোচ হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন মোহাম্মদ সালাউদ্দিন। ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের সহকারী কোচ হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন মোহাম্মদ সালাউদ্দিন। দীর্ঘদিন ধরেই তাকে জাতীয় দলের সহকারী কোচ হিসেবে নিয়োগ দেওয়া নিয়ে আলোচনা চলছিল, তবে নানা কারণে বিষয়টি এতদিন বাস্তবায়িত হয়নি।

রাজনৈতিক পরিস্থিতি ও বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) সাম্প্রতিক পরিবর্তনের পর তার কোচ হয়ে আসার গুঞ্জন আবারও জোরালো হয়। চট্টগ্রামে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে চলমান টেস্ট ম্যাচের সময় বিসিবি সভাপতি ফারুক আহমেদ ইঙ্গিত দিয়েছিলেন, দেশের অভিজ্ঞ কাউকে সহকারী কোচ হিসেবে নেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে।

 

বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের সহকারী কোচ হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন মোহাম্মদ সালাউদ্দিন। ছবি: সংগৃহীত

মঙ্গলবার বিসিবি কার্যালয়ে উপস্থিত হয়ে সভাপতি ফারুক আহমেদের সঙ্গে বৈঠক করেন সালাউদ্দিন। এই বৈঠকের পরই চূড়ান্ত হয় যে, আসন্ন চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি পর্যন্ত জাতীয় দলের সহকারী কোচ হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন তিনি। সালাউদ্দিনের এই নিয়োগ জাতীয় দলের অভিজ্ঞতা এবং কোচিং দক্ষতায় নতুন মাত্রা যোগ করবে বলে আশাবাদী বিসিবি।

উল্লেখ্য, এর আগে ২০০৫ থেকে ২০১০ সাল পর্যন্ত জাতীয় দলের সহকারী কোচ হিসেবে কাজ করেছেন সালাউদ্দিন। এছাড়া বিকেএসপি এবং বিপিএলে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের প্রধান কোচ হিসেবেও তার সফলতার অভিজ্ঞতা রয়েছে।

Header Ad

আরও ২৯ জন সাংবাদিকের প্রেস অ্যাক্রেডিটেশন কার্ড বাতিল

ছবি: সংগৃহীত

তথ্য অধিদপ্তর (পিআইডি) সম্প্রতি আরও ২৯ জন সাংবাদিক ও সংশ্লিষ্ট পেশার ব্যক্তির প্রেস অ্যাক্রেডিটেশন কার্ড বাতিলের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে। রোববার (৩ নভেম্বর) পিআইডির প্রধান তথ্য কর্মকর্তা মো. নিজামুল কবীর স্বাক্ষরিত এক আদেশে এই সিদ্ধান্ত জানানো হয়।

আদেশে বলা হয়, প্রেস অ্যাক্রেডিটেশন নীতিমালা অনুযায়ী এই সাংবাদিকদের স্থায়ী এবং অস্থায়ী অ্যাক্রেডিটেশন কার্ড বাতিল করা হয়েছে। বাতিল হওয়া কার্ডধারীদের মধ্যে আছেন বেশ কয়েকজন গুরুত্বপূর্ণ গণমাধ্যমের সম্পাদক, সংবাদ প্রধান এবং বিশেষ প্রতিনিধি।

কার্ড বাতিল হওয়া সাংবাদিকদের মধ্যে রয়েছেন টিভি টুডের প্রধান সম্পাদক মঞ্জুরুল আহসান বুলবুল, কালের কণ্ঠের সম্পাদক ইমদাদুল হক মিলন, নিউজ২৪-এর হেড অব নিউজ রাহুল রাহা, এটিএন নিউজের বার্তা প্রধান নুরুল আমিন প্রভাষ, দৈনিক ডেসটিনির উপ-সম্পাদক সোহেল হায়দার চৌধুরী, ডিবিসি নিউজের প্রধান সম্পাদক মোহাম্মদ মঞ্জুরুল ইসলাম, সময় টিভির সিইও আহমেদ জোবায়ের, দৈনিক জাগরণের সম্পাদক আবেদ খান, এবং নিউজ২৪-এর সিনিয়র রিপোর্টার জয়দেব চন্দ্র দাস।

এছাড়া, নাগরিক টিভির প্রধান বার্তা সম্পাদক দীপ আজাদ, এটিএন বাংলার প্রধান নির্বাহী জ.ই. মামুন, বাসসের উপপ্রধান বার্তা সম্পাদক মো. ওমর ফারুক, চ্যানেল আইয়ের বিশেষ প্রতিনিধি হোসনে আরা মমতা ইসলাম সোমা, দৈনিক কালের কণ্ঠের বিশেষ প্রতিনিধি হায়দার আলী, দৈনিক আমাদের অর্থনীতির সিনিয়র নির্বাহী সম্পাদক মাসুদা ভাট্টি, দৈনিক পূর্বকোণের ঢাকা ব্যুরো প্রধান কুদ্দুস আফ্রাদ, বৈশাখী টিভির প্রধান সম্পাদক সাইফুল ইসলাম, ডিবিসি নিউজের অ্যাসাইমেন্ট এডিটর নাজনীন নাহার মুন্নী, ফ্রিল্যান্সার নাদিম কাদির, বাসসের নগর সম্পাদক মধুসূদন মন্ডল, এবং ইন্ডিপেন্ডেন্ট টিভির প্রধান বার্তা সম্পাদক আশিষ ঘোষ সৈকত।

তালিকায় আরও আছেন দৈনিক বাংলার ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক জাফরউল্লাহ শরাফত, দৈনিক আনন্দ বাজারের বিশেষ প্রতিনিধি কিশোর কুমার সরকার, দৈনিক বাংলাদেশ বুলেটিনের সম্পাদক রফিকুল ইসলাম রতন, মাইটিভির চেয়ারম্যান নাসির উদ্দিন, আরটিভির সিইও আশিকুর রহমান, একুশে টিভির হেড অব ইনপুট অখিল কুমার পোদ্দার, গাজী টিভির এডিটর রিসার্চ অঞ্জন রায় এবং দৈনিক ভোরের কাগজের বার্তা সম্পাদক ইখতিয়ার উদ্দিন।

এই সাংবাদিকদের কার্ড বাতিলের সিদ্ধান্তের পর গণমাধ্যমজুড়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে।

Header Ad

কৃষক বাবাকে ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা বানিয়ে পুলিশের এএসপি হন শতকোটি টাকার মালিক হারুন

সাবেক ডিবি প্রধান হারুন অর রশীদ। ছবি: সংগৃহীত

মিঠামইন উপজেলার ঘাগড়া ইউনিয়নের হোসেনপুর গ্রামের দরিদ্র কৃষক পরিবারে জন্ম সাবেক ডিবি প্রধান হারুন অর রশীদের। ২০তম বিসিএসে মুক্তিযোদ্ধার সন্তান কোটায় পুলিশে যোগ দিলেও তার বাবা মো. হাসিদ ভূঁইয়া প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন না। ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে তার বাবার নাম মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়, যা পরে হারুনের পুলিশের চাকরির ক্ষেত্রে সহায়তা করে।

২০১১ সালের ৬ জুলাই সংসদ ভবনের সামনে তৎকালীন বিরোধীদলীয় চিফ হুইপ বিএনপি নেতা জয়নুল আবদীন ফারুককে মারধর করে আলোচনায় আসেন হারুন। এ ঘটনার পর তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আস্থা অর্জন করেন তিনি এবং তার পর থেকেই একের পর এক পদোন্নতির মাধ্যমে পুলিশের অন্যতম প্রভাবশালী কর্মকর্তায় পরিণত হন।

হারুন অর রশীদ ক্ষমতার অপব্যবহার করে রাতারাতি সম্পদের পাহাড় গড়েন। বলা হয়, সাধারণত হেলিকপ্টার ছাড়া তিনি বাড়িতে আসতেন না। তার বিরুদ্ধে দেশ ও বিদেশে কোটি কোটি টাকা পাচারের অভিযোগও ওঠে। মিঠামইনে নিজ গ্রামের বাড়িতে শতকোটি টাকা ব্যয়ে গড়ে তোলেন বিলাসবহুল 'প্রেসিডেন্ট রিসোর্ট', যেখানে রয়েছে হেলিপ্যাড এবং অত্যাধুনিক সুইমিং পুল।

প্রেসিডেন্ট রিসোর্টটি একসময় ধনাঢ্য ও প্রভাবশালী ব্যক্তিদের নিরাপদ আশ্রয়স্থল হিসেবে পরিচিত ছিল। তবে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর রিসোর্টের জৌলুসও কমে যায় এবং অবশেষে রিসোর্টের সব কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়। এখন সেখানে জনমানবহীন ভূতুড়ে পরিবেশ বিরাজ করছে।

সরেজমিনে দেখা যায়, হারুনের রিসোর্টটির জন্য এলাকার সংখ্যালঘু ও অন্যান্য ভূমি মালিকদের ভয় দেখিয়ে জমি দখল করা হয়েছিল এবং অধিকাংশ মালিক এখনো তাদের জমির মূল্য পাননি। স্থানীয় সংখ্যালঘু প্রতিনিধি দীলিপ চৌধুরী জানান, তার কোটি টাকার মূল্যমানের জমি হারুন ভয় দেখিয়ে দখল করেছেন, কিন্তু টাকা পরিশোধ করেননি। একইভাবে মানিক মিয়া নামে আরেক ব্যক্তি তার ৫ একর জমির কোনো মূল্যই পাননি।

স্থানীয়রা বলছেন, ছাত্রজীবনে ছাত্রলীগের রাজনীতি করা হারুন পুলিশি ক্ষমতার অপব্যবহার করে রাতারাতি বিত্তবৈভবের মালিক হয়েছেন।

Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

বাংলাদেশ দলের সহকারী কোচ হলেন সালাহউদ্দিন
আরও ২৯ জন সাংবাদিকের প্রেস অ্যাক্রেডিটেশন কার্ড বাতিল
কৃষক বাবাকে ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা বানিয়ে পুলিশের এএসপি হন শতকোটি টাকার মালিক হারুন
হত্যা মামলার আসামি হয়েও পাসপোর্ট পেতে যাচ্ছেন শিরীন শারমিন চৌধুরী
জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষ্যে ছাত্রদলের দুই দিনের কর্মসূচি ঘোষণা
শেখ হাসিনা কীভাবে ভারতে আছেন, জানতে চাইলেন ঝাড়খন্ডের মুখ্যমন্ত্রী
মানুষ আগেও ভোটারবিহীন সরকারকে মানেনি, এখনও মানবে না: মির্জা আব্বাস
মাওলানা সাদকে দেশে আসতে দিলে অন্তর্বর্তী সরকারের পতন
সরকারি অনুষ্ঠানে স্লোগান ও জয়ধ্বনি থেকে বিরত থাকার নির্দেশনা
বেনাপোল স্থলবন্দরে ভোক্তা অধিকারের মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত
গুম কমিশনে জমা পড়েছে ১৬০০ অভিযোগ, সবচেয়ে বেশি র‌্যাবের বিরুদ্ধে
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যকে হত্যার হুমকি, থানায় জিডি
মালয়েশিয়ায় বন্দিশিবির থেকে ছয় বাংলাদেশিকে উদ্ধার, মানবপাচার চক্র আটক
১২ কেজি এলপি গ্যাসের দাম কমলো ১ টাকা
বিডিআর হত্যাকাণ্ড পুনঃতদন্তে হাইকোর্টের জাতীয় কমিশন গঠনের নির্দেশ কেন নয়
বাংলাদেশে ইজতেমা একবারই হবে, দুবার নয়: মহাসম্মেলনে বক্তারা
এক মাস পর খাগড়াছড়ি ও সাজেক পর্যটকদের জন্য উন্মুক্ত
মার্কিন নির্বাচনে লড়ছেন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ৬ প্রার্থী
শাকিব খানের সঙ্গে প্রেমের গুঞ্জন, মুখ খুললেন পূজা চেরি
মুক্তিযোদ্ধার নাতি-নাতনি কোটা রেখেই ঢাবির ভর্তি কার্যক্রম শুরু