রবিবার, ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ | ১০ ফাল্গুন ১৪৩১
Dhaka Prokash

মূল্যায়ন নিয়ে বিভ্রান্তিতে শিক্ষক, অভিভাবক ও শিক্ষার্থী

মূল্যায়ন শিখন শেখানো কার্যক্রমের একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান ও বিষয়। আমরা এত বছর যে প্রক্রিয়ায় শিক্ষার্থীদের মূল্যায়ন করে এসেছি সেটি নিয়ে অনেক প্রশ্ন ছিল। তাই নতুন কারিকুলামে এখানে অনেক পরিবর্তন নিয়ে আসা হয়েছে। কিন্তু এটি নিয়ে বিপাকে প্রায় সবাই। প্রাক-প্রাথমিক থেকে উচচমাধ্যমিক স্তর পর্যন্ত বিদ্যমান পরীক্ষার চেয়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ধারাবাহিক মূল্যায়ন বেশি হবে। এর মধ্যে তৃতীয় শ্রেণি পর্যন্ত কোনো পরীক্ষা হবে না, পুরোটাই মূল্যায়ন হবে সারা বছর ধরে চলা বিভিন্ন রকমের শিখন কার্যক্রমের ভিত্তিতে। পরবর্তী শ্রেণিগুলোর মূল্যায়নের পদ্ধতি হিসেবে পরীক্ষা ও ধারাবাহিক শিখন কার্যক্রম-দুটোই থাকছে। চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণিতে বাংলা, ইংরেজি, গণিত, বিজ্ঞান ও সামাজিক বিজ্ঞান বিষয়ের ৬০ শতাংশ মূল্যায়ন হবে ‘শিখনকালীন’ এবং বাকি ৪০ শতাংশ হবে পরীক্ষার ভিত্তিতে।

নবম-দশম শ্রেণিতে এটি ৫০ শতাংশ-৫০ শতাংশ আর উচ্চ মাধ্যমিকে শিখনকালীন মূল্যায়ন ৩০ শতাংশ এবং সামস্টিক মূল্যায়ন ৭০ শতাংশ। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কার্যক্রমের ভিত্তিতে শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য ও সুরক্ষা, ধর্মশিক্ষা এবং শিল্পকলা বিষয়ের পুরোটাই শিখনকালীন মূল্যায়ন হবে। এখানেই বেঁধেছে বিপত্তি। একটি জাতীয় দৈনিক লিখেছে, ঠিকমতো বই পৌঁছায়নি সব শিশুদের কাছে, ইতোমধ্যে দুটো বই তুলে নেওয়া হয়েছে, যেসব বই শিশুদের কাছে এসেছে সেগুলোর মধ্যে বিভিন্ন ধরনের ভুল-ভ্রান্তি ধরা পড়ছে। সবকিছু নিয়ে শিক্ষার্থীরা বিপাকে পড়েছে।

আমি দেখছি শিক্ষার্থীদের চেয়ে শিক্ষকরা বেশি বিপাকে পড়েছেন। কারণ তাদের বলা হয়েছে ৬০ শতাংশ মূল্যায়ন হবে শিখনকালীন এবং বাকি ৪০ শতাংশ পরীক্ষার ভিত্তিতে অর্থাৎ সামস্টিক মূল্যায়ন। এখন এই ৬০ শতাংশ মূল্যায়ন কীভাবে হবে সেটি কারোর কাছেই স্পষ্ট নয়। অনেক শিক্ষক কথা বলছেন, ফোন দিচ্ছেন, মেইল দিচ্ছেন বিষয়টি আরও খোলাসা করার জন্য। আমি তাদের জিজ্ঞেস করেছি আপনারা প্রশিক্ষণে এর উত্তর পাননি। উত্তরে সবাই যেটি বলেছেন তার সারমর্ম হচ্ছে, ‘বারবার জিজ্ঞেস করা সত্ত্বেও প্রশিক্ষকরা বিষয়টি এড়িয়ে গেছেন। বোঝা যাচ্ছে বিষয়টি সম্পর্কে তাদেরও স্বচ্ছ ধারণা নেই।’

আসলেও তাই। কোনো বিষয়ের বইয়ে কোনো ধরনের মডেল প্রশ্ন সরবরাহ করা হয়নি। সম্ভবত শিক্ষার্থীদের অধিক মাত্রায় সৃজনশীল করার জন্যই এই প্রচেষ্টা। কিন্তু আমাদের ভুলে গেলে চলবে না যে, আইইএলটিএস-এর মতো আন্তর্জাতিক পরীক্ষায়ও খুব সন্দরভাবে সিলেবাস, মডেল প্রশ্ন দেওয়া থাকে। পরীক্ষার চারটি অংশের কোনো অংশে কত সময়, কয়টি প্রশ্ন থাকবে, ওই ধরনের প্রশ্নের উদ্দেশ্য কী অর্থাৎ শিক্ষার্থীদের কী টেস্ট করা হচ্ছে সবকিছুই সুন্দরভাবে উল্লেখ করা থাকে। আর আমাদের কী হলো, আমরা হঠাৎ করে এত সৃজনশীল বানানোর চেষ্টা কেন করছি? এতে তো দেখছি ‘আম’ ও ‘আমের ছালা’ সবই যাচ্ছে। শিক্ষকরা বিভ্রান্তিতে, অভিভাবকরা বিভ্রান্তিতে, শিক্ষার্থীরা ক্লাসে আসছে না বহু জায়গায়, আসলেও কিছু করতে চাচ্ছে না। এই অবস্থা নিয়ে আমাদের চিন্তা করতে হবে।

শিখনকালীন কোন লেসন বা চ্যাপ্টার কীভাবে নিতে হবে, প্রতি সপ্তাহে না মাসে নিতে হবে, যেহেতু নম্বর দেওয়ার পদ্ধতি নেই তাহলে সেগুলোর গড় কীভাবে হবে ইত্যাদি বিষয়গুলো এখনো ঘোলাটে। তারপর সে ফলগুলো মূল ফলকে, মূল মূল্যায়নে কীভাবে সংযুক্ত হবে এবং সার্বিক মূল্যায়নে সেটি কীভাবে মূল্যায়িত হবে সেসব বিষয় পুরোপুরি অনুপস্থিত। কাজেই শুধু শিক্ষার্থীরা নয়, শিক্ষকরাও বিপাকে। প্রশিক্ষণে এ ধরনের কোনো আলোচনা হয়নি। কেউ কেউ করতে চেয়েছেন, প্রশিক্ষকরা এড়িয়ে গেছেন। বিষয়টি প্রশিক্ষকদের কাছেও স্পষ্ট নয়। যে অ্যাপসের মাধ্যমে এটি করার কথা, সেই অ্যাপসের খবর নেই। কবে হবে তারও কোনো দিক নির্দেশনা নেই। শিক্ষকদের মধ্য থেকেই বিষয়টি নিয়ে বেশি বেশি আলোচনা ও প্রশ্ন আসার কথা ছিল সেভাবে কিন্তু আসেনি বা আসছে না। শুধুমাত্র আগ্রহী ও সিরিয়াস কিছু টিচার বিষয়টি নিয়ে ভেবেছেন। আমাদের পূর্ববর্তী মূল্যায়ন ব্যবস্থায় শিক্ষকদের দায়িত্বই শতভাগ যা প্রাইভেট কোচিং, শিক্ষার্থীদের মুখস্থ-নির্ভরতা, শিক্ষকদের নোট প্রদান ইত্যাদি বিষয়গুলোকে প্রভাবিত করত। দীর্ঘদিন ধরে এটা ছিল আমাদের শতভাগ মূল্যায়নের ধরন। এখন যে প্রক্রিয়াটি আসছে, সেখানে শিক্ষার্থীর স্বমূল্যায়ন ব্যবস্থা রয়েছে। সে হাতে কলমে একটা কাজ করে এসে তারপর তাকে একটা রুবরিক্স পূরণ করতে হবে। ছকটা পূরণ করে ওই জায়গাগুলোতে তার যে পর্যবেক্ষণগুলো সে দেখেছে বা শুনেছে বা হাতে কলমে করেছে তার এভিডেন্সগুলোর রেফারেন্স লিখতে হবে।

দ্বিতীয়ত, সহপাঠী মূল্যায়ন গ্রুপ, একটা গ্রুপ আরেকটা গ্রুপকে মূল্যায়ন করবে। আবার অভিজ্ঞতা অর্জন করতে গিয়ে অভিভাবক বা অন্যান্য অংশীজনের সঙ্গে তার যে ইন্টারঅ্যাকশন হচ্ছে তারাও এখানে বিভিন্ন উপায়ে অংশগ্রহণ করবে। এগুলোর এভিডেন্সগুলো থাকছে, এসবের ভিত্তিতে শিক্ষককে একটি কালেক্টিভ রেজাল্ট তৈরি করতে হবে। আগে যে মূল্যায়ন পদ্ধতি ছিল সেখানে ক্রসচেকের কোনো উপায় ছিল না, বর্তমানে তা থাকার কথা। স্কুল বেজড অ্যাসেসমেন্ট ছিল লিখিত পরীক্ষা নির্ভর ৮০ ভাগ, আর ২০ ভাগ ছিল ধারাবাহিক শিখনকালীন মূল্যায়ন। প্রায়োগিক দিকের যে প্লানিং ছিল সেখানে বড় গ্যাপ ছিল। শিখনকালীন মূল্যায়নের ক্ষেত্রে শিক্ষকই একমাত্র দায়িত্বপ্রাপ্ত ছিল। যার ফলে শিক্ষক সেটিকে সঠিকভাবে করতে পারেননি অনেক ক্ষেত্রেই। বর্তমানের মূল্যায়নটা আলাদা। কারণ অভিজ্ঞতা চক্রের মধ্যে দিয়ে শিক্ষার্থীরা শিখবে যেখানে শিক্ষার্থীর স্বমূল্যায়নের জায়গা আছে, তাকে নানারকম কাজ করতে হবে। বর্তমান মূল্যায়ন ব্যবস্থায় এসব বিষয়ের উল্লেখ আছে কিন্তু শিক্ষকরা এগুলোর সঙ্গে এখনো পরিচিত নন, আত্মবিশ্বাসী হওয়া তো দূরের কথা।

সৃজনশীল প্রশ্ন মানুষের শিখনকে লিখিত উপায়ে প্রকাশের একটা বিকল্প মাধ্যম যেটা মানুষের ক্রিটিক্যাল থিংকিংকে উন্নত করার জন্য করা হয়েছিল। কিন্তু মানুষতো তার শিখনকে শুধু লিখে প্রকাশ করে না। এখানে একটি গ্যাপ রয়েছে। লিখে প্রকাশ করা বিষয়টিকে ঠিক রেখে নানারকম বিকল্প খোঁজার চেষ্টা করা হয়েছে। যেকোনো মূল্যায়নে লেখাটাকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ উপায় হিসেবে দেখা হয়। কারণ লেখার অর্থ হচ্ছে প্রার্থীর অন্তর্নিহিত ধারণা, চিন্তাধারা, মতামত, যোগ্যতা, অভিজ্ঞতা, কল্পনা, পরিকল্পনা, স্বপ্ন, উদ্দেশ্য বিস্তারিতভাবে তার লেখায় ফুটে উঠে যদিও লেখার দ্বারা তার উপস্থাপন দক্ষতা কিংবা সহমর্মিতা বা গণতান্ত্রিক ধারণার বাস্তব প্রতিফলন নাও ঘটতে পারে। লেখার মাধ্যমে নান্দদিক দিকগুলোও ফুটে উঠে। তাই যুগ যুগ ধরে লেখাটাই একজন প্রার্থীর গুরুত্বপূর্ণ মূল্যায়ন মাধ্যম হিসেবে বিবেচিত হয়ে আসছে। কিন্তু নতুন কারিকুলামে লেখা বিষয়টির উপর উল্লেখযোগ্য হারে কমিয়ে দেওয়া হয়েছে।

শ্রেণিকক্ষেই সবকিছু পড়ানো হবে কথাটি আদর্শিক। বাস্তবের সঙ্গে পুরোটা কিন্তু মিলে না অন্তত আমাদের দেশের কনটেস্টে। প্রথমত, শ্রেণিকক্ষের সংক্ষিপ্ত সময়ের মধ্যে একটি বিষয়ে শিক্ষার্থীদের যে পরিমাণ অনুশীলন দরকার সেটি হয় না কিছু বাস্তব কারণে। একজন শিক্ষার্থীর যে আলাদা সময় প্রয়োজন সেটি দেওয়ারও সুযোগ থাকে না। কাজেই শিক্ষার্থীরা বিশেষ করে যারা ভালো ফলাফল করতে চাইতো তারা প্রাইভেট পড়ে, কোচিং করে সেগুলো সেরে নেওয়ার চেষ্টা করত। যারা দুর্বল তারা দুর্বলতা কাটিয়ে উঠার জন্য প্রাইভেট পড়া ও কোচিং করা চালিয়ে যেত। তবে বিষয় দুটো কিছু ক্ষেত্রে অতিমাত্রায় বাণিজ্যিক আকার ধারণ করায় সচেতন অভিভাবক, শিক্ষাবিদ ও পলিসি মেকাররা প্রাইভেট পড়ানো বন্ধ করার পক্ষে যুক্তি দিয়ে আসছেন এবং বন্ধের জন্য কিছুটা এই ব্যবস্থা করেছেন। শিক্ষাকে আনন্দময় করার প্রতিশ্রুতির মধ্য দিয়ে হোমওয়ার্কের একেবারেই গুরুত্ব না দেওয়ার বিষয়টিও চলে এসেছে। কিন্তু হোমওয়ার্ক একেবারে বাদ দেওয়া ঠিক হবে না কারণ এই বয়সের শিক্ষার্থীদের ব্যস্ত রাখতে হবে কিন্তু সেটি যেন তাদের জন্য বোঝা না হয়ে দাঁড়ায়। বাসায় একেবারে কিছু করার না থাকলে তারা বাজে কাজে সময় নষ্ট করবে। অলস মস্তিষ্ক শয়তানের বাসা বলে যে কথাটি প্রচলিত আছে সেটিই হয়তো এখানে হবে। শ্রেণিকক্ষের অল্প সময়ের মধ্যে সব বিষয়ের সঠিক অনুশীলন সম্ভব হয় না। তা ছাড়া কিছু শিক্ষার্থী সবার সামনে থেকে বিষয় আয়ত্ত করতে পারে না, তাদের আলাদা এবং নিজস্ব সময় প্রয়োজন।

শিক্ষার্থীরা পাস করছে, ভালো গ্রেডিং পেয়ে আসছিল কিন্তু তাদের ক্রিটিক্যাল থিংকিং উন্নত হচ্ছিল না, নতুন কারিকুলামের মূল্যায়ন প্রক্রিয়ায় এ বিষয়টিকেও গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে যেটি ভালো পদক্ষেপ। আগে কোনোরকম আন্ডারস্ট্যান্ডিং ছাড়া, কনটেক্সটের সঙ্গে কোনো সম্পর্ক না বুঝেই একজন শিক্ষার্থী কেবল মুখস্থ করে ভালো নম্বর পেয়ে যেত। এখন কিন্তু তাকে বুঝে কনটেক্সটের সঙ্গে রিলেশনশিপ তৈরি করে শুধু মাত্র জানলেই চলবে না, তাকে সেটা প্রয়োগ করার দক্ষতাও অর্জন করতে হবে। এটিও আদর্শিক কথা বলে মনে হয়। ক’জন শিক্ষকের এ বিষয়টি মূল্যায়ন করার দক্ষতা রয়েছে সেটি একটি বিষয়, তা ছাড়া একজন শিক্ষককে প্রতিদিন কয়টা করে ক্লাস নিতে হয়, কতজন শিক্ষার্থীর সঙ্গে কথা বলতে হয়, কতটা ধৈর্য তার থাকে যে এসব বিষয় লক্ষ্য করে করে শিক্ষার্থীদের মূল্যায়ন করবেন। আমাদের শিক্ষার্থীদের অপার সম্ভাবনা রয়েছে, মেধা আছে কিন্তু প্রকাশ করার পরিবেশ, পরিস্থিতি না থাকায় এগুলো সুপ্তই থেকে যায়, প্রকাশিত হয় না, হলেও অনেক বিলম্বে। ভালো গ্রেডিং নিয়ে পাস করেও লেখায় দুর্বল ছিল। বর্তমান মূল্যায়নে লেখার উপর গুরুত্ব আরও কমিয়ে দেওয়া হয়েছে কারণ তার কার্যাবলির উপরই বেশি মূল্যায়ন হবে। যেকোনো মূল্যায়নে লেখাটাকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ উপায় হিসেবে দেখা হয়। যুগ যুগ ধরে লেখাটাই একজন প্রার্থীর গুরুত্বপূর্ণ মূল্যায়ন মাধ্যম হিসেবে বিবেচিত হয়ে আসছে। কিন্তু নতুন কারিকুলাম বিষয়টির উপর গুরুত্ব উল্লেখযোগ্য হারে কমিয়ে দেওয়া হয়েছে, সেটি বিবেচনার দাবি রাখে। তবে একজন শিক্ষক যদি দক্ষ হন তাহলে শিক্ষার্থীদের লেখার মাধ্যমে প্রকাশ করায় তাদের দক্ষ করে গড়ে তুলতে পারবেন। যেকোনো কারিকুলামেই শিক্ষকের দয়িত্ববোধ, সৃজনশীলতা এবং জানার আগ্রহ শিক্ষার্থীদের প্রকৃত জ্ঞান অর্জনে ও তা বাস্তবে প্রয়োগ করার ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখে।

লেখক: শিক্ষা বিশেষজ্ঞ ও গবেষক

এসজি

Header Ad
Header Ad

দুপুরের মধ্যে ১৪ জেলায় বজ্রবৃষ্টির আভাস  

ছবিঃ সংগৃহীত

দেশের ১৪ জেলার ওপর দিয়ে ৬০ কিলোমিটার বেগে ঝড়ের সঙ্গে বজ্রসহ বৃষ্টির আভাস দিয়েছে আবহাওয়া অধিদফতর।

রোববার (২৩ ফেব্রুয়ারি) দুপুর ১টা পর্যন্ত দেশের অভ্যন্তরীণ নদীবন্দর সমূহের জন্য দেওয়া এক পূর্বাভাসে এ তথ্য জানানো হয়।

এতে বলা হয়েছে, রাজশাহী, পাবনা, বগুড়া, টাঙ্গাইল, ঢাকা, ফরিদপুর, যশোর, কুষ্টিয়া, খুলনা, বরিশাল, পটুয়াখালী, কুমিল্লা, নোয়াখালী এবং চট্টগ্রাম অঞ্চলের ওপর দিয়ে পশ্চিম/উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে ঘণ্টায় ৪৫ থেকে ৬০ কিলোমিটার বেগে অস্থায়ীভাবে দমকা অথবা ঝোড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে।

এসব এলাকার নদীবন্দর সমূহকে ১ নম্বর সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।

Header Ad
Header Ad

সারা দেশে নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে যা জানালো র‍্যাব  

ছবিঃ সংগৃহীত

সাম্প্রতিক সময়ে দেশব্যাপী চুরি, ছিনতাই, খুন ও ডাকাতি প্রতিরোধে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। অপরাধ দমনে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে র‌্যাবও দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে অভিযান পরিচালনা করছে বলে জানান, র‍্যাব মহাপরিচালক অতিরিক্ত আইজিপি এ কে এম শহিদুর রহমান।

শনিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) দিনগত রাত ২টার দিকে রাজধানীর যাত্রাবাড়ীর মাতুয়াইলে র‍্যাবের টহল ও চেকপোস্ট পরিদর্শন শেষে তিনি এসব কথা বলেন।

এসময় র‍্যাব মহাপরিচালক আরও বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে সারাদেশের বিভিন্ন স্থানে কতিপয় দুষ্কৃতকারী ও স্বার্থান্বেষী মহল হামলা ও নাশকতার মাধ্যমে দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতি করে জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টির অপচেষ্টা চালাচ্ছে। দেশের বিভিন্ন স্থানে চুরি, ছিনতাই, ডাকাতি, চাঁদাবাজিসহ সাধারণ মানুষের ওপর নৃশংস কায়দায় হামলা ও আক্রমণ চালাচ্ছে। এসব অপরাধ দমনে অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে র‌্যাব ফোর্সেসও দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে অভিযান পরিচালনা করছে।

তিনি বলেন, এরইমধ্যে র‌্যাবের সব ব্যাটালিয়ন তাদের নিজস্ব দায়িত্বপূর্ণ এলাকায় রোবাস্ট প্যাট্রোলিং পরিচালনা করছে। ঝুঁকিপূর্ণ ও গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বিরতিহীনভাবে অতিরিক্ত টহল মোতায়েনের মাধ্যমে কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে।

র‍্যাব মহাপরিচালক বলেন, ব্যাটালিয়নগুলোতে নিজস্ব কন্ট্রোল রুমের মাধ্যমে অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীদের সঙ্গে সমন্বয় সাধন করে ঢাকাসহ সারাদেশের নিরাপত্তা ব্যবস্থা সার্বক্ষণিক মনিটরিং করা হচ্ছে। দেশব্যাপী বিভিন্ন জায়গায় অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে সমন্বয় করে চেকপোস্ট স্থাপন করে তল্লাশির মাধ্যমে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। পাশাপাশি যে কোনো উদ্ভূত পরিস্থিতির জন্য র‌্যাব বোম্ব ডিসপোজাল ইউনিট ও ডগ স্কোয়াড সার্বক্ষণিক প্রস্তুত রাখা হয়েছে। যে কোনো উদ্ভূত পরিস্থিতি মোকাবিলায় সব মেট্রোপলিটন শহর, জেলা শহর ও উপজেলা পর্যায়ে গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে চেকপোস্ট স্থাপন, পর্যাপ্ত সংখ্যক টহল মোতায়েন এবং সাদা পোশাকে গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ানো হয়েছে বলেও জানান মহাপরিচালক।

তিনি বলেন, সব মেট্রোপলিটন শহর ও গুরুত্বপূর্ণ জেলা শহরগুলোতে যে কোনো পরিস্থিতি মোকাবিলায় সার্বক্ষণিক প্রয়োজনীয় সংখ্যক ফোর্স রিজার্ভ রাখা হয়েছে। গত ১০ ফেব্রুয়ারি থেকে এখন পর্যন্ত রাজধানী থেকে ৪০ জন, ময়মনসিংহে ২৫ জন, রাজশাহী থেকে ২৪ জন, সিলেট থেকে ১৭ জন, নারায়ণগঞ্জ থেকে ১৫ জনসহ মোট ১৮০ জন আসামিকে গ্রেফতার এবং অস্ত্র ও গুলি উদ্ধার করেছে র‌্যাব। এছাড়া সারাদেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখাসহ যেকোনো ধরনের নাশকতা ও সহিংসতা প্রতিরোধে র‌্যাবের গোয়েন্দা নজরদারিসহ বিভিন্ন কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে বলেও জানান র‍্যাব মহাপরিচালক অতিরিক্ত আইজিপি এ কে এম শহিদুর রহমান।

র‍্যাব ডিজি আরও বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে রাজধানীর মোহাম্মদপুর ও আদাবর এলাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে বেশ কয়েকটি সন্ত্রাসী গ্রুপের সদস্যদের খুন, হত্যাচেষ্টা, ছিনতাই, চাঁদাবাজি, মাদক কারবারি এবং চাঞ্চল্যকর সৃষ্টিকারী বিভিন্ন ধরনের সন্ত্রাসী কার্যক্রম লক্ষ্য করা যায়। এসব গ্রুপের সন্ত্রাসীরা নিজেদের মধ্যে আধিপত্য বিস্তারের লক্ষ্যে এক গ্রুপ অপর গ্রুপের সঙ্গে সংঘাতে জড়িয়ে মারামারি ও ধারালো অস্ত্র দিয়ে জখম করার প্রবণতাও লক্ষ্য করা যায়। এর মধ্যে উল্লেখ্যযোগ্য মোহাম্মদপুরের আলোচিত শীর্ষ সন্ত্রাসী কবজি কাটা গ্রুপের প্রধান আনোয়ার ওরফে শুটার আনোয়ার ওরফে কবজি কাটা আনোয়ার, জেনেভা ক্যাম্পের শীর্ষ সন্ত্রাসী বুনিয়া সোহেল এবং জেনেভা ক্যাম্পের শীর্ষ মাদক কারবারি সেলিম আশরাফি ওরফে চুয়া সেলিমসহ তাদের সহযোগীদের গ্রেফতার করেছে র‌্যাব।

Header Ad
Header Ad

এ বছরই মধ্যে তারেক রহমান প্রধানমন্ত্রী হবেন : দুদু  

ছবিঃ সংগৃহীত

বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু বলেছেন, জিয়া তো এমনি এমনি রাষ্ট্রপতি হননি, খালেদা জিয়াও তো এমনি এমনি প্রধানমন্ত্রী হননি। তেমনি তারেক সাহেবের ১৭ বছরের চেষ্টা, উদ্যোগ ও সংগ্রাম-সে তো প্রধানমন্ত্রী হবেই। ইলেকশন হবে। এই বছরের মধ্যে তারেক রহমান প্রধানমন্ত্রী হবেন।

শনিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) বিকালে পঞ্চগড় পৌরসভার সামনের মাঠে জেলা বিএনপি আয়োজিত নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্যবৃদ্ধি সহনীয় পর্যায়ে রাখা, অবনতিশীল আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি, দ্রুত গণতান্ত্রিক যাত্রাপথে উত্তরণের জন্য নির্বাচনী রোডম্যাপ ঘোষণাসহ রাষ্ট্রে পতিত ফ্যাসিবাদীদের নানা চক্রান্তের অপচেষ্টা মোকাবেলাসহ বিভিন্ন জনদাবিতে জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।

তিনি আরও বলেন, শেখ পরিবার চোরের পরিবার। শেখ মুজিব ৪০ হাজার বিরোধীদলীয় নেতাকর্মীকে রক্ষিবাহিনী দিয়ে হত্যা করেছিল। একদল করেছিল। ১৭ বছর পর এই বছরের মধ্যে নির্বাচন দিতে বাধ্য হবে সরকার। বিএনপির খেল এখনও দেখেননি। কয়েকটা জনসভা শুরু করেছি।

ড. ইউনূসকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, ভাই আপনি ভাল লোক। একটা মর্যাদাশীল লোক। জ্ঞানীগুণী মানুষ। দেশে বিদেশে আপনার সুনাম আছে। এদের পাল্লায় পড়িয়েন না। বিএনপিকে রাস্তায় নামাইয়েন না। যদি একবার রাস্তায় নামান-ফুলের মালা দিয়ে আপনাকে বরণ করেছি, ফুলের মালা দিয়েই আপনাকে বিদায় করতে চাই।

জেলা বিএনপির আহ্বায়ক জাহিরুল ইসলাম কাচ্চুর সভাপতিত্বে জনসভায় প্রধান বক্তা ছিলেন কেন্দ্রীয় বিএনপির পল্লী উন্নয়ন বিষয়ক সম্পাদক ও জেলা বিএনপির সদস্য সচিব ফরহাদ হোসেন আজাদ। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন কেন্দ্রীয় বিএনপির আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার নওশাদ জমির ও বিএনপির রংপুর বিভাগের সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যাপক আমিনুল ইসলাম। বক্তব্য দেন জেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক ও পৌর বিএনপির আহবায়ক তৌহিদুল ইসলাম, সাবেক এমপি অ্যাডভোকেট রীনা পারভীন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও পিপি অ্যাডভোকেট আদম সুফি, যুগ্ন আহবায়ক ও যুবদলের সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট মির্জা নাজমুল ইসলাম কাজল, যুগ্ম আহবায়ক এম এ মজিদ, বিএনপি নেতা ইউনুস শেখ প্রমুখ। সমাবেশে জেলা, পাঁচ উপজেলা, তিন পৌরসভাসহ বিভিন্ন ইউনিটের বিএনপিসহ সকল অঙ্গ ও সহযোগি সংগঠনের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

 

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

দুপুরের মধ্যে ১৪ জেলায় বজ্রবৃষ্টির আভাস  
সারা দেশে নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে যা জানালো র‍্যাব  
এ বছরই মধ্যে তারেক রহমান প্রধানমন্ত্রী হবেন : দুদু  
জিম্মিদের ফেরত পেয়েও ফিলিস্তিনিদের মুক্তি দিল না ইসরাইল  
জশ ইংলিসের সেঞ্চুরিতে রেকর্ড গড়ে ইংল্যান্ডকে হারাল অস্ট্রেলিয়া
১৫ বছর দলীয় বিবেচনায় অনেক ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা বানানো হয়েছে: উপদেষ্টা ফারুক
দিনাজপুরের বিরামপুরে ৮ জুয়াড়ি গ্রেফতার
চীনে নতুন করোনা ভাইরাসের আবির্ভাব, আবারও মহামারির শঙ্কা
নওগাঁ জেলা প্রেস ক্লাবের সভাপতি রায়হান, সম্পাদক বেলায়েত
শহীদদের শ্রদ্ধা জানাতে ফুল আনতে গিয়ে ধর্ষণের শিকার চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রী
বিএনপি ক্ষমতায় গেলে প্রত্যেক শ্রমিকের অধিকার প্রতিষ্ঠা করবে: মঈন খান
জামায়াত দাবি করে ২১ শে ফেব্রুয়ারির সমস্ত কৃতিত্ব তাদের: রনি
যুবদল নেতাকে কুপিয়ে জখম, মোটরসাইকেল পুড়িয়ে আ.লীগ নেতাকে পুলিশে সোপর্দ
দীঘি নয়, ‘টগর’ সিনেমায় নায়িকা হচ্ছেন পূজা চেরী
নারী গোয়েন্দার প্রেমের ফাঁদে পড়ে ভারতের গোপন তথ্য ফাঁস (ভিডিও)
নির্বাচনের আগেই জুলাই হত্যাকাণ্ডের বিচারের দাবি নিহতদের পরিবারের
চলন্ত বাসে ডাকাতি-যৌন নিপীড়ন: মির্জাপুর থানার এএসআই বরখাস্ত
ছাত্রদের নতুন দলে যোগ দিচ্ছেন সশস্ত্র বাহিনীর সাবেক সদস্যরা
চলন্ত বাসে ডাকাতির সময় ধর্ষণের ঘটনা ঘটেনি: পুলিশ সুপার
ময়মনসিংহে দেড় শতাধিক বিড়ালের মিলনমেলা