মঙ্গলবার, ৫ নভেম্বর ২০২৪ | ২০ কার্তিক ১৪৩১
Dhaka Prokash
Header Ad

মান উন্নয়নে আলাদা মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের প্রয়োজনীয়তা

মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরকে বিশাল আকার করে রাখা হয়েছে বহু বছর ধরে এবং বিষয়টি ডমিনেট করছে শিক্ষা ক্যাডার কর্মকর্তারা; যারা মূলত কলেজ শিক্ষক। মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষকদের ক্যাডার থেকে আলাদা রাখা হয়েছে। মাধ্যমিক পর্যায়ে যদি ক্যাডার সার্ভিসের শিক্ষকরা পড়াতেন তাহলে শিক্ষার মানের ক্ষেত্রে বিরাট এক পরিবর্তন আশা করা যেত এবং শিক্ষা প্রশাসনে মাধ্যমিকের নিজস্ব ক্যাডার মাধ্যমিক শিক্ষার প্রতিনিধিত্ব করতে পারত। সেটি কেন হচ্ছে না বুঝতে পারছি না। ক্যাডেট কলেজে একজন লেকচারার, একজন সহকারী অধ্যাপক কিংবা সহযোগী অধ্যাপক কিন্তু সপ্তম, অষ্টম, নবম ও দশম শ্রেণিতে ক্লাস পরিচালনা করেন। ফলে, শিক্ষার্থীদের জানার জগৎ অনেকটাই প্রসারিত। সরকারি বিদ্যালয়ে সেটি কেন করা হচ্ছে না। বিভিন্ন ধরনের শিক্ষকদের সঙ্গে কথা বলে যেটা বুঝতে পারলাম যে, কলেজ শিক্ষকরা চান না মাধ্যমিকের শিক্ষকরা মাধ্যমিকের প্রতিনিধিত্ব করুক। কলেজ শিক্ষকরাই সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করবেন। ফলে, মাধ্যমিক শিক্ষা দুর্বলই থেকে যাচ্ছে।

দুয়েকবার কয়েকজন সচিব চেয়েছিলেন শিক্ষকদের দিয়ে নয়, আমলাদের দিয়ে মাউশি চালাবেন। তাদের ধারণা শিক্ষকরা শিক্ষা প্রশাসন চালাতে পারেন না, আমলারা প্রশাসন চালাতে দক্ষ। বেশ শক্ত করেই কয়েকবার লিখেছিলাম বিষয়টির বিরুদ্ধে। খোদ সেনাবাহিনীর শিক্ষা প্রশাসনের পরিচালক কিন্তু শিক্ষা কোরের, ইনফ্যান্ট্রির নয়। তাহলে সিভিলে কেন? মাধ্যমিক শিক্ষকদের দাবি হচ্ছে মাউশি ভেঙে ‘মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তর’ এবং ‘উচ্চশিক্ষা ও গবেষণা অধিদপ্তর’ নামে দুটি আলাদা অধিদপ্তর প্রতিষ্ঠা করা হোক। মাধ্যমিক শিক্ষা শিক্ষার গুরুত্বপূর্ণ স্তর। প্রাথমিকের পরই মাধ্যমিকের গুরুত্বপূর্ণ অবস্থান। কেননা মাধ্যমিক শিক্ষার পরবর্তী এবং উচ্চতর ধারায় প্রবেশের পূর্ববর্তী স্তর। আমাদের ছোট্ট দেশে জনসংখ্যা অনেক। ফলে সব স্তরেই শিক্ষার্থী প্রচুর। আর সেই চাপ সামাল দিতে মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সংখ্যা এখন অনেক। এই হাজার হাজার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, লক্ষ লক্ষ শিক্ষক-কর্মচারী নিয়ন্ত্রিত হয় একটিমাত্র অধিদপ্তর অর্থাৎ মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর দিয়ে। ফলে, কাজে গতিশীলতা নেই, শিক্ষকদের দুর্ভোগের অন্ত নেই। এর অবসান হওয়া প্রয়োজন।

আলাদা মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তর সৃষ্টির যুক্তিসমূহ- ১৮০০ কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের জন্য আলাদা ’কারিগরি অধিদপ্তর’ ও ৯৬৫৬টি মাদ্রাসার জন্য আলাদা ‘মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তর’ গঠিত হলেও জাতীয় শিক্ষানীতির প্রস্তাবনা অনুযায়ী আলাদা মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তর প্রতিষ্ঠা আটকে আছে বহুবছর। ২০ হাজারেরও অধিক মাধ্যমিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের জন্য আলাদা অধিদপ্তর তো আসলেই প্রয়োজন। জাতীয় শিক্ষানীতি ২০১০ এর আলোকে ’স্বতন্ত্র মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তর’ ঘোষিত হয়েছিল এবং মাধ্যমিক শিক্ষকরা আশা করেছিলেন যে, শিক্ষার উন্নয়নে এটি এক নব যুগের সূচনা করবে। (জাতীয় শিক্ষা ২০১০, পৃষ্ঠা-৬৪) এখানে বলা হয়েছিল যে, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর ভেঙে দুটি পৃথক অধিদপ্তর যথাক্রমে ’মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তর’ এবং ’উচ্চশিক্ষা ও গবেষণা অধিদপ্তর’ গঠন করা হবে। কিন্তু আজ পর্যন্ত (২০২৩) বিষয়টিতে দৃশ্যমান কোনো উদ্যোগ নেই।

আদালতের রায় অনুযায়ী প্রায় তিন হাজার শিক্ষকের ২০১৫ সালের জাতীয় পে-স্কেল এর পূর্বের বকেয়া টাইমস্কেল/সিলেকশন গ্রেড প্রদান করা। সহকারী শিক্ষকদের এন্ট্রিপদ নবম গ্রেড ধরে সরকারি মাধ্যমিকের জন্য একটি যৌক্তিক পদ সোপান প্রণয়ন করা। সরকারি কলেজ এবং সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ন্যায় মাধ্যমিক পর্যায়ে জাতীয়করণ করা স্কুলের জন্য একটি যৌক্তিক আত্তীকরণ বিধিমালা প্রণয়ন করা। সহকারী শিক্ষকদের চাকরির মেয়াদে নির্দিষ্ট সময় পর শতভাগ সিনিয়র শিক্ষক পদে পদোন্নতি প্রদান করা। সিনিয়র শিক্ষক পদকে প্রথম শ্রেণির গেজেটেড ক্যাডার পদ করা। সরকারি কলেজের ন্যায় ৪ স্তরের গ্রেডভিত্তিক পদোন্নতি প্রথা চালু করা। চেয়ার ভিত্তিক (সহকারী প্রধান শিক্ষক, প্রধান শিক্ষক) পদোন্নতি প্রথা বাতিল করে সরকারি কলেজের ন্যায় গ্রেড ভিত্তিক পদোন্নতি প্রথা (সহকারী প্রধান, সহকারী জেলা শিক্ষা অফিসার, প্রধান শিক্ষক, জেলা শিক্ষা অফিসরা এবং অন্যান্য পদ) চালু করা। সরকারি হাইস্কুলের শিক্ষকদের বর্তমান পদ মর্যাদার আপগ্রেডেশন করা এবং নিয়মিত পদোন্নতি প্রথা চালু করা। সিনিয়র শিক্ষক (নবম গ্রেড, গেজেটেড প্রথম শ্রেণির কর্মকর্তা) পদোন্নতি বঞ্চিত ২০১০ ( অবশিষ্টাংশ) এবং ২০১১ ব্যাচের শিক্ষকদের সিনিয়র শিক্ষক পদে পদোন্নতি প্রদান করা।

এ ছাড়া সরকারী হাইস্কুল শিক্ষকদের মধ্যে যারা ১২/১৫/১৮ বছর চাকরি করেও এখনো টাইম স্কেল/সিলেকশন গ্রেড অথবা উচ্চতর গ্রেড একটিও পাননি, দ্রুত তাদের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা। বর্তমানে চালু করা সহকারী প্রধান শিক্ষক এবং সহকারী জেলা শিক্ষা অফিসার পদের গ্রেড পরিবর্তন ও পদোন্নতির জন্য ফিডার পদের নাম পরিবর্তন করা এবং সিনিয়র শিক্ষক থেকে পরবর্তী পদোন্নতির ধাপ নির্ধারণ করা।

১৯৯৯ সালের ২২জুন মাসে নায়েমে Bangladesh National Commission for UNESCO, Ministry of Education কর্তৃক আয়োজিত “Education For the 21st Century" শীর্ষক সেমিনারে গৃহীত সুপারিশ মালায় মাধ্যমিকের জন্য আলাদা অধিদপ্তর প্রতিষ্ঠার কথা বলা হয়েছে। প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরও এক সময় মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের অধীনে ছিল। প্রয়োজনের তাগিদে সেটি আলাদা করা হয়েছে। এখন সেটি স্বাধীনভাবে কাজ করছে। মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের শতকরা ৮০ ভাগ কর্মকর্তা কলেজের জনবল হওয়ায় মাধ্যমিকের শিক্ষকরা অধিদপ্তরে কাজ করার তেমন সুযোগ পান না। তা ছাড়া মাধ্যমিকের সমস্যা সম্পর্কে তাদের বাস্তব জ্ঞান বা অভিজ্ঞতাও নেই। একটি অধিদপ্তরের পক্ষে সবকিছু ভালোভাবে ম্যানেজ করা হয়ে উঠছে না। ফলে, মাধ্যমিকের শিক্ষকরা বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন। মাধ্যমিক শিক্ষকদের পদোন্নতিসহ অন্যান্য বৈষম্যমূলক অংশগুলোর কাজ ত্বরান্বিত হবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। ২০১২ সালে সহকারী শিক্ষকের পদটিকে বেতনস্কেল অপরিবর্তিত রেখে দ্বিতীয় শ্রেণির গেজেটেড পদ মর্যাদায় উন্নীত করা হয়।

বাংলাদেশের প্রথম পে-স্কেল গঠিত হয় ১৯৭৩ সালে। সেই পে-স্কেলে সরকারি হাইস্কুলের সহকারী শিক্ষক/পিটিআই ইন্সট্রাকটর (তখন পিটিআই ইন্সট্রাক্টর ও সরকারি হাইস্কুলের সহকারী শিক্ষক এই দুটি একই পদমর্যাদার ছিল এবং অভিন্ন নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে নিয়োগ হতো। পদটি তৎকালীন সময়ে ছিল ষষ্ঠ গ্রেডভুক্ত পদ। ১৯৭৩ সালে পে-স্কেলে গ্রেড সংখ্যা ছিল ১০টি। সেই পে-স্কেলে সরকারি হাইস্কুলের সহকারী শিক্ষকদের সমান গ্রেডের ছিল থানা শিক্ষা অফিসার, থানা সমাজসেবা অফিসার এবং সাব-রেজিস্ট্রার পদসমূহ।

১৯৮৫ সালের পে-স্কেলে সরকারি হাইস্কুলের সহকারী শিক্ষক/পিটিআই ইন্সট্রাকটর পদটি যথারীতি ১০ম গ্রেডেরই থাকে এবং ১১তম গ্রেডের সাব-রেজিস্ট্রার পদটিকে সহাকারী শিক্ষক/পিটিআই ইন্সট্রাকটর পদের সমমান (১০ম গ্রেডভুক্ত) করা হয় এবং উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা পদটি যথারীতি ১১তম গ্রেডেই থাকে।কিন্তু উপজেলা সমাজসেবা অফিসার পদটিকে ১১তম গ্রেড থেকে নবম গ্রেডে উন্নীত করা হয়। ১৯৯১ সালে গঠিত পে-স্কেলে সহকারী শিক্ষক পদটি ১০গ্রেিেই বহাল রাখা হয়। কিন্তু পিটিআই ইন্সট্রাক্টর পদটি যা সহকারী শিক্ষকদের সমগ্রেডের এবং পারস্পরিক বদলিযোগ্য পদ ছিল এবং একই সঙ্গে অভিন্ন নিয়োগে নিয়োগ পেত। নবম গ্রেডভুক্ত প্রথম শ্রেণির গেজেটেড পদে উন্নীত করা হয় এবং পূর্বের ১১তম গ্রেডের উপজেলা শিক্ষা অফিসার পদটিকে এক ধাপ ওপরে ১০ম গ্রেডে উন্নীত করা হয় এবং একই পেস্কেল বর্ষে শিক্ষা কর্মকর্তা পদটিকে আরেক ধাপ ওপরে নবম গ্রেডে প্রথম শ্রেণির গেজেটেড পদে উন্নীত করা হয়।

একইভাবে ২০০৫ সালে গঠিত পেস্কেলে সহকারী শিক্ষক পদটি যথারীতি ১০ম গ্রেডেই বহাল থাকে এবং উপরে উল্লিখিত পদসমূহ নবম গ্রেডেই বহাল থাকে। সরকারি মাধ্যমিক শিক্ষকদের বহুল প্রত্যাশিত প্রস্তাবিত (এন্ট্রিপদ নবম গ্রেড ধরে চার স্তরীয়) একাডেমিক পদসোপান দীর্ঘ প্রক্রিয়া শেষে মন্ত্রণালয়ে পাঠানোর পর সেটি নিয়ে কাজ চলমান থাকা অবস্থায় উক্ত পদসোপানের ফাইল নাকি হারিয়ে গেছে।

২০১৫ সালে জাতীয় পে-স্কেল কার্যকরের পর সরকারি হাইস্কুলের শিক্ষকদের বেতন ভাতার পে ফিক্সেশন করতে সমস্যা দেখা দেয়। শিক্ষকরা এজন্য সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দপ্তরে চেষ্টা তদবির করেও ২০১৫ সালের জাতীয় পে-স্কেল কার্যকরের পূর্বের বকেয়া টাইমস্কেল/সিলেকশন গ্রেড পাননি। পরবর্তীতে ২০১৮ সালে ভুক্তভোগী শিক্ষকরা হাইকোর্টের শরণাপন্ন হলে আদালত দীর্ঘ শুনানির পর ২০১৯ সালের শিক্ষকদের পাওনা বকেয়া টাইমস্কেল/সিলেকশন প্রদানের জন্য রায় প্রদান করেন। মাউশি এখনো শিক্ষকদের ন্যায্য পাওনা বকেয়া টাইমস্কেল/সিলেকশন গ্রেড প্রদানের জন্য অর্থ মঞ্জুরি আদেশ দেয়নি। ভুক্তভোগী প্রায় তিন হাজার শিক্ষক পরিবার পরিজন নিয়ে আর্থিক কষ্টে দিনাতিপাত করছেন। এসব বৈষম্য ও সমস্যার মূল কারণ হিসেবে বলা যায়, মাউশিতে মাধ্যমিক শিক্ষকদের প্রতিনিধিত্ব না থাকা।

উপরোক্ত আলাচনায় কিন্তু শিক্ষার মান ও শিক্ষকদের পেশাগত উন্নয়ন সম্পর্কে কোনো কথা নেই। শুধুমাত্র অর্থনৈতিক প্রাপ্তি ও পেশাগত দাবি-দাওয়া আদায়ের কথা। রাষ্ট্র থেকে শিক্ষকদের প্রাপ্তিতে অবশ্যই সমর্থন করি এবং শিক্ষায় সব ধরনের বৈষম্যের অবসান হোক এটি মনে প্রাণে চাই। মাউশির চলমান প্রক্রিয়া এবং আলাদা মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তর প্রতিষ্ঠায় দীর্ঘসূত্রিতা পরোক্ষভাবে এটিও বলে যে, মাধ্যমিকের জন্য আলাদা অধিদপ্তর পরিচালনা করার মতো কর্মকর্তা মাধ্যমিক পর্যায়ে খুব কম কিংবা নেই। আর একটি বিষয়ও অবহেলা করা যাবে না। আর সেটি হচ্ছে কলেজ শিক্ষকরা যেভাবে সরকারি মাধ্যমিকের শিক্ষকদের অবহেলা করছেন কিংবা মাউশি প্রতিনিধিত্ব করতে খুব একটি আগ্রহ দেখাচ্ছেন না।

আলাদা মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তর প্রতিষ্ঠিত হলে সেখানে গুটিকয়েক (৬৮২) সরকারি স্কুলের শিক্ষকদেরই পদায়ন করা হবে, তারা আবার একইভাবে সরকারি কলেজের শিক্ষক যারা মাউশিতে আছেন বেসরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের অবজ্ঞা করতে থাকবেন এবং তাদের নায্য পাওনা ও দাবি-দাওয়া উপেক্ষিত হতে থাকবে। সরাসরি না বললেও তারা বুঝাতে চাবেন যে, বেসরকারি মাধ্যমিকের শিক্ষকরা অযোগ্য, তারা এসব পাওনা পাওয়ার উপযুক্ত নয়। শিক্ষায় এ ধরনের বিভক্তি চলছে এবং চলতেই থাকবে হয়তো। ইনক্লুসিভ বিষয়টি নিয়ে আমরা কথা বলছি না, শিক্ষার মানের যে কী অবস্থা, শিক্ষাদানের যে কী অবস্থা সেটিরও অবসান হওয়া প্রয়োজন। শ্রেণি শিক্ষক, বিষয় শিক্ষক থেকে শুরু করে শিক্ষক নেতারা সবাইকে এ বিষয়গুলোতে অধিক জোর দিতে হবে। শিক্ষকদের দাবি-দাওয়ার প্রতি সাধারণ মানুষ ও অভিভাবকদের অকুণ্ঠ সমর্থন প্রয়োজন। আর সেটি তখনই হবে যখন তারা দেখবেন যে, শিক্ষকরা শুধুমাত্র নিজেদের দাবি-দাওয়া আদায় নিয়ে ব্যস্ত নয়, শিক্ষার প্রকৃত উন্নয়নের কথা বলছেন, শিক্ষার মান উন্নয়নের জন্য কাজ করছেন।

মাছুম বিল্লাহ: প্রেসিডেন্ট, ইংলিশ টিচার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ইট্যাব)

এসএন

Header Ad

আরও ২৯ জন সাংবাদিকের প্রেস অ্যাক্রেডিটেশন কার্ড বাতিল

ছবি: সংগৃহীত

তথ্য অধিদপ্তর (পিআইডি) সম্প্রতি আরও ২৯ জন সাংবাদিক ও সংশ্লিষ্ট পেশার ব্যক্তির প্রেস অ্যাক্রেডিটেশন কার্ড বাতিলের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে। রোববার (৩ নভেম্বর) পিআইডির প্রধান তথ্য কর্মকর্তা মো. নিজামুল কবীর স্বাক্ষরিত এক আদেশে এই সিদ্ধান্ত জানানো হয়।

আদেশে বলা হয়, প্রেস অ্যাক্রেডিটেশন নীতিমালা অনুযায়ী এই সাংবাদিকদের স্থায়ী এবং অস্থায়ী অ্যাক্রেডিটেশন কার্ড বাতিল করা হয়েছে। বাতিল হওয়া কার্ডধারীদের মধ্যে আছেন বেশ কয়েকজন গুরুত্বপূর্ণ গণমাধ্যমের সম্পাদক, সংবাদ প্রধান এবং বিশেষ প্রতিনিধি।

কার্ড বাতিল হওয়া সাংবাদিকদের মধ্যে রয়েছেন টিভি টুডের প্রধান সম্পাদক মঞ্জুরুল আহসান বুলবুল, কালের কণ্ঠের সম্পাদক ইমদাদুল হক মিলন, নিউজ২৪-এর হেড অব নিউজ রাহুল রাহা, এটিএন নিউজের বার্তা প্রধান নুরুল আমিন প্রভাষ, দৈনিক ডেসটিনির উপ-সম্পাদক সোহেল হায়দার চৌধুরী, ডিবিসি নিউজের প্রধান সম্পাদক মোহাম্মদ মঞ্জুরুল ইসলাম, সময় টিভির সিইও আহমেদ জোবায়ের, দৈনিক জাগরণের সম্পাদক আবেদ খান, এবং নিউজ২৪-এর সিনিয়র রিপোর্টার জয়দেব চন্দ্র দাস।

এছাড়া, নাগরিক টিভির প্রধান বার্তা সম্পাদক দীপ আজাদ, এটিএন বাংলার প্রধান নির্বাহী জ.ই. মামুন, বাসসের উপপ্রধান বার্তা সম্পাদক মো. ওমর ফারুক, চ্যানেল আইয়ের বিশেষ প্রতিনিধি হোসনে আরা মমতা ইসলাম সোমা, দৈনিক কালের কণ্ঠের বিশেষ প্রতিনিধি হায়দার আলী, দৈনিক আমাদের অর্থনীতির সিনিয়র নির্বাহী সম্পাদক মাসুদা ভাট্টি, দৈনিক পূর্বকোণের ঢাকা ব্যুরো প্রধান কুদ্দুস আফ্রাদ, বৈশাখী টিভির প্রধান সম্পাদক সাইফুল ইসলাম, ডিবিসি নিউজের অ্যাসাইমেন্ট এডিটর নাজনীন নাহার মুন্নী, ফ্রিল্যান্সার নাদিম কাদির, বাসসের নগর সম্পাদক মধুসূদন মন্ডল, এবং ইন্ডিপেন্ডেন্ট টিভির প্রধান বার্তা সম্পাদক আশিষ ঘোষ সৈকত।

তালিকায় আরও আছেন দৈনিক বাংলার ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক জাফরউল্লাহ শরাফত, দৈনিক আনন্দ বাজারের বিশেষ প্রতিনিধি কিশোর কুমার সরকার, দৈনিক বাংলাদেশ বুলেটিনের সম্পাদক রফিকুল ইসলাম রতন, মাইটিভির চেয়ারম্যান নাসির উদ্দিন, আরটিভির সিইও আশিকুর রহমান, একুশে টিভির হেড অব ইনপুট অখিল কুমার পোদ্দার, গাজী টিভির এডিটর রিসার্চ অঞ্জন রায় এবং দৈনিক ভোরের কাগজের বার্তা সম্পাদক ইখতিয়ার উদ্দিন।

এই সাংবাদিকদের কার্ড বাতিলের সিদ্ধান্তের পর গণমাধ্যমজুড়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে।

Header Ad

কৃষক বাবাকে ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা বানিয়ে পুলিশের এএসপি হন শতকোটি টাকার মালিক হারুন

সাবেক ডিবি প্রধান হারুন অর রশীদ। ছবি: সংগৃহীত

মিঠামইন উপজেলার ঘাগড়া ইউনিয়নের হোসেনপুর গ্রামের দরিদ্র কৃষক পরিবারে জন্ম সাবেক ডিবি প্রধান হারুন অর রশীদের। ২০তম বিসিএসে মুক্তিযোদ্ধার সন্তান কোটায় পুলিশে যোগ দিলেও তার বাবা মো. হাসিদ ভূঁইয়া প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন না। ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে তার বাবার নাম মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়, যা পরে হারুনের পুলিশের চাকরির ক্ষেত্রে সহায়তা করে।

২০১১ সালের ৬ জুলাই সংসদ ভবনের সামনে তৎকালীন বিরোধীদলীয় চিফ হুইপ বিএনপি নেতা জয়নুল আবদীন ফারুককে মারধর করে আলোচনায় আসেন হারুন। এ ঘটনার পর তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আস্থা অর্জন করেন তিনি এবং তার পর থেকেই একের পর এক পদোন্নতির মাধ্যমে পুলিশের অন্যতম প্রভাবশালী কর্মকর্তায় পরিণত হন।

হারুন অর রশীদ ক্ষমতার অপব্যবহার করে রাতারাতি সম্পদের পাহাড় গড়েন। বলা হয়, সাধারণত হেলিকপ্টার ছাড়া তিনি বাড়িতে আসতেন না। তার বিরুদ্ধে দেশ ও বিদেশে কোটি কোটি টাকা পাচারের অভিযোগও ওঠে। মিঠামইনে নিজ গ্রামের বাড়িতে শতকোটি টাকা ব্যয়ে গড়ে তোলেন বিলাসবহুল 'প্রেসিডেন্ট রিসোর্ট', যেখানে রয়েছে হেলিপ্যাড এবং অত্যাধুনিক সুইমিং পুল।

প্রেসিডেন্ট রিসোর্টটি একসময় ধনাঢ্য ও প্রভাবশালী ব্যক্তিদের নিরাপদ আশ্রয়স্থল হিসেবে পরিচিত ছিল। তবে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর রিসোর্টের জৌলুসও কমে যায় এবং অবশেষে রিসোর্টের সব কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়। এখন সেখানে জনমানবহীন ভূতুড়ে পরিবেশ বিরাজ করছে।

সরেজমিনে দেখা যায়, হারুনের রিসোর্টটির জন্য এলাকার সংখ্যালঘু ও অন্যান্য ভূমি মালিকদের ভয় দেখিয়ে জমি দখল করা হয়েছিল এবং অধিকাংশ মালিক এখনো তাদের জমির মূল্য পাননি। স্থানীয় সংখ্যালঘু প্রতিনিধি দীলিপ চৌধুরী জানান, তার কোটি টাকার মূল্যমানের জমি হারুন ভয় দেখিয়ে দখল করেছেন, কিন্তু টাকা পরিশোধ করেননি। একইভাবে মানিক মিয়া নামে আরেক ব্যক্তি তার ৫ একর জমির কোনো মূল্যই পাননি।

স্থানীয়রা বলছেন, ছাত্রজীবনে ছাত্রলীগের রাজনীতি করা হারুন পুলিশি ক্ষমতার অপব্যবহার করে রাতারাতি বিত্তবৈভবের মালিক হয়েছেন।

Header Ad

হত্যা মামলার আসামি হয়েও পাসপোর্ট পেতে যাচ্ছেন শিরীন শারমিন চৌধুরী

সাবেক স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী। ছবি: সংগৃহীত

গণঅভ্যুত্থানের পর ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও মন্ত্রী-এমপিদের লাল পাসপোর্ট বাতিলের সিদ্ধান্ত নেয় বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার। এর ধারাবাহিকতায় বাতিল করা হয়েছে সাবেক স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর কূটনৈতিক পাসপোর্টও। রংপুরে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে গুলিবিদ্ধ হয়ে একজন শ্রমিক নিহতের ঘটনায় করা হত্যা মামলার আসামি শিরীন শারমিন আত্মগোপনে রয়েছেন এবং গ্রেপ্তার এড়াতে ঢাকায় সাধারণ ই-পাসপোর্টের জন্য আবেদন করেছেন বলে জানা গেছে।

৩ অক্টোবর, তিনি এবং তার স্বামী সৈয়দ ইশতিয়াক হোসাইন সাধারণ ই-পাসপোর্টের জন্য আবেদন করেন। অভিযোগ রয়েছে, নিয়ম অনুযায়ী পাসপোর্ট অফিসে উপস্থিত না হয়ে তারা বাসায় বসেই আঙুলের ছাপ ও আইরিশ স্ক্যান জমা দেন। অথচ নিয়ম অনুসারে, এসব তথ্য পাসপোর্ট অফিসে সরাসরি উপস্থিত হয়ে জমা দিতে হয়।

এ প্রসঙ্গে পাসপোর্ট অধিদপ্তরের একাধিক সূত্র জানায়, শিরীন শারমিন চৌধুরী ও তার স্বামী অনৈতিক সুবিধা নিয়ে পাসপোর্ট প্রক্রিয়ায় বিশেষ সুবিধা পাচ্ছেন এবং এর জন্য মোটা অঙ্কের টাকা খরচ করছেন। যদিও পাসপোর্ট অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. ইসমাইল হোসেন জানান, দেশের প্রত্যেক নাগরিকের পাসপোর্ট পাওয়ার অধিকার রয়েছে। তবে আইনের সীমার মধ্যে থেকে পাসপোর্ট অধিদপ্তর কাজ করে।

সাবেক এ স্পিকারের বাসার ঠিকানা হিসেবে ধানমণ্ডির একটি বাসার উল্লেখ থাকলেও সেই ঠিকানায় তাদের পাওয়া যায়নি বলে জানান রক্ষণাবেক্ষণকারী কর্মচারী শাহাবুদ্দীন। তিনি জানান, শিরীন শারমিন এ বাসায় থাকেন না এবং এখানে তার উপস্থিতি গত কয়েক মাসে দেখা যায়নি।

পাসপোর্ট বিষয়ক এই বিতর্কে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখপাত্র উমামা ফাতেমা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “এই সময়ে হত্যা মামলার আসামিদের পাসপোর্ট প্রক্রিয়া সহজ করা সন্দেহজনক। এতে বিচার প্রক্রিয়া ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।”

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. ফিরোজ সরকার এ ধরনের সুবিধা সম্পর্কে সন্দেহ প্রকাশ করেন এবং জানান, নিয়মের বাইরে কেউ এভাবে সুবিধা নিতে পারেন না। এদিকে মামলার তদন্তকারী রংপুর মহানগর পুলিশ কর্মকর্তারা জানান, শিরীন শারমিন চৌধুরীকে গ্রেপ্তারের জন্য খোঁজা হচ্ছে এবং তার সন্ধান পাওয়া মাত্রই আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে।

Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

আরও ২৯ জন সাংবাদিকের প্রেস অ্যাক্রেডিটেশন কার্ড বাতিল
কৃষক বাবাকে ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা বানিয়ে পুলিশের এএসপি হন শতকোটি টাকার মালিক হারুন
হত্যা মামলার আসামি হয়েও পাসপোর্ট পেতে যাচ্ছেন শিরীন শারমিন চৌধুরী
জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষ্যে ছাত্রদলের দুই দিনের কর্মসূচি ঘোষণা
শেখ হাসিনা কীভাবে ভারতে আছেন, জানতে চাইলেন ঝাড়খন্ডের মুখ্যমন্ত্রী
মানুষ আগেও ভোটারবিহীন সরকারকে মানেনি, এখনও মানবে না: মির্জা আব্বাস
মাওলানা সাদকে দেশে আসতে দিলে অন্তর্বর্তী সরকারের পতন
সরকারি অনুষ্ঠানে স্লোগান ও জয়ধ্বনি থেকে বিরত থাকার নির্দেশনা
বেনাপোল স্থলবন্দরে ভোক্তা অধিকারের মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত
গুম কমিশনে জমা পড়েছে ১৬০০ অভিযোগ, সবচেয়ে বেশি র‌্যাবের বিরুদ্ধে
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যকে হত্যার হুমকি, থানায় জিডি
মালয়েশিয়ায় বন্দিশিবির থেকে ছয় বাংলাদেশিকে উদ্ধার, মানবপাচার চক্র আটক
১২ কেজি এলপি গ্যাসের দাম কমলো ১ টাকা
বিডিআর হত্যাকাণ্ড পুনঃতদন্তে হাইকোর্টের জাতীয় কমিশন গঠনের নির্দেশ কেন নয়
বাংলাদেশে ইজতেমা একবারই হবে, দুবার নয়: মহাসম্মেলনে বক্তারা
এক মাস পর খাগড়াছড়ি ও সাজেক পর্যটকদের জন্য উন্মুক্ত
মার্কিন নির্বাচনে লড়ছেন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ৬ প্রার্থী
শাকিব খানের সঙ্গে প্রেমের গুঞ্জন, মুখ খুললেন পূজা চেরি
মুক্তিযোদ্ধার নাতি-নাতনি কোটা রেখেই ঢাবির ভর্তি কার্যক্রম শুরু
মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে বাংলায় ব্যালট পেপার