বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪ | ৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
Dhaka Prokash
Header Ad

সংস্কৃতি চর্চার মাধ্যমে সমাজকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে

মানুষের বেঁচে থাকা, তার সমাজচেতনা, বিশ্বাস, ভাবনা, মূল্যবোধ ইত্যাদিসহ তার সামগ্রিক জীবনচেতনা প্রতিফলিত হয় সংস্কৃতির মধ্যে। সংস্কৃতির মধ্য দিয়েই ব্যক্তি মানুষ অন্যদের সঙ্গে নিজেকে যুক্ত করে। এভাবে ব্যক্তির ভাবনা সমগ্রের ভাবনা হয়ে ওঠে। একটি জাতি গঠনে যা নিয়ামক হিসেবে কাজ করে। সংস্কৃতি শুধু বেঁচে থাকা নয়, বরং সুন্দরভাবে বেঁচে থাকতে শেখায়।

প্রগতি শব্দের অর্থ জ্ঞানে বা কর্মে এগিয়ে চলা বা বর্তমানকে ধারণ করা। যারা এই কাজটা যথাযথভাবে করতে সক্ষম হন, তাদেরই ‘প্রগতিশীল' বলা হয়। আর প্রগতিশীলতা হলো মানুষের দৃষ্টিভঙ্গির বিষয়। প্রগতিশীল মানুষ সমাজের ঘুণে ধরা জরা দূর করতে জীবন উৎসর্গ করেন। প্রগতিশীল মানুষ নিজে সৃষ্টিশীল কাজ করে, অন্যদের উৎসাহিত করে। নিজের চেতনায় বিপ্লব ঘটিয়ে হচ্ছে প্রগতিশীল হওয়া। সমাজ বিপ্লবের সঙ্গে সম্পর্কহীন করে প্রগতিশীলতাকে বুঝলে আমরা বারবার ভুল জায়গায় প্রগতিশীলতাকে খুঁজব। সমাজবিপ্লবকে ঠিকভাবে জানতে পারলে আমরা প্রগতিশীল ও প্রতিক্রিয়াশীলের পার্থক্য বুঝতে সক্ষম হব। পুরোনো সমাজব্যবস্থা থেকে প্রগতিশীল শক্তিগুলোর মাধ্যমে সাধিত বিকাশের একটি গুণগত, নতুন ও উচ্চতর পর্যায়ের দিকে সমাজের অগ্রগতি, একটি নতুন ও প্রগতিশীল সমাজব্যবস্থায় উত্তরণ।

আমরা স্বাধীন বাংলাদেশে ৫২ বছর অতিক্রম করার পথ পরিক্রমার পর্যালোচনা থেকে নিজেদের সাংস্কৃতিক অবস্থান বুঝে নিতে চাই আমরা কোথায় আছি। বাংলাদেশের সংস্কৃতি তার নিজস্ব রূপ-রস-রং-গন্ধ নিয়ে বিকশিত হয়ে চলছে, সংস্কৃতির বিবর্তনে আস্থাশীল সংস্কৃতি সমগ্র বাঙালি সংস্কৃতিকেই জোগাচ্ছে পরিপুষ্টি ও প্রণোদনা।

বাঙালি জাতিসত্তার জাগরণ ও সংগ্রামের মূল লক্ষ্য ছিল বাঙালির আপন ভুবন অনুসন্ধান এবং জাতিসত্তা ও ধর্ম পরিচয়ের মধ্যে সামঞ্জস্য রচনা করে সম্প্রীতির রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা। স্বাধীন রাষ্ট্রে আমরা বিকাশের পথ তৈরির অবকাশ বিশেষ পাইনি। সাড়ে তিন বছরের মধ্যে রাষ্ট্রের স্থপতি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নির্মম হত্যাকাণ্ড এবং সংবিধান ও রাষ্ট্রাচার থেকে চার জাতীয় মূলনীতির পরিবর্তন করে দেশকে পরিচালিত করা হয়েছে ভিন্ন পথে। ধর্মের মোড়কে আবারও সামাজিক স্থিতির বিনাশ এবং দ্বিজাতিতত্ত্বের সাম্প্রদায়িক চিন্তার আধিপত্য বিস্তারে চলে রাষ্ট্রীয় প্রয়াস।

বিশ্বায়নের অর্থনৈতিক ধারা সংস্কৃতির উপর নানাভাবে প্রভাব বিস্তার করছে। প্রযুক্তি সেখানে যোগ করেছে আরও ব্যাপকতা। ডিজিটালের যুগে আধুনিক সংযোগ প্রযুক্তি সংস্কৃতির উৎপাদন, পুনরুৎপাদন এবং মানুষের সঙ্গে মানুষের সংযোগে অভাবিত সব পরিবর্তন বয়ে এনেছে। আমরা এই পরিবর্তনে ভাসছি, অনেকটাই সুখস্রোতে গা এলিয়ে দেওয়ার মতো। প্রযুক্তির উপর মানুষের ও সংস্কৃতির আধিপত্য প্রতিষ্ঠায় বিশেষ ভূমিকা পালন করতে পারছি না। বিপুল শঙ্কা ও বিশাল সম্ভাবনার দোলাচলে আমরা রয়েছি। সেখানে অর্থময় পরিবর্তন ঘটাতে হলে চাই মানবসম্পদের বিকাশ ও অভ্যুদয়। শিক্ষায়, জ্ঞানচর্চায় চাই সংস্কৃতির ছোঁয়া। সংস্কৃতির বাহন হবে প্রযুক্তি। এর উপাদান হতে হবে জাতীয়তা ও স্বকীয়তা, যা একই সঙ্গে মেলাবে স্থানীয়, আঞ্চলিক, স্বদেশিকতার সঙ্গে বিশ্বময়তার ভবিষ্যৎমুখী জাতীয়তাবোধ ও আন্তর্জাতিকতা আলিঙ্গন করে বাংলাদেশ বিকশিত হবে, সৃজনমুখর হবে এমন প্রত্যাশার সঙ্গে অনাগত এই বিকাশের দিকে তাকিয়ে আছি, যা অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও সাংস্কৃতিক বিকাশকে একীভূত করবে।

বিরূপ সময়েও মুক্তিযুদ্ধে বিজয়ী বাঙালি সমাজ ও সংস্কৃতিতে এই লড়াই নানাভাবে পরিচালনা করেছে, বাঙালি সংস্কৃতির সৃজনধারায় যার নানা প্রকাশ আমরা দেখি। বাংলাদেশের সংস্কৃতির পরিবর্তনশীলতা বিচার করতে এখনো পুরোনো ধ্যানধারণা, সাম্প্রদায়িক বিভেদ, ঘৃণা ও বিদ্বেষ সঞ্চার নানাভাবে জাতিকে পথভ্রষ্ট করতে চায় মাঝে মাঝেই। ৫২ বছরে তার প্রকাশ এবং সংঘাত ও হিংসাত্মক আক্রমণের উদাহরণ রয়েছে অনেক।

সংস্কৃতির বিস্তার ও বৈচিত্র্য, যা বহন করে জাগরণ ও সৃষ্টিশীলতার বীজ। সংস্কৃতির শাখা-প্রশাখা ডালপালা নতুন প্রসার পাচ্ছে, যেখানে বাঙালির সংগ্রাম ও মুক্তির চেতনা অর্জন করছে নতুন মাত্রা। বাংলাদেশের সাহিত্যে মুক্তিযুদ্ধের রচনাভাণ্ডার হিসেবে পৃথক এক ঘরানা গড়ে উঠেছে, যেটা স্বাধীনতা সংগ্রামকারী খুব কম দেশেই মিলবে। এই ধারা যে নতুন প্রজন্মের মধ্যেও বহমান, তা আমাদের আশা জাগায় তবে এ ক্ষেত্রে রাষ্ট্র ও সরকারের দিক থেকে আরও অনেক কিছু করার রয়েছে। সংস্কৃতি সমাজে যে সম্প্রীতি ও সদ্ভাবের বাতাবরণ তৈরি করে দেশের বিকাশ ও প্রবৃদ্ধির জন্য, তা অত্যাবশ্যক শর্ত। সম্প্রীতির বিরুদ্ধে সংঘাত, ভালোবাসার বিপরীতে ঘৃণা, বৈচিত্র্যের বিপরীতে আরোপিত একরঙা সমাজ, এমন দ্বন্দ্বে বাংলাদেশ টালমাটাল। সব বাধা পেরিয়ে অব্যাহত থাকবে সংস্কৃতির অভিযাত্রা।

সুন্দরভাবে বাঁচতে হলে শুধু নিজের জন্য নয়, গোটা সমাজের জন্য যা কিছু প্রতিবন্ধক সেগুলোকে যথাযথ উপলব্ধি করতে হয়। আর তা করতে প্রয়োজন হয় নিজের মধ্যে এক ধরনের সূক্ষ্ম অনুভূতি জাগিয়ে তোলা। সংস্কৃতির পরিমণ্ডল ছাড়া এই সূক্ষ্ম অনুভূতি জন্ম নেয় না। সংস্কৃতি সাম্প্রদায়িকতার ঊর্ধ্বে উঠে মানুষের জীবনকে আরও সুন্দর, নির্বিঘ্ন, পরিশীলিত ও সমাজসচেতন করে তোলে। এ কারণে মানুষের সংস্কৃতি সবসময় বিকাশমান, সৃজনশীল ও কল্যাণময়। মানবসমাজে সংস্কৃতির আবির্ভাব হয়েছিল বেঁচে থাকার জন্য সংগ্রামের প্রাণশক্তি হিসেবে। এ কারণে সংস্কৃতি শুধুমাত্র বিনোদন বা মনোরঞ্জনের বিষয় নয়, বরং তার প্রধান ভূমিকাই হলো মানুষের জীবন সংগ্রামের সহায়ক হওয়া।

মানুষের সামাজিক সংকট ও এগিয়ে চলার পথে যাবতীয় বাধা-বিঘ্ন থেকে উত্তরণে সুস্থ সংস্কৃতি মানুষকে নতুন দিশা দিতে পারে। মানুষের আবেগকে ধারণ করে বলেই তা নানা মাধ্যমের মধ্য দিয়ে সংকটে-সমস্যায় মানুষের প্রতিবাদ, বিদ্রোহ ও সংগ্রামের অনুপ্রেরণা হয় এবং সমাজকে বদলে দিতে মানুষের গুরুত্বপূর্ণ হাতিয়ার হয়ে ওঠে। সুস্থ সংস্কৃতি হলো সেই সংস্কৃতি যা যাবতীয় অসঙ্গতির বিরুদ্ধে দাঁড়ায়। সংস্কৃতির ঐতিহাসিক দায়িত্ব হলো সুস্থ, সংগতিপূর্ণ ও প্রগতিশীল এক সমাজ গড়ে তোলার সংগ্রামের সঙ্গে একাত্ম হওয়া। যারা সংস্কৃতির নানা মাধ্যমে কাজ করেন, তাদের এই বাস্তবতার বাইরে থাকার কোনো উপায় নেই। লেখক, শিল্পী, সাহিত্যিক তথা সাংস্কৃতিক জগতের মানুষদের জন্য যাবতীয় সামাজিক অসঙ্গতির বিরুদ্ধে দাঁড়ানো এবং সামগ্রিক প্রগতির পক্ষে থাকা একটা নৈতিক দায়। প্রতিটি সমাজেই সুস্থ অগ্রগতির ধারা বজায় রাখতে এক চলমান সাংস্কৃতিক আন্দোলন প্রয়োজন হয়।

বাঙালির জীবনে যখনই ক্রান্তিকাল দেখা দিয়েছে তখনই সে তার প্রতিবাদ, সংগ্রাম ও আন্দোলনের মাধ্যম হিসেবে সংস্কৃতির নানা ক্ষেত্রগুলোকে বেছে নিয়েছে। ১৮৫৭ সালের সিপাহী বিপ্লবের পর থেকে বাংলায় যে স্বদেশচেতনা জাগ্রত হতে থাকে নানা দেশাত্মবোধক গানের মধ্যে দিয়ে তার প্রকাশ ঘটে। বাঙালির প্রতিটি আন্দোলন-সংগ্রামে শক্তি জুগিয়েছে প্রতিবাদী গণ-সংস্কৃতি। ভাষা আন্দোলন, গণআন্দোলন বা আমাদের মুক্তিযুদ্ধে এদেশের মানুষ যখন সক্রিয় ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছে তখনো আমরা গান, কবিতা, নাটক, কার্টুন বা ব্যঙ্গচিত্র ইত্যাদির সৃজনশীল ব্যবহার দেখেছি। স্বাধীন দেশ হিসেবে বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের পরেও বিভিন্ন আন্দোলন-সংগ্রামে সংস্কৃতির নানা ক্ষেত্র জনগণের প্রতিবাদ-দ্রোহ ও আকাঙ্ক্ষাকে ধারণ করে স্ব-স্ব ভূমিকা রেখেছে।

সমাজ পরিবর্তনের আন্দোলন-সংগ্রামে মূল ভূমিকা পালন করে সংগঠিত রাজনৈতিক শক্তি বা সংগঠন। সাংস্কৃতিক সংগঠন তার কার্যক্রমের মধ্যে দিয়ে স্বতন্ত্র শক্তি হিসেবে সমাজ পরিবর্তনের লড়াইয়ে সহযোগীর ভূমিকা পালন করতে পারে। সম্ভাবনাময় রাজনৈতিক শক্তির অনৈক্য ও দুর্বলতার প্রভাব স্বাভাবিকভাবে সাংস্কৃতিক আন্দোলনকেও প্রভাবিত করে। আমরা দেখেছি বিভাগপূর্ব ভারতে যে সচেতন সাংস্কৃতিক আন্দোলনের সূচনা হয়েছিল তার নেপথ্যে প্রধান ভূমিকা পালন করেন সাংস্কৃতিক কর্মীরা।

দেশের জন্মলগ্নে আমাদের মুক্তিযুদ্ধে সাংস্কৃতিক প্ল্যাটফর্ম বিপুল কার্যকর ভূমিকা রেখেছে। যেমন মুক্তিকামী মানুষকে প্রেরণা দিতে, তাদের মনোবল চাঙ্গা করতে এবং শত্রুর বিরুদ্ধে প্রাণপণে লড়াই করে যাওয়ার ক্ষেত্রে সাংস্কৃতিক ধারার গুরুত্বপূর্ণ অবদান অনস্বীকার্য। স্বাধীন বাংলা বেতারকেন্দ্রের ভূমিকা নিয়ে আমরা কম-বেশি সবাই জানি। অনেকেই একতারা-দোতারা হাতে গান করে মানুষকে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে অনুপ্রাণিত করেছেন। যেকোনো দলের রাজনৈতিক অনুষ্ঠানগুলোর উদ্বোধনী কিংবা সমাপনীতে গান-বাজনার আয়োজন করা হতো।

স্কুল-কলেজগুলোতে ছাত্র-শিক্ষক সমবেত হয়ে গল্প বলা, নাটক মঞ্চস্থ করা, গানের অনুষ্ঠান করা, বিতর্ক প্রতিযোগিতা করা ইত্যাদি সহশিক্ষা হিসেবে খুবই কার্যকর। মনে হয় সমাজও ধীরে ধীরে দুর্বল হয়ে পড়ছে নানা ভয়-ভীতির খপ্পরে পড়ে। ফলে এক ধরনের ভয় কিংবা আশঙ্কার কারণে আগের মতো অহরহ যেখানে-সেখানে, যেমন-তেমন করে মনের আনন্দে বিনোদন উৎসব করা সম্ভব হয় না। এমনকি জাতীয় পর্যায়ের অনেক উৎসবকে সন্ধ্যার মধ্যে সম্পন্ন করার তাগিদ আমরা দেখতে পাই।

প্রগতিশীল রাজনীতির ধারক, বাহক ও সঞ্চালক হিসেবে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় সরকার প্রধানের দায়িত্ব পালন করছেন। তাই সংস্কৃতির বিকাশ একটা কঠিন বিষয় নয়। তবে শিশু, কিশোরসহ নতুন প্রজন্মকে সংস্কৃতিবান ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় গড়ে তোলায় আরও মনোযোগ দিতে হবে। যেকোনো ধরনের সামাজিক-সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের ক্ষেত্রে এলাকার সাধারণ মানুষের সহযোগিতা পাওয়া যায়।

সুস্থ, স্বাভাবিক, সুন্দর সামাজিক জীবনযাপনের জন্য খেলাধুলা ও সাংস্কৃতিক বিনোদনের কোনো বিকল্প নেই। সমাজে সুস্থধারার সংস্কৃতিচর্চার মধ্য দিয়ে সুনাগরিক তৈরি করা যেমন সম্ভব, তেমনি কুসংস্কার ও সাম্প্রদায়িক সহিংসতা দূর করা সম্ভব।

সুস্থধারার শিল্প, সাহিত্য, সংস্কৃতি ও রাজনৈতিক চর্চা সমাজে যত কমতে থাকে প্রগতিশীল মানুষের জীবনযাত্রা তত বেশি বাধাগ্রস্ত হতে থাকে, বিপদের সম্মুখীন হতে থাকে, সমাজে অস্থিরতা বাড়তে থাকে, যুব সমাজের অবক্ষয় শুরু হতে থাকে, সর্বোপরি সমাজ তার বাসযোগ্যতা হারিয়ে অসারে পরিণত হয়। এই অসারতার অন্ধকার প্রতিক্রিয়াশীল সাম্প্রদায়িক রাজনীতির জন্য অবারিত সম্ভাবনা তৈরি করে।

বর্তমানে আমরা যে সামাজিক পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যাচ্ছি আমাদের সামনের যাত্রা মসৃণ করতে, দেশের উন্নয়ন-অগ্রযাত্রাকে টেকসই করতে এবং এই ধারাবাহিকতা অব্যাহত রেখে ২০৪১ সালে বাংলাদেশকে উন্নত বিশ্বের কাতারে মাথা উঁচু করে দাঁড় করাতে সমাজকে এখনই প্রস্তুত করা জরুরি। সরকারের উন্নয়নের লক্ষ্য, মিশন ও ভিশন অর্জনে দেশজুড়ে প্রগতিশীল সমাজ বিনির্মাণের কোনো বিকল্প নেই।

হীরেন পণ্ডিত: প্রাবন্ধিক ও গবেষক

এসএন

 

Header Ad

‘বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে সশস্ত্র বাহিনীর অবদান চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে’: প্রধান উপদেষ্টা

ফাইল ছবি

জুলাই-আগস্টের বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে সশস্ত্র বাহিনীর অবদান চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) বিকেলে ঢাকা সেনানিবাসের সেনাকুঞ্জে সশস্ত্র বাহিনী দিবস ২০২৪ উপলক্ষে আয়োজিত সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে দেওয়া বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, জুলাই-আগস্ট ছাত্র জনতার বিপ্লবের মধ্যে দিয়ে আমরা নতুন বাংলাদেশের সূচনা করেছি। এ নতুন দেশে আমাদের দায়িত্ব সকল মানুষকে এক বৃহত্তর পরিবারের বন্ধনে আবদ্ধ করা। কেউ কারো উপরে না, আবার কেউ কারো নিচেও না, এই ধারণা আমরা আমাদের জাতীয় জীবনে প্রতিষ্ঠিত করতে চাই।

তিনি বলেন, নতুন বাংলাদেশ গড়ার যে সুযোগ ছাত্র-জনতার সাহস ও আত্মত্যাগের বিনিময়ে সম্প্রতি আমরা অর্জন করেছি, সেটাকে কাজে লাগিয়ে আমাদের সুন্দর ও সমৃদ্ধশালী ভবিষ্যৎ গড়তে হবে। বীর মুক্তিযোদ্ধা, শহিদ, আহত এবং জীবিত ছাত্র-জনতার কাছে আমরা প্রতিজ্ঞাবদ্ধ থাকতে চাই। যে সুযোগ তারা আমাদের দিয়েছে, তার মাধ্যমে আমাদের দেশকে পৃথিবীর সামনে একটি দৃষ্টান্ত স্থাপনকারী দেশে পরিণত করতে আমরা শপথ নিয়েছি।

তিনি আরও বলেন, ছাত্র আন্দোলনে জীবন উৎসর্গ করে যারা দেশ গঠনের সুযোগ করে দিয়েছে জাতি তাদের সারা জীবন শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করবে।

বক্তব্য শেষে সেনা কর্মকর্তাদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন প্রধান উপদেষ্টা। পরে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।

Header Ad

নওগাঁ শহরে শৃঙ্খলা ফেরাতে বিশেষ অভিযান শুরু

ছবি: সংগৃহীত

নওগাঁ শহরে যানযট নিরসন ও শৃঙ্খলা ফেরাতে জেলা প্রশাসন, পুলিশ, পৌর কর্তৃপক্ষ ও রিকশা মালিক-শ্রমিকদের যৌথ উদ্যোগে বিশেষ অভিযান শুরু হয়েছে। এতে শহরে শৃঙ্খলা ফিরবে বলে আশাবাদ ব্যাক্ত করেছেন স্থানীয় কর্মকর্তারা।

বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) অভিযানের উদ্বোধন করেন নওগাঁ পৌরসভার প্রশাসক ও স্থানীয় সরকারের উপ পরিচালক টি.এম.এ মমিন। এ সময় নওগাঁ জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট জিয়া উদ্দিন, নওগাঁ পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী সাজ্জাদ হোসেন, নওগাঁ জেলা ট্রাফিক পুলিশের পরিদর্শক আফজাল হোসেন ও অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন।

অভিযান শুরুর পর থেকেই শহরের বরুনকান্দি, মশরপুর, তাজের মোড় ও কালীতলাসহ মোট ৮ টি প্রবেশদ্বারে চেকপোস্ট বসানো হয়েছে। চেক পোষ্টগুলোতে ২ জন পুলিশ সদস্য, ২ জন ছাত্র সমন্বয়ক, ৪ জন রোভার স্কাউট সদস্য ও ২ জন রিকশা মালিক শ্রমিক প্রতিনিধিসহ মোট ১২ জন করে কাজ করছেন।

পৌর প্রশাসক জানান, নওগাঁ শহরে বৈধ যানবাহনের সংখ্যা ৪ হাজার। কিন্তু প্রতিদিন পার্শবতী বিভিন্ন এলাকা থেকে অন্তত ১০ হাজার রিকশা, ব্যাটারী চালিত অটো রিকশা ও ইজিবাইক শহরে প্রবেশ করে। এতে তীব্র যানযট ও জন মানুষের ভোগান্তি তৈরী হয়। এই দূর্ভোগ লাঘোবে জেলা প্রশাসক মুহাম্মদ আব্দুল আউয়াল ও পুলিশ সুপার কুতুব উদ্দিনের দিক নির্দেশনায় যানবাহন নিয়ন্ত্রনসহ বিশেষ অভিযানের সিদ্ধান্ত গ্রহন করা হয়। বৈধ চালকদের চিহ্নিত করতে তাদের মাঝে পরিধেয় বিশেষ ধরনের জ্যাকেট প্রদান করা হচ্ছে বলেও জানান তিনি।

নওগাঁর পুলিশ সুপার কুতুব উদ্দিন বলেন, নওগাঁ শহরের যানযট দীর্ঘদিনের সমস্যা। পরিকল্পিত ভাবে এই সমস্যা দূর করতে জেলা প্রশাসন ও পুলিশ বিভাগের উদ্যোগে পৌর কর্তৃপক্ষ ও রিকশা মালিক শ্রমিক নেতৃবৃন্দদের সমন্বয়ে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে স্থানীয় বাসিন্দা ও বিভিন্ন ষ্টেক হোল্ডারদের পরামর্শ নিয়ে একটি কর্ম পরিকল্পনা গ্রহক করা হয়েছে।

এ বিষয়ে নওগাঁর জেলা প্রশাসক মুহাম্মদ আব্দুল আউয়াল বলেন, অভিযান সফল ভাবে বাস্তবায়ন হলে শহরে শৃঙ্খলা ফিরে আসবে। জনগন এর সুফল পাবেন। সকলকে এই কার্যক্রমে সহযোগিতা প্রদানের আহবান জানান তিনি।

Header Ad

২০২৬ সালের মাঝামাঝিতে নির্বাচন হতে পারে: উপদেষ্টা সাখাওয়াত

বক্তব্য রাখছেন উপদেষ্টা এম সাখাওয়াত হোসেন। ছবি: সংগৃহীত

প্রয়োজনীয় সংস্কার শেষে ২০২৬ সালের মাঝামাঝি নির্বাচন হতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ অন্তর্বর্তী সরকারের নৌ পরিবহন, শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ডক্টর এম সাখাওয়াত হোসেন।

সম্প্রতি ব্রিটিশ পার্লামেন্টের হাউস অব লর্ডসে মানবাধিকার সংগঠন ‘ভয়েস ফর বাংলাদেশ’ আয়োজিত সম্মেলন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।

‘ডিসকাশন অন ডেমোক্রেটিক কলাপ্স অ্যান্ড রিবিল্ডিং অব বাংলাদেশ’ শীর্ষক এই সম্মেলনে হাউস অব লর্ডসের সিনিয়র সদস্য আলেক্সান্ডার চার্লস কার্লাইল কিউসি সভাপতিত্ব করেন। ভয়েস ফর বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা ও ব্রডকাস্টার আতাউল্লাহ ফারুকের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন এম সাখাওয়াত হোসেন।

সম্মেলেনে সাবেক ব্রিটিশ মন্ত্রী পল স্কালি বলেন, বাংলাদেশে যে মানবাধিকার লঙ্ঘন হয়েছে, তার সঠিক তদন্ত শেষে যথাযথ বিচারের ব্যবস্থা করতে হবে। যাতে করে এ ধরনের ঘটনার পুররাবৃত্তি না হয়।

লর্ড হোসাইন বলেন, বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার সব সংস্কার এবং সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য যুক্তরাজ্যের কাছ থেকে সব ধরনের সহায়তা পাবে।

সম্মেলনে বাংলাদেশের পোশাক রপ্তানির কার্যক্রম স্বাভাবিক রাখতে সরকারকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে আহ্বান জানান লেবার দলীয় বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ এমপি রুপা হক।

Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

‘বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে সশস্ত্র বাহিনীর অবদান চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে’: প্রধান উপদেষ্টা
নওগাঁ শহরে শৃঙ্খলা ফেরাতে বিশেষ অভিযান শুরু
২০২৬ সালের মাঝামাঝিতে নির্বাচন হতে পারে: উপদেষ্টা সাখাওয়াত
সেনাকুঞ্জে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে খালেদা জিয়ার শুভেচ্ছা বিনিময়
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে আহত ৫ জনকে রোবটিক হাত উপহার
সেনাকুঞ্জের পথে খালেদা জিয়া
সুযোগ পেলে শেখ হাসিনার পক্ষে মামলায় লড়ব: জেড আই খান পান্না
নির্বাচন কমিশন গঠন, সিইসি হলেন অবসরপ্রাপ্ত সচিব নাসির উদ্দীন
ডিএনএ টেস্টের ফলাফল: ভিনিসিয়ুসের পূর্বপুরুষ ছিলেন ক্যামেরুনের
জামিন পেলেন সাংবাদিক শফিক রেহমান
বিএনপি ছেড়ে আওয়ামী লীগে আসা সেই শাহজাহান ওমর গ্রেপ্তার
মিরপুর ও মহাখালীতে অটোরিকশা চালকদের সেনাবাহিনীর ধাওয়া
‘শেখ হাসিনা এখনও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী’, এমন কথা বলেননি ট্রাম্প
লেবাননে ৮ শতাধিক ইসরায়েলি সেনা নিহত
ভারতে সাজাভোগ শেষে দেশে ফিরল ২৪ বাংলাদেশি কিশোর-কিশোরী
ঢাকার বিভিন্ন পয়েন্টে অবরোধ করে ব্যাটারিচালিত রিকশাচালকদের বিক্ষোভ
গাজায় ইসরায়েলের হামলায় আরও ৮৮ ফিলিস্তিনি নিহত
সাবেক এমপি শাহজাহান ওমরের বাড়িতে হামলা-ভাঙচুর
১২ বছর পর সেনাকুঞ্জে যাচ্ছেন খালেদা জিয়া
ধামরাইয়ে শ্রমিকবাহী বাস-ট্রাকের মুখোমুখি সংঘর্ষ, নিহত ৪