বইপ্রেমী পাঠক পছন্দমতো বই কিনে পড়বে
বইমেলা আমাদের সংস্কৃতির একটি অংশ বিশেষ করে অমর একুশে বইমেলা আমাদের প্রাণের মেলা এ কথা আমরা সবসময়ই বলে থাকি। আমি মনে করি যে, শুধু বই প্রকাশ হওয়া এটুকুই নয়, লক্ষ লক্ষ মানুষ একত্রিত হয় এই মেলাকে কেন্দ্র করে। তাদের মধ্যে পরস্পর গল্প ,আড্ডা, মতবিনিময় সবকিছু মিলিয়ে একটি উৎসবমুখর পরিবেশ বিরাজ করে। এটি আমাদের একটি ঐতিহ্য হয়ে দাঁড়িয়েছে। সারা বছর ঘুরেই লেখক প্রকাশক পাঠক দর্শকসহ সবাই অপেক্ষা করে থাকে এই মেলাকে উপলক্ষ করে। সব বইপ্রেমী পাঠকদের মিলনমেলা এটি নিঃসন্দেহে আনন্দের বিষয়। বইমেলা ঘিরে লেখক প্রকাশকদের ব্যস্ততা অনেক বেড়ে যায়। নিত্য নতুন বই প্রকাশিত হয়। পাঠক হাতে নিয়ে বই কেনা ও বইপাঠের আনন্দ লাভ করে।
করোনা মহামারির কারণে শুধু বই প্রকাশনাকে ঘিরে নয়, সারা বিশ্বজুড়ে সর্বত্রই একটি ধাক্কা গেছে। সেটি থেকে উত্তরণের উপযুক্ত একটি বছর এবারের মেলা। গতবছেরর কথা যদি আমরা বলি, আমরা সফলভাবেই বইমেলা সম্পন্ন করেছিলাম। তবে গত দুই বছরের তুলনায় এবারের বইমেলা অনেকটাই ভিন্ন হবে বলাবাহুল্য।
করোনা মহামারির জন্য গত দুই বছর মেলা নির্দিষ্ট সময়ে হতে পারেনি। তবে এ বছর মাসজুড়ে চলবে মেলা। আঙ্গিক ও বিন্যাসেও পরিবর্তন এসেছে, নতুন প্রকাশক এবং স্টলের সংখ্যা বেড়েছে। গত বছর প্যাভিলিয়নের সংখ্যা ছিল ৩৫। এবার প্যাভিলিয়ন হচ্ছে ৩৮টি। এতে বিন্যাস কিছুটা বদলেছে। এবার জ্যামিতিকভাবে স্টলের বিন্যাস করা হয়েছে বলে সহজে খুঁজে পাওয়া যাবে। পাঠকদের জন্য ঘুরে ঘুরে বই কেনা সহজ হবে। এর বেশি আপাতত বলা সমুচিত নয়। সেজন্য পুরো একটি মাস আমাদের অপেক্ষা করতে হবে।
একটি কথা বলতে হবে যে, কাগজের মূল্যস্ফীতিতে অনেকটা বাধ্য হয়েই আমাদের বইয়ের দাম কিছুটা বাড়াতে হয়েছে। কাজেই বইয়ের দামবৃদ্ধি এটি আমাদের জন্য একটি অস্বস্তিকর বিষয়। তারপরও আমি বলবো সবকিছু সত্ত্বেও মানুষ এত উৎসাহ উদ্দীপনা নিয়ে মেলায় যাবে, বিভিন্ন বিষয়ের বই দেখবে এবং বই কিনে পড়বে। বই কেনার ক্ষেত্রে বাজেটে হয়ত কিছুটা একটু এদিক ওদিক হবে। তবুও আমরা আশাবাদী বইপ্রেমী পাঠক নিজের পছন্দ অনুযায়ী বই কিনবে।
আমি আমাদের রকমারি নিয়ে যদি বলি, প্রথমদিন থেকেই আমরা বেশ ভালো রকম সাড়া পাচ্ছি। শুরুর দিন থেকেই অন্যান্য বছরের তুলনায় এবারের সাড়া অপেক্ষাকৃত ভালো পাওয়া যাচ্ছে। আরও একটি লক্ষণীয় বিষয় হলো, অনেক প্রতিষ্ঠিত লেখকই গতবছর লিখেননি। অনেক ক্ষেত্রেই যে বইগুলো আসা দরকার মনে হয়েছে গতবছর, সেখানে বেশ কমতি অর্থাৎ একটি ঘাটতি পরিলক্ষিত ছিল। এবার সেই তুলনায় আমরা দেখতে পাচ্ছি যারা প্রতিষ্ঠিত লেখক, যারা পাঠক নন্দিত— এবারের মেলায় সবারই বই কমবেশি আসছে। সবার মধ্যেই নতুন করে উদ্দীপনা পরিলক্ষিত হচ্ছে। সবকিছু মিলিয়ে এবারের বইমেলা পাঠক নন্দিত সফল একটি বইমেলা হবে সেই আশাবাদ ব্যক্ত করছি ।
মাহমুদুল হাসান সোহাগ: প্রধান নির্বাহী রকমারি ডট.কম
আরএ/