বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪ | ৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
Dhaka Prokash
Header Ad

'নারীর প্রতি সহিংসতা কমাতে জনসচেতনতা বাড়াতে হবে'

আজ শুক্রবার আন্তর্জাতিক নারী নির্যাতন প্রতিরোধ দিবস ২০২২। ১৯৬০ সালের ২৫ নভেম্বর ক্যারিবিয়ান দেশ ডোমিনিকান রিপাবলিকের স্বৈরাচারী সরকারবিরোধী মিরাবেল ভগ্নিত্রয়কে সেনা সদস্যরা ধর্ষণ ও হত্যা করেন। এই নির্যাতনের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক প্রতিরোধ গড়ে তোলার জন্য ১৯৮১ সালে লাতিন আমেরিকা ও ক্যারিবীয় নারী সম্মেলন এই হত্যাকাণ্ডকে স্মরণ করে ২৫ নভেম্বরকে 'নারী নির্যাতনের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক প্রতিরোধ দিবস' ঘোষণা করে। আর ১৯৯৩ সালে ভিয়েনায় বিশ্ব মানবাধিকার সম্মেলন দিবসটিকে স্বীকৃতি দেয়। জাতিসংঘ দিবসটিকে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃতি দেয় ১৯৯৯ সালের ১৭ ডিসেম্বর। বাংলাদেশে অবশ্য ১৯৯৭ সাল থেকেই দিবসটি পালিত হয়ে আসছে।বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) কর্তৃক পরিচালিত ২০১১ সালের জরিপ মতে, শতকরা ৮৭ ভাগ নারী স্বামীর মাধ্যমে কোনো না কোনো ধরনের নির্যাতনের শিকার হন।

জাতিসংঘের বিশেষ রিপোর্ট মতে, বাংলাদেশে ৬০ শতাংশ বিবাহিত নারী জীবনে কোনো না কোনো সময়ে স্বামী কিংবা তার পরিবার বা উভয়ের দ্বারা নির্যাতিত হন। পুলিশ সদর দপ্তরের তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, ২০১৮ সালের তুলনায় চলতি বছর ধর্ষণের মামলা ১০ শতাংশ বেড়েছে। ২০১৮ সালে নারী ও শিশু নির্যাতনের অভিযোগে ১০ হাজার ৪০৮টি মামলা হয়েছিল। এর মধ্যে ধর্ষণের মামলা ছিল ৩৮ শতাংশ। এ ছাড়া ২০১৯ সালে ৪৩ শতাংশ, ২০২০ সালে প্রায় ৪৮ শতাংশ এবং ২০২১ সালে ৪৯ শতাংশ মামলা ছিল ধর্ষণের। চলতি বছরের প্রথম ৭ মাসে এই হার ৪৮।

পুলিশ সদর দপ্তরের হিসাব বলছে, এ বছরের জুলাই পর্যন্ত নারী ও শিশু নির্যাতনের অভিযোগে ৭ হাজার ৩৫০টি মামলা হয়েছে। এর মধ্যে ধর্ষণের মামলা ৩ হাজার ৫২৩টি।জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯-এর তথ্য অনুযায়ী, নারী ও শিশু নির্যাতনের অভিযোগে কলের সংখ্যা ব্যাপক হারে বাড়ছে। এ বছরের জুলাই পর্যন্ত নারী ও শিশু নির্যাতনের অভিযোগে ১১ হাজার ৯৫৯টি কল এসেছে। এর মধ্যে ধর্ষণের ৬১৯, ধর্ষণচেষ্টা ৩১৪, যৌন নির্যাতন ২৬৮, ধর্ষণের হুমকি ৩১ এবং উত্ত্যক্ত ও যৌন হয়রানির ১ হাজার ৯টি অভিযোগ রয়েছে।

একই অভিযোগে ২০২১ সালে ১২ হাজার ১৬৯, ২০২০ সালে ৬ হাজার ৩৩১, ২০১৯ সালে ৩ হাজার ১১৫ এবং ২০১৮ সালে ২ হাজার ২৯২টি কল আসে। এছাড়াও বিশ্বজুড়ে প্রতি ১০০ জনে সাতজন নারী কোনো না কোনোভাবে যৌন নিপীড়নের শিকার হচ্ছেন এবং বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্যমতে, সাত শতাংশ নারী সরাসরি ধর্ষণের শিকার হচ্ছেন। উন্নত-অনুন্নত সব দেশে নারীর প্রতি সহিংসতার চিত্র আরও অমানবিক। দিবসটি উপলক্ষে দেশের বিভিন্ন সংগঠন আজ নানা কর্মসূচি পালন করবে।

আজকের বিষয় নিয়ে কলাম লিখেছেন বাংলাদেশের বিশিষ্ট গবেষক ও জাতীয় রোগী কল্যাণ সোসাইটির প্রতিষ্ঠাতা ডা.এম এম মাজেদ তার কলামে লিখেন...নারীর প্রতি সহিংসতা ক্রমেই বেড়ে চলেছে। নারী এগিয়ে যাচ্ছে এটি যেমন সত্য, আবার নারী নির্যাতন বেড়েছে সেটিও অস্বীকার করার উপায় নেই। করোনাকালে গত তিন বছরে নারী নির্যাতনের মাত্রা বেড়েছে।গণমাধ্যম ও বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থার প্রতিবেদন থেকে এ তথ্যই উঠে এসেছে।আজ এই সভ্য জগতে বাস করেও আমরা আদিমতাকে বজায় রেখে নারীর প্রতি হিংস্রতা চালিয়ে যাই। নারীর প্রতি অবিচার, অনধিকার, অস্বীকার, মারপিট, প্রতিটি কাজে দোষ ধরা ইত্যাদিকে আমরা ছোট করেই দেখি কিংবা কেউ কেউ দেখিই না। নারীর প্রতি নৃশংসতার অন্যতম কারণ হতে পারে ক্ষমতার দাপট, প্রশাসনের উদাসীনতা, স্বাভাবিক বিষয় ভেবে প্রশাসনকে না জানানো, নারীদের চুপ করে থাকা, ভাগ্য বলে মেনে নেয়া প্রভৃতি।নারী নির্যাতন প্রতিরোধে আমাদের মানসিকতার পরিবর্তন দরকার। আমরা সবাই হয়তো নেপোলিয়ন বা নজরুলের মত করে ভাবতে পারি না। তবে আমরা আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি, মানসিকতা, চিন্তাধারা বদলাতে পারি।

নারীর প্রতি সহিংসতা রোধে দেশের তরুণ-যুবসমাজকে সচেতন ও সক্রিয় ভূমিকা রাখতে হবে। বাল্যবিবাহ বন্ধে সক্রিয় ভূমিকা পালন করতে হবে অভিভাবক, শিক্ষকসমাজ ও এলাকার রাজনৈতিক নেতা ও বিশিষ্ট ব্যক্তিদের। নারী নির্যাতনের সংস্কৃতিকে সমর্থন করে, এমন পিতৃতান্ত্রিক সংস্কৃতি ও মূল্যবোধ নিরোধের লক্ষ্যে জাতীয় নীতি ও কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে।আর নারীর মর্যাদা প্রতিষ্ঠায় বাংলাদেশের সংবিধানে নারী ও পুরুষের সম-অধিকারের বিধান রয়েছে। নারীর অধিকার রক্ষায় ও নারী নির্যাতন প্রতিরোধে প্রণীত হয়েছে একের পর এক আইন। তবু বেড়ে চলেছে নারী নির্যাতন। কিন্তু নির্যাতন প্রতিরোধে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া যাচ্ছে না। নির্যাতনের হার ক্রমেই বেড়ে চলেছে।

আইন থাকা সত্ত্বেও ক্রমবর্ধমান হারে নারী নির্যাতন বৃদ্ধির কারণ হতে পারে প্রণীত আইনগুলোর বাস্তবায়নে সীমাবদ্ধতা ও আইনের প্রয়োগ-পদ্ধতিতে কোনো ত্রুটি। যৌতুকের দাবি ও যৌতুকের জন্য নির্যাতনের মাত্রা আশঙ্কাজনকভাবে বাড়তে থাকায় ১৯৮০ সালে প্রণীত হয় যৌতুক নিরোধ আইন। পাশাপাশি নারী নির্যাতন প্রতিরোধে ২০০০ সালে প্রণীত হয়েছে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন (সংশোধনী ২০০৩)।

এই আইন দুটি উদ্দেশ্য পূরণে কতখানি সক্ষম হয়েছে, এর মাধ্যমে নারী ও শিশুরাই বা কতটুকু প্রতিকার পেয়েছে, নির্যাতন প্রতিরোধে আইন দুটির প্রয়োগে প্রতিবন্ধকতা এবং এর উত্তরণের সম্ভাব্য উপায় কী হতে পারে, তা নিয়ে আলোচনা প্রয়োজন। আর আমাদের দেশে কোনো অপরাধের ঘটনা বেশি ঘটলে বা এ নিয়ে গণমাধ্যমে আলোচনা হলে আইন প্রণয়ন নিয়ে তোড়জোড় শুরু হয়। বিষয়টি যেন এ রকম যে আইনের অভাবেই এত দিন অপরাধটি হয়ে আসছিল বা আইন না থাকার ফলেই অপরাধীদের শাস্তি দেয়া যাচ্ছিল না। তবে বাস্তবে দেখা যায়, প্রায় সব বিষয়েই আমাদের আইন রয়েছে। যুগের প্রয়োজনে কিছু কিছু নতুন আইন করা প্রয়োজন হলেও নির্যাতন বা ধর্ষণের মতো অপরাধ দমনের জন্য নতুন করে আইনের প্রয়োজন নেই।

ধর্ষণের মতো অপরাধ দমনের জন্য ব্রিটিশরা ১৮৬০ সালেই দেশে আইন করে গেছে। ১৮৬০ সালের দণ্ডবিধি আইন অপরাধ বিজ্ঞানের একটি অভিধান। অনেক অপরাধের মৌলিক নীতিই এখানে উল্লেখ আছে। প্রয়োজনে বিশেষ ক্ষেত্রে নতুন নতুন আইন করতে হয়েছে। যেমন- দ্রুত বিচার আইন, নারী ও শিশু নির্যাতন ও দমন আইন ইত্যাদি। এ আইনগুলো মূলত মূল অপরাধের ক্ষেত্রটিকে আরও প্রসারিত করেছে, যাতে অপরাধীদের সাজা নিশ্চিত করা যায় অথবা বিচারপ্রক্রিয়া আরও দ্রুত করা যায়।

আসল কথা হচ্ছে, শুধু আইন করে অপরাধ দমন করা যায় না। যদি তা-ই হতো তবে দ্রুত বিচার আইন বা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের মতো কঠিন আইন হওয়ার পরে এ দেশে নারী ও শিশু নির্যাতন হতো না। আইন করে বা কঠিন দণ্ড আরোপ করা হলেই অপরাধ দমন হয় না। আইন সহজ হতে পারে, দণ্ড লঘুও হতে পারে-মূল কথা হলো আইনের প্রয়োগ ও সব অপরাধীর সাজা নিশ্চিত করা।

একই অপরাধে এক আসামির ফাঁসি আরেক আসামির খালাস ন্যায়বিচারের পরিপন্থি। আইনে যদিও বলা হয় হাজার অপরাধী মুক্তি পাক, কিন্তু একজন নিরপরাধ যেন সাজা না পায়। সেটি ন্যায়বিচারের একটি মৌলিক নীতিও বটে। এর মানে এই নয় যে হাজার অপরাধীকে মুক্তি দিয়ে দুই-একজনকে ফাঁসি দিতে হবে। এই নীতির মানে হলো, স্বচ্ছ বিচারপ্রক্রিয়া নিশ্চিত করা, যেখানে সব অপরাধীকেই আইনের আওতায় আনা হবে এবং কোনো নিরপরাধ ব্যক্তিকে শাস্তি দেওয়া হবে না। কিন্তু আমাদের দেশে একদিকে যেমন নিরপরাধ ব্যক্তিদের বিচার হয় আবার অনেক অপরাধীও ছাড়া পায়।

প্রতিরোধে আমাদের সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। সাক্ষ্য-প্রমাণের অভাবে ও সামাজিক চাপের মুখে অনেক নারীই ন্যায়বিচার থেকে বঞ্চিত হন। আর আইনের ফাঁক-ফোকর তো আছেই। ‌কিন্তু আবার উল্টো চিত্রও দেখা যায়। প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে, পারিবারিক চাপে বা প্রতিশোধ নিতে অনেক ক্ষেত্রে মিথ্যা মামলাও করা হয়। আইনের অপব্যবহার করে অনেকেই মিথ্যা মামলা করেন। ফলে আসামিপক্ষ সাজা এড়াতে মীমাংসা করতে বাধ্য হয়। অনেক সময় মামলার বাদীরা টাকার বিনিময়ে মামলা তুলে নেন। আইনে মিথ্যা মামলার জন্য সাত বছরের কারাদণ্ডের বিধান থাকলেও ভুক্তভোগীরা মামলা থেকে অব্যাহতি পেয়েই সন্তুষ্ট থাকেন (নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ১৭ (১) ধারা)। এটি হচ্ছে আইনের অপব্যবহার।

আইনের এই অপব্যবহার রোধে মিথ্যা মামলাবাজ নারী বা বাদী বা পরিবারকে শাস্তির আওতায় আনতে হবে। এক দিকে অনেক অপরাধী আইনের ফাঁক-ফোকর দিয়ে বের হয়ে আসে, যার ফলে নির্যাতিতা নারী ন্যায়বিচার থেকে বঞ্চিত হন আবার অন্যদিকে মিথ্যা মামলা দিয়ে নিরপরাধকেও ফাঁসানো হয়।

এ রকম নানা অবিচার ও অনিয়মের বেড়াজালে হারিয়ে যায় এ দেশের অনেক নির্যাতনের কাহিনি। সব ঘটনা গণমাধ্যমে আসে না, মামলাও হয় না। বিভিন্ন কারণে অনেক ভুক্তভোগী মামলাও করতে পারেন না। মামলা করার সাহসও থাকে না। মামলার খরচ মেটানোও তাদের পক্ষে সম্ভব হয় না। উকিলের খরচ, যাতায়াতের খরচ আরও কত কী। এ ছাড়া আইনের জটিল প্রক্রিয়া তো আছেই।

নারীর বিষয়ে সমাজের পুরুষের বিশেষ করে তরুণ সমাজের যে প্রচলিত দৃষ্টিভঙ্গি এবং মানসিকতা, তা থেকে আধুনিক যুক্তিযুক্ত দৃষ্টিভঙ্গি অর্জনের জন্য সচেতনতার প্রয়োজন। সমাজের অর্ধেক জনগোষ্ঠী নারীসমাজকে সব ক্ষেত্রে সম-অংশগ্রহণের সুযোগ করে না দিলে এবং নারী ও কন্যাশিশুদের বিরুদ্ধে চলমান সহিংসতা বন্ধ না হলে সমাজ ও রাষ্ট্র এগিয়ে যেতে পারবে না। ধর্ষণ, গণধর্ষণ, হত্যা, এসিড নিক্ষেপ, উত্ত্যক্ত, যৌন হয়রানি ও নিপীড়ন, বে-আইনি ফতোয়ার বিরুদ্ধে সামাজিক প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। কিশোরী নির্যাতন বন্ধে নীরবতা ভেঙে এগিয়ে আসতে হবে। নারী নির্যাতন প্রতিরোধ ও নিমূ‌র্লের কর্মসূচি বাস্তবায়নের জন্য সচেতনতা মূলক কর্মসূচিতে নারী ও কন্যাশিশুদের যুক্ত করতে হবে। নারী নির্যাতন প্রতিরোধ ও নিমূ‌র্ল কর্মসূচিতে পুরুষ সমাজকে যুক্ত করে সাধারণ মানুষের সচেতনতা বৃদ্ধিমূলক বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করতে হবে।

পরিশেষে বলতে চাই, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা আপসযোগ্য নয়। কিন্তু আপস হচ্ছে। যেকোনো কারণেই স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে বিরোধ হতে পারে। সব ক্ষেত্রেই মামলা করতে হবে, এটা ঠিক না। মামলার বাইরে সামাজিক ও পারিবারিক সহায়তায় কীভাবে সমাধান করা যায়, সেটার ওপর গুরুত্ব দিতে হবে।আরেকটা বিষয় দেখা যায়, বাদী-বিবাদী প্রায় সময়ই অপ্রাসঙ্গিক তথ্য দিয়ে মামলাকে ন্যায়বিচারের পরিবর্তে ক্ষতিগ্রস্ত করেন। ঘটনা যা সেটা দিয়েই মামলা দায়ের করা উচিত। মামলার ভুক্তভোগী ও সাক্ষীর নিরাপত্তার বিষয়টিও গুরুত্বপূর্ণ।

একটা মেয়ে কখন মামলা করতে আসে, যখন তার দেয়ালে পিঠ ঠেকে যায়। তাই যেকোনোভাবেই হোক না কেন আমরা আইনি সহায়তা প্রদান করতে চেষ্টা করি, যাতে ভুক্তভোগী নারীকে কিছুটা সহায়তা করা যায়। আর সংসারে নারীর অবদানকে মূল্য দিয়ে দাম্পত্য জীবনে অর্জিত সম্পত্তিতে নারীর অধিকার দিতে হবে। আর যুবসমাজকে নারী নির্যাতন প্রতিরোধে যুক্ত করা এখন সময়ের দাবি। স্বাভাবিক, সুস্থ ও সমতা ভিত্তিক সমাজ বির্নিমাণে তাই সব প্রতিষ্ঠানকে কাজ করতে হবে। তাহলেই এ অস্বস্তিকর পরিস্থিতি থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব। এ ক্ষেত্রে মানুষকে আরও সচেতন করতে হবে। প্রশাসনকে আরও জোরালো ভূমিকা রাখতে হবে।জনসচেতনতা বাড়াতে হবে। প্রতিরোধে আমাদের সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে।
এএজেড

Header Ad

দেশের বাজারে আবারও বাড়ল স্বর্ণের দাম

ছবি: সংগৃহীত

আবারও স্বর্ণের দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশন (বাজুস)। এবার ভরিতে ১ হাজার ৯৯৪ টাকা বাড়িয়ে ২২ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের দাম ১ লাখ ৩৯ হাজার ৪৪৩ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। যা আজকেও ছিল এক লাখ ৩৭ হাজার ৪৪৯ টাকা।

বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) সন্ধ্যায় এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে বাজুস। শুক্রবার (২২ নভেম্বর) থেকেই নতুন এ দাম কার্যকর হবে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, স্থানীয় বাজারে তেজাবি স্বর্ণের (পিওর গোল্ড) মূল্য বেড়েছে। ফলে সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় স্বর্ণের নতুন দাম নির্ধারণ করা হয়েছে।

নতুন দাম অনুযায়ী, প্রতি ভরি ২২ ক্যারেটের স্বর্ণের দাম পড়বে ১ লাখ ৩৯ হাজার ৪৪৩ টাকা। এ ছাড়া ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি ১ লাখ ৩৩ হাজার ৯৮ টাকা, ১৮ ক্যারেটের প্রতি ভরি ১ লাখ ১৪ হাজার ৮৬ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম ৯৩ হাজার ৬৭৪ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে বাজুস আরও জানায়, স্বর্ণের বিক্রয়মূল্যের সঙ্গে আবশ্যিকভাবে সরকার-নির্ধারিত ৫ শতাংশ ভ্যাট ও বাজুস-নির্ধারিত ন্যূনতম মজুরি ৬ শতাংশ যুক্ত করতে হবে। তবে গয়নার ডিজাইন ও মানভেদে মজুরির তারতম্য হতে পারে।

স্বর্ণের দাম কমানো হলেও দেশের বাজারে অপরিবর্তিত রয়েছে রুপার দাম। দেশে ২২ ক্যারেটের এক ভরি রুপা বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার ৫৭৮ টাকায়। এ ছাড়া ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি ২ হাজার ৪৪৯ টাকা, ১৮ ক্যারেটের প্রতি ভরি ২ হাজার ১১১ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি রুপা বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ৫৮৬ টাকায়।

এর আগে, সবশেষ গত ১৯ নভেম্বর দেশের বাজারে স্বর্ণের দাম সমন্বয় করেছিল বাজুস। সে সময় টানা চার দফা কমার পর ভরিতে ২ হাজার ৯৪০ টাকা বাড়িয়ে ২২ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের দাম ১ লাখ ৩৭ হাজার ৪৪৯ টাকা নির্ধারণ করেছিল সংগঠনটি।

এ ছাড়া ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি ১ লাখ ৩১ হাজার ১৯৭ টাকা, ১৮ ক্যারেটের প্রতি ভরি ১ লাখ ১২ হাজার ৪৫৩ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম ৯২ হাজার ২৮৬ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছিল। যা কার্যকর হয়েছে গত ২০ নভেম্বর থেকে।

এ নিয়ে চলতি বছরে এখন পর্যন্ত দেশের বাজারে ৫১ বার স্বর্ণের দাম সমন্বয় করা হয়েছে। যেখানে ৩০ বার দাম বাড়ানো হয়েছে, আর কমানো হয়েছে ২১ বার।

Header Ad

‘দেশের মানুষ এখনো কোনো রাজনৈতিক দলকেই বিশ্বাস করতে পারে না’

ছবি: সংগৃহীত

দেশের জনপ্রিয় নির্মাতা আশফাক নিপুন। কাজের পাশাপাশি সামাজিক মাধ্যমেও বেশ সরব তিনি। কথা বলেন নানা ইস্যু নিয়ে। সেই ধারাবাহিকতায় সরকার পতনের পর অন্তবর্তীকালীন সরকার গঠনেও বিভিন্ন সময় নিজের আকাঙ্ক্ষা, প্রত্যাশার কথা জানিয়েছেন। পাশাপাশি রাজনৈতিক দলগুলোর উদ্দেশ্যেও বিভিন্ন বার্তা দিয়েছেন। এবার এমনি একটি বার্তায় দেশের রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি জনগনের আস্থার বিষয়ে আক্ষেপ জানালেন এই নির্মাতা।

বুধবার (২০ নভেম্বর) আশফাক নিপুন তার ফেসবুকে দেওয়া এক পোস্টে লেখেন, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে সর্বস্তরের ছাত্র এবং সাধারণ মানুষ রাস্তায় নেমে এসেছিল, বাসায় বসে বসে দোয়া করেছিল, যার যা সামর্থ্য দিয়ে সহায়তা করেছিল। কারণ, তারা দেখেছিল লড়াইটা আওয়ামী ফ্যাসিস্ট শাসক বনাম সাধারণ ছাত্র-জনতার। এটাও অস্বীকার করার কোনো উপায় নাই যে এই আন্দোলন বেগবান করতে বিরোধী সকল দলের কর্মীদের ভূমিকা অনস্বীকার্য। তাদের সংগ্রামও গত দেড় দশকের। কিন্তু এটা যদি শুধুমাত্র রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যকার লড়াই হতো তাহলে সাধারণ মানুষ এই লড়াই থেকে দূরে থাকত। সেই প্রমাণ বিগত ১৫ বছরে আছে।

‘দেশের মানুষ এখনো কোনো রাজনৈতিক দলকেই বিশ্বাস করতে পারে না’

কারণ হিসেবে তিনি বলেন, দেশের সাধারণ মানুষ এখনো দেশের কোনো রাজনৈতিক দলকেই পুরোপুরি বিশ্বাস করতে পারে না। এটাই বাস্তবতা। এই বাস্তবতা মেনে সকল রাজনৈতিক দলগুলোর উচিত কীভাবে সাধারণ জনগণের ভেতর নিজের দলের প্রতি আস্থা তৈরি করা যায় সেই বিষয়ে নিরলস কাজ করা। এই আস্থা ক্ষমতায় গিয়ে অর্জন করা সম্ভব না। কারণ, সাধারণ মানুষ আজীবন এস্টাবলিশমেন্টের বিপক্ষে। এই আস্থা অর্জন করতে হয় ক্ষমতা বলয়ের বাইরে থেকেই।

নিপুন আরও লিখেন, অরাজনৈতিক সরকার দিয়ে দীর্ঘদিন দেশ চালানো যেমন কাজের কথা না ঠিক তেমনি রাজনৈতিক সরকার হতে চাওয়া সকল রাজনৈতিক দলগুলোর বোঝা উচিত মুক্তিযুদ্ধের পরে বাংলাদেশের ইতিহাসের সবচেয়ে বড় গণঅভ্যুত্থান সংগঠিত হয়েছে সকল প্রকার পূর্বানুমান (যেমন- বর্ষাকালে আন্দোলন হয় না, নির্বাচনের আগেই কেবল জোরেশোরে আন্দোলন হয়, ঘোষণা দিয়ে বিরোধী সকল পক্ষ আন্দোলনে শামিল না হলে সফল হয় না) অগ্রাহ্য করেই। সেটা সম্ভব হয়েছে সাধারণ মানুষের ন্যায্যতার আকাঙ্ক্ষা থেকেই।

সবশেষ এই নির্মাতা লিখেছেন, ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা সাধারণ মানুষের এই আকাঙ্ক্ষার দুই পয়সার দাম দেন নাই। সাধারণ মানুষের এই আকাঙ্ক্ষা, ইচ্ছা আর দেশপ্রেমকে পুঁজি করে অরাজনৈতিক এবং রাজনৈতিক যারাই রাজনীতি রাজনীতি খেলতে চাইবে, তাদের দশাও কোন একসময় যেন পলাতক শেখ হাসিনার মতো না হয়, সেই বিষয় নিশ্চিত করতে হবে তাদেরকেই।

Header Ad

‘বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে সশস্ত্র বাহিনীর অবদান চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে’: প্রধান উপদেষ্টা

ফাইল ছবি

জুলাই-আগস্টের বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে সশস্ত্র বাহিনীর অবদান চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) বিকেলে ঢাকা সেনানিবাসের সেনাকুঞ্জে সশস্ত্র বাহিনী দিবস ২০২৪ উপলক্ষে আয়োজিত সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে দেওয়া বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, জুলাই-আগস্ট ছাত্র জনতার বিপ্লবের মধ্যে দিয়ে আমরা নতুন বাংলাদেশের সূচনা করেছি। এ নতুন দেশে আমাদের দায়িত্ব সকল মানুষকে এক বৃহত্তর পরিবারের বন্ধনে আবদ্ধ করা। কেউ কারো উপরে না, আবার কেউ কারো নিচেও না, এই ধারণা আমরা আমাদের জাতীয় জীবনে প্রতিষ্ঠিত করতে চাই।

তিনি বলেন, নতুন বাংলাদেশ গড়ার যে সুযোগ ছাত্র-জনতার সাহস ও আত্মত্যাগের বিনিময়ে সম্প্রতি আমরা অর্জন করেছি, সেটাকে কাজে লাগিয়ে আমাদের সুন্দর ও সমৃদ্ধশালী ভবিষ্যৎ গড়তে হবে। বীর মুক্তিযোদ্ধা, শহিদ, আহত এবং জীবিত ছাত্র-জনতার কাছে আমরা প্রতিজ্ঞাবদ্ধ থাকতে চাই। যে সুযোগ তারা আমাদের দিয়েছে, তার মাধ্যমে আমাদের দেশকে পৃথিবীর সামনে একটি দৃষ্টান্ত স্থাপনকারী দেশে পরিণত করতে আমরা শপথ নিয়েছি।

তিনি আরও বলেন, ছাত্র আন্দোলনে জীবন উৎসর্গ করে যারা দেশ গঠনের সুযোগ করে দিয়েছে জাতি তাদের সারা জীবন শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করবে।

বক্তব্য শেষে সেনা কর্মকর্তাদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন প্রধান উপদেষ্টা। পরে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।

Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

দেশের বাজারে আবারও বাড়ল স্বর্ণের দাম
‘দেশের মানুষ এখনো কোনো রাজনৈতিক দলকেই বিশ্বাস করতে পারে না’
‘বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে সশস্ত্র বাহিনীর অবদান চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে’: প্রধান উপদেষ্টা
নওগাঁ শহরে শৃঙ্খলা ফেরাতে বিশেষ অভিযান শুরু
২০২৬ সালের মাঝামাঝিতে নির্বাচন হতে পারে: উপদেষ্টা সাখাওয়াত
সেনাকুঞ্জে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে খালেদা জিয়ার শুভেচ্ছা বিনিময়
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে আহত ৫ জনকে রোবটিক হাত উপহার
সেনাকুঞ্জের পথে খালেদা জিয়া
সুযোগ পেলে শেখ হাসিনার পক্ষে মামলায় লড়ব: জেড আই খান পান্না
নির্বাচন কমিশন গঠন, সিইসি হলেন অবসরপ্রাপ্ত সচিব নাসির উদ্দীন
ডিএনএ টেস্টের ফলাফল: ভিনিসিয়ুসের পূর্বপুরুষ ছিলেন ক্যামেরুনের
জামিন পেলেন সাংবাদিক শফিক রেহমান
বিএনপি ছেড়ে আওয়ামী লীগে আসা সেই শাহজাহান ওমর গ্রেপ্তার
মিরপুর ও মহাখালীতে অটোরিকশা চালকদের সেনাবাহিনীর ধাওয়া
‘শেখ হাসিনা এখনও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী’, এমন কথা বলেননি ট্রাম্প
লেবাননে ৮ শতাধিক ইসরায়েলি সেনা নিহত
ভারতে সাজাভোগ শেষে দেশে ফিরল ২৪ বাংলাদেশি কিশোর-কিশোরী
ঢাকার বিভিন্ন পয়েন্টে অবরোধ করে ব্যাটারিচালিত রিকশাচালকদের বিক্ষোভ
গাজায় ইসরায়েলের হামলায় আরও ৮৮ ফিলিস্তিনি নিহত
সাবেক এমপি শাহজাহান ওমরের বাড়িতে হামলা-ভাঙচুর