রবিবার, ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ | ১০ ফাল্গুন ১৪৩১
Dhaka Prokash

উচ্চশিক্ষা, বেকারত্ব, মানসিক সমস্যা ও আত্মহত্যা

বিশ্ব মানসিক স্বাস্থ্য দিবস পালনকে সামনে রেখে আঁচল ফাউন্ডেশন ‘মানসিক স্বাস্থ্যের উপর অ্যাকাডেমিক চাপের প্রভাব এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের আত্মহত্যার প্রবণতা শীর্ষক এক জরিপ প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।

জরিপে ৩৮টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়, ৪৭টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় ও মাদ্রাসায় অধ্যয়নরত এক হাজার ৬৪০ জন শিক্ষার্থীর উপর সমীক্ষা চালানো হয়। এদের মধ্যে পুরুষ শিক্ষার্থী ৪৩.৯ শতাংশ ও নারী শিক্ষার্থী ৫৬.১ শতাংশ।

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ধরন বিবেচনায় জরিয়ে মোট অংশগ্রহণকারীর মধ্যে ৬৭.৬৮ শতাংশ শিক্ষার্থী পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের, ২৩.৪১ শতাংশ শিক্ষার্থী বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের এবং ২.২৬ শতাংশ শিক্ষার্থী অন্যান্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শিক্ষার্থীদের মানসিক ঝুঁকি বাড়ছে এবং আত্মহত্যার প্রবণাতও খুব বেড়েছে। ৫৭ দশমিক ৯৯ শতাংশ শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে অতিরিক্ত ভয় ও উদ্বেগ তাদের জীবনকে প্রভাবিত করছে। ৮০ দশমিক ৭৯ শতাংশ শিক্ষার্থী মন খারাপ হওয়া হঠাৎ ক্লান্তি আসাসহ বিভিন্ন কারণে ভুগছেন। মোবাইল ল্যাপটপ ব্যবহারের আসক্তি নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছ ৭০ দশমিক ৭৩ শতাংশ শিক্ষার্থীর উপর। অতিরিক্ত ঘুম ও নিন্দ্রাহীনতায় ভুগছেন ৭১ দশমিক ৭১ শতাংশ শিক্ষার্থী। ৪৭ দশমিক ৫০ শতাংশ শিক্ষার্থীর অভিমত তারা হঠাৎ চুপচাপ হয়ে গেছেন বা নিজেকে গুটিছে নিয়েছেন। আত্মহত্যার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়েছেন ২ দশমিক ৪৪ শতাংশ। আর আত্মহত্যার উপকরণ যোগাড় করেও শেষ মুহূর্তে পিছিয়ে এসেছেন ৫ শতাংশ।

করোনা মহামারির কারণে বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়েছে বৈশ্বিক জনস্বাস্থ্য ও অর্থনীতি। দেশের কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা করোনা-পরবর্তী সময়ে মানসিক সমস্যায় ভুগছেন। আগের তুলনায় ৪৭ শতাংশ শিক্ষার্থীর পড়াশোনায় মনোযোগ কমে গেছে। শিক্ষার্থীদের ৭৫ শতাংশের বেশি মানসিক সমস্যায় ভুগছেন, যাদের অনেকেই বেছে নিচ্ছেন আত্মহত্যার মতো চরমতম পথ, যেটি উদ্বেগজনক একটি বিষয়।

প্রতিবেদনটিতে আরও বলা হয়, ৩৪ দশমিক ১৫ শতাংশ শিক্ষার্থীর পড়াশোনা-সংক্রান্ত সমস্যা থেকে বাঁচতে আত্মহত্যার পরিকল্পনা করছিলেন। এতে দেখা যায়, ৪৬ দশমিক ৬৫ শতাংশ শিক্ষার্থীর করোনার আগের তুলনায় পড়াশোনার প্রতি মনোযোগ কমে গেছে। বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে ১০ শতাংশের বেশি ঘন ঘন পরীক্ষার সম্মুখীন হয়ে বিষয়টির সঙ্গে মানিয়ে নিতে পারছেন না। সেমিস্টারের সময়ের চেয়ে পাঠ্যক্রমের আধিক্য সমস্যার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে ১২ দশমিক ৪৪ শতাংশ শিক্ষার্থীর ক্ষেত্রে। ২১ শতাংশ শিক্ষার্থী বড় কোর্স শেষ করার ফলে তা বোধগম্যের বাইরে থেকে যাচ্ছে।

বাংলাদেশে ২০২০ সালের মার্চে শুরু হওয়া কোভিড মহামারির কারণে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয় সেশনজট ও পরীক্ষার ফলাফল নিয়ে হতাশাকে শিক্ষার্থীদের মানসিক সমস্যার অন্যতম কারণ হিসেবে দেখছেন এ সংশ্লিষ্ট গবেষকরা। এ ছাড়া প্রাতিষ্ঠানিক চাপেও পড়াশুনায় অনীহা তৈরি, অভিভাবকদের চাপ, কোভিডে মনস্তাত্ত্বিক পরিবর্তনকে শিক্ষার্থীদের মানসিক সমস্যার কারণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।

‘করোনা পরবর্তী বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের মানসিক স্বাস্থ্যের উপর একাডেমিক চাপের প্রভাব ও তাদের আত্মহত্যার প্রবণতা’ শিরোনামের ওই সমীক্ষার প্রতিবেদন তুলে ধরেন আঁচল ফাউন্ডেশনের গবেষক ও নর্থসাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক আব্দুল ওহাব। জরিপে মানসিক সুস্থতা বিষয়ক বেশ কয়েকটি নিয়ামক নিয়ে শিক্ষার্থীদের কাছে জানতে চাওয়া হলে উত্তরে আসে কিছু ‘উদ্বেগজনক’ তথ্য। মোট অংশগ্রহণকারীর মধ্যে ৫৮ শতাংশ শিক্ষার্থী জানিয়েছেন যে, কোভিড মহামারির পরবর্তী সময়ে তাদের নিজস্ব শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে অতিরিক্ত ভয় ও উদ্বেগে তারা জর্জরিত। পাশাপাশি দৈনন্দিন আচার-আচরণ ও ব্যবহারে পরিবর্তন এসেছে শিক্ষার্থীদের জীবনে। মন খারাপ হওয়া, হঠাৎ ক্লান্তিসহ নানা বিষয় শিক্ষাজীবনে প্রভাব ফেলেছে ৮১ শতাংশ শিক্ষার্থীর। আঁচল ফাউন্ডেশনের জরিপে আরও দেখা যায়, দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও বিভিন্ন পর্যায়ের ৬০ শতাংশের বেশি শিক্ষার্থী বিভিন্ন মেয়াদের সেশনজটে আটকে পড়েছেন। এতে দেশের প্রায় অর্ধেক শিক্ষার্থী ন্যূনতম এক বছর শিক্ষাজীবনে পিছিয়ে পড়েছেন। শেষে শিক্ষার্থীদের মানসিক উন্নয়নের জন্য আঁচল ফাইন্ডেশন বেশকিছু পরামর্শের কথাও উল্লেখ করে।

মানুষের মধ্যে করোনা পূর্ববর্তী সময়ের চেয়ে ২৫ শতাংশেরও বেশি উদ্বেগ ও হতাশা বৃদ্ধি পেয়েছে। মহামারির আগে বিশ্বব্যাপী আনুমানিক আটজনের মধ্যে একজন মানসিক ব্যাধি নিয়ে বসবাস করছিলেন। একই সময়ে মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য উপলব্ধ পরিষেবা, দক্ষতা, তহবিলের স্বল্পতা ও মধ্যম আয়ের দেশগুলোতে ব্যাপক সংকট তৈরি হয়েছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে বিশ্বব্যাপী প্রতি ৪০ সেকেন্ডে একজন ব্যক্তি আত্মহত্যা করেন। ভঙ্গুর মানসিক স্বাস্থ্যেই মূলত আত্মহত্যার জন্য দায়ী। মানসিক স্বাস্থ্যে ভাল থাকলে একজন মানুষ আত্মহত্যার দিকে পা বাড়ায় না। জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্যের ইনস্টিটিউটের এক জরিপ অনুযায়ী দেশে দুই কোটিরও বেশি মানুষ বিভিন্ন মানসিক রোগে ভুগছেন। শতাংশ হিসেবে এটি ১৬.৮। জরিপ মতে বর্তমানে দেশে ১৬.৫ কোটির বেশি মানুষের জন্য ২৭০ জন মনোরোগ বিশেষজ্ঞ আছেন। আর কাউন্সেলিংয়ের জন্য আছেন ২৫০ জন সাইকোলজিস্ট যা চাহিদার তুলনায় নিতান্তই অপ্রতুল।

শিক্ষার্থীদের আত্মহত্যার পেছনে অন্যান্য কারণের সঙ্গে পরীক্ষায় অকৃতকার্য হওয়া, পড়াশোনার চাপ, সেশনজট, অভিমান ইত্যাদি রয়েছে। গুরুতর কোনো মানসিক রোগ না থাকা সত্ত্বেও পরিকল্পনা বা দীর্ঘমেয়াদি আত্মহত্যার চিন্তা ছাড়াই কোনো সংকেট বা মানসিক চাপে হঠাৎ করেই ঝোঁকের বশে অনেকে আত্মহত্যা করে বা করার চেষ্টা চালায়। মানসিক চাপ, যেকোনো প্রত্যাখ্যান বা কোনো দুর্ঘটনায় খাপ খাইয়ে নেওয়ার দক্ষতার অভাবে এমনটি ঘটতে পারে। দীর্ঘ বিরতির পর শিক্ষাক্ষেত্রে পরিবর্তন আসায় ৭৩ দশমিক ৮৪ শতাংশ শিক্ষার্থীর আত্মবিশ্বাস আশঙ্কাজনক হারে কমেছে। শিক্ষার্থীদের মধ্যে শিক্ষাশেষে চাকরি পাওয়ার দুশ্চিন্তাও মাথা চাড়া দিয়ে উঠেছে। করোনায় স্বাস্থ্যগত ক্ষয়ক্ষতির পাশাপাশি দুনিয়াজুড়ে যে আর্থিকক্ষতির কারণ ঘটেছে তা অতুলনীয়। দেশের শিক্ষা বিভিন্ন কারণে দিন দিন রুগ্নদশায় পরিণত হচ্ছে। করোনার পরবর্তী ধাক্কা, সামাজিক নিরাপত্তাহীনতা, সর্বোপরি শিক্ষাব্যবস্থাপনা পুরোপুরি শিক্ষাবান্ধব নয়, আর তা করার জন্য দৃশ্যমান ও কার্যত কোনো কার্যকরী পদক্ষেপ দেখা যাচ্ছে না— যতটা না মুখে শোনা যাচ্ছে।

এতদিন নতুন কারিকুলাম নিয়ে বেশ তোড়জোর শোনা যাচ্ছিল, ইদানিং যেন একটু থিতিয়ে পড়েছে। মহা সমারোহে বলা হলো যে, বর্তমানের যুগের উপযোগী কারিকুলাম প্রণয়ন করতে হবে যাতে শিক্ষার্থীরা আনন্দের মাধ্যমে শিখবে এবং শিক্ষার্থীরা একবিংশ শতাব্দী চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সমর্থ অর্জন করবে, দেশপ্রেমিক হবে। এ যুগের শিক্ষার্থীরা কিন্তু একবিংশ শতাব্দীর চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার জন্য যে, দক্ষতা ও জ্ঞান অর্জন করা দরকার সেগুলো ক্লাসরুম থেকে নেওয়ার জন্য বসে নেই। তারা দিনরাত অনলাইনে যুক্ত থেকে এগুলো শিখে নিচ্ছে। উচ্চশিক্ষায় দরকার গবেষণা, দরকার বিশ্বায়নের শিক্ষা সেটির যে হাল তা দেখলে রীতিমতো অবাক হতে হয়। এখনো সব বিশ্ববিদ্যালয়গুলো লাঠিয়াল বাহিনীর দখলে, এ নিয়ে কার্যকরী কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে না। শিক্ষার্থীদের প্রকৃত জ্ঞানচর্চায় ও গবেষণায় নিয়ে আসা যাচ্ছে না। রাজনৈতিক পরিবেশের প্রভাব সামাজিক পরিবেশকে অস্থির করে তুলেছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান তো সমাজেরই অংশ। সামাজিক অস্থিরতা, দুর্নীতি, অশিক্ষা ও কুশিক্ষার বহিঃপ্রকাশ শিক্ষা ও শিক্ষাঙ্গনের উপর গিয়ে পড়ছে।

আমাদের তরুণ সমাজের হতাশার সবচেয়ে বড় কারণটি হচ্ছে দেশে চাকরির বাজারের সংকোচন। এ সব তরুণদের উদ্যোক্তা বানানোর কথা শোনা গেলেও বাস্তব তার বিপরীত। কেউ কেউ নিজ প্রচেষ্টায় ‘আউটসোর্সিং মার্কেটে ঢুকেছে তাও এখন বিদ্যুৎ বিভ্রাটের কারণে মারাত্মক ক্ষতির মুখে পড়েছে। তাই অধিকাংশ শিক্ষিত তরুণ বিসিএস পরীক্ষামুখী। এ নিয়ে অনেক সমালোচনাও হচ্ছে কারণ টেকনিক্যাল বিভাগের শিক্ষার্থী যাদের উপার্জন ভালই করার কথা, যারা দেশকে অন্যভাবে সেবা দিতে পারতেন তারাও ছুটছে বিসিএসের পেছনে। বিসিএসে না হলে আবার হতাশা। হতাশা যেন কাটছেই না। জনসংখ্যার লাগামহীন উর্ধ্বগতির একটা স্তরে এসে বাংলাদেশ একটা সুবিধাজনক স্তরে প্রবেশ করেছিল, সেটি হচ্ছে তরুণ সমাজ এখন সবচেয়ে বেশি। জনশুমারি ২০২২ এর তথ্য অনুযায়ী দেশে ১৯ শতাংশ তরুণ, ২৮ শতাংশ শিশু এবং মোট কর্মক্ষম মানুষ হচ্ছে ৬৫.৫১ শতাংশ। এই সংখ্যা আমাদের শক্তি হতে পারত কিন্তু তা না হয়ে দিন দিন দুশ্চিন্তাগ্রস্ততার মধ্যে পড়েছে দেশ। এই হতাশা তরুণ থেকে মধ্যবয়সী সবার মধ্যে। সরকার না পারছে জনসংখ্যা সেভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে, না পারছে জনসংখ্যাকে জনশক্তিতে রূপান্তরিত করতে। টেকসই উন্নয়নের জন্য জনশক্তির যে উন্নয়ন সেটি আমাদের উন্নয়ন সংজ্ঞাতে সেভাবে নেই।

এখন ধরে নেওয়া হয় যে, চাকরিতে গিয়ে শিখবে। আর এ কারণেই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের দিকে নজর কম। অনেকের ভাবনা— কোনো রকম একটি কাগজ বা সনদ যোগাড় করতে পারলেই হলো। শিক্ষা দীক্ষা যা কিছু দরকার সবকিছু চাকরিতে ঢুকে করবে। এই চিন্তা হলে তো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের গুরুত্ব কমে যায়, আর যাচ্ছেও তাই। বেসরকারি চাকরি পেতে হলে, আর পাওয়ার পর টিকে থাকতে হলে বর্তমান যুগের স্কীলগুলো অর্জন করতেই হবে। আর অ্যানালাইটিক্যাল রিজনিং অর্জন করা প্রয়োজন শিক্ষার্থীদের। পিপল, ইমেজ আর প্রফিট চক্রটি কিন্তু এখন বেসরকারি ও বিদেশি প্রতিষ্ঠানে একটি ব্রান্ডিং। যার অর্থ হচ্ছে একজন দক্ষ কর্মী কিন্তু তার প্রতিষ্ঠানের ব্রান্ড। বাইরে তার পরিচিতিই হচ্ছে প্রতিষ্ঠানের ব্রান্ড। আমাদের উচ্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কর্মীদের সেভাবে প্রস্তুত করা প্রয়োজন কিন্তু চাকরিক্ষেত্র নতুন এক বাঁধা— পাবলিক আর প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের তুলনা।

চাকরির জন্য যে সফট স্কিল প্রয়োজন সেটি কিন্তু কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ই সঠিকভাবে শেখায় না। অনেক শিক্ষার্থীই মেইল করতে পারে না, ইংরেজিতে দুর্বল অর্থাৎ ইংরেজি ব্যবহার করে নিজ সম্পর্কে বলা বা লেখায় অপারগ। মাত্র হাতেগোনা দু’একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় এ বিষয়গুলো নিয়ে ভাবতে শুরু করেছে এবং সে অনুযায়ী শিক্ষার্থীদের তৈরির চেষ্টা করছে। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের এদিকে ভ্রক্ষেপ নেই। সেখানে দলাদলি আর লাঠালাঠির সমস্যা মেটাতেই প্রশাসন ব্যস্ত। এতে ভবিষ্যতে যে আরও হতাশা বাড়বে সে বিষয়টিও কেউ ভেবে দেখছেন না।

লেখক: শিক্ষা বিশেষজ্ঞ ও গবেষক এবং সাবেক শিক্ষক, ক্যাডেট কলেজ, রাজউক কলেজ ও বাউবি

আরএ/

Header Ad
Header Ad

দুপুরের মধ্যে ১৪ জেলায় বজ্রবৃষ্টির আভাস  

ছবিঃ সংগৃহীত

দেশের ১৪ জেলার ওপর দিয়ে ৬০ কিলোমিটার বেগে ঝড়ের সঙ্গে বজ্রসহ বৃষ্টির আভাস দিয়েছে আবহাওয়া অধিদফতর।

রোববার (২৩ ফেব্রুয়ারি) দুপুর ১টা পর্যন্ত দেশের অভ্যন্তরীণ নদীবন্দর সমূহের জন্য দেওয়া এক পূর্বাভাসে এ তথ্য জানানো হয়।

এতে বলা হয়েছে, রাজশাহী, পাবনা, বগুড়া, টাঙ্গাইল, ঢাকা, ফরিদপুর, যশোর, কুষ্টিয়া, খুলনা, বরিশাল, পটুয়াখালী, কুমিল্লা, নোয়াখালী এবং চট্টগ্রাম অঞ্চলের ওপর দিয়ে পশ্চিম/উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে ঘণ্টায় ৪৫ থেকে ৬০ কিলোমিটার বেগে অস্থায়ীভাবে দমকা অথবা ঝোড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে।

এসব এলাকার নদীবন্দর সমূহকে ১ নম্বর সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।

Header Ad
Header Ad

সারা দেশে নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে যা জানালো র‍্যাব  

ছবিঃ সংগৃহীত

সাম্প্রতিক সময়ে দেশব্যাপী চুরি, ছিনতাই, খুন ও ডাকাতি প্রতিরোধে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। অপরাধ দমনে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে র‌্যাবও দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে অভিযান পরিচালনা করছে বলে জানান, র‍্যাব মহাপরিচালক অতিরিক্ত আইজিপি এ কে এম শহিদুর রহমান।

শনিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) দিনগত রাত ২টার দিকে রাজধানীর যাত্রাবাড়ীর মাতুয়াইলে র‍্যাবের টহল ও চেকপোস্ট পরিদর্শন শেষে তিনি এসব কথা বলেন।

এসময় র‍্যাব মহাপরিচালক আরও বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে সারাদেশের বিভিন্ন স্থানে কতিপয় দুষ্কৃতকারী ও স্বার্থান্বেষী মহল হামলা ও নাশকতার মাধ্যমে দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতি করে জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টির অপচেষ্টা চালাচ্ছে। দেশের বিভিন্ন স্থানে চুরি, ছিনতাই, ডাকাতি, চাঁদাবাজিসহ সাধারণ মানুষের ওপর নৃশংস কায়দায় হামলা ও আক্রমণ চালাচ্ছে। এসব অপরাধ দমনে অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে র‌্যাব ফোর্সেসও দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে অভিযান পরিচালনা করছে।

তিনি বলেন, এরইমধ্যে র‌্যাবের সব ব্যাটালিয়ন তাদের নিজস্ব দায়িত্বপূর্ণ এলাকায় রোবাস্ট প্যাট্রোলিং পরিচালনা করছে। ঝুঁকিপূর্ণ ও গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বিরতিহীনভাবে অতিরিক্ত টহল মোতায়েনের মাধ্যমে কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে।

র‍্যাব মহাপরিচালক বলেন, ব্যাটালিয়নগুলোতে নিজস্ব কন্ট্রোল রুমের মাধ্যমে অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীদের সঙ্গে সমন্বয় সাধন করে ঢাকাসহ সারাদেশের নিরাপত্তা ব্যবস্থা সার্বক্ষণিক মনিটরিং করা হচ্ছে। দেশব্যাপী বিভিন্ন জায়গায় অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে সমন্বয় করে চেকপোস্ট স্থাপন করে তল্লাশির মাধ্যমে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। পাশাপাশি যে কোনো উদ্ভূত পরিস্থিতির জন্য র‌্যাব বোম্ব ডিসপোজাল ইউনিট ও ডগ স্কোয়াড সার্বক্ষণিক প্রস্তুত রাখা হয়েছে। যে কোনো উদ্ভূত পরিস্থিতি মোকাবিলায় সব মেট্রোপলিটন শহর, জেলা শহর ও উপজেলা পর্যায়ে গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে চেকপোস্ট স্থাপন, পর্যাপ্ত সংখ্যক টহল মোতায়েন এবং সাদা পোশাকে গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ানো হয়েছে বলেও জানান মহাপরিচালক।

তিনি বলেন, সব মেট্রোপলিটন শহর ও গুরুত্বপূর্ণ জেলা শহরগুলোতে যে কোনো পরিস্থিতি মোকাবিলায় সার্বক্ষণিক প্রয়োজনীয় সংখ্যক ফোর্স রিজার্ভ রাখা হয়েছে। গত ১০ ফেব্রুয়ারি থেকে এখন পর্যন্ত রাজধানী থেকে ৪০ জন, ময়মনসিংহে ২৫ জন, রাজশাহী থেকে ২৪ জন, সিলেট থেকে ১৭ জন, নারায়ণগঞ্জ থেকে ১৫ জনসহ মোট ১৮০ জন আসামিকে গ্রেফতার এবং অস্ত্র ও গুলি উদ্ধার করেছে র‌্যাব। এছাড়া সারাদেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখাসহ যেকোনো ধরনের নাশকতা ও সহিংসতা প্রতিরোধে র‌্যাবের গোয়েন্দা নজরদারিসহ বিভিন্ন কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে বলেও জানান র‍্যাব মহাপরিচালক অতিরিক্ত আইজিপি এ কে এম শহিদুর রহমান।

র‍্যাব ডিজি আরও বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে রাজধানীর মোহাম্মদপুর ও আদাবর এলাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে বেশ কয়েকটি সন্ত্রাসী গ্রুপের সদস্যদের খুন, হত্যাচেষ্টা, ছিনতাই, চাঁদাবাজি, মাদক কারবারি এবং চাঞ্চল্যকর সৃষ্টিকারী বিভিন্ন ধরনের সন্ত্রাসী কার্যক্রম লক্ষ্য করা যায়। এসব গ্রুপের সন্ত্রাসীরা নিজেদের মধ্যে আধিপত্য বিস্তারের লক্ষ্যে এক গ্রুপ অপর গ্রুপের সঙ্গে সংঘাতে জড়িয়ে মারামারি ও ধারালো অস্ত্র দিয়ে জখম করার প্রবণতাও লক্ষ্য করা যায়। এর মধ্যে উল্লেখ্যযোগ্য মোহাম্মদপুরের আলোচিত শীর্ষ সন্ত্রাসী কবজি কাটা গ্রুপের প্রধান আনোয়ার ওরফে শুটার আনোয়ার ওরফে কবজি কাটা আনোয়ার, জেনেভা ক্যাম্পের শীর্ষ সন্ত্রাসী বুনিয়া সোহেল এবং জেনেভা ক্যাম্পের শীর্ষ মাদক কারবারি সেলিম আশরাফি ওরফে চুয়া সেলিমসহ তাদের সহযোগীদের গ্রেফতার করেছে র‌্যাব।

Header Ad
Header Ad

এ বছরই মধ্যে তারেক রহমান প্রধানমন্ত্রী হবেন : দুদু  

ছবিঃ সংগৃহীত

বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু বলেছেন, জিয়া তো এমনি এমনি রাষ্ট্রপতি হননি, খালেদা জিয়াও তো এমনি এমনি প্রধানমন্ত্রী হননি। তেমনি তারেক সাহেবের ১৭ বছরের চেষ্টা, উদ্যোগ ও সংগ্রাম-সে তো প্রধানমন্ত্রী হবেই। ইলেকশন হবে। এই বছরের মধ্যে তারেক রহমান প্রধানমন্ত্রী হবেন।

শনিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) বিকালে পঞ্চগড় পৌরসভার সামনের মাঠে জেলা বিএনপি আয়োজিত নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্যবৃদ্ধি সহনীয় পর্যায়ে রাখা, অবনতিশীল আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি, দ্রুত গণতান্ত্রিক যাত্রাপথে উত্তরণের জন্য নির্বাচনী রোডম্যাপ ঘোষণাসহ রাষ্ট্রে পতিত ফ্যাসিবাদীদের নানা চক্রান্তের অপচেষ্টা মোকাবেলাসহ বিভিন্ন জনদাবিতে জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।

তিনি আরও বলেন, শেখ পরিবার চোরের পরিবার। শেখ মুজিব ৪০ হাজার বিরোধীদলীয় নেতাকর্মীকে রক্ষিবাহিনী দিয়ে হত্যা করেছিল। একদল করেছিল। ১৭ বছর পর এই বছরের মধ্যে নির্বাচন দিতে বাধ্য হবে সরকার। বিএনপির খেল এখনও দেখেননি। কয়েকটা জনসভা শুরু করেছি।

ড. ইউনূসকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, ভাই আপনি ভাল লোক। একটা মর্যাদাশীল লোক। জ্ঞানীগুণী মানুষ। দেশে বিদেশে আপনার সুনাম আছে। এদের পাল্লায় পড়িয়েন না। বিএনপিকে রাস্তায় নামাইয়েন না। যদি একবার রাস্তায় নামান-ফুলের মালা দিয়ে আপনাকে বরণ করেছি, ফুলের মালা দিয়েই আপনাকে বিদায় করতে চাই।

জেলা বিএনপির আহ্বায়ক জাহিরুল ইসলাম কাচ্চুর সভাপতিত্বে জনসভায় প্রধান বক্তা ছিলেন কেন্দ্রীয় বিএনপির পল্লী উন্নয়ন বিষয়ক সম্পাদক ও জেলা বিএনপির সদস্য সচিব ফরহাদ হোসেন আজাদ। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন কেন্দ্রীয় বিএনপির আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার নওশাদ জমির ও বিএনপির রংপুর বিভাগের সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যাপক আমিনুল ইসলাম। বক্তব্য দেন জেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক ও পৌর বিএনপির আহবায়ক তৌহিদুল ইসলাম, সাবেক এমপি অ্যাডভোকেট রীনা পারভীন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও পিপি অ্যাডভোকেট আদম সুফি, যুগ্ন আহবায়ক ও যুবদলের সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট মির্জা নাজমুল ইসলাম কাজল, যুগ্ম আহবায়ক এম এ মজিদ, বিএনপি নেতা ইউনুস শেখ প্রমুখ। সমাবেশে জেলা, পাঁচ উপজেলা, তিন পৌরসভাসহ বিভিন্ন ইউনিটের বিএনপিসহ সকল অঙ্গ ও সহযোগি সংগঠনের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

 

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

দুপুরের মধ্যে ১৪ জেলায় বজ্রবৃষ্টির আভাস  
সারা দেশে নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে যা জানালো র‍্যাব  
এ বছরই মধ্যে তারেক রহমান প্রধানমন্ত্রী হবেন : দুদু  
জিম্মিদের ফেরত পেয়েও ফিলিস্তিনিদের মুক্তি দিল না ইসরাইল  
জশ ইংলিসের সেঞ্চুরিতে রেকর্ড গড়ে ইংল্যান্ডকে হারাল অস্ট্রেলিয়া
১৫ বছর দলীয় বিবেচনায় অনেক ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা বানানো হয়েছে: উপদেষ্টা ফারুক
দিনাজপুরের বিরামপুরে ৮ জুয়াড়ি গ্রেফতার
চীনে নতুন করোনা ভাইরাসের আবির্ভাব, আবারও মহামারির শঙ্কা
নওগাঁ জেলা প্রেস ক্লাবের সভাপতি রায়হান, সম্পাদক বেলায়েত
শহীদদের শ্রদ্ধা জানাতে ফুল আনতে গিয়ে ধর্ষণের শিকার চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রী
বিএনপি ক্ষমতায় গেলে প্রত্যেক শ্রমিকের অধিকার প্রতিষ্ঠা করবে: মঈন খান
জামায়াত দাবি করে ২১ শে ফেব্রুয়ারির সমস্ত কৃতিত্ব তাদের: রনি
যুবদল নেতাকে কুপিয়ে জখম, মোটরসাইকেল পুড়িয়ে আ.লীগ নেতাকে পুলিশে সোপর্দ
দীঘি নয়, ‘টগর’ সিনেমায় নায়িকা হচ্ছেন পূজা চেরী
নারী গোয়েন্দার প্রেমের ফাঁদে পড়ে ভারতের গোপন তথ্য ফাঁস (ভিডিও)
নির্বাচনের আগেই জুলাই হত্যাকাণ্ডের বিচারের দাবি নিহতদের পরিবারের
চলন্ত বাসে ডাকাতি-যৌন নিপীড়ন: মির্জাপুর থানার এএসআই বরখাস্ত
ছাত্রদের নতুন দলে যোগ দিচ্ছেন সশস্ত্র বাহিনীর সাবেক সদস্যরা
চলন্ত বাসে ডাকাতির সময় ধর্ষণের ঘটনা ঘটেনি: পুলিশ সুপার
ময়মনসিংহে দেড় শতাধিক বিড়ালের মিলনমেলা