বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪ | ৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
Dhaka Prokash
Header Ad

খাদ্য নিরাপত্তা: বাংলাদেশের প্রস্তুতি

চালের দাম হ্রাস-বৃদ্ধি নিয়ে আলোচনা আর সমালোচনা হাত ধরাধরি করে চলে। একটি পক্ষ মনে করে যে করেই হোক চালের দাম কম হতে হবে। আর একটি পক্ষ মনে করে সব কিছুর দাম বাড়লে চালের দামও বাড়া উচিত। প্রথম পক্ষের যুক্তি চাল এ দেশের মানুষের প্রধান খাবার। প্রয়োজনে প্রণোদনা দিয়ে হলেও তা ভোক্তার কাছে কম দামে পৌঁছে দিতে হবে। দ্বিতীয় পক্ষের যুক্তি কৃষক যদি ধান চাষাবাদের মাধ্যমে লাভবান না হন তাহলে কৃষক চাষাবাদ কমিয়ে বিকল্প চাষাবাদে ঝুঁকবে।  ফলে ধানের উৎপাদন কমে যাবে আমাদের দেশের চাল আমদানি বা পরনির্ভরতা বাড়বে। দুই পক্ষের যুক্তিগুলোকে সমন্বয় করে সরকার পরিকল্পনা সাজায় কীভাবে কৃষকের ন্যা য্যমূল্য নিশ্চিত করা যায় আবার ভোক্তাকেও স্বস্তি দেওয়া যায়।

সাম্প্রতিক সময়ে আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে দেশের বাজারেও চালের মূল্য প্রতিনিয়ত বেড়েছে। কারণ, হিসেবে বিশ্লেষকরা বলছেন সারা পৃথিবীজুড়ে জলবায়ুর বিরূপ প্রভাব ও যুদ্ধাবস্থায় উৎপাদন কমে যাওয়া ও সরবরাহ চেইন সঠিকভাবে কাজ না করা। এ অবস্থায় সকলের মাঝে ভীতি কাজ করছে। চাল উৎপাদনকারী দেশ দাম বাড়িয়ে দিচ্ছে।কোনো কোনো দেশ আবার অতিরিক্ত মজুতের পথে হাটছে। ফলে নিত্য ভোগ্যপণ্যের বাজারে অস্থিরতা বেড়েই চলেছে।  সম্প্রতি বিশ্ব অর্থনীতির সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে সতর্কবার্তা উচ্চারণ করেছে জাতিসংঘ।

আন্তর্জাতিক সংস্থাটি বলছে, বিশ্ব ‘মন্দার দ্বারপ্রান্তে’। এশিয়ার উন্নয়নশীল দেশগুলো মন্দার ক্ষতির সম্মুখীন হতে পারে। জাতিসংঘ বাণিজ্য ও উন্নয়নবিষয়ক সংস্থা (আঙ্কটাড) এক প্রতিবেদনে বলেছে, উন্নত অর্থনীতির দেশগুলোর মুদ্রা ও রাজস্ব নীতি, সুদের হার বাড়ানোসহ নানা কারণ বিশ্বকে একটি বৈশ্বিক মন্দা ও স্থবিরতার দিকে ঠেলে দিতে পারে। এর আগে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল ও বিশ্বব্যাংক কয়েক মাস ধরেই বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক মন্দার আশঙ্কা প্রকাশ করে আসছে। সম্ভাব্য দুর্ভিক্ষের ব্যাপারে সতর্ক করে দিয়েছে বিশ্ব খাদ্য সংস্থা ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাও। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সর্বশেষ সংবাদ সম্মেলনেও গুরুত্ব পেয়েছে এ প্রসঙ্গ। তিনিও এ বিষয়ে দেশবাসীকে সতর্ক থাকতে বলেছেন।

খাদ্য বিশেষজ্ঞরা মনে করেন দুই বছরের করোনা মহামারির পর ইউক্রেন যুদ্ধের জের ধরেই বিশ্বে এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। এর প্রভাবে বাংলাদেশের সামনে কয়েকটি বিষয় চ্যালেঞ্জ হিসেবে আসবে। আর তাই মন্দা মোকাবিলায় খাদ্য ও জ্বালানি নিরাপত্তাকে বেশি গুরুত্ব দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। বর্তমান বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে বিশ্বের প্রায় সব দেশেই খাদ্য নিরাপত্তার ঝুঁকির মাত্রা ভয়ানকভাবে বেড়ে গেছে। এ কারণে বিশ্বব্যাপী অভুক্ত মানুষের সংখ্যা বেড়ছে। একইসঙ্গে আগামী দুই বছর বিশ্বের প্রায় সব দেশে দারিদ্র্যের সংখ্যাও বেড়ে যাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। খাদ্য দুষ্পাপ্য হওয়ায় অপুষ্টিজনিত রোগব্যাধি যেমন বাড়বে, তেমনি মানুষের মধ্যে পুষ্টিহীনতাও বাড়বে।

দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে আফগানিস্তান, পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কা খাদ্য নিরাপত্তার বড় ঝুঁকিতে পড়েছে। তবে এই ঝুঁকিতে বাংলাদেশ নেই। কিন্তু বাংলাদেশসহ অনেক দেশে খাদ্য মূল্যস্ফীতির হার বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। বিশ্বব্যাংকের প্রকাশিত ‘হালনাগাদ খাদ্য নিরাপত্তা সূচক’ প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য পাওয়া গেছে। সাম্প্রতিক বৈশ্বিক পরিস্থিতি নিয়ে এ প্রতিবেদন প্রকাশ করে সংস্থাটি। এতে খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কোনো দেশ কী পদক্ষেপ নিচ্ছে সেগুলোও তুলে ধরেছে। ঝুঁকির মুখে থাকা দেশগুলো যাতে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নিতে পারে সেজন্য তারা কিছু সুপারিশও করেছে প্রতিবেদনে।

ইউক্রেন ও রাশিয়ার মধ্যে যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশও গম আমদানিতে সংকটে পড়ে। এরই মধ্যে গত মে মাসে বাংলাদশে গমের সবচেয়ে বড় সরবরাহকারী দেশ ভারত রপ্তানি বন্ধ করে দিলে সংকট আরও ঘনীভূত হয়।  এমন পরিস্থিতিতে জিটুজি পদ্ধতিতে রাশিয়া থেকে পাঁচ লাখ টন গম আমদানির সিদ্ধান্ত নেয় বাংলাদেশ। বাংলাদেশের বন্দরে ইতোমধ্যে প্রথম চালানের ৫০ হাজার টন গম এসে পৌঁছেছে। পর্যায়ক্রমে দেশে অবশিষ্ট গম পৌঁছাবে।

এ ছাড়া, ভিয়েতনাম থেকে ২ লাখ ৩০ হাজার টন চাল, মিয়ানমার থেকে ২ লাখ টন চাল এবং ভারত থেকে এক লাখ টন চাল কেনা হচ্ছে। ভিয়েতনাম, ভারত ও রাশিয়া থেকে চাল আমদানিতে ইতোমধ্যে ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির অনুমোদন দিয়েছে। ইতোমধ্যে এলসি খোলা হয়েছে। আশা করা হচ্ছে আমদানি করা চালও সময় মতো দেশে চলে আসবে। এই গম ও চাল কিন্তু আমাদের এখনই প্রয়োজন হচ্ছে না। আগাম সতর্কতা হিসাবেই এটা সংগ্রহ করে মজুত শক্তিশালী করা হচ্ছে।

বিগত বোরো মৌসুমে ১১ লাখ ২১ হাজার ৯১০ টন সিদ্ধ চাল এবং ৫৫ হাজার ২০৮ টন আতপ চাল সংগ্রহ হয়েছে যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি। তবে ধান কেনায় সরকার লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে পারেনি। ৬ লাখ টন ধান কেনার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারিত থাকলেও কেনা হয়েছে ২ লাখ ৬৮ হাজার ২৪৮ টন। তবে এতে কৃষকের লাভ হয়েছে। বাজারে ধানের মূল্য বেশি হওয়ায় সরকারী পর্যায়ে ধান সংগ্রহ কম হলেও সরকারের একটি উদ্দেশ্য সফল হয়েছে। সেটা হচ্ছে কৃষকের ধানের ন্যায্যমূল্য প্রাপ্তি। সরকার ধানের দাম নির্ধারণ করে এবং বাজারে ক্রেতা হিসেবে থাকায় ফড়িয়া শ্রেণি কৃষককে ঠকাতে পারেনি। তা ছাড়া, সরকারি খাদ্য দামে মজুতের পরিমাণও অন্যান্য বছরের তুলনায় এ বছর বেশি আছে। আগস্টের শুরুতে মোট মজুতের পরিমাণ ছিল প্রায় কুড়ি লাখ মেট্রিক টন।

দেশের প্রতিটি নাগরিকের জন্য নিরাপদ খাদ্য ও প্রয়োজনীয় পুষ্টি নিশ্চিত করা বর্তমান সরকারের একটি বড় চ্যালেঞ্জ। এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সরকার নানাবিধ কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। সরকারের নির্বাচনী ইশতেহারে পুষ্টি ও খাদ্য নিরাপত্তার বিষয়টি অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে এবং এটি গুরুত্বের সঙ্গে প্রতিপালন করা হচ্ছে। জলবায়ু পরিবর্তন এবং এর পাশাপাশি জনসংখ্যা বৃদ্ধি ও কৃষিজমি কমে যাওয়ায় সরকার খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধিকল্পে সারের একাধিকবার মূল্য হ্রাসে করেছে। একইসঙ্গে কৃষি ঋণ বিতরণ, গবেষণায় অগ্রাধিকার ও প্রণোদনা দেওয়ার ফলে খাদ্য উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণ হওয়ার পথে দেশ। জলবায়ু পরিবর্তন সমস্যা, ভৌগোলিক অবস্থান ও প্রাকৃতিক কারণে ঝুঁকিপূর্ণ দেশের মধ্যে বাংলাদেশ বিশ্বে ৬ষ্ঠ স্থানে। তাপমাত্রা ও মাটির লবণাক্ততা বৃদ্ধির ফলে দেশে উৎপাদন ব্যহত হচ্ছে। অতিবৃষ্টি, অনাবৃষ্টি, খরা ইত্যাদির কারণে শুধু কৃষিই নয়, মানুষের চিরচেনা স্বাভাবিক জীবনপ্রবাহই আজ ব্যহত। এদেশের দেশের ৪০ শতাংশ লোক কৃষির সঙ্গে সরাসরি জড়িত। তাই সমস্যার সরাসরি ভূক্তভোগীর সংখ্যাও এখানে বেশি।

ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধকে কেন্দ্র করে পরাশক্তিগুলোর নিষেধাজ্ঞা ও পাল্টা নিষেধাজ্ঞাকেই কারণে খাদ্য নিরাপত্তা হুমকরি মুখে। পরিস্থিতি মোকাবিলায় দেশের মানুষকে প্রতি ইঞ্চি জমিতে শস্য আবাদের পরামর্শ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সামনে আরও কঠিন সময় আসতে পারে জানিয়ে তিনি জনগণকে মিতব্যায়ী হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন । একইসঙ্গে আশ্বস্ত করে বলেছেন, বাংলাদেশের এই মুহূর্তে উদ্বিগ্ন হওয়ার কিছু নেই। বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভও ভালো যা দিয়ে পাঁচ মাসের আমদানি ব্যয় মেটানো যাবে।  মানুষের কষ্ট লাঘবে যা করা দরকার তার সব উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে বলেও জানিয়েছেন তিনি। দেশে খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রয়োজনে অতিরিক্ত খাদ্য আমদানি করার নির্দেশও দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

করোনার অভিঘাতের পর রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে সারাবিশ্বে খাবার ও জ্বালানির দাম বেড়েছে। বাড়তি মূল্যস্ফীতির কারণে অনেক দেশই হিমশিম খাচ্ছে। ডলারের দাম বেড়ে যাওয়ায় বিলাসী পণ্য আমদানি কমানোর পাশাপাশি বিদ্যুৎ উৎপাদনও কমাতে হয়েছে বাংলাদেশ সরকারকে। এই সংকটের মধ্যে নিত্যপণ্যের দাম যেন আরও বেশি অস্থির না হয়, সেজন্যই খাদ্য মজুত ঠিক রাখার উপর জোর দিচ্ছে সরকার। জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির প্রভাবে কাঁচাবাজারে প্রায় সব ধরনের সবজি, চালসহ বেশির ভাগ নিত্যপণ্যের দাম বেড়েছে।চালের দাম বৃদ্ধির জন্য আমাদের দেশে খুচরা বিক্রতারা পাইকারদের দোষ দেন।

আর পাইকারি বিক্রতেরা মিলারদের দোষারোপ করেন। চালের বাজারে কারসাজি রোধে মিলগেট ও পাইকারি ব্যবসায়ীদের দৈনিক দাম ঘোষণার জন্য ওয়েবসাইট তৈরির জন্য বলা হয়েছে। এক্ষেত্রে কোনো স্থানে কে কত দামে চাল ক্রয়-বিক্রয় করছেন তা সহজেই জানা যাবে। এখানে একটি বিষয় উল্লেখ করা প্রয়োজন, সারা বিশ্বে চাল ও গমের মূল্য ইচ্ছা করলে যে কোনো প্রান্তে বসে তা জানার সুযোগ আছে। কিন্তু আমাদের দেশের চাল ক্রয় বিক্রয়ের মূল্যের সঠিক তথ্য গোপন করা হয়। উদ্দেশ্য থাকে অতি মুনাফা।

পাবলিক ফুড ডিস্ট্রিবিউশন সিস্টেমের (পিএফডিএস) আওতায় খোলা বাজারে খাদ্যশস্য বিক্রি একটি গুরুত্বপূর্ণ কর্মসূচি। খাদ্যশস্যের বাজার মূল্যের ঊর্ধ্বগতির প্রবণতা রোধ করে নিম্ন আয়ের জনগোষ্ঠীকে মূল্য সহায়তা দেওয়া এবং বাজার দর স্থিতিশীল রাখার লক্ষ্যে ওএমএস কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়। চালের বাজার নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে এক যোগে ওএমএস এবং খাদ্যবন্ধব কর্মসূচি হাতে নেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া, টিসিবির ফ্যামিলি কার্ডের মাধ্যমে মাসে ১০ কেজি করে চাল দেওয়া হচ্ছে। ওএমএস কর্মসূচির মাধ্যমে প্রতিদিন দেশের বিভিন্ন প্রান্তে মোট ৪ হাজার টনের বেশি চাল বিক্রি করা হচ্ছে।

১ সেপ্টেম্বর থেকে দেশের বিভিন্ন শহরে এক যোগে ২৩৭৩টি ডিলারের মাধ্যমে ওএমএস-এর কার্যক্রম চলছে। প্রতি ডিলার দিনে দুই টন করে চাল বরাদ্দ পাবেন। একজন ডিলার দিনে ৪০০ পরিবারের কাছে এই চাল বিক্রি করবেন। এতে দিনে মোট ১৬ লাখ ১০ হাজার ৪০০ পরিবার ৩০ টাকা কেজি দরে ৫ কেজি করে চাল কিনতে পারছেন এই কর্মসূচির মাধ্যমে। এই কর্মসূচির আওতায় দিনে মোট ৪ হাজার ৭শত ৬৫ মেট্রিক টন চাল খোলাবাজারে বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া, খাদ্যবন্ধব কর্মসূচির আওতায় সারাদেশে মোট ৫০ লাখ পরিবার সুবিধা পাচ্ছেন। দেশের ৫০ লাখ হতদরিদ্র পরিবারকে এই কর্মসূচির আওতায় আনা হয়েছে। ১৫ টাকা কেজি দরে তারা এই চাল সংগ্রহ করতে পারছেন। এই কর্মসূচির আওতায় এক পরিবার মাসে ৩০ কেজি করে চাল সংগ্রহ করতে পারবেন। খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির আওতায় বছরের কর্মাভাবকালীন ৫ মাস (মার্চ-এপ্রিল, সেপ্টেম্বর-নবেম্বর) পরিবার প্রতি ১৫ টাকা কেজি দরে মাসে ৩০ কেজি করে চাল দেওয়া হয়। অন্যদিকে ওএমএস কর্মসূচির আওতায় যে কেউ ডিলারের কাছ থেকে ৩০ টাকা কেজি দরে সর্বোচ্চ ৫ কেজি চাল কিনতে পারেন।

সরকারের এ কর্মসূচির দৃশ্যমান প্রভাব পড়েছে চালের বাজারে। তেলের দাম বৃদ্ধির ফলে অযৌক্তিকভাবে বাড়ানো চালের দাম নিয়ন্ত্রণে যেমন এসেছে যেমন তেমনি স্বস্তিতে আছে স্বল্প আয়ের মানুষ। এ ছাড়া, বাজারে ঊর্ধ্বগতির লাগাম টানতে আমদানি শুল্ক উঠিয়ে দিয়েছে সরকার। চাল আমদানিতে নিয়ন্ত্রণমূলক শুল্ক ২৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৫ শতাংশ করা হয়েছে। ফলে বাজারে চালের দাম কমতির দিকে। সব মিলিয়ে বৈশ্বিক খাদ্য সংকট মোকাবিলায় সরকারের প্রস্তুতি বেশ ভালো এতে সন্দেহ নেই।

লেখক: জনসংযোগ কর্মকর্তা, খাদ্য মন্ত্রণালয়

Header Ad

‘দেশের মানুষ এখনো কোনো রাজনৈতিক দলকেই বিশ্বাস করতে পারে না’

ছবি: সংগৃহীত

দেশের জনপ্রিয় নির্মাতা আশফাক নিপুন। কাজের পাশাপাশি সামাজিক মাধ্যমেও বেশ সরব তিনি। কথা বলেন নানা ইস্যু নিয়ে। সেই ধারাবাহিকতায় সরকার পতনের পর অন্তবর্তীকালীন সরকার গঠনেও বিভিন্ন সময় নিজের আকাঙ্ক্ষা, প্রত্যাশার কথা জানিয়েছেন। পাশাপাশি রাজনৈতিক দলগুলোর উদ্দেশ্যেও বিভিন্ন বার্তা দিয়েছেন। এবার এমনি একটি বার্তায় দেশের রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি জনগনের আস্থার বিষয়ে আক্ষেপ জানালেন এই নির্মাতা।

বুধবার (২০ নভেম্বর) আশফাক নিপুন তার ফেসবুকে দেওয়া এক পোস্টে লেখেন, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে সর্বস্তরের ছাত্র এবং সাধারণ মানুষ রাস্তায় নেমে এসেছিল, বাসায় বসে বসে দোয়া করেছিল, যার যা সামর্থ্য দিয়ে সহায়তা করেছিল। কারণ, তারা দেখেছিল লড়াইটা আওয়ামী ফ্যাসিস্ট শাসক বনাম সাধারণ ছাত্র-জনতার। এটাও অস্বীকার করার কোনো উপায় নাই যে এই আন্দোলন বেগবান করতে বিরোধী সকল দলের কর্মীদের ভূমিকা অনস্বীকার্য। তাদের সংগ্রামও গত দেড় দশকের। কিন্তু এটা যদি শুধুমাত্র রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যকার লড়াই হতো তাহলে সাধারণ মানুষ এই লড়াই থেকে দূরে থাকত। সেই প্রমাণ বিগত ১৫ বছরে আছে।

‘দেশের মানুষ এখনো কোনো রাজনৈতিক দলকেই বিশ্বাস করতে পারে না’

কারণ হিসেবে তিনি বলেন, দেশের সাধারণ মানুষ এখনো দেশের কোনো রাজনৈতিক দলকেই পুরোপুরি বিশ্বাস করতে পারে না। এটাই বাস্তবতা। এই বাস্তবতা মেনে সকল রাজনৈতিক দলগুলোর উচিত কীভাবে সাধারণ জনগণের ভেতর নিজের দলের প্রতি আস্থা তৈরি করা যায় সেই বিষয়ে নিরলস কাজ করা। এই আস্থা ক্ষমতায় গিয়ে অর্জন করা সম্ভব না। কারণ, সাধারণ মানুষ আজীবন এস্টাবলিশমেন্টের বিপক্ষে। এই আস্থা অর্জন করতে হয় ক্ষমতা বলয়ের বাইরে থেকেই।

নিপুন আরও লিখেন, অরাজনৈতিক সরকার দিয়ে দীর্ঘদিন দেশ চালানো যেমন কাজের কথা না ঠিক তেমনি রাজনৈতিক সরকার হতে চাওয়া সকল রাজনৈতিক দলগুলোর বোঝা উচিত মুক্তিযুদ্ধের পরে বাংলাদেশের ইতিহাসের সবচেয়ে বড় গণঅভ্যুত্থান সংগঠিত হয়েছে সকল প্রকার পূর্বানুমান (যেমন- বর্ষাকালে আন্দোলন হয় না, নির্বাচনের আগেই কেবল জোরেশোরে আন্দোলন হয়, ঘোষণা দিয়ে বিরোধী সকল পক্ষ আন্দোলনে শামিল না হলে সফল হয় না) অগ্রাহ্য করেই। সেটা সম্ভব হয়েছে সাধারণ মানুষের ন্যায্যতার আকাঙ্ক্ষা থেকেই।

সবশেষ এই নির্মাতা লিখেছেন, ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা সাধারণ মানুষের এই আকাঙ্ক্ষার দুই পয়সার দাম দেন নাই। সাধারণ মানুষের এই আকাঙ্ক্ষা, ইচ্ছা আর দেশপ্রেমকে পুঁজি করে অরাজনৈতিক এবং রাজনৈতিক যারাই রাজনীতি রাজনীতি খেলতে চাইবে, তাদের দশাও কোন একসময় যেন পলাতক শেখ হাসিনার মতো না হয়, সেই বিষয় নিশ্চিত করতে হবে তাদেরকেই।

Header Ad

‘বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে সশস্ত্র বাহিনীর অবদান চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে’: প্রধান উপদেষ্টা

ফাইল ছবি

জুলাই-আগস্টের বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে সশস্ত্র বাহিনীর অবদান চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) বিকেলে ঢাকা সেনানিবাসের সেনাকুঞ্জে সশস্ত্র বাহিনী দিবস ২০২৪ উপলক্ষে আয়োজিত সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে দেওয়া বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, জুলাই-আগস্ট ছাত্র জনতার বিপ্লবের মধ্যে দিয়ে আমরা নতুন বাংলাদেশের সূচনা করেছি। এ নতুন দেশে আমাদের দায়িত্ব সকল মানুষকে এক বৃহত্তর পরিবারের বন্ধনে আবদ্ধ করা। কেউ কারো উপরে না, আবার কেউ কারো নিচেও না, এই ধারণা আমরা আমাদের জাতীয় জীবনে প্রতিষ্ঠিত করতে চাই।

তিনি বলেন, নতুন বাংলাদেশ গড়ার যে সুযোগ ছাত্র-জনতার সাহস ও আত্মত্যাগের বিনিময়ে সম্প্রতি আমরা অর্জন করেছি, সেটাকে কাজে লাগিয়ে আমাদের সুন্দর ও সমৃদ্ধশালী ভবিষ্যৎ গড়তে হবে। বীর মুক্তিযোদ্ধা, শহিদ, আহত এবং জীবিত ছাত্র-জনতার কাছে আমরা প্রতিজ্ঞাবদ্ধ থাকতে চাই। যে সুযোগ তারা আমাদের দিয়েছে, তার মাধ্যমে আমাদের দেশকে পৃথিবীর সামনে একটি দৃষ্টান্ত স্থাপনকারী দেশে পরিণত করতে আমরা শপথ নিয়েছি।

তিনি আরও বলেন, ছাত্র আন্দোলনে জীবন উৎসর্গ করে যারা দেশ গঠনের সুযোগ করে দিয়েছে জাতি তাদের সারা জীবন শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করবে।

বক্তব্য শেষে সেনা কর্মকর্তাদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন প্রধান উপদেষ্টা। পরে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।

Header Ad

নওগাঁ শহরে শৃঙ্খলা ফেরাতে বিশেষ অভিযান শুরু

ছবি: সংগৃহীত

নওগাঁ শহরে যানযট নিরসন ও শৃঙ্খলা ফেরাতে জেলা প্রশাসন, পুলিশ, পৌর কর্তৃপক্ষ ও রিকশা মালিক-শ্রমিকদের যৌথ উদ্যোগে বিশেষ অভিযান শুরু হয়েছে। এতে শহরে শৃঙ্খলা ফিরবে বলে আশাবাদ ব্যাক্ত করেছেন স্থানীয় কর্মকর্তারা।

বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) অভিযানের উদ্বোধন করেন নওগাঁ পৌরসভার প্রশাসক ও স্থানীয় সরকারের উপ পরিচালক টি.এম.এ মমিন। এ সময় নওগাঁ জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট জিয়া উদ্দিন, নওগাঁ পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী সাজ্জাদ হোসেন, নওগাঁ জেলা ট্রাফিক পুলিশের পরিদর্শক আফজাল হোসেন ও অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন।

অভিযান শুরুর পর থেকেই শহরের বরুনকান্দি, মশরপুর, তাজের মোড় ও কালীতলাসহ মোট ৮ টি প্রবেশদ্বারে চেকপোস্ট বসানো হয়েছে। চেক পোষ্টগুলোতে ২ জন পুলিশ সদস্য, ২ জন ছাত্র সমন্বয়ক, ৪ জন রোভার স্কাউট সদস্য ও ২ জন রিকশা মালিক শ্রমিক প্রতিনিধিসহ মোট ১২ জন করে কাজ করছেন।

পৌর প্রশাসক জানান, নওগাঁ শহরে বৈধ যানবাহনের সংখ্যা ৪ হাজার। কিন্তু প্রতিদিন পার্শবতী বিভিন্ন এলাকা থেকে অন্তত ১০ হাজার রিকশা, ব্যাটারী চালিত অটো রিকশা ও ইজিবাইক শহরে প্রবেশ করে। এতে তীব্র যানযট ও জন মানুষের ভোগান্তি তৈরী হয়। এই দূর্ভোগ লাঘোবে জেলা প্রশাসক মুহাম্মদ আব্দুল আউয়াল ও পুলিশ সুপার কুতুব উদ্দিনের দিক নির্দেশনায় যানবাহন নিয়ন্ত্রনসহ বিশেষ অভিযানের সিদ্ধান্ত গ্রহন করা হয়। বৈধ চালকদের চিহ্নিত করতে তাদের মাঝে পরিধেয় বিশেষ ধরনের জ্যাকেট প্রদান করা হচ্ছে বলেও জানান তিনি।

নওগাঁর পুলিশ সুপার কুতুব উদ্দিন বলেন, নওগাঁ শহরের যানযট দীর্ঘদিনের সমস্যা। পরিকল্পিত ভাবে এই সমস্যা দূর করতে জেলা প্রশাসন ও পুলিশ বিভাগের উদ্যোগে পৌর কর্তৃপক্ষ ও রিকশা মালিক শ্রমিক নেতৃবৃন্দদের সমন্বয়ে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে স্থানীয় বাসিন্দা ও বিভিন্ন ষ্টেক হোল্ডারদের পরামর্শ নিয়ে একটি কর্ম পরিকল্পনা গ্রহক করা হয়েছে।

এ বিষয়ে নওগাঁর জেলা প্রশাসক মুহাম্মদ আব্দুল আউয়াল বলেন, অভিযান সফল ভাবে বাস্তবায়ন হলে শহরে শৃঙ্খলা ফিরে আসবে। জনগন এর সুফল পাবেন। সকলকে এই কার্যক্রমে সহযোগিতা প্রদানের আহবান জানান তিনি।

Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

‘দেশের মানুষ এখনো কোনো রাজনৈতিক দলকেই বিশ্বাস করতে পারে না’
‘বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে সশস্ত্র বাহিনীর অবদান চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে’: প্রধান উপদেষ্টা
নওগাঁ শহরে শৃঙ্খলা ফেরাতে বিশেষ অভিযান শুরু
২০২৬ সালের মাঝামাঝিতে নির্বাচন হতে পারে: উপদেষ্টা সাখাওয়াত
সেনাকুঞ্জে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে খালেদা জিয়ার শুভেচ্ছা বিনিময়
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে আহত ৫ জনকে রোবটিক হাত উপহার
সেনাকুঞ্জের পথে খালেদা জিয়া
সুযোগ পেলে শেখ হাসিনার পক্ষে মামলায় লড়ব: জেড আই খান পান্না
নির্বাচন কমিশন গঠন, সিইসি হলেন অবসরপ্রাপ্ত সচিব নাসির উদ্দীন
ডিএনএ টেস্টের ফলাফল: ভিনিসিয়ুসের পূর্বপুরুষ ছিলেন ক্যামেরুনের
জামিন পেলেন সাংবাদিক শফিক রেহমান
বিএনপি ছেড়ে আওয়ামী লীগে আসা সেই শাহজাহান ওমর গ্রেপ্তার
মিরপুর ও মহাখালীতে অটোরিকশা চালকদের সেনাবাহিনীর ধাওয়া
‘শেখ হাসিনা এখনও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী’, এমন কথা বলেননি ট্রাম্প
লেবাননে ৮ শতাধিক ইসরায়েলি সেনা নিহত
ভারতে সাজাভোগ শেষে দেশে ফিরল ২৪ বাংলাদেশি কিশোর-কিশোরী
ঢাকার বিভিন্ন পয়েন্টে অবরোধ করে ব্যাটারিচালিত রিকশাচালকদের বিক্ষোভ
গাজায় ইসরায়েলের হামলায় আরও ৮৮ ফিলিস্তিনি নিহত
সাবেক এমপি শাহজাহান ওমরের বাড়িতে হামলা-ভাঙচুর
১২ বছর পর সেনাকুঞ্জে যাচ্ছেন খালেদা জিয়া