সোমবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৫ | ১৫ বৈশাখ ১৪৩২
Dhaka Prokash

বাজারদর তদারকি জোরদারে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা কি বাস্তবায়ন হবে?

সম্প্রতি জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিত্যপণ্যের বাজারদর বিশেষ করে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে সংশ্লিষ্টদের বাজার তদারকি বা নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা আরও জোরদার করার নির্দেশ দিয়েছেন। দেশের শাসন ব্যবস্থায় এখন সবকিছুই প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্ঠিগোছর ছাড়া হয় না। যদিও প্রশাসনিক কর্মবণ্টন ব্যবস্থায় সবকিছু উল্লেখ আছে। তারপরও প্রধানমন্ত্রীর অনুশাসনের জন্য অপেক্ষা। করোনা, ইউত্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের কারণে সাম্প্রতিক সময়ে গোটা বিশ্বের অর্থনীতি ও বাজারব্যবস্থা টালমাটাল।

বাংলাদেশে সবকিছু বিশ্ব বাজারের উপর নির্ভরশীল না হলেও বাংলাদেশের পরিস্থিস্থিকেও আমাদের ব্যবসায়ীরা সে পর্যায়ে নিয়ে গেছে। ফলে নিত্যপণ্য মূল্যের ঊর্ধ্বগতির আগুনে পুড়তেই হচ্ছে সাধারণ মানুষকে। দেশের মানুষের খাদ্য নিরাপত্তার প্রধান উপকরণ চালের বাজার দীর্ঘ সময় ধরেই অস্থির। দরিদ্র ও সাধারণ মানুষের খাদ্য নিরাপত্তায় বহুল ব্যবহৃত আরেক খাদ্যপণ্য আটার একই অবস্থা। অধিকন্তু এ দুটি খাদ্যেপণ্যের দাম কোনোভাবেই কমছে না। বরং উল্টো বেড়েই চলেছে। ফলে প্রান্তিক ও সাধারণ আয়ের মানুষের খাদ্য নিরাপত্তা ও জীবন-জীবিকা নির্বাহ করা দিন দিন কঠিন হয়ে উঠছে। খাদ্য পণ্যের অস্থির মূল্য ঠেকাতে মানুষকে আহার কাটছাঁট করতে বাধ্য হচ্ছেন। অনেকে একবেলা খেয়ে চলছে। তারপরও স্বস্তির খবর হলো ধানের উৎপাদন ভালো হয়েছে। সরকার নিজে খাদ্য আমদানি করেছে, বেসরকারিভাবে আমদানির অনুমতি প্রদান করায় খাদ্য মজুতও যথেষ্ট পরিমাণে আছে ফলে কোনো ঘাটতি হওয়ার কথা নয়; তবু চাল কিনতে সাধারণ মানুষকে হিমশিম খেতে হচ্ছে। সংকটের নেপথ্যে উৎপাদন ও মজুত নিয়ে সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরের সঠিক তথ্যের ঘাটতি। হয়তো বাড়তি পরিসংখ্যান দেখাচ্ছে অথবা বাজারে সিন্ডিকেট করে এই অস্থিরতা দীর্ঘায়িত করা হচ্ছে।

করোনা লকডাউন পরবর্তী সময় থেকে আমাদের ব্যবসায়ীরা পরিবহন ভাড়া বৃদ্ধি, বিশেষ করে জাহাজ ভাড়া বৃদ্ধির অজুহাতে দাম বাড়ানো শুরু করেন। এরপর আসলো ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ ও আর্ন্তজাতিক বাজারে যুদ্ধের কারণে সবগুলো নিত্যপণ্যের দামবৃদ্ধির অজুহাত। আর এ অজুহাতে আরেক দফা দাম বাড়ানো শুরু হয়। সর্বশেষ পর্যায়ে ডলারের দামবৃদ্ধি এবং দেশে জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধির অজুহাতে দাম আরেক দফা বাড়ানো শুরু করেন। কিন্তু রাশিয়া-ইউক্রেন থেকে চাল, সয়াবিন ও গম কী পরিমান আমদানি করা হয় তার কোনো সুনির্দিষ্ট পরিসংখ্যান না দিলেও দোহাই দেবার সময় ওটাই সমানে আনেন। আবার লকডাউন পরবর্তী সময়ের জাহাজ ভাড়া এখন অর্ধেকে নেমে আসলেও পণ্যের দাম কমানোর পরিবর্তে নতুন অজুহাতে আরও বাড়ছে। ডলারের দাম ও কাঁচামালের দাম বৃদ্ধির অজুহাতে ১০ টাকার সাবান ১৫ টাকায়, ৫০ টাকার ডিটারজেন্ট পাউডার ১০০ টাকায় বাড়িয়ে দেওয়া কতটুকু যুক্তিসংগত তার সুনির্দিষ্ট জবাব কসমেটিক উৎপাদনকারী কোম্পানির প্রতিনিধিরা জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষন অধিদপ্তরের গণশুনানিতে দিতে ব্যর্থ হলেও দাম বাড়াতে দেশি-বিদেশি সবগুলো কোম্পানি প্রতিযোগিতা করে দাম বাড়াতে ব্যস্ত। আবার সয়াবিন তেলের দাম বৃদ্ধির অজুহাতে দেশে উৎপাদিত সরিষার তেলের দামও দ্বিগুণ। ব্যবসায়ীরা সুযোগকে হাতছাড়া করতে চান না। কয়েকদিন আগে দেশব্যাপী ব্ল্যাকআউটের সময় ঢাকায় ১০ টাকার মোমবাতি ঘণ্টার মধ্যেই ৩০-৫০ টাকায় ঠেকেছিল। বিদ্যুত সংকটের কথা শুনে ২০০ টাকার এনার্জি বাল্ব এখন ৫ শত-৬ শত টাকায়। ১৫ শত টাকার চার্জার ফ্যান ৩ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) হিসাবেও বাজারে নিত্যপণ্যের অস্থিরতার প্রমাণ পাওয়া যায়। আগস্ট ও সেপ্টেম্বরে মূল্যস্ফীতি ৯ শতাংশ ছাড়িয়ে গেছে। আগস্টে মূল্যস্ফীতি হয়েছে ৯ দশমিক ৮৬ শতাংশ। সেপ্টেম্বরে তা ৯ শতাংশের বেশি রয়েছে। তবে এ দুই মাসে খাদ্যপণ্যে মূল্যস্ফীতি ১০ শতাংশের বেশি রয়েছে। গবেষণা সংস্থা সিপিডি ইতোপূর্বে বলছে, মূল্যস্ফীতির ধাক্কায় চাপে পড়েছে গরিব মানুষ আর এ অবস্থায় তাই নিত্যপণ্যের উচ্চমূল্য নিয়ন্ত্রণ করাই বাংলাদেশের সামনে বড় চ্যালেঞ্জ। তবে শুধু বাংলাদেশই নয়। গত এক যুগের মধ্যে পুরো বিশ্বই এখন সর্বোচ্চ মূল্যস্ফীতির সামনে আছে। আর বৈশ্বিক মূল্যস্ফীতি ও জীবনযাত্রার ব্যয় বাড়ার কারণ হিসেবে প্রধানত করোনা মহামারির প্রভাব, ইউক্রেন যুদ্ধ, জ্বালানি তেলের উচ্চমূল্য, পরিবহন খরচ, ডলারের বিনিময় হার ব্যাপক বেড়ে যাওয়াকে দায়ী করা হচ্ছে। আর এসবের ব্যাপক প্রভাবে গরম হয়ে গেছে বাংলাদেশের নিত্যপণ্যের বাজার। বিষয়টি আচ করবার জন্য সাশ্রয়ী মূল্যে টিসিবির খাদ্যপণ্য বিক্রি ও খোলা বাজারে চাল বিক্রির ট্রাকের সামনে দাড়ালেই অনুমেয়। সবশ্রেণি পেশার মানুষ র্দীঘলাইন দিয়ে চাল কিনতে বাধ্য হচ্ছেন।

অর্থনীতিবিদদের মতে, বিদেশ থেকে আমদানিকৃত পণ্য ও দেশে অভ্যন্তরীণ উৎসে উৎপাদিত পণ্যের দাম বেড়ে সাধারণ মানুষের নাভিশ্বাস উঠেছে। অনেক মানুষ বাধ্য হয়ে পণ্য ব্যবহার কমিয়েছে। চাল, ডাল, তেল, চিনিসহ নিত্যপণ্যের ব্যবহার কমিয়েছেন। ফলে প্রান্তিক ও সাধারণ আয়ের মানুষের খাদ্য নিরাপত্তা ও জীবনজীবিকা নির্বাহ করা দিনদিন কঠিন হয়ে উঠছে। খাদ্যপণ্যের অস্থির মূল্য ঠেকাতে মানুষকে আহার কাটছাঁট করতে হচ্ছে। অনেকে একবেলা খেয়ে চলছে। যা পুষ্ঠিহীনতাসহ কর্মক্ষমতা হ্রাসের দীর্ঘমেয়াদী নেতিবাচক প্রভাব হতে পারে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিত্য পণ্যের দাম সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতায় রাখতে চেষ্টা চালানোর কথা বলেছেন। আসন্ন ২০২৩ সালে বৈশ্বিক অর্থনৈতিক দুরবস্থা আরও বাড়তে পারে এমন আশঙ্কা প্রকাশ করে সরকারপ্রধান দেশবাসীকে সঞ্চয়ী মানসিকতা গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়েছেন। অতি স্বল্প সময়ে ফল পাওয়া যাবে এবং অধিক প্রয়োজন রয়েছে-এমন কল্যাণমূলক প্রকল্প গ্রহণ করার কথা বলেছেন। ২০২৩ সাল বিশ্বের জন্য ‘সবথেকে ঝুঁকিপূর্ণ একটা বছর; হতে পারে মন্তব্য করে ওই সময়ে দুর্ভিক্ষ ও খাদ্য সংকট দেখা দিতে পারে বলে মন্তব্য করেন। সেই কথাটা মাথায় রেখে আমাদেরকে এখন থেকেই খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধি করা এবং খাদ্য সংরক্ষণের কী ব্যবস্থা করা যেতে পারে বা প্রক্রিয়াজাত করা যেতে পারে সেদিকে আমাদের বিশেষভাবে দৃষ্টি দিতে হবে।

নিত্যপণ্যের বাজার দর নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর উদ্বেগ এবং একে সাধারণের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে নিয়ে আসার যে নির্দেশনা দিয়েছেন, তা সময়োপযোগী ও বাস্তবসম্মত। আমরা বিশ্বাস করতে চাই। প্রধানমন্ত্রীর এ নির্দেশনা বাস্তবায়নে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়, অধিদপ্তর, স্থানীয় প্রশাসনগুলো আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করবে। এটা ভুলে গেলে চলবে না, সরকারের প্রধান শক্তি জনগণ। সরকারের যেকোনো উদ্যোগ জনগণকে সম্পৃক্ত করেই গ্রহণ করা হয়। জনগণ ভালো থাকলে সরকারও ভালো থাকে। বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তা ভালোভাবেই জানেন। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ বাস্তবায়নসহ সরকারের গৃহীত উদ্যোগগুলো বাস্তবায়িত হলে বাজারে অস্থিরতার তাৎক্ষণিক সমাধান হয়তো মিলবে। তবে মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদে খাদ্য সংকট এবং বাজার কারসাজি সমস্যার সমাধানে প্রয়োজন দেশীয় খাদ্য উৎপাদন বাড়ানো। পাশাপাশি সংকট সামাল দিতে বাজার নিয়ন্ত্রণ জরুরি।

নিত্যপণ্যের বাজার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা এখন খুবই দরকার। বিশেষজ্ঞদের মতে, চাল, আটা, সয়াবিন তেলসহ নিত্যপণ্যের দাম অস্বাভাবিক হওয়ার পেছনে শুধুমাত্র এককভাবে আন্তর্জাতিক বাজারমূল্য বৃদ্ধি দায়ী নয়। এক শ্রেণির ব্যবসায়ী সংকটময় পরিস্থিতিকে পুঁজি করে অতি মুনাফালাভের মনোবৃত্তির কারণে তারা নিজেরা সরবরাহ নিয়ন্ত্রণ করে বাজার অস্থির করছেন। সরকারের নীতিনির্ধারকদের কেউ কেউ অতি মুনাফার বিরুদ্ধে কথা বলছেন। তবে অতিমুনাফাকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ অজানা কারণে সম্ভব না হওয়ায় নিত্যপণ্য নিয়ে এই অস্থিরতা প্রলম্বিত হচ্ছে মাসের পর মাস। আর চক্রাকারে সবগুলো খাদ্যপণ্যে এ অশুভ চর্চাটির সামাজিক সংক্রমণ ঘটেছে। ফলে দাম নিয়ে ক্রেতাদের মাঝে হাপিত্যেশ থাকলেও সমাধানের পথে কেউ হাটছে না। তবে পণ্যমূল্য যাতে সাধারণ ভোক্তাদের সাধ্যের মধ্যে থাকে তার জন্য সরকারকে প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা নিতে হবে। তবে টিসিবির মাধ্যমে বর্তমান চলমান ফ্যামিলি কার্ডের আওতায় চাল, আলু ও দেশি পেঁয়াজ বিক্রির ব্যবস্থা করা গেলে কৃষক ও ভোক্তারা অনেক বেশি উপকৃত হতেন। একইসঙ্গে টিসিবির আওতায় বিক্রি হওয়া খাদ্যপণ্য সংগ্রেহে স্থানীয় উৎস থেকে সংগ্রহ করার নীতির পরিবর্তে আর্ন্তজাতিক উৎস থেকে সরকার টু সরকার পর্যায়ে সংগ্রহ করার নীতি চালু করা দরকার।সরকারকে জেলা প্রশাসন, খাদ্য, কৃষি, প্রাণিসম্পাদ ও ভোক্তা অধিদপ্তরের সমন্বিত বাজার তদারকি জোরদার, উৎস স্থল, মিলমালিক ও উৎপাদক পর্যায়ে বাজার তদারকি নিশ্চিত করার পাশাপাশি বাজারসংক্রান্ত নীতিনির্ধারণে ব্যবসায়ীদের পাশাপাশি ভোক্তাদের সমঅংশগ্রহণ ও মর্যদা নিশ্চিত করতে হবে। প্রধানমন্ত্রীর নিত্যপণ্যের বাজার তদারকি বা নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা আরও জোরদার করার যে নির্দেশনা দিয়েছেন। তা সরকারের অন্যান্য নির্দেশনার মতো রুটিন নির্দেশনা হিসেবে বিবেচনা না করে অীত জনগুরুত্বপূর্ণ অগ্রাধিকারভাবে বাস্তবায়নে সরকারি কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্বপালনে সদিচ্ছা ও আন্তরিকতার প্রতিফলন ঘটাতে হবে। তাহলেই বিশ্বব্যাপী আর্থিক মন্দা ও খাদ্য ঘাটতির মতো কঠিন বাস্তবতা থেকে আমরা রেহাই পাব।

লেখক: এস এম নাজের হোসাইন, ভাইস প্রেসিডেন্ট, কনজুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) ই-মেইল: cabbd.nazer@gmail.com

 

Header Ad
Header Ad

মে মাসে শেখ হাসিনার বিচার শুরু হচ্ছে: প্রধান উপদেষ্টা

ছবি: সংগৃহীত

জুলাই-আগস্ট গণঅভুত্থানে গণহত্যার মামলায় আগামী মাসের শুরুতেই সাবেক প্রধানমন্ত্রীর শেখ হাসিনার বিচার শুরু হচ্ছে-আল জাজিরাকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে এসব কথা জানিয়েছেন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

কাতারভিত্তিক সম্প্রচারমাধ্যম আলজাজিরার বৈশ্বিক নেতাদের সাক্ষাৎকারমূলক অনুষ্ঠান ‘টক টু আল–জাজিরা’য় এ কথা বলেন তিনি।
আগামী ডিসেম্বর থেকে আগামী বছর জুনের মধ্যেই নির্বাচন হবে বলে ফের জানিয়েছেন তিনি

এ সময় তিনি আরও বলেন, শুধু মানবিক সহায়তা নয়, নিরাপদ প্রত্যাবাসনই রোহিঙ্গা সংকটের স্থায়ী সমাধান।

বাংলাদেশে একটি সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ এবং উদাহরণ সৃষ্টিকারী নির্বাচন উপহার দেয়ার দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, নির্বাচনের আগে সংস্কারের তালিকা ছোট হলে ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন এবং তালিকা বড় হলে আগামী বছরের জুনের মধ্যে নির্বাচন হবে।

অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে জনপ্রত্যাশা এখনও তুঙ্গে রয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, জনগণ মনে করে অন্তর্বর্তী সরকার এখনও তাদের জন্য ভালো সমাধান।

আলজাজিরার ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা দীর্ঘ সাক্ষাৎকারে জুলাই বিপ্লব, সাবেক স্বৈরাচার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারতে পালিয়ে যাওয়া, সাবেক সরকারের দুর্নীতিসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কথা বলেন তিনি।

আলজাজিরার উপস্থাপক ড. ইউনূসকে প্রশ্ন করেন, এটা কি বলা ঠিক যে, শেখ হাসিনার পতনের পর অন্তর্বর্তী সরকারের ‘মধুচন্দ্রিমা’ এখন সম্ভবত শেষ হয়েছে? কিছু বেশ বড় চ্যালেঞ্জ রয়েছে, যেগুলোর সুনির্দিষ্ট জবাব আপনাকে দিতে হবে। কারণ, পুরোনো ক্ষমতাধরদের প্রভাব রয়েছে, অনেকে রাজনৈতিক শূন্যতাকে কাজে লাগাতে চাইতে পারে।

জবাবে ড. ইউনূস বলেন, মধুচন্দ্রিমা শেষ হোক বা না হোক, বাংলাদেশের মানুষ মনে করে অন্তর্বর্তী সরকার এখনও তাদের জন্য ভালো সমাধান। তারা অন্তর্বর্তী সরকারকে সরাসরি চলে যেতে এখনও বলছে না। বরং একটা ভালো নির্বাচন উপহার দিতে সরকারই নির্বাচন আয়োজনের দিকে যাচ্ছে। জনগণ তাড়াতাড়ি ক্ষমতা হস্তান্তরের কথা এখনও বলছে না।

লাখ লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থীর সমাধান কি বাংলাদেশ একা করতে পারবে?

জবাবে ড. ইউনূস বলেন, আমরা আন্তর্জাতিক সংস্থা ও জাতিসংঘের সঙ্গে রোহিঙ্গা সমস্যা নিয়ে কাজ করছি। তারা যাতে নিরাপদে বাড়ি ফিরে যেতে পারে, তা নিশ্চিত করার চেষ্টা করছি। বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মধ্যে কিছু বোঝাপড়া যাতে তৈরি হয়।

নির্বাচনে আওয়ামী লীগকে অংশগ্রহণের অনুমতি দেয়া হবে কিনা– এমন প্রশ্নের জবাবে ড. ইউনূস বলেন,
এ প্রশ্নের জবাবের একটি অংশ আওয়ামী লীগকেই নির্ধারণ করতে হবে। দলটি আগে নিজেই সিদ্ধান্ত নেবে–তারা নির্বাচনে যোগ দেবে কিনা। তারা এখনও কিছু ঘোষণা করেনি। তা ছাড়া নির্বাচনের সময় নির্বাচন কমিশন কী প্রতিক্রিয়া দেয়, সেটাসহ নানা বিষয় সামনে আসতে পারে।

তাহলে আওয়ামী লীগের নির্বাচনে অংশ নেয়ার বিষয়টি নির্বাচন কমিশনের ওপর ছেড়ে দিচ্ছেন কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিষয়টি তা নয়। অন্যান্য রাজনৈতিক দল আছে, যারা বলতে পারে যে, এ আইনের অধীনে আওয়ামী লীগ নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে না।

সাক্ষাৎকারে থাইল্যান্ডের ব্যাংককে ড. ইউনূসের সঙ্গে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বৈঠকের প্রসঙ্গ ওঠে। ড. ইউনূস জানান,
তিনি বিমসটেক সম্মেলনের ফাঁকে মোদির সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন। সেখানে শেখ হাসিনাকে ‘চুপ’ রাখতে বলেছিলেন তিনি। জবাবে মোদি বলেছিলেন, এটা তার জন্য সম্ভব নয়। শেখ হাসিনা সামাজিক মাধ্যম ব্যবহার করে কিছু বললে, সেটি তিনি নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেন না।

যুক্তরাষ্ট্র, ভারত, পাকিস্তান ও চীনের সঙ্গে সম্পর্ক নিয়ে ড. ইউনূস বলেন, একসঙ্গে কাজ করার নীতি নিয়ে এগিয়ে যেতে চাই। আমরা একসঙ্গেই পারস্পরিক সহযোগিতামূলক পদক্ষেপ নিতে চাই।

Header Ad
Header Ad

ঢাকাসহ সারাদেশে বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে

ছবি: সংগৃহীত

রাজধানী ঢাকা ও এর পার্শ্ববর্তী এলাকায় অস্থায়ীভাবে বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। এর পাশাপাশি কমতে পারে দিনের তাপমাত্রা। এছাড়া আকাশ আংশিক মেঘলা থেকে মেঘলা থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। এ সময় দক্ষিণ অথবা দক্ষিণ-পূর্ব দিক থেকে ঘণ্টায় ১০-১৫ কিলোমিটার বেগে বাতাস বইতে পারে।

সোমবার (২৮ এপ্রিল) রাজধানীসহ পার্শ্ববর্তী এলাকার সকাল ৭টা থেকে পরবর্তী ৬ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে এ তথ্য জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।

সোমবার সকাল ৬টায় ঢাকার তাপমাত্রা ছিল ২৮ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ৮২ শতাংশ।

সারাদেশের সকাল ৬ টা থেকে পরবর্তী ১২০ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, রংপুর, রাজশাহী, ঢাকা, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ বিদ্যুৎ চমকানো অথবা বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। একই সঙ্গে সারাদেশে দিনের তাপামাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে এবং রাতের তাপমাত্রা সামান্য কমতে পারে।

আরও বলা হয়েছে, লঘুচাপের বর্ধিতাংশ বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল হয়ে পশ্চিমবঙ্গ থেকে উত্তর বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে।

রোববার (২৭ এপ্রিল) সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৭ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এছাড়া গত ২৪ ঘণ্টায় রংপুরের ডিমলাতে সর্বোচ্চ ৮৬ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়।

Header Ad
Header Ad

সবাই মিলে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করাই লক্ষ্য: আলী রীয়াজ

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ সভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ। ছবি: সংগৃহীত

ঐকমত্য কমিশনের লক্ষ্য হচ্ছে জাতীয় সনদ তৈরি করা। সবাই মিলে একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করার অংশ হিসেবে আলোচনা চলছে বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ সভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ।

সোমবার (২৮ এপ্রিল) জাতীয় সংসদের এলডি হলে গণঅধিকার পরিষদের সঙ্গে সংলাপের সূচনা বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।

আলী রীয়াজ বলেন, চর্চা, ঐক্যে এবং সম্মিলিতভাবে জাতীয় সনদ তৈরি করতে সবার প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখতে হবে। ঐকমত্য কমিশনের লক্ষ্য হচ্ছে জাতীয় সনদ তৈরি করা। যাতে করে ক্ষমতার বিন্যাসে পরিবর্তন ঘটে। বাংলাদেশ যাতে সমস্ত সম্ভাবনা নিয়ে জাগ্রত হতে পারে। গত ৫৩ বছর মানুষ যে গণতান্ত্রিক আকাঙ্ক্ষাকে ধারণ করছে, সেই আকাঙ্ক্ষাকে বাস্তবায়ন করা যায়, পথ উন্মুক্ত করা যায়, যেন সবাই মিলে একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করতে পারি। তারাই অংশ হিসেবে এ আলোচনা।

তিনি আরও বলেন, শুধুমাত্র সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন, মতামত ও সুপারিশই যথেষ্ট নয়। সব রাজনৈতিক ও গণতান্ত্রিক শক্তিগুলোর জনমানুষের ঐক্যের মধ্য দিয়ে আমরা বাংলাদেশকে নতুন বাংলাদেশের দিকে অগ্রসর করতে পারব। কাজে কি লিখছি তা নয়, চর্চার মধ্য দিয়ে, অঙ্গীকারের মধ্য দিয়ে, প্রতিশ্রুতির মধ্য দিয়ে আমাদের এ কাজে অগ্রসর হতে হবে। আমরা সেই প্রচেষ্টায় আছি।

ঐকমত্য কমিশনের সহ সভাপতি বলেন, বাংলাদেশের মানুষ তরুণদের নেতৃত্বে প্রাণ দিয়ে যে সম্ভাবনা তৈরি করেছে, সবাই মিলে সে সম্ভাবনাকে বাস্তবায়নের পথে অগ্রসর হতে হবে। সেই পথ ও প্রচেষ্টায় সবাই একত্রিত আছি, থাকব। একত্রিত থাকার তাগিদ জারি রাখব।

রাষ্ট্র সংস্কারের বিষয়ে স্প্রেডশিট আকারে ৩৯টি দলের কাছে মতামত চেয়েছিল জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। এর মধ্যে ৩৫টি দল মতামত জমা দিয়েছে বলে জানান আলী রীয়াজ। রোববার পর্যন্ত কমিশন ১৯টি দলের সঙ্গে সংলাপ করেছে। ২০তম দল হিসেবে গণঅধিকার পরিষদের সঙ্গে কমিশন সংলাপ করছে বলে জানান আলী রীয়াজ।

২০১৮ সালে বর্তমান গণঅধিকার পরিষদের নেতাদের নেতৃত্বে অনুষ্ঠিত কোটা সংস্কার আন্দোলনের কথা তুলে ধরে আলী রীয়াজ বলেন, তাদের অকুতোভয় সংগ্রামের মধ্য দিয়ে ফ্যাসিবাদ বিরোধী আন্দোলনের নতুন পর্যায় সূচনা হয়েছিল। যার ধারাবাহিকতায় ২০২৪ সালে কোটা সংস্কার আন্দোলন ও পরবর্তী পর্যায়ে একটি অভূতপূর্ব ও অভাবনীয় গণঅভ্যুত্থান হয়েছে।

প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দারের সঞ্চালনায় কমিশনের সদস্য সফর রাজ হোসেন, বিচারপতি এমদাদুল হক, ড. বদিউল আলম মজুমদার, ড. ইফতেখারুজ্জামান এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

মে মাসে শেখ হাসিনার বিচার শুরু হচ্ছে: প্রধান উপদেষ্টা
ঢাকাসহ সারাদেশে বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে
সবাই মিলে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করাই লক্ষ্য: আলী রীয়াজ
ইশরাককে মেয়র ঘোষণা করে গেজেট প্রকাশ
কাশ্মীর সীমান্তে ভারত-পাকিস্তানের ফের গোলাগুলি
টস হেরে ফিল্ডিংয়ে বাংলাদেশ, একাদশে ৩ পরিবর্তন
দেশে ফিরেছেন প্রধান উপদেষ্টা
টটেনহামকে উড়িয়ে প্রিমিয়ার লিগের চ্যাম্পিয়ন লিভারপুল
শেখ হাসিনাকে ‘চুপ’ রাখতে পারবেন না মোদি
রেফারির কাছে ক্ষমা চাইলেন মাদ্রিদের ডিফেন্ডার আন্তনিও রুদিগার
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নবীন শিক্ষার্থীদের শুভেচ্ছা উপহার দিলেন ছাত্রদল নেতা
দুর্নীতির অভিযোগ তুলে দুই উপদেষ্টার পদত্যাগ দাবি
নওগাঁয় গ্রাহকের আমানতের টাকা ফেরত না দেওয়ায় জাতীয় পার্টি’র নেতাকে গণধোলাই
পাকিস্তানের পাশাপাশি বাংলাদেশকেও পানি না দেওয়ার আহ্বান বিজেপি এমপির
এসআই নিয়োগের ফলাফল প্রকাশ, ৫৯৯ জনকে প্রাথমিক সুপারিশ
হাকিমপুরে গরীবের চাল ছাত্রলীগ নেতার গুদামে
চুরির অভিযোগে কুবির দুই শিক্ষার্থী বহিষ্কার
ভারত-পাকিস্তান ইস্যুতে আগবাড়িয়ে কিছু করার পক্ষে নয় ঢাকা
সাব-ইন্সপেক্টর পদে প্রাথমিক সুপারিশ পেল ৫৯৯ জন
দুই উপদেষ্টার এপিএস-পিও’র দুর্নীতির খোঁজে গোয়েন্দা কার্যক্রম শুরু