মঙ্গলবার, ৫ নভেম্বর ২০২৪ | ২০ কার্তিক ১৪৩১
Dhaka Prokash
Header Ad

সরকারি কর্মকর্তাদের বাধ্যতামূলক অবসর ও জনগণের সেবাপ্রাপ্তি

 

তথ্য সচিবকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানো হয়েছে, এতে প্রশাসনে নাড়াচাড়া পড়ে গেছে। কেউ কেউ বলছেন, সচিবের প্রকৃত দোষ সরকারের প্রকাশ করা উচিত আর তা না হলে প্রশাসনে ভুল বার্তা যেতে পারে। দেশের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়ের মধ্যে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় একটি। স্বাভাবিক অবসরের এক বছরের কম সময়ের আগে এই মন্ত্রণালয়ের সচিবকে অবসরে পাঠানো হলো।

সরকারের এই সিদ্ধান্ত ইতিবাচক ফল দেবে না বলেও কেউ কেউ মন্তব্য করেছেন। পঁচিশ বছর পূর্তিতে বাধ্যতামূলক অবসরে দেওয়ার ক্ষেত্রে সরকারের ক্ষমতাকে অগণতান্ত্রিক ও কালাকানুন বলেও অভিহিত করেছেন। সচিব বা যে পর্যায়ের কর্মকর্তাই হোন না কেন, যিনি যে দোষে দুষ্ট সেটি প্রকাশ করা উচিত। সুনির্দিষ্ট ও যৌক্তিক কারণ না থাকলে বাধ্যতামূলক অবসরের ঘটনায় কর্মকর্তাদের মধ্যে ভয়ের সংস্কৃতি তৈরি হয়। বিভিন্ন স্তরের কর্মকর্তারা রীতিমতো স্তম্ভিত। আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দেওয়া দরকার। এ ধরনের বিধানের বিরুদ্ধে রিট করা দরকার। এ ধরনের মন্তব্যও করেছেন অনেকে। কিন্তু সরকারি কর্মকর্তা বা কর্মচারী সবাই প্রজাতন্ত্রের সেবক। তারা জনগণের কথা শুনবেন, জনগণের জন্য কাজ করবেন। তারা আলাদা কোনো এনটিটি নয় যেটি আমাদের দেশে দেখা যায়।

জগনগণের প্রতিনিধিরা জনগণের জন্য, রাষ্ট্রের কল্যাণের জন্য সরকারি কর্মকর্তাদের আইনের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণ করবেন। সরকার পরিচালনায় যারাই থাকুক, সেটি সরকারি কর্মকর্তাদের বিষয় নয়। তাদের বিষয় হচ্ছে সরকারে যারা আছেন, প্রজাতন্ত্রের কর্মকর্তা ও কর্মচারী হিসেবে সরকারের কথা, সরকারের নির্দেশ মেনে চলা, প্রকল্প বাস্তবায়ন করা। তা না হলে ‘চেইন অব কমান্ড’ ভেঙে যায়। আমরা চেইন অব কমান্ড ভাঙার উদাহরণ অহরহ দেখছি। কয়েকদিন আগে একটি রাজনৈতিক সমাবেশের মতো একজন নির্বাচন কমিশনারকে (যার প্রটোকল সচিবেরও উপরে) মাঠ প্রশাসনের কর্মকর্তারা যেভাবে তার বক্তব্য থামিয়ে দিয়েছেন, তাকে বসতে বলেছেন তাতে শক্তিশালী চেইন অব কমান্ড আছে কিনা সন্দেহ হচ্ছে। তাই, একজন সচিবকে বাধ্যতামূলক অবসরে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় যারাই থাকুক প্রজাতন্ত্রের সুবিধার্থে এ ধরনের সিদ্ধান্ত নিতে পারে। এটি যদি জনসমক্ষে ব্যাখ্যা করতে যায়, সেটি প্রশাসনে বিভক্তি তৈরি করবে। অনেকেই যে বলছেন বিষয়টির ব্যাখ্যা দেওয়া উচিত, সেটি বোধ হয় আরও সমস্যা বাড়াতে পারে।

সরকারি কর্মকর্তারা জনপ্রতিনিধিদের যথাযথ সম্মান প্রদর্শন করবেন- বেশিও না, কমও নয়। একেবারে ‘হুজুর হুজুর’ করবেন সেটিও যেমন কাম্য নয়, তেমনি দেখে না দেখার ভান করবেন, যে মন্ত্রীর দাপট বেশি তাকে দেখে অস্থির হয়ে পড়বেন আর যার কোনো তেমন দাপট নেই তাকে পাত্তাই দেবেন না সেটি হতে পারে না। কয়েক মাস আগে আমি একজন অতিরিক্ত সচিব (কোনো এক অধিদপ্তরের ডিজির দায়িত্বে আছেন) এর কক্ষে ছিলাম, ওই সময়ে একজন মন্ত্রী এলেন অথচ ওই অতিরিক্ত সচিব দাঁড়ালেন না, শুধু বললেন, বসেন স্যার। এটি আমার কাছে বেখাপ্পা মনে হলো।

মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সাবেক সচিব আলী ইমাম মজুমদার বলেছেন, স্বাধীনতার পর থেকেই একটা আইন ছিল। রাষ্ট্রপতির আদেশ বলে যে কাউকে অবসরে পাঠানোর ক্ষমতা ছিল সরকারের। তারপর ১৯৭৪সালে সরকারি কর্মচারীদের আইনে এই বিধান ছিল। ২০১৮ সালে সরকারি কর্মচারী আইন যখন হয় সেই আইনেও ৪৫ ধারায় সেটা যুক্ত করা হয়। সরকারের এই ক্ষমতা আছে এবং সেটিও এখানে প্রয়োগ করা হয়েছে। এই ক্ষমতার বিরুদ্ধে, একপক্ষীয় আদেশের বিরুদ্ধে সংক্ষুদ্ধ ব্যক্তি চাইলে একমাত্র হাইকোর্টে যেতে পারেন। এ পর্যন্ত যারা উচ্চ আদালেত গিয়েছেন সরকারের এসব আদেশের বিরুদ্ধে সেখানে কোথাও সরকার জয়যুক্ত হয়নি। আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দেওয়া ছাড়া শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া ঠিক না। তিনি বলেন আইনটি প্রশ্নবিদ্ধ, সরকার চাইলে এটি সংশোধন করতে পারে। যেকোনো আইনই মানুষের জন্য, দেশের কল্যাণের জন্য। কোনো আইনে যদি কোনো প্রশ্ন থাকে তাহলে সংশ্লিষ্টদের সেটিকে সংশোধন করার চেষ্টা করা উচিত। তবে, সরকারি কর্মকর্তা আর জনপ্রতিনিধিদের মধ্যে যদি মামলা নিয়ে দৌড়াদৌড়ি করতে হয় সেটিও সুখকর বিষয় নয়। তারা প্রজাতন্ত্রের কাজ করবেন কখন? এমনিতেই সরকারি অফিসে জনগণের সেবার মান দিনে দিনে কঠিন হচ্ছে, কমে যাচ্ছে।

নির্বাচন কমিশন একটি সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান। এখানে যেসব কর্মকর্তারা আসেন তারা প্রশাসন, বিচার বিভাগ, অবসরপ্রাপ্ত সেনা অফিসার- যেখান থেকেই আসুক না কেন মাঠ পর্যায়ের পুরো প্রশাসনের উচিত তাদের সম্মান করা। এখানেও দেখা যায় তার ব্যত্যয় ঘটে। শুধুমাত্র লাইন ম্যানেজমেন্টে যারা থাকেন তাদের দেখলে স্যার, স্যার বলা শুরু হয় আর তার বাইরের সবাইকে যেন নামমাত্র সম্মান প্রদর্শনের বিষয়টি বিষয়টিও দৃষ্টিকটু লাগে। প্রজাতন্ত্রের সবাই এ দেশের কল্যাণের জন্য কাজ করবেন এটিই তো স্বাভাবিক। এই কাজ করার জন্য কিছু নিয়ম-কানুন দেশই তৈরি করে যা সবার শ্রদ্ধা করা উচিত, মেনে চলা উচিত। প্রতিপক্ষ মনে করা, আইনের মার-প্যাঁচ দিয়ে এক বিভাগকে হেয় করার প্রতিযোগিতা আপাতত কারুর পক্ষে কাজ করতে পারে কিন্তু তার ফল পুরো জাতির জন্যই উল্টো হয়। আজ দেখা যাচ্ছে অধিকাংশ জায়গায় প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধির মধ্যে খুব ভালো সম্পর্ক নেই, শ্রদ্ধা তো দূরের কথা।

প্রশাসনের মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের আচার-আচরণ অনুকরণীয় হতে হয় আর এজন্য পাকিস্তান আমলে সিভিল সার্ভিসে যারা যোগদান করতেন তাদের মেধা, দক্ষতা, আচরণ সবই ছিল আলাদা। আর এখন একজন কর্মকর্তা উপস্থিত জনতার সামনে আবেগে খেলার ট্রফি ভেঙে ফেলেছেন। এ কেমন আচরণ? কী প্রশিক্ষণ তাদের দেওয়া হয়েছে? কেউ কেউ জনগণের গায়ে হাত তুলছেন আবার বাঘা জনপ্রতিনিধির সামনে বিড়ালের মতো আচরণ করছেন, এ কী? এ দেশ তো সবার। সবাই সবাইকে সম্মান করবেন, জনগণের জন্য, দেশের জন্য কাজ করবেন। তাতেই সম্মান। কে বড় কে ছোট, কে কোন পজিশনে কাজ করছে সেই অনুযায়ী আচরণ করা অন্তত সরকারি কর্মকর্তাদের ক্ষেত্রে বেমানান মনে হয়।

আর একটি দৈনিকে দেখলাম, বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানো হচ্ছেছ আরও পাঁচ সচিবকে। সরকারবিরোধী ষড়যন্ত্রে জড়িত থাকার আভিযোগ পাওয়া গেছে তাদের বিরুদ্ধে। শুধু সচিব নন, কয়েকজন অতিরিক্ত সচিবও আছেন এই ষড়যন্ত্রে। সব মিলিয়ে সংখ্যাটি নাকি ১২। একটি গোয়েন্দা সংস্থা এই বার জনের দৈনন্দিন চলাফেরা, মোবাইল ফোনে যোগাযোগসহ দেশে-বিদেশে তাদের কার্যক্রম পর্যবক্ষেণ করে বিস্তারিত রিপোর্ট দিয়েছে। যতটা জানা যায় যে, পদোন্নতি বঞ্চিত কয়েক জন কর্মকর্তা সরকারবিরোধী কার্যক্রমে জড়িয়ে পড়েন যাদের তথ্য গোয়েন্দা সংস্থার হাতে কিছু রিপোর্ট এসেছে।

আমাদের মনে আছে ২০১৪সালে ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা সনদ নেওয়ার কারণে পাঁচ সচিবকে একসঙ্গে বাধ্যতামূলখ অবসরে পাঠিয়েছিল সরকার। এটি তো যেকোনো সরকারকে করতেই হবে। এ কেমন সচিব? দেশের একটি পুরো মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে যারা থাকেন, তাদের যদি ভুয়া সার্টিফিকেট বহন করতে হয় তাহলে অবস্থা কোথায় গিয়ে দাঁড়িয়েছে? এসব বড় পজিশনে যদিও রাজনীতির কিছুটা গন্ধ থাকে তারপরেও তারা তো জি হুজুর হবেন না বা তেল মেরে সচিব হবেন না, তারা সচিব হবেন তাদের কর্মের মাধ্যমে, দক্ষতার মাধ্যমে। সেটি দেশের জন্য এবং সরকারের জন্য লাভ। জি হুজুর মার্কা সচিব যদিও মনে হয় অনেক আজ্ঞাবহ তাদের দ্বারা কেউই কিন্তু উপকৃত হয় না, উপকৃত হন তিনি নিজে। বর্তমানে কোনো প্রশাসনিক কর্মকর্তার সঙ্গে আলাপ হলেই এ ধরনের কথা শোনা যায় যে বিষয়টি আগে ছিল না।

প্রশাসন বিশেষজ্ঞ সালাহউদ্দীন এম অমিনুজ্জামান যথার্থই বলেছেন, একজন দক্ষ পেশাজীবী আমলা নৈতিকভাবে ও আইনগতভাবেও দলীয়করণের প্রক্রিয়ায় পা বাড়াতে পারেন না। তিনি প্রজাতন্ত্রের কর্মী, দলের নন। তবে এটা মেনে নিতে হবে যে, গণতান্ত্রিক সমাজে নির্বাচত সরকারের অনুগত হয়ে তাদের কাজকর্ম করতে হয়। শুধু আইনি ব্যত্যয় হলে তারা সংশ্লিষ্ট বিষয়ে তাদের দ্বিমত পোষণ করতে পারেন। এতে কোনো সন্দেহ নেই যে, দলীয়করণও স্বজনতোষণের প্রক্রিয়া কোনোভাবেই সরকারের দক্ষতা বা ইমেজ বাড়ায় না। ইদানিং আমলাতন্ত্রের ’ইমেজ সংকট’ এর পেছনে দলীয় পরিচয় একটা প্রধান কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

অভিযোগ উঠেছে, দলীয় সহমর্মিতা কিংবা আনুগত্য না থাকলে দক্ষতা ও যোগ্যতায় পদোন্নতি হবে, তা নিশ্চিত নয়। এতে সার্বিকভাবে প্রশাসনের দক্ষতা প্রতিযোগিতামূলক পরিবেশ বিঘ্নিত হচ্ছে- সামগ্রিকভাবে প্রশাসনের দক্ষতা ও যোগ্যতা প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে। আমরা মনে করি যেকোনো সরকারের আমলেই হোক সরকারি কর্মকর্তাদের রাজনৈতিক বিবেচনায় পদোন্নতি প্রদান, সুবিধা প্রদান কারুর জন্যই মঙ্গল নয়। এতে দেশ কোনোভাবেই উপকৃত হয় না। সরকার জনগণের সেবার জন্য, দেশের জন্য।

আমরা সবাই জানি সরকারের অনেক প্রচেষ্টা সত্ত্বেও সরকারি অফিস-আদালতে জনগণের সেবাপ্রাপ্তি সহজ হয়নি। এটি কীভাবে করা যায় তা নিয়ে জনপ্রতিনিধিসহ সরকারি কর্মকর্তাদের পদ্ধতি বের করতে হবে। সরকারি কর্মসেবায় পদ্ধতিগত অস্বচ্ছতা, কর্ম সম্পাদনের দিন বেঁধে দেওয়ার পর তা না হওয়া, সেবাগ্রহীতা যথাযোগ্য তথ্যাদি সরবারহে গাফিলতি, অতি দ্রুত কাজ করিয়ে নেওয়ার প্রবণতা, দাপ্তরিক দালাল চক্রের ভূমিকা দূর করার দায়িত্ব মূলত সরকারের। সেটি কিন্তু হয়নি। আর এই কাজ জনপ্রতিনিধি একা পারবেন না, সরকারি কর্মকর্তারও একা পারবেন না। এজন্য থাকতে হবে সৎ ও যৌথ প্রয়াস।

লেখক: সাবেক শিক্ষক; ক্যাডেট কলেজ, রাজউক কলেজ ও বাউবি।

এসএন

 

Header Ad

আরও ২৯ জন সাংবাদিকের প্রেস অ্যাক্রেডিটেশন কার্ড বাতিল

ছবি: সংগৃহীত

তথ্য অধিদপ্তর (পিআইডি) সম্প্রতি আরও ২৯ জন সাংবাদিক ও সংশ্লিষ্ট পেশার ব্যক্তির প্রেস অ্যাক্রেডিটেশন কার্ড বাতিলের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে। রোববার (৩ নভেম্বর) পিআইডির প্রধান তথ্য কর্মকর্তা মো. নিজামুল কবীর স্বাক্ষরিত এক আদেশে এই সিদ্ধান্ত জানানো হয়।

আদেশে বলা হয়, প্রেস অ্যাক্রেডিটেশন নীতিমালা অনুযায়ী এই সাংবাদিকদের স্থায়ী এবং অস্থায়ী অ্যাক্রেডিটেশন কার্ড বাতিল করা হয়েছে। বাতিল হওয়া কার্ডধারীদের মধ্যে আছেন বেশ কয়েকজন গুরুত্বপূর্ণ গণমাধ্যমের সম্পাদক, সংবাদ প্রধান এবং বিশেষ প্রতিনিধি।

কার্ড বাতিল হওয়া সাংবাদিকদের মধ্যে রয়েছেন টিভি টুডের প্রধান সম্পাদক মঞ্জুরুল আহসান বুলবুল, কালের কণ্ঠের সম্পাদক ইমদাদুল হক মিলন, নিউজ২৪-এর হেড অব নিউজ রাহুল রাহা, এটিএন নিউজের বার্তা প্রধান নুরুল আমিন প্রভাষ, দৈনিক ডেসটিনির উপ-সম্পাদক সোহেল হায়দার চৌধুরী, ডিবিসি নিউজের প্রধান সম্পাদক মোহাম্মদ মঞ্জুরুল ইসলাম, সময় টিভির সিইও আহমেদ জোবায়ের, দৈনিক জাগরণের সম্পাদক আবেদ খান, এবং নিউজ২৪-এর সিনিয়র রিপোর্টার জয়দেব চন্দ্র দাস।

এছাড়া, নাগরিক টিভির প্রধান বার্তা সম্পাদক দীপ আজাদ, এটিএন বাংলার প্রধান নির্বাহী জ.ই. মামুন, বাসসের উপপ্রধান বার্তা সম্পাদক মো. ওমর ফারুক, চ্যানেল আইয়ের বিশেষ প্রতিনিধি হোসনে আরা মমতা ইসলাম সোমা, দৈনিক কালের কণ্ঠের বিশেষ প্রতিনিধি হায়দার আলী, দৈনিক আমাদের অর্থনীতির সিনিয়র নির্বাহী সম্পাদক মাসুদা ভাট্টি, দৈনিক পূর্বকোণের ঢাকা ব্যুরো প্রধান কুদ্দুস আফ্রাদ, বৈশাখী টিভির প্রধান সম্পাদক সাইফুল ইসলাম, ডিবিসি নিউজের অ্যাসাইমেন্ট এডিটর নাজনীন নাহার মুন্নী, ফ্রিল্যান্সার নাদিম কাদির, বাসসের নগর সম্পাদক মধুসূদন মন্ডল, এবং ইন্ডিপেন্ডেন্ট টিভির প্রধান বার্তা সম্পাদক আশিষ ঘোষ সৈকত।

তালিকায় আরও আছেন দৈনিক বাংলার ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক জাফরউল্লাহ শরাফত, দৈনিক আনন্দ বাজারের বিশেষ প্রতিনিধি কিশোর কুমার সরকার, দৈনিক বাংলাদেশ বুলেটিনের সম্পাদক রফিকুল ইসলাম রতন, মাইটিভির চেয়ারম্যান নাসির উদ্দিন, আরটিভির সিইও আশিকুর রহমান, একুশে টিভির হেড অব ইনপুট অখিল কুমার পোদ্দার, গাজী টিভির এডিটর রিসার্চ অঞ্জন রায় এবং দৈনিক ভোরের কাগজের বার্তা সম্পাদক ইখতিয়ার উদ্দিন।

এই সাংবাদিকদের কার্ড বাতিলের সিদ্ধান্তের পর গণমাধ্যমজুড়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে।

Header Ad

কৃষক বাবাকে ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা বানিয়ে পুলিশের এএসপি হন শতকোটি টাকার মালিক হারুন

সাবেক ডিবি প্রধান হারুন অর রশীদ। ছবি: সংগৃহীত

মিঠামইন উপজেলার ঘাগড়া ইউনিয়নের হোসেনপুর গ্রামের দরিদ্র কৃষক পরিবারে জন্ম সাবেক ডিবি প্রধান হারুন অর রশীদের। ২০তম বিসিএসে মুক্তিযোদ্ধার সন্তান কোটায় পুলিশে যোগ দিলেও তার বাবা মো. হাসিদ ভূঁইয়া প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন না। ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে তার বাবার নাম মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়, যা পরে হারুনের পুলিশের চাকরির ক্ষেত্রে সহায়তা করে।

২০১১ সালের ৬ জুলাই সংসদ ভবনের সামনে তৎকালীন বিরোধীদলীয় চিফ হুইপ বিএনপি নেতা জয়নুল আবদীন ফারুককে মারধর করে আলোচনায় আসেন হারুন। এ ঘটনার পর তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আস্থা অর্জন করেন তিনি এবং তার পর থেকেই একের পর এক পদোন্নতির মাধ্যমে পুলিশের অন্যতম প্রভাবশালী কর্মকর্তায় পরিণত হন।

হারুন অর রশীদ ক্ষমতার অপব্যবহার করে রাতারাতি সম্পদের পাহাড় গড়েন। বলা হয়, সাধারণত হেলিকপ্টার ছাড়া তিনি বাড়িতে আসতেন না। তার বিরুদ্ধে দেশ ও বিদেশে কোটি কোটি টাকা পাচারের অভিযোগও ওঠে। মিঠামইনে নিজ গ্রামের বাড়িতে শতকোটি টাকা ব্যয়ে গড়ে তোলেন বিলাসবহুল 'প্রেসিডেন্ট রিসোর্ট', যেখানে রয়েছে হেলিপ্যাড এবং অত্যাধুনিক সুইমিং পুল।

প্রেসিডেন্ট রিসোর্টটি একসময় ধনাঢ্য ও প্রভাবশালী ব্যক্তিদের নিরাপদ আশ্রয়স্থল হিসেবে পরিচিত ছিল। তবে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর রিসোর্টের জৌলুসও কমে যায় এবং অবশেষে রিসোর্টের সব কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়। এখন সেখানে জনমানবহীন ভূতুড়ে পরিবেশ বিরাজ করছে।

সরেজমিনে দেখা যায়, হারুনের রিসোর্টটির জন্য এলাকার সংখ্যালঘু ও অন্যান্য ভূমি মালিকদের ভয় দেখিয়ে জমি দখল করা হয়েছিল এবং অধিকাংশ মালিক এখনো তাদের জমির মূল্য পাননি। স্থানীয় সংখ্যালঘু প্রতিনিধি দীলিপ চৌধুরী জানান, তার কোটি টাকার মূল্যমানের জমি হারুন ভয় দেখিয়ে দখল করেছেন, কিন্তু টাকা পরিশোধ করেননি। একইভাবে মানিক মিয়া নামে আরেক ব্যক্তি তার ৫ একর জমির কোনো মূল্যই পাননি।

স্থানীয়রা বলছেন, ছাত্রজীবনে ছাত্রলীগের রাজনীতি করা হারুন পুলিশি ক্ষমতার অপব্যবহার করে রাতারাতি বিত্তবৈভবের মালিক হয়েছেন।

Header Ad

হত্যা মামলার আসামি হয়েও পাসপোর্ট পেতে যাচ্ছেন শিরীন শারমিন চৌধুরী

সাবেক স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী। ছবি: সংগৃহীত

গণঅভ্যুত্থানের পর ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও মন্ত্রী-এমপিদের লাল পাসপোর্ট বাতিলের সিদ্ধান্ত নেয় বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার। এর ধারাবাহিকতায় বাতিল করা হয়েছে সাবেক স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর কূটনৈতিক পাসপোর্টও। রংপুরে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে গুলিবিদ্ধ হয়ে একজন শ্রমিক নিহতের ঘটনায় করা হত্যা মামলার আসামি শিরীন শারমিন আত্মগোপনে রয়েছেন এবং গ্রেপ্তার এড়াতে ঢাকায় সাধারণ ই-পাসপোর্টের জন্য আবেদন করেছেন বলে জানা গেছে।

৩ অক্টোবর, তিনি এবং তার স্বামী সৈয়দ ইশতিয়াক হোসাইন সাধারণ ই-পাসপোর্টের জন্য আবেদন করেন। অভিযোগ রয়েছে, নিয়ম অনুযায়ী পাসপোর্ট অফিসে উপস্থিত না হয়ে তারা বাসায় বসেই আঙুলের ছাপ ও আইরিশ স্ক্যান জমা দেন। অথচ নিয়ম অনুসারে, এসব তথ্য পাসপোর্ট অফিসে সরাসরি উপস্থিত হয়ে জমা দিতে হয়।

এ প্রসঙ্গে পাসপোর্ট অধিদপ্তরের একাধিক সূত্র জানায়, শিরীন শারমিন চৌধুরী ও তার স্বামী অনৈতিক সুবিধা নিয়ে পাসপোর্ট প্রক্রিয়ায় বিশেষ সুবিধা পাচ্ছেন এবং এর জন্য মোটা অঙ্কের টাকা খরচ করছেন। যদিও পাসপোর্ট অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. ইসমাইল হোসেন জানান, দেশের প্রত্যেক নাগরিকের পাসপোর্ট পাওয়ার অধিকার রয়েছে। তবে আইনের সীমার মধ্যে থেকে পাসপোর্ট অধিদপ্তর কাজ করে।

সাবেক এ স্পিকারের বাসার ঠিকানা হিসেবে ধানমণ্ডির একটি বাসার উল্লেখ থাকলেও সেই ঠিকানায় তাদের পাওয়া যায়নি বলে জানান রক্ষণাবেক্ষণকারী কর্মচারী শাহাবুদ্দীন। তিনি জানান, শিরীন শারমিন এ বাসায় থাকেন না এবং এখানে তার উপস্থিতি গত কয়েক মাসে দেখা যায়নি।

পাসপোর্ট বিষয়ক এই বিতর্কে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখপাত্র উমামা ফাতেমা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “এই সময়ে হত্যা মামলার আসামিদের পাসপোর্ট প্রক্রিয়া সহজ করা সন্দেহজনক। এতে বিচার প্রক্রিয়া ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।”

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. ফিরোজ সরকার এ ধরনের সুবিধা সম্পর্কে সন্দেহ প্রকাশ করেন এবং জানান, নিয়মের বাইরে কেউ এভাবে সুবিধা নিতে পারেন না। এদিকে মামলার তদন্তকারী রংপুর মহানগর পুলিশ কর্মকর্তারা জানান, শিরীন শারমিন চৌধুরীকে গ্রেপ্তারের জন্য খোঁজা হচ্ছে এবং তার সন্ধান পাওয়া মাত্রই আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে।

Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

আরও ২৯ জন সাংবাদিকের প্রেস অ্যাক্রেডিটেশন কার্ড বাতিল
কৃষক বাবাকে ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা বানিয়ে পুলিশের এএসপি হন শতকোটি টাকার মালিক হারুন
হত্যা মামলার আসামি হয়েও পাসপোর্ট পেতে যাচ্ছেন শিরীন শারমিন চৌধুরী
জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষ্যে ছাত্রদলের দুই দিনের কর্মসূচি ঘোষণা
শেখ হাসিনা কীভাবে ভারতে আছেন, জানতে চাইলেন ঝাড়খন্ডের মুখ্যমন্ত্রী
মানুষ আগেও ভোটারবিহীন সরকারকে মানেনি, এখনও মানবে না: মির্জা আব্বাস
মাওলানা সাদকে দেশে আসতে দিলে অন্তর্বর্তী সরকারের পতন
সরকারি অনুষ্ঠানে স্লোগান ও জয়ধ্বনি থেকে বিরত থাকার নির্দেশনা
বেনাপোল স্থলবন্দরে ভোক্তা অধিকারের মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত
গুম কমিশনে জমা পড়েছে ১৬০০ অভিযোগ, সবচেয়ে বেশি র‌্যাবের বিরুদ্ধে
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যকে হত্যার হুমকি, থানায় জিডি
মালয়েশিয়ায় বন্দিশিবির থেকে ছয় বাংলাদেশিকে উদ্ধার, মানবপাচার চক্র আটক
১২ কেজি এলপি গ্যাসের দাম কমলো ১ টাকা
বিডিআর হত্যাকাণ্ড পুনঃতদন্তে হাইকোর্টের জাতীয় কমিশন গঠনের নির্দেশ কেন নয়
বাংলাদেশে ইজতেমা একবারই হবে, দুবার নয়: মহাসম্মেলনে বক্তারা
এক মাস পর খাগড়াছড়ি ও সাজেক পর্যটকদের জন্য উন্মুক্ত
মার্কিন নির্বাচনে লড়ছেন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ৬ প্রার্থী
শাকিব খানের সঙ্গে প্রেমের গুঞ্জন, মুখ খুললেন পূজা চেরি
মুক্তিযোদ্ধার নাতি-নাতনি কোটা রেখেই ঢাবির ভর্তি কার্যক্রম শুরু
মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে বাংলায় ব্যালট পেপার