রবিবার, ৯ মার্চ ২০২৫ | ২৪ ফাল্গুন ১৪৩১
Dhaka Prokash

বিশ্বে নারীদের তুলনায় পুরুষের আত্মহত্যার হার দ্বিগুণ

আত্মহত্যা একটি পুরোনো সমস্যা। সুপ্রাচীনকাল থেকেই কিছু মানুষ আত্মহননের মাধ্যমে তাদের জীবনের পরিসমাপ্তি ঘটিয়ে আসছে। বিশ্বব্যাপী আত্মহত্যাকে একটি গুরুতর জনস্বাস্থ্য সমস্যা হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে।

আত্মহত্যা প্রতিরোধে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা, ইন্টারন্যাশনাল অ্যাসোসিয়েশন ফর সুইসাইড প্রিভেনশন (আইএএসপি) এবং বৈশ্বিক মানসিক স্বাস্থ্য ফেডারেশন একযোগে ২০০৩ সাল থেকে প্রতি বছর ১০ সেপ্টেম্বর ‘বিশ্ব আত্মহত্যা প্রতিরোধ দিবস’ পালন করে আসছে। দিবসটি বিভিন্ন দেশের সরকার, বিভিন্ন সংস্থা ও জনগণের মধ্যে আত্মহত্যা প্রতিরোধের প্রতি মনোযোগ বাড়ায়, আত্মহত্যাজনিত কলঙ্ক কমায় এবং আত্মহত্যা যে প্রতিরোধ করা যেতে পারে এমন বার্তা দেয়।

২০২১-২০২৩ পর্যন্ত বিশ্ব আত্মহত্যা প্রতিরোধ দিবসের ত্রিবার্ষিক থিম হলো- "কর্মের মাধ্যমে আশা তৈরি কর" (Creating hope through action)। এ থিম আমাদের মনে করিয়ে দেয় যে, আত্মহত্যার একটি বিকল্প রয়েছে এবং আমাদের সবার মধ্যে আত্মবিশ্বাস জাগ্রত করার এবং আলোর ধারায় অনুপ্রাণিত করার মতো বিষয় রয়েছে।

ডব্লিউএইচও বলছে, আত্মহত্যাজনিত প্রতিটি মৃত্যুই একটি মারাত্মক জনস্বাস্থ্য উদ্বেগ যা আত্মহত্যাকারী ব্যক্তির পরিবার ও তার আশেপাশের লোকদের উপর গভীর প্রভাব ফেলে। এমতাবস্থায়, জনসচেতনতা বাড়ানোর মাধ্যমে, আত্মহত্যাকেন্দ্রিক কলঙ্ক কমিয়ে, এবং সুচিন্তিত পদক্ষেপকে উৎসাহিত করার মাধ্যমে, আমরা বিশ্বজুড়ে আত্মহত্যার ঘটনা কমাতে পারি।

আইএএসপি এর এক তথ্যগ্রাফি দেখায় যে, প্রতি বছর বিশ্বব্যাপী ৭ লাখ ৩ হাজার মানুষ আত্মহত্যা করে। বিশ্বব্যাপী আত্মহত্যার হার নারীদের তুলনায় পুরুষদের মধ্যে দ্বিগুণেরও বেশি। অর্ধেকেরও বেশি (৫৮%) মানুষ ৫০ বছর বয়সের আগে আত্মহত্যা করে থাকে। বিশ্বের সব অঞ্চলেই আত্মহত্যা সংঘঠিত হয়, তবে ২০১৯ সালে বিশ্বব্যাপী আত্মহত্যার তিন চতুর্থাংশ (৭৭%), নিন্ম ও মধ্যম আয়ের দেশগুলোতে ঘটেছে।

অপরদিকে, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) তথ্য অনুযায়ী, বিশ্বে প্রতি বছর আত্মহত্যার পথ বেছে নেয় প্রায় ৮ লাখ মানুষ। দিন প্রতি এ হার ২ হাজার ১৯১ জন। প্রতি লাখে প্রায় ১৬ জন। বিগত ৫০ বছরে উন্নয়নশীল দেশগুলোতে আত্মহত্যার হার বেড়েছে ৬০ শতাংশ। বাংলাদেশে আত্মহত্যার প্রবণতা বৃদ্ধির হার ২ দশমিক ৬ শতাংশ। প্রতি বছরই এ হার বৃদ্ধি পাচ্ছে। বিভিন্ন প্রতিবেদন অনুযায়ী, বিশ্বে প্রতি ৪০ সেকেন্ডে একজন আত্মহত্যা করে। কাজেই আত্মহত্যা যে একটি গুরুত্বপূর্ণ জনস্বাস্থ্য সমস্যা হিসেবে দেখা দিয়েছে তাতে কোনো সন্দেহ নেই।

গত কয়েক বছরের তথ্য থেকে জানা যায় যে, বাংলাদেশে আত্মহত্যা ও আত্মহত্যার প্রবণতা আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে। ২০১৬ সালে, দেশে ৯ হাজারেরও কম আত্মহত্যার ঘটনা ঘটেছিল। ২০১৭ ও ২০১৮ সালে এ সংখ্যা যথাক্রমে ১০ হাজার ও ১১ হাজারের বেশি ছিল। করোনা মহামারিকালে অর্থাৎ ২০২০ সালে সারা দেশে ১৪ হাজারেরও বেশি মানুষ আত্মহত্যা করেছে। সুতরাং আত্মহত্যার ঘটনা যে বাড়ছে তাতে কোনো সন্দেহ নেই।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, আত্মহত্যার প্রবণতার দিক থেকে বাংলাদেশ বিশ্বে দশম স্থানে রয়েছে। বাংলাদেশে প্রতিদিন গড়ে ৩০ জন আত্মহত্যা করে। এর মধ্যে রয়েছে নারী, পুরুষ, শিশু ও সব বয়সের মানুষ। বয়স বিবেচনায় ২১ থেকে ৩০ বছর বয়সী নারীদের আত্মহত্যার হার বেশি। এই পরিসংখ্যানের বাইরে, আরও অনেক আত্মহত্যার ঘটনা রয়েছে যা আমাদের অজানা রয়ে গেছে। গত এক দশকে প্রকাশিত বিভিন্ন গবেষণা প্রতিবেদন থেকে জানা যায় যে দেশে আত্মহত্যার হার ক্রমাগত বেড়েই চলেছে।

এ বছর (২০২২) জানুয়ারি মাসের শেষ দিকে বেসরকারি সামাজিক ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন আঁচল ফাউন্ডেশন এক সমীক্ষা প্রতিবেদন প্রকাশ করে। যাতে দেখানো হয়েছে, গত বছর (২০২১) করোনা মহামারিকালে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের মাঝে আত্মহত্যার ঘটনা ঘটেছে ১০১টি। সবচেয়ে বেশি আত্মহত্যার ঘটনা ঘটেছে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মাঝে যা ৬১.৩৯ শতাংশ বা ৬২ জন।
এ ছাড়াও অতি সম্প্রতি দুই নারী শিক্ষার্থীর আত্মহত্যার ঘটনা দেশব্যাপী বেশ আলোড়ন সৃষ্টি করে। এভাবে প্রতিদিনই দেশে আত্মহত্যার ঘটনা ঘটছে।

সমাজবিজ্ঞানী, মনোবিজ্ঞানী, মনোরোগ বিশেষজ্ঞ ও অন্যান্য বিশেষজ্ঞরা আত্মহত্যা ও আত্মহত্যার প্রবণতার কারণগুলো বিভিন্নভাবে উদ্ঘাটন করার চেষ্টা করেছেন। মনোবিজ্ঞানীরা আত্মহত্যার কারণ হিসেবে বিষণ্ণতা ও মানসিক অসুস্থতার কথা উল্লেখ করেছেন,
অন্যদিকে, সমাজবিজ্ঞানীরা উল্লেখ করেছেন যে সামাজিক কারণগুলো হতাশা ও মানসিক অসুস্থতার জন্য দায়ী। সুতরাং, সামাজিক কারণগুলো বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই আত্মহত্যা সংঘটনের জন্য দায়ী।

সমাজবিজ্ঞানী এমিল ডুর্খেইম ১৮৯৭ সালে প্রকাশিত তার ‘সুইসাইড’ গ্রন্থে আত্মহত্যার জৈবিক ও মনস্তাত্ত্বিক কারণগুলোর যৌক্তিক বিশ্লেষণের মাধ্যমে প্রত্যাখ্যান করে সামাজিক কারণগুলোকে গুরুত্ব দিয়েছিলেন। তার মতে আত্মহত্যা একটি সামাজিক ঘটনা। তিনি মূলত সামাজিক সংহতি ও সামাজিক নিয়ন্ত্রণের সঙ্গে আত্মহত্যাকে সম্পর্কিত করে দেখার চেষ্টা করেছিলেন। এ প্রসঙ্গে ডুর্খেইম বলেন, যারা সমাজের সঙ্গে অতিমাত্রায় সম্পৃক্ত তারা আত্মহত্যা করে। আবার যারা সমাজ থেকে অতিমাত্রায় বিচ্ছিন্ন তারাও আত্মহত্যা করে। এই গ্রন্থে তিনি নিম্নে বর্ণিত মোট চার ধরনের আত্মহত্যা নিয়ে আলোচনা করেছেন। যেমন, আত্মকেন্দ্রিক আত্মহত্যা; পরার্থপর আত্মহত্যা; নৈরাজ্যমূলক আত্মহত্যা ও নিয়তবাদী আত্মহত্যা। তবে অনেক সমাজবিজ্ঞানী ডুর্খেইমের মতবাদকে সমালোচনা করে প্রত্যাখান করেছেন।

বিশেষজ্ঞরা বলেন, আত্মহত্যার চিন্তা জটিল এবং যেসব কারণ আত্মহত্যার দিকে পরিচালিত করে তা আরও জটিল ও বহুমাত্রিক। কোনো একক কারণ সবার জন্য সমানভাবে কাজ করে না। আমরা যা জানি তা হলো, কিছু নির্দিষ্ট কারণ ও জীবনের ঘটনা আছে যা কাউকে আত্মহত্যার জন্য আরও ঝুঁকিপূর্ণ করে তুলতে পারে। মানসিক স্বাস্থ্যের অবস্থা যেমন উদ্বেগ ও বিষণ্নতাও এক্ষেত্রে অবদান রাখে।

যারা আত্মহত্যা করে তারা তাদের পরিবার, আত্মীয়-স্বজন, বন্ধু-বান্ধব এবং তাদের আশেপাশের লোকদের সঙ্গে প্রবল সংহতিবোধ করতে পারে। আবার তারা নিজেদের অন্যদের কাছে বোঝাও মনে করতে পারে। সুতরাং উভয় ক্ষেত্রেই কারোর জন্য আত্মহত্যার ক্ষেত্র তৈরি হতে পারে। এইভাবে তারা মনে করে যে আত্মহত্যা ছাড়া তাদের কোনো বিকল্প নেই। কভিড-১৯ মহামারি বিশ্বব্যাপী অনেক মানুষের জন্য বিচ্ছিন্নতা ও দুর্বলতার অনুভূতি বৃদ্ধিতে ভূমিকা রেখেছে যা অনেকের মধ্যে আত্মহত্যার প্রবণতাকে তীব্র করে তুলেছে।

আত্মহত্যা মহাপাপ। আইনের দৃষ্টিতে অপরাধ। পৃথিবীর সব ধর্মে ও নৈতিকতায় আত্মহত্যার পক্ষে কোনো যুক্তি নেই। তাহলে মানুষ কেন আত্মহত্যার পথ বেছে নেয়? আত্মহত্যা নির্মূল বা কমিয়ে আনার জন্য বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগ এবং প্রচেষ্টা রয়েছে। আইন, বিধি ও নীতিমালাও রয়েছে। কিন্তু তা সত্ত্বেও আত্মহত্যার ঘটনা ঘটছে। যদি আমরা আত্মহত্যার পেছনের গল্পটি দেখি, তাহলে স্বাভাবিকভাবেই যে চিত্রটি মনে আসে তা হলো- যৌতুক, বেকারত্ব, পারিবারিক কলহ, প্ররোচনা, চাপ, হতাশা, প্রেমে ব্যর্থতা, চাহিদা এবং আকাঙ্ক্ষার মধ্যে পার্থক্য, নেতিবাচক চিন্তাভাবনা, লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যহীনতা, আত্মবিশ্বাসের ঘাটতি ইত্যাদি।

এসব কারণে অনেকেই আত্মহত্যার মতো জঘন্য পথ বেছে নেয়। এর থেকে পরিত্রাণের উপায় কী? বিশেষজ্ঞদের মতে, এর থেকে পরিত্রাণের জন্য, সাইকোথেরাপি, ইতিবাচক মনোভাব, সহানুভূতি, বন্ধুত্বের হাত প্রসারিত করা, কথা বলার ও আবেগ ভাগাভাগি করার পরিবেশ তৈরি করা এবং আত্ম-সমালোচনা অপরিহার্য। আত্মহত্যার প্রবণতা কমাতে হলে নীতিনির্ধারকদের প্রথমে এগিয়ে আসতে হবে। গণসচেতনতা গড়ে তুলতে হবে। সারাদেশে সরকারি ও বেসরকারি সংস্থার উদ্যোগে আরও বেশি করে সমন্বিত প্রকল্প ও কর্মসূচি গ্রহণ করা প্রয়োজন। উচ্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের জন্য যোগ্যতা অনুয়ায়ী কর্মের সুযোগ সৃষ্টি ও কর্ম নিশ্চয়তা প্রদান। ক্রমবর্ধমান অসমতা দূরীকরণ ও সেইসঙ্গে দরকার সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধি।

বাংলাদেশে গত কয়েক বছরের আত্মহত্যার পরিসংখ্যান বিশেষত কভিড-১৯ পরিস্থিতিতে এই বিষয়ের পরিসংখ্যান এবং তার ফলাফল যথেষ্ট ভীতিকর। কভিড-১৯ ভাইরাস নিয়ে আমরা যতখানি আতঙ্কিত, আত্মহত্যায় মৃত্যুবরণ করা অসংখ্য মানুষকে নিয়ে কিন্তু আমরা ততটা চিন্তিত নই।

এমন পরিস্থিতিতে বিশেষজ্ঞরা বলেন, আমরা যদি তাদের শেখাতে পারি যে ভালো-মন্দ যাই ঘটুক না কেনো, সেটা জীবনেরই অংশ এবং আত্মবিশ্বাস না হারিয়ে তাদের ধৈর্য্যশীল হতে হবে। ফলশ্রুতিতে এই শিক্ষার্থীরা যেকোনো প্রতিকূল পরিস্থিতি কাটিয়ে উঠতে পারবে। পাশাপাশি সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগে বাস্তবমুখী কিছু জ্ঞান যেমন- আর্থিক ব্যবস্থাপনা, আবেগ নিয়ন্ত্রণ, ক্যারিয়ার কেন্দ্রিক দক্ষতা উন্নয়ন ইত্যাদি আত্মহত্যা হ্রাসে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।

আইএএসপি যেমন বলেছে আত্মহত্যা রোধ করা প্রায়শই সম্ভব এবং এর প্রতিরোধে আমি, আপনি সবাই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারি। কারো জীবনের কঠিনতম সময়ে আমাদের কর্মের মাধ্যমে―সমাজের সদস্য হিসেবে, শিক্ষক হিসেবে, বাবা-মা হিসেবে, বন্ধু হিসেবে, সহকর্মী হিসেবে বা প্রতিবেশী হিসেবে অবদান রাখতে পারি। যারা আত্মঘাতী হবার মতো সংকটে ভুগছেন বা যারা কারো আত্মহত্যায় শোকাহত তাদের সহায়তায় আমরা সবাই ভূমিকা রাখতে পারি। তাদের পাশে দাঁড়াতে পারি- সুস্থ ও স্বাভাবিক সমাজ জীবনের জন্য যা অপরিহার্য। অন্যথায় এ মৃত্যুর মিছিল থামানো সম্ভব হবেনা বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করেন।

লেখক: গবেষক ও উন্নয়নকর্মী

এসএন

Header Ad
Header Ad

অবশেষে গোবিন্দগঞ্জ উপজেলাবাসী পেল ঢাকাগামী আন্তঃনগর ট্রেনের যাত্রাবিরতি

ছবি : ঢাকাপ্রকাশ

অবশেষে ঢাকাগামী আন্তঃনগর ট্রেনের যাত্রাবিরতি পেলো রংপুর বিভাগের প্রবেশদ্বার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলাবাসী। গাইবান্ধার শিল্পাঞ্চলখ্যাত মহিমাগঞ্জ রেলস্টেশনে দীর্ঘদিন ধরে রাজধানী ঢাকাগামী অন্তত একটি আন্তঃনগর ট্রেনের যাত্রাবিরতির দাবি জানিয়ে আসছিলেন স্থানীয়রা।

তাদের এ দাবির পরিপ্রেক্ষিতে সোমবার (১০ মার্চ) থেকে আন্তঃনগর বুড়িমারী এক্সপ্রেস ট্রেনের মহিমাগঞ্জ স্টেশনে যাত্রাবিরতির সিদ্ধান্ত নিয়েছে রেল কর্তৃপক্ষ। এ খবরে পুরো উপজেলায় বইছে আনন্দের বন্যা।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, সান্তাহার-লালমনিরহাট-রংপুর রেল রুটের ওপর দিয়ে তিনটি আন্তঃনগর ট্রেন চলাচল করলেও মহিমাগঞ্জ স্টেশনে কোনো ট্রেনের যাত্রাবিরতি ছিল না। অথচ শিক্ষা, সংস্কৃতি ও বাণিজ্যের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ এই অঞ্চলে ট্রেনের যাত্রাবিরতির প্রয়োজনীয়তা দীর্ঘদিন ধরেই অনুভূত হচ্ছিল। এ বিষয়ে এলাকাবাসীর দাবির পরিপ্রেক্ষিতে চলতি মাসের ১০ তারিখ থেকে কার্যকর হওয়া নতুন ৫৪ নং টাইম টেবিলে বুড়িমারী এক্সপ্রেস ট্রেনের মহিমাগঞ্জ স্টেশনে যাত্রাবিরতি যুক্ত করা হয়েছে।

নতুন সময়সূচি অনুযায়ী, সপ্তাহের প্রতি মঙ্গলবার ঢাকামুখী (ডাউন) ও বুধবার বুড়িমারীমুখী (আপ) ট্রেন দুটি বন্ধ থাকবে। অন্যান্য দিন বিকেল ৩:৪৫ মিনিটে বুড়িমারীমুখী (আপ) ও রাত ১:৩০ মিনিটে ঢাকামুখী (ডাউন) বুড়িমারী এক্সপ্রেস ট্রেন মহিমাগঞ্জ রেলস্টেশনে যাত্রাবিরতি দেবে।

মহিমাগঞ্জ রেলওয়ে স্টেশন মাস্টার সোহাগ খান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। এদিকে, গোবিন্দগঞ্জ উপজেলাবাসীর দীর্ঘদিনের দাবি পূরণ করায় বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাপরিচালক মো. আফজাল হোসেন একে "ঈদের উপহার" হিসেবে অভিহিত করেছেন।

Header Ad
Header Ad

পাকিস্তানকে বড় ধরনের সুখবর দিল চীন

ছবি: সংগৃহীত

চীন সম্প্রতি পাকিস্তানের $২ বিলিয়ন ঋণ মওকুফ করেছে, যা দেশটির অর্থনৈতিক অবস্থার উন্নতিতে গুরুত্বপূর্ণ সহায়ক হবে। পাকিস্তানের অর্থ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা খুররম শেহজাদ শনিবার (৯ মার্চ) রয়টার্সকে পাঠানো এক টেক্সট বার্তায় এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

পাকিস্তান বর্তমানে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) থেকে $৭ বিলিয়ন বেইলআউট প্যাকেজের আওতায় তার আর্থিক সংকট মোকাবিলা করছে। ঋণের প্রথম কিস্তি পর্যালোচনার পর্যায়ে রয়েছে, যা সফল হলে পাকিস্তান অতিরিক্ত $১ বিলিয়ন সহায়তা পেতে পারে।

বিশ্লেষকদের মতে, এই চীনা সহায়তা পাকিস্তানের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, আন্তর্জাতিক অর্থনৈতিক সহায়তা পাওয়া আইএমএফ ঋণের অনুমোদনের জন্য একটি মূল শর্ত ছিল। পাকিস্তান ২০২৫ অর্থবছরে $২২ বিলিয়ন বৈদেশিক ঋণ পরিশোধে বাধ্য, যার মধ্যে প্রায় $১৩ বিলিয়ন দ্বিপাক্ষিক আমানতের অংশ।

বিশ্ব অর্থনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, চীনের এই ঋণ মওকুফ পাকিস্তানের অর্থনীতিকে কিছুটা স্বস্তি দেবে, তবে দেশটির দীর্ঘমেয়াদি আর্থিক স্থিতিশীলতার জন্য আরও কার্যকর অর্থনৈতিক সংস্কার প্রয়োজন।

Header Ad
Header Ad

টাঙ্গাইলে যৌথ সংবাদ সম্মেলন: চার দফা দাবিতে ম্যাটস শিক্ষার্থীদের আন্দোলন

ছবি : ঢাকাপ্রকাশ

টাঙ্গাইলে চার দফা দাবির বাস্তবায়ন চেয়ে যৌথভাবে সংবাদ সম্মেলন করেছে ডিপ্লোমা মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন (বিডিএমএ), ডিপ্লোমা মেডিকেল প্রাইভেট প্র্যাকটিশনার অ্যাসোসিয়েশন (বিডিএমপিপিএ) ও ম্যাটস শিক্ষার্থী পরিষদ।

রোববার (৯ মার্চ) টাঙ্গাইল প্রেসক্লাব মিলনায়তনে আয়োজিত এ সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন টাঙ্গাইল ডিপ্লোমা অ্যাসোসিয়েশনের সদস্য সচিব ডা. আব্দুল বাতেন।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, শিক্ষা পরিসংখ্যান ২০২২ ও বিএমডিসির সর্বশেষ তথ্যমতে দেশে ডিপ্লোমা শিক্ষার্থীর সংখ্যা প্রায় ৬০ হাজার এবং বিএমডিসি নিবন্ধিত ডিএমএফ চিকিৎসক ৩০ হাজার। স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের হিসেব অনুযায়ী, বর্তমানে ৫৫ হাজার ডিপ্লোমা চিকিৎসক (ডিএমএফ) উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও জেলা সদর হাসপাতালে কর্মরত।

ডা. আব্দুল বাতেন বলেন, স্বাধীনতার ৫৩ বছর পরও ম্যাটস শিক্ষার্থীরা নানা বৈষম্যের শিকার। দীর্ঘ একযুগ ধরে স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের দুই হাজারের বেশি শূন্যপদ থাকলেও নিয়োগ বন্ধ রয়েছে। এতে প্রান্তিক জনগোষ্ঠী চিকিৎসাসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে এবং ম্যাটস পাস করা শিক্ষার্থীরা বেকার হয়ে পড়ছে।

তিনি আরও বলেন, এসএসসি পাস করার পর চার বছর মেয়াদি মেডিকেল ডিপ্লোমা কোর্স (ম্যাটস) করা শিক্ষার্থীদের পুনরায় স্কুল নামের প্রতিষ্ঠানে ভর্তি হতে হয়, যা অসংগতিপূর্ণ। সাধারণত স্কুলের পর কলেজে ভর্তি হওয়ার নিয়ম থাকলেও দেশের ১৬টি সরকারি ও ২০০টি বেসরকারি ম্যাটসের শিক্ষার্থীদের স্কুল পাসের পর আবার স্কুলে ভর্তি হতে বাধ্য করা হচ্ছে।

ম্যাটস শিক্ষার্থীদের চার দফা দাবি
১. শূন্যপদে নিয়োগ প্রদান এবং কমিউনিটি ক্লিনিকসহ সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে নতুন পদ সৃষ্টি।
২. প্রতিষ্ঠানের নাম পরিবর্তন করে কারিকুলাম সংশোধন ও ইন্টার্নশিপ লগবুক প্রণয়ন।
৩. বিএম অ্যান্ড ডিস স্বীকৃত ক্লিনিক্যাল বিষয়ে উচ্চশিক্ষার সুযোগ প্রদান।
৪. অ্যালাইড হেলথ প্রফেশনাল বোর্ডের পরিবর্তে 'মেডিকেল এডুকেশন বোর্ড' নামকরণ ও সংশোধনী বাস্তবায়ন।

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন বিডিএম’র টাঙ্গাইল শাখার উপদেষ্টা ডা. দেলোয়ার হোসেন, প্রাক্তন সভাপতি ডা. সিআর দাস, বিডিএম’র কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি ডা. আশরাফুজ্জামান, ডা. মোতালেব হোসেন, ডা. শিপলু, ডা. সোহেল রানা এবং ছাত্র প্রতিনিধি সৈকত জাহান আকাশ। এছাড়া বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকরাও উপস্থিত ছিলেন।

ম্যাটস শিক্ষার্থীরা তাদের ন্যায্য অধিকার ও কর্মসংস্থানের দাবি আদায়ে প্রয়োজনে আরও কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

অবশেষে গোবিন্দগঞ্জ উপজেলাবাসী পেল ঢাকাগামী আন্তঃনগর ট্রেনের যাত্রাবিরতি
পাকিস্তানকে বড় ধরনের সুখবর দিল চীন
টাঙ্গাইলে যৌথ সংবাদ সম্মেলন: চার দফা দাবিতে ম্যাটস শিক্ষার্থীদের আন্দোলন
সামরিক বাহিনীর ৮ সংস্থা ও স্থাপনার নাম পরিবর্তন
কৃষি গুচ্ছ ভর্তি প্রক্রিয়ায় বৈষম্যের অভিযোগ
ঈদযাত্রার ট্রেনের আগাম টিকিট ১৪ মার্চ থেকে, শতভাগ অনলাইনে
ছাত্রদলের কর্মসূচির প্রশংসা করলেন শিবির সভাপতি
আমার কাছে শাকিবই শাহরুখ খান: অপু বিশ্বাস
মব জাস্টিস যেখানে, গ্রেপ্তার সেখানেই: তথ্য উপদেষ্টা
মুচলেকা দিয়ে ছাড়া পেলেন সাবেক এমপি’র বাসা দখল করা ‘সমন্বয়ক’
ধর্ষণ মামলার তদন্ত ১৫ দিনে, বিচার শেষ করতে হবে ৯০ দিনের মধ্যে: আইন উপদেষ্টা
ধর্ষণ প্রতিরোধে নারীদের কারাতে শেখার আহ্বান চিত্রনায়ক রুবেলের
সারা দেশে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের তালিকা প্রস্তুত করছে পুলিশ
আদালতে তোলার সময় ‘ধর্ষক’কে গণধোলাই
মাগুরায় শিশু ধর্ষণ: ১৮০ দিনের মধ্যে বিচার শেষ করার নির্দেশ
ধর্ষণ-নিপীড়ন ইস্যুতে ছাত্রদলের নতুন কর্মসূচি
ছাত্রীকে ধর্ষণচেষ্টা, গ্রেপ্তার শিক্ষক বললেন ‘শয়তানের প্ররোচনায়’
বনশ্রীতে স্বর্ণ ডাকাতি মামলায় গ্রেপ্তার আমিনুল ছাত্রলীগের নেতা
সাবেক এমপির বাড়িকে পাগলাগারদ বানানো হলো না ‘সমন্বয়কের’(ভিডিও)
ধর্ষণের শিকার শিশুটির সব ছবি অপসারণ করতে হাইকোর্টের নির্দেশ