শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪ | ৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
Dhaka Prokash
Header Ad

দৃঢ়চেতা শেখ হাসিনা ও একজন নিভৃতচারী অর্থনীতিবিদ

আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকার ২০০৯ সালে ক্ষমতায় আসার পর অনেক উন্নয়ন প্রকল্পের পাশাপাশি বেশকিছু মেগাপ্রকল্প গ্রহণ করেন। এসবের মধ্যে উল্লেখযোগ্য একটি হলো ‘পদ্মাসেতু নির্মাণ’ প্রকল্প। এটি বাংলাদেশিদের জন্য একটি স্বপ্ন হিসেবে চিত্রিত বা রূপায়িত হয়েছিল। আর এই স্বপ্নের রূপকার ছিলেন বঙ্গবন্ধু কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্রের ফলে এবং তথাকথিত দুর্নীতির অভিযোগ তুলে বিশ্বব্যাংক যখন ২৯ জুন ২০১২ সালে পদ্মাসেতুর ঋণ চুক্তি বাতিল করে এবং অন্যান্য দাতাগোষ্ঠীও সরে দাঁড়ায় তখন ওই বছরই মাননীয় প্রধানমন্ত্রী নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মাসেতু নির্মাণের দৃঢ় সংকল্প ব্যক্ত করেন। এ কথা অনস্বীকার্য যে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সুদৃঢ় মনোভাবের বাস্তব রূপায়নই আজকের স্বপ্নের পদ্মাসেতু। আমদের মতো আমজনতার এটা জানা নেই যে, তিনি কিসের ভিত্তিতে, কোন ভরসায় এরকম একটি বড় সিদ্ধান্ত নিতে পেরেছিলেন।

তবে এই ঘটনার পরপরই আমরা দেখতে পেয়েছিলাম বঙ্গবন্ধুর মানবিক উন্নয়ন দর্শনের একজন নিস্বার্থ ছাত্র ও স্বনামধন্য গবেষক অধ্যাপক ড. আবুল বারকাত পদ্মাসেতু নিয়ে গভীর বিশ্লেষণধর্মী ও প্রায়োগিক একটি গবেষণা প্রবন্ধ প্রকাশ করেন যা ওইসময় সাধারণ মানুষের মধ্যে ব্যাপক সাড়া জাগায়। বৃহৎ গবেষণাপত্রটির শিরোনাম ছিল ‘নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু: জাতীয় ঐক্য সৃষ্টির শ্রেষ্ঠ সুযোগ’। গবেষণাপত্রটি বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতি কর্তৃক আয়োজিত ‘নিজ অর্থে পদ্মাসেতু’ শীর্ষক জাতীয় সেমিনারে মূল প্রবন্ধ হিসেবে ১৯ জুলাই ২০১২ সালে ড. আবুল বারকাত কর্তৃক পঠিত হয়। ওই গবেষণাপত্রেই তিনি উল্লেখ করেন ‘বিশ্বব্যাংক কর্তৃক পদ্মা সেতুর ঋণ চুক্তি বাতিল অনৈতিক ও মহা অন্যায় তবে তা বাংলাদেশের জন্য এক মহা আশীর্বাদ (blessing in disguise)। ১৯৭২-৭৩ এর বাংলাদেশের অর্থনীতি আর ২০১২-র অর্থনীতি এক কথা নয়। এখন আমাদের অর্থনীতি অনেক গুণ বেশি শক্তিশালী, জনগণ অনেকগুণ বেশি আত্মশক্তি-আত্মমর্যাদা সম্পন্ন। পদ্মা সেতু নির্মাণে জনগণ এখন অনেকগুণ বেশি ত্যাগ স্বীকারে সর্বাত্মক প্রস্তুত। জাতীয় ঐক্য সৃষ্টি ও তা সুসংহতকরণের এখনই শ্রেষ্ঠ সময়।’

২০১২ সালের ওই গবেষণাপত্রে তিনি দেখান যে ‘চার বছরেই পদ্মা সেতু নির্মাণ সম্ভব এবং এর জন্য ব্যয় হবে আনুমানিক ২৪,০০০ কোটি টাকা। আর ঠিক একই সময়ে অর্থাৎ ৪ বছর সময়কালে ১৪টি বিভিন্ন উৎস থেকে সম্ভাব্য অর্থ সংস্থান হতে পারে ৯৮,৮২৫ কোটি টাকা, সেহেতু পদ্মা সেতুর নির্মাণ কাজ পরিকল্পিতভাবে এমুহূর্তেই শুরু করা সম্ভব। অর্থ সংস্থানের ক্ষেত্রে বিশেষ জোর দিতে হবে সুদ বিহীন উৎসসমূহে― যেসব উৎস থেকে সম্ভাব্য আহরণ হতে পারে মোট ৪৯,১৫০ কোটি টাকা অর্থাৎ ২টি পদ্মা সেতু নির্মাণ ব্যয়ের সমপরিমাণ অর্থ।’

তিনি আরও উল্লেখ করেন, ‘সেই সঙ্গে জোর দিতে হবে নিজস্ব অর্থায়নের বৈদেশিক মুদ্রা আহরণ সংশ্লিষ্ট খাতগুলো, এ ক্ষেত্রে করণীয় হবে নিম্নরূপ: বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বৃদ্ধি করা; প্রবাসীদের প্রেরিত হুন্ডিকৃত অর্থ উত্তরোত্তর অধিক হারে ব্যাংকিং চ্যানেলে আনা; পদ্মা সেতু বন্ড (৮ থেকে ৩০ বছর মেয়াদী), সার্বভৌম বন্ড ও পদ্মা সেতু আইপিওতে প্রবাসী-বিদেশিদের বিনিয়োগে আগ্রহী করা; টাকার অঙ্কের উদ্বৃত্ত অর্থ (৪ বছরে মোট ৭৪,২২৫ কোটি টাকা) উৎপাদনশীল বিনিয়োগ করে রপ্তানি আয় বৃদ্ধি করা।’

তিনি বলেন, ‘করণীয় বিষয়াদির মধ্যে গুরুত্বসহ বিবেচনা করতে হবে- (১) তিনটি উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন কমিটি গঠন। সর্বোচ্চ নীতি নির্ধারণী ও বাস্তবায়ন সমন্বয়কারী কমিটি হিসেবে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সভাপতিত্বে পদ্মা সেতু ইনটিগ্রিটি কমিটি, আর সঙ্গে থাকবে অর্থায়ন-অর্থসংস্থান কমিটি এবং কারিগরী-প্রযুক্তি কমিটি, (২) ‘পদ্মা সেতু পাবলিক লিমিটেড কোম্পানি’ গঠন করে তার মাধ্যমে বাজারে আইপিও ছাড়া, (৩) পদ্মা সেতুসহ বৃহৎ অবকাঠামোর জন্য নির্মাণ সামগ্রী (যন্ত্রপাতি, যন্ত্রাংশ, কাঁচামাল) উৎপাদন নিমিত্ত শিল্প স্থাপনে পদক্ষেপ নেওয়া, (৪) সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞদের (দেশে-বিদেশে অবস্থানরত) হালনাগাদ তালিকা প্রণয়ন ও সংরক্ষণসহ জরুরিভিত্তিতে এবং নিয়মিত তাদের পরামর্শ গ্রহণের জন্য জীবন্ত-রিয়েল টাইম ওয়েব সাইট চালু রাখা, (৫) পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে ‘Friends of Padma Bridge, Bangladesh’ চেতনায় উদ্বুদ্ধ সংগঠন গড়ে তোলা, (৬) গণ অবহিতকরণ কার্যক্রমসহ সংশ্লিষ্ট প্রচার ব্যবস্থা শক্তিশালী করা।’

হিসেবপত্তর করে তিনি আরও দেখান যে ‘পদ্মা সেতু নির্মাণের ৩০ বছরের মধ্যেই নির্মাণ ব্যয় উঠে আসবে; ১০ম বছর থেকে যেহেতু ঘাটতি থাকবে না সেহেতু বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে পদ্মা সেতুর জন্য আর বরাদ্দ রাখার প্রয়োজন হবে না; সেতু চালু হওয়ার ৪০-তম বছরে নিট ক্যাশ ফ্লো ১০,০০০ কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাবে আর ১০০তম বর্ষে তা ছাড়িয়ে যাবে ২,০০,০০০ কোটি টাকা; উন্নত কানেকটিভিটি সমগ্র অর্থনীতির (শুধু দক্ষিণ-দক্ষিণ পশ্চিম অঞ্চলের নয়) চেহারা আমূল পাল্টে দেবে। সুতরাং নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু বিনির্মাণ-বিষয়টি হতে পারে উন্নয়ন আন্দোলনের (development as movement) বিশ্ব নন্দিত ‘Made in Bangladesh’।

বাঙালির অহংকার ও গর্ব―স্বপ্নের পদ্মাসেতুর শুভ উদ্বোধন হয়েছে ২৫ জুন। এ নিয়ে দেশজুড়ে চলছে বেশ আনন্দ উল্লাস। আমাদের দেশের বিজ্ঞ সমাজের অনেকেই এখন এ নিয়ে বক্তব্য ও বিবৃতি দিচ্ছেন। কেউ কেউ দাবি করেও বসছেন যে তারাই পদ্মা সেতু যে নিজস্ব অর্থে তৈরি করা সম্ভব তার পক্ষে প্রথম যুক্তিদাতা। কিন্তু সত্য হলো ‘দুর্নীতির ষড়যন্ত্র’ হচ্ছে বলে বিশ্বব্যাংক পুরোপুরি উদ্দেশ্যমূলকভাবে পদ্মা সেতুর ঋণ চুক্তি যখন বাতিল ঘোষণা করল, যার ফলে বিশ্বব্যাপী দেশ-জাতি-সরকারের ভাবমূর্তির অপরিসীম ক্ষতি হলো; আর অন্যদিকে, সামনে ২০১৪ সালের নির্ধারিত জাতীয় সংসদ নির্বাচন―ঠিক এ ধরনের জটিল পরিস্থিতিতে ‘নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণ সম্ভব’ শীর্ষক গভীর গবেষণালব্ধ লিখিত দলিল নিয়ে জাতির সামনে হাজির হয়েছিলেন বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতির সভাপতি, ‘গণমানুষের অর্থনীতিবিদ’ অধ্যাপক ড. আবুল বারকাত। আর সামগ্রিকভাবে প্রতিকূল এক জটিল অবস্থার মধ্যে বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতি কালক্ষেপণ না করে ১৯ জুলাই ২০১২ তারিখে ‘নিজ অর্থে পদ্মা সেতু’ শীর্ষক জাতীয় সেমিনার আয়োজন করে।

উক্ত জাতীয় সেমিনারে অধ্যাপক আবুল বারকাত ‘নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু: জাতীয় ঐক্য সৃষ্টির শ্রেষ্ঠ সুযোগ’ শিরোনামে তার সৃজনশীল ও বাস্তবধর্মী গবেষণাকর্ম উত্থাপন করেন। নিজস্ব অর্থে পদ্মা সেতু নির্মাণ যে সম্ভব এ দেশে এ কথা বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতির প্লাটফর্মে তিনিই প্রথম নৈতিক, অর্থনৈতিক, সামাজিক, রাজনৈতিক ও প্রায়োগিক যুক্তি দিয়ে বিস্তারিত ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণপূর্বক উত্থাপন করেন।

অধ্যাপক ড. আবুল বারকাত ছাড়া কেউ তখন বিস্তারিত হিসেবপত্তরসহ উল্লেখ করেননি যে নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মাসেতু নির্মাণ সম্ভব। একমাত্র তিনিই উল্লেখ করেছেন, বিশ্বব্যাংক ‘দুর্নীতির ষড়যন্ত্র’ হচ্ছে বলে ঋণ চুক্তি বাতিল করে। এটিই ছিল বিশ্বব্যাংকের সঙ্গে একমাত্র মেগা প্রকল্পের চুক্তি। যা চুক্তি স্বাক্ষরের পর বাতিল করা হয়। কারণটি ছিল খুবই সোজা―মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও বিশ্বব্যাংক ২০১৪ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগকে আর ক্ষমতায় দেখতে চাইনি। এটি তাদের দ্বারা গতানুগতিক চর্চা করা ‘Regime Change’ ফর্মূলা।

এ কথা নিঃসন্দেহে বলা যায় যে, পদ্মাসেতু এ দেশের রাজনৈতিক-অর্থনৈতিক উন্নয়নের ইতিহাসে এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। এর অর্থনৈতিক গুরুত্ব অপরিসীম। বাংলাদেশ উন্নত দেশে রূপান্তরিত হওয়ার ক্ষেত্রে ও জাতীয় একতা বৃদ্ধিতে এই সেতু মেলবন্ধন হিসেবে কাজ করবে। এক্ষেত্রে ড. বারকাত কর্তৃক ‘নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু: জাতীয় ঐক্যের শ্রেষ্ঠ সুযোগ’, গবেষণা কর্মটি তাৎপর্যপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে বলেই প্রতীয়মান হয়।

বাংলাদেশের উন্নয়ন ভাবনা ও গবেষণায় নীরবে, নিভৃতে ড. বারকাত যে অবদান রেখেছেন ও রেখে যাচ্ছেন তার গুরুত্ব অপরিসীম। এ পর্যন্ত তিনি যত গবেষণাকর্ম করেছেন সেসবের কয়েকটি মাইলফলক বা দিকনির্দেশক হিসেবে যেমন জাতীয় ও আর্ন্তজাতিক পর্যায়ে স্বীকৃত হয়েছে তেমনি এদেশের উন্নয়নে তথা নীতি প্রণয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু বাস্তবায়ন শীর্ষক গবেষণাটিও ড. বারকাতের একটি দিকনির্দেশক ও মাইলফলক গবেষণা।

২০১২ সালে গবেষিত ও প্রকাশিত ড. আবুল বারকাতের ওই গবেষণা পুস্তিকাটি একটি নতুন সংযোজিত অধ্যায়সহ ২০২১ সালে গ্রন্থাকারে দ্বিতীয়বার প্রকাশিত হয়। গ্রন্থটির শিরোনাম ‘নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু জাতীয় ঐক্য সৃষ্টির শ্রেষ্ঠ সুযোগ‒ ২০১২ সালে গবেষণায় প্রমাণিত‒ ২০২১ সালে দৃশ্যমান বাস্তবতা’। গ্রন্থটির দ্বিতীয় প্রকাশ সম্পর্কে বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতির তৎকালীন কার্যনির্বাহক কমিটি যে ভূমিকা-বক্তব্য প্রদান করেছেন তা তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করি। ‘নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণ সম্ভব’ দেশ ও জাতির গৌরবান্বিত উন্নয়ন-প্রগতিতে অধ্যাপক আবুল বারকাতের এই দিকনির্দেশক গবেষণাকর্মটির জন্য পুরো জাতি দেশপ্রেমিক অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক আবুল বারকাতের প্রতি কৃতজ্ঞ থাকবে এ আমাদের দৃঢ় বিশ্বাস।’

পরিশেষে বলা যায় আবুল বারকাত হলেন সেই অর্থনীতিবিদ যিনি সর্বদা দেশের ও সাধারণ মানুষের কল্যাণের কথা চিন্তা করেন, তাদের কথা বলেন, তাদের উন্নয়নে কাজ করেন। সেজন্য তিনি গণমানুষের অর্থনীতিবিদ হিসেবেও খ্যাত। তিনি অন্তরে ধারণ করে আছেন বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা বির্নিমাণের স্বপ্ন। নিজ অর্থে পদ্মা সেতু বাস্তবায়নের সম্ভাব্যতা নিয়ে তিনি নীরবে, নিভৃতে কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে গবেষণা করে যে তথ্য জাতির সামনে তুলে ধরেছিলেন সেসময় তেমনটি আর কেউ করেছিল বলে জানা নেই। তার সুগভীর ও পাণ্ডিত্যপূর্ণ গবেষণার মাধ্যমে প্রতি মুহূর্তে তিনি এদেশে বৈষম্যহীন, অসাম্প্রদায়িক, আলোকিত ও শোভন সমাজ বির্নিমাণে কাজ করে যাচ্ছেন।

লেখক: গবেষক ও উন্নয়নকর্মী

আরএ/

Header Ad

খালেদা জিয়ার সঙ্গে কুশল বিনিময় করলেন মাহফুজ-আসিফ-নাহিদ

ছবি: সংগৃহীত

বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সঙ্গে দেখা করে কুশল বিনিময় করেছেন উপদেষ্টা মাহফুজ আলম, স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া এবং ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি উপদেষ্টা মো. নাহিদ ইসলাম।

বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) বিকেলে সেনাকুঞ্জে সশস্ত্র বাহিনী দিবসের অনুষ্ঠানে তাদের এ কুশল বিনিময় হয়।

সেনাকুঞ্জে খালেদা জিয়া পৌঁছালে উপস্থিত সবাই তাকে স্বাগত জানান। অনুষ্ঠানের এক পর্যায়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ৩ সমন্বয়ক ও সরকারের উপদেষ্টা তার পাশে এসে দাঁড়ান এবং শারীরিক খোঁজখবর নেন। এ সময় খালেদা জিয়া তাদের অভিনন্দন জানান এবং দেশকে এগিয়ে নিতে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার পরামর্শ দেন।

এ সময় এই ৩ উপদেষ্টা বিএনপি চেয়ারপারসনের কাছে দোয়া চান এবং সরকারের সংস্কার কাজে তার সর্বাত্মক সহযোগিতা চান।

এদিকে সেনাকুঞ্জে গেলে খালেদা জিয়ার সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, শহিদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের স্ত্রী খালেদা জিয়া এখানে এসেছেন। একযুগ তিনি আসার সুযোগ পাননি। আমরা গর্বিত এই সুযোগ দিতে পেরে। দীর্ঘদিনের অসুস্থতা সত্ত্বেও বিশেষ দিনে সবার সঙ্গে শরিক হওয়ার জন্য আপনাকে আবারও ধন্যবাদ। আপনার আশু রোগমুক্তি কামনা করছি।

Header Ad

দেশের বাজারে আবারও বাড়ল স্বর্ণের দাম

ছবি: সংগৃহীত

আবারও স্বর্ণের দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশন (বাজুস)। এবার ভরিতে ১ হাজার ৯৯৪ টাকা বাড়িয়ে ২২ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের দাম ১ লাখ ৩৯ হাজার ৪৪৩ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। যা আজকেও ছিল এক লাখ ৩৭ হাজার ৪৪৯ টাকা।

বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) সন্ধ্যায় এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে বাজুস। শুক্রবার (২২ নভেম্বর) থেকেই নতুন এ দাম কার্যকর হবে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, স্থানীয় বাজারে তেজাবি স্বর্ণের (পিওর গোল্ড) মূল্য বেড়েছে। ফলে সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় স্বর্ণের নতুন দাম নির্ধারণ করা হয়েছে।

নতুন দাম অনুযায়ী, প্রতি ভরি ২২ ক্যারেটের স্বর্ণের দাম পড়বে ১ লাখ ৩৯ হাজার ৪৪৩ টাকা। এ ছাড়া ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি ১ লাখ ৩৩ হাজার ৯৮ টাকা, ১৮ ক্যারেটের প্রতি ভরি ১ লাখ ১৪ হাজার ৮৬ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম ৯৩ হাজার ৬৭৪ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে বাজুস আরও জানায়, স্বর্ণের বিক্রয়মূল্যের সঙ্গে আবশ্যিকভাবে সরকার-নির্ধারিত ৫ শতাংশ ভ্যাট ও বাজুস-নির্ধারিত ন্যূনতম মজুরি ৬ শতাংশ যুক্ত করতে হবে। তবে গয়নার ডিজাইন ও মানভেদে মজুরির তারতম্য হতে পারে।

স্বর্ণের দাম কমানো হলেও দেশের বাজারে অপরিবর্তিত রয়েছে রুপার দাম। দেশে ২২ ক্যারেটের এক ভরি রুপা বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার ৫৭৮ টাকায়। এ ছাড়া ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি ২ হাজার ৪৪৯ টাকা, ১৮ ক্যারেটের প্রতি ভরি ২ হাজার ১১১ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি রুপা বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ৫৮৬ টাকায়।

এর আগে, সবশেষ গত ১৯ নভেম্বর দেশের বাজারে স্বর্ণের দাম সমন্বয় করেছিল বাজুস। সে সময় টানা চার দফা কমার পর ভরিতে ২ হাজার ৯৪০ টাকা বাড়িয়ে ২২ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের দাম ১ লাখ ৩৭ হাজার ৪৪৯ টাকা নির্ধারণ করেছিল সংগঠনটি।

এ ছাড়া ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি ১ লাখ ৩১ হাজার ১৯৭ টাকা, ১৮ ক্যারেটের প্রতি ভরি ১ লাখ ১২ হাজার ৪৫৩ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম ৯২ হাজার ২৮৬ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছিল। যা কার্যকর হয়েছে গত ২০ নভেম্বর থেকে।

এ নিয়ে চলতি বছরে এখন পর্যন্ত দেশের বাজারে ৫১ বার স্বর্ণের দাম সমন্বয় করা হয়েছে। যেখানে ৩০ বার দাম বাড়ানো হয়েছে, আর কমানো হয়েছে ২১ বার।

Header Ad

‘দেশের মানুষ এখনো কোনো রাজনৈতিক দলকেই বিশ্বাস করতে পারে না’

ছবি: সংগৃহীত

দেশের জনপ্রিয় নির্মাতা আশফাক নিপুন। কাজের পাশাপাশি সামাজিক মাধ্যমেও বেশ সরব তিনি। কথা বলেন নানা ইস্যু নিয়ে। সেই ধারাবাহিকতায় সরকার পতনের পর অন্তবর্তীকালীন সরকার গঠনেও বিভিন্ন সময় নিজের আকাঙ্ক্ষা, প্রত্যাশার কথা জানিয়েছেন। পাশাপাশি রাজনৈতিক দলগুলোর উদ্দেশ্যেও বিভিন্ন বার্তা দিয়েছেন। এবার এমনি একটি বার্তায় দেশের রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি জনগনের আস্থার বিষয়ে আক্ষেপ জানালেন এই নির্মাতা।

বুধবার (২০ নভেম্বর) আশফাক নিপুন তার ফেসবুকে দেওয়া এক পোস্টে লেখেন, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে সর্বস্তরের ছাত্র এবং সাধারণ মানুষ রাস্তায় নেমে এসেছিল, বাসায় বসে বসে দোয়া করেছিল, যার যা সামর্থ্য দিয়ে সহায়তা করেছিল। কারণ, তারা দেখেছিল লড়াইটা আওয়ামী ফ্যাসিস্ট শাসক বনাম সাধারণ ছাত্র-জনতার। এটাও অস্বীকার করার কোনো উপায় নাই যে এই আন্দোলন বেগবান করতে বিরোধী সকল দলের কর্মীদের ভূমিকা অনস্বীকার্য। তাদের সংগ্রামও গত দেড় দশকের। কিন্তু এটা যদি শুধুমাত্র রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যকার লড়াই হতো তাহলে সাধারণ মানুষ এই লড়াই থেকে দূরে থাকত। সেই প্রমাণ বিগত ১৫ বছরে আছে।

‘দেশের মানুষ এখনো কোনো রাজনৈতিক দলকেই বিশ্বাস করতে পারে না’

কারণ হিসেবে তিনি বলেন, দেশের সাধারণ মানুষ এখনো দেশের কোনো রাজনৈতিক দলকেই পুরোপুরি বিশ্বাস করতে পারে না। এটাই বাস্তবতা। এই বাস্তবতা মেনে সকল রাজনৈতিক দলগুলোর উচিত কীভাবে সাধারণ জনগণের ভেতর নিজের দলের প্রতি আস্থা তৈরি করা যায় সেই বিষয়ে নিরলস কাজ করা। এই আস্থা ক্ষমতায় গিয়ে অর্জন করা সম্ভব না। কারণ, সাধারণ মানুষ আজীবন এস্টাবলিশমেন্টের বিপক্ষে। এই আস্থা অর্জন করতে হয় ক্ষমতা বলয়ের বাইরে থেকেই।

নিপুন আরও লিখেন, অরাজনৈতিক সরকার দিয়ে দীর্ঘদিন দেশ চালানো যেমন কাজের কথা না ঠিক তেমনি রাজনৈতিক সরকার হতে চাওয়া সকল রাজনৈতিক দলগুলোর বোঝা উচিত মুক্তিযুদ্ধের পরে বাংলাদেশের ইতিহাসের সবচেয়ে বড় গণঅভ্যুত্থান সংগঠিত হয়েছে সকল প্রকার পূর্বানুমান (যেমন- বর্ষাকালে আন্দোলন হয় না, নির্বাচনের আগেই কেবল জোরেশোরে আন্দোলন হয়, ঘোষণা দিয়ে বিরোধী সকল পক্ষ আন্দোলনে শামিল না হলে সফল হয় না) অগ্রাহ্য করেই। সেটা সম্ভব হয়েছে সাধারণ মানুষের ন্যায্যতার আকাঙ্ক্ষা থেকেই।

সবশেষ এই নির্মাতা লিখেছেন, ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা সাধারণ মানুষের এই আকাঙ্ক্ষার দুই পয়সার দাম দেন নাই। সাধারণ মানুষের এই আকাঙ্ক্ষা, ইচ্ছা আর দেশপ্রেমকে পুঁজি করে অরাজনৈতিক এবং রাজনৈতিক যারাই রাজনীতি রাজনীতি খেলতে চাইবে, তাদের দশাও কোন একসময় যেন পলাতক শেখ হাসিনার মতো না হয়, সেই বিষয় নিশ্চিত করতে হবে তাদেরকেই।

Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

খালেদা জিয়ার সঙ্গে কুশল বিনিময় করলেন মাহফুজ-আসিফ-নাহিদ
দেশের বাজারে আবারও বাড়ল স্বর্ণের দাম
‘দেশের মানুষ এখনো কোনো রাজনৈতিক দলকেই বিশ্বাস করতে পারে না’
‘বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে সশস্ত্র বাহিনীর অবদান চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে’: প্রধান উপদেষ্টা
নওগাঁ শহরে শৃঙ্খলা ফেরাতে বিশেষ অভিযান শুরু
২০২৬ সালের মাঝামাঝিতে নির্বাচন হতে পারে: উপদেষ্টা সাখাওয়াত
সেনাকুঞ্জে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে খালেদা জিয়ার শুভেচ্ছা বিনিময়
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে আহত ৫ জনকে রোবটিক হাত উপহার
সেনাকুঞ্জের পথে খালেদা জিয়া
সুযোগ পেলে শেখ হাসিনার পক্ষে মামলায় লড়ব: জেড আই খান পান্না
নির্বাচন কমিশন গঠন, সিইসি হলেন অবসরপ্রাপ্ত সচিব নাসির উদ্দীন
ডিএনএ টেস্টের ফলাফল: ভিনিসিয়ুসের পূর্বপুরুষ ছিলেন ক্যামেরুনের
জামিন পেলেন সাংবাদিক শফিক রেহমান
বিএনপি ছেড়ে আওয়ামী লীগে আসা সেই শাহজাহান ওমর গ্রেপ্তার
মিরপুর ও মহাখালীতে অটোরিকশা চালকদের সেনাবাহিনীর ধাওয়া
‘শেখ হাসিনা এখনও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী’, এমন কথা বলেননি ট্রাম্প
লেবাননে ৮ শতাধিক ইসরায়েলি সেনা নিহত
ভারতে সাজাভোগ শেষে দেশে ফিরল ২৪ বাংলাদেশি কিশোর-কিশোরী
ঢাকার বিভিন্ন পয়েন্টে অবরোধ করে ব্যাটারিচালিত রিকশাচালকদের বিক্ষোভ
গাজায় ইসরায়েলের হামলায় আরও ৮৮ ফিলিস্তিনি নিহত