শুক্রবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৫ | ৫ বৈশাখ ১৪৩২
Dhaka Prokash

সামাজিক সুরক্ষার আওতা বৃদ্ধি করে শিশুশ্রম নিরসন করতে হবে

জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (আইএলও) শিশুদের অধিকার রক্ষা এবং ঝুঁকিপূর্ণ শিশুশ্রম দূর করার জন্য ২০০২ সাল থেকে ‘বিশ্ব শিশুশ্রম বিরোধী দিবস’ পালন করে আসছে। বাংলাদেশসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে প্রতি বছর ১২ জুন এ দিবসটি পালন করা হয়। এ বছর দিবসটির প্রতিপাদ্য ‘শিশুশ্রম বন্ধে সর্বজনীন সামাজিক সুরক্ষা’।

আইএলও এবং ইউনিসেফ কর্তৃক যৌথভাবে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে ২০২০ এর শুরুতে বিশ্বব্যাপী ৫ বছর বা তার বেশি বয়সী ১০ জন শিশুর মধ্যে ১ জন শিশু শিশুশ্রমে জড়িত ছিল− যার আনুমানিক সংখ্যা ১৬০ মিলিয়ন। এর মধ্যে ৬৩ মিলিয়ন কন্যা শিশু এবং ৯৭ মিলিয়ন ছেলে শিশু। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে গত দুই দশকে শিশুশ্রম কমানোর ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি সত্ত্বেও, সাম্প্রতিকতম তথ্য দেখায় যে শিশুশ্রম নিরসনের বৈশ্বিক অগ্রগতি ২০১৬ সাল থেকে থমকে গেছে।

প্রতিবেদনে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, কোভিড-১৯ মহামারি বিশ্বব্যাপী আরও লক্ষ লক্ষ শিশুকে শিশুশ্রমের ঝুঁকিতে ফেলেছে। এটি ধারণা করা হচ্ছে যে উপযুক্ত নিরসন কৌশল ছাড়া, উচ্চ দারিদ্র্য এবং ক্রমবর্ধমান অনিশ্চয়তা ও ভঙ্গুরতার কারণে ২০২২ সালের শেষ নাগাদ নতুন করে ৮.৯ মিলিয়ন শিশু শিশুশ্রমে নিয়োজিত হতে পারে।

এই পরিস্থিতিতে আইএলও পরামর্শ দিয়েছে যে শিশুশ্রম হ্রাস এবং নির্মূলের জন্য শক্তিশালী সামাজিক সুরক্ষা ব্যবস্থা প্রয়োজন। পারিবারিক দারিদ্র্যের ঝুঁকি এবং ভঙ্গুরতা হ্রাস করে, জীবিকায়ন প্রকল্প বৃদ্ধি করে এবং শিশুদের স্কুলে ভর্তির সহায়তা করে, শিশুশ্রম নির্মূল ও প্রতিরোধের লড়াইয়ে সরকারি সামাজিক সুরক্ষা ব্যবস্থা অপরিহার্য।

আইএলও বলছে ২০১০ সাল থেকে পরিচালিত বেশ কয়েকটি গবেষণার ফলাফল দেখায় যে সামাজিক সুরক্ষা-পরিবারগুলোকে অর্থনৈতিক বা স্বাস্থ্যগত ধাক্কা মোকাবিলায় সহায়তা করে, শিশুশ্রম হ্রাস করে এবং স্কুলে পড়াশুনার সুবিধা দেয়৷

সংস্থাটি আরও বলছে, সব শিশু যাতে সামাজিক সুরক্ষা উপভোগ করে তা নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে খুব কম অগ্রগতি হয়েছে। বিশ্বব্যাপী ০ থেকে ৪ বছর বয়সী ৭৩.৬ শতাংশ বা প্রায় ১.৫ বিলিয়ন শিশু কোনো সামাজিক সুরক্ষা সুবিধা পায় না। এই বৃহৎ সুরক্ষা ফাঁক বা ব্যবধান দ্রুত বন্ধ করা আবশ্যক। আইএলও মহাপরিচালক গাই রাইডার বলেছেন, ‘সর্বজনীন সামাজিক সুরক্ষায় বিনিয়োগ করার অনেক কারণ আছে কিন্তু শিশুদের অধিকার এবং সুস্থতার উপর এর ক্ষতিকর প্রভাবের কারণে শিশুশ্রম নির্মূল করা সবচেয়ে বাধ্যতামূলক হতে হবে’।

আইএলও’র গবেষণায় বলা হয়েছে বিভিন্ন দেশের সরকারের বিভিন্ন নীতি রয়েছে যা তারা সামাজিক সুরক্ষার ক্ষেত্রে ব্যবহার করতে পারে। যদি নীতি নির্ধারকরা সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়ে কাজ না করেন, তাহলে কোভিড-১৯ মহামারি, চলমান সংঘাত, ক্রমবর্ধমান দারিদ্র্য এবং জলবায়ু পরিবর্তন শিশুশ্রমের প্রবণতাকে বাড়িয়ে তুলবে।

শিশুশ্রমের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতাকে উল্টে দিতে আইএলও ও ইউনিসেফ বিশ্বের সরকার প্রধানদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে। যেমন, সর্বজনীন শিশু সুবিধাসহ সবার জন্য পর্যাপ্ত সামাজিক সুরক্ষার ব্যবস্থা করা। মানসম্মত শিক্ষার পেছনে ব্যয় বাড়ানো এবং কোভিড-১৯ এর আগে থেকেই স্কুলের বাইরে থাকা শিশুদেরসহ সব শিশুকে স্কুলে ফিরিয়ে আনা।

পরিবারের প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য যথোপযুক্ত কাজের ব্যবস্থা করা, যাতে পরিবারগুলোকে পারিবারিক উপার্জন বৃদ্ধিতে সহায়তা করতে শিশুদের অবলম্বন করতে না হয়। শিশুশ্রমকে প্রভাবিত করে এমন ক্ষতিকারক লৈঙ্গিক রীতিনীতি এবং বৈষম্যের অবসান ঘটানো। শিশু সুরক্ষা ব্যবস্থা, কৃষিজ উন্নয়ন, পল্লী জনসেবা, অবকাঠামো এবং জীবন-জীবিকার পেছনে বিনিয়োগ করা।

আমাদের দেশে শিশুশ্রমের দৃশ্যকল্পের দিকে তাকালে তা কম উদ্বেগজনক নয়। বিবিএস-এর ২০১৩ সালের এক জরিপ অনুসারে, বাংলাদেশে প্রায় ১.৭ মিলিয়ন শিশু ১৬টি সেক্টরে কর্মরত। আইএলওর তথ্য অনুযায়ী, শুধুমাত্র ঢাকা শহরেই দেড় লাখের বেশি শিশু বিপজ্জনক কর্মকাণ্ডে জড়িত। কিন্তু বাস্তবতা যে সম্পূর্ণ ভিন্ন তা বোঝার জন্য পরিসংখ্যানের প্রয়োজন নেই। আমাদের দেশে শিশুরা সাধারণত কৃষি, কলকারখানা, গণপরিবহন, আবাসন, খাবারের দোকান, বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, ইটভাটা এবং নির্মাণ কাজে কাজ করে। কোভিড-১৯ মহামারি চলাকালীন শিশুশ্রম দ্রুত বৃদ্ধি পেয়েছে। শিশুশ্রম বৃদ্ধির অন্যতম প্রধান কারণ দারিদ্র্য ও বৈষম্য। এভাবে দারিদ্র্য ও বৈষম্য বাড়লে আগামী দিনে শিশুশ্রম বৃদ্ধির আশঙ্কা অমূলক নয়।

কোভিড-১৯ মহামারিকালে অনেক শিশু স্কুল থেকে ঝরে পড়েছে এবং কাজে যুক্ত হয়েছে। এইভাবে, যে সমস্ত শিশুরা নিজেদের শিশুশ্রমে নিয়োজিত করতে বাধ্য হয়েছে তারা শুধু শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হয়নি, সামাজিক ও স্বাস্থ্য সুরক্ষা থেকেও বঞ্চিত হয়েছে। কারণ, স্কুলগুলো সামাজিক সুরক্ষা, পুষ্টি, স্বাস্থ্যের পাশাপাশি শিশু এবং তরুণ প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য মনোসামাজিক সহায়তার একটি গুরুত্বপূর্ণ উৎস। তাই শিশুশ্রমে নিয়োজিত শিশুরা শারীরিক ও মানসিক ক্ষতির ঝুঁকিতে থাকে। শিশুশ্রম শিশুদের শিক্ষা ব্যাহত করে, তাদের অধিকার ও ভবিষ্যৎ সুযোগ সীমিত করে এবং তাদের দারিদ্র্য এবং শিশুশ্রমের আন্তঃপ্রজন্মীয় দুষ্টচক্রের দিকে ঠেলে দেয়।

জাতিসংঘ ২০২৫ সালের মধ্যে শিশুশ্রম নির্মূল করার জন্য কিছু নির্দিষ্ট লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে। এ ছাড়াও এসডিজির লক্ষ্যমাত্রা ৮.৭ জোরপূর্বক শ্রম নির্মূল, আধুনিক দাসপ্রথা ও মানব পাচারের অবসান এবং নিকৃষ্টতম শিশুশ্রমের নিষেধাজ্ঞা ও নির্মূল করার জন্য অবিলম্বে এবং কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করার কথা বলেছে। এসডিজি লক্ষ্যমাত্রা ১৬.২ শিশু শ্রমিকদের নিয়োগ ও ব্যবহার, শোষণ, পাচার এবং সকল প্রকার সহিংসতা ও নির্যাতনের অবসান ঘটানো এবং সকল প্রকার শিশুশ্রমের অবসান ঘটানোর কথা উল্লেখ করেছে।

বাংলাদেশ সরকার জাতিসংঘ কর্তৃক নির্ধারিত এসডিজি লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। তাই শিশুশ্রম নিরসনে সরকার বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের অধীনে বেশ কিছু উদ্যোগ, প্রকল্প ও কর্মসূচি হাতে নিয়েছে। এ ছাড়া জাতীয় ও আন্তর্জাতিক এনজিওগুলোও শিশুশ্রম নিরসনে বিভিন্ন প্রকল্প ও কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছে। কিন্তু এখন মনে হচ্ছে লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করা কঠিন হবে কারণ শিশুশ্রমের মাত্রা কমছে না বরং কোভিড-১৯ ও চলমান যুদ্ধের কারণে তা আবার বৃদ্ধির সূত্রপাত করেছে। সুতরাং এটা বলার অপেক্ষা রাখে না যে মহামারি চলাকালীন ক্রমবর্ধমান শিশুশ্রমের জন্য আরও অনেক উদ্যোগের প্রয়োজন রয়েছে।

আইএলও এবং ইউনিসেফ শিশু শ্রমের ক্রমবর্ধমান প্রবণতা বন্ধের আহ্বান জানিয়েছে। এ জন্য সর্বজনীন শিশু যত্নসহ সবার জন্য পর্যাপ্ত সামাজিক সুরক্ষা নিশ্চিত করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। মানসম্পন্ন শিক্ষায় ব্যয় বৃদ্ধি করা এবং কোভিড-১৯ এর আগে যারা স্কুলের বাইরে ছিল তাদের সহ সব শিশুকে স্কুলে ফিরিয়ে আনা, প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য উপযুক্ত কাজের ব্যবস্থা করা যাতে পরিবারের আয় বাড়াতে সাহায্য করার জন্য পরিবারগুলোকে শিশুদের আশ্রয় নিতে না হয়। শিশুশ্রমকে প্রভাবিত করে এমন ক্ষতিকর চর্চা এবং অসমতা দূর করা। শিশু সুরক্ষা ব্যবস্থা, কৃষি উন্নয়ন, গ্রামীণ জনসেবা, অবকাঠামো এবং জীবিকায়ন প্রকল্পে বিনিয়োগ করা। জাতীয় বাজেটে শিশুদের সুরক্ষার জন্য পর্যাপ্ত
বরাদ্দ রাখা।

আইএলও এবং ইউনিসেফ বিশ্বব্যাপী শিশুশ্রম প্রতিরোধ ও নির্মূলের জন্য সামাজিক সুরক্ষা ব্যবস্থা জোরদার করার জন্য প্রতিবেদনে বেশ কিছু সুপারিশ করেছে যেমন, শিশুদের জন্য সামাজিক সুরক্ষার আওতার ব্যবধান কমিয়ে আনা এর অর্থ শিশুর সুবিধাগুলোকে অগ্রাধিকার দেওয়া, সেইসঙ্গে অনানুষ্ঠানিক খাতে কর্মরতদের জন্য সামাজিক সুরক্ষা ব্যবস্থার আওতায় আনা, সমন্বিত সামাজিক সুরক্ষা ব্যবস্থা তৈরি করা, শিশুশ্রম হ্রাস করা আরও সহজ হবে যদি প্রত্যেক দেশে একটি সামাজিক সুরক্ষা ব্যবস্থা থাকে যা শিশু এবং পারিবারিক সুবিধা, মাতৃত্ব এবং বেকারত্বের সুবিধা থেকে শুরু করে বার্ধক্য পেনশনের পাশাপাশি স্বাস্থ্য সুরক্ষার জন্য পর্যাপ্ত সুবিধা প্রদান করে, নিশ্চিত করতে হবে—যেসব সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচির পরিকল্পনা অন্তর্ভুক্তিমূলক এবং শিশু-শ্রমিক সংবেদনশীল কারণ এটি শিশু শ্রম হ্রাস করতে সর্বাধিক সাহায্য করবে।

শিশু এবং পারিবারিক সুবিধাপ্রাপ্তি কর্মসূচিগুলো বাস্তবায়ন করা যা শিশুদের সহ সমস্ত পরিবারের কাছে পৌঁছায়, বিশেষ করে যারা সবচেয়ে বেশি ঝূঁকিপূর্ণ পরিস্থিতিতে রয়েছে, নিবন্ধন পদ্ধতি সহজ করে এবং বিভিন্ন সুবিধা দেওয়ার মাধ্যমে দরিদ্রদের জন্য তাদের সামাজিক সুরক্ষা সুবিধাগুলো পেতে সহায়তা করা, শিশুদের জন্য সর্বজনীন, মানসম্পন্ন, মৌলিক শিক্ষা এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ সামাজিক পরিষেবাগুলোতে বর্ধিত বিনিয়োগের সঙ্গে সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচির পরিপূরক কর্মসূচি গ্রহণ করা, শিশুশ্রমের অবসান এবং কর্মের জন্য ঐক্যমত্য জোরদার করার জন্য সর্বজনীন সামাজিক সুরক্ষা প্রতিষ্ঠার জন্য ইতোমধ্যে বিদ্যমান শক্তিশালী রাজনৈতিক প্রতিশ্রুতি গড়ে তোলা, টেকসই উন্নয়ন এজেন্ডা এবং ২০২১ সালে আন্তর্জাতিক শ্রম সম্মেলনে গৃহীত সহমত, দৃঢ় ঐকমত্য, সেইসঙ্গে ডারবান শিশু শ্রমিক সম্মেলনের ফলাফল, আন্তর্জাতিক উদ্যোগগুলোকে সমন্বয় করতে সাহায্য করতে পারে; উন্নয়নের চালক হিসাবে সামাজিক সুরক্ষা ব্যবস্থায় বিনিয়োগের জন্য প্রচারনা চালানো। প্রায় সব দেশেই শিশুদের জন্য তাদের সামাজিক সুরক্ষা ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করার জন্য ক্রমান্বয়ে বিনিয়োগের জন্য দেশীয় সম্পদ পুঞ্জীভূত করা।

ইউনিসেফের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে সামাজিক সুরক্ষা ব্যবস্থা এখনো পর্যন্ত অতিমাত্রায় বিভক্ত। সামাজিক সুরক্ষা ব্যবস্থায় রয়েছে ১৩০টি কর্মসূচি যেগুলো বেশিরভাগ ক্ষেত্রে একটির সঙ্গে অপরটি সংযুক্ত নয়। এসব কর্মসূচির লক্ষ্যসমূহ একটির সঙ্গে অন্যটি মিলে যায়, এতে বাজেট কম এবং এদের আওতাও অপ্রতুল। যেকোনো দেশের জন্য যেকোনো পরিপ্রেক্ষিত থেকেই শিশু এবং সামাজিক সুরক্ষায় বিনিয়োগ গুরুত্বপূর্ণ। শিশুদের জন্য সামাজিক নিরাপত্তাবেষ্টনী মানবাধিকার ও অর্থনীতিকে রক্ষা করে।

সুতরাং, চলমান মহামারি ও যুদ্ধের কারণে এবং দারিদ্র্যের কষাঘাতে শৈশব বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহের জন্য সংগ্রাম করছে এমন শিশুদের কথা ভাবার সময় এসেছে। সরকারিভাবে এইসব শিশু ও তাদের পরিবারকে সামাজিক সুরক্ষা ব্যবস্থায় নিয়ে আসা বাধ্যতামূলক হয়ে দাঁড়িয়েছে। সমাজের বিত্তবানদেরও এক্ষেত্রে এগিয়ে আসা প্রয়োজন। শিশুশ্রম নির্মূলে সামাজিক উদ্যোগ ও সচেতনতা বৃদ্ধির আন্দোলন আরও জোরদার করা প্রয়োজন। যারা শিশুদের জোরপূর্বক শিশুশ্রমে বাধ্য করে এবং তাদের শ্রম শোষণ করে তাদেরও সচেতন করা জরুরি হয়ে দাঁড়িয়েছে। সেই সঙ্গে ক্রমবর্মান দারিদ্র্য ও আয় বৈষম্য কমিয়ে এনে সব শিশুর মানসম্মত ও জীবনমুখী শিক্ষা নিশ্চিত করার পাশাপাশি তারাও যে ভবিষ্যতে একটি সুন্দর ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়তে ব্যাপক ভূমিকা রাখতে পারে তা নিয়ে ভাবার সময় এসেছে।

লেখক: গবেষক ও উন্নয়নকর্মী

আরএ/

Header Ad
Header Ad

ভারতীয় ক্রিকেটাররা আমাকে নগ্ন ছবি পাঠাত, অভিযোগ ট্রান্সজেন্ডার ক্রিকেটারের

অনন্যা বাঙ্গার। ছবি: সংগৃহীত

ভারতীয় ক্রিকেট দলের সাবেক ক্রিকেটার ও কোচ সঞ্জয় বাঙ্গারের সন্তান অনন্যা বাঙ্গার নিজের লিঙ্গ রূপান্তরের অভিজ্ঞতা এবং ক্রিকেটজীবনে মুখোমুখি হওয়া নানা হয়রানিমূলক ঘটনার বিস্ফোরক তথ্য প্রকাশ করেছেন। একসময় ‘আরিয়ান’ নামে পরিচিত অনন্যা বর্তমানে নারী পরিচয়ে পরিচিত এবং একাধিক স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক ক্লাবে ক্রিকেট খেলেছেন।

সম্প্রতি লল্লনটপ পডকাস্টে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে অনন্যা বলেন, “আমি ছোটবেলা থেকেই জানতাম আমি একজন মেয়ে। আট-নয় বছর বয়সে মায়ের পোশাক পরতাম এবং আয়নার সামনে নিজেকে মেয়ের মতো কল্পনা করতাম।”

অনন্যা বাঙ্গার। ছবি: সংগৃহীত

অনন্যা জানান, ক্রিকেট ক্যারিয়ারে কিছু খেলোয়াড় তার পাশে দাঁড়ালেও অনেকের কাছ থেকে পেয়েছেন অপ্রীতিকর অভিজ্ঞতা। তিনি বলেন, “আমাকে একাধিক ক্রিকেটার নগ্ন ছবি পাঠিয়েছে। কেউ কেউ সামনে অপমান করলেও পরে আমার সঙ্গে ছবি তুলতে চেয়েছে, এমনকি যৌন প্রস্তাবও দিয়েছে।”

একজন প্রবীণ ক্রিকেটারের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, “আমি তাকে আমার পরিস্থিতি বোঝাতে গেলে সে বলে, ‘চলো গাড়িতে যাই, আমি তোমার সঙ্গে ঘুমাতে চাই।’”

ভারতের ইসলাম জিমখানা এবং যুক্তরাজ্যের হিংকলি ক্রিকেট ক্লাবের হয়ে খেলা বাঁহাতি ব্যাটার অনন্যার আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলার স্বপ্নে বাধা আসে ২০২৩ সালের নভেম্বরে। তখন আইসিসি ঘোষণা করে, ট্রান্সজেন্ডার ক্রীড়াবিদদের নারী ক্রিকেটে অংশগ্রহণের অনুমতি দেওয়া হবে না।

অনন্যা বাঙ্গার। ছবি: সংগৃহীত

এ নিয়ে ইনস্টাগ্রামে অনন্যা লেখেন, “আমি কেবল খেলতে চেয়েছিলাম, নিজেকে প্রমাণ করতে চেয়েছিলাম। পরিচয়ের কারণে আজ আমি নিষিদ্ধ।”

বর্তমানে অনন্যা যুক্তরাজ্যের ম্যানচেস্টারে বসবাস করছেন এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ট্রান্সজেন্ডার অধিকার নিয়ে সক্রিয়ভাবে কাজ করছেন।

Header Ad
Header Ad

১৮৭ জনকে নিয়োগ দেবে শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর

ছবি: সংগৃহীত

শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের শূন্য পদে সংশোধিত নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়েছে। অধিদপ্তরের ১০ ধরনের শূন্য পদে মোট ১৮৭ জনকে নিয়োগ দেওয়া হবে। আগ্রহী ও যোগ্য প্রার্থীরা আবেদন করতে পারবেন।

পদের নাম: স্টোর অফিসার।
পদসংখ্যা: ১টি।
শিক্ষাগত যোগ্যতা: ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদভুক্ত যেকোনো বিষয়ে অন্যূন দ্বিতীয় শ্রেণি বা সমমানের সিজিপিএতে স্নাতক বা সমমান।
বেতন: ১২,৫০০-৩০,২৩০ টাকা।

পদের নাম: হিসাবরক্ষক।
পদসংখ্যা: ২৫টি।
শিক্ষাগত যোগ্যতা: স্নাতক বা সমমানের ডিগ্রি।
বেতন: ১২,৫০০-৩০,২৩০ টাকা।

পদের নাম: কম্পিউটার অপারেটর।
পদসংখ্যা: ২৭টি।
শিক্ষাগত যোগ্যতা: বিজ্ঞান বিভাগে স্নাতক (সম্মান) বা সমমানের ডিগ্রি। কম্পিউটার মুদ্রাক্ষরে প্রতি মিনিটে বাংলায় ২৫ শব্দ এবং ইংরেজিতে ৩০ শব্দের গতি থাকতে হবে।
বেতন: ১১,০০০-২৬,৫৯০ টাকা।

পদের নাম: সাঁটমুদ্রাক্ষরিক কাম কম্পিউটার অপারেটর।
পদসংখ্যা: ৪টি।
শিক্ষাগত যোগ্যতা: স্নাতক বা সমমান। সাঁটলিপি পরীক্ষায় ইংরেজিতে সর্বনিম্ন গতি ৭০ শব্দ ও বাংলায় সর্বনিম্ন গতি ৪৫ শব্দ থাকতে হবে।
বেতন: ১১,০০০-২৬,৫৯০ টাকা।

পদের নাম: উচ্চমান সহকারী।
পদসংখ্যা: ৯টি।
শিক্ষাগত যোগ্যতা: স্নাতক বা সমমানের ডিগ্রি। কম্পিউটার মুদ্রাক্ষরে ইংরেজিতে সর্বনিম্ন গতি ৩০ শব্দ ও বাংলায় সর্বনিম্ন গতি ২৫ শব্দ থাকতে হবে।
বেতন: ১০,২০০-২৪,৬৮০ টাকা।

পদের নাম: সাঁটমুদ্রাক্ষরিক কাম কম্পিউটার অপারেটর।
পদসংখ্যা: ৩টি।
শিক্ষাগত যোগ্যতা: স্নাতক বা সমমান। সাঁটলিপি পরীক্ষায় ইংরেজিতে সর্বনিম্ন গতি ৭০ শব্দ ও বাংলায় সর্বনিম্ন গতি ৪৫ শব্দ থাকতে হবে।
বেতন: ১০,২০০-২৪,৬৮০ টাকা।

পদের নাম: হিসাব সহকারী/হিসাব সহকারী কাম ক্যাশিয়ার অফিস সহকারী কাম ক্যাশিয়ার।
পদসংখ্যা: ৩৯টি।
শিক্ষাগত যোগ্যতা: ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগ থেকে উচ্চমাধ্যমিক সার্টিফিকেট বা সমমান।
বেতন: ৯,৩০০-২২,৪৯০ টাকা।

পদের নাম: অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার মুদ্রাক্ষরিক।
পদসংখ্যা: ২০টি।
শিক্ষাগত যোগ্যতা: উচ্চমাধ্যমিক সার্টিফিকেট বা সমমান।
বেতন: ৯,৩০০-২২,৪৯০ টাকা।

পদের নাম: স্টোরকিপার।
পদসংখ্যা: ১টি।
শিক্ষাগত যোগ্যতা: উচ্চমাধ্যমিক সার্টিফিকেট বা সমমান।
বেতন: ৯,৩০০-২২,৪৯০ টাকা।

পদের নাম: ইলেকট্রিশিয়ান।
পদসংখ্যা: ২টি।
শিক্ষাগত যোগ্যতা: সংশ্লিষ্ট ট্রেডে উচ্চমাধ্যমিক সার্টিফিকেটসহ সংশ্লিষ্ট কাজে অন্যূন ৬ মাসের বাস্তব অভিজ্ঞতা।
বেতন: ৯,৩০০-২২,৪৯০ টাকা।

আবেদন পদ্ধতি: আগ্রহী প্রার্থীরা অনলাইনে আবেদন করতে এখানে ক্লিক করুন

আবেদনের শেষ সময়: আগামী ১৯ এপ্রিল ২০২৫।

Header Ad
Header Ad

গাইবান্ধায় আগুনে পুড়লো ৫ দোকান, ৩০ লক্ষাধিক টাকার ক্ষতি

গাইবান্ধায় আগুনে পুড়লো ৫ দোকান। ছবি: ঢাকাপ্রকাশ

গাইবান্ধা সদর উপজেলায় ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে ৫টি দোকান ভস্মীভূত হয়েছে। এতে প্রায় ৩০ লক্ষাধিক টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। শুক্রবার (১৮ এপ্রিল) সকালে সদর উপজেলার বল্লমঝাড় ইউনিয়নের মাঠেরপাড় বাজারে এ ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের দুইটি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সকাল সাড়ে সাতটার দিকে মাঠেরপাড় বাজারে এসেছে প্রথমেই মালেক স্টোরে আগুন দেখতে পান তারা। মুহূর্তের মধ্যেই মার্কেটের ৫টি দোকানে আগুন ছড়িয়ে পড়ে। আগুন লাগার খবর শুনে আশেপাশের লোকজন ছুটে এসে আগুন নেভানোর চেষ্টা করে। সেইসাথে ফায়ার সার্ভিসকে খবর দেওয়া হয়। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের দুইটি ইউনিট আগুন নেভানোর কাজ করে আগুন পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আনে। ততক্ষণে আগুনে ৫টি দোকানের ফ্রিজ, টিভি, মালামাল ও আসবাবপত্র পুড়ে যায়। এ ঘটনায় প্রায় ৩০ লক্ষাধিক টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। এসময় সব হারিয়ে নিঃস্ব ব্যবসায়ীদের কান্নায় পরিবেশ ভারি হয়ে ওঠে।

আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত দোকানগুলো হলো মালেকের মুদি দোকান, সাইদুলের মালামাল রাখার গোডাউন, মজনু স্টোর, জাহিদ ফার্মেসি, শহীদ স্টোর এবং মনজুর চা দোকানের আংশিক ভস্মীভূত হয়েছে।

মালেক স্টোরের দোকানি আব্দুল মালেক বলেন, প্রতিরাতের মতো বৃহস্পতিবার রাতেও দোকান বন্ধ করে বাড়িতে গিয়েছে। শুক্রবার সকালে ঘুমে থাকা অবস্থায় শুনতে পাই আমার দোকান আগুনে পুড়ে গেছে।

গাইবান্ধা ফায়ার সার্ভিসের টিম লিডর আবু মোত্তালেব বলেন, সকাল ৭টা ৫০ মিনিটে খবর পাওয়ার পর ঘটনাস্থলে এসে দুইটি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হই। অগ্নিকাণ্ডের কারণ এখনও জানা যায়নি। তবে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, বৈদ্যুতিক শর্টসার্কিট থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়েছে।

আগুনের খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন বল্লমঝাড় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জুলফিকার রহমান।

এ বিষয়ে সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মো. মাহমুদ আল হাসান ভোরের আকাশকে বলেন, বল্লমঝাড় মাঠেরপাড় বাজারে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে, এটি খুবই দুঃখজনক। উপজেলা পরিষদের পক্ষে থেকে ক্ষতি গ্রস্থ ব্যবসায়ীদেরকে টিন বিতরণ করা হবে।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

ভারতীয় ক্রিকেটাররা আমাকে নগ্ন ছবি পাঠাত, অভিযোগ ট্রান্সজেন্ডার ক্রিকেটারের
১৮৭ জনকে নিয়োগ দেবে শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর
গাইবান্ধায় আগুনে পুড়লো ৫ দোকান, ৩০ লক্ষাধিক টাকার ক্ষতি
রোহিঙ্গা সংকট সমাধানের পথে বড় সমস্যা আরাকান আর্মি: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা
টঙ্গীতে ফ্ল্যাট বাসা থেকে দুই শিশুর রক্তাক্ত মরদেহ উদ্ধার
মালয়েশিয়ায় ১৬৫ বাংলাদেশিসহ ৫০৬ অবৈধ অভিবাসী আটক
ভেঙে গেল পরীমনি-সাদীর প্রেম? রহস্যময় পোস্টে তোলপাড় নেটদুনিয়া
বগুড়া বিমানবন্দর চালুর প্রস্তুতি চূড়ান্ত, জুলাই থেকেই শুরু হতে পারে ফ্লাইট চলাচল
বেনজীরকে বোট ক্লাব থেকে বহিষ্কার, ৩২ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ
ঢাকায় আবারও আওয়ামী লীগের ঝটিকা মিছিল, ড. ইউনূসের পদত্যাগ দাবি
২০২৬ বিশ্বকাপে খেলা নিয়ে আশাবাদী মেসি, সিদ্ধান্ত নেবেন সময়মতো
পশ্চিমবঙ্গে সহিংসতা নিয়ে বাংলাদেশের মন্তব্য ‘অযৌক্তিক’: ভারত
দর্শনা ইমিগ্রেশন চেকপোস্টে দায়িত্বরত পুলিশ কনস্টেবলের আত্মহত্যা
দাদা ও চাচার বিরুদ্ধে স্কুলছাত্রীকে বিষ প্রয়োগে হত্যার অভিযোগ
গত ৯ মাসে এক আকাশ ভালোবাসা অর্জন করেছি : প্রেসসচিব
বাংলাদেশ-জিম্বাবুয়ে সিরিজে আগ্রহ দেখায়নি বেসরকারি চ্যানেল, দেখাবে বিটিভি
সন্ত্রাসী তালিকা থেকে তালেবানকে বাদ দিলো রাশিয়া
ভিনগ্রহে প্রাণের অস্তিত্ব আছে, জানালেন কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক
ব্রাজিলের ভক্তদের ‘বানরের’ সঙ্গে তুলনা, নিষেধাজ্ঞার মুখে আর্জেন্টিনা
নারীরা কেন বয়সে ছোট পুরুষের সঙ্গে প্রেমে জড়াচ্ছেন?