বৃহস্পতিবার, ১০ এপ্রিল ২০২৫ | ২৭ চৈত্র ১৪৩১
Dhaka Prokash

দ্বিজেন শর্মার কৈশোরক: নিসর্গকথন

দ্বিজেন শর্মা [১৯২৯-২০১৭] ছিলেন অনন্য এক নিসর্গ-সখা। সারা জীবন প্রকৃতি-পরিবেশ রক্ষায় তিনি ছিলেন নিষ্ঠাবান, নিবেদিতপ্রাণ। এক্ষেত্রে তার কথা স্পষ্ট ও কল্যাণ সাধনার পথে ইঙ্গিতময় শুধু নয়, পথনির্দেশক। বলা নিষ্প্রয়োজন, প্রকৃতিসাধক দ্বিজেন শর্মা নিজেকে অসামান্য উচ্চতায় প্রতিষ্ঠিত করেছেন। একইসঙ্গে পরিবেশ প্রকৃতি বিষয়ে সচেতনতা বৃদ্ধিতে সক্রিয় থেকেছেন। ঢাকাসহ বিভিন্ন শহর ও উদ্যানের বৃক্ষ পরিচিতির জন্য বিভিন্ন আয়োজনে অংশ নিয়ে সকল অংশীজনকে পরিবেশ রক্ষায় উজ্জীবিত করেছেন।এ ছাড়া সমাজ, সংস্কৃতি সংশ্লিষ্ট বিষয়াবলির নানা আয়োজনএবংসাংস্কৃতিক সংগঠনে তিনি ছিলেন সক্রিয়। 

উল্লেখ করতে হয়, সাধারণের কাছে পরিবেশ ও উদ্ভিদবিদ্যা একটি নিরস বিষয়। কিন্তু তার লেখা পাঠে পাঠকের তা মনেই হয় না।  নিছক উদ্ভিদবিদ্যা, বা পরিবেশবিদ্যার কিছু লেখা হলে সাধারণ পাঠক তা গ্রহণ করে না। এক্ষেত্রে দ্বিজেন শর্মা বিভিন্ন অনুষঙ্গে অত্যন্ত সরস ভাষা ও ভঙ্গিতে এসব বিষয় উপস্থাপন করেছেন। তার রচনায় ভিন্ন উপলব্ধি ও ভাষায় উপস্থাপিত প্রকৃতি ও পরিবেশবিদ্যা আমরা এখন পাঠ করছি। পাঠের সময় মনে হয় সাহিত্য ও প্রকৃতিবিষয়ক অসামান্য গল্প পাঠ করছি। যেসব গল্প আমাদের প্রকৃতিবান্ধব হতে উৎসাহিত করে। প্রকৃতি-পরিবেশ সম্পর্কিত লেখার এত আনন্দময় পাঠ আরআছে কি না, তা আমাদের অজানা। 

দ্বিজেন শর্মার লেখার অনন্য ও তুলনারহিত বৈশিষ্ট হলো, প্রকৃতির সঙ্গে সাহিত্যের যোজনা। সাহিত্যের অনুষঙ্গ ও চমৎকার বিবরণে তার রচিত পাঠে মুগ্ধতার বিশেষত্ব প্রকাশিত। শুধু সাহিত্য নয়, নানা সঙ্গ, অনুষঙ্গে এসেছে ইতিহাস, ভূগোল, প্রকৃতি ও পরিবেশ বিজ্ঞানীদের জীবন এবং রচনার বিশেষাংশ। জ্ঞানবিদ্যার বিভিন্ন বিষয় যোজনায় অনন্যতা অর্জন করেছেন বললে তা কমই বলা হবে। একটি বিষয়, বা পাঠকে কীভাবে পাঠকের কাছে জনপ্রিয় করা যায়, কিংবা আকৃষ্টকরণের কৌশল তিনি জানতেন। এক্ষেত্রে পাঠযোগ্য করার ভাষিক কৌশলও তার স্বকীয় নির্মাণ। এক্ষেত্রে প্রকৃতি বা পরিবেশবিষয়ক রচনায় তার সমতুল্য আর কেউ আছেন কি না, তা আমাদের জানা নেই। 

উদ্দেশ্যমূলক লেখার মধ্যে অনেক গল্প জুড়ে দিয়েছেন তিনি। যা খুবই তথ্যবহুল। যেগুলোতে অনুষঙ্গ হিসেবে বিবৃত করেছেন গুণী গবেষক, প্রকৃতিবিজ্ঞানী, এবং আবিষ্কারকের জীবন ও কর্ম। সবচেয়ে বেশি উপযুক্ত, ও বিবেচনার বিষয় হলো, সমাজ-উপেক্ষিত, অথচ প্রকৃতিরক্ষক এমন কয়েকজন ব্যক্তির উদাহরণ। যারা আমাদের অজান্তে এ সমাজকে এগিয়ে দিয়েছেন, পরিবেশ-প্রতিবেশ বিনির্মাণ করে চলেছেন। আমরা যেখানে একালের নাগরিক হওয়া সত্ত্বেও প্রকৃতির সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক নষ্ট করছি। যেমন,গল্পে জেনেছি, একজন মালিক সোনার ডিম দেওয়া হাঁসকে মেরে ফেলে অধিক সম্পদের লোভে। তেমনি আমরাও অতিলোভে প্রকৃতিকে ধ্বংস করে চলেছি। এর প্রকৃষ্ট উদাহরণ সাম্প্রতিক বিশ্বের পরিবেশ দূষণ ও জলবায়ু সমস্যার প্রতিক্রিয়া। 

দ্বিজেন শর্মার ভাষাবৈশিষ্ট্য মূলত আকর্ষণের কারণ। যাতে তার রচনায় ভিন্ন এক বিশেষত্ব প্রকাশিত হয়েছে। লক্ষণীয়, কৈশোরক রচনাসমূহ পাঠককে আরও বেশি আকৃষ্ট করে। সংগত কারণে কিশোরপাঠ্য করতে এ সুযোগটি তিনি ব্যবহার করেছেন। তার লক্ষ্য ছিল পাঠকপ্রিয়তা ও পাঠযোগ্য পাঠকৃতি তৈরি করা।এসব লেখায় প্রকৃতির প্রতি তার অসামান্য ভালোবাসা ও প্রেম বিধৃত হয়েছে। বস্তুত, তার অভিমত প্রকাশের কাব্যিক ভাষা পাঠককে আকৃষ্ট করে। এ ভাষা সহজে পাঠককে প্রাণিত করে প্রকৃতির সৌন্দর্যের দিকে। প্রকৃতার্থে দ্বিজেন শর্মার বর্ণনার ভাষা শুধু প্রকৃতি অধ্যয়ন নয়, অনুধাবনের ভাষা। এমন গহনের ভাষা আর কোথাও পাওয়া যায় না। বিশেষত, কিশোর-তরুণ মনে বৃক্ষ, প্রকৃতির বৈচিত্র্যে প্রেম জাগাতেই এমন ভাষা তিনি বয়ন ও বয়ান করেছেন।বস্তুত, বিজ্ঞান, পরিবেশবিদ্যা ইত্যাদি সহযোগে তুলে ধরেছেন প্রকৃতি ও মানবসমাজের পরস্পর সম্পর্ক। যে সম্পর্ক রক্ষা করা অতীব জরুরি বিষয়। কিন্তু মানবসমাজ কোনো বিবেচনা ছাড়াই ক্রমান্বয়ে প্রকৃতি বিরূপ কাজে নিয়োজিত। 

মূলত, প্রকৃতি ও মানুষের সম্পর্ক আমরা উপলব্ধি করিনি। যেখানে ভালোবাসার সম্পর্ক হয়ে উঠেছে শোষণমূলক। অথচ, ‘প্রকৃতি ও মানুষের সম্পর্কের ব্যাপারটা যতো জটিলই হোক , সে সম্পর্কে কিছুটা বোঝা তোমাদের মতো কিশোর-কিশোরীর পক্ষেও সম্ভব। প্রকৃতি আমাদের ধাত্রী, আমরা তার পোষ্য। ...আমাদেরও তাই প্রকৃতির নিয়মগুলো জানতে হবে,...দূষণমুক্ত পরমাণুশক্তি (ফিশন এনার্জি) এখন আর স্বপ্নমাত্র নয়। তাই আমার গল্পগুলোতে তেমন আশাবাদের ইশারা না থাকলেও তোমাদের হতাশ হওয়ার কোনো হেতু নেই।’ [প্রকৃতি সমগ্র ৩, ২০১৫ : ১৩৮]
কৈশোরক সাহিত্যে তার গল্পসমূহ বর্ণনাগুণে অর্জন করেছে বহুমাত্রিকতা। নিজ ও অপর জীবনের বহুবর্ণিল ঘটনা সংযোজিত হয়েছে প্রতিটি পাঠকৃতিতে। উল্লেখ্য যে, বালক বেলার কোনো এক সময় অপ্রত্যাশিত ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে বৃক্ষ নিধনের কাজে অংশ নিয়েছেন তিনি। আবার যখন তিনি বৃক্ষ বাঁচানোর আন্দোলনে অংশ নিয়েছেন, তখন ওই গাছকাটার জন্য অনুতাপ প্রকাশ করেছেন। তার নিজের অজ্ঞতা, অসচেতনতার জন্য আত্মগ্লানিতে কষ্ট অনুভব করেছেন। ফলত, দুর্লভ প্রজাতি, ঔষধি ও হারিয়ে যেতে থাকা বৃক্ষের খুঁজে ঘুরেছেন বিভিন্ন স্থানে। আবার ফিরে পেতে চেয়েছেন সেই বালকবেলার পাহাড়, বন, বৃক্ষরাজি, ও প্রাণিকুলের উৎপাত। স্বপ্নে দেখেছেন আবার সেই গাছ ফিরে এসেছে। গাছে ফল ধরেছে। ফুল-ফলের সমাবেশ বা বাগানের কাছে গেলে তার মনে হয়েছে, তিনি মুক্তি পেয়েছেন; অবসাদ, ক্লান্তি মুছে গেছে। অপরাধবোধ দূর হয়েছে। এ নিয়ে তার গল্প হলো  শাপমোচন। 

আমরা জানি বৃক্ষ কথা বলে নির্জনে। বিভিন্ন প্রসঙ্গ, প্রেক্ষিতে তার গাছগুলো কথা বলে। মানুষকে সচেতন করে তোলে, বৃক্ষ নিজের ভাষায় শোনায় মানবজীবনে তার কতটুকু প্রয়োজন। এ বৃক্ষরাজি কথা বলে মানবজীবনের কল্যাণে। যেমন, ‘আমি গাবগাছ। এদেশ আমারও। তোমরা আমাকে মান্য কর, আমিও তোমাদের ভালোবাসি। আমার ফলগুলো কমলার মতো, তবে ততটা মিষ্টি নয়, তবু ছেলেপিলেরা ভালোই খায়। তোমরা জেলেরা আমার ফলের আঠা দিয়ে নৌকা মেরামত কর, মাছ ধরার জালে রং দাও। আমিও খুব শক্তপোক্ত, ঝড়টড় পরোয়া করি না। আমার অনেকগুলো ডালপালা, তাতে ঠাস বুনোট, কেউ তা থেকে তোমাদের ছিনিয়ে নিতে পারবে না। থাকো আমার বুক আঁকড়ে। কোনো ভয় নেই। [ প্রস৩; ২০১৫ : ১০৮]

চলতে চলতে সাধারণ মানুষের কাছে শিখেছেন কত কিছু। অন্যদিকে সাধারণ মানুষ জীবন বাস্তবতা থেকেই ওই শিক্ষা গ্রহণ করেছে। এভাবে তিনিও সাধারণ মানুষের মতো প্রকৃতিকে জানাবোঝার চেষ্টা করেছেন। যে পদ্ধতিতে দ্বিজেন শর্মা বৃক্ষের ভাষা বুঝতে সক্ষম হন। এ ছাড়া যারা বৃক্ষের ভাষা বুঝতে পারে, তাদের ভাষাও তিনি বোঝার চেষ্টা করেন। যারা প্রকৃতি ভালোবেসে বিবিধ ভূমিকা গ্রহণ করেছে, তাদের বয়ান, বক্তব্য তিনি ধারণ করেছেন। পারিবারিক পরিবেশে যেখানে ঠাকুমা, কাকাবাবু শুনিয়েছেন প্রকৃতি সম্পর্কে নানা গল্প। অথবা স্বপ্নের মাঝে সেসব বক্তব্য তিনি জানাবোঝার চেষ্টা ও আপন ভাষায় তা প্রকাশ করেছেন।

যেমন তার কাকাও গাছের ভাষা বুঝে সকলকে গাছের কণ্ঠস্বর শুনতে আহ্বান করেছিলেন। দ্বিজেন শর্মা জঙ্গলের মধ্যে প্রবেশ করে, সেসব চরিত্র স্মরণ করতেন, যারা একসময় তাকে বাগান, জঙ্গল, উদ্যানে সঙ্গে রেখে প্রকৃতি সম্পর্কে ধারণা দিয়েছেন। তার উদ্ধৃত কাকাবাবু, শরফউদ্দিন চাচা, শোভা বুড়ো সকলেই। স্মরণ করেছেন কাকবাবুর সেই অনুভূতি, উপলব্ধির কথা। ‘তিনি বলেন, ‘গাছ নাকি বলছে, হে মানবকুল, আমি তোমাদের শীতের আগুন ও গ্রীষ্মের ছাতা। আমার ফল খেয়ে তোমরা পথ চলার ক্লান্তি দূর করো। আমি তোমাদের মাথার ওপর ছায়ার আচ্ছাদন ধরে রাখি। তোমাদের টেবিল, শয্যা নৌকা, লাঙ্গল, শিশুর দোলনা, এমনকি মৃতের কফিনও জোগাই। দিই খাদ্য ও মনোরম পুষ্প। আমার শুধু একটিই মিনতি, আমার কাছে আসো কিন্তু আমার কোনো অনিষ্ট করো না।’ [ প্রস৩, ২০১৫ : ১২৬] যান্ত্রিক পীড়নের মধ্যে তা শুধু বৃক্ষের মিনতি নয়; প্রকৃতিপ্রিয় সাধারণ মানুষদের প্রার্থনা, একান্ত নিবেদন। 

তিনি সকল সময় প্রকৃতি-পরিবেশ নিয়ে চিন্তা করতেন বলে কখনো স্বপ্নেও বিভোর হতেন চিন্তার বিষয় নিয়ে। ফলেস্বপ্ন, বাস্তব, ভিন্ন পাঠ থেকে তুলে আনা গল্পগুলো অত্যন্ত প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠেছে। একবার হাওর ভ্রমণে গেলে হঠাৎ পেয়ে যান একটি ডায়রি। এ ডায়রি ও সংশ্লিষ্ট কাহিনিগুলোর জন্য ‘গহন কোন বনের ধারে’ পাঠ করতে আলাদা এক আনন্দ অনুভব করি। যে কারণে এ বইটির ভিন্ন গুরুত্ব রয়েছে। খুব সহজ ভাষায় বর্ণনা করেছেন, প্রকৃতির প্রতি সাধারণ মানুষের ভালোবাসা ও দায়িত্ববোধ। ডায়রির নাম তজব তরফদার বিরচিত আজব খোয়াব। এ ডায়রিতে কিছু নোট রয়েছে। যেগুলোতে বর্ণিত হয়েছে পৃথিবীতে কীভাবে উষ্ণায়ন ঘটছে দ্রুত, এবং জলবায়ু ও পরিবেশগত জটিলতা। পরিবেশ কীভাবে ধ্বংসের মুখোমুখি হয়েছে। এ ছাড়া চাষাবাদসহ সভ্যতার বিভিন্ন প্রসঙ্গ। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে নানা ধরনের স্বপ্নের বয়ান। উল্লেখ করেছেন স্বশিক্ষিত শোভা বুড়ার জীবনের গল্প। যিনি প্রকৃতি সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন করেছেন প্রকৃতি রক্ষা করেই। ওই শোভাবুড়ার কাছ থেকেই দ্বিজেন শর্মা অর্জন করেছেন প্রকৃতি, ও জীববৈচিত্র্যের বিভিন্ন ধারণা। শোভা বুড়ো তাকে বাল্য কৈশোরে বৃক্ষ, প্রাণীকুলের গল্প শোনাতেন। দ্বিজেন শর্মা স্বীকার করেছেন, শোভা বুড়ার কাছেই হয়েছে নিসর্গের প্রথম পাঠ। গহন কোনো বনের কাছে গেলে শোভা বুড়ার স্মৃতি আজও ভেসে ওঠে।

প্রকৃতির মতো আবশ্যিক অংশ প্রাণিকুল। প্রাণিজগতের সদস্য, যারা পোষ্য, নম্র বা হিংস্র যা-ই হোক না কেন, প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে সকল সদস্যই মানবসমাজের সহায়ক ও উপকারী। এ জন্য প্রকৃতির অপরাংশ এ প্রাণী জগৎ ধ্বংস করা যাবে না। এদের সঙ্গে সখ্য ও পরস্পর সম্পর্ক বজায় রাখা জরুরি। এ বিষয়কে গুরুত্ব দিয়ে তিনি অতিপোষ্য প্রাণী কুকুর সম্পর্কে লিখেছেন দীর্ঘ রচনা। উল্লেখ করেছেন কুকুর কীভাবে মানুষের আদিসখা হলো। পুরাণ, সাহিত্য, বাস্তব ঘটনা অবলম্বনে বলেছেন মানুষের জীবনে কুকুরের অবস্থান, ও ভূমিকা। তার লেখা পাঠ করার পর যে কোনো পাঠকের মনে কুকুর সম্পর্কে ধারণা আরও স্পষ্ট হয়ে ওঠে। একটি সাধারণ ধারণা প্রতিষ্ঠিত যে, কুকুরকে সহজেই পোষ মানানো যায়। সাহিত্যসহ বিভিন্ন মাধ্যমে রয়েছে কুকুর নিয়ে নিবিড় উপস্থাপন। তৈরি হয়েছে কয়েকটি জনপ্রিয় চলচ্চিত্র। দ্বিজেন শর্মা সংস্কৃত সাহিত্য, বিশ্ব সাহিত্যে কুকুর চরিত্র রূপায়ণের উদাহরণ তুলে ধরেছেন। উল্লেখ করেছেন কুকুরের অসামান্য প্রভুভক্তি। উল্লেখ্য যে,প্রভুভক্তি বিবেচনায় জাপানের শিবুইয়া রেল স্টেশনে স্থাপিত হয়েছে কুকুরের ভাস্কর্য। যে রেল স্টেশনে প্রতিদিন মনিবকে তার পোষ্য কুকুর বিদায় জানাত, আবার কর্মস্থল থেকে ফেরার সময় তাকে সঙ্গে নিয়ে বাড়ি ফিরত। একদিন মনিব কর্মস্থলে অসুস্থ হয়ে মারা গেলে আর ফিরেআসা হয় না। তবে মনিবের অপেক্ষায় কুকুরটি প্রতিদিন অপেক্ষা করতে থাকে; এবং এই স্টেশনেই সে মারা যায়। এ নিয়ে বিখ্যাত ও পুরস্কৃত চলচ্চিত্র হলো ‘হাচিকো : এ ডগ স্টরি’। মনিবের জন্য দিনের পর দিন অপেক্ষারত অনেক কুকুরের বহু ঘটনা রয়েছে। তিনিও কয়েকটি উল্লেখ করেছেন। এমনই এক মনিব কারাগারে নিক্ষিপ্ত হলে তার কুকুর দীর্ঘদিন জেলগেটে বসে অপেক্ষা করার উদাহরণও রয়েছে। নকলার গড়েরগাঁও গ্রামের ছোহরাবকে জেলে নিয়ে গেলে বিশ্বস্ত কুকুর তিনটি নদী পাড়ি দিয়ে জেলগেটের বাইরে অবস্থান নেয়। দ্বিজেন শর্মা লিখেছেন, ‘কাউকে জেলখানায় ঢুকতে দেখলেই সে তার দু’পা জড়িয়ে ধরত। করুণ চোখে প্রবেশকারীর দিকে তাকাত। জেলখানার ভেতর থেকে মনিবও ...তার জন্য বরাদ্দকৃত খাবারের অর্ধেক পোষা কুকুরের জন্য গেটে পাঠাত।... কারাবাসের মেয়াদ শেষে ছোহরাব আলীকে মুক্তি দিলে প্রভুভক্ত কুকুরটি আনন্দে ঘেউ ঘেউ করে তাকে স্বাগত জানায় এবং মনিবকে নিয়ে লেজ নাড়তে নাড়তে বাড়ি ফিরে আসে।’ [প্রস ৩, ২০১৫ : ১৯৮] কুকুর নিয়ে এত কাহিনি বর্ণনা, বা প্রসঙ্গ টেনে আনার কারণ কি তাহলে। উপলক্ষ কুকুর হলেও লক্ষ ছিল ভিন্ন। প্রাণীকুল সম্পর্কে আমাদের মনে ইতিবাচক ধারণা সৃষ্টি করা। মূলত, প্রকৃতি-পরিবেশের সবকিছু বৈরি নয়। প্রাণিজগৎ যে মানবসভ্যতা আগলে রেখেছে পরিবেশ, তা প্রতিপাদন করা। নিষ্পন্ন করা প্রাণিকুলের উপকারিতা। তিনি বলেন, ‘ভুলে যেয়ো না তার পূর্বপুরুষ একদিন আমাদের পূর্বপুরুষের কাছে স্বেচ্ছায় ধরা দিয়ে, মিতালী পাতিয়ে তাদের মাথায় পশুপালনের ধারণাটি ঢুকিয়ে মানবজাতির অশেষ উপকার করেছিল, অতঃপর তার গৃহ ও পশুপাল আগলে রেখেছিল, সভ্যতার উষালগ্নে,সেইসব দুর্দিনে সঙ্গ ও সহায়তা দিয়েছিল এবং আজও আমাদের বিশ্বস্ততম বন্ধু হয়ে আছে। কুকুর মানুষের আদিসখা, চিরসখা। তাদের ঋণ অপরিশোধ্য।’ [প্রস ৩, ২০১৫ : ২০২] 

‘ডায়নোসর বলছি’ শিরোনামে, ডায়নোসরের আত্মকথন অবলম্বনে আমাদের সতর্ক করেছেন। সকলেই অবগত, জলবায়ু, পরিবেশের অসংগতি এবং বিবর্তনের অনিবার্যতায় পৃথিবী থেকে নিশ্চিহ্ন হয়েছে ডায়নোসর। লক্ষণীয়, ডায়নোসরের নিজের কথা,‘সেই থেকেই ফসিল হয়ে আছি এই প্রাচীন পিচডোবায়। তোমরা হোমোসাপিয়েন্স, তোমরা জ্ঞানী জীব। আমাকেও হয়তো একদিন তোমরা আবিষ্কার করবে। পৃথিবীর এ প্রান্তিক শিলাস্তূপ থেকে নেওয়া হাড়গোড় জোড়া দিয়ে সাজাবে তোমাদের জাদুঘর। কিন্তু এখানে কিংবা তোমাদের জাদুঘর যেখানেই থাকি না কেন আমি চিরদিনই আশা করব তোমরা আমাদের বংশের পতনের কারণ আবিষ্কারে একদিন সফল হবে। আশা করি এই চেষ্টা তোমরা কোনোদিন ত্যাগ করবে না। মনে রেখো, এ থেকে তোমরা জানতে পারবে পরম প্রতাপশালী অনন্য এ জীববংশের পতনের কাহিনী। হয়তো বা তোমরাও সময় থাকতে সতর্ক হবার সুযোগ পাবে। মনে রেখো, পৃথিবীতে কোনো প্রজাতির একক আধিপত্য পরমসত্য নয়, পতন ও অভ্যুদয়ের বন্ধুর পথেই চলে যুগ যুগ ধরে জীববির্তনের জয়রথ।’ [প্রস৩, ২০১৫ : ২৫৩]

বৃক্ষবন্দনা, উদ্ভিদের নামকরণ প্রকৃতিবিজ্ঞান, জীববিজ্ঞানী, ঔষধ আবিষ্কারক বিজ্ঞানীদের তিনিপরিচয় ও আবিষ্কারের কথা বলেছেন। এক্ষেত্রে যুক্তি হলো, প্রকৃতি, পরিবেশ ও সভ্যতা সম্পর্কে তরুণসমাজকে সচেতন করে তোলা। সংবেদনা সৃষ্টি করা। আমরা জানি, সৃজনশীল বিজ্ঞানীদের মধ্যে তাঁর আকর্ষণ ছিল চার্লস ডারউইনের প্রতি। ডারউইন শুধু নিজেই ভূমিকা পালন করেননি। তার অনুসারীরাও পালন করছেন সামাজিক দায়িত্ব। ডারউইন গ্যালাপাগোস দ্বীপপুঞ্জে তার গবেষণার মূল সূত্র আবিষ্কার করেন। ফলত, সেখানে গড়ে উঠেছে ডারউইন রিসার্চ সেন্টার। এ দ্বীপপুঞ্জে জীববৈচিত্র্য রক্ষায় পালন করেছেন দায়িত্বশীল ভূমিকা। দ্বিজেন শর্মা লিখেছেন, ‘এ দ্বীপপুঞ্জের পানকৌড়ি একটি আশ্চর্য পাখি।  এরা আর কোথাও নেই। এদের ডানা আছে নামমাত্র, উড়তে পারে না, তবে জলে ডুব মেরে ছোটে তীরের মতো। সমুদ্রে সাঁতার দেয়, মাছ ধরে। কিন্তু গ্যালাপাগোসের উপকূলীয় সমুদ্রে চিংড়ি ধরা শুরু হলে এরা চিংড়ির জালে আটকা পড়ে মরতে লাগল। বাধ্য হয়েই ডারউইন গবেষণা কেন্দ্রের কর্মীরা সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করলেন। অন্যথা সবার অলক্ষেই হয়তো এ আশ্চর্য পাখিরা নিশ্চিহ্ন হয়ে হতো।’ [প্রস৩, ২০১৫ : ২৭৩]

তিনি আরও উল্লেখ করেছেন, শুধু ডারউইনের গবেষণা বা গবেষণাকেন্দ্র থাকায় গ্যালাপোগাস বিখ্যাত স্থান নয়। বরং এখানে গবেষণার জন্য রয়েছে অনেক উপকরণ। এভাবে ব্যাখ্যা করেছেন বিজ্ঞানী স্ট্যানলি ও হাভলিন-এর জীবন ও কর্ম। যাতে বিজ্ঞান, বিবর্তনবাদ, প্রকৃতির সঙ্গে মানুষের সখ্য গড়ে ওঠে। মানুষ হয় প্রকৃতিবান্ধব। যন্ত্রদানব যে বৃক্ষের প্রাণ সংহারে উদ্ধত, সেই বৃক্ষকথায় গেয়েছেন জীবনের সংগীত । ‘দেখলাম আকাশ, সূর্য। বাতাস আমার গায়ে হাত বুলিয়ে আদর করে গেল। ...দেখলাম আরেক পৃথিবী। গাছে গাছে ফুল। পাখিরা ঝাঁকে ঝাঁকে উড়ে এসেছে। বাতাস ভরে গেছে পাখির গান আর ফুলের সুগন্ধে।... আমার ঝাঁকড়া শরীর, সেই মেয়েটির চোখ, পৃথিবীর প্রথম ফোটা ফুল, একটি প্রজাপতি।’ [প্রস৩, ২০১৫: ৩২৬] যে প্রেরণায় নিসর্গ-প্রেমে সাজাতে হয় মানব সভ্যতার চমৎকারিত্ব। 

 

Header Ad
Header Ad

জাতীয় নাগরিক কমিটির সদস্য দিলশাদ আফরিন বহিষ্কার

দিলশাদ আফরিন। ছবি: সংগৃহীত

জাতীয় নাগরিক কমিটির শৃঙ্খলা ও আদর্শ বিরোধী কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে সংগঠনটির নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা থানা শাখার সদস্য দিলশাদ আফরিনকে বহিষ্কার করা হয়েছে। সংগঠনের কেন্দ্রীয় কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী গত মঙ্গলবার (৮ এপ্রিল) এই বহিষ্কারাদেশ জারি করা হয়।

বিষয়টি বৃহস্পতিবার (১০ এপ্রিল) গণমাধ্যমের সামনে আসে।

জাতীয় নাগরিক কমিটির সদস্য সচিব আখতার হোসেন স্বাক্ষরিত ওই বহিষ্কারাদেশে বলা হয়, ‘এই পত্রের মাধ্যমে আপনাকে জানানো যাচ্ছে যে, জাতীয় নাগরিক কমিটি-এর নিয়ম ও নীতিমালা অনুযায়ী আপনার সাম্প্রতিক কর্মকান্ড আমাদের সংগঠনের শৃঙ্খলা এবং আদর্শের পরিপন্থী বলে প্রতীয়মান হয়েছে। সমস্ত অভিযোগের ভিত্তিতে এবং সংগঠনের শৃঙ্খলা রক্ষার স্বার্থে আহ্বায়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী ও সদস্য সচিব আখতার হোসেন এর অনুরোধক্রমে আপনাকে জাতীয় নাগরিক কমিটি থেকে বহিষ্কার করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে।’

নারায়ণগঞ্জ জেলার দায়িত্বে থাকা জাতীয় নাগরিক কমিটির সাবেক যুগ্ম সদস্য সচিব আব্দুল্লাহ আল আমিন দিলশাদ আফরিনকে বহিষ্কারের বিষয়ে বলেন, ‘তার বিরুদ্ধে বেশ কিছু অভিযোগ উঠেছিল। জাতীয় নাগরিক কমিটি অভিযোগ তদন্ত করে সত্যতা পাওয়ায় গত ৮ এপ্রিল তাকে দল থেকে বহিষ্কার করে।

আফরিন জাতীয় নাগরিক কমিটির শহীদ আহত কল্যাণ সেলের কোনো দায়িত্বে ছিলেন না। তারপরেও তিনি ব্যক্তিগতভাবে শহীদ ও আহত পরিবারের আর্থিক বিষয় নিয়ে কাজ করেছেন। যা নিয়ে জাতীয় নাগরিক কমিটি অবগত ছিল না বলেও জানান তিনি।

Header Ad
Header Ad

সরকারে এলে প্রথম ১৮ মাসে ১ কোটি কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করবে বিএনপি

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ছবি: সংগৃহীত

জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নির্বাচিত হয়ে সরকার গঠন করতে পারলে প্রথম ১৮ মাসে বিএনপি ১ কোটি কর্মসংস্থান বা চাকরির ব্যবস্থা করবে। ২০৩৪ সালে জিডিপির লক্ষ্যমাত্রা ১ ট্রিলিয়ন ডলার নির্ধারণ করেছে বিএনপি। এ ছাড়া জনগণের ঘাড় থেকে বাড়তি করের লাগাম টেনে ধরা, মানুষের মন থেকে করের ভয় দূর করে কীভাবে কর আহরণ বাড়ানো যায়, তা নিয়েও দলটি কাজ করতে চায়।

বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) আয়োজনে বিনিয়োগ সম্মেলন ২০২৫–এ অংশ নিয়ে বিএনপি এসব পরিকল্পনার কথা জানিয়েছে। বৃহস্পতিবার (১০ এপ্রিল) নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এক পোস্টে এসব তথ্য জানিয়েছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

‘১ ট্রিলিয়ন ডলার ইকোনমি’ শিরোনামে দেওয়া ওই পোস্টে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর লিখেছেন, জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি নির্বাচিত হয়ে সরকার গঠন করতে পারলে প্রথম ১৮ মাসে ১ কোটি কর্মসংস্থান বা চাকরির ব্যবস্থা করবে। প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগ (এফডিআই)/মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) লক্ষ্যমাত্রার শূন্য দশমিক ৪৫ শতাংশ থেকে জিডিপির ২ দশমিক ৫ শতাংশে নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করেছে বিএনপি। ২০৩৪ সালে জিডিপির লক্ষ্যমাত্রা ১ ট্রিলিয়ন ডলার নির্ধারণ করেছে বিএনপি। জনগণের ঘাড় থেকে বাড়তি করের লাগাম টেনে ধরা, মানুষের মন থেকে করের ভয় দূর করে কীভাবে কর আহরণ বৃদ্ধি করা যায়, তা নিয়েও কাজ করতে চায় বিএনপি।

বাংলাদেশে বিদেশি বিনিয়োগ বা এফডিআইকে জনপ্রিয় করতে বিএনপি ১১টি রেগুলেটরি পরিবর্তনের প্রস্তাব করেছে বলেও পোস্টে উল্লেখ করেন মির্জা ফখরুল। এর মধ্যে আটটি প্রস্তাবের কথা তুলে ধরেছেন তিনি। এগুলো হলো বিডাকে কার্যকর করা, ভিসা বা ওয়ার্ক পারমিট বিধির আধুনিকীকরণ, বিনিয়োগকারীদের জন্য ২৪x৭ (দিনে ২৪ ঘণ্টা ও সপ্তাহে ৭ দিন) সেবা চালু করা, স্বয়ংক্রিয় মুনাফা প্রত্যাবাসনের ব্যবস্থা, স্থানীয়ভাবে দক্ষ জনশক্তির ব্যবস্থা করা, বিনিয়োগকারীদের নিরাপত্তা আইন প্রণয়নের সঙ্গে অবকাঠামোগত উন্নয়ন, মানবসম্পদের কর্মদক্ষতা বৃদ্ধির ব্যবস্থা নেওয়া এবং প্রকৃত প্রশিক্ষণ ও প্রণোদনার ব্যবস্থা করে বৈদেশিক কর্মসংস্থানের পরিমাণ ও আওতা বৃদ্ধি।

সরকার গঠন করতে পারলে দেশের মানবসম্পদের কর্মদক্ষতা বৃদ্ধির ব্যবস্থা নেওয়া, প্রকৃত প্রশিক্ষণ ও প্রণোদনার ব্যবস্থা করে বৈদেশিক কর্মসংস্থানের পরিমাণ ও আওতা বৃদ্ধির জন্য বিএনপি অতীতের চেয়েও ব্যাপক সফলতা অর্জন করতে চায় বলে জানান মির্জা ফখরুল। পোস্টে তিনি জানান, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বিনিয়োগ সম্মেলন উপলক্ষে এক শুভেচ্ছাবার্তায় তিনটি বিষয় বলেছেন। এগুলো হলো ঐক্যই ভবিষ্যৎ জাতীয় উন্নয়নের সোপান, এফডিআই আকৃষ্ট করতে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের সরকার আইন করেছিল এবং দেশনেত্রী খালেদা জিয়ার সরকারগুলোর বিনিয়োগবান্ধব নীতি ছিল।

Header Ad
Header Ad

চুয়াডাঙ্গা সীমান্তে বিজিবি-বিএসএফের কমান্ডার পর্যায়ের বৈঠক অনুষ্ঠিত

চুয়াডাঙ্গা সীমান্তে বিজিবি-বিএসএফের কমান্ডার পর্যায়ের বৈঠক অনুষ্ঠিত। ছবি: ঢাকাপ্রকাশ

চুয়াডাঙ্গা সীমান্তে বিজিবি-বিএসএফ ব্যাটালিয়ন কমান্ডার পর্যায়ে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১০ এপ্রিল) বেলা ১১ টা থেকে ‍দুপুর ১২ টা ২০ মিনিট পর্যন্ত চুয়াডাঙ্গা ব্যাটালিয়ন (৬ বিজিবি) এর দায়িত্বপূর্ণ এলাকা মেহেরপুর জেলার ইছাখালি সীমান্ত এলাকার মেইন পিলার ১২৪ এর নিকট শূন্য রেখা বরাবর ভারতীয় পার্শ্বে বিএসএফ নব চন্দ্রপুর ক্যাম্পে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।

বিজিবি সূত্র জানায়, চুয়াডাঙ্গা ব্যাটালিয়ন (৬ বিজিবি) এবং প্রতিপক্ষ ৫৬ বিএসএফ ব্যাটালিয়নের সাথে ব্যাটালিয়ন কমান্ডার পর্যায়ে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে বিজিবি’র পক্ষে চুয়াডাঙ্গা ব্যাটালিয়ন (৬ বিজিবি) এর অধিনায়ক লে. কর্নেল মো. নাজমুল হাসান স্টাফ অফিসারসহ মোট ৯ সদস্যের প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব প্রদান করেন।

অপরদিকে বিএসএফ এর পক্ষে ৫৬ বিএসএফ ব্যাটালিয়নের কমান্ড্যান্ট শ্রী বিনয় কুমার তাঁর স্টাফ অফিসারসহ ৮ সদস্য বিশিষ্ট প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেন।

বৈঠকের শুরুতে উভয় পক্ষ ঈদ-উল-ফিতর পরবর্তী শুভেচ্ছা বিনিময় করেন। শুভেচ্ছা বিনিময়ের পর উভয় ব্যাটালিয়ন কমান্ডার সীমান্ত এলাকায় শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখার লক্ষ্যে চোরাচালান প্রতিরোধ, অবৈধ অনুপ্রবেশ রোধ, যৌথ টহল তৎপরতা জোরদারকরণ এবং গোয়েন্দা নজরদারির বিষয়সমূহে বিস্তারিত আলোচনা করেন। সীমান্তকে অধিক সুসংহত ও কার্যকরী করার লক্ষ্যে বিজিবি-বিএসএফ যৌথভাবে কার্যক্রম পরিচালনার বিষয়ে ব্যাটালিয়ন কমান্ডারগণ একমত পোষণ করেন। এছাড়াও, সীমান্তে দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে উভয় দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর মধ্যে পারস্পরিক সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখা ও সীমান্ত সংক্রান্ত যে কোনো গুরুত্বপূর্ণ ঘটনার তাৎক্ষণিক তথ্য আদান-প্রদানের বিষয়ে উভয় ব্যাটালিয়ন কমান্ডারগণ সম্মত হন।

বৈঠক শেষে উভয় ব্যাটালিয়ন কমান্ডার মেইন পিলার ১২৪ সহ তৎসংলগ্ন সীমান্ত পিলারসমূহ যৌথভাবে পায়ে হেঁটে পরিদর্শন করেন।
দু’দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর মধ্যে বিদ্যমান সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক আরও সুদৃঢ় করার প্রত্যয় ব্যক্ত করে আন্তরিক ও সদ্ভাবপূর্ণ পরিবেশে বৈঠক শেষ হয়।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

জাতীয় নাগরিক কমিটির সদস্য দিলশাদ আফরিন বহিষ্কার
সরকারে এলে প্রথম ১৮ মাসে ১ কোটি কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করবে বিএনপি
চুয়াডাঙ্গা সীমান্তে বিজিবি-বিএসএফের কমান্ডার পর্যায়ের বৈঠক অনুষ্ঠিত
আবারও চেন্নাইয়ের অধিনায়ক হলেন ধোনি
‘ক্রিম আপা’ খ্যাত কন্টেন্ট ক্রিয়েটর শারমিন শিলা গ্রেফতার
দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ দামে সোনা, ভরি ১ লাখ ৫৯ হাজার টাকা
ভিন্ন ধর্মের ছেলের সঙ্গে প্রেম, বাবার হাতে প্রাণ গেল মেয়ের
পোল্যান্ডের রাষ্ট্রদূত হলেন সাবেক আইজিপি ময়নুল
জেনে নিন গ্রীষ্মে সুস্বাদু আর উপকারী কাঁচা আমের ১১টি বিস্ময়কর গুণ
এসএসসি পরীক্ষা না দিয়ে প্রেমিকের বাড়িতে অনশনে কিশোরী
সাধারণ মানুষ চায় এই সরকার আরো ৫ বছর থাকুক: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
ফিলিস্তিনে গণহত্যার প্রতিবাদে টাঙ্গাইলে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের মানববন্ধন (ভিডিও)
জিয়াউর রহমান বেঁচে থাকলে ইসরায়েল এমন অপকর্মের সাহস পেত না: মির্জা আব্বাস (ভিডিও)
নওগাঁয় গাছ কাটাকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের সংঘর্ষে নিহত ২
বাংলাদেশ রেলওয়ের দুই কর্মকর্তাকে পদায়ন ও বদলি
২০ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে বাংলাদেশে হাসপাতাল বানাচ্ছে মার্কিন কোম্পানি
কাদের-কামালসহ ১০ জনের বিরুদ্ধে ইন্টারপোলের রেড নোটিশ জারি করতে চিঠি
সিলেটে থানায় লালগালিচা দেখে ক্ষোভ ঝাড়লেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
দিল্লিতে লিঙ্গ পরিবর্তনের চিকিৎসা নিতে এসে গ্রেপ্তার ৫ বাংলাদেশি
রবিবার ৩ জেলায় সাধারণ ছুটি, সবমিলিয়ে টানা ৪ দিনের অবকাশ