বৃহস্পতিবার, ১৫ মে ২০২৫ | ১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২
Dhaka Prokash

সন্তান প্রতিপালনে বাবা মায়ের করণীয়

প্রথমে আমাদের জানতে হবে প্যারেন্টিং অথবা বাবা মায়ের ভূমিকা বলতে কি বুঝায়। সাধারণত আমরা সব বয়সের মানুষ পিতা-মাতাকে প্যারেন্ট হিসেবে চিনি। কিন্তু প্যারেন্ট বলতে যা বোঝায় একটি শিশুর শারীরিক ও মানসিক বিকাশে যাদের ভূমিকা থাকে এবং যাদের উপর শিশু নির্ভর করে থাকে তাদের প্যারেন্ট বলা হয়ে থাকে। যেমন-পরিবারের বাবা-মা, পালক বাবা মা, বড় ভাই-বোন, দাদা-দাদী, নানা-নানী নিকটাত্মীয় যাদের একটি শিশু নিরাপদ ও ভরসাযোগ্য আশ্রয়স্থল মনে করে থাকেন, তারাও একটি শিশুর জন্য বাবা মায়ের সমতুল্য হয়ে থাকেন এবং বাচ্চার শারীরিক ও মানসিক গঠনে যাদের উল্লেখযোগ্য ভূমিকা থাকে একটি শিশুর জন্য তাদেরকে প্যারেন্ট বলা যেতে পারে।

একজন স্বামী এবং স্ত্রী যখন তাদের জীবনে শিশুর আগমন নিয়ে চিন্তা করে থাকেন, তখন থেকেই বাবা মাকে পারেন্টিংরোল এর মধ্য দিয়ে নিজেদেরকে তৈরি হতে হয়। তাই শুরু থেকেই স্বামী স্ত্রীকে আগে নিজেদের সম্পর্কের মধ্যে যদি কোন সমস্যা থাকে।

তা সঠিকভাবে সমাধান করে নেয়াটা জরুরী। আগে নিজেদের শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের প্রতি যত্নশীল হবেন। আমাদের সমাজের একটি বহুলপ্রচলিত ভুল ধারণা বিদ্যমান আছে। আমরা মনে করে থাকি, একটি শিশুর জন্মের মধ্য দিয়ে বৈবাহিক সমস্যা গুলোর সমাধান হয়ে যাবে। কিন্তু পরিপ্রেক্ষিতে দেখা যায়, নিজেদের মধ্যকার সমস্যাগুলোই পরবর্তীতে শিশুর মানসিক সমস্যার কারণ হতে পারে। মনে রাখতে হবে, শিশুর জন্ম নেয়া মানে নিজেদের সমস্যার সমাধান নয়। শিশুর জন্মানোর মধ্য দিয়ে জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব শুরু হয় এবং সেই দায়িত্বের সাথে সম্পর্কিত কাজগুলো মধ্য দিয়ে নিজেকে পরিচয় করাতে হয়। প্যারেন্টিং রোলটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ প্রত্যেক বাবা-মায়ের ক্ষেত্রে ।  

একটি বাচ্চাকে যথাযথভাবে বড় করার জন্য প্রত্যেকেরই কিছু প্রধান দায়িত্ব ও কর্তব্য থাকে। আমরা সংক্ষেপে ওই বিষয়গুলো সম্পর্কে জেনে নিব। প্রথমতঃআমাদের খেয়াল রাখতে হবে শিশুর যথাযথ শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের গঠন ও নিরাপত্তার উপর। দ্বিতীয়তঃ শিশুকে সক্ষম পূর্ণবয়স্ক মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে সাহায্য করা এবং সামাজিক মূল্যবোধ শিশুর মধ্যে তৈরি হতে সাহায্য করা। তৃতীয়তঃ শিশু এবং তার বাবা-মায়ের মধ্যকার সম্পর্কের প্রতি খেয়াল রাখতে হবে।

একটি শিশুর জীবনে চলার পথে বাবা মায়ের উপর প্রতিটি পদক্ষেপেই নির্ভরশীল। তাই শিশু ছোট থেকে বড় হওয়া পর্যন্ত বাবা-মাকেই তার নিরাপত্তার বিষয়টি নিশ্চিত করতে হয়। তাই বাবা-মাকে বেশ কিছু বিষয়ের উপর খেয়াল রাখতে হয়। যা বাবা মাকে একটু সুন্দর সুস্থ সন্তান তৈরিতে সাহায্য করবে।

একটি শিশু জন্মের পর থেকে তাকে দেখাশোনার কাজে যারা নিযুক্ত থাকে প্রত্যেকেই প্যারেন্টিং এর রোল পালন করে থাকে। শিশু জন্মের পর থেকে তার প্রত্যেকটি কাজের জন্য তার  বাবা-মা কেয়ারগিভার এর উপর নির্ভর করে থাকে। তাই এর মধ্য দিয়ে সন্তান ও বাবা-মার মধ্যকার সম্পর্ক অনেক বেশি দৃঢ় হয়।

একটি শিশুর দৈনন্দিন প্রয়োজনগুলি ( যেমন – খাওয়ানো, কাপড় বদলানো ,কোলে নেয়া, আদর করা, কান্না থামানো) শিশুর প্রয়োজনীয় কাজগুলো যদি তাড়াতাড়ি এবং আন্তরিকতার সাথে করা হয় তা শিশু ও বাবা-মায়ের মধ্যকার সম্পর্ক দৃঢ় হতে সাহায্য করে। এই ভালোবাসার বন্ধন শিশুর সাথে তার বাবামায়ের সম্পর্কের জন্য খুব প্রয়োজন এবং ভাইবোন ও অন্যদের সাথেও ভালো সম্পর্ক তৈরি হয়। মা-বাবা এবং অন্য অভিভাবকদের সাথে যখন শিশুর সুন্দর সম্পর্ক তৈরি হয়, তখন শিশু পৃথিবীতে নিজের অবস্থান  সম্পর্কে ইতিবাচক ভাবতে পারে। 

বাবা-মাকে তার সন্তান বড় হওয়ার সাথে সাথে নিম্নলিখিত কাজগুলোর দিকে খেয়াল রাখতে হবে।  

  • শিশুদের স্নেহ ভালোবাসা প্রদর্শন করুন।
  • শিশুদের সাথে সঠিক ভাবে যোগাযোগ করার মধ্য দিয়ে তাদের সাথে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক তৈরী করুন। যেন সহজেই বাচ্চা তার যেকোনো সমস্যায় আপনার সাহায্যের কথা চিন্তা করে থাকে।
  • শিশুর সাথে আপনিও উদ্দীপনামূলক কাজগুলোতে অংশগ্রহণ করুন এবং তাকে যথাযথভাবে সময় দিন।
  • শিশুদের যেকোনো কাজের প্রশংসা করুন ও তাদের বিভিন্ন গঠনমূলক কাজে অংশগ্রহণ করার জন্য উৎসাহিত করুন।
  • শিশুর পছন্দ-অপছন্দের বিষয়টিকে মূল্যায়ন করুন, পারস্পারিক সম্পর্কের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হোন। এতে শিশুটি সম্পর্কের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হতে শিখবেন।
  • বাবা-মা নিজেরাও সন্তান জন্মের পর তাদের পরিবর্তিত পরিস্থিতির সাথে খাপ খাইয়ে নিতে অনেক প্রতিকূলতার সম্মুখীন হয়ে থাকেন। তাই বাবা-মা নিজেরা যদি কিছু বিষয় মনে রাখেন, সহজেই বাবা-মা শিশু লালন পালনে সক্ষম হবেন।  
  • শিশুদেরকে ভালো কাজের জন্য পুরস্কৃত করুন (Reward good behaviour)।একটি শিশুর প্রাথমিক বিদ্যালয় কিন্তু ফ্যামিলি। শিশু বুঝতে শেখার পর থেকে তার আশেপাশের প্রিয় মানুষগুলোকে অনুসরণ করে থাকে। তাই কাছের মানুষজন অর্থাৎ বাবা-মা-ভাই-বোন যদি ছোট্ট শিশুটিকে তার নিজস্ব কাজের জন্য ইতিবাচক কথা বলে থাকে। তাহলে শিশুটি ভালো কাজ করার ক্ষেত্রে আরো বেশি আগ্রহ পাবে। মনে রাখতে হবে শিশুরা প্রশংসা ও মনোযোগ পেতে পছন্দ করে।
  • ভুলক্রমেও শিশুর কোন নেতিবাচক কাজকে পুরস্কৃত করবেন না। (Don’t accidentally reward bad behavior) যেহেতু একটি শিশুর প্রতিপালনের বিষয়টি বাবা-মাদের ক্ষেত্রে নতুন তাই স্বাভাবিক বাবা-মা’র অনেক সময় বুঝতে পারেনা শিশুর বিভিন্ন ধরনের ব্যবহার কিভাবে নিয়ন্ত্রণ করবেন। অনেক সময় দেখা যায়, বাচ্চারা অন্যায় আবদার করে অথবা কান্নাকাটি করে তাদের বড়দের কাছ থেকে কোনো কিছু আদায় করে নিতে চাই এবং এই ব্যবহারের ক্ষেত্রে যদি সে মনোযোগ পেয়ে যায়, তাহলে এই ধরনের অন্যায় আবদার দিনকে দিন শিশুটি করে যাবে। তাই শিশুর এমন কোনো আবদারে মনোযোগ দেয়া যাবে না যাতে করে শিশুর ক্ষতি হয়। শিশুকে বুঝিয়ে বিষয়টি খোলামেলা আলোচনা করতে হবে। যেমন অনেক সময় দেখা যায় বাচ্চারা তাদের পছন্দ নয় এমন কোন কাজ নিয়ে অভিযোগ করে থাকে, মন খারাপ করেও কান্নাকাটি করে। সেক্ষেত্রে বাচ্চার ভুলটি ইতিবাচক উপায় বুঝিয়ে দিতে হবে। শিশু যেন একটি দৈনিক রুটিনের মধ্যে থাকে সেই বিষয়ে তাকে উৎসাহ দিতে হবে।
  • খারাপ কাজের জন্য শিশুদের স্বল্প শাস্তির ব্যবস্থা করুন। (Learn about punishment and punish some bad behavior but use mild punishment)

 বাবা-মা সন্তান লালন পালনের ক্ষেত্রে অনেক সময় বুঝতে পারেন না তারা কি ধরনের রোল বা  ভূমিকা পালন করবেন। তারা নিজেদের অজান্তে বিভিন্ন ধরনের প্যারেন্টিং স্টাইল অনুসরণ করে থাকে। যার ফলশ্রুতিতে সন্তানের ব্যক্তিত্বের ধরণ বুঝতে না পারার কারণে  সন্তানের উপর এর নেতিবাচক  প্রভাব পড়ে থাকে । বাবা-মার সুবিধার্থে বিভিন্ন ধরনের পাইন্টিং স্টাইল সম্পর্কে সংক্ষেপে আলোচনা করা হলো।  

১। কর্তৃত্বপরায়ন ধরনের ( Authoritarian style)-  এই ধরনটিতে খুব কঠোর এবং মা বাবার সন্তান প্রতিপালন ধরন( Parenting style)-

অনড় নিয়ম আরোপ করা হয়। ফলে শিশুরা অসুখী ও সংঘাতময় হয়।

২- প্রশ্রয়/ আশকারা- অনুমতিদায়ক  ধরনের-(indulgent – Permissive style)  এই ধরনটিতে শিশুরা কোন বিধিনিশেধ মেনে বড় হয় না। মাঝে মাঝে শিশুদেরকে অনুমানযোগ্য কঠোর শাস্তি দেয়া হয়। এই সব শিশুরা মারমুখি, আবেগতাড়িত এবং জীবনের বিভিন্ন কাজে অসফল হয়ে থাকে।

৩। প্রশ্রয়/ আস্কারা- অবহেলা ধরনের ( Indulgent- Neglectful style)- এই ক্ষেত্রে শিশুদেরকে অনেক বেশি আস্কারা দেয়া হয় এবং  তাদেরকে অবহেলা ও করা হয়।  ফলে শিশুদের মধ্যে আত্মর্যাদাবোধ ও আত্মনিয়ন্ত্রণ কম থাকে, এবং বেশি আক্রমণাত্মক হয়।

৪।কর্তৃত্ববাদি- পরস্পর বিনিময়যোগ্য ধরন ( Authoritative reciprocal style )- এই ধরনের প্রতিপালনে উষ্ণ ভালোবাসার পরিবেশের মধ্যেও দৃঢ় নিয়মকানুন প্রতিষ্ঠা করা হয় এবং সিদ্ধান্ত গ্রহনের সময় পরস্পরের মতামতকে মূল্য দেয়া হয়।

এটিকে শিশু প্রতিপালনের জন্য সবচেয়ে উপযুক্ত ও কার্যকরী পদ্ধতি বলা হয়। এর ফলে শিশুরা আত্মনির্ভরশীল ও আত্মমর্যাদা সম্পন্ন হয়ে গড়ে উঠে এবং সামাজিক দায়িত্ববোধ ও তৈরি হয়।

Positive parenting এর মুল উদ্দেশ্য হল শিশুদেরকে এমনভাবে নিয়মানুবর্তিতা শিখানো যাতে করে শিশু ও বাবা–মায়ের সাথে ভালো সম্পর্ক গড়ে উঠে এবং শিশুরা আত্মর্যাদাসমপন্ন হয়।

Positive parenting  শিশুদের ব্যবহার এবং অনুভুতির উন্নতির সাথে সাথে তাদের স্বকীয়তা এবং ইতিবাচক জীবন দর্শন শিক্ষা দেয়

উদাহরণস্বরূপ-

 -শিশুকে নেতৃত্ব দেয়া শিখালে তারা আত্মবিশ্বাসী হয় এবং ভাল সিদ্ধান্ত ( make good choice ) নিতে পারে

_ ইতিবাচক যোগাযোগ ( communication )  অবিভাবকের সাথে শিশুর সম্পর্কের গুনগতমান বৃদ্ধির সাথে তাদেরকে সামাজিক হতে এবং সমস্যা সমাধান করতে শিক্ষা দেয়।

-উষ্ণ এবং গনতান্ত্রিক লালন পালন শিশুকে আত্মমর্যাদা সম্পন্ন আত্মবিশ্বাসী হতে সাহায্য করে

-শিশু পালনে সায়ত্তশাসন ব্যবহার করলে শিশুর সৃজনশীলতা, empowerment and self determination

-সহায়ক এবং আস্থাশীল শিশু লালন পালন (supportive and optimistic  parenting  শিশুকে তার নিজের এবং ভবিষ্যতের প্রতি বিশ্বাসী হতে সাহায্য করে।

-শিশুর ভাল ব্যবহারকে স্বীকৃতি দিলে শিশুর  self – efficacy  গড়ে ওঠে এবং তারা ইতিবাচক সামাজিক ব্যবহারের প্রতি উৎসাহী হয়। 

শিশুকে বিধিনিষেধ মেনে চলতে শিখালে তারা জবাবদিহিতা  শিখে এবং দায়িত্বশীল হয়ে গড়ে উঠে ।

 একটি শিশু যখন কৈশোর বয়সে পা দেয় তখন তাদের শারিরিক, মানসিক , সামাজিক বিভিন্ন দিকে পরিবর্তন হতে থাকে। তারা  স্বভাবতই স্বনির্ভর এবং সত্ত্বাধিকারী হতে চেষ্টা করে এবং  পরিবারের  চাইতে বন্ধুদের সাথে বেশি সময় কাটাতে পচ্ছন্দ করে।  অভিভাবকেরা এই সময় খুব সাবধানে শিশুর পরিবারের সাথে সম্পর্ক  বজায় রাখতে  এবং তাদের স্বকীয়তা অর্জনে সাহায্য করবেন। যে সব কিশোর কিশোরী পরিবারের  সাথে  ভাল সম্পর্ক রাখতে পারে এবং নিজেকে পরিবারের আবদ্ধ ও মনে না করে তারা সুন্দরভাবে প্রসফুটিত হয়। রিসার্চে দেখা গেছে যেসব টিনেজারদের সাথে  তাদের অ্ভিভাবকেরা উষ্ণ, যোগাযোগপুরন ( communicative ) এবং  reasoned আচরন করেন  তারা সামাজিক ভাবে competent হয়, , নেশায় জড়িয়ে  পড়ে না এবং  Depression or anxiety তে কম ভুগে থাকে। 

বয়ঃসন্ধিকাল এই সময়টাতে কিশোর-কিশোরীদের মধ্যে নানা ধরনের পরিবর্তন লক্ষ করা যায়। তারা তাদের ব্যক্তিগত বিষয়গুলো পরিবারের কাছ থেকে গোপন করে থাকে। যার ফলশ্রুতিতে তারা বিভিন্ন ধরনের খারাপ অভ্যাস  সাথে নিজেকে জড়িয়ে ফেলে। বর্তমানকালে লক্ষ করা যায় যায় , মাদক দ্রব্যের ব্যবহার টিনএজ বয়সে বাচ্চাদের ক্ষেত্রে ব্যাপক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে, খারাপ সঙ্গ ও পরিবেশের কারণে তারা সহজেই এই অভ্যাসে নিজেকে জড়িয়ে ফেলছে। তাই বাবা মাকে এ সময়টাতে অনেক সতর্ক থাকতে হয়। বাবা-মা এই বয়সের সন্তানদের লালন পালনের ক্ষেত্রে নিম্নলিখিত বিষয়গুলো লক্ষ রেখে সন্তানের মাদক ব্যবহারের প্রবনতা যেভাবে কমিয়ে আনতে পারেনঃ

  • আপনার সন্তানের বন্ধুদের জানুন
  • কোনো সমস্যা সমাধান এবং মাদকদ্রব্য বাবহারের ক্ষেত্রে নিজে আপনার সন্তানের রোল মডেল হন।
  • আপনার সন্তান মাদক দ্রব্য ব্যাবহারের ঝুঁকিতে আছে কিনা বোঝার চেস্টা করুন।
  • সন্তানকে মাদক সম্বন্ধে ইনফর্মেশন দিন।
  • সন্তানের ব্যবহার এবং গতিবিধির উপর নজরদারী করুন।
  • ওদের জীবনযাত্রায় কিছু বিধিনিষেধ আরোপ করুন।
  • সন্তানের সাথে মাদকদ্রব্য নিয়ে খোলাখুলি আলোচনা করুন।
  • আপনার সন্তানের সাথে উষ্ণ ও সহায়ক সম্পর্ক গড়ে তুলুন।

 

সঠিকভাবে সন্তান বড় করার পিছনে বাবা মায়ের ভূমিকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তাই পজিটিভ প্যারেন্টিং বিষয়টি খুবই গুরুত্বপূর্ণ সন্তান লালন পালনের ক্ষেত্রে। সেক্ষেত্রে বাবা-মাকেও মানসিকভাবে সুস্থ থাকতে হবে এবং মনে রাখতে হবে সঠিক প্যারেন্টিং একটি সন্তানের মানসিক বিকাশে ব্যাপক ভূমিকা রাখে।  

  

Header Ad
Header Ad

আমরা ভারতের বিরুদ্ধে ১৯৭১ সালের যুদ্ধের প্রতিশোধ নিয়েছি: শেহবাজ শরিফ

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি (বামে) এবং পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ। ছবি কোলাজ: ঢাকাপ্রকাশ

ভারতের বিরুদ্ধে পাকিস্তানের সাম্প্রতিক পাল্টা হামলাকে ১৯৭১ সালের যুদ্ধে পরাজয়ের প্রতিশোধ হিসেবে বর্ণনা করেছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ। তিনি বলেন, "পাকিস্তানি সেনারা মাত্র কয়েক ঘণ্টার মধ্যে ভারতের আগ্রাসন রুখে দিয়ে প্রমাণ করেছে, পাকিস্তান আর ১৯৭১ সালের সেই দুর্বল রাষ্ট্র নয়। আমরা আমাদের ইতিহাসের প্রতিশোধ নিয়েছি।"

বুধবার (১৪ মে) শিয়ালকোটের পাসরুর সেনানিবাসে "অপারেশন বুনইয়ান-উন-মারসুস"-এ অংশ নেওয়া সেনাদের সঙ্গে সাক্ষাতে এসব কথা বলেন শেহবাজ। তিনি এই সামরিক অভিযানের প্রশংসা করে বলেন, “এই অপারেশন পাকিস্তানের জন্য একটি ঐতিহাসিক মুহূর্ত। সেনারা দুর্দান্ত সাহস ও দ্রুততায় শত্রুর জবাব দিয়েছে।”

প্রসঙ্গত, ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে পাকবাহিনীর বিরুদ্ধে ভারত ও বাংলাদেশের মুক্তিবাহিনী যৌথভাবে অভিযান চালিয়ে ১৬ ডিসেম্বর পাকিস্তানকে পরাজিত করে। এর আগে পাকিস্তান ভারতের বিমান ঘাঁটিতে ‘অপারেশন চেঙ্গিস খান’ চালায়, যার জবাবে ভারত আনুষ্ঠানিকভাবে যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ে।

শেহবাজ বলেন, “ইতিহাসে চিরস্থায়ী হয়ে থাকবে—পাকিস্তানের সাহসী সেনারা কীভাবে ভারতের অপ্ররোচিত আগ্রাসনের জবাব দিয়েছে। তারা শুধু বর্তমানের নয়, অতীতের অপমানেরও জবাব দিয়েছে।”

পাক প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, “বিশ্ব জানে ১৯৭১ সালে মুক্তিবাহিনীকে কারা প্রশিক্ষণ দিয়েছিল। আজও সেই একই শক্তি বেলুচ লিবারেশন আর্মি এবং তেহরিক-ই-তালিবান পাকিস্তানের মতো সন্ত্রাসী গোষ্ঠীকে সমর্থন দিচ্ছে। এর পেছনে আছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।”

মোদির উদ্দেশ্যে হুঁশিয়ারি দিয়ে শেহবাজ বলেন, “আপনার জ্বালাময়ী বক্তব্য নিজের কাছে রাখুন। পাকিস্তান শান্তি চায়, কিন্তু কেউ যেন আমাদের শান্তির আহ্বানকে দুর্বলতা না ভাবে। যদি আপনি আরেকবার আগ্রাসনের চেষ্টা করেন, তাহলে ফলাফল আপনার কল্পনার বাইরে হবে।”

সম্প্রতি ভারতের পক্ষ থেকে পাকিস্তানের পানি প্রবাহ বন্ধ করার হুমকির জবাবেও কড়া অবস্থান নেন শেহবাজ। তিনি বলেন, “পানি ও রক্ত একসঙ্গে প্রবাহিত হতে পারে না। এটি পাকিস্তানের লাল লাইন। এই সীমা লঙ্ঘন করা হলে চরম পরিণতির জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে।”

শেহবাজের সফরে তার সঙ্গে ছিলেন পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী, প্রতিরক্ষামন্ত্রী, সেনাবাহিনী প্রধান, নৌবাহিনী প্রধান ও বিমানবাহিনী প্রধানসহ অন্যান্য শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তা।

Header Ad
Header Ad

পুলিশের লাঠিচার্জে ছত্রভঙ্গ নার্সিং শিক্ষার্থীরা, শাহবাগে যান চলাচল শুরু

পুলিশের লাঠিচার্জে ছত্রভঙ্গ নার্সিং শিক্ষার্থীরা, শাহবাগে যান চলাচল শুরু। ছবি: সংগৃহীত

রাজধানীর শাহবাগ মোড় অবরোধ করে বিক্ষোভ করছিলেন ডিপ্লোমা নার্সিং শিক্ষার্থীরা। বুধবার (১৪ মে) রাত ৯টার দিকে পুলিশ লাঠিচার্জ করলে তারা ছত্রভঙ্গ হয়ে পড়ে এবং পরবর্তীতে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে গিয়ে অবস্থান নেন।

পুলিশের লাঠিচার্জে অন্তত ১০ জন শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে। এর মধ্যে তিনজন বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে এবং একজন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

সকাল থেকেই দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে আসা নার্সিং শিক্ষার্থীরা কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে জড়ো হন। সেখান থেকে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে তারা শাহবাগ মোড়ে পৌঁছান। শাহবাগ থানার সামনে পুলিশ ব্যারিকেড দিলেও শিক্ষার্থীরা তা অতিক্রম করে মোড়ে অবস্থান নেন, ফলে যান চলাচল সম্পূর্ণভাবে বন্ধ হয়ে যায়।

বিক্ষোভ চলাকালে রাত ৯টার দিকে পুলিশ শিক্ষার্থীদের সড়ক থেকে সরাতে লাঠিচার্জ শুরু করে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, শিক্ষার্থীরা কিছুটা প্রতিরোধের চেষ্টা করলেও পরিস্থিতি দ্রুত উত্তপ্ত হয়ে ওঠে।

আহত শিক্ষার্থী আভি শেখ বলেন, "আমরা পুলিশের কাছে মাত্র ১০ মিনিট সময় চেয়েছিলাম, যাতে শান্তিপূর্ণভাবে সড়ক ছেড়ে যেতে পারি। কিন্তু সেই সময় না দিয়ে তারা সরাসরি লাঠিচার্জ করে। এতে অনেক শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন, কয়েকজন হাসপাতালে ভর্তি আছেন।" তিনি আরও জানান, "আমরা এখন শহীদ মিনারে অবস্থান নিয়েছি এবং সেখান থেকে পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করব।"

লাঠিচার্জের পর শিক্ষার্থীরা শাহবাগ মোড় ছেড়ে যাওয়ায় সেখানে যান চলাচল আবারও স্বাভাবিক হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা মোড়ে অবস্থান নিয়েছে, পরিস্থিতি বর্তমানে নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।

Header Ad
Header Ad

অভিযানে ক্ষতিগ্রস্ত ৩ রিকশাচালককে দেড় লাখ টাকা অনুদান, পাবেন চাকরিও

ক্ষতিগ্রস্ত তিন রিকশাচালকের হাতে অনুদানের অর্থ তুলে দেন ডিএনসিসি প্রশাসক। ছবি: সংগৃহীত

রাজধানীর আসাদগেট এলাকায় অভিযান চালিয়ে ব্যাটারিচালিত রিকশা গুঁড়িয়ে দেওয়ার ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত তিন রিকশাচালককে দেড় লাখ টাকা আর্থিক সহায়তা দিয়েছে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি)। সেইসঙ্গে তাদের চাকরির ব্যবস্থাও করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন ডিএনসিসির প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ।

বুধবার (১৪ মে) ডিএনসিসি ভবনে এক অনুষ্ঠানে প্রশাসকের নিজ কার্যালয়ে ক্ষতিগ্রস্ত তিন চালকের হাতে ৫০ হাজার টাকা করে মোট দেড় লাখ টাকার চেক তুলে দেন তিনি।

ডিএনসিসি প্রশাসক বলেন, "মানবিক দিক বিবেচনায় আমরা এই সহায়তা দিয়েছি। তবে এটা এককালীন। ভবিষ্যতে মূল সড়কে অবৈধ ব্যাটারিচালিত রিকশা চলাচল করলে একই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।" তিনি আরও জানান, চাকরির ব্যবস্থা করে দিতে এরই মধ্যে ডিএনসিসির অঞ্চল-৫ এর আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তাকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

মঙ্গলবার (১৩ মে) ডিএনসিসি ও ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) যৌথভাবে আসাদগেট এলাকায় অভিযান চালিয়ে মূল সড়কে চলাচলরত অবৈধ ব্যাটারিচালিত বেশ কিছু রিকশা জব্দ করে। কিছু রিকশা গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়, যার ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হন কয়েকজন চালক।

এই ঘটনার ছবি ও ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এবং গণমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে বিষয়টি নজরে আসে ডিএনসিসি প্রশাসকের। পরে তিনি দ্রুত সহায়তা প্রদানের প্রতিশ্রুতি দেন এবং তা বাস্তবায়ন করেন।

ডিএনসিসি প্রশাসক আরও জানান, রাজধানীর প্রধান সড়কে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে এবং যাত্রী নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে অবৈধ ব্যাটারিচালিত রিকশা অপসারণ করা হচ্ছে। সরকার ইতোমধ্যে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) অনুমোদিত মডেলে ব্যাটারিচালিত রিকশা উৎপাদনের অনুমতি দিয়েছে কয়েকটি কোম্পানিকে।

তিনি বলেন, "এসব রিকশাচালককে প্রশিক্ষণের মাধ্যমে বৈধ রিকশা পরিচালনার সুযোগ দেওয়া হবে। ব্র্যাকের সহায়তায় প্রায় এক লাখ রিকশাচালককে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে, যা চলতি মাসেই শুরু হবে।"

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

আমরা ভারতের বিরুদ্ধে ১৯৭১ সালের যুদ্ধের প্রতিশোধ নিয়েছি: শেহবাজ শরিফ
পুলিশের লাঠিচার্জে ছত্রভঙ্গ নার্সিং শিক্ষার্থীরা, শাহবাগে যান চলাচল শুরু
অভিযানে ক্ষতিগ্রস্ত ৩ রিকশাচালককে দেড় লাখ টাকা অনুদান, পাবেন চাকরিও
বিশ্বের ‘সবচেয়ে দরিদ্র প্রেসিডেন্ট’ হোসে মুজিকা মারা গেছেন
পিএসএলে দল পেলেন সাকিব আল হাসান!
বিজিবির অভিযানে মেহেরপুর সীমান্তে ৯৪ লাখ টাকার স্বর্ণসহ আটক ২
আ.লীগ সরকারের করা চুক্তিতে শেখ হাসিনাকে দেশে ফেরানো সম্ভব: দুদক
আইপিএলে ডাক পেলেন মোস্তাফিজ, বিসিবি জানে না কিছুই!
টাঙ্গাইলে জেমসের কনসার্টে মোবাইল চুরির হিড়িক, থানায় ১২৯ জিডি
ঈদে বাসের অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু ১৬ মে
আত্মপক্ষের সুযোগ হারালেন টিউলিপ সিদ্দিক
১ মাস না যেতেই পাল্টে গেল ডেসটিনির রফিকুলের দলের নাম
অশ্লীলতার অভিযোগে ৬ অভিনেত্রী ও ৩ নির্মাতার বিরুদ্ধে লিগ্যাল নোটিশ
সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আগামীকাল থেকে রেইড: আসিফ মাহমুদ
ইসরায়েলের বিমানবন্দরে হুথিদের মিসাইল হামলা (ভিডিও)
আইপিএলে ৬ কোটিতে মুস্তাফিজকে দলে নিল দিল্লি ক্যাপিটালস
টাঙ্গাইলে বিএনপি নেতার কারখানায় ডাকাতি, গ্রেফতার ৯
সেলিব্রিটি ক্রিকেটে চ্যাম্পিয়ন গিগাবাইট টাইটানস, উচ্ছ্বসিত সিয়াম-মেহজাবীনরা
এপ্রিলে আইসিসির মাসসেরা ক্রিকেটার মিরাজ
সমাবর্তনে ড. ইউনূসকে ডি-লিট ডিগ্রি দিল চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়