শনিবার, ২৮ ডিসেম্বর ২০২৪ | ১২ পৌষ ১৪৩১
Dhaka Prokash
Header Ad

লোকজ সংস্কৃতি ও আগ্রাসী করপোরেট সংস্কৃতির বিশ্বায়ন

ভাষার মাধ্যমে আমরা মনের ভাব প্রকাশ করি। ভাষার ডিসকোর্স, লোকজ ভাষার উপর আগ্রাসী করপোরেট সংস্কৃতি প্রভাবকে প্রতিপাদ্য করে এবং অমর একুশে ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের প্রেক্ষাপটে কানাডা এবং বাংলাদেশের যৌথ উদ্যোগে পর্যায়ক্রমে গত ১৮ ফেব্রুয়ারি ও ৬ মার্চ অনুষ্ঠিত হয় দুটি ভিন্নধর্মী অনলাইন লাইভ আলোচনা। আলোচকরা ছিলেন কানাডার রাজধানী অটোয়া হতে লেখক ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব মহাসিন বখত ও আন্তর্জাতিক মাদার ল্যাংগুজে ডের গ্লোবাল ক্যাম্পেইনার (আইএম এল ডি) সৌরভ বড়ুয়া।

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের লোক প্রশাসন বিভাগের অধ্যাপক ও সমাজ বিজ্ঞান অনুষদের সাবেক ডীন ও কথা সাহিত্যিক হোসাইন কবির, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ও লোক গবেষক ড. মোহাম্মদ শেখ সাদি, দক্ষিণ চট্টগ্ৰামের সমাজকর্মী, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব ও লোকজ শ্লোক গবেষক রাহিম সৈকত, কানাডার এডমন্টন আলবার্টা হতে প্রেরণা টিভির সম্পাদক, প্রধান নির্বাহী ও সমাজ কর্মী এডওয়ার্ড প্রবীর মন্ডল, হ্যালিফ্যাক্স কানাডা হতে আমি। প্রথম আয়োজনে বাঁশখালী এক্সপ্রেসের তত্ত্বাবধানে দক্ষিণ চট্টগ্রাম হতে সঞ্চালনা করেন রাহিম সৈকত ও কানাডা হতে সৌরভ বড়ুয়া। দ্বিতীয় আয়োজনের সঞ্চালনার দায়িত্বে ছিলেন কানাডার আলবার্টার প্রেরণা টিভির প্রধান নির্বাহী এডওয়ার্ড প্রবীর মন্ডল।

আলোচকরা মতামত ব্যক্ত করেন–করপোরেট সংস্কৃতির বিশ্বায়ন, নগর কেন্দ্রিক সভ্যতার বিকাশ ও উপনিবেশবাদের ক্রমাগত আগ্রাসনের ফলস্বরূপ বিভিন্ন রাষ্ট্র ও অঞ্চলের বৃহত্তর জনগোষ্ঠী লোকজ ভাষার অস্তিত্ব এখন বিস্মৃতপ্রায়। একটি দেশের আত্মপরিচয়ের মূল ভিত্তি হলো–বৃহত্তর জনগণের লোকভাষা, লোকরীতি–এক কথায় লোকজ সংস্কৃতি। লোকজ সংস্কৃতির বিকাশ ঘটে সাধারণ ও কৃষিনির্ভর, নদী ও সমুদ্রনির্ভর জনগোষ্ঠীর সহজ-সরল জীবনবোধের প্রকাশের মাধ্যমে। তবে আধুনিক পুঁজিবাদী করপোরেট যন্ত্রনির্ভর বিশ্বায়নের চাপে বাংলাদেশসহ অনেক রাষ্ট্রে স্থানীয় ভাষার সঠিক বিকাশ এবং এর স্বতন্ত্রঐতিহ্য মন্ডিত সুনির্দিষ্ট উচ্চারণ ও প্রয়োগগত দিকে বিকৃতির সৃষ্টি হয়েছে।

আলোচক অধ্যাপক হোসাইন কবির লোকজ সংস্কৃতি বিষয়ক তাঁর গবেষণার আলোকে বক্তব্যে জানান, বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী শেকড়ের লোকজ ভাষা ও কৃষ্টি সংরক্ষণের বিষয়টি জোর দেন। তিনি ‘আঞ্চলিক’ শব্দটির নেতিবাচক বোধের ইঙ্গিত করে উল্লেখ হয় তাই এর পরিবর্তে ‘লোকজ’ ভাষা এবং ‘লোক সংস্কৃতি’ হিসেবে উল্লেখ করার উপর গুরুত্বারোপ করেন। মাত্রাতিরিক্ত যন্ত্রনির্ভরতার ফলস্বরূপ আমাদের বাংলাদেশের হাওর বাওড় অঞ্চলের মাটিসংলগ্ন ভাষা, লালনের ভাষা, রংপুর, পাবনা, দিনাজপুর, সিলেট, খুলনা, চট্টগ্রাম, নোয়াখালী সহ বিভিন্ন জেলার ঐতিহ্যবাহী আঞ্চলিক ও নৃজাতিগোষ্ঠীর সহজ, বর্ণিল ভাষা ও সংস্কৃতির সুরভী মুছে যাচ্ছে।

বাংলাদেশের বৃহত্তর লোকসংস্কৃতির যাত্রা, নৃত্য ও খেলাধুলা, গম্ভীরা, প্রবাদ প্রবচন, শ্লোক, জারি গান ও নাচ, সারি গান, মাগনেরগীত, বিবাহেরগীত, হুদমার গীত, ভাটিয়ালি, ভাওয়াইয়া, মুর্শিদী, মারফতি, বাউল, গম্ভীরা, কীর্তন, ধামালিপ্রভৃতি গান, সিলেটের নাগরী লিপি, পুঁথি পাঠ ইত্যাদি সুবিস্তৃত লোকজ সংস্কৃতির ক্ষেত্রটি আমাদের আত্মপরিচয়ে শিকড় বহন করে। আলোচকদের মতে, বিশ্বায়নের নেতিবাচক প্রভাবে বর্তমানের যন্ত্রনির্ভর করপোরেট সংস্কৃতিতে একটি-দুটি প্রচলিত ভাষার অধীনে আনার পরোক্ষ অপচেষ্টা চলছে, যা দেশে ও প্রবাসের লোকজ ভাষার বৈচিত্রময় স্বতন্ত্র রূপকে বিনষ্ট করছে।

অধ্যাপক হোসাইন কবির বিদেশি ভাষাকে পরিহার না করে নিজের বৃহত্তর লোকজ সংস্কৃতিতে সংরক্ষণে সার্বিক ভাবে সচেতন ইংরেজি বা অন্যভাষা নিয়ে কাজ করার আহ্বান জানান। তার মতে, মাটি সংলগ্ন ভাষার সঙ্গে আমাদের পরিচিতির প্রয়োজনীতা অসীম। বক্তাদের মতে, বাংলা ভাষার প্রমিতরীতি অনুসারীর সংখ্যা সীমিত তারচেয়ে অনেকবেশি সংখক মানুষ যে লোকসাহিত্যতে কথা বলেন, মনের ভাব প্রকাশ করেন তার আবেদন অনেক বেশি। তাই লোকজ কৃষ্টি আমাদের ঐতিহ্যের ধারক। কথা সাহিত্যিক সৈয়দ শামসুল হকের অনন্য সৃষ্টি ইংরেজ উপনিবেশিক সরকারের বিরুদ্ধে অমিত শক্তিধারী কৃষকনেতা নুরুরলদীনের সারা জীবন হতে অধ্যাপকহোসেন কবির ও শেখ সাদী ‘জাগো বাহে কোন ঠে সবাই’ জাগরণের কালজয়ী আহ্বান উদ্ধৃত করেন। তাদের মতে, বাংলাদশের রংপুর ওদিনাজপুর জেলার লোকজ ভাষার এই হৃদয়গ্রাহী আবেদন কোন বিকল্প যান্ত্রিক এলগরিদম প্রণালীনির্ভর অথবা প্রমিত, প্রচলিত আধুনিক একক কোন ভাষার মাধ্যমে ফুটিয়ে তোলা অসম্ভব।

সৌরভ বড়ুয়া আন্তর্জাতিক পর্যায়ে ইউনেস্কো পরিচালিত কয়েকটি কনফারেন্স সম্বন্ধে কিছুটা আলোকপাত করেন যার বিষয় বস্তু ছিল বিশ্বের বিভিন্ন রাষ্ট্রের যান্ত্রিকতার চাপে স্থানীয় ভাষার গুলির অবলুপ্তি। তিনি কানাডার মূলধারার স্থানীয় অভিবাসী ও আদিবাসী সংস্কৃতির শেকড়ের ভাষার চর্চা বজায় রাখার পাশাপাশি কানাডা স্থানীয় আঞ্চলিক ভাষার চর্চার ক্ষেত্রে কানাডা সরকারের শিক্ষা ক্ষেত্রে বিভিন্ন উদ্যোগের দিক আলোকপাত করেন।

আলোচক মহসিন বখত মানব সভ্যতার ক্রমবিকাশের বিভিন্ন পর্যায়েআদি যুগ হতে হাজার বছরের ভাষার ক্রমবিকাশের নিয়ন্ত্রণে আগ্রাসী শক্তির ভূমিকাবিষয়ক আলোকপাত করেন।

ড. মোহাম্মদ শেখ সাদী তার বক্তব্যে শেকড়ের সঙ্গে সম্পৃক্ত ভাষা কে মূল ভাষাবলেউল্লেখ করে রাজা রামমোহন রায়, কথা সাহিত্যিক আল মাহমুদের সাহিত্য সৃষ্টির লোকজ আবেদন, বাউল শাহআব্দুল করিমের অসাম্প্রদায়িক মানবতাবাদী জীবন দর্শনের অনন্য উদাহরণ আলোকপাত করেন। তিনি পশ্চিমের অনেক দার্শনিক চিন্তাবিদদের চিন্তার সঙ্গে বাংলার হাজার বছরের বাউল সাধকদের চিন্তার একাত্মতার কয়েকটি ক্ষেত্র উত্থাপন করেন। তার মতে, সঠিক প্রচার, সচেতনতার এবং গবেষণার অভাবে আমাদের এই বৃহত্তরলোকজ সংস্কৃতির বিশেষ প্রাধান্য পাচ্ছে না যেভাবে সর্বত্রই পশ্চিমা ভাষা চিন্তাবিদের সৃষ্টিশীলতা প্রাধান্য পাচ্ছে। তিনি বৃহত্তর লোকজ জনগোষ্ঠী হতে জাতীয় সংসদের বেশি মাত্রায় প্রতিনিধিত্বের দিকটির প্রাধান্য দেন।

আলোচক প্রবীর মন্ডল বিশেষভাবে কানাডার ব্রিটিশ কলাম্বিয়ায় কানাডার মূলধারার একটি নৃ জাতিগোষ্ঠীর একটি উপর তার পর্যবেক্ষণমূলক গবেষণার বিষয়টি তুলে ধরেন। আমাদের মায়ের বাংলা ভাষায় গবেষণামূলক আন্তর্জাতিক মানের জার্নাল ও গবেষণায় বাংলায় ভাষা বিভিন্ন প্রকাশনার দিকটা প্রাধান্য দেন। কানাডায় ঔপনিবেশিক শক্তি মূল ভূখণ্ডের আদিবাসী জনগোষ্ঠীর শিশুদের কীভাবে রেসিডিয়াল স্কুলের যুক্ত করে পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন করে ভাষাগত ও কৃষ্টিভিত্তিক নিপীড়ন করেছে ইতিহাসের সেই বিষয়টি আলোচকরা তুলে ধরেন।

এই আয়োজনে দক্ষিণ চট্টগ্রাম হতে অংশগ্রহনকারী আলোচক রাহিম সৈকতের আলোচনায় উল্লেখ করেন তিনি চট্টগ্রামের বৃহত্তর লোকজ সংস্কৃতির প্রায় বিস্মৃত কয়েকশো শ্লোক, লোকগাঁথা, গল্প সংগ্রহ ও গবেষণা করছেন যার দ্বারা বাংলাদেশের এই দক্ষিণাঞ্চল সহ হাজার বছরের সমাজ সংস্কৃতির প্রেক্ষাপট সম্পর্কে সম্যক ধারণা লাভ করা সম্ভব। আমি আমার বক্তব্যে বাংলার লোকজ সংস্কৃতির সঠিক প্রসারে এবং আমার কানাডার সাহিত্য অনুবাদ ও আমাদের গণমাধ্যমের দায়িত্বশীলতার বিষয়টি কিছুটা আলোচনা করি। কানাডার হ্যালিফ্যাক্সে মিউনিসিপ্যাল পর্যায়ে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের স্বীকৃতির প্রেক্ষপটে আমাদের উদ্যোগের দিকটা আলোচনা করি।

প্রযুক্তিনির্ভরতার চাপে হারিয়ে যাচ্ছে হাজার বছরের লালিত বাংলাদেশ সহ বিশ্বের বিভিন্ন রাষ্ট্রের লোকজ ঐতিহ্য, সংস্কৃতি, লোকাচার ও লোকভাষা। এই পরিস্থিতির দ্রুত নিরসন কল্পে এবং আমাদের কৃষ্টিনির্ভর অস্তিত্বের রক্ষার স্বার্থে বৃহত্তর লোকজ কৃষ্টি ও সাহিত্য, ভাষা সংরক্ষণে দেশে প্রবাসে সবার সদিচ্ছা এবং উদ্যোগ অব্যাহত রাখা বিশেষ প্রয়োজন।

হ্যালিফ্যাক্স, কানাডা

লেখক: প্রবাসী লেখক

এসএ/

Header Ad
Header Ad

দুর্নীতিবাজদের ফাইলগুলো পুড়ে গেছে : রুহুল কবির রিজভী

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। ছবি: সংগৃহীত

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, শেখ হাসিনার পরিবারের সদস্যদের দুর্নীতির অনুসন্ধান শুরু হওয়ার পরই সচিবালয়ে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা রহস্যজনক। শুক্রবার রাজধানীর কাকরাইলের ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং ইনস্টিটিউটে জাতীয়তাবাদী ৮৮ এসএসসি ব্যাচ আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।

রিজভী অভিযোগ করেন, সচিবালয়ের মতো নিরাপদ সরকারি দপ্তরে আগুনে ভস্মীভূত হয়ে গেছে অনেক গুরুত্বপূর্ণ ফাইল। এর মধ্যে রয়েছে দুর্নীতির অভিযোগে আলোচিত সাবেক কেবিনেট সচিবের ফাইল, যার ওপর তদন্ত চলছিল। তিনি প্রশ্ন করেন, “শেখ হাসিনার ঘনিষ্ঠজনদের ফাইল তলব করার পরপরই কেন এমন ঘটনা ঘটল? এটি নিছক দুর্ঘটনা নয়, বরং পরিকল্পিত।”

তিনি আরও বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার স্বৈরাচারের দোসরদের চিহ্নিত করে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। শেখ হাসিনার সহযোগীদের প্রশাসনে বসিয়ে গণতন্ত্র রক্ষার বিপ্লবকে ব্যর্থ করার চেষ্টা চলছে। যারা অতীতে গণতন্ত্র রক্ষায় আন্দোলন করেছে, তাদের বিরুদ্ধে প্রতিপক্ষ তৈরি করার চেষ্টা হচ্ছে।

রিজভী বলেন, নির্বাচন গণতন্ত্রের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। কিন্তু অন্তর্বর্তী সরকার নির্বাচনকে উপেক্ষা করে সংস্কারের কথা বলছে। তিনি অভিযোগ করেন, “এটি মঈনুদ্দিন-ফখরুদ্দিন আমলের ষড়যন্ত্রের মতো। জনগণের প্রত্যক্ষ ভোটের মাধ্যমে নেতৃত্ব নির্বাচনই গণতন্ত্রের মূল ভিত্তি। আনুপাতিক হারে নির্বাচন জনগণের কাছে গ্রহণযোগ্য নয়, কারণ এটি জটিল এবং সরাসরি ভোটাধিকারের বিরোধী।”

রিজভী আরও বলেন, যারা গণতন্ত্রের জন্য জীবন দিয়েছে, তাদের অবদানের প্রতি সম্মান জানিয়ে সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের রায়কে গুরুত্ব দিতে হবে। তিনি অন্তর্বর্তী সরকারকে সতর্ক করে বলেন, গণতন্ত্র রক্ষার স্বার্থে জনগণের প্রত্যাশা অনুযায়ী কাজ করতে হবে এবং কোনো ষড়যন্ত্রমূলক পদক্ষেপ থেকে বিরত থাকতে হবে।

Header Ad
Header Ad

শনিবার যেসব এলাকায় বিদ্যুৎ থাকবে না

ছবি: সংগৃহীত

সিলেট নগরীর ২৫ এলাকায় শনিবার (২৮ ডিসেম্বর) বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ থাকবে। বিদ্যুৎ বিভাগ জানিয়েছে, জরুরি মেরামত ও রক্ষণাবেক্ষণ কাজের জন্য সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত এবং কিছু এলাকায় সকাল ৮টা থেকে সকাল ১০টা পর্যন্ত বিদ্যুৎ সরবরাহ সাময়িকভাবে বন্ধ রাখা হবে।

এ বিষয়ে সিলেট বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগ-২ এর প্রকৌশলী শামস-ই-আরেফিন বৃহস্পতিবার (২৬ ডিসেম্বর) এক বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছেন।

বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, ১১ কেভি মুক্তিরচক ও ধোপাদিঘীরপাড় ফিডারের আওতাধীন এলাকাগুলোতে সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ থাকবে। এই এলাকাগুলোর মধ্যে রয়েছে মেন্দিবাগ, নোয়াগাঁও সাদিপুর, বোরহানউদ্দীন রোড, কুশিঘাট, মীরেরচক, মুক্তিরচক, মুরাদপুর, পীরেরচক, উপশহর রোড, সোবহানীঘাট বিশ্বরোড, ডুবড়ী হাওর, সবজিবাজার, ফুলতলী মাদরাসা, হাফিজ কম্প্লেক্স, নাইওরপুল পয়েন্ট, ওসমানী শিশু পার্ক, ধোপাদিঘীরপাড় ও আশপাশের এলাকা।

অন্যদিকে, ১১ কেভি সোবহানিঘাট ও কালিঘাট ফিডারের আওতাধীন এলাকাগুলোতে সকাল ৮টা থেকে সকাল ১০টা পর্যন্ত বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ থাকবে। এই এলাকাগুলো হলো কাস্টঘর, চালিবন্দর, আমজাদ আলী রোড, মহাজনপট্টি, লালদিঘীরপাড়, হকার্স মার্কেট, বন্দরবাজার রোড, জেল রোড এবং আশপাশের অঞ্চল।

বিদ্যুৎ বিভাগের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, কাজ শেষ হলে নির্ধারিত সময়ের আগেই বিদ্যুৎ সরবরাহ পুনরায় চালু করা হবে। সাময়িক এ অসুবিধার জন্য দুঃখ প্রকাশ করেছে বিভাগটি এবং গ্রাহকদের সহযোগিতা কামনা করেছে।

Header Ad
Header Ad

গুম অবস্থায় ভারতের কারাগারে যাওয়ার লোমহর্ষক বর্ণনা সুখরঞ্জন বালির

সুখরঞ্জন বালি। ছবি: সংগৃহীত

২০১২ সালের ৫ নভেম্বর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে জামায়াত নেতা মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর পক্ষে সাক্ষ্য দিতে এসে নিখোঁজ হন পিরোজপুর জেলার ইন্দুরকানি উপজেলার উমেদপুর গ্রামের বাসিন্দা সুখরঞ্জন বালি।

দীর্ঘ পাঁচ বছর পর ভারত থেকে মুক্তি পেয়ে দেশে ফিরে তিনি নিজের ওপর ঘটে যাওয়া ভয়াবহ অভিজ্ঞতা বর্ণনা করেন। তার এই অভিজ্ঞতা বাংলাদেশে গুম, নির্যাতন এবং মানবাধিকার লঙ্ঘনের এক মর্মস্পর্শী উদাহরণ।

২০১২ সালের ৫ নভেম্বর সকালে ঢাকার আদালতে যাওয়ার সময় সুখরঞ্জন বালিকে অপহরণ করা হয়। তিনি জানান, সাদা পোশাকধারী ব্যক্তিরা তাকে গাড়ি থেকে নামিয়ে একটি অচেনা স্থানে নিয়ে যায়। চোখ বেঁধে তাকে অন্ধকার একটি ঘরে আটকে রাখা হয়। সেখানে তাকে মাঝে মাঝে খাবার দেওয়া হলেও কোনো আলো-বাতাস প্রবেশ করতে পারত না।

এরপর তাকে আরেকটি ঘরে নিয়ে যাওয়া হয় যেখানে জোরপূর্বক সাঈদীর বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দেওয়ার জন্য চাপ দেওয়া হয়। তিনি জানান, তাদের প্রস্তাবে রাজি না হলে তাকে শারীরিক নির্যাতন, বৈদ্যুতিক শক এবং ভয়াবহ মানসিক যন্ত্রণা দেওয়া হয়।

অপহরণের কয়েকদিন পর তাকে বিজিবি ও পুলিশের সহায়তায় ভারতের সীমান্ত রক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)-এর হাতে তুলে দেওয়া হয়। বিএসএফ তাকে প্রচণ্ড মারধর করে এবং উত্তর চব্বিশ পরগণার স্বরূপনগর থানায় হস্তান্তর করে। সেখান থেকে তাকে বশিরহাট ও পরবর্তীতে দমদম কারাগারে পাঠানো হয়।

দমদম কারাগারে পাঁচ বছর কারাবাসের সময় বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থা তার সাক্ষাৎকার নেয়। ভারতীয় সুপ্রিম কোর্টের আদেশে ২০১৮ সালে তিনি মুক্তি পান এবং দেশে ফিরে আসেন।

সুখরঞ্জন বালির অভিযোগ অনুযায়ী, বাংলাদেশ পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ তাকে অপহরণ করে এবং বিজিবি’র সহায়তায় বিএসএফের কাছে হস্তান্তর করে। তিনি বলেন, "বাংলাদেশের একজন নাগরিককে রাষ্ট্রীয় বাহিনী কিভাবে অন্য একটি দেশের বাহিনীর হাতে তুলে দেয়?"

বিএসএফের হাতে নির্যাতনের দাগ এখনো তার শরীরে দৃশ্যমান। তিনি জানান, দমদম কারাগারে থাকা অবস্থায় তার পরিবারের সদস্যরা বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থার সহায়তায় তার মুক্তির ব্যবস্থা করেন।

দেশে ফিরে আসার পর তিনি পিরোজপুরে নিজের গ্রামে ফিরে যেতে সাহস পাননি। নিরাপত্তার কারণে বাগেরহাটে আত্মীয়দের আশ্রয়ে দিন কাটিয়েছেন। তিনি দাবি করেন, গুম এবং পাঁচ বছরের কারাবাসের কারণে তিনি শারীরিক ও মানসিকভাবে স্বাভাবিক জীবনযাপনে অক্ষম হয়েছেন।

২০১৮ সালে মুক্তির পর তিনি রাষ্ট্রের কাছে বিচার ও ক্ষতিপূরণ দাবি করেন।

২০২৪ সালের আগস্টে অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত গুম-সংক্রান্ত তদন্ত কমিশনের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, ২০০৯ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে ১,৬৭৬টি গুমের অভিযোগ জমা পড়েছে। এর মধ্যে অনেকগুলো অভিযোগে তৎকালীন সরকারের উচ্চপর্যায়ের নির্দেশনার প্রমাণ পাওয়া গেছে।

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস এক ভাষণে বলেন, "গুম কমিশনের প্রতিবেদন মানুষ মানুষের প্রতি কী পরিমাণ নৃশংস হতে পারে তার দলিল।" তিনি আরও বলেন, "গুমের শিকার ব্যক্তিদের ভয় আজও কাটেনি।"

 

 

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

দুর্নীতিবাজদের ফাইলগুলো পুড়ে গেছে : রুহুল কবির রিজভী
শনিবার যেসব এলাকায় বিদ্যুৎ থাকবে না
গুম অবস্থায় ভারতের কারাগারে যাওয়ার লোমহর্ষক বর্ণনা সুখরঞ্জন বালির
শেখ হাসিনাকে ‘নারী’ বলতে রাজি নন মৎস্য উপদেষ্টা
সূর্যের সবচেয়ে কাছে মানুষের তৈরি যান
বর্তমান সরকার রিজার্ভ বাড়িয়েছে, ব্যাংক সেক্টর সচল করছে: জামায়াত আমির
বাংলাদেশ জটিল রাজনৈতিক সময়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে : মির্জা ফখরুল
সংবিধান সংস্কারে রাজনৈতিক দলের সংকল্প জরুরি: অধ্যাপক আলী রীয়াজ
চলতি বছরের বিজিবি-বিএসএফ বৈঠক হচ্ছে না
ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়েতে নিহত সবাই একই পরিবারের
ইউসুফ (আঃ)- এর সমাধিতে নিয়ে গেল ইসরায়েলি সেনারা
ইন্টারপোলের রেড নোটিশে ৬৩ বাংলাদেশি: অপরাধীদের ধরতে আন্তর্জাতিক প্রচেষ্টা
ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আজমীর বরখাস্তের আদেশ বাতিল
মাহফিলে আজহারী উঠবেন রাতে, দুপুরেই ভরে গেছে ময়দান
ইসরায়েলি হামলায় অল্পের জন্য প্রাণে বাঁচলেন ডব্লিউএইচও প্রধান
থাইল্যান্ডে নিখোঁজ হওয়া বাংলাদেশিকে পাওয়া গেল থাই নারীর সঙ্গে হোটেলে  
হাসিনার দোসররা সচিবালয়ে পরিকল্পিতভাবে অগ্নিকাণ্ড করেছে: শাকিল উজ্জামান
ভারতে ইসকন মন্দিরে চিন্ময়ের আইনজীবীর বৈঠক
ভোটার হওয়ার বয়স ১৭ বছর নির্ধারিত হওয়া উচিত: ড. মুহাম্মদ ইউনূস  
নির্বাচনে অংশ নিতে খালেদা জিয়ার আইনগত কোনো বাধা নাই